নিষিদ্ধ_চাহনা
পর্ব_১৪
লেখিকাসারাচৌধুরী
🚫অনুমতি বাদে কপি করা সম্পুর্ন নিষিদ্ধ🚫
-“ন..ন..নাবিল ভা..ভাই আ..আ..আপনি….?
দরজার সামনে পিহুকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে নাবিল ও চমকায়।চোখ বড় বড় হয়ে যায় নাবিলের।সাদি নাবিলের পাশ থেকে কপাল ভাজ করে জিজ্ঞাসা করে পিহুকে..
-“তুই নাবিল কে চিনিস….?
পিহু কিচু বলার আগেই আতিয়া বেগম পিহুকে ডেকে বললেন পিহু মা রান্না ঘরে আই তো একটু।পিহু এক মুহুর্ত দেরি না করে।ছুটে চলে আসে এদিকে নাবিল থ হয়ে স্টাচু হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।যেনো তার মাথার উপর দিয়ে গেলো সব কিছু।সাদি নাবিলের মুখের সামনে তুড়ি বাজিয়ে নাবিলের ধ্যান ভাঙায়। সাদি নিজের কপালে তিনটা ভাজ ফেলে বলে উঠে..
-“কি নাবিল কি ভাবছো ভেতরে এসো।
নাবিল একটু লজ্জায় পড়ে যায়।সাদির পিছু পিছু ভিতরে প্রবেশ করে।সাদি আর নাবিল সোফাই গিয়ে বসে। তারপর ইলিয়াস চৌধুরী কেও সাদি সোফাই এনে বসিয়ে দেই।নাবিল এর সাথে ইলিয়াস চৌধুরীর পরিচয় তৈরি করিয়ে দিয়ে কথা বলাতে থাকে এদিকে সাদি আতিয়া বেগম কে ডেকে খাবার দিতে বলে তার আর নাবিল এর। আতিয়া বেগম ও ফেশ হয়ে খেতে বসতে বলেন।
তাই সাদি নাবিল কে গেস্ট রুম থেকে হাত মুখ ধুয়ে ফ্রেশ হয়ে আসতে বলে যদিও নাবিল ইতস্ততবোধ করছিলো তবুও সাদির জোরাজোরি তে ফ্রেশ হতে চলে যায়।এদিকে পিহু রান্না ঘরে চিন্তায় পড়ে গেছে নাবিল এখানে সাদির সাথে কি করছে।আর সাদির মনে ভাবনা পিহু নাবিল কে চিনে কিভাবে।ওদিকে নাবিল গাত মুখ ধুয়ে মুখ মুছতে মুছতে ভাবতে থাকে সাদির বোন পিহু।তাহলে সাদির বাবা আর পিহুর বাবা এক। তিন জনের মনে তিন আলাদা আলাদা ভাবনা বাষা বেধেছে।
নাবিল ডাইনিং টেবিল এ এসে বসলো সাথে সাদিও বসলো,,আতিয়া বেগম খাবার এগিয়ে দিচ্ছেন।কিছুক্ষন আগে সাদির কেবিনে যখন নাবিল বসে ছিলো তখন সাদির লান্স টাইম হয়ে যায়।সাদি প্রতিদিন কেন্টিনে খেলেও আজ বাসায় খেতে আসতো কারন ইলিয়াস চৌধুরীকে চেকাপ করা।নাবিলের বাবার অনেক রিপোর্ট থাকায় অনেক টাইম লাগছে এদিকে তার এখন খাওয়া হবে না।
এদিকে সাদি নাবিল কে একা রেখে যেতেও পারছে না।। তাই সাদি নাবিল কে বলে উঠে তার সাথে বাসায় আসতে বলে।যদিও নাবিল কোনো মতেই রাজি হচ্ছিলো না তবে বড় দের কথা অমান্য করা আর সাদির জোরাজোরিতে নাবিল আসতে রাজি হয়। এম্নিতেও নাবিলের হসপিটাল পছন্দ না।এখানে বোরিং লাগছিলো তার। তাই সেও উপরে উপরে রাজি না হলেও ভিতরে ভিতরে রাজি হয়ে যায়।
হসপিটাল থেকে বেরিয়ে সাদি নিজের গাড়ি তে করে নাবিল কে নিয়ে বাড়ির দিকে আসতে থাকে।পথিমধ্যে নানান ধরনের গল্প করে যদিও সাদি চুপচাপ তবে নাবিলের বলা সব কথায় মন দিয়ে শুনছে সে।
আধ গন্টার জ্যাম ঠেলে সাদিদের গাড়ি চলে আসে চৌধুরী বাড়িতে।সাদি আর নাবিল গাড়ি থেকে নেমে এগিয়ে চলে সদর দরজার দিকে।যদিও নাবিলের কেমন গিলটি ফিল হচ্ছিলো।
দুপুরের খাওয়া শেষ করে সাদি ইলিয়াস চৌধুরীকে চেকাপ করলো কোনো সমস্যা আছে কিনা।তারপর নাবিল কে নিয়ে বের হয়ে গেলো হসপিটালে উদ্দেশ্য।সাদি ড্রাইভ করতে করতে জিজ্ঞাসা করলো নাবিল কে…
-“আচ্ছা নাবিল তুমি পিহু কে চিনো…?
সাদির কথায় অন্য মনস্ক থাকা নাবিল হকচকিয়ে যায় তারপর কি উত্তর দিবে ভেবে পাই না।নাবিল কে চুপ থাকতে দেখে সাদি নিজের নজর সামনে রেখে ড্রাইভ করতে করতে আবারো বলে উঠে..
-“আমার কথার উত্তর পেলাম না নাবিল।
এবার নাবিল আমতা আমতা করে বলে উঠলো..
-“কলেজ থেকে পরিচয় আমার বোনের বেস্ট ফ্রেন্ড তাই আরকি।
-“ওহহহহ..!
সাদির এমন শান্ত কথায় নাবিল রহস্যের গন্ধ পাই তবে কিছু বলে না সাদি মন দিয়ে ড্রাইভ করছে তখন সাদি সাহস জুগিয়ে বলে হেসে বলে উঠে…
-“পিহু আপনার বোন দেখলে কিন্তু বুজা যায় না।
নাবিলের কথায় সাদি গম্ভীর কন্ঠে বলে উঠে..
-“পিহু আমার বোন কে বলেছে তোমাকে..?
সাদির এমন কথার জন্য প্রস্তুত ছিলো না নাবিল।হাসি মুখটা মুহূর্তে পানসা হয়ে যায়। সাদি শান্ত কন্ঠে বলে…
-“কিন্তু দেখে তো মনে হলো আপনার বোন আর আন্টি কেও তো মামুনি বলে ডাকলো।
সাদি নাবিলের কোনো কথার প্রতিউত্তর করলো না।শান্ত মুখশ্রী টা গম্ভীর করে নিলো।নাবিল সাদির দিকে তাকিয়ে হেসে আরও কিছু বলতে চাইলো তবে সাদির এমন হটাৎ গম্ভীর মুখশ্রী দেখে চুপ হয়ে গেলো।আগে যখন সাদির কাছে কচিং করতো তখন সে দেখেছে সাদির গম্ভীর মুখ মানে অনেক রেগে যাওয়া।তবে নাবিল বুজলো না এখন রাগ করার মতো কি হলো।
সাদি গাড়ির স্পীড বাড়িয়ে দিলো। কিছুক্ষনের মধ্যেই হসপিটালে পোছে গেলো।তারপর নাবিল কে নিয়ে নিজের কেবিনে চলে এলো নাবিল সাদির গম্ভীর মুখ দেখে কোনো কথা বলার সাহস পেলো না।সাদিও কিছু বললো না।কিছুক্ষন পর একজন নার্স এসে নাবিলের বাবার রিপোর্ট গুলো দিয়ে গেলো সাথে নাবিলের বাবা আছে।
সাদি খুব মনযোগ দিয়ে রিপোর্ট গুলো চেক করতে লাগলো বেশ কিছুক্ষন সাদি ফাইল বন্ধ করে নাবিলের দিকে তাকিয়ে বলে উঠলো..
-“আঙ্কেলের তেমন সমস্যা ধরা পড়ে নাই তবে মেইবি কাজের প্রেশার আর দুঃশচিন্তা করে।এজন্য হার্টে চাপ পড়ে।প্রেশার ফল করে।ওষুধ খেলে আর ঠিকমত ঘুমালে ঠিক হয়ে যাবে।তবে যত কম টেনশন নিবে ততই তার জন্য ভালো।
সাদির কথা শুনে নাবিল দীর্ঘ একটা নিঃশ্বাস ফেললো।যেনো বুকের উপর জমে থাকা বড় কোনো পাথর নেমে গিয়েছে।সাদি প্রেসক্রিপশন করে দিলে নাবিল রা বিদায় নিয়ে চলে যায়।সাদিও নিজের কাজে মনযোগ দেয়।
পিহু সাদিরা চলে যাওয়ার পর থেকেই রুমে সুয়ে সুয়ে ভেবে যাচ্ছে নাবিল কেনো এলো।পিহুর ভাবনার মাঝেই ফোন বেজে উঠলে পিহু ফোন রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে নাবিল বলে উঠে…
-“আচ্ছা পিহু তুমি সাদি ভাইয়ার বোন আমারে তো কখোনো বলো নাই তুমি বলেছো তুমরা দুই বোন…?
পিহু কি বলবে বুজতে পারলো সেতো সত্যিই বলেছে।পিহু বুঝলো না কল করেই এসব কেন বলছে।পিহুকে চুপ থাকতে দেখে নাবিল আবারও বলে উঠলো…
-“আমিতো তোমাকে দেখে অবাক হয়েছিলাম।তুমি সাদি ভাইয়ার বোন ভাবতেও অবাক হয়ে গেছি আমি।
নাবিলে কথায় পিহুর কপালে ভাজ পড়ে। পিহু চোখ ছোট করে প্রশ্ন করে…
-“মানে…?
-“আরে সাদি ভাইয়া চুপচাপ আর তুমি চঞ্চল তাই আরকি।
-“আচ্ছা আপনি ভাইয়াকে কিভাবে চিনেন..?
পিহুর প্রশ্নে নাবিল হাসলো ফোনের এপাশ থেকেও সেই স্নিগ্ধ হাসি পিহুর মনে ধাক্কা খেলো।নাবিল হেসেই উত্তর দিলো..
-“আমি রাস্তায় আছি বাসাই গিয়ে ফোন দিয়ে সব বলবো। আর শুনো কাল নয়টার দিকে চলে আসবা কোচিং এ আমি অপেক্ষা করবো।
বলেই নাবিল কল কেটে দিলো।পিহুর প্রচন্ড রাগ লাগলো,,আচ্ছা সাদি যদি যান্তে পারে পিহু আর নাবিল প্রেম করছে তখন কি হবে।আচ্ছা নাবিল কিছু বলে দেই নি তো।এসব ভেবেই পিহুর মাথা খারাপ ঘুরছে।পিহু মোবাইল এ কার্টুন দেখতে দেখ মতে ঘুমিয়ে গেলো সেখানেই।
সন্ধ্যা সাতটা বাজে সাদি বাসাই ফিরলো হাতে এপ্রোন ঝুলানো। সাদা শার্ট ইন করা কালো চশমা বুকের ঝুলানো চুল গুলো এলোমেলো লাগছে।সাদি উপরে না গিয়ে সোফায় বসলো।পিহু তখন টিভি দেখছে। সাদি পিহুর দিকে তাকিয়ে বলে উঠলো..
-“আম্মু কই রে…একটু পানি খাওয়া তো?
পিহু আড়চোখে সাদি কে দেখলো। তারপর উঠে যেতে নিয়ে বললো…
-“মামুনি মনে হয় ঘরে,, একটু অপেক্ষা করুন পানি দিচ্ছি।
সাদি কপাল কুচকালো।পুরোনো একটা রাগ জন্মালো নতুন করে। সাদির চোখ মুখ গম্ভীর থেকে আরো বেশি গম্ভীর হয়ে গেলো।সাদি গম্ভীর কন্ঠেই পিহুকে উদ্দেশ্য করে বললো….
-“তুই আমার আম্মুকে কি বলে ডাকিস…?
সাদির এমন গম্ভীর কবঠে পিহুর পা থেমে যায়। গায়ের পশ্ম দাঁড়িয়ে যায় পিহু পিছু ফিরে শান্ত কন্ঠে বলে উঠে…
-” মামুনি..!
সাদি মাথা উচু করে পিহুর পানে তাকিয়ে রাগ দমন করার চেষ্টা করে বললো..
-“আজ থেকে আর ডাকবি না..কোনো এক্সকিউজ ছাড়াই তুই আর ডাকবি না..!!
পিহু অবাক হলো সাথে ভ্রু কুচকে গেলো। পিহু কোম্রে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে কিছু বলতে যাবে তার আগে পিছন থেকে আতিয়া বেগম বলে উঠে…
চলবে…..
-(আচ্ছা সাদির এমন রেগে যাওয়ার কারন কি..?কেও কি গেজ করতে পারছো পারলে বলে জাও কমেন্ট এ। আজকের পর্ব কেমন হয়েছে বলে জাও আশা করি ভালো লাগবে।কেও বাজে মন্তব্য করবেন না আমার মতো করে গল্পটা এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার মনোবল দিন)-
Share On:
TAGS: নিষিদ্ধ চাহনা, সারা চৌধুরী
CLICK HERE GO TO OUR HOME PAGE
-
নিষিদ্ধ চাহনা পর্ব ২০
-
৪ বছরের চুক্তির মা পর্ব ৩
-
৪ বছরের চুক্তির মা পর্ব ১৩
-
নিষিদ্ধ চাহনা গল্পের লিংক
-
৪ বছরের চুক্তির মা পর্ব ১৫
-
নিষিদ্ধ চাহনা পর্ব ৫
-
৪ বছরের চুক্তির মা পর্ব ৬
-
নিষিদ্ধ চাহনা পর্ব ১
-
নিষিদ্ধ চাহনা পর্ব ৪
-
৪ বছরের চুক্তির মা পর্ব ৮