Golpo romantic golpo নীভৃতে প্রেম আমার নীলাঞ্জনা

নীভৃতে প্রেম আমার নীলাঞ্জনা পর্ব ৬(প্রথমাংশ + শেষাংশ)


নীভৃতেপ্রেমআমার_নীলাঞ্জনা

নাজনীননেছানাবিলা

পর্ব_৬ এর প্রথম অংশ।

অনুমতি ব্যতীত কপি করা নিষেধ ❌❌❌❌❌❌

বিঃদ্রঃ ছোট হবে পর্বটি।কাল সকালেই আরেকটি পর্ব পাবেন ইন শা আল্লাহ। গত কাল ৩০০০+ শব্দ লিখেছিলাম।আজ ব্যস্ততার মাঝেও লিখে ৫৫০০+ শব্দ দিলাম।আর সম্ভব না। এবং ফোনে চার্জ ছিল না বলে একটু দেরি হয়ে গেছে। ভুলত্রুটি হলে ক্ষমা করবেন।

অফিসে বোমা ফাটিয়েই নীলা বাবা এবং চাচাদেরকে বলে অফিস থেকে বের হয়ে গেল। হাতে থাকা ঘড়িতে টাইম দেখে নিল। দুপুর হয়ে গেছে। আজ ভার্সিটিতে যা হলো না তার। কিন্তু কাল গিয়ে অনেকগুলো কাজ করতে হবে। পাশ থেকে ফোন বের করে ইকরা কে কল দিল।ইকরা কল ধরতেই বলল_
তুই তো আজ ভার্সিটিতে এসেছিস তাই না?

ইকরা বলল__
হ্যাঁ আমি ভার্সিটিতে আছি।

নীলা বলল _
আচ্ছা থাক আমি আসছি ভার্সিটির সামনে মাঠে তোর জন্য অপেক্ষা করবো।

ইকরা সম্মতি জানাতেই নীলা ফোন কেটে দিল। গাড়িতে উঠে রওনা দিল পিকনিকের উদ্দেশ্যে।


মন বলছে মুনভি কিছুই করেনি কিন্তু প্রমাণ বলছে মুভির এতে হাত আছে।কি করব?কার কথা বিশ্বাস করব? কিচ্ছু বুঝতে পারছি না। কথাগুলো বলেই মিহাল মাথার চুল খামচে ধরে বসে পরলো।
উফ্ কান্ট টেক ইট এনিমোর।এত কনফিউজড আমি আর নিতে পারছি না।

মিহাল যখন নিজের মনের সাথে লড়াই করছিল তখনই কেউ তার দরজায় নক করে।
মিহাল তৎক্ষণাৎ মাথার চুল ছেড়ে দিয়ে মুখের গাম্ভীর্য বজায় রেখে দরজার বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা ব্যক্তিকে অনুমতি দিল ভেতরে ভেতরে আসার জন্য।মনুভি দরজা ঠেলে ভেতরে প্রবেশ করল।মিহাল মুনভি কে দেখে তাচ্ছিল্যের
স্বরে বলল __
তুই আবার কবে থেকে অনুমতি নিয়ে আসা শুরু করলি?

মুনভি শান্ত কন্ঠে জবাব দিল_
তোর মতোন ম্যানার লেইস না আমি।

মিহাল বাঁকা হেসে বলল _
ম্যানার লেইস না কিন্তু চিটার তো? তাই তো ধোঁকা দিলি। একবারও ভাবলি না আমাদের বন্ধুত্বের কথা।আমার ইমোশনের কথা? তুই তো জানতি সব কিছু তাহলে কেন এমন করলি?

মুনভি কেবল অনুভূতিহীন দৃষ্টি নিয়ে তাকিয়ে রইল মিহালের কাছে।আজও সে কোনো উত্তর করলো মিহালের দেওয়া অপবাদের। নিজের জন্য ডিফেন্ড করল না। কেবল ভাবলেশহীন ভাবে চেয়ে রইল। তারপর বলল_
মা এসেছে আন্টির সাথে কথা বলছে। সময় করে দেখা করে আসিস।আমি হসপিটালে যাচ্ছি।

কথাগুলো বলেই আর এক দ্বন্দ্ব দাঁড়াল না সে। রুম থেকে বের হবার জন্য পা বাড়াল। কিন্তু মিহালের কথা শুনেই তার পা জোড়া থেমে গেল।মিহাল গম্ভীর কন্ঠে বলল_
আজও চুপ করে থাকবি? এত গুলো কথা শুনালাম অথচ নিজের জন্য একবারও স্ট্যান্ড নেওয়ার প্রয়োজন বোধ করলি না? এসব করে কি প্রমাণ করতে চাস তুই? আমি তোকে বিশ্বাস করি না? নাকি আমার বন্ধুত্ব সত্য না? তাহলে শুনে রাখ এই মিহাল খান কখনো কাউকে ধোঁকা দেয় নি, এবং ভবিষ্যতেও দিবে না। কিন্তু তার মানে এই না যে প্রতারক দের ছাড় দেবে। প্রতারক যতই কাছের, ভালোবাসার হোক না কেন তাকে তার প্রাপ্য শাস্তি দিবে এই মিহাল খান।তাই যদি ভেবে থাকিস তোর নিরবতা কে আমি সম্মতির লক্ষণ ভেবে ঘাপটি মেরে বসে থাকবো তাহলে তুই ভুল ভাবছিস। সত্য জানার জন্য মিহাল খান যেকোনো পর্যায়ে যেতে পারে। কাউকে কবর থেকে বের করতে হলেও সে করবে আবার প্রয়োজন পরলে কাউকে কবরে পাঠিয়ে দিতেও দ্বিধা বোধ করবে না।আর এইটা মিহাল খান।

মুনভি স্মিত হাসলো মিহালের বলা কথাগুলো শুনে।সে খুব ভালো করেই মিহাল কে চেনে। কিন্তু সেই চায় মিহাল নিজ থেকে সত্য বের করুক।তাই শান্ত কন্ঠে বলল_
আমি অপেক্ষায় থাকবো সেদিনের যেই দিন তুই সব সত্য জানতে পারবি।

কথাটি বলেই সে মিহালের রুম থেকে বের হয়ে গেল।মিহাল কেবল এক দীর্ঘ নিঃশ্বাস ছাড়লো এবং বলল__
পালিয়ে আর যাবি কোথায়? আমার দেশে এসে, আমার কলেজে ভর্তি হয়ে, আমাকে ধোঁকা দিয়ে পালানো কি এত সহজ? তোর জন্য আমি আমার বেস্ট ফ্রেন্ড কে হারিয়েছি।আর তুই নিজ দেশে গিয়ে শুনলাম বিয়ে করে সুখে সংসার করছিস। আমি বেঁচে থাকাকালীন কখনোই সুখকে তোর ধারের কাছে আসতে দিব না। তুই যেমন আমার দুর্বলতাকে টার্গেট করেছিস আমিও তোর দুর্বলতাকে টার্গেট করব। তোর স্ত্রী হবে আমার নেক্সট টার্গেট। দেখ আমি কি করি।
কথাগুলো বলেই মিহাল বাঁকা হাসলো।

কি মনে মিহাল কার কথা বলছে।নাকি নতুন কোনো রহস্য ভেদ হতে চলেছে??


নীলা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাঠে বসে আছে।মুলত ইকরার জন্য অপেক্ষা করছে।ইকার মেসেজ দিয়ে বলছে কিছুক্ষণের মধ্যেই আসছে।তাই সে একা বসে আছে। এমন সময় তারই এক ক্লাস মেইট তার পেছনে এসে বলল_
আরে নীলা আজ ইউনিভার্সিটি এলে না যে?

নীলা পিছনে তাকিয়ে রাব্বি কে দেখে স্বাভাবিক ভাবেই বলল__
এমনি আসিনি।আর এখন ইকরার জন্য অপেক্ষা করছিলাম কিছু কথা আছে তাই।

রাব্বি মুচকি হাসলো।হাসলেই এটার গালে টোল পরে। রাব্বির গায়ের রং উজ্জল শ্যামলা। লম্বায় ৫ ফুট ৭ কি ৮ হবে হয়তো। পড়াশোনাও খুব ভালো সবসময় ভালো রেজাল্ট করে।সেইও অর্থনীতি নিয়ে পড়াশোনা করছে।সব সময় নীলার সাথে কথা বলতে চাইতো কিন্তু নীলা পড়াশোনার বিষয় ছাড়া বাড়তি বিষয় নিয়ে কোন ছেলের সাথে কখনো কথাবার্তা বলত না। সব সময় সবাইকে উপেক্ষা করে চলতো তাই সে নীলার সাথে কথা বলতে পারেনি। কিন্তু নীলার ব্যাপারে সব খোঁজ খবর কি কি রেখেছে। সে অনেক আগে থেকেই নীলা কে পছন্দ করে।নীলা কন্ঠ, চালচলন, ব্যবহার সবেতেই সে মুগ্ধ। কিন্তু যখন জানতে পেরেছিল নীলার বিয়ে হবে তখন খুব কষ্ট পেয়েছিল। কিন্তু আবার যখন জানতে পারে নীলার বিয়ে ভেঙ্গে গেছে তখন মনে মনে খুব খুশি হয়। তাই এখন আর নীলা কে সে হারাতে চায় না। এজন্যই আজ নীলা কে একা দেখে সাহস জুগিয়ে আসলো নীলা কে নিজের মনের কথা বলতে।

নীলা রাব্বি কে তার দিকে ডেবডেব করে তাকিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে বিরক্ত হয়ে বলল_
এভাবে আমার দিকে তাকিয়ে দাঁড়িয়ে থাকার কি আছে? কিছু বলবে?

রাব্বি হকচকিয়ে উঠলো নীলার এমন ঝাঁঝালো কন্ঠে। তারপর আমতা আমতা করে বলল _ না মানে আসলে ইয়েএ
নীলা বিরক্ত হয়ে বাসা থেকে উঠে দাঁড়ালো তারপর রাব্বি সামনাসামনি ফিরে ধমক দিয়ে বলল_

আসলে নকলে না করে যা বলার তা তাড়াতাড়ি বল এবং এখান থেকে মানে মানে কেটে পরো।

রাব্বি চোখ বন্ধ করে এক বড় নিঃশ্বাস নিয়ে বলল_
আমি তোমাকে পছন্দ করি নীলা। প্রথমবার দেখেছিলাম তখনই তোমাকে ভালো লেগেছিল।আই লাভ ইউ।

নীলা রাব্বির প্রস্তাব শুনে মোটে অবাক হয়নি কারণ সে এমনই কিছু একটা আশা করেছিল। সে তার ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় দিয়ে অনেক আগেই বুঝতে পেরেছিল যে এই ছেলেটি তাকে পছন্দ করে। কিন্তু তখন তার হৃদয় জুড়ে কেবল ইরফান ছিল বলে অন্য কারোর কথা মনে আনতো না।আর এখন তো অন্য কাউকে তার মস্তিষ্কে আনাও তার ধারা সম্ভব। এখন তার একটাই লক্ষ্য নিজের স্বপ্ন পূরণ করা এবং একজন সাকসেসফুল ইন্ডিপেন্ডেন্ট ওমেন হওয়া।তাই রাব্বির দিকে তাকিয়ে গম্ভীর স্বরে বলল _
শোনো আমাকে নিয়ে এসব চিন্তা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলো। আমার উত্তর না।

কথাটি বলেই নীলা হাঁটা ধরল। পিছন ফিরে তাকানোর প্রয়োজন মনে করল না। রাব্বি হতাশ হয়ে কেবল নীলার যাওয়ার পানে চেয়ে রইল।

কিছুক্ষণ হাঁটতে ইকরা দৌড়ে এলো নীলার কাছে এবং বলল_
এই টপার তোর সাথে কথা কথা বলছিল?

নীলা হাফ ছেড়ে বলল_
কি আর বলবে আমাকে পছন্দ করে ব্লা ব্লা।

ইকরা সাহস নিয়ে বলল_
তাহলে একসেপ্ট করে নে?

নীলা রাগ করার বদলে বাঁকা হেসে গানের লাইন ধরল __
ভালোবাসা নিঠুল খেলা,
এই খেলা আর খেলব না।
মনের ঘরে খিল দিয়েছি,
কারোর ডাকে খুলবো না।
রূপেরও আগুনে জ্বলাবো সবাইকে,
আমি নিজে জ্বলবো না।

ইকরা শব্দ করে হেসে উঠলো।নীলাও সঙ্গে হাসলো। তারপর দুজন মিলে ভার্সিটির প্রাঙ্গনে বসলো। তারপর নীলা বলতে শুরু করল __
আইম সরি ইকরা তুই অনেকবার অনেক ভাবে আমাকে সত্য বলার চেষ্টা করেছিস কিন্তু আমি তোর কথা না শুনে অন্য তোকে অপমান করেছি। আসলেই অন্ধ বিশ্বাস ভালো না।আমি খুবই দুঃখিত এবং লজ্জিত তোর সাথে এমন আচরন করার জন্য।

ইকরা নীলার হাতের উপর নিজের হাত রেখে বলল_
এতে সরি বলার কি আছে? লজ্জা পাবারই বা কি আছে? এখানে তো তোর কোন দোষ নেই? তুই কেবল ভালোবেসে ছিলি এবং বিশ্বাস করেছিলি। যদি অন্য কেউ তোর সত্যিকারের ভালোবাসার মূল্য না দিতে পারে এইটা তাদের ব্যর্থতা তোর নাম। হতে পারে আমি তোর বেস্ট ফ্রেন্ড না কিন্তু তোকে নিজের বন্ধু মনে করেছি তাই বিপদ-আপদে সবসময় তোর পাশে থাকবো।

নীলা ইকরার দিকে কৃতজ্ঞতা দৃষ্টি নিয়ে তাকালো।ইকরা দাঁত বের করে কিউট স্মাইল দিল।নীলা নিজেও হেসে উঠলো তারপর কিছু একটা মনে করতেই বলল__
ওহ্ হ্যাঁ যার জন্য আসা।

ইকরা নড়ে চড়ে উঠলো।নীলা কি বলবে তা শোনার জন্য সম্পূর্ণ মনোযোগ দিল।নীলা বলতে শুরু করল _
তুই শুধু আমাকে ঋণী করে তুলছিস। তোর কথায় প্যারিসে এপ্লাই করেছিলাম।এখন AUP যে চান্স পেয়েছি এবং অর্থনীতি বিষয়েই পেয়েছি। তোর জেদের কারণে আমি এপ্লাই করেছিলাম আর এখন আলহামদুলিল্লাহ চান্স পেয়ে গিয়েছি।

নীলা কথা শুনে ইকরা খুশিতে উৎফুল্ল হয়ে তালি বাজালো।নীলা হেসে উঠলো তার এই বাচ্চামো তে।ইকরা বরাবরই এমন। তারপর ইকরা বলতে শুরু করল _ শুধু তুই না আমি নিজেও চান্স পেয়েছি তাও বায়োলজি বিষয়ে। এইবার দুজনে উৎফুল্ল হয়ে এক অপরকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরল।ইকরা খুশিতে বলল
যাক তাহলে আমরা এক সাথে যাচ্ছি তো নাকি?
নীলা বাঁকা হেসে বলল ___

আর কত নিজের স্বপ্নকে বিসর্জন দিব? আমরা অবশ্যই যাবো। তুই না বললে তো আমি এপ্লাই করতাম না। আর এখন এই সুযোগও পেতাম না। কত বড় বোকাই না ছিলাম আমি। ইরফান ভাইয়া চাইতো না বলে কখনো পছন্দকে প্রাধান্য দেই। অথচ ভুলে গিয়েছিলাম যে নিজেকে যদি নিজেই ভালবাসতে না পারি তাহলে কি ওই কখনো ভালবাসবে না। ভেবেছিলাম কখনোই বাহিরে পড়বো না তাই এপ্লাই করবো না। কিন্তু তুই বলেছিলি
“বাইরে না পড়তে যাস কিন্তু এপ্লাই করে যদি একবার চান্স পেয়ে যাস তাহলে তো মনকে শান্তনা দিতে পারবি যে তুইও বাইরে পড়ার সুযোগ পেয়েছিলি।”
তোর এই কথার কারণেই এপ্লাই করি আর দেখ এখন এই সুযোগটা আমার সবথেকে বেশি প্রয়োজন ছিল।আমি যাব।আমরা যাব।ইন শা আল্লাহ

ইকরাও জোরে চিৎকার করে বলে উঠলো _
ইন শা আল্লাহ।
চলবে???
কালকে ১১ টার দিকে এই পর্বের বাকি অংশ আসবে।বড় হবে পর্ব। ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমা করবেন 🙂 খুবই ক্লান্ত।

নীভৃতেপ্রেমআমার_নীলাঞ্জনা

নাজনীননেছানাবিলা

পর্ব_৬ শেষাংশ।

অনুমতি ব্যতীত কপি করা নিষেধ ❌❌❌❌❌❌
বড় দিলাম গঠনমূলক কমেন্ট চাই।

নিজের কেবিনেই এক হাতের আঙুলের মাঝে আরেক হাতের আঙুল ভাঁজ করে মাথা ঠেকিয়ে বসে আছে ইরফান। সেই সকালে এসেছিল এখনো রুম থেকে বের হয় নি। আশ্চর্যজনক ভাবে কেউই তার খোঁজও নেয় নি। এমনকি আরশিও না। ইরফান ডুবে গেল অতীতের স্মৃতির মাঝে।

অতীত _

নীলা এবং আবির ছোট থেকেই পড়াশোনায় খুব ভালো থাকলেও ইরফান তেমন ছিল না। তার খেলাধুলার প্রতি মন ছিল ঠিকই কিন্তু সবসময় নিজেকে সেরা মনে করে,তাই সেখানেও কিছু করতে পারলো না।বেশ ভালো ফুটবল খেলতো ইরফান এবং এর জন্য ক্লাস ফাইভ থেকে টেইন পর্যন্ত যতগুলো স্কুলের সাথেই খেলুক না কেন তার জন্যই সবসময় তার স্কুল প্রথম হতো। এমনকি সে খেলার জন্য উপজেলা, জেলা, বিভাগেও জিতেছিল। স্কুলের টিচার, বন্ধু বান্ধব, এলাকার মানুষ আর পরিবার সবাই তার খুব প্রশংসা করতো ফলস্বরূপ তার মনে অভার কনফিডেন্ট জন্মে যায়। এবং তার পরিবার তাকে বিএএফ শাহীন কলেজে ভর্তি করায়। কারণ এখানে পড়াশোনার পাশাপাশি খেলাধুলার ব্যবস্থা আছে। এখানে অভিজ্ঞ প্রশিক্ষক দ্বারা শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন খেলাধুলায় প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। ইরফান যখন ইন্টার ফার্স্ট ইয়ারে ভর্তি হয় নীলা তখন কেবল পিএসসি পরীক্ষা দিয়েছিল। কিন্তু সে এইটা যানতো বড় হলে তার ইরফান ভাইয়ার সাথে তার বিয়ে হবে। ইরফান প্রথম প্রথম কলেজে উঠেই কলেজে থাকার জন্য পরিবার ছাড়া আলাদা ফ্ল্যাট নিয়ে থাকতো। হোস্টেলের পরিবেশ এবং খাবার ভালো না আর পরিবার আর্থিক দিক দিয়ে স্বাবলম্ব বিধায় আলাদা ফ্ল্যাট নিয়ে থাকতে সমস্যা হয়নি। কিন্তু মূল সমস্যা ছিল ইরফানের ওভার কনফিডেন্ট। সে নিজকে সেরা মনে করতে শুরু করল।খেলার জন্য যেই কোচিং সেন্টারে দেওয়া হয় সেখানে প্রথম নিয়মিত যেত না এবং সময়ের সাথে সাথে কোচিং সেন্টারে যাওয়াই বাদ দিয়ে দিয়েছিল। সে মনে করতে শুরু করল সে কোচিং না করলেও, প্র্যাকটিস না করলেও সেই সেরা খেলবে।আর পড়াশোনায় তো আগে থেকেই তেমন ভালো ছিল না। সারাদিন বাইরে ঘোরাঘুরি করতো এবং কেবল টাকা খরচ করতো। কিন্তু যখন কলেজ থেকে কোচিং সেন্টার থেকে তার বাড়ি নালিশ যায় তখন তার বাবা কড়া নির্দেশ দিয়ে দিয়েছিল এখন থেকে তাকে কোনো টাকা পয়সা দেওয়া হবে না। কেবল পড়াশোনার জন্য টাকা দেয়া হবে এবং সেই টাকা তিনি নিজে গিয়ে যেখানে প্রয়োজন সেখানে দিয়ে আসবেন। এই ঘটনার পর ইরফানের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়লো। এরপর সে যেই ফুটবল ম্যাচে অংশগ্রহণ করেছিল সেটিতে খুব বাজে খেলেছিল ফলস্বরূপ তাকে টিম থেকে আউট করে দেওয়া হয়। যখন বাড়ি থেকে অতিরিক্ত টাকা আসা বন্ধ হয়ে গেল তখন তার মজ মস্তি করা বন্ধ হয়ে গেল। নীলার সাথে ফোনে কথা বলতো।নীলা তখন ছোট ছিল এবং তাকে খুব বিশ্বাস করতে বলে সে নীলা কে নিজের কষ্ট বলল।
আদুরে স্বরে বলল_
নীলু বাড়ি থেকে উপযুক্ত টাকা আসা বন্ধ হয়ে গেছে। এখন আমি নিজের পছন্দ মত কিছু কিনতে পারি না।

নীলা ইরফানে কথা শুনে আহত কন্ঠে বলল_
থাক ইরফান ভাইয়া কষ্ট পেও না। তোমার নীলু তো আছে তাই না? আমাকে প্রতিদিন ১০০ টাকা করে দেয় আমি তো জানোই খরচ করি না।আর আগে থেকেও অনেক টাকা জমানো আছে আমার।আর বাবা, বড় আব্বু ,ছোট আব্বু তারা প্রায় সই আমাকে এমনিতেই টাকা দেয়। আমার কাছে এখন অনেকগুলো টাকা আছে। আমি আবির ভাইয়াকে দিয়ে তোমায় কাছে পাঠাবো কেমন?

ইরফান খুশি হয়ে বলল_
একমাত্র তুই আমাকে ভালোবাসিস। একমাত্র তুই আমার কষ্ট বুঝিস। এর জন্য তোকে আমি অনেক ভালবাসি নীলু। আই লাভ ইউ।

নীলা লজ্জা পেয়ে বলল__
ভাইয়া এসব বলুন আমার লজ্জা করে। আর বড় আব্বু জানতে পারলে তোমাকে বকা দিবে। এখন রাখছি আমার । মনোযোগ দিয়ে পড়ো কেমন?

ইরফান মুচকি হেসে ফোন কেটে দিল। সেইদিনই নীলা তার আগের জমানো টাকা থেকে ১০ হাজার টাকা বের করে আবির কে দিয়ে ইরফানের ফোন পাঠালো।নীলা যেহেতু অনেক আগে থেকেই টাকা-পয়সা জমাত। এবং যখন তার কাছে অনেক ভাংতি টাকা হতো তখন সে তার বাবা কিংবা চাচাদের কে ভাংটি টাকা দিয়ে নোট টাকা সে নিত। এবং সব সময়ই সে তার বাবা চাচাদের কে যত টাকা দিত তারা সে ভাংতি টাকা নিয়ে নোট দেওয়ার সময় কিছু টাকা বেশি দিত। তাই নীলার কাছে সবসময় টাকা থাকতো। স্কুল থেকে উপবৃত্তি পেত সেই টাকাও সে খরচ করত না তার টাকা জমাতে খুব ভালো লাগতো। আর যা প্রয়োজন ছিল সব সময় তার বাবা চাচারা তাকে দিয়েছে তাই নিজ থেকে খুব কমই তার জিনিস কিনতে হয়েছে।তাই ইরফান কে এক সাথে এতগুলো টাকা দিতে তার সমস্যা হলো না বরং এই টাকা দেওয়ার পরও তার কাছে মোটামুটি অনেক টাকা ছিল। কিন্তু আজ যখন ইরফান বলল তার নাকি কষ্ট হয় সেটা শোনার পর নীলা ঠিক করে নিল আগে যেই অল্প টাকা খরচ করত এখন থেকে সেই টাকা খরচ করা সে বন্ধ করে দেবে। নিজের সব টাকা জমিয়ে ইরফান ভাইয়াকে দিবে যাতে তার ইরফান ভাইয়ের কোন কষ্ট না হয়। এবং সেটাই করতে লাগলো। নিজেই না খেয়ে থেকে,খরচ না করে টাকা জমিয়ে ইরফানকে প্রায় শই দিত।আর ইরফান ও নির্লজ্জের মত তার কাছ থেকে টাকা নিতো।

এইসব ভাবতে ভাবতেই ইরফান অতীতের ভাবনা থেকে বের হয়ে হলো।যেই যায়গায় তার নীলা তার জন্য সব কিছু করতো, নিজের কথা চিন্তা না করে নিঃস্বার্থ ভাবে তার জন্য সব কিছু করত আজ সেই নীলা কথা দেওয়ার পরেও কথা রাখল‌ না। ইরফানে এই কোম্পানি থেকে নীলার অংশ না পেয়ে যতটা কষ্ট লাগছে তার থেকে বেশি কষ্ট লাগছে নতুন নীলাকে চিনতে। এই নীলা কে যেন সে মেনে নিতেই পারছে না। এই নীলা তার মেল ইগোকে অনেক হার্ট করছে। পুরুষ মানুষের আর কিছু থাকুক আর না থাকুক ইগো থাকে। এবং তারা চায় না কেউ তাদের ইগো হার্ট করুক। কিন্তু নীলা নিজে ভেঙ্গে না পড়ে সামনের মানুষকে কিভাবে ভাঙতে হবে সেই কাজ করে যাচ্ছে। যা ইরফানের হজম করতে কষ্ট হচ্ছে। বসা থেকে উঠে দাঁড়ালো ইরফান। তারপর নিজে নিজেই বলল_
বেশি উড়ছিস তুই আজকাল নীলা। তোর পাখা কি করে কাটাতে হয় তা আমার ভালো করেই জানা আছে।

কথাগুলো বলেই কেবল থেকে বের হয়ে গেল ইরফান উদ্দেশ্য এখন বাড়িতে যাবে।


নীলা দুপুরের খাবার বাহিরে থেকেই খেয়ে এসেছে ইকরার সাথে। বাড়িতে এসে সোজা নিজের রুমে ঢুকে গোসল করে নিল। সকালে একবার গোসল করেছিল কিন্তু এতক্ষণ ভার্সিটির প্রাঙ্গণে বসে থাকার জন্য রোদে ঘেমে গিয়েছে তাই বাড়ি এসে একদম গোসল করে ফেলল। ঘড়ির কাটায় তাকিয়ে দেখল আড়াইটা বাজে এখনো জোহরের নামাজ পড়ার সময় আছে তাই আর আলসেমি না করে আগে নামাজ পড়ে নিল। এমনিতেই সে অনেকটা সময় নিয়েই নামাজ পড়ে নামাজে তার সময় কাটলে খুব ভালো লাগে। আজ আর বেশি সময় নিল না যেহেতু দেরি হয়ে গিয়েছে।নীলা নামাজ পড়েই তার সকল সার্টিফিকেট বের করতে লাগলো। আর পাসপোর্ট আগে থেকে বানানো ছিল। একবার সপরিবারে ইন্ডিয়ার কাশ্মীর ঘুরতে গিয়েছিল সেই সুবাদেই পাসপোর্ট বানানো হয়েছিল। এক বছর আগে ঘুরতে গিয়েছিল। আর পাসপোর্ট এর মেয়াদ পাঁচ বছর। তাই এখন আপাতত পাসপোর্ট বানানোর কোন ঝামেলা নেই। সব সার্টিফিকেট গোছানোর পর নীলা বিছানায় আরাম করে বসলো। চলে গেল অতীতের ভাবনায়

অতীত __

বড় আব্বু ইরফান ভাইয়া কি দেশে গিয়ে পড়াশোনা করতে চাচ্ছে তাহলে তোমরা কেন দিচ্ছ না?
ইমরান মির্জার কাছে জবাবদিহি চাইলো ছোট্ট নীলা তখন সে‌ ক্লাস এইটে পড়তো। ছোট্ট বললে ভুল হবে কিন্তু নিজের বড় আব্বুর কাছে সে জবাবদিহি চাচ্ছে সেই হিসেবে আসলেই সে খুব ছোট্ট। আর ইরফান তখন অনার্স ফার্স্ট ইয়ার শেষ করেছে। কোন এক প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিতেই সে ভর্তি হয়েছে। পাবলিকে চান্স পেতে গেলে প্রচুর পড়তে হয় এবং এত পড়তে নাকি সে পারবেনা তার জন্যই সে প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হয়। আর যতই পড়ালেখায় মন না দিক সব সময় ইংরেজি বিষয়ে সে মন দিয়েছে কারণ তার ইচ্ছা ছিল দেশের বাইরে যাবে এবং ইংরেজি যেহেতু ইন্টারন্যাশনাল ল্যাঙ্গুয়েজ তাই এটা সবথেকে বেশি কাজে লাগবে। ফলস্বরূপ সে এই বিষয়ে খুব ভালো না হলেও দেশের বাইরে পড়ার জন্য যতটুকু প্রয়োজন ততটুকু যোগ্যতা আছে তার। যখন পরিবারের সবাইকে জানালো সে দেশের বাইরে গিয়ে পড়তে চায় তখন তার বাবা বলল_
সারা জীবন শুধু আমাদের টাকার উপরেই ডিপেন্ড করেছো তুমি। তোমার থেকে কম বয়সের ছেলেরাও নিজেরা ইনকাম করে নিজেদের পড়াশোনার খরচ চালায়। তোমার জন্য কি করিনি আমি? এখন যেটা বলেছ তখন সেটা দিয়েছি তারপরও বিনিময়ে কোন ভালো রেজাল্ট পাইনি তোমার। খেলাধুলায় মন ছিল সেটাতেও পিছিয়ে গেলে নিজের অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসের ফলে। এখন তুমি আশা করছ যে তোমার পিছনে আমি আরো টাকা নষ্ট করব?

ইমরান মির্জার এমন কথার প্রেক্ষিতে ইরফান কিছু বলার সুযোগ পেল না ঠিক তখনই নীলা সেই কথাটি বলে উঠল।
সবাই নীলার দিকে তাকালো। ইমরান মির্জা নিজের কন্ঠ কোমল রেখে বলল_
দেখো নীলা মা তোমার ইরফান ভাইয়া পড়াশোনায় তেমন ভালো না। বিদেশে গিয়ে শুধু শুধু টাকা নষ্ট করবে। পিছনে এত টাকা নষ্ট না করেই যদি আমার বিজনেসে আমি এই টাকা খরচ করি তাহলে আমি লাভবান হব।

নীলা নিজের বড় চাচুর কথায় অভিমান করে বলল_
আমার ইরফান ভাইয়া এতটাও খারাপ না। সবাই তো আর পড়ালেখায় ভালো হয় না। যেহেতু সে বাইরে যেতে চাচ্ছে তাহলে তাকে যেতে দাও। এমন তো না যে সে বাহিরে পড়ার মতো যোগ্য না। যথেষ্ট ভালো স্টুডেন্ট আমার ইরফান ভাইয়া। আর এখন যদি IELTS করে তাহলে বাইরে পড়ার সুযোগটা ভালো পাবে। তাই শুধু শুধু রাগারাগি না করে তাকে কোচিং এ ভর্তি করে দাও আর ইংরেজিতে যেহেতু সে ভালো তাই তার বেশি সময় লাগবে না।

ইমরান মির্জা প্রথমে রাজি হননি কিন্তু নিলার জোড়াজড়িতে অবশেষে তাকে হার মানতে হলো। ইরফান কে আলাদা করে নিজের রুমে ডেকে বললেন_
তুমি যদি ভেবে থাকো আমি তোমার ব্যাপারে কোন খোঁজ খবর রাখি না তাহলে তুমি ভুল ভাবছো। আমি সবকিছু জানি আবির আমাকে সব কিছু বলেছে। লজ্জা পেল না এই ছোট্ট মেয়ের কাছ থেকে টাকা নিতে? তুমি আজ যতটুকু এসেছ শুধুমাত্র এই মেয়েটির জন্য। বাহিরে পড়ার সুযোগ পাচ্ছ শুধুমাত্র এই মেয়েটির জন্যই। তোমার জীবনে এই মেয়েটির অবদান অনেক এই কথাটি ভুলে যেও না।নীলা লাখে একটা মেয়ে। সোনার সাথে তুলনা করলেও ভুল হবে। যেহেতু ও তোমাকে মনেপ্রাণে মেনে নিয়েছে তাই সব সময় ওর প্রতি লয়েল থেকো। আর কোচিং এ ভর্তি করালে দয়া করে পড়াশোনা করেও যাতে ইউরোপের কোনো দেশে চান্স পেতে পারো। এবং বাইরে গিয়ে একটু মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা করো যাতে কিছু একটা করে দেখে আসতে পারো। দেশে আসলে তোমাকে আমাদের বিজনেস দেখতে হবে। নীলার সাথে বিয়ে হয়ে যাবে তোমার।

ইরফান তো মহা খুশি।সে বাবাকে কথা দিল যে সে খুব ভালো করে পড়াশোনা করবে। এবং সব সময় নীলার অবদান মনে রাখবে। বাবার ঘর থেকে বের হয়ে এসে নীলার রুমে চলে গেল। নীলা বিছানায় পা ঝুলিয়ে বসেছিল। এমন সময় ইরফান এসে যেই না তাকে জরিয়ে ধরতে নিবে উমনি নীলা বলে উঠলো_
এই যে ভাইয়া দূরে থাকো। আমার এইসব ছোঁয়া ছুয়ি পছন্দ না।

ইরফান নীলাকে জড়িয়ে ধরতে গিয়েও ধরল না এবং কিছুটা রাগ দেখিয়ে বলল_
আমি বিদেশ থেকে ফিরে আসলেই তো আমাদের বিয়ে হবে তাহলে একটু জড়িয়ে ধরলে কি হয়?

নীলা মুচকি হেসে বলল __
বিয়ে হবে আমাদের এখনো বিয়ে হয়নি সেই সুবাদে তোমার আর আমার মধ্যে কোন হালাল সম্পর্ক নেই।

ইরফান মুখ ভেঞ্চি কেটে বলল_
বেশি বুঝিস তুই।

নীলা মুচকি হেসে বলল_
আমার বয়সের কত মেয়ে তুমি জানো বিয়ে করে সংসার করে এক বাচ্চার মা হয়ে গেছে। আর যেহেতু আমাদের সম্পর্কটা শুরু থেকেই পবিত্র শুধু শুধু এখন অপবিত্র করে কি করব? হারাম জিনিস এ জানোই তো আল্লাহ বরকত দেয় না। আর আমি তো তোমারই এবং তুমিও কেবল আমার। আমি অপেক্ষা করবো তোমার ফিরে আসার। আমাকে ভুলে যেও না ইরফান ভাইয়া।

ইরফান নীলার কাছে এসে বলল__
তোকে ভীষণ ভালোবাসি। তোর জন্যই এতদূর আমি পৌঁছাতে পেরেছি। আমি মরে গেলেও তোকে কখনো ভুলবো না। তুই ছাড়া যেমন করে পৃথিবী অন্ধকার। এই ইরফান মির্জা মন প্রাণ দিয়ে কেবল তোকেই ভালোবেসে গেছে এবং তোকেই ভালবাসবে।

নীলা কেবল পলকহীন ভাবে তার ইরফান ভাইয়ের দিকে তাকিয়ে রইল। ইরফান নিজের হাতে চুমু খেয়ে সেই হাত নীলার কপালে ছুঁয়ে দিল। নীলা কেবল লাজুক হাসলো। তার নীলার এইসব ন্যাকামি পছন্দ হয় না। যেহেতু দুজন দুজনকে ভালোবাসে তাহলে একটু কাছে আসতে সমস্যা কিসের? তো বড় হবার পর থেকে নীলা বরাবরই তার থেকে দূরত্ব বজায় রেখেছে কিন্তু সব সময় তাকে সাপোর্ট করে গিয়েছে। মিলার সাপোর্ট এবং ভালোবাসার ফলে কেবল নিলাকে ভালোবাসতো।

হঠাৎ নীলা বলে উঠলো __
আমিও বড় হয়ে তোমার মত বিদেশে পড়তে যাব।

এইটা শুনে যেন ইরফানের মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ল। কারণ নীলা দেখতে শুনতে খুব ভালো আবার পড়াশোনাতেও খুব ভালো। যদি বিদেশে সুযোগ পায় এবং ইরফান এর থেকেও ভালো ছেলে পায় তখন নীলা তাকে ছেড়ে যাবে। এই ভয়ে ইরফান তৎক্ষণাৎ বলে উঠলো__
তুই যদি আমাকে সত্যিকারের ভালোবেসে থাকিস এবং সত্যি আমাকে বিয়ে করতে চাস তাহলে আমাকে কথা দে তুই কখনোই বিদেশে পড়াশোনার জন্য যাবি না?

নীলা ইরফানের কথাই বেশ অবাক হলো এবং আহত দৃষ্টি নিয়ে তার দিকে তাকিয়ে কোমল কণ্ঠে জিজ্ঞেস করল __
কিন্তু কেন?

ইরফান নির্বিঘ্ন ভঙ্গিতে জবাব দিল_
আমি চাইনা তুই কখনো আমাকে ভুলে যাস। আমাকে ছেড়ে অন্য কারো কাছে যাস। তাই তুই কখনোই বাইরে গিয়ে পড়াশোনা করবি না।

নীলা মনোক্ষুণ্ন হলো। কিন্তু ইরফান যেহেতু বলেছে তাই সে ইরফান কে কথা দিল যে সে কখনোই দেশের বাইরে গিয়ে পড়াশোনা করবে না।

এইসব ভাবতে ভাবতেই নীলা অতীতের জগৎ থেকে ফিরিয়ে এলো। ঠোঁটে তার বাঁকা হাসি ফুটে উঠলো। নিজে নিজেই বলতে লাগলো__
তুমি যা যা চাইতেন আমি করব থেকে আমি সেই সবই করা শুরু করব। তোমাকে বোঝাবো তুমি কি হারিয়েছো

চলবে??
ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমা করবেন 🙂

Share On:

TAGS: ,



CLICK HERE GO TO OUR HOME PAGE
Related Posts
 

0 Responses

Leave a Reply