সুখময়যন্ত্রনাতুমি
valentinesday #love #family #familytime
পর্ব ১৫১
মেসেজ দেখে থমকে গেল নূরেরই হৃদয় জানে সাদা যা বলেছে তাই করবে দুই মিনিটের মধ্যে রুমে না গেলে সাদা ভাই রুমে চলে আসবে ।নুর সাদাফের রুমে চলে গেলে আরো লজ্জা জনক হবে ব্যাপারটি।
নুর বসে রইল জেদ ধরে।যাবে না আজকে ও ঘরে ।বারবার কেন ও সবার সামনে লজ্জিত হবে নুর।যদি আসতেই হয় তাহলে সাদাফ ভাই আসবে ।সকালে দরজা খুলে সাদাফ ভাই বের হবে ।সবাই সাদাফ ভাইকে দেখবে ।অধৈর্য হবে উনি অথচ সবার কাছে লজ্জিত হবে নূর। মোটেও না।
তাই মেসেজ দেখে কোন রিপ্লাইও করলো না ।চুপচাপ গো ধরে বিছানায় বসে রইল নূর।
বারবার মোবাইলের দিকে তাকাচ্ছে সাদাফ।সাহস দেখে অবাক হচ্ছে সাদাস নূরের। মেসেজের রিপ্লাই ই করল না আসা তো দূর ।সাদাফ মোবাইল হাতে নিয়ে চিন্তা করলো আরেকটি মেসেজ দিবে ।তারপর ভাবলো না আজকে নুর ত্যারামি করবে বুঝতেই পেরেছে তাই চুপচাপ বিছানা থেকে উঠে দাঁড়ালো ।বাইরে বের হবে নুরের রুমে যাবে।
যেই ভাবা সেই কাজ নূরের রুমের বাইরে এসে দরজা নক করলো সাদাফ।নুর জানতো সাদাফ ভাই আসবে তাই ঘুমিয়ে পড়েনি ।অপেক্ষা করছিল ।কিন্তু এখন নূরের একটু ভয় হচ্ছে ।ত্যারামি করে গেল না না জানি এখন সাদাফ ভাই রুমে ঢুকে কি বলবে।
পরে ভাবলো যা খুশি তা ভাবুক নুরের অধিকার আছে যাবে কি যাবে না এটা ডিসাইড করার ।তাই বিছানা থেকে নামলো ।নেমে চুপচাপ দরজা খুলে দিল নূর।
দরজা খুলে নূর দেখল সাদাফ এক হাতে দরযায় দিয়ে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে ছিল ।নুরকে দেখেই সাদাফ ভ্রু কুচকে ইশারা করল ।নূর চুপচাপ হয়ে রইলো।
সাদাফ ভিতর ঢুকে দরজা লাগিয়ে দিল ।তারপর এক পা দু পা করে এগোতে লাগলো ।নুর এক পা দু পা করে পিছোতে পিছোতে ঠাস করে বিছানায় বসে পড়ল।
“আমার রুমে আসতে বলেছিলাম ।আসিস নি কেন ?”বললো সাদাফ।
নুর ভিতরে সাহস সঞ্চয় করল ।কোনমতে আমতা আমতা করে বললো,” বারবার আমি কেন যাব ?আপনারও পা আছে আপনিও হেঁটে হেঁটে আসতে পারেন ।”
সাদাফ অবাক হয়ে তাকালো নূরের দিকে।
মনে মনে ভাবল ,”আসলেই সত্যি ।এটাই হচ্ছে কবুলের পাওয়ার ।যে মেয়ে দুটো কথা বলতে সাহস পেতো না সেই মেয়ে এখন ওকে টক্কর দেয় সমানে সমানে উত্তর দেয়।”
সাদা দীর্ঘশ্বাস ছাড়লো। মনে মনে বললো,”ছোট হোক আর বড় হোক বউ তো ।একদিন না একদিন তো নিজের রূপ দেখাবেই। যেমন সা*প ছোট হোক আর বড় হোক ফণা তুলবেই। বিষ থাকুক আর না থাকুক ।সেরকম তবে বউদের বিষ সব সময় থাকে ।”তাই সাদা মনে মনে হার মেনে নিল ।
চুপচাপ হেটে বিছানার কাছে গিয়েই শুয়ে পড়ল । বললো,” তেল নিয়া একটু চুলটা টেনে মাথা মালিশ করে দে ।”
নূর হাফ ছেড়ে বাঁচল ।আপাতত এখন কার জন্য তো বাঁচল সাদাফ ভাইয়ের হাত থেকে ।সকালেরটা সকালে বুঝা যাবে।
নূর তেল নিয়ে বিছানার কাছে যেতেই সাদাফ তাকালো নূরের দিকে ।তেলের বাটিটা সাইডে রেখে নুরের হাত ধরে ঠাস করে টান দিয়ে নূরকে সাদাফ নিজের বুকে নিয়ে নিল ।তারপর বলল,” সাহস তোর বড্ড বেশি বেড়েছে আজকাল তাই না? আয় পরিক্ষা কতোটা বেড়েছে।”
নূর ভেবেছিল বেঁচে গিয়েছে কিন্তু না। সাদাফের মনে এইটাই ছিল তেল মালিশ তো শুধু বাহানা ।নুর বললো,” দেখুন ?”
সাদাফ বললো,” জি ম্যাডাম দেখতে এসেছি।
পার হয়ে গেল দুদিন ।বাড়ি ভর্তি মেহমানে সমাগম ।সাদাফের বন্ধুরা নূরের একটি বান্ধবী ও দুইটি বন্ধু এবং রিমার বন্ধু বান্ধবী ।সাইমনের বন্ধু-বান্ধবী সবাই বাড়ি ভর্তি এছাড়া আরো গেস্ট রয়েছে।
নুরের বান্ধবী নুরেরর রুমে রিমার বান্ধবী রিমার রুমে।বাকি সব ছেলেদের জন্য দুটো রুম ছেড়ে দেওয়া হল বাকি সব মেয়েদের জন্য একটি রুম ছেড়ে দেওয়া হল। বাকি রুমগুলোতে অন্যান্য আত্মীয়-স্বজনের জন্য ।পুরো বাড়ি ভর্তি মানুষ দেখে বুঝা যাচ্ছে হুলস্থুল লেগে গিয়েছে।
বিকাল পাঁচটা ।সন্ধ্যা সাতটা থেকে হলুদের প্রোগ্রাম শুরু হবে ।নুরকে রেডি করা হচ্ছে নিজের রুমে।
সবাই পার্পল কালারের পাঞ্জাবি পড়বে মেয়েরা গোল্ডেন কালারের শাড়ি।
সন্ধ্যা সাতটা সাদাফ আগে থেকেই ছাদে বন্ধুদের সাথে অবস্থান করছিল ।পার্পল কালারের পাঞ্জাবি সবাই পড়লেও সাদাফ নুরের সাথে ম্যাচিং করে হলুদ কালারের একটি পাঞ্জাবি পড়েছে ।নুর হলুদ কালারের শাড়ি । সাদাফ নিচে যেতে চেয়েছিল ।তবে সবাই বললো না নুরকে নিয়ে আসা হচ্ছে ।একেবারে ছাদে ওকে স্টেজে দেখবি আলাদা করে দেখার কোন সুযোগ নেই ।বন্ধুরা আটকে দিয়েছে তাই সাদাফ যেতে পারেনি।তবে সাদাফের মনটা আনচান আনচান করছে নুরকে এক নজর দেখার জন্য।
হঠাৎ করে হইচই শোনা গেল ।সবাই ছাদে দরজার দিকে তাকালো ।সাদাফ দেখল কয়েকটা মেয়ে সুন্দর ফুলের ওড়না দিয়ে ঢেকে নূরকে নিয়ে আসছে ।সাদাফ এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল নূরের দিকে ।চেহারা দেখা যাচ্ছে না কিন্তু পুরো শরীরে ফুলের বাসন ।
সাদাফ কে যেন এই মুহূর্তে নূর খুব টানছে চুম্বকের মতো টানছে। ঠিক যেন আকাশের পরীর মত লাগছে নুরকে ।নূর ধীরে ধীরে স্টেজের কাছে এসে হাতের পান দুটো সরিয়ে সবাইকে আসসালামুয়ালাইকুম বলে সোফায় বসলো। বসেই সাথে সাথে সামনের দিকে তাকালো নুর ।চোখাচোখি হল সাদাফের সাথে ।দুজন যেন হারিয়ে গেল দুজনের মধ্যে ।হঠাৎ করে সাদাফ বলে উঠলো ,”আমার পরীটা কত বড় হয়ে গেল ।”
সোহান বলল ,”হ্যাঁ দেখতে দেখতে কত বড় হয়ে গেল ।”
সাদাফ বললো ,”না দেখতে দেখতে বড় হয়নি ।দিনরাত পরিশ্রম করে বড় করেছি ।”
সোহান বললো দিনেও রাতেও কেমনে কি দোস্ত।”
সাদাফ ঘার না ঘুরিয়ে বললো ,”দিনে রাতে বলতে কোলে পিঠে করে মানুষ করেছি ।অনেক পরিশ্রম করেছি ।”
সোহান আবার আরেকটু টিপ্পনি কাট*ল ।বললো,”কোলে করে বুঝলাম কিন্তু পিঠে করে কিভাবে কি করে সেটা তো বুঝলাম না।”
এবার তাকালো সোহানের দিকে । বললো,” বাজে কথা রাখ। ওকে আমি ছোটবেলা থেকে নিজের কোলে করে মানুষ করেছি ।”
সোহান বললো,” এজন্যই তো তুই ভাগ্যবান নিজের বউকে নিজের কোলে করে মানুষ করেছিস ।মানুষ তো বড় হলে বাসর রাতে একবারে বউকে দেখে তুই তো জন্মের পর থেকে দেখে আসছিস।”
চলবে__
সুখময়যন্ত্রনাতুমি
neela_rahman
পর্ব ১৫২
সাদাফ কে স্টেজে বসানো হলো। নূর পাশাপাশি বসে আছে ।সাদাফের চোখ শুধু নূরের দিকে নিবদ্ধ ।চোখ যেন সরাতে পারছে না ও ।ছোট্ট পরীটার দিকে তাকিয়ে ভাবছে কিভাবে পরী টা দিন দিন বড় হয়ে গেল !ভাবতে পারছে না সাদাফ পরীটা আজ ওর অর্ধাঙ্গিনী সকলের সামনে ।সাদাফ যা চুপে চুপে জানত মনে মনে মানতো তা আজ সকলের সামনে স্বীকৃত।
নুর হঠাৎ মাথা তুলে তাকালো সাদাফের দিকে । দেখলো সাদাফ এক দৃষ্টিতে এখনো নূরের দিকে তাকিয়ে আছে ।নুর লজ্জা পাচ্ছে ।চোখ দিয়ে ইশারা করল ।জানতে চাইলো কি ?
সাদাফ বললো ,”কিছু না ।”
কিন্তু তারপরও তাকিয়ে রইল।
নুর ধীরে ধীরে বললো,” সবাই দেখছে চোখ সরান ।”
সাদাফ বললো,” দেখুক ।আমার তাতে কিছু যায় আসে না।”
নুর জানে সাদাফ ভাইকে কোন কিছু বলে লাভ নেই উনার যা ইচ্ছা তাই করবে ।তাই নুর নিজে মাথা নিচু করে ফেলল ।একে একে সবাই এসে হলুদ দিতে লাগলো নূর ও সাদাফ কে।
একে একে সবার হলুদ দেওয়া শেষ হয়ে গেলে শুরু হল ডান্স প্রোগ্রাম ।রিমা নূর সাদাব সাইমন সবার বন্ধু প্রায় একসাথে ফ্লোর যেন মাতিয়ে রাখল ।প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে চলল এই ফাংশন ।সাবা চুপচাপ বসে আছে হাজবেন্ডের সাথে ।আজকে সাবা ডান্স করবে না।
সোহান এসে বললো,” কিরে তুই এত ভদ্র বেশ ধরে এখানে বসে আছিস ?দুলাভাইকে দেখে ভয় পাচ্ছিস বুঝি।”
সাবা বললো,” মোটেও না ।তোর দুলাভাই এমন না ।এমনি ডান্স করছি না আজকে ভালো লাগছে না তাই।”
সাবার হাসবেন্ড নাম হিমেল । বললো,” যাওনা ডান্স করো। সমস্যা নেই ।আচ্ছা চলো আমিও যাচ্ছি ।বন্ধুদের বিয়ে জীবনে একবার ই আসে বার বার আসবে না ।”
বলেই হিমেল সাবার হাত ধরে স্টেজে নিয়ে গেল।
সাদাফ আর নূর বসে রইল ।সোহান এলো সাদাফ এর কাছে । বললো,” তুই বসে থাকলে তো হবে না ।বর কনেকে অবশ্যই ডান্স করতে হবে ।”
বলেই নূর আর সাদাফের হাত দুই হাত দিয়ে ধরে ওদেরকে স্টেজে নিয়ে আসলো ।এসে বললো,” সবাই চুপচাপ দাঁড়াও এখন সাদাফ আর নুর তাপস ডান্স করবে।”
সাদাফ বললো তোদের মত এত উরাধুরা ডান্স আমি করতে পারি না ।নূরের দিকে তাকালো সাদাফ । বললো,” সফ্ট মিফজিকে ডান্স করি কেমন হবে?”
নুর লজ্জা পেল ।নুর তেমন কখনো ডান্স করেনি ।সাদাফ নুরের হাত ধরে মিউজিক বয়দের বললো,” সফট একটি মিউজিক প্লে করার জন্য।”
সবাই গোল করে ঘিরে আছে সাদাফ ও নুর কে।স্টেজের স্পটলাইট এখন নূর ও সাদাফের উপরে।
মিউজিক প্লে করা হলো__
তুমি হো পাস মেরে সাথ মেরে
হো তুম ইউ
জিতনা মেহসুস কারু ইনকো
উতনা হি পা ভি লু……….
নূরকে নিয়ে খুব ধীরে ধীরে হালকা একটু ডান্স করল সাদাফ।যতটুকু না করলেই নয় ।নুর লজ্জা পাচ্ছে ভিষন।মিউজিক শেষ হতেই সবাই করতালি দিয়ে ওদেরকে অভিনন্দন জানালো।
ছাদে এখন মুরুব্বীরা কেউ নেই ।সাদাফ নুরের দিকে তাকিয়ে দেখলো নুর লজ্জা পাচ্ছে।তাই সাদাফ জড়িয়ে ধরল নূরকে ।নূর লজ্জায় কাচুমাচু হয়ে সাদাফের বুকে এ কপাল ঠিকিয়ে রইল।
সাইমন একটু দূরে সরে গেল ।শত হলেও ছোট বোন তাই আর এখানে দাঁড়ালো না ।রিমা দেখলো সাইমন কোথায় যেন যাচ্ছে তাই রিমা ও পিছন পিছন গেল।
কিছু দূর যেতে সায়মন দাঁড়িয়ে গেল ।পিছনে না ঘুরেই বললো ,”আমি জানতাম তুই ঠিকই আমার পিছনে আসবি।”
বলেই পেছনে তাকালো সাইমন ।দেখলো রিমা দাঁড়িয়ে আছে ।এখন ছাদের এই পাশটায় মোটামুটি অন্ধকার আশেপাশে কেউ নেই ।সায়মন এসে রিমার হাত ধরল ।ধরে বললো,”ঐখানে নূর আর সাদাফ ভাইয়া ছিল ।সাদাফ ভাই আমার বড় হলেও নূর আমার ছোট বোন তাই চলে এলাম।”
রিমা বললো,”জানি ।”
সাইমন রিমার হাত ধরে ছাদের রেলিং এর কাছে নিয়ে দাঁড়ালো ।দাঁড়িয়ে বললো,” দেখতে দেখতে সময় কত এগিয়ে গিয়েছে তাই না ?আর একটা বছর !একটা বছর পর বর আম্মু বলেছে তোর হাত আমার হাতে ধুমধাম করে এভাবে তুলে দিবে।”
কথাগুলো বলেই তাকাল রিমার দিকে ।রিমার লজ্জায় মাথা নিচু করে আছে।
সাইমন ধীরে ধীরে একটু এগিয়ে এলো রিমার কাছে ।দুই হাতে আজলে রিমার মুখ টি তুলে বললো ,”আমি তোকে ভীষণ ভালোবাসি রিমা ।একটি বছর কষ্ট করে আমার জন্য অপেক্ষা কর ।একটি বছর পর আমাদের সুন্দর এরকম একটি হলুদ সন্ধ্যা হবে ।আমাদের বিয়ে হবে বাসর হবে ।”
কথাটি বলার সাথে সাথে রিমা চোখ তুলে তাকানো সাইমনের দিকে।
সাইমন মুচকি হাসলো ।হেসে বললো,” এভাবে দেখার কি আছে ?বিয়ে হয়েছে বাসর হবে না ?দেখ না আমি কত সহ্য করছি !তোর আমার বিয়ে তো সেই কবে হয়ে গেছে ।কেউ না জানুক আমি তো জানি তুই আমার বউ। এটলিস্ট আমি অন্তত এটাই মানি তুই আমার বউ।”
রিমা বললো,” আমিও মানি।”
সায়মন বললো,” একটা চু*মু খাই প্লিজ হালকা করে?”
রিমা চোখ বন্ধ করে ফেললো।সখের পুরুষের এমন করুন আবদার কোন নারী যে ফেলতে পারেনা ।রিমা পারলো না ।সাইমন ধীরে ধীরে রিমার ঠোঁটে ছোট্ট করে হালকা একটু পরশ এঁকে দিলো ভালোবাসার।
রিমা চোখ বন্ধ করে ফেলল ।সাইমন মুগ্ধ নয়নে তাকিয়ে রইল রিমার দিকে।
রাতের মত গায়ে হলুদের প্রোগ্রাম প্রায় বারোটা পর্যন্ত চলল ।সবাই যার যার মত নিচে গিয়ে রেস্ট করতে লাগলো ।আজ সাদাফ এবং নুর এক রুমে থাকা নিষেধ ।সাদাফের বন্ধুরা ঠিক করে দিল । বললো কাল যেহেতু বিয়ে আজ আর এক রুমে থাকা ঠিক হবে না ।সাদাফ না চাইলেও বন্ধুতে কথা মানতে হলো আর তাছাড়া সাদাফের রুমে আজ বন্ধুরা মিলে আড্ডা করবে তাই এমনিও সাদাফ চাইলেও যেতে পারবে না।
পরদিন সকাল ৯ টা সবাই ড্রইংরুমে উপরে নিচে যে যেভাবে পারছে নাস্তা করছে ।সাদাফ বন্ধুদের সাথে বসেছে এমন সময় দরজা নক করা শব্দ হলো।
ফজলুর রহমান বাড়িতে নেই তারা বাহিরে গিয়েছে সামিহা বেগম ও নওরিন আফরোজ রান্নাঘরে কাজ করছে ।বাকি বাচ্চাকাচ্চারা সবাই নাস্তা করছিল হাসি ঠাট্টা আনন্দ করছিল।
দরজা নক করার শব্দ হতেই নূর দরজার কাছাকাছি থাকায় নূর দরজা খুলে দেখলো সুন্দরী একটি মেয়ে দাড়িয়ে আছে।পোশাক বেশভূষা দেখেই বুঝা যাচ্ছে বাংলাদেশি হলেও বাংলাদেশে হয়তো থাকে না।
নূরের বুকের ভিতরটা কেমন যেন খচ করে উঠলো ।নুর আমতা আমতা করে জিজ্ঞেস করলো,” কাকে চাইছেন ?”
আগন্তুকটি বললো,” এটা কি সাদাফদের বাড়ি ?সাদাফের সাথে একটু কথা বলার প্রয়োজন ছিল ।”
নূরের যেন আর বুঝতে বাকি নেই ।তারপরও সন্দেহ দূর করার জন্য বললো,” আমাকে বলুন আর আপনার নাম কি?”
দীর্ঘ সময় দরজার কাছে নুরকে দাঁড়ানো থাকতে দেখে সাদাফ উঠে একটু দূর সামনে এগিয়ে জিজ্ঞেস করলো,” দরজায় কে নূর ?কার সাথে কথা বলছিস ?”
সাদাফের কথা শুনেই নূর ঘাড় ঘুরিয়ে পিছনে তাকালো ।সাথে সাথে আগুন্তক টি ও সাদাবকে দেখল ।দেখে এক দৌড়ে সাদাফের কাছে চলে গিয়ে সাদাফকে জড়িয়ে ধরল।
মুহূর্তের মধ্যে এমন ঘটনায় বোকা হয়ে গেল নুর সাথে সাদাফ যেন আকাশ থেকে পড়ল ।
রুমের সবাই হা হয়ে তাকিয়ে রইলো।সোহান সাবার কাছে গিয়ে বললো,” আধ শেষ তোর বন্ধু।”
সাবা বললো,” এই মেয়ে ঠিকানা পেলো কোথায়?”
কি হলো ব্যাপারটা সাদাফ বুঝে উঠতে পারলো না। সাথে সাথে দুই হাত উপরে তুলে নূরের দিকে তাকিয়ে রইল।
নূর এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল সাদাফের দিকে ।সাদাফ কি বলবে বা কি করবে কোন কিছু যেন বুঝে উঠতে পারছে না ।ও চোখ দুটো শুধুমাত্র নূরের দিকে ।সাদাফ কিছুক্ষণ পর রিহার উদ্দেশ্যে বললো,” কি করছো রিহা ছাড়ো বলছি কেন তুমি আমাকে এভাবে জড়িয়ে ধরলে ছাড় বলছি।”
রিহা জড়িয়ে ধরে থাকা অবস্থায় বললো,” আই ওয়াজ মিসিং ইউ ।খুব মনে পড়ছিল তাই চলে এসেছি ।”
সাদাফ বললো,” রিহা প্লিজ লিভ মি ছাড়ো বলছি।”
নুর এখনো তাকিয়ে আছে সাদাফের দিকে ।সাদাফ মেয়েদের সাথে বেয়াদবি বা উচ্চস্বরে কথা বলতে খুব একটা পছন্দ করেনা তারপরও রিহাকে জোর করে নিজের থেকে ছাড়িয়ে বললো,”কি সমস্যা তোমার ?রিহা তুমি এখানে এসে এভাবে আমাকে জড়িয়ে ধরেছো কেন ?আর তোমার মধ্যে আমার কি সম্পর্ক যে মিস করবে ?সরাসরি বাংলাদেশের এসে আমাকে জড়িয়ে ধরবে?”
বলেই সাথে সাথে তাকালো নুরের দিকে ।নূর ধুপ ধাপ পা ফেলে সাদাফকে পাশ কাটিয়ে চলে যাবে এমন সময় সাদাফ বললো,”নূর সো*না প্লিজ আমার কথা শোন ।”
নুর বললো,” ঘরে নিয়ে ডলাডলি করুন এখানে অনেক মানুষ দেখছি।”
সাদাফ তাকালো রিহার দিকে। বিরক্তির চরমসীমায় পৌঁছে গিয়েছে সাদাফ।এই মেয়ের সাথে তো কখনো এই ধরনের সম্পর্ক ছিল না ! কেন আজ এমন একটি ঘটনা ঘটালো তাও নূরের সামনে ।তারপরও সাদাফ নুরের পিছনে যেতে যেতে বললো,” আমার কথাটা একটু শোন নুর প্লিজ।”
নুর ঘাড় ঘুরিয়ে বললো ,”খবরদার আমার পিছনে আসবেন না ।আমি না করে দিচ্ছি ।ওই রিহাকে রুমে নিয়ে যান ।রুমে নিয়ে গিয়ে ডলাডলি করুন ।আমার পিছনে আসার কোন প্রয়োজন নেই ।”
বলেই দৌড়ে গিয়ে নিজের রুমে ঢুকে দরজা লাগিয়ে দিল নুর।
সাদাফ অসহায়ের মতো দাড়িয়ে রইলো।
চলবে__
Share On:
TAGS: নীলা রহমান, সুখময় যন্ত্রণা তুমি
CLICK HERE GO TO OUR HOME PAGE
-
সুখময় যন্ত্রনা তুমি পর্ব ১৬০
-
সুখময় যন্ত্রনা তুমি পর্ব ১০০
-
এক শ্রাবণ মেঘের দিনে গল্পের লিংক
-
সুখময় যন্ত্রনা তুমি পর্ব ১৩৭+১৩৮
-
সুখময় যন্ত্রনা তুমি পর্ব ১৪১+১৪২
-
সুখময় যন্ত্রনা তুমি পর্ব ৪৮
-
এক শ্রাবণ মেঘের দিনে পর্ব ৩
-
সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ৩৫+৩৬
-
সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ২০+২১+২২
-
সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ৬৪