Golpo romantic golpo সুখময় যন্ত্রণা তুমি

সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ১১+১২


#সুখময়_যন্ত্রনা_তুমি

#neela_rahman

#পর্ব_১১

বারোটা বাজতে 15 মিনিট বাকি আছে এখন নূরকে জাগাতে হবে কিন্তু নূরকে কিভাবে জাগাবে সাদাফের নিজেরই তো অবস্থা খারাপ।

সাদাফের কপাল ঘেমে চুইয়ে চুইয়ে ঘাম পড়ছে। হাত অস্বাভাবিক ভাবে কাঁপছে। সাদাফ বুঝলো আর এভাবে থাকা যাচ্ছে না ।তাই নূরকে হালকা করে একটু ডাকলো ,”নূর ঘুম থেকে ওঠ।নুর? নুর?”

পরেরবার ডাকটি একটু হালকা জোরে হয় নূরে চোখ খুলো ঘুম ভেঙে গেল ঘুম ভেঙ্গেই সাদাফকে এত কাছে দেখে প্রথমে ভয় পেয়ে গেল নুর তারপর খেয়াল করলো সাদা ফের হাত নুর জাপটে ধরে আছে।

সাথে সাথে হাতটি ছাড়িয়ে দিয়ে নিজে ঠিক হয়ে বসল। বসে বলল ,”আপনি এখানে এত রাতে?”

সাদাফ বলল ,”জরুরী কাজ আছে একটু ছাদে আয়।”

নূর বললো ,”কি কাজ ?”

সাদাফ বলল ,”জরুরী কাজ ।গেলে দেখতে পারবি তাড়াতাড়ি একটু আয় ।”

বলেই নূরের হাত ধরে ছাদের উদ্দেশ্যে রওনা দিল সাদাফ।

নুর বলল ,”ছাড়ুন যাচ্ছি তো ।”

সাদাফ বলল ,”না আমার সাথে আর দেরি করা যাবে না তাড়াতাড়ি।”

ছাদের কাছে কাছে গিয়ে দেখল নুর ঘুটঘুটে অন্ধকার । সাদাফের নুরের দিকে তাকিয়ে বলল ,”এরকম অন্ধকার কেন ছাদ আর আমাকে এখানে কেন নিয়ে এসেছেন এত রাতে এখানে কি কাজ??

আপনি আবার দুপুরের জন্য আমাকে মারবেন না তো?”

সাদাফ অবাক হয়ে তাকালো নুরের দিকে ।তারপর বললো,”হ্যাঁ মারবো ।আজকে মেরেই ফেলবো ছাদে নিয়ে।”

মনে মনে বললো হাঁদারাম একটা।

ছাদে পা রাখতেই হঠাৎ করে ছাদে সবগুলো লাইট জ্বলে উঠলো ।ফেইরিলাইটস গুলো অন হয়ে গেল ।পুরো ছাদ আলোকসজ্জায় সজ্জিত।

বেলুন ক্যান্ডেল লাইট ফেইরি লাইট ফুল দিয়ে পুরো ছাদ এত সুন্দর করে সাজানো হয়েছে নূর দেখে অবাক হয়ে গেল।

ওর এই ষোল বছরের জন্মদিনে কখনো এরকম হয়নি ১৭ তম জন্মদিন যেন আসলেই অদ্ভুত সারাদিন মন খারাপ করেছিল অথচ রাতে এসে দেখছে ওর জন্য কত আয়োজন যা কখনো দেখেনি নূর।

এ বছরে জন্মদিনটা আসলে অনেক স্পেশাল মনে হচ্ছে নূরের কাছে কারণটা কি সাদাফ ভাই ?হয়তো সাদাফ ভাই ।মনে মনে ভাবলো নূর । নীলা রহমান লেখিকা।আচ্ছা সাদাফ ভাই যে প্রশ্নটা করেছে তার উত্তর কি নূর এখনো জানে ?”নুর মনে মনে ভাবল।

নূরের ভাবনার মাঝে সবাই সারপ্রাইজ বলে একসাথে নূরের সামনে এসে নূরকে চমকে দিল ।নুর একে একে তাকিয়ে দেখল সবাই কত সুন্দর করে রেডি হয়ে ওকে উইশ করছে ।হঠাৎ করে নিজের দিকে তাকালো নুর। দেখল ঘরে রাতের শোয়ার পোষাকে রয়েছে এখনো।

সাথে দৃষ্টি ঘুরিয়ে সাদাফের দিকে তাকালো ।এক বুক রাগ জমা হলো সাদাফের উপর।আজকে ওর জন্মদিন সবাই কত সুন্দর করে সাজুগুজু করে ওকে উইশ করছে অথচ ওর জন্মদিন ওকে এইভাবে নিয়ে এসেছে সাদাফ জোর করে। নীলা রহমান অরিজিনাল লেখিকা।সাদাফ চোখ দিয়ে ইশারা করল ঠিক আছে কোন সমস্যা নেই ।নূর সাদাফের কথা চুপচাপ শুনে সামনে এগিয়ে গেল ।হুমায়ূর রহমান এগিয়ে এসে বলল ,”হ্যাপি বার্থডে মামুনি এই নাও তোমার বার্থডে গিফট।”

পরে ফজলুর রহমান সামিহা বেগম এবং নওরিন আফরোজ এসে তাদের গিফট নুরের হাতে ধরিয়ে দিলো ।নূর এত গিফট হাতে রাখতে পারছে না টেবিলের রাখল ।এরপর আসলো সাইমন এবং রিমা।নুর তাকিয়ে আছে সাদাফের দিকে ।কিন্তু সাদাফের হাতে কোন গিফট নেই।

সাদাফ এমন একটা ভাব যেন কিছুই। হয়নি ।নূরের মন খারাপ হয়ে গেল সবাই ওকে গিফট করল কিন্তু সাদাফ কোন গিফট করলো না ।সবাই বলল ,”আসো কেক কাটবো ।নুর এগিয়ে গেল কেকের দিকে ।কেক কেটে সবাইকে একটু একটু করে খাওয়ালো ।কিন্তু সাদাফ দূরে দাঁড়িয়ে রইলো কাছে আসলো না।”

কেক কাটা হয়ে গেলে সবাই একে একে নুরকে কেক খাইয়া উইশ করল ।কিছুক্ষণ পর সবাই নিচে নেমে এলো ঠিক হল কালকে সবাই বেড়াতে যাবে এবং দুপুরে লাঞ্চ বাইরে করবে ।নুর খুশি হলো। অনেকদিন হলো বাইরে বেড়াতে যায় না কিন্তু ভিতরে ভিতরে মন খারাপ সাদাফ ওর জন্য কোন উপহার নিয়ে আসেনি।

নুর নিজের রুমে চলে এসে দরজা চাপিয়ে দিল। ভিতরে ঢুকেই নূর অবাক হয়ে গেল অনেকগুলো বক্স সাথে ফুল কয়েক বক্স চকলেট টেডি বিয়ার কয়েকটি পুতুল আরো কত কি ।এগুলো কে রাখল এখানে ?এগুলো তো এখানে ছিল না ! নূর একে একে সবগুলো গিফট খুলে দেখতে লাগলো ।একটা জায়গায় দেখতে পেলেও ১৬ টি প্যাকেট।

প্রত্যেকটা প্যাকেট খুলে খুলে দেখল নূর। প্রত্যেকটি বার্থডেতে জন্মদিনের জন্য গিফট কেনা ছিল শুধু দেওয়া হয়নি ।সুন্দর করে কার্ড লেখা আছে প্রত্যেক জন্মদিনে সেই বয়স সেই অনুভূতি অনুযায়ী কিছু একটা লেখা ছিল নূরের জন্য।

প্রত্যেকটি কার্ডে নূরের জন্মদিন এবং বয়স উল্লেখ করে উইশ করা আছে তবে কোথাও এক ফোটা রোমান্টিক কিছু বলা নেই ।নূর হতাশ হলো ।মন খারাপ হলো।বান্ধবীদের দেখেছে ওদের বয়ফ্রেন্ডরা যখন জন্মদিনে উইশ করেছে কত সুন্দর রোমান্টিক কথা লিখে উইশ করেছে।

নুরের জন্মদিনের কার্ডগুলো শুধুমাত্র হ্যাপি বার্থডে পঞ্চদশী কন্যা হ্যাপি বার্থডে ষোড়শী কন্যা লেখা।এগুলো কোন উইশ করা হলো ?কোন রোমান্টিক কথাই নেই

এতে ।

নুর চুপচাপ গিফট গুলো দেখতে লাগলো।

কোন জন্মদিনে দেওয়া চুরি কোন জন্মদিনে দেওয়া নূপুর কোন জন্মদিনে সোনার আংটি কোন জন্মদিনে মেকআপ নুরের যা যা পছন্দ সেই সব কিছুই যেন একটি একটি করে দিয়েছে।

১৬ তম জন্মদিনের প্যাকেট টির নুর খুললো ।দেখলো সেখানে সুন্দর একটি শাড়ি প্যাক করা।এবার বুঝতে পারল সাদাফ ভাই ওকে শাড়ি পড়া দেখতে চায়। নীলা রহমান।যার জন্য শুরু থেকেই চুরি গয়না মেকআপ নুপুর সবকিছু দিয়ে রেখেছিল ।আজকে যেন উপহারটি পূর্ণতা পেল ।নুর ঠিক করল আগামীকাল এই শাড়ি চুরি এই গয়না এই পড়ে বাহিরে বের হবে দেখবে সাদাফের রিএকশন।

নূর তাই করল যা সে ঠিক করেছিল ।সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে শাড়ি চুরি গয়না পায়েল টিপ পড়ে নুর রেডি হয়ে গেল ।নুরকে দেখে সবাই অবাক হয়ে গেল হুমায়ুন রহমান ও ফজলুর রহমান নূরকে দেখে বলল কিরে মা আজহারী শাড়ি কোথায় পেলি??

মামুনি তো আমাদের বড় হয়ে গেছে।

নওরিন আফরোজ ও সামিহা বেগম বললেন তাই তো দেখছি ভাবি এটা শাড়ি কোথায় পেলি রে এ শাড়ি তো আমার নয় কে দিয়েছে কোন ফ্রেন্ড গিফট করেছে??

নূরের কেন যেন মুখ দিয়ে বের হলো না এগুলো সাদাব ভাই গিফট করেছে তাই বলল ,”হ্যাঁ বান্ধবীরা গিফট করেছে।”

সবাই খুব খুশি হচ্ছে তবে এখনো দেখেনি সাদাফ।সাদাফ দেখলো কি করবে নুর শুধু সেটাই জানতে চাচ্ছে ।বারবার সিঁড়ির দিকে তাকাচ্ছে সাদাফ ভাই নামছে না কেন?

নূরের আর তর সইছে না ।সাদাফ উপর থেকে নামছে না ।তাই নিজেই সিঁড়ি বেয়ে বেয়ে একটু একটু করে উপরে উঠতে লাগলো ।সাদাফের রুমের আশেপাশে এসে উকি মারতেই সাদাফ বলল ,”দরজা খোলা আছে ভিতরে আয়।”

নুর মনে মনে ভাবলো কি করে বুঝলে লোকটা আমি এসেছি ।তারপরও মনে সাহস নিয়ে দরজা খুলে ভিতর প্রবেশ করলো নূর ।নূর ভিতরে প্রবেশ করেই দেখলো সাদাফ গোসল করে মাত্র বের হয়েছে।

ব্ল্যাক ট্রাউজার এবং অ্যাস কালারের টি-শার্ট পরা গলায় টাওয়েল ঝুলানো ।চুল বেয়ে বেয়ে পানি টুপটুপ করে পড়ছে ।নূর যেন সব কিছু ভুলে গেল ।এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল সাদাফের দিকে।

এদিকে সাদাফের অবস্থাও নাজেহাল।

নূরকে এই রূপে দেখে সাদাফের যেন ভিমরি খাওয়ার জোগাড় ।এরকম তো কখনো দেখেনি নূরকে ।ঠিক যেন বউ বউ লাগছে ।সাদাফ বারবার শুকনো ঢোক গিলছে ।কিন্তু মুখে কোন কথা বলতে পারছে না ।নীলা রহমান লেখিকা।এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে নূরের দিকে ।নুরও সেরকম চুপচাপ সাদাফের দিকে তাকিয়ে আছে ।সাদাফ কে দেখতে আজ এত ভালো লাগছে কেন নূরের কাছে ?

অদ্ভুত কি লাগছে বা অজানা এমন কি আছে যা সাদাফের দিকে নূরকে বারবার টানছে ?

ভাবতে লাগলো নুর।

সাদাফ কে বারবার আকর্ষণ করছে নূরের এই নারীসুলভ কায়া।

সাদাফ ধীরে ধীরে এগিয়ে এলো নূরের কাছে ।কিন্তু মুখ ফুটে একটি কথা বলেনি নূর।ঠিক সামনাসামনি এসে দাঁড়াতেই নূর এক পা দু পা করে পিছিয়ে যেতে লাগলো ।নূরের কেমন যেন ভয় ভয় লাগছে ।সাথে হচ্ছে সারা শরীরে শিহরণ।

যতই একটু একটু করে এগোচ্ছে সাদাফ নুর একটু একটু করে পিছাচ্ছে ।এভাবে গিয়ে একেবারে দেয়ালের সাথে চেপে গেল নুর ।আর যাওয়ার কোন জায়গা নেই সাদাফ দুই হাত নূরের দুই পাশে রেখে বললো ,”কেন এসেছিস এখানে??”

নুর আমতা আমতা করে বলল,”আমি আমি তো আপনাকে………… আর কিছু বলতে পারলো না নুর ।সাদাফ এক আঙুল রাখলো নূরের ঠোঁটে ।তারপর বলল ,”হুঁশ ! আরেকটি কথা বলবি না ।সাথে সাথে সাদাফ ঠোঁট ছোয়ালো নূরের কাঁধে ।নূর চোখ বন্ধ করে ফেলল।

চলবে…………………

Neela Rahman

কপি করা সম্পূর্ণ নিষেধ

গাড়িতে বসে লিখেছি ।বানান ভুল হতে পারে ।রিচেক দেওয়া হয়নি ভুল ত্রুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন ।ভালো লাগলে অবশ্যই বেশি বেশি করে লাইক কমেন্ট শেয়ার করবেন।

#সুখময়_যন্ত্রনা_তুমি( রোমান্টিক)

#neela_rahman

#পর্ব_১২

সাদাফ নুরের কাঁধে হালকা হালকা করে ঠোঁট ছোয়ালো।গালে নাক ঘষতে লাগলো।নুর সাদাফের স্পর্শে কেঁপে উঠল ।বন্ধ করে ফেললো চোখ ।

ধীরে ধীরে নিঃশ্বাস যেন ভারী হতে লাগলো নুরের।

সাদাফ ধীরে ধীরে চোখ খুলে নুরের দিকে তাকালো ।তারপর বলল ,”শাড়ি পড়ে তোকে অনেক সুন্দর লাগছে নুর। পরিপূর্ণ নারী মনে হচ্ছে।কেমন পা*গল পা*গল লাগছে নিজেকে আজ।সব দোষ তোর নুর।কেনো এই রুপে এলি আমার সামনে? নীলা রহমান লেখিকা। তুই আমার রুমে কেন দেখাতে আসলি নূর??”

নূর আমতা আমতা করে বলল ,”আপনি উপহার দিয়েছেন তাই আপনাকে দেখাতে এসেছি ।”

সাদাফ মুখ তুলে নুরের দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসলো ।তারপর বলল ,”তুই কি করে বুঝলি এগুলো আমি দিয়েছি ?অন্য কেউ তো দিতে পারে ?আমি তো কোন গিফট আনিনি তোর জন্য।”

নুর বলল ,”বাড়িতে সবাই গিফট দিয়েছিল শুধু আপনি দেননি ।তাই ভেবেছি আপনি দিয়েছেন ।”

সাদাফ নুরের দিকে ঘোর লাগা দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে বলল ,”আমার রুমে আমাকে দেখাতে এসেছিস ।সবাইকে দেখিয়েছিলি রুমে যেয়ে?”

নুর মাথা ঝুকিয়ে না করল ।

সাদাফ তারপরে নূরের কানে হালকা ঠোঁটের স্পর্শ দিয়ে ফিসফিস করে বলল ,”শুধু আমার রুমে দেখাতে এসেছিস ?কেন এসেছিস নুর ?

প্রশ্ন করেছিলি নিজেকে আমি কে হই তোর?কেনো কিছু নিজে থেকে বুঝে নিসনা না?কেনো আমার স্পর্শ বুঝতে পারিস না?”

নুর কোন কিছু বলতে পারছে না ।কোন উত্তর দিতে পারছে না ।সাদাফের ঠোঁটে নরম স্পর্শে নূর ধীরে ধীরে গলে যাচ্ছে । শিহরিত হচ্ছে তনু মন।চোখ বুজে আসছে।

সুখময় যন্ত্রনা অনুভব হচ্ছে। কোথাও যেনো ব্যাথা হচ্ছে নুরের।সারা শরীরে মৃদু কম্পন শুরু হলো নুরের।সাদাফ অনুভব করলো নুরের প্রতিটি কম্পন। নীলা রহমান

নুর কোনমতে মুখ দিয়ে উচ্চারণ করল আমি …আমি …প্রশ্ন করেছি …আমি আর কিছু বলতে পারছে না নুর ।

সাদাফ নুরের দিকে তাকিয়ে বলল ,”রুম থেকে যা নুর।এখানে আর এক মুহুর্ত থাকলে ভয়ংকর প্রলয় হবে।সব ভে*ঙ্গে চুরে শান্ত হবো আমি।সইতে পারবি আমার তা*ন্ডব?”নুরের গালে নাক ঘষতে ঘষতে কথা গুলো বললো সাদাফ।

তারপর কিছুক্ষণ থেমে নুরের দিকে তাকিয়ে আবার বলতে শুরু করলো সাদাফ ,”নিজেকে প্রশ্ন কর নুর।

নিজেকে প্রশ্ন করবি আমি কি হই তোর ?যেদিন উত্তর দিতে পারবি সেদিন আমার সামনে এসে আমাকে প্রশ্ন করবি। সেদিন আমি তোর সব প্রশ্নের উত্তর দিব কিন্তু আগে নিজেকে প্রশ্ন কর নুর ।সাদাফ তোর কি হয় ।সাদাফকে তুই কেন সবার চেয়ে আলাদা চোখে দেখিস ?সাদাফ কে তুই কেন শাড়ি পরে একা রুমে দেখাতে এসেছিস ?নিজেকে প্রশ্ন করবি নূর। চোখ বন্ধ করে বুকে হাত দিয়ে প্রত্যেকটি হৃদয় স্পন্দন অনুভব করে নিজেকে প্রশ্ন করবি।”

বলেই নূরের গালে হালকা করে ছোট্ট চু*মু এঁকে দিল সাদাফ।

তারপর সাথে সাথে নূরের থেকে সরে গিয়ে নূরের দিকে তাকিয়ে বলল ,”রুম থেকে যা নূর। আমার ভিতরে তোলপাড় হচ্ছে ভীষণ ভয়ঙ্কর ঝড় তৈরি হয়েছে ।এখানে থাকলে তুই লণ্ডভণ্ড হয়ে যাবি রুম থেকে যা।”

নূর সাথে সাথে দৌড়ে রুম থেকে বের হয়ে গেল ।বের হয়ে নিজের রুমে গিয়ে দরজা লাগিয়ে দরজার সাথে পিঠ ঠেকিয়ে চোখ বন্ধ করে জোরে জোরে নিশ্বাস নিতে লাগলো নুর ।

কি ভ*য়ঙ্কর ভ*য়ংকর কথা বলছিল সাদাফ।কেন এমন অনুভব হচ্ছিল আরেকটু থাকলে দম বন্ধ হয়ে ম*রে যেত নূর।

চোখ বন্ধ করে নূর বারবার সাদাফ কে কল্পনা করছিল ।টাওয়েল পড়া চুল দিয়ে টুপটুপ করে পানি পড়ছে ।গাল বেয়ে পানি টুপ টুপ করে পড়ছে বুকে।

কি অদ্ভুত ভ*য়ংকর সুন্দর লাগছিল সাদাফ ভাইকে ।সাদাফ ভাই কেন বারবার চুম্বকের মতো আকর্ষণ করে নূরকে ।নূর বুঝতে পারছে না কিন্তু এতোটুকু বুঝতে পারছে যেখানে সাদাফ ভাই থাকে সেখানে অদ্ভুত এক টান অনুভব করে নূর। অদৃশ্য এক টান অদৃশ্য এক আকর্ষণ যা দেখা যায় না কিন্তু প্রতিনিয়ত নুরকে নিজের দিকে টানছে অদ্ভুতভাবে টানছে।

কিছুক্ষণ পরে নূরের দরজায় কড়া নাড়লো রিমা ।বললো,”তুই এখনো রেডি হয়ে বের হোসনি ?একটু আগে না নিচে দেখলাম আবার কি রেডি হতে উপরে এলি ?তাড়াতাড়ি বের হ সবাই যাওয়ার জন্য প্রস্তুত তাড়াতাড়ি আয়।”

নুর ভিতর থেকে বললো,”আসছি নিচে যাও আসছি আমি।”

রিমা বলল ,”না আমার সাথে চল ।আবার তোকে রেখে গেলে আবার আমাকে উপর আসতে হবে ।এক্ষুনি বের হও না হলে আমি সাইমনকে বলছি তুই বের হবি না ।দরজা ভেঙে যেন ………সরি সাইমন ভাইকে বলবো না সাদাফ ভাইকে বলবো তুই বের হচ্ছিস না সাদাফ ভাই আসলে তুই সুর সুর করে বের হয়ে যাবি।”

সাদাফের নাম শুনে আবার লজ্জায় লাল হয়ে গেল নুর ।কেউ দেখছে না তারপরও নিজের দিকে নিজে তাকাতে পারছে না লজ্জায় ।

তারপর বলল ,”ঠিক আছে বের হচ্ছে আমি।”

বলেই সাথে সাথে আয়নার সামনে গেল নুর ।নিজেকে একটু দেখে পরিপাটি করে তারপর দরজা

খুললো ।

রিমা বলল ,”কি চেঞ্জ করলি ?একটু আগে যা দেখলাম এখনও তাই শুধু মাঝখান দিয়ে গাল গুলো একটু লাল। শুধু ব্লাশন দিতে এত টাইম লাগালি?”

নুর বলল ,”বাজে কথা বলিস না তো ! চল চল তাড়াতাড়ি চল ।আজকে আমার জন্মদিন আজকে আমার সাথে বুঝে শুনে কথা বলবি । নীলা রহমান।না হলে কিন্তু বড় আব্বুর কাছে আর বাবার কাছে বিচার দিব তোর নামে।

আর সবাই জানে তুই অনেক দুষ্টু ।সবাই আমার সাপোর্ট নিবে তোকে ইচ্ছামত বকা দিবে।”

আচ্ছা চল মেরি মা সবাই তোর পক্ষই নেয়। ছোট তো তাই।মাত্র কয়েক দিনে ছোট কিন্তু একটা নাম হয়ে গেছে ও ছোট ও সব থেকে ভালো ।আর আমরা যেন খারাপ। একটু বড় বলে তোর মতো ভালো হতে পারলাম না চল চল।”

বলেই রিমা ও নূর হাসতে হাসতে উপর থেকে নিচে নামছে ।সাইমন ও সাদাফ তাকিয়ে রইল উপরের দিকে।

হঠাৎ সাইমনের চোখ পরল সাদাফের দিকে ।দেখল সাদাফ ভাইয়ের ঠোঁটে যেন মুচকি একটু হাসি রেখা খেলে গেল ।

সাইমন সাদাফের চোখ অনুসরণ করে তাকালো সিড়ির দিকে।

সাইমন বুঝতে পারছে না সাদাফ ভাই কাকে দেখে হাসছে ?রিমাকে দেখে হাসছে নাকি নুরকে দেখে হাসছে ?কনফিউজ হয়ে গেল সাদাফ।পর মুহুর্তে রিমার দিকে চোখ গেল সাদাফের ।দেখল আজ রিমা কে অদ্ভুত সুন্দর লাগছে।

পরক্ষণে ভাবলো সুন্দর আর এই ডা*ইনি ? ছিঃ আমার রুচি এত খারাপ হলো কি করে ?তারপর নিজের বোনের দিকে তাকাল ।মনে মনে ভাবল আসলে সাদাফ ভাই কাকে দেখে হাসছে।আর হাসলোই বা কেনো?

নুর বের হলো সবার শেষে রিমার সাথে ।বাইরে বের হয়ে দেখল দুটো গাড়ি রেডি ।একটি গাড়িতে যাবে ফজলুর রহমান হুমায়ুন রহমান নওরিন আফরোজ ও সামিহা বেগম আরেকটি গাড়িতে যাবে রিমা নূর সাদাফ ও সায়মন।

সাদাফ গাড়িতে ঢুকে ড্রাইভিং সিটে বসলো পাশে বসলো সাইমন পিছনে বসলো নূর ও রিমা ।সাদাফ লুকিং গ্লাসে একবার আর চোখে নূরকে দেখল ।এই প্রথম শাড়ি পরা নূরকে দেখে সাদাফের ভিতরে যে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছিল তা নিয়ন্ত্রণ করতে সাদাফের অনেক বেগ পেতে হয়েছে।

শুধুমাত্র সাদাফ বলতে পারবে কোন আগুনে জ্ব*লছিল সাদাফ।যে আ‘‘গুন বাইরে থেকে দেখাও যায় না যে আ‘গুন পানি দিয়ে নিভানো যায় না ।দাউদাউ করে জ্ব*লছিল সাদাফের ভিতরে আর একটু হলে হয়তো ভিতরে জ্বলে পু‘ড়ে অঙ্গার হয়ে যেত সাদাফের।

সবাই গাড়িতে উঠে বসলে ড্রাইভ করা শুরু করল ।সাদাফ ধীরে ধীরে এগিয়ে চলল নিজেদের গন্তব্যের উদ্দেশ্যে ।আজকে যাবে একটি রেস্টুরেন্টে সেখানেই ওরা লাঞ্চ করবে এবং বিকালে একটু বেড়াতে যাবে বাইরে তবে আশেপাশে কোথাও ।খুব বেশি একটা দূরে যাবে না যেহেতু রাতের মধ্যেই ব্যাক করতে হবে।

সিদ্ধান্ত হয়েছিল শপিং করবে পরে নূর জানিয়েছে শপিং তো পরের দিনও করতে পারবে কিন্তু নূর আজকে জন্মদিন উপলক্ষে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে চায় দূরে কোথাও যেতে চায়।

কারণ এত বড় বয়সে নূরের আর রিমার দূরে কোথাও বেড়াতে যাওয়া হয়নি ।ছেলেরা তো নিজেরা যেতে পারে কিন্তু ওরা কারো সাথে যেতে পারে না তাই চুপচাপ ঘরমুখ হয়ে বসে থাকতে হয়।

তাই ও বড় আব্বুর ও বাবার কাছে বায়না ধরেছে আজকে ওরা ঢাকার বাইরে দূরে কোথাও গ্রাম্য পরিবেশে নিরিবিলি পরিবেশে একটু বেড়াতে যাবে।

চলবে………..

Neela Rahman

কপি করা সম্পূর্ণ নিষেধ

Share On:

TAGS:



CLICK HERE GO TO OUR HOME PAGE
Related Posts
 

0 Responses

Leave a Reply