#প্রেমতৃষা
#ইশরাত_জাহান_জেরিন
#পর্ব_৩১
প্রেম রুমের লাইটটা অফ করে গোসলে চলে যায়। ফিরে এসে দেখে তৃষা এখনো বসে বসে শাড়ির সেইফটিপিন খুলছে আর কান্না করছে। ওমা না ধরতেই কান্না? আর ধরলে না জানি এই মেয়ে করেটা কি?
প্রেম গুনগুন করতে করতে ফোনটা হাতে নিয়ে বলল, ‘উফ মেয়ে মানুষকে আল্লাহ ব্রেনের থেকে ঢং বেশি দিয়েছে।’
তৃষা চোখ মুছতে মুছতে উত্তর দিল, ‘দেখুন খোঁচা মারবেন না। সহ্য হয় না ওইসব। এই আমার ফোনটা দেন। আপনার চার্জারটা কই? আমি ফোনটা একটু চার্জে দিব।’
প্রেম ফোনটা আঙুলে ঘুরিয়ে বলল, ‘সুন্দর করে বলো।’
তৃষা ঠোঁট ফুলিয়ে বলল, ‘শুনছেন আমার মহাদয় জাউরা বেডা আপনার ইয়ে টা দিবেন আমি আমার ফোন চার্জ দিব।’
প্রেম ভান করে বিরক্ত হয়ে বলল, ‘তোর মুখের ওপর থু মারি। মুখ তো নয় অংকুরের ফুটো জাঙ্গিয়া। বাংলা ভাষাকে পেছন মেরে একেবারে জাঙ্গিয়ার ছিদ্রের এপাশ থেকে ওপাশ দিয়ে বের করিস স্বামী হই ফাজিল মেয়ে। অসম্মান করলে না সম্মানহানি করে বাসরটা সারব।’
তৃষা ফুঁপিয়ে উঠে বলল, ‘আমি মামলা দিতে জানি।’
প্রেম হাত দুটো প্রসারিত করে সোফায় হেলান দিয়ে বলল, ‘যেখানে মামলা দিবে ওটা আমার শশুর ডেডির বাড়ি। হিটলার শশুর ডেডিরা আবার জব্বর অ্যাপায়ন করতে জানে? বাই দ্য ওয়ে তুমি আমায় মামলা দিতে চাচ্ছো কেন? ওহ সেই সুযোগে যাতে তোমার না হওয়া আইনের লোকের সঙ্গে দেখা সাক্ষাৎ করে চা-নাস্তা খেতে পারো? বউ তুমি আস্ত অসুবিধার লোক একটা।’
তৃষা ঠোঁট কামড়ে অসহিষ্ণু ভঙ্গিতে বলল, ‘ আপনি চার্জার দিবেন?’
প্রেম হেসে কাঁধ ঝাঁকিয়ে বলল, ‘লিসেন আমার চার্জার দিয়ে তোমার ফোন চার্জ হবে না সোনা। আমার ক্যাবেলটা বড়। তোমারটায় জোর খাটালেও আমারটা ঢুকবে না। আইফোন আর এন্ড্রয়েডে তফাৎ আছে। কই লাখ টাকার জিনিস আর কই গুলিস্তানের ডুবলিকেট মাল।’
‘একটু বেশিই কিন্তু অপমান করছেন না?’
প্রেম হেসে এগিয়ে এসে বলল, ‘কোথায় করলাম? আমি না মানুষ বুঝে অপমান করি। তুমি আমার অপমানেরও যোগ্য না সোনা।’
তৃষার মাথাটা রাগে একেবারে ছিঁড়ে যাচ্ছে। সে তেড়ে এসে প্রেমকে জিজ্ঞেস করল, ‘এই সত্যি করে বলুন তো বলুন তো আমাকে কেন বিয়ে করেছেন?’
প্রেম ভ্রু কুঁচকে গম্ভীর ভঙ্গিতে বলল, ‘কেন বিয়ে করেছি মানে? আমার আইনের লোকের জীবন বাঁচাতে বিয়ে করেছি।’
তৃষা অবাক হয়ে তাকাল, বিস্মিত স্বরে বলল, ‘মানে?’
প্রেম হেসে আবার ফোন হাতে ঘুরিয়ে বলল, ‘মানে এই ধরো সে তোমার মতোন বিপদকে বিয়ে করে বিপদে পড়ত এসব কি আমি মেনে নিতে পারতাম? বেআইনের লোক বলে কি আইনের লোকের কদর নেই? আর বিপদ ঘাড়ে নিয়ে ঘুরবার অভ্যাস তো আমাদের। ওইসব কি সাধু বাবা প্রত্যুষ পারত? তাহলে বুঝো ওই ব্যাটা আতরও গোলাপ চন্দন প্রত্যুষকে কতখানি পেছন দিয়ে ভালোবাসি যে তার জন্য নিজের কাঁধে তোমার মতো বউ নামক বিপদ তুলে নিয়েছি? ধন্যবাদ দাও মেয়ে। বদলে চুমু দিলেও মাইন্ড করব না। আমার মন-মাইন্ড অনেক বড় বড়।’
তৃষা চোখ রাঙিয়ে বলল, ‘বড় বড় নমুনা তো দেখছিই।’
‘ওমা কি বলো বউ এখনো তো দেখালামই না।’
তৃষা ঠোঁট বাঁকিয়ে কটাক্ষ করে বলল, ‘আপনি একটা নষ্ট লোক।’
প্রেম গা ঝাঁকিয়ে কাছে এগিয়ে এসে বলল, ‘কাছে আসো আরেকটু নষ্ট হই।’
তৃষা ওয়াশরুমের দিকে এগিয়ে যায়। যাওয়ার সময় প্যাচিয়ে রাখা শাড়ির পায়েরের সঙ্গে হোঁচট খেয়ে পড়ে যেতে নিলে কই ভাবে প্রেম বুঝি তাকে সাহায্য করবে। ওমা উল্টো ঘুরে দেখল প্রেম ওপেনলি জামা বদলাতে ব্যস্ত। কি লজ্জা লজ্জা। তৃষা একটু চেঁচিয়ে বলেছিল, ‘যা মন চায় তাই করবেন নাকি? জামা বদলানোর জন্য তো ওপাশে পর্দা দেওয়া আলাদা রুম আছে। যান না ওখানে।’
প্রেম ভাবলেশহীন ভাবে তৃষাকে বলল, ‘আমার ঘর আমার যেখানে মন চায় জামা বদলাব। দরকার হলে জামা ছাড়া থাকব। কার সমস্যা হচ্ছে তা আমার দেখার বিষয় না।’
তৃষা একটা নিঃশ্বাস ছেড়ে কোনোমতে নিজেকে সামলে ওয়াশরুমে যায়। এখানে আর কিছুক্ষণ থাকলে শেষে ফায়ার সার্ভিস এনেও মাথার আগুন নিভাতে পারবে না।
–
অফিসে সেই কতক্ষণ ধরে কাজ করছে প্রত্যুষ। তৃষাকে তার চাই। তৃষা যদি একটি বার মুখ থেকে বের করে সে প্রত্যুষকে ভালোবাসে না, তাকে সে চায় না, তাহলে কখনো প্রত্যুষ তার সামনেও আসবে না। তবে একটা বার যদি মুখ থেকে বের হয়, ‘আমি তোমার হয়ে থাকতে চাই।’ তবে প্রত্যুষ আগে-পিছে কাউকে দেখবে না। সামনে যেই থাকুক, কোনো অযুহাতেই তৃষার হাত সে ছাড়ছে না। তবে শরীরটা ক্লান্ত। আর নেওয়া যাচ্ছে না। এই প্রেমের কাজ যে এসব, তা জানতে বাকি কিসের? আবার নাও হতে পারে। কারণ সে তো মাস খানেক আগে হারিয়ে গিয়েছিল। আচ্ছা, তৃষার চট্টগ্রামে যেই এমপির সঙ্গে বিয়ে হওয়ার কথা ছিল, সে আবার কিছু করল না তো? এত চাপ আর চাপ। দিন-রাত পরিশ্রম করে মাথাটা এবার সত্যি যাবে। কই, ভেবেছিল বিয়ে করে একটু হালকা হবে। কিন্তু তা নয়, সেই সুযোগ আর কোথায়?
রান্নাটা শেষ করতে পারেনি শিমলা। তার আগেই পেছন থেকে অংকুর এসে তাকে ঝাপটে ধরে পিঠে চুমু খেয়ে বলল, ‘রাখো না জান রান্না। আজ রাত আদর খেয়ে কাজ চালিয়ে নেব।’
শিমলা তার হাত থেকে ছুটে গিয়ে বিরক্তি মাখা স্বরে বলল, ‘ইশ, ওইসবে পেট ভরে?’
অংকুর দুষ্টু হেসে জবাব দিল, ‘ট্রাই করে দেখোই না। পেট আর মন দুটোই ফুল হবে।’
শিমলার লজ্জা লজ্জা লাগে। এই অংকুরটাও না। একটু পরপর এসে জ্বালাতন করে। অংকুর শিমলাকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে সোহাগ বুলাতে যাবে, তার আগেই শিমলা তার মুখটা চেপে ধরে লাজুক গলায় বলল,’আমার না অনেক ভালো লাগছে।’
অংকুর অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করল, ‘কেন বউ?’
শিমলা চোখ নামিয়ে হেসে উত্তর দিল, ‘এই যে প্রেম ভাইয়া আর তৃষার বিয়েটা হয়ে গেল।’
অংকুর মাথা নেড়ে স্বস্তির স্বরে বলল, ‘তা ভালো বলেছো। দু’টো মানুষ দু’দিকে ভালো ছিল না একে অপরকে ছাড়া। একজন বাইক রেইস করতে গিয়ে এক্সিডেন্ট করে একমাস বেড রেস্টে ছিল, অন্যজন জিদের বসে যাকে ভালোবাসে না তাকে বিয়ে করতে বসেছিল।’
শিমলা মুখ গম্ভীর করে বলল, ‘হুম। তবে ওদের তো এখন এক হয়েই যাওয়ার কথা। কিন্তু দেখেছো কেমন গায়ে পড়ে ঝগড়া করে?’
অংকুর হেসে শিমলার চিবুকটা তুলে দিয়ে বলল, ‘বোকা বউ, ওইসব ঝগড়া না গো, ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ।’
শিমলা দুষ্টুমি করে তাকিয়ে বলল, ‘তাহলে আমাদেরও ঝগড়া করা উচিত।’
অংকুর শিমলার গালে চুমু খেয়ে মুচকি হেসে ফিসফিস করে বলল, ‘বিছানায় চলো, আমরাও না হয় ঝগড়া করি।’
–
তৃষার এই পুরো বাড়ি দেখার সুযোগ হয়নি। ওই হারে বজ্জাত লোকটা তাকে এই রুম থেকে বের হতে দিলে তো? এই প্রেমকে একটা মাস যখন দেখেনি তখন কতবার রাগ-জিদ উঠেছিল। কিন্তু যখন হঠাৎ করেই সামনে দেখল তখন মুখে বললেও মন কি আদৌও ঘৃণা পুষে রাখতে পেরেছে? তৃষা একটা নিঃশ্বাস ছাড়ল। বারান্দা থেকে ফিরে এসে প্রেমকে জিজ্ঞেস করল, ‘বলো না কোথায় আমরা? অন্তত জায়গার নামটা বলো।’
প্রেম তখন গিটার নিয়ে কি যেন একটা করছিল। তৃষার কথা শুনে সে ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে বলল, ‘আপনি থেকে তুমি? বাহ! এটা বান্দরবান।’
তৃষা হতভম্ব হয়ে বলল, ‘ওমা এত দূর? কিন্তু এখান থেকে আমাদের চট্টগ্রামে যেতে কিন্তু বেশি সময় লাগবে না। আচ্ছা আপনি আমার ভাইয়ের সঙ্গে কি করেছেন? তৈমুর ঠিক আছে?’
প্রেম আশ্বাসের সুরে গিটারটা নামিয়ে রেখে বলল, ‘শালা বাবুকে কি করে ক্ষতি করব বলো? সে ঠিক আছে। সঙ্গে তোমার পরিবারও।’
তৃষার ঝগড়া করতে ইচ্ছে করছে না। অতিরিক্ত কিছুই ভালো না। হারানো জিনিস হারালে বারবার পাওয়া যায় না। হঠাৎ প্রেম গম্ভীর স্বরে বলে উঠল, ‘নেওয়াজ বংশে কিন্তু আমি ছাড়া আর কেউ নেই।’
তৃষা ক্লান্ত স্বরে বলল ‘জানি তো। এখন কি করতে পারি?’
প্রেম চোখ টিপে বলল, ‘যেহেতু আমাদের বিয়ে হয়েই গেছে এখন বংশ এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব কিন্তু আমাদেরই।’
তৃষা চোখ কুঁচকে বলল, ‘মানে কি বলতে চাইছো?’
প্রেম দৃঢ় কণ্ঠে বলল, ‘যেটা বুঝতে পারছো সেটাই। বাচ্চা লাগবে। বংশ তো আর এভাবে চলতে পারে না।’
তৃষা ব্যঙ্গাত্মক সুরে বলল, ‘ইশ শখ কত? আমাকে জোর করে বিয়ে করা হয়েছে। ভুলে গেছে মিস্টার নেওয়াজ?’
‘জ্বী না মিসেস নেওয়াজ। এখন কথা না বাড়িয়ে এদিকে আসো। বিক্রিয়া তো শুরু করতে হবে। নইলে আবিষ্কার কি করে করব।’
‘মুখে কিছু আটকায় না দেখছি। আর আমাকে ছোঁয়ার কথা ভুলেও ভাবাভাবি চলবে না।’
‘প্রেম ছুলে যে মেয়ে গলে যায় তার মুখে এসব মানায় না। সময় মতো তোমাকে ধরব। প্রস্তুত করো।’ বলেই প্রেম বিছানায় শুয়ে হাই তুলতে তুলতে বলল, ‘ঘুম পাচ্ছে আমার। আমি ঘুমালাম।’
তৃষা খাটের সামনে দাঁড়িয়ে আছে। প্রেম হঠাৎ হাতের ভাজ থেকে মুখ উঠিয়ে বলল, ‘এমন স্ট্যাচু অব লিবার্টির মতো দাঁড়িয়ে আছো কেন? এসে ঘুমাও। দেখো আমার ঘুমের মধ্যে কিন্তু কাপড়চোপড় খুলে ফেলার অভ্যাস আছে। তাই ভেবেচিন্তে থাকবে।’
‘আমি আপনার পাশে শোয়ার জন্য মরে যাচ্ছি না প্রেম নেওয়াজ।’
প্রেম ধূর্ত হেসে বলল, ‘মরবে বউ মরবে। একদিন এই পাশে শোয়ার জন্য, একটু আদর পাওয়ার জন্য পা কেন অন্য কিছু ধরলেও কাজ হবে না।’
তৃষা মাথা ঝাঁকিয়ে বলল, ‘ইশ এমন দিন আমার জীবনে না আসুক। এখন গিয়ে ওই সোফায় শুয়ে পড়ুন।’
‘মাথার নাট বল্টু সব ঢিলে হয়েছে? নাকি বাংলা মদ খেয়েছো?’
তৃষা চোখ বড় করে বলল, ‘কি বলছেন? এসব কেন খাব? যান আপনি সোফায়। মেয়ে মানুষকে ভালো জায়গাটাই দিতে হয় আপনি জানেন না?’
‘না ম্যাডাম আমার তো আপনার মতো এত বিপরীত লিঙ্গের সঙ্গে ঢলাঢলি নেই। এত জানব কেমন করে? যাই হোক আমি খাট ছাড়া ঘুমাতে পারি না। গিয়ে সোনাপাখি আপনি ওই সোফায় শুয়ে পড়ুন।’ বলেই প্রেম তৃষার মুখের ওপর বালিশ ছুঁড়ে মারল। তৃষা এখন না পারছে কিছু বলতে আর না পারছে কিছু সইতে। বালিশটা দিয়ে সোফায় শুতেই প্রেম বাতি বন্ধ করে দেয়। যেই ঝড় তার ওপর দিয়ে গিয়েছে এখন একটু শান্তি মতো ঘুমাতে পারলেই হয়। তবে হঠাৎ করেই মাথায় একটা প্রশ্ন এলো। করবে করবে বলে আর করা হয়নি। সে কপালে হাত রেখে ওপরের দিকে তাকিয়ে নিম্নস্বরে বলল, ‘আচ্ছা আপনার দেয়ালে আমার এত বড় ছবি কেন?’
ওদিক থেকে জবাব এলো। প্রেম অলস হেসে বলল, ‘কারণ দিনে একবার হলেও আমি মনে করতে চাই দুনিয়ার কদাকার নারীটা কে? আচ্ছা সোনা সবাই তো সুন্দর খুঁজে, সুন্দর ছবি দেখে আমি না হয় তোমার মতো একটা দারুচিনিকেই দেখলাম। মহৎ হৃদয় বলে কথা।’
তৃষা আর জবাব দিলো না। এই লোকের সঙ্গে কথা বলে লাভ নেই। উভয় পাশ নীরব হয়ে গেল মুহূর্তেই। শান্ত হয়ে গেল দুইপক্ষের হাজারটা না বলা কথার মিছিল গুলো।
তখন মাঝ রাত। পাহাড়ে জড় উঠেছে। বারান্দা থেকে অন্ধকার রাতের বৃষ্টিমুখর পরিবেশটা দেখতে পাওয়া যাচ্ছে। প্রেম ড্রিম লাইটটা জ্বালিয়ে বারান্দার দরজা বন্ধ করে। তৃষা তখনো ঘুমে বিভোর। ঠান্ডায় গুটি মেরে গুয়ে আছে। প্রেম এসে তার সামনে দাঁড়ায় প্রথমে। অতঃপর তাকে ঘুমের ঘোরে কোলে তুলে বিছানায় তার পাশেই শুইয়ে দিয়ে গায়ে চাদর টেনে দিয়ে নিজে গিয়ে পাশে শোয়। চুলগুলো মুখের ওপর থেকে সরিয়ে দিয়ে ঠোঁটের দিকে তাকিয়েও কপালে আলতো করে একা চুমু বুলিয়ে দেয়। যাতে করে তৃষার ঘুমে ব্যাঘাত না ঘটে। তারপর তৃষাকে নিজের বুকে জড়িয়ে ধরে। প্রেমের উষ্ণ শরীরের ছোঁয়া যেন তৃষাকে আরো বেশি তার দিকে খিঁচে আনে। ঘুমের ঘোরে সে প্রেমের বুকে লেপ্টে যেতেই প্রেমের ঠোঁটের কোণে হাসি ফুটল। সে তার বিটারহার্টকে এমন বৃষ্টিময় রাতের শীতল আবেসে বুকের গভীরে জড়িয়ে ধডে। চোখটা বুজতেই মনটা তৃষাকে উদ্দেশ্য করে বলে ওঠে, ‘
❝অনুভবে আছি আমি,
তোমায় ছুঁয়ে দেখার নেশায়
হারিয়ে গেলে ভিড়ের মাঝে
আর পাবেনা আমায়।❞
চলমান…..
#প্রেমতৃষা
#ইশরাত_জাহান_জেরিন
#পর্ব_৩২
ভোরে ঘুম ভাঙতেই তৃষা নিজেকে আবিষ্কার করল প্রেমের বুকে। সে নড়াচড়া না করে তাকিয়ে রইল প্রেমের ঘুমন্ত মুখশ্রীর দিকে। এই যে শ্যামবর্ণের আকর্ষণীয় একটা পুরুষ, গলার কণ্ঠমণিটা দেখো তার, দেখলেই আবেশে শরীর শিরশির করে ওঠে। মাথার এলোমেলো ঝাড়কা চুলগুলো কপালের সামনে পড়ে আছে। ওই যে বাদামী রঙা চোখের পাপড়িগুলো আছে না, ওইগুলো কত ঘন। মেয়ে হয়েও তৃষার ওমন ঘন পাপড়ি নেই। লোকটা সিগারেট খায়, তবুও ঠোঁটে কালশিটে দাগ নেই। কিছু মাখে নাকি? শরীর কত চকচকা! মাঝে মাঝে তৃষার মনে হয়, এটা কোনো মানুষ না, বরং আস্ত একটা চকলেট আইসক্রিম। খোদা এই পুরুষ জাতিকে এত আকর্ষণ দিয়ে তৈরি করেছে, অথচ দুনিয়া নারীর সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়। আচ্ছা, কবি নারীর সৌন্দর্য নিয়ে লেখার আগে পুরুষজাতিকে দেখেনি? হয়তো অন্ধ কবি দেখেনি। তৃষা আলতো করে প্রেমের চুলে একবার হাত ছুঁয়ে জলদি করে সরিয়ে নেয়। ঘুম ভাঙার পর যদি দেখে তৃষা এইসব করছে, তাহলে লজ্জায় পড়তে হবে। তবে এই প্রেম নেওয়াজের জানা উচিত—জানা উচিত ঠিক ততটা, যতটা না জানলেই নয়। জানা উচিত, তাকে পাওয়ার লড়াইয়ে তৃষা কেমন করে আরেকটা নিষ্পাপ ফুলের হৃদয় বিক্ষিপ্ত করেছে। তৃষা নিঃশ্বাস ছাড়ল। কোনোমতে স্বামীর বুক ছেড়ে বের হয়ে বারান্দায় এসে দাঁড়ালো। রাতে বোধহয় বৃষ্টি হয়েছে। বান্দরবানের এই পাহাড়ের চূড়ার গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে থাকা বাড়িটি থেকে প্রকৃতি কি সুন্দর লাগছে! তৃষার ক্ষুধা পেয়েছে। কি খাবে বুঝতে পারছে না। তার থেকেও বড় কথা—বিয়ে তো তার হলো, কিন্তু সে যে রান্না করতে পারে না! এখন নিজে কি রান্না করে খাবে আর ওই হারে বজ্জাত মানুষটিকে কি খাওয়াবে? আচ্ছা, সমস্যা কোথায়? বিয়ে কি তৃষা তাকে করেছে নাকি? করেছে তো সে নিজেই। এখন ঠেলা বুঝো।
তৃষা বারান্দা থেকে উল্টো পাশে ফিরতেই দেখল প্রেম ঠিক তার পেছন বরাবর দাঁড়িয়ে আছে। তৃষা আচমকা তার এমন আগমন আন্দাজ করতে পারেনি। সে কিছু বলার আগেই প্রেম তাকে বলল,
‘ক্ষুধা পেয়েছে না? ফ্রেশ হয়ে আসো। বাই দ্য ওয়ে, পালানোর চেষ্টা ভুলেও মাথায় আনবে না। এখন তুমি প্রেম নেওয়াজের। জানোই তো, প্রেম নিজের জিনিস কখনোই চায় না অন্যের হোক।’ বলেই প্রেম ওয়াশরুমের দিকে পথ ধরলে তৃষার চোখ যায় প্রেমের ঘাড়ের দিকে। ঠিক ঘাড়ে, যেখানে তৃষার বাটারফ্লাই ট্যাটু—সেখানেই প্রেমেরও একই রকম ট্যাটু। আগে তো খেয়াল করেনি! তৃষা নিশ্চিত হওয়ার জন্য প্রেম ওয়াশরুমে ঢুকতেই আয়নার সামনে গিয়ে দাঁড়াল। উল্টো পাশ ফিরে ঘাড়ের কাছের চুল সরিয়ে ট্যাটু দেখল। ওমা! হুবহু একই। তৃষার এখন সত্যি লজ্জা লজ্জা লাগছে, যদিও ওইসব তার ভেতরে আছে কিনা সন্দেহ।
প্রেম ওয়াশরুম থেকে বের হলো একেবারে সাওয়ার নিয়ে। সকালে ঘুম থেকে উঠে আর রাতে ঘুমানোর আগে গোসল করা প্রেমের জন্য ফরজ। দুপুরে সে কখনো গোসল করে না। তৃষা ওয়াশরুম থেকে জামা পড়ে বাইরে আসতে না আসতেই সব ভিজে একাকার। শেষে তাকে এই অবস্থায় দেখে প্রেম ক্লোজেট থেকে একটা স্কার্ট আর শার্ট বের করে দিল। কাল রুমের সঙ্গে জয়েন করা কাপড় রাখার আলাদা এরিয়ায় গিয়েছিল তৃষা। পুরো একপাশ জুড়ে প্রেমের জামাকাপড়, অন্যপাশ জুড়ে তৃষার। কিন্তু তার জনয় রাখা এতসব জামা আবার পারফেক্ট সাইজের কোথায় পেল প্রেম? মাথায় অনেক প্রশ্ন। তবে এখন উত্তর জানতে ইচ্ছে করছে না। সময় হলে পইপই করে সব কিছুর হিসাব নেওয়া হবে।
তৃষা জামা বদলে তৈরি হয়ে প্রেমের পেছন পেছন টইটই করে কথা না বলে নিচে গেল। সিঁড়ি বেয়ে নিচে নামছিল তখন বুঝতে পারলো কি সুন্দর এবং বড় এই বাড়িটি। প্রেম নেওয়াজের মন মতো সাজানো একেবারে। প্রেমের সঙ্গে তৃষা রান্নাঘরে যেতেই প্রেম তাকে জিজ্ঞেস করল, ‘কি খাবে বলো?’
‘যদি বলি আপনাকে?’
‘আমি প্রস্তুত।’
‘আপনার মাথা খাব।’
‘ওইটা খাওয়ার বাদ কই রেখেছো?’
প্রেম ফ্রিজ থেকে চিকেন সসেজ বের করল। তারপর তৃষার দিকে তাকিয়ে বলল, ‘তুমি না পরোটা পছন্দ করো?’
‘হুম আপনি বানাতে পারেন?’
প্রেম জবাব না দিয়ে ফ্রিজ থেকে রেডিমেড পরোটা বের করে প্যাকেট খুলে ভাজা শুরু করল। তৃষা হা করে তার রান্না দেখছে। এমা এই প্রেম নেওয়াজ কি মাস্টার সেফ ছিল নাকি? প্রেম কিছুক্ষণের মধ্যেই সসেজ, ডিম অমলেট, কমলার শরবত আর ফল কেটে তৃষার সামনে রাখতেই সে প্রশ্ন না করে খাওয়ায় মন দিলো। খাওয়ার সময় তৃষা কথা বলে না। আগে খাওয়া তারপর দুনিয়া দেখা যাবে। সে মনোযোগ দিয়ে খাচ্ছে আর প্রেম তার দিকে তাকিয়ে নিজের তৃপ্তি মেটাচ্ছে। একটা মানুষকে খেতে দেখলেও এত শান্তি লাগে? প্রেম মুখে একটা স্ট্রোবেরি দিয়ে হঠাৎ বলল, ‘আজকে বাইরে যাব।’
‘তারপর…’
‘তারপর আর কি? তুমিও যাচ্ছো আমার সঙ্গে।’
‘আপনি ভুলে যাচ্ছেন আমি এখনো রেগে আছি। শত হলেও আপনি আমার কিডন্যাপার।’
‘কিডন্যাপার বলো না,বলো তোমার শরীর স্পর্শ করার একমাত্র উত্তরসূরী।’
‘আমার ইয়ে।’
‘কই দেখি কোন ইয়ে।’
তৃষা মুখ ভেংচি কেটে খাওয়ায় মন দিলো। এই লোকের সঙ্গে এখন তর্ক করলে তর্কের ইজ্জত খাওয়া হবে। খাওয়া শেষে তৃষা এদিক সেদিক ঘুরে ফিরে দেখে। হারে বজ্জাত প্রেম ভাইটা ল্যাপটপ নিয়ে দোতলায় চলে যায়। তৃষা দরজার সামনে দাঁড়িয়ে কিছুক্ষণ এদিক-সেদিক ঘুরাঘুরি করে। দরজা খোলাই। যাবে নাকি বাইরে? পাহাড় দেখলেও তো শান্তি লাগে। তৃষা একপা বাইরে দিতেই লুফি ঘেউ ঘেউ করে ওঠে। তৃষার রাগ হয়। একটা ছোটলোক কুকুরের এত সাহস কি করে হয় তৃষাকে দেখে ঘেউ ঘেউ করার? কি ছোটলোক ভাবা যায়। তৃষা পায়ের জুতাটা খুলে লুফির দিকে ধরতেই প্রেম পেছন থেকে এসে জুতোটা কেড়ে নিয়ে বলল, ‘সাহস কি করে হয় আমার বাচ্চার ওপর তোমার জুতা তোলার?’
‘তো কুত্তার বাবা আপনার কুত্তা আমায় এমন ইভটিজিং করছে কেন?’
‘কুত্তার আম্মু, কুত্তার মতো ক্ষুধা পেয়েছে। যাও গিয়ে একটু খাইয়ে আসো।’
‘প্রেম ভাই।’
‘শালীর ঘরের বউ, রুমে নিয়ে কাজ সারলে পেট নিয়ে উঠতে বসতে পারবা না। তুমি এদিকে আমায় ডাকো ভাই? আমার ধৈর্য্যের আর পরীক্ষা নিও না সোনা।’
‘আমিও আপনাকে একেবারে বাবা যদি না বানাই? আমার নামও তৃষা না। রাতে বাচ্চার কান্নার কারণে ঘুমাতে পারবেন না তাহলে শখ মিটবে।’
‘আই নিড সোনা। জলদি বাবা হওয়ার সুযোগ করে দাও।’
তৃষার মুখে আর কিছু বলার ভাষা নেই। সে প্রেমকে ধাক্কা দিয়ে দোতালায় সিঁড়ি বেয়ে ড্যাংড্যাং করে ওঠে যায়। প্রেম চুলে হাত বুলিয়ে তৃষার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসে। তারপর লুফির দিকে তাকালো। চেয়ে বলল,’কিরে লুফি? ঘরটা কেমন ফাঁকা ফাঁকা তাই না? ডজন খানেক ছোট্ট প্রেমতৃষা আসা না অবধি কত দায়িত্ব। কত পরিশ্রম করতে হবে আমাকে ভাবা যায়?’ বলেই সে লুফির মাথায় হাত বুলিয়ে গুনগুন করতে করতে ওঠে গেল। বউটাকে একা রেখে কোথাও এখন আর থাকতে মনটা যে চায় না।
–
তখন সন্ধ্যা পেরিয়ে রাত হবে হবে ভাব। তৃষা তৈরি হয়ে বসে আছে। প্রেম তাকে তৈরি হতে বলেছে। প্রেম নিচে নামার আগে তৃষার জামা-কাপড় খাটের ওপর রেখে গেছে। পোশাক দেখে তৃষা একটু নয় একটু বেশিই অবাক হয়। পার্কিং প্লেসে এসে তৃষার সেই বিস্ময় যেন আরো দ্বিগুণ বেড়ে যায়। দু’টো একই রঙের বাইক সেখানে রাখা। কালো রঙের বাইকটা তো আগেও দেখেছে। ওটা প্রেম নেওয়াজের বাইক। কিন্তু তারই পাশে একই রকম একেবারে নতুন মডেলের কালো রঙের আরেকটি বাইক কেন? প্রেম তৃষাকে একবার ওপর থেকে নিচ অবধি ভালো করে পরখ করল। কালো রঙের একটা লেদারের জ্যাকেট পরেছে সাদা টিশার্টের ওপর। সঙ্গে কালো রঙের একটা জিন্স। প্রেম নিজের দিকেও একবার তাকালো। তার গায়েও একই রকম পোশাক। মনে হচ্ছে প্রেম নিজের ফিমেল ভার্সনকে তার সামনে দেখতে পাচ্ছে। তৃষা প্রেমকে জিজ্ঞেস করল, ‘আমাকে এই পোশাক দিলেন কেন পড়ার জন্য?’
‘বাইকার কি তাহলে শাড়ি, লেহেঙ্গা পড়ে বাইক রাইড করবে নাকি?’
তৃষা অবাক হলো। কি বলবে বুঝতে পারছে না। তবে নিচু গলায় বলল, ‘কি বলতে চাইছেন?’
‘নাটক করো না সোনা। প্রেম কাঁচা খেলোয়াড় না। চট্টগ্রামে যেই অবৈধ বাইক রাইডার হয় তাতে হয় বার জয়ী হয়েছো তাও কিন্তু জানি।’
তৃষা এবার চুপসে গেল। তা দেখে প্রেম হেসে বলল, ‘ভয়ের কিছু নেই। আমার বউয়ের এতটুকু যোগ্যতা তো থাকার দরকারই ছিল। বউ বাইক চালাতে না পারলেও শিখিয়েই দিতাম। এখন যেহেতু পারেই তো ওই শিখানোর সময় টুকু অপচয় হওয়া থেকে বেঁচে গেল। ও-ই সময় বউকে নিয়ে বাচ্চা নেওয়ার পরিকল্পনা করা যাবে। যাই হোক কাম। এটা তোমার ড্রিম বাইক ছিল না? এটা এখন থেকে তোমার। লেটস ইনজয় সোনা।’
তৃষা কথা না বলে স্বপ্নের বাইকটিকে ছুঁয়ে দেখল। কি যে শান্তি লাগছে। বিয়ের আসর থেকে পালানোর একমাত্র উদ্দেশ্য ছিল কি জগন্নাথে পড়া? উঁহু কখনোই না। তৃষার বাবা-মা ইচ্ছে করেই মেয়েকে বিয়ে দেওয়ার একমাত্র কারণ ছিল বাইক রাইড। একে তো মেয়ে মানুষ তার ওপর ওইসব রাইডিং করা। তাও রাত বিরেতে অবৈধ রাইডিং। তৃষার বাইকটাও তার বাবা বিক্রি করে ফেলেন কেবল এই কারণেই। মেয়ের পড়ালেখা নিয়ে তার সমস্যা ছিল, ছিল ওই বাইক রাইডিং নিয়ে। ওইসবে যারা জড়িত ছিল সবাই নেশা করে, ওপেনলি গুলি ধরে, যারা জুনিয়র তাদেরকে ব্যবহার করে সিনিয়র রাইডাররা অবৈধ কাজ গুলো করিয়ে নেয়। তৃষা তখন সবে ওইসবে যোগদান করেছে। শুরুতেই পর পর কয়েক বার ম্যাচ বাজিতে সে জিতে সবার মাঝে অনেক জনপ্রিয় হয়ে যায়। তবে ওপরে উঠলে মানুষকে নিচে নামানোর মতো লোকের অভাব নেই। তৃষার হাতে যেদিন প্রথম অস্ত্র ধরিয়ে দেওয়া হয় সেদিনই তরিকুল কাজীর কাছে বিষয়টি হাতেনাতে ধরা খায়। তারপরই বিয়ে পাকা করেন যুবরাজের সঙ্গে। এমনিতে অনেক দিন ধরেই যুবরাজ তৃষার জন্য প্রস্তাব পাঠাচ্ছিল। তরিকুল রাজি হয় নি। শেষে মেয়ের কান্ড দেখে আর চুপ থাকতে পারেননি। পুরান ঢাকায় সবচেয়ে বড় অবৈধ রেইস হয়। তৃষা অনেক দিন ধরেই যেতে চেয়েছিল। শেষে তার ওই রেইসের জন্যই বিয়ের আসর ছেড়ে এখানে পালিয়ে আসা। তবে এইসব বিষয় তৃষা কাউকে বলেনি। যেহেতু তৈমুরকে ব্যবহার করে তৃষাকে বিয়ে করেছে প্রেম তার মানে বাবা-মায়ের সঙ্গে কোনো না কোনো কথা হয়েছে। সব কিছু মনে হয় তারাই বলেছে। তৃষা দ্বিধা নিয়ে প্রেমের দিকে তাকাল। তখন প্রেম সরাসরি বলল, “চলো, হয়ে যাক সোনা একটা বাইক রেইস?”
তৃষা চোখ কুঁচকে, ঠোঁট বাঁকিয়ে বলল, “চ্যালেঞ্জ করছেন? ভয় নেই?”
প্রেমের ভয় হবে? প্রেম তৃষার কথা শুনে হো হো করে হেসে উঠল। কারণ চট্টগ্রামের বাইক রেইস তো ছোটখাটো বিষয়। প্রেম বিদেশের মাটিতেও ওই রেইস করে জিতে এসেছে।
প্রেম গম্ভীর ভঙ্গিতে বলল, “চ্যালেঞ্জ মনে হয়েছে? তাহলে তাই ধরে নাও। তবে হারলে কি হবে?”
তৃষা দ্বিধাহীন কণ্ঠে জবাব দিলো, “আপনি যা বলবেন তাই।”
প্রেম চোখ টিপে বলল, “ওকে ফাইন। আমার বাচ্চার মা হওয়ার জন্য প্রস্তুত হও, সোনা।”
তৃষা রেগে গিয়ে, হাত ঝাঁকিয়ে বলল, “জেগে জেগে স্বপ্ন দেখা বন্ধ করুন।”
প্রেম আত্মবিশ্বাসী ভঙ্গিতে জবাব দিলো, “হার তোমার নিশ্চিত। মনমানসিকতা আজকের জন্য তৈরি রাখো। আর হ্যাঁ, ওই কালো রঙের নাইটিটা পড়বে কিন্তু। একেবারে কড়া লাগবে বলে দিচ্ছি।”
তৃষা হেলমেটটা পড়তেই প্রেম তার দিকে চাবি নিক্ষেপ করল। সে চাবিটা ধরে বাইকে উঠে বসে স্টার্ট করে প্রেমকে উদ্দেশ্য করে বলল, “হারার জন্য তৈরি হয়ে যান, প্রেম নেওয়াজ।”
চলবে…
Share On:
TAGS: ইশরাত জাহান জেরিন, প্রেমতৃষ্ণা
CLICK HERE GO TO OUR HOME PAGE
-
প্রেমতৃষা পর্ব ১৫+১৬
-
প্রেমতৃষা পর্ব ১৯+২০
-
প্রেমতৃষা গল্পের লিংক
-
প্রেমতৃষা পর্ব ২৭
-
প্রেমতৃষা পর্ব ২৫+২৬
-
প্রেমতৃষা পর্ব ১৭+১৮
-
প্রেমতৃষা পর্ব ১৩+১৪
-
প্রেমতৃষা পর্ব ২৮
-
প্রেমতৃষা পর্ব ৩৫+৩৬
-
প্রেমতৃষা পর্ব ৩৯ ( প্রথম অর্ধেক+শেষ অর্ধেক)