সুখময়যন্ত্রনাতুমি
neela_rahman
পর্ব_১০৬+১০৭+১০৮
ফজলুর রহমান তাকিয়ে রইলেন সাদাফের দিকে।চেহারার অবস্থা যেন বড্ড বিধ্বস্ত।এমনিতে দুদিনের জ্বর তার উপরে অফিসের এত টেনশন আর নুরের জন্য যেই দুশ্চিন্তায় গাড়ি চালিয়ে এসেছে সব মিলিয়ে সাদাফের চেহারার দিকে যেন তাকানো যাচ্ছে না ।
যেন মনে হচ্ছে শতাব্দীর ক্লান্তি ওর চেহারায় ভর করেছে ।শার্ট পরনের কুচকে রয়েছে জায়গা জায়গা ঘামে ভিজে গিয়েছে।সাদাফ ধীরে ধীরে এক পা দু পা করে এগিয়ে এল নুরের বেডের কাছে ।হুমায়ূন রহমান ফজলুর রহমান নুরের বেডের পাশেই দাঁড়ানো ছিল ।
নওরিন আফরোজ ও সামিহা বেগম ও পাশে দাঁড়ানো ছিলো। রুমের ভিতর সায়মন রিমা সোফায় বসে তাকিয়ে আছে যেন অবাক হয়ে গেল সবাই ।সাদাফ ভাই এত দ্রুত কি করে এলো মনে হল যেন ১০-১৫ মিনিট আগেই তো কথা বলল।
সাদাফ নূরের মাথার কাছে এসে দাঁড়ালো ।এক হাত রাখল নূরের মাথায় ।নূর এবার চোখ বন্ধ করে ফেলল ।চোখের কোনায় যেন জল চিকচিক করছে ।সাদাফ হাটু ভেঙ্গে নুরের কাছে বসলো।
হুমায়ূন রহমান ও ফজলুর রহমান একটি কথাও বললেন না ।কেন যেন হুমায়ূন রহমান নিজেকে খুব অপরাধী ভাবছে ।নিজে থেকে কেন ছেলেটাকে জানালো না ?কেন এতো দেরিতে জানাতে পারলে। যেখানে সবার আগে জানার একমাত্র অধিকার ছিল সাদাফের সেখানে সবার পরে সাদাফ কে জানানো হলো।
ফজলুর রহমান আরেকটি কথা বললেন না ।মেয়ের দিকে তাকিয়ে দেখলেন মেয়ে চোখ বেয়ে বেয়ে পানি পড়ছে ।মেয়েটা নিশ্চয়ই ভীষণ কষ্ট পাচ্ছে কিন্তু এখন আর এখানে দাঁড়াতে চাচ্ছেন না ফজলুর রহমান ।সর্বপ্রথম ফজলুর রহমান চুপচাপ নিঃশব্দে হসপিটালের কেবিন রুম ত্যাগ করলেন।
ধীরে ধীরে একে একে সবাই হসপিটালে ক্যাবিন রুম থেকে বের হয়ে গেলেন ।কাউকে যেন কোন কিছু বলতে হলো না ।বুঝিয়ে দিতে হলো না ।সবাই যেন নূর আর সাদাফ কে একটু আলাদা স্পেস দিতে চাচ্ছে তাই সবাই বের হয়ে গেলেন রুম থেকে।
নুর চোখ বন্ধ করে ঠোঁট দুটো ফুপিয়ে ফুপিয়ে কেঁদে উঠলো ।সাদাফ ধীরে ধীরে হাত উঠিয়ে আঙ্গুল দিয়ে খুব নরম ও কোমল ভাবে নূরের চোখের পানি গুলো মুছে দিল।
হালকা ঝুঁকে এসে নূরের কপালে ঠোঁট ছুঁয়ে বললো,” কাঁদছিস কেন পাগলী? কি হয়েছে তোর ?এই তো আর একটু পরে সুস্থ হয়ে যাবি আমি চলে এসেছি না?”
নূর পিটপিট করে চোখ দুটো খুলল ।খুলে বললো ,”সাদাফ ভাই আপনি এত দেরিতে কেন এসেছেন?
আমি তো কত অপেক্ষা করেছিলাম আপনার জন্য ।আমার তো ভীষণ কষ্ট হচ্ছিল।”
সাদাফ মুচকি হেসে নুরের চোখের পানি একটু একটু করে মুছে দিয়ে বলল ,”এখনো সাদাফ ভাই ?আর কতবার কবুল করলে আমি তোর ভাই থেকে স্বামী হতে পারব বলতে পারিস নুর?”
নুর চোখ বন্ধ করে ফেলল লজ্জায়।সাদাফ নুরের চুল গুলো ধীরে ধীরে হাত বুলাতে বুলাতে বলল ,”নূর একবার আমাকে সাদাফ বলে ডাকবি?”
নুর না সূচক মাথা নাড়ল ।তারপর ধীরে ধীরে বলল ,”না আপনাকে আমার নাম ধরে নয় এমনি ডাকতে ভালো লাগে।”
সাদাফ নুরের দিকে ঝুঁকে বলল ,”আমার যে একবার শুনতে ইচ্ছা হচ্ছে আমার নুর আমাকে সাদাফ বলে ডাকবে ! “
নূর চোখ বন্ধ অবস্থায় বলল ,”না এখন না পরে ডাকবো।”
সাদাফ মুগ্ধ দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল চোখ বন্ধ করে তীর তীর করে কাঁপতে থাকা নূরের দিকে ।তারপর বলল ,”কথা দিচ্ছিস তো পরে আমাকে সাদাফ বলে ডাকবি? ঠিক আছে তোর কথাই রইল।
আর তো বেশি দিন নেই। আর মাত্র ১২ দিন বাকি আছে ১২ দিন পর তুই আমাকে সাদাফ বলে ডাকবি কেমন?”বললো সাদাফ।
নুর জবাবে শুধু মুচকি হাসলো ।কিন্তু কোন কথা বলল না ।সাদাফ তাকিয়ে রইল নূরের চেহারার দিকে।স্পষ্ট বুঝা যাচ্ছে মুখে হাসি থাকলেও পুরো চেহারায় যেন ব্যথার ছাপ স্পষ্ট।
সাদাফের ইচ্ছে করছে ওরে সমস্ত ব্যথা নিজের মধ্যে নিয়ে নিতে কিন্তু মানুষ যে বড় অপারগ ।যতই ভালোবাসো থাকুক চাইলেও কেউ কারো কষ্টের ভাগ নিতে পারেনা ।সাদাফ ঝুঁকে এসে নূরের কপালে আরেকবার ওষ্ট ছোয়ালো। তারপর ধীরে ধীরে বলল ,”চোখ খোল নুর!
তাকা আমার দিকে ।”
নুর পিটপিট করে চোখ খুলল ।সাদাফের দিকে তাকালো ।সাদাফ নূরের একটি হাত নিয়ে হাতের পৃষ্ঠে চুমু খেয়ে বলল ,”কি ভীষণ অপারগ লাগছে নিজের কাছে নিজেকে ।তোর এই ব্যথা যে আমি নিজের মধ্যে নিতে পারছি না।
তোর ব্যথাগুলো আমি কমিয়ে দিতে পারছি না নূর। কিন্তু ভালোবাসা দিব অনেক যে ভালোবাসা দিয়ে ব্যথা গুলো সারিয়ে দিতে না পারলেও ব্যথাগুলো যেন একদিন ভুলিয়ে দিতে পারি ।”
বলেই নূরের হাতে আবারো চুমু খেলো সাদাফ।
ওয়ার্ড বয় এসে বাহিরে দাঁড়াতেই ফজলুর রহমান জিজ্ঞেস করল কি হয়েছে ?ছেলেটি বললো বলল ,”ফাইল নিয়ে ডক্টরের কেবিনে আসুন ।রোগীর ব্যাপারে কথা বলবে ।”
হুমায়ন রহমান দাঁড়িয়ে গেলেন যাওয়ার জন্য ।ফজলুর রহমান বললেন ,”ভাই আপনি থাকেন আমি যাচ্ছি সমস্যা নেই ।”
বলেই ফাইল নিয়ে দ্রুত চলে গেল ডক্টরের কেবিনে।
ডক্টর ফাইল গুলো দেখতে দেখতে বললেন ,”আপনার মেয়ের ওভারিয়ান সিস্ট অর্থাৎ ডিম্বাশয় ছোট ছোট টিউমার যা বাড়ন্ত অবস্থায় রয়েছে ।ওষুধ দিয়ে দিচ্ছি যদি গ্রোথ স্থির থাকে বা কমে যায় তাহলে ঠিক আছে কিন্তু যদি গ্রোথ না কমে তাহলে হয়তো সামনে গিয়ে অপারেশন করাতে হবে।
এর অনেক সাইড ইফেক্ট এ রয়েছে ।আশা করি আপনি জানেন ওর এই ওভারিয়ান সিস্টের ব্যাপারে।কারণ ওর পিরিয়ড নরমাল বা সাভাবিক হয় না অনিয়মিত পিরিয়ড ।এটি তো আর হঠাৎ করে হয়নি ধীরে ধীরে হয়েছে।”
ফজলুর রহমান বললেন ,”জি এর আগেও একবার হয়েছিল তবে হসপিটালে ভর্তি রাখতে হয়নি ।টেস্ট করানোর পর জানতে পেরেছিলাম কিছুদিন ওষুধ খাওয়ার পর বলেছিল কমে গিয়েছে।”
ডঃ হুমায়ুর রহমানের দিকে তাকালেন ।তারপর বললেন,” যখন বললেন কমে গিয়েছে বা কোন উপসর্গ দেখা দেয়নি এরপর আপনি কোন টেস্ট করেননি ?”
হুমায়ূন রহমান চুপ হয়ে গেলেন ।বললেন ,”না যখন দেখলাম সবকিছু নরমাল হয়ে গেছে আর ডক্টর নিজে থেকে বলল কমে গিয়েছে তাই আর টেস্ট করাইনি।”
ডক্টর বললেন ,”ওষুধগুলো হয়তো আরো কিছুদিন কন্টিনিউ করা দরকার ছিল কিন্তু করেননি যার জন্য আবারও বেড়েছে ।তবে এখন যে ওষুধগুলো দিচ্ছি দীর্ঘমেয়াদে ওষুধগুলো খেতে হবে এবং এতে অনেক সময় বাচ্চা গর্ভধারণেও সমস্যা হতে পারে। গর্ভধারণ খুব দেরিতে হতে পারে অথবা কখনো নাও হতে পারে।
যদি ওষুধ খেলে কমে যায় তাহলে সমস্যা নেই কিন্তু যদি না কমে গ্রোথ এভাবেই থাকে তাহলে অপারেশন করাতে হবে ।আর অপারেশন করালে কি হবে এতোটুকু নিশ্চয়ই জানেন আপনি।”
ফজলুর রহমান দীর্ঘশ্বাস ফেললেন ।উনি এটাকে মনে মনে ভয় পেয়েছিলেন এবং এখনো পাচ্ছেন ।কারো কাছে কখনো বলা হয়নি এ কথাটি নূরের এই সমস্যাটির কথা উনি আগে থেকে জানতেন ।কখনো কারো সাথে শেয়ার করেননি।
ডক্টরের দিকে তাকিয়ে ফজলুর রহমান বললেন ,”আমার মেয়েটাকে সুস্থ করে দিন ডক্টর। এমন ওষুধ দিন যাতে ওর সিস্ট গুলো কমে যায় আর কখনো না হয় আমার মেয়েটা ভীষণ কষ্ট পাচ্ছে।”
চলবে__
সুখময়যন্ত্রনাতুমি
neela_rahman
পর্ব_১০৭
নূরের হাত ধরে নুরের দিকে অপলক চেয়ে আছে সাদাফ।এতক্ষণে নূর ঘুমিয়ে গিয়েছে ।ঘন্টাখানেক আগে ইনজেকশন দিয়েছিল ইনজেকশন প্রভাবে এখন নিশ্চিন্তে ঘুমাচ্ছে সাদাফের হাত আঁকড়ে ধরে নুর।
ক্যাবিনে প্রবেশ করলেন ফজলুর রহমান ।প্রবেশ করে দেখলেন সাদাফ নুরের হাত ধরে নুরের দিকে তাকিয়ে আছে সাদীফ।ফজলুর রহমান ফাইলটি একটু পিছনে লুকিয়ে ফেললেন ।এই মুহূর্তে সাদাফের সাথে এসব নিয়ে কথা বলতে চাচ্ছেনা ।তাই ধীরে ধীরে ফাইলটি নূরের ব্যাগেই কাপড়-চোপড়ের পিছনে লুকিয়ে সাদাফ এর কাছে ধীরে ধীরে হেঁটে আসলেন।তারপর বললেন,”বাসায় গিয়ে রেস্ট কর সারাদিন ধরে তো অনেক টেনশন করলি অনেক কাজ করেছিস এখন আবার না হয় বাসায় গিয়ে রেস্ট কর।”
সাদাফ চোখ তুলে তাকালো ফজলুর রহমানের দিকে ।সাদাফের চোখ দুটো ছলোছলো করছে যেন পারেনা এই মুহূর্তে কান্না করে দিবে ।ফজলুর রহমান তাকিয়ে দেখলেন সাদাফের এই অবস্থা ।পুরুষ মানুষও যে কাঁদে কষ্ট পেলে কাঁদে সাদাফ তার প্রমাণ ।যদিও কখনো কাউকে কাঁদতে দেখেনি ফজলুর রহমান কিন্তু নিজে তো কত শতবার কেঁদেছে আড়ালে।
নূরের কথা ভেবে নূরের ভবিষ্যতের কথা ভেবে কতবার আল্লাহর কাছে ক্ষমা চেয়েছে ।কতবার আল্লাহ কাছে চেয়েছে তার জীবনের বিনিময় হলে যেন নূরের সমস্ত সমস্যা সমাধান হয়ে যায়।
ফজলুর রহমান যেদিন থেকে জানতে পেরেছিলেন আল্লাহর কাছে কত শতবার মোনাজাতে চেয়েছিলেন মেয়েটার ভবিষ্যৎটা যেন এরকম না হয় ।সবকিছু যেন ঠিক হয়ে যায় ।আল্লাহ কি তবে শোনেননি তার কথা ?উনি কি কোন পাপ করেছিলেন যার শাস্তি হিসেবে নুরের জীবনে এরকম অভিশাপ দিয়ে দিয়েছে।
মানুষ বলে ব্যক্তি জীবনে পাপ নাকি তার সন্তানের উপরে বর্তায় ।কিন্তু ফজলুর রহমান মনে মনে কতশতবার চিন্তা করেছেন কি এমন পাপ করেছিলেন উনি খুঁজে পায় না ।কিন্তু তার মেয়ের ভাগ্যটা কেনো এমন হবে ?যদি ডাক্তার যা বলেছে তা সত্যি হয় তখন?
দুটো হাতই যে তার ।একটি যে তার ছেলে একটি তার মেয়ে কাকে কষ্ট দিবে কার কষ্টের চোখে পানি মুছবে উনি যে ভেবে কুল পায় না।
একবার যখন নূরের পেটে ব্যথা হয়েছিল ফজলুর রহমান আর মামিহা বেগম নিয়ে গিয়েছিলেন নুরকে হসপিটালে।সাদাফ তখন বিদেশে ।হুমায়ূনর রহমান ব্যবসায়ের কাজে একটু বাইরে গিয়েছিলেন ।সাইমন রিমা তখন ছোট ওরা কিছুই জানে না।
দুই বছর আগের ঘটনা হঠাৎ নুর একদিন পেটে ব্যথা নিয়ে দৌড়াতে দৌড়াতে এলো ।তখন নূর এত শত বুঝতো না এখন ই তো কম বুঝে তখন তো আরো ছোট ছিল ।পেটে ব্যাথা করছে বলে ছটফট করতে করতে যখন ফজলুর রহমানের কাছে এলো তখন সামিহা বেগম চুপিচুপি বলেছিলেন পিরিয়ড চলছে ।
কিন্তু মেয়েরা এত কান্না এত চিৎকার দেখে উনি নিজেকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেনি ।হসপিটালে নিয়ে গিয়েছিল ।পরীক্ষা করে ডক্টর জানায় ছোট ছোট সিস্ট দেখা দিয়েছে এত অল্প বয়সে এত ছোট ছোট সিস্ট উনি অবাক হয়ে গিয়েছিলেন শুনে ।এটা কোন পাপ ওনার যে উনার মেয়ের উপরে এরকম একটা অভিশাপ নেমে এসেছে।
পরে ডক্টর জানায় চিন্তার তেমন কিছু নেই ওষুধ দিবে ।ওষুধ চলতে থাকলে ধীরে ধীরে সিস্ট কমে আসবে। ধীরে ধীরে ছোট হতে হতে মিলিয়ে যাবে ।অপারেশন পর্যন্ত যাওয়া লাগবে না ।যেহেতু তখন খুবই ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র শিষ্ট ছিল ।পরে দীর্ঘদিন ওষুধ খাওয়ায় ফজলুর রহমান সবার চোখের আড়ালে ।কেউ যেন দেখতে না পারে কয়েকবার টেস্ট করায় নিজেই মেয়েকে নিয়ে এমনকি সামিহা বেগমকে পর্যন্ত জানায়নি ।চিন্তা করেছিল মায়ের মন চিন্তায় অসুস্থ হয়ে পড়বে কান্নাকাটি করবে তাই উনি চুপচাপ নূরকে নিয়ে বাইরে বের হবার কথা বলে ডাক্তারের কাছে নিয়ে টেস্ট করাতো
এবং ওষুধ খাওয়াতো নূরকে নিজে এসে চুপি চুপি রুমে। তিন মাস ওষুধ খাওয়ানোর পর ডক্টর যখন জানায় ভালো রেজাল্ট পাওয়া গিয়েছে একদম মিলিয়ে গেছে আর টেনশনের কোন কিছু নেই ।উনিও খুশি হয়ে ওষুধ বন্ধ করে দিয়েছিলেন ।নুর ততদিনে ওষুধ খেতে খেতে বিরক্ত হয়ে গিয়েছিল এবং চুপিচুপি ওষুধ খাওয়ানোটাও খুব ঝামেলা ছিল।
এভাবে দুই বছর চলল ।এতদিন কোন সমস্যা হয়নি কিন্তু মনের কোথাও একটা সন্দেহ থেকে গিয়েছিল একটা ভয় ঢুকে গিয়েছিল যে নূর কি কখনো মা হতে পারবেনা ?যদি সিস্ট ভালো না হয় ?তাই উনি গোপনে আল্লাহর কাছে বারবার চাইতেন মাফ চাইতেন মেয়ের ভালোর জন্য বারবার আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইতেন।
আল্লাহ কি তবে তাকে ক্ষমা করেনি ?মনে মনে ভাবল ফজলুর রহমান ।কিন্তু উনি তো নিজের কোন অন্যায় কোন অপরাধ খুঁজে পান না ।কখনো মনে পরেনা উনি কারো সাথে জেনে শুনে কারো সাথে কোন অন্যায় করেছে ।কোন অপরাধ করেছে যার শাস্তি তার মেয়েটা পাচ্ছে।
সাদাফের চোখে টলমল পানি দেখে ফজলুর রহমান কোন কথা বলতে পারলেন না ।তাকিয়ে রইলেন সাদাফের দিকে ।তারপর বললো,”পুরুষ মানুষের চোখে পানি আসতে হয় না ।শত কষ্টের মধ্যেও অবিচল থাকতে হয় ।শক্ত থাকতে হয় ।কারণ নারীদের মন কোমল তারা কাঁদবে তাই পুরুষকে শক্ত থাকতে হয়।”
হুমায়ূন রহমান এমন সময় ক্যাবিনে প্রবেশ করলেন ।উনি একটু বাহিরে গিয়েছিলেন এসে দেখলেন ফজলুর রহমান সাদাফের দিকে তাকিয়ে কথাগুলো বলছেন ।ফজলুর রহমান সাথে সাথে দেখলেন হুমায়ূন রহমানকে ভিতরে ঢুকতে। বললেন ,”এসেছেন ভাইজান আসেন?আপনি বরং বাড়ির সবাইকে নিয়ে চলে যান ।হসপিটালে এত লোক থাকার কোন প্রয়োজন নেই ।আমি থাকবো আর সামিহা থাকুক ।বাড়িতে তো লোকের প্রয়োজন আছে।”
“ডাক্তার কি বলল ?ডাক্তারের ক্যাবিন থেকেই তো এলি মাত্র।” বললো হুমায়ূন রহমান।
কথাটি শুনেই সাদাফ সাথে সাথে স্বচকিত হলো ।সাদাফ জানেনা নূরের কি হয়েছে ?সাথে সাথে ফজলুর রহমান দিকে তাকিয়ে বলল ,”কি হয়েছে নূরের? ডাক্তার কি বলেছে?”
এই প্রশ্নটির ভয় পাচ্ছিলো ফজলুর রহমান ।তাই ভাইকে তড়িঘড়ি করে বাড়ির সবাইকে নিয়ে বাসায় যেতে বলেছিলেন ।ফজলুর রহমান আমতা আমতা করে হুমায়ুন রহমানের দিকে তাকিয়ে বললেন ,”তেমন কিছু না ভাইজান টেস্টের রিপোর্ট নরমাল এসেছে তবে ব্যথাটা একটু বেশি যার কারণে ট্রিটমেন্ট চলছে কালকের মধ্যে রিলিজ দিয়ে দিবে।”
হুমায়র রহমানের কেমন সন্দেহ হলো ।এটা তো ভালো খবর কিন্তু ফজলুর রহমানের মুখে তেমন হাসি নেই কেন ?হাসিখুশি দেখানোর চেষ্টা করছেন কথাটা হেসেই বলেছেন কিন্তু চোখ দেখে বুঝা যাচ্ছে চোখ আর ঠোঁটের হাসি যেন মিলছে না।
সাদাফ সাথে সাথে বলে উঠল ,”আমি যাব না ।তোমরা সবাই চলে যেতে পারো ।নুরের সাথে আমি থাকবো।”
ফজলুর রহমান বললেন,”না তোর থাকতে হবে না ।সকালে তোকে আবার অফিসে যেতে হবে ।আর সারাদিনই তো পরিশ্রম করলি টায়ার্ড বাসায় গিয়ে রেস্ট কর ।”
সাদাফ দৃড় কন্ঠে বলল ,”না আমি এখানেই থাকবো ।বলেছি তো তোমরা বাসায় চলে যাও আমি এখান থেকে এক পাও নড়বো না।”
ফজলুর রহমান চাচ্ছিল না হসপিটালে উনি ছাড়া আর কেউ থাকুক ।কখন ডাক্তার কার সাথে কি কথা বলে ফেলবে উনি চাচ্ছে না এই মুহূর্তে কেউ নূরের এই দুর্বলতা বা অসুস্থতা সম্পর্কে জানুন ।জানলে ভেঙে পড়বে বাকি বাড়ির সবাই ।
অনেক কষ্ট পাবে সবার কষ্টে নূরের কি হবে সেটা ভেবে ওনার বুক বারবার ধরফর করে উঠছে ।কেঁপে কেঁপে উঠছে।নুর জানতে পারলে কি হবে ?নুরকে কি করে সামলাবে ?এটা ভেবেই উনি কেঁপে উঠছে বারবার।আর সাদাফ? সাদাফ জানলে কি করবে? উফ ফজলুর রহমান আর ভাবতে পারছে না কিছু।”
এদিকে সাদাফ নূরের মাথায় হাত রেখে মাথার চুল গুলো গুছিয়ে দিতে দিতে মনে মনে ভাবলো ,”কোন ঝড় তোর আর আমার মাঝখানে আসতে দিবোনা নূর ।যত বড় ঝড় আসুক যত বিপদ আসুক আমি স্বহস্তে সেগুলো মোকাবেলা করব ।তোর পর্যন্ত কখনো এগোতে দিব না।”
চলবে__
সুখময়যন্ত্রনাতুমি
পর্ব_১০৮
neela_rahman
রিমার দিকে তাকিয়ে নওরিন আফরোজ বললেন ,”এদিকে আয় আমার সাথে তোর সাথে আমার কথা আছে।”
রিমা বললো,” আমার সাথে কথা ?কি কথা আম্মু ?”
নওরিন আফরোজ বললেন ,”আগে আয় আমার সাথে ওই পাশে চল সামনে গিয়ে কথা বলব।”
রিমা বুঝতেও পারছে না কি কথা থাকতে পারে ?চুপচাপ মায়ের পিছনে পিছনে হেঁটে হেঁটে একটু সামনে চলে গেল ।
নওরিন আফরোজ থামলেন ।থেমে রিমার দিকে তাকিয়ে বললেন ,”কবে থেকে চলছে এইসব?”
রিমা যেন বোকা হয়ে গেলেন ।মা আসলে কোন ব্যাপারে বলছে ?কি কবে থেকে চলছে ?তাই বললো,”কি বলছ আম্মু ?আমি বুঝতে পারছি না।”
নওরিন আফরোজ বললেন ,”এত কচি খুকি তো নস।বুঝতে পারছিস না তোকে আমি চুপচাপ ডেকে এনে কোন ব্যাপারে জিজ্ঞেস করছি?”
রিমা শুকনো ঢোক গিললো। আমতা আমতা করে বললো,”না আসলে আমি বুঝতে পারছি না তুমি কি জিজ্ঞেস করছ আমাকে।”
“কবে থেকে চলছে সাইমনের সাথে এইসব ?নিজ কানে শুনেছি তাই অস্বীকার করার কোন চেষ্টা আমার কাছে করবি না ।আর ন্যাকামি তো একদমই করবি না ।ন্যাকামি আমার এখন একদম সহ্য হয় না।” বললেন নওরিন আফরোজ।
রিমা ভয় পেয়ে গেল ।পুরো শরীরে যেন কাঁপুনি ধরে গেল ।কাঁপতে কাঁপতে বলল ,”না মানে ওই সাইমন ভাইয়া বলেছে আমাকে পছন্দ করে ।”
নওরিন আফরোজ বললেন,” এক থাপ্পর দিয়ে দাঁত সব ফেলে দিব ।সায়মন বলেছে পছন্দ করে তুই করিস না ?”
রিমা মাথার নত করে ফেলল ।তারপরে নওরিন আফরোজের দিকে তাকিয়ে বললো,” সরি ভুল হয়ে গেছে।”নওরিন আফরোজ বললো ,”সব ভুল ভুল হয়না রিমা ।একই বাড়িতে থাকিস তোরা একবার যখন সম্পর্কে জড়িয়ে গেছিস তোর কি মনে হয় সম্পর্কে থেকে তুই বের হতে পারবি ?আর এমনি সাদাফ আর নুরকে নিয়ে একটা ঝামেলা চলছে ।তার মধ্যে যদি তোদের টা ও শুনে চিন্তা করতে পারিস তোর বাবাদের অবস্থা কি হবে?
সবকিছুর একটা সময় থাকে ।মুরুব্বীরা করলে জিনিসটা ভালো হয় কেন তোরা ছেলেমেয়েরা এসব বুঝতে চাস না?
আর সাদাফ তো তাও বুঝদার ছেলে সাইমন তো একটা বাচ্চা পুরাই। ও কি পারবে সব ঝড়ঝাপটা সহ্য করতে ?এক ধমক দিলেই তো চুপ করে থাকবে।
কি এমন বয়স হয়েছে এইসব করার? আর এই বয়সে যদি সম্পর্কে জড়িয়ে গিয়েছিস তাহলে এক বাড়িতে থেকে কি তোর মনে হয় আর স্বাভাবিক ভাই বোনের সম্পর্ক বজায় রাখতে পারবি?”
রিমা বলল ,”সরি আম্মু ভুল হয়ে গেছে। কিন্তু কোন কিছু তো প্লান করে করিনি।হয়ে গেছে।”
নওরিন আফরোজ দীর্ঘশ্বাস ছাড়লেন ।রিমার দিকে তাকিয়ে বললেন ,”এখন তো বলবিই সরি ভুল হয়ে গেছে ।কিছু হলেই তো বাবা-মায়ের কথা মনে পড়ে ।আগে তো মনে পরেনা ।মাঝখান দিয়ে সাইমন এখন কি করবে আমি সেটাই বুঝতে পারছি না ।তুই না হয় মেয়ে মানুষ তোকে দুটো কথা বলে বাড়িতেই রেখে দিবে ।রাগ যদি সব সায়মনের উপরে ঝাড়ে তোর বাবা তখন?
যাই হোক এখন কিছুদিন সবার সামনে ওর থেকে একটু দূরে দূরে থাকিস ।বেশি কথা বলিস না ।কারো নজর যেন তোদের উপরে এখন না পরে ।একটা ঝামেলা চলছে সেটা আগে মিটমাট হোক ।কথা বোঝাতে পেরেছি?
আমি না দেখে যদি অন্য কেউ দেখতো তখন? আর এভাবে লুকোচুরি করে এখানে ওখানে দাঁড়িয়ে কথা বলিস না ।আমাকে বুঝতে দে কি করব আমাকে জিনিসটা হ্যান্ডেল করতে দে।”
রিমা সাথে সাথে নওরিন আফরোজ কে জড়িয়ে ধরলো। কাঁদো কাঁদো কন্ঠে বললো,” থ্যাঙ্ক ইউ আম্মু।”
নওরিন আফরোজ বললো,”হ্যাঁ এখন তো থ্যাংক ইউ বলবি । সমস্যা সমাধান হয়ে গেলেই তো থ্যাঙ্ক ইউ ।না হলে তো মায়ের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করতি। ছেলে মেয়েরা তো সব এরকমই করে।”
রাতেই হুমায়ূন রহমান সাইমন রিমা নওরিন আফরোজ যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়ে গেলেন ।ফজলুর রহমান সামিহা বেগমকে চলে যেতে বলছেন। কিন্তু সামিহা বেগম যেতে নারাজ ।মেয়ে কে রেখে নওরিন আফরোজ ও যেতে চাইছিল না কিন্তু সকালে আবার সবার জন্য খাবার নিয়ে আসবে আর রিমা ও সাইমনকে একা বাড়িতে পাঠানোটা ঠিক হবে না সে ভেবেই উনি রাজি হয়ে গেলেন।
নওরিন আফরোজ হেটে এসে নূরের মাথা হাত বুলিয়ে কতক্ষণ মেয়েটার দিকে তাকিয়ে রইলেন ।এখন যেন নূর আর শুধু উনার মেয়ে না তার বড় ছেলের বউ ।সে হিসেবে এখন নূরের প্রতি ভালোবাসা ওনার অন্যরকম ।ঠিক যেমন টা সাদাফের প্রতি তেমন।নূরের মাথায় হাত বোলাতে বোলাতে সাদাফের দিকে তাকিয়ে বললেন,” তুই তো যাবি না জানি এখানেই থাকবি তাই খেয়াল রাখিস সবকিছু।নিজের দিকে আগে খেয়াল রাখিস ।খাবার গরম করে রেখে গিয়েছি। খেয়ে নিস ।অসুস্থ হয়ে পড়লে নূরকে দেখবে কে?”
সাদাফ নওরিন আফরোজ এর হাত ধরে বললো,” ঠিক আছে আম্মু ।ঠিকমতো বাসায় যেও চিন্তা করো না আমরা এখানে আছি।”
একে একে সবাই চলে গেলেন ।রয়ে গেলেন ফজলুর রহমান সাদাফ ও সামিহা বেগম ।সামিহা বেগম কেবিনেরই আরেকটি বেডে শুয়ে ছিলেন ।নূরের হাত ধরে বসেছিলো সাদাফ। সোফায় বসে আছে ফজলুর রহমান।
ফজলুর রহমান মনে মনে ভাবছে যদি সাদাফের সাথে নূরের বিয়েটা এই মুহূর্তে মেনে নেয় নুর যদি মা না হতে না পারে যদি সাদাফ নুর কে গ্রহণ করতে না চায় একই বাড়িতে থেকে সাদাফের এই বিহেভিয়ার কি দেখতে পারবে নুর?সহ্য করতে পারবে নুর?
যদি সাদাফ নুরকে ভবিষ্যতে কখন এগুলো নিয়ে খোটা দেয় ?যদি ছেড়ে দিতে চায় ?তখন তো সাদাফ নতুন করে বিয়ে করলে এই বাড়িতেই বউ নিয়ে থাকবে ।নুরের কি হবে? নুর এই অপমান মানতে পারবে?উনি যেন আর কিছু ভাবতে পারছেন না ।অদূর ভবিষ্যতের কথা ভেবে যেন উনার মাথা ব্যথায় টনটন করছিল।
বারবার শুধু একই চিন্তা একই বাড়িতে থেকে যদি মেয়েটা কষ্টে থাকে এই কষ্ট নিজের চোখে দেখবে কি করে ফজলুর রহমান ?নূর বা কি করে সহ্য করবে সাদাফের এমন ব্যবহার।এখন তো সাদাফ জানেনা সাদাফ জানলে কি করবে ?সেটা ভেবেই টেনশন হচ্ছে ফজলুর রহমানের। কারণ মানুষ মুখে যাই বলুক সন্তান একটা স্বামী-স্ত্রী জীবনে অনেক বড় একটা ব্যাপার ।সারা জীবন সন্তানহীন হয়ে থাকাটা কম বড় ব্যাপার নয় ।সাদাফ কি মেনে নুরের এই দুর্বলতা?
সাদাফ এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিল নুরের দিকে।নুর ঘুমাচ্ছে শান্তিতে ।যেন এই মুহূর্তে কোন ব্যথা নেই কোন কষ্ট নেই ।হঠাৎ সাদাফের মোবাইলে রিং বেজে উঠলো।ফোনের ভলিউম অল্প তাও টের পেলেন ফজলুর রহমান।সাদাফ মোবাইলের দিকে তাকিয়ে দেখল ,”সাজিদ অর্থাৎ আকাশ আহমেদ।”
সাদাফ নুরের হাতটি হালকা করে ছেড়ে সুন্দর করে বিছানায় রেখে নূরের উপরে একটি চাদর দিয়ে ধীরে ধীরে ফোন নিয়ে বাইরে চলে গেলো। ফজলুর রহমান তাকিয়ে রইলেন হঠাৎ সাদাফ বাইরে চলে যাচ্ছে কেন ?এতক্ষণ তো বেহায়ার মতো হাত ধরে ছিল হঠাৎ কি হল?
সাদাফ বাইরে গিয়েই ফোনটি রিসিভ করে কানে ধরতেই সাথে সাথে সাজিদ বলে উঠলো ,”কিরে তোর পেয়সী সে নাকি হসপিটালে ?কি হয়েছে?”
সাদাফ এখন আর অবাক হচ্ছেনা ।জানে অবশ্যই নূরের ব্যাপারে খোঁজখবর রেখেছে তাই বললো,”প্রেয়সী না বিয়ে করা বউ।”
সাজিদ জোরে শব্দ করে হাসলো । হেসে বললো,” ওই তো প্রেয়সীর মতোই ।বিয়ে করেই তো বাড়ি ছাড়া হয়েছিস তাই এখনো বউ বলা না।তবে যাই বলিস তোর বউকে নিজের বউ বলে ভাবতে ভীষণ ভালো লাগে।”
সাদাফ মুচকি হাসলো তবে ভিতরে ভিতরে রাগে কাঁপছে।সাদাফ বললো,” অতটুকুই ভাবিস যতটুকু ভাবলে সরি বলার অবকাশ পাবি ।পার পেয়ে যাবি ।এর চেয়ে বেশি গভীরে গেলে পার পাবি না ।নিশ্চয় ছয় বছর আগের ঘটনা মনে আছে ?তুচ্ছ একটা ঘটনার জন্য যদি এত বড় মূল্য তোকে দিতে হয় তাহলে আমার বউকে নিজের বলে ভাবতে চাইলে কতটুকু মূল্য তোর দিতে হবে সেটা ভেবে তারপরে ভাববি!”
সাজিদ বললো,”সেটা সময় হলে বোঝা যাবে ।আপাতত তোর প্রেয়সী সরি তোর বউয়ের জন্য শুভকামনা রইল দোয়া করি তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে যাক।
আর হ্যাঁ শত্রু হলেও ভালো মনের শত্রু আমি সব সময় খোঁজ খবর রাখি ।তুই তো কোন খোঁজ খবর রাখিস না।”
সাদাফ রাগে থরথর করে কাঁপছে ।একটি কথাও বলতে পারছে না চুপ করে আছে ।সাদাফ কথায় নয় কাজে-কর্মে বিশ্বাসী ।তাই চুপ করে থাকাই শ্রেয় মনে করলো।
মনে মনে শুধু প্রতিজ্ঞা করলো ছাড় পেয়েছিলি কিন্তু এখন আমার বউয়ের কথা একবার শুধু ভাবলেও তুই ছাড় পাবে না ।এর জন্য তোকে কঠিন মূল্য দিতে হবে সাজিদ। নূরের দিকে চোখ তুলে তাকানোর অধিকার এ পৃথিবীতে কারো নেই আমি ব্যতীত।
চলবে_
Share On:
TAGS: নীলা রহমান, সুখময় যন্ত্রণা তুমি
CLICK HERE GO TO OUR HOME PAGE
-
সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ৫৯
-
সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ৮৭
-
সুখময় যন্ত্রনা তুমি পর্ব ৯৩
-
সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ১৫+১৬
-
সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ৬
-
সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ৮১
-
সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ৫৮
-
সুখময় যন্ত্রনা তুমি পর্ব ৪৭
-
সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ৪
-
সুখময় যন্ত্রনা তুমি পর্ব ৪১