সুখময়যন্ত্রনাতুমি
neela_rahman
পর্ব_১১৩
রাত দশটা সাদাফের গাড়ি রহমান ভিলা আসতেই গাড়ির শব্দে নুরের হৃদয়টা যেন কেঁপে উঠল ।যেন মনে হচ্ছে কতদিন পর সাদাফ ভাই বাসায় আসছে ।সাদাফ ভাই আসছে নূর পারছে না তো দৌড়ে দৌড়ে নামবে কিন্তু শরীর সায় দিচ্ছে না ।তাই নুর ধীরে ধীরে বেলকনি পর্যন্ত গেল ।
চুলে এখনো চিরুনি ।চুল যে আর গোছানোর সময় নেই ।সাথে সাথে রুমে এসে চুলগুলো খোঁপা করে নিল ।হঠাৎ মনে হল মায়ের একটি খোপার কাটা আছে যেটাতে কাঠগোলাপ লাগানো আছে ।সাদাফ ভাইয়ের তো কাঠগোলাপ ফুল খোঁপায় পড়া পছন্দ।নুর সাথে সাথে মায়ের রুমের দিকে গেল।
মায়ের রুমে গিয়ে দেখল রুমে কেউ নেই ।সবাই জানে আজকে সাদাফ আসবে তাই নওরিন আফরোজ সামিহা বেগম রান্নাবান্নার আয়োজন করছিলেন ।পুরুষরা সবাই নিচে ড্রয়িং রুমে সংবাদ দেখছে।
নূর মায়ের ড্রেসিং টেবিলের হাতরে কাঙ্খিত জিনিসটি পেয়ে গেল ।খোপার কাটা যেটিতে একটি কাঠগোলাপ খচিত।সেটি মাথায় দিয়ে ধীরে ধীরে আবার নিজের রুমে ফিরে চলে গেল নুর।নুরের লজ্জা লাগছে ।ভীষণ লজ্জা লাগছে নিচে যেতে তাই ভাবলো নিজের রুমে অপেক্ষা করবে ।সাদাফ ভাই নিশ্চয়ই আসবে নুরের রুমে নূরের সাথে দেখা করতে।
সাদাফ গাড়ি থেকে নেমে নূরের বেলকনির দিকে তাকালো ।দেখল রুমের লাইট জ্বলছে তার মানে নূর এখনো রুমে ।গাড়ির ডোর লক করে মেইন দরজা কাছে আসতেই দেখল নিচে সবাই বসে আছে ।হঠাৎ কেন যেন সাদাফের লজ্জা লাগলো ।এখানে বসে থাকলে টাইম নষ্ট হবে কিন্তু সাদাফের যে ইচ্ছে করছে দৌড়ে উপরে চলে যেতে।নুরের রুমে নুরের কাছে।
কিন্তু নিচে এতগুলো মানুষকে রেখে তাদের চোখে সামনে দৌড়ে উপরে নূরের রুমে যেতে হঠাৎ কেন যেন সংকোচ বোধ কাজ করল তাই সাদাফ ভিতরে ঢুকেই প্রথম ড্রয়িংরুমে সামনে এসে সোফায় বসলো।
সায়মন সাথে সাথে সাদাফের দিকে তাকিয়ে বললো,” কি অবস্থা ভাইয়া ?অফিসে ঝামেলা মিটেছে?”
সাদাফ বললো ,”না এখনো মিটেনি তবে মিটে যাবে মোটামুটি ব্যবস্থা করে এসেছি ।এ নিয়ে কারো টেনশন করতে হবে না ।”
বলেই আড় চোখে তাকালো হুমায়ুন রহমান ও ফজলুর রহমানের দিকে ।হুমায়ূন রহমান ছেলের দিকে তাকিয়ে কথা বলতে পারছে না বারবার মনে পড়ে সে চড় মারার দৃশ্য ।ভিতরে ভিতরে উনি খুবই ব্যথিত এবং লজ্জিত তবে ছেলেকে মেরেছে এজন্য উনি ছেলের দিকে তাকিয়ে যে কথা বলবে মনে হচ্ছে সেই সাহসটা করতে পারছে না।ফাজিল ছেলে টা একটু নিজে থেকে কথা ও তো বলতে পারে বাবার সাথে না তা করবে না। প্রতিশোধ নিচ্ছে।মনে মনে ভাবলো হুমায়ূন রহমান।
সাদাফ বুঝতে পারছে বাবার মনোভাব।তাই নীরবতা ভেঙে নিজেই বলল,” টেনশন করো না বাবা ঝামেলা মনে কর মোটামুটি শেষ ।বাকি যতোটুকু আছে আমি দেখে নিব তোমাদের টেনশন করতে হবে না।”
হমান রহমান যেন একটি শক্তি পেল ছেলে নিজে থেকে উনার সাথে কথা বলেছে ।খুশি চেহারায় ফুটে উঠল যেনো। সাথে সাথে বলে উঠলো ,”টেনশন করছি ও না ।যেখানে তুই আছিস সেখানে আমার টেনশনের কোন কারণ নেই ।আর আজকে সব তোর পছন্দের খাবার হয়েছে অবশ্যই এখানে বসেই খাবি।”
সাদাফ মুচকি হাসলো।চোখে ইশারা করলো উপরে যাবে। হুমায়ূন রহমান অবাক হলেন সবার সামনে ওর ইশারা করা দেখে।
সাদাফ না করল না জানে আজকে খেয়ে যেতেই হবে ।এমনিই সাদাফের জ্বর ছিল দুই দিন তার উপরে অসুস্থতা নূরের ।অফিসে ব্যস্ততা সবকিছু মিলিয়ে খাওয়া দাওয়ার কোন ঠিক নেই বাড়ির সবাই যে ওকে না খেয়ে যেতে দিবে না সেটাও আগে থেকে ভালো করেই জানে।
সাদাফ ফজলুর রহমানের দিকে তাকালেন ।ফজলুর রহমান বললেন ,”যাও হাতমুখ ধুয়ে এসো সবাই একসাথে খাব।”
ভিতরে ভিতরে সাদাফ এটাই চাচ্ছিল ।সাদা উঠে সবার উদ্দেশ্যে বললো,” আমি উপর থেকে হাতমুখ ধুয়ে আসছি ।”
সাদাফ মুখে না বললেও ফজলুর রহমান জানে সাদাফ উপরে যাওয়ার জন্য আকুপাকু করছিল ।নূরের রুমে যাবে নূরকে দেখতে যাবে এতে ফজলুর রহমানের কোন সমস্যা নেই ফজলুর রহমান শুধু চায় সাদাফ সব কিছু জেনে বুঝে ওকে গ্রহণ করুক ।যার জন্য একটু সময় লাগবে।যদি নুরের সমস্যা ওর কাছে গ্রহণযোগ্য না হয় তবে নুর কে সাদাফের থেকে দুরেই রাখবে।
সাদাফ উপরে উঠেই সাথে সাথে চলে আসলো নূরের রুমের কাছে ।নুর কিভাবে যেন বুঝে গেল সাদাফ ভাই এসেছে ।হয়তো পায়ের শব্দে হয়তো বা সাদাফ এর ব্যবহার করা বডি স্প্রের সুগন্ধে নূর বুঝতে পারছে তবে নূরের আজ ভীষণ লজ্জা লাগছে ।বিছানায় বসেই লজ্জায় যেন কাঁপছে নূর ।নিচে সবাই বসে আছে বাবা বড় বাবা সবাই সবাইকে পার করে নূরের কাছে এসেছে।
ধীরে ধীরে রুমের দরজা খুলে ভিতরে প্রবেশ করল সাদাফ। প্রবেশ করেই নূর কে কেমন যেন হঠাৎ চোখে আজ অন্যরকম লাগলো ।অবাক চোখে চেয়ে এগোলো নুরের দিকে।সাদাফ বুঝতে পারছে না নুরকে আজ অন্যরকম কেন লাগছে ?নুর মাথা নিচু করে রইল সাদাফ ধীরে ধীরে এগিয়ে এসে বিছানায় নূরের পাশে বসে নূরের দিকে তাকিয়ে রইল কিছুক্ষণ।
নুর বলল ,”কি হয়েছে , কি দেখছেন ?”
সাদাফ বললো,”তোকে আজ ভীষণ অন্যরকম লাগছে ।কিছু একটা পরিবর্তন মনে হচ্ছে ।”
নুর বললো,”কি ?”
সাদাফ অনেকক্ষণ খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখল ।বুঝতে চেষ্টা করল আসলে কি পরিবর্তন ?তারপর সাদাফ বললো,” তুই আজ খোপা করেছিস দুই বেনী করিস নি ।খোঁপায় কাঠ গোলাপ ফুলের কাটা দিয়েছিস।
তাইতো বলি তোকে আজকে এমন বিবাহিত বিবাহিত লাগছে কেন ?”
হঠাৎ নূরের বিবাহিত কথা টি শুনে মনে পড়ল বিবাহিত হলে তো নাকে ফুল পড়ে সবাই ।নুর মাথা তুলে বললো,” আমাকে একটা নাকে ফুল কিনে দিবেন সাদাফ ভাই?”
চলবে_
[পর্বটা আজ ছোট হলো ।চোখ ভীষণ ব্যথা করছে ।মাফ করবেন সবাই ।কমেন্টে ইচ্ছা হলে গালিগালাজ করেন ।কোন সমস্যা নেই সবকিছু মাথা পেতে নিলাম]
Share On:
TAGS: নীলা রহমান, সুখময় যন্ত্রনা তুমি
CLICK HERE GO TO OUR HOME PAGE
-
সুখময় যন্ত্রনা তুমি পর্ব ১১১+১১২
-
সুখময় যন্ত্রনা তুমি পর্ব ৯৪
-
সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ৬১
-
সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ৫৮
-
সুখময় যন্ত্রনা তুমি পর্ব ৯২
-
সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ২৩+২৪
-
সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ৭৭
-
সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ৫০
-
সুখময় যন্ত্রনা তুমি পর্ব ৪১
-
সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ২