Golpo romantic golpo নির্লজ্জ ভালোবাসা

নির্লজ্জ ভালোবাসা পর্ব ৪০


নির্লজ্জ_ভালোবাসা

লেখিকাসুমিচোধুরী

পর্ব ৪০ (❌কপি করা নিষিদ্ধ❌)

শিহাব পাথরের মতো নিশ্চুপ হয়ে ব্যালকনির গ্রিল ধরে দাঁড়িয়ে আছে। তুরা একদম শিহাবের পিছন ঘেঁষে এসে দাঁড়াল, কিন্তু দূরত্ব বজায় রাখল। তার দু’হাত ভয়ে কাচুমাচু হচ্ছে শিহাবের সঙ্গে ঠিক কীভাবে কথা বলা যায়, সেই সাহসটাই সে সংগ্রহ করতে পারছে না। বেশ কিছুক্ষণ অস্বস্তিকর নীরবতা বজায় রাখার পর, সব দ্বিধা ঝেড়ে ফেলে তুরা কাঁপা কাঁপা, প্রায় ফিসফিসে গলায় ডাক দিল।

“শি.. শিহ..শিহাব ভাইয়া?”

তুরার আকুল কণ্ঠস্বর শুনে শিহাব তড়িৎ গতিতে চমকে উঠল। সে ধীরে ধীরে পিছনে ঘুরে তাকিয়ে দেখল সামনে তুরা দাঁড়িয়ে আছে। শিহাব তুরাকে দেখে মুখে একটি প্রাণহীন, শীতল, কৃত্রিম হাসি ফুটিয়ে বলল।

“হুম, তুরা ভাবি? কিছু বলবা?

শিহাবের মুখে ‘ভাবি’ ডাক শুনে তুরা হতভম্ব হয়ে গেল। এই সুঠামদেহী, গম্ভীর পুরুষটি, যে কিনা তার থেকে বয়সে ঢের বড় সে তাকে, এই নিতান্ত ছোট মেয়েটিকে,’ভাবি’ বলে সম্বোধন করছে! এই চিন্তা মাথায় আসতেই তুরা বিস্ময়ে চোখ গোল করে শিহাবের দিকে অবিচল দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল।

শিহাব তুরার অবিশ্বাসমাখা, ফ্যালফ্যাল চোখের চাহনি দেখেই সবটা বুঝে গেল। শিহাব পুনরায় সেই কৃত্রিম, সামান্য হাসিটা ঠোঁটে ফুটিয়ে বলল।

“অবাক হচ্ছো তো ভাবি কেন ডাকছি? আসলে, রৌদ্র আর আমি বয়সে প্রায় সমান হলেও, এখন সম্পর্কের খাতিরে রৌদ্র আমার বড়। আর তুমি যেহেতু রৌদ্রের জীবনসঙ্গিনী, তাই তুমিও এখন থেকে আমার সম্মানীয় গুরুজন। তাই এই ‘ভাবি’ ডাকটাই আমার কাছে সঠিক মনে হয়। কিছু মনে করো না। এনিওয়ে কিছু বলবা?”

শিহাবের কথায় তুরা সঙ্গে সঙ্গে মাথা নিচু করে ফেলল। শিহাবের এই ‘ভাবি’ সম্বোধন আর তার কথার অন্তর্নিহিত অর্থ তুরার কানে যেন অপরাধবোধের তীব্র চিৎকার হয়ে বাজল। তুরা মাথা নিচু রেখেই খুব আস্তে করে বলল।

“শিহাব ভাইয়া, যা হওয়ার ছিল, তা হয়ে গেছে। হয়তো বিধাতার লিখন অন্যরকম ছিল, তাই আপনার সাথে আমার মিল হয়নি। আ… প…।”

তুরার বাক্যটি অসমাপ্ত রেখেই শিহাব দ্রুত উল্টোদিক ঘুরে গেল। সে ব্যালকনির গ্রিল ছেড়ে অন্ধকার, নীরব আকাশের দিকে শূন্য দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলল।

“বিধাতা চাননি? নাকি তুমিই চাওনি, তুরা ভাবি?।”

শিহাবের কথায় তুরা কী জবাব দেবে, যেন মুহূর্তের জন্য তার মুখ থেকে কথা সরছে না। তবুও সে কষ্ট করে নিজেকে স্থির রেখে বলল।

“এখন এইসব পুরোনো, চাপা কথা না তুললে কি হয় না শিহাব ভাইয়া?”

শিহাব তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকে বিঁধল।

“আমি কি এসব বলতে এসেছি? তুমিই তো এসে আলাপ শুরু করলে।”

তুরা লজ্জা ও অস্বস্তি কাটিয়ে একটু সাহস নিয়ে বলল।

“ইয়ে মানে, শিহাব ভাইয়া, আরশি আপু অসাধারণ একজন মানুষ। আপনাকে সে নিঃস্বার্থভাবে ভালোবাসবে, আমি জানি। আমি আপনার কাছে চিরকাল অপরাধী, কিন্তু এই অপরাধী হিসেবে আমি আপনাকে শুধু একটা মিনতি করছি আরশি আপুকে কখনো কষ্ট দিয়েন না। দেখবেন, আপনার মনের ভেতরে যে আঘাতের ক্ষতগুলো জমে আছে, আরশি আপু সেইগুলোতে স্নেহভরা মলমের মতো ধীরে ধীরে শান্তি এনে দেবে, সব সারিয়ে তুলবে। জীবন আর সময় কখনো এক থাকে না, শিহাব ভাইয়া তেমনি মানুষের মনও সবসময় স্থির থাকে না। আজ আপনি গভীর বেদনায় ভারাক্রান্ত, কিন্তু সামনে এমন সুন্দর দিনও আসবে, যখন তীব্র, একনিষ্ঠ সুখে আপনি পাগল হয়ে থাকবেন। আর সেই পাগল হওয়ার প্রধান কারণটাই হবে আরশি আপু।আর আরশি আপুর কোনো দোষ নেই, শিহাব ভাইয়া! আপু শুধু আমাকে একটুখানি সাহায্য করেছিল। আসলে, আমি রৌদ্রকে প্রাণ দিয়ে ভালোবাসি। আরশি আপু সাহায্য না করলেও আমি এমনিতেও চলে যেতাম। আপনি তো তখন নিজেই বলেছিলেন যখন তীব্র ভালোবাসা মাথায় চড়ে বসে, তখন দুনিয়ার কোনো নিয়ম, কোনো ঠিক-ভুল তার কাছে গুরুত্ব পায় না। ঠিক তেমনি আমারও তখন কিছুই মাথায় আসত না। তাই আমার করজোড়ে অনুরোধ, আমাকে পালাতে সাহায্য করার জন্য আরশিকে কখনো দোষারোপ করবেন না, ভুল বুঝবেন না। আরশির মতো একজন আপু পেতে ভাগ্যের জোর লাগে, আর সেই ভাগ্যটা পৃথিবীতে খুব কম মানুষেরই থাকে। আর সেই কম ভাগ্যবানদের মধ্যে আমি একজন। আজ আমি যেমন আপুকে নিয়ে গর্বিত, একদিন আপনিও আপুকে নিয়ে মাথা উঁচু করে গর্ব করবেন আমার এই কথাটা মিলিয়ে নিয়েন শিহাব ভাইয়া।”

কথাটা বলেই তুরা এবার বিনয়ের সাথে দুই হাত জোড় করে বলল।

“আশা করি আপনি আমার কথাগুলো বুঝতে পেরেছেন, আর পারলে আমাকে মাফ করবেন শিহাব ভাইয়া। আর আরশি আপুকে জীবনে কখনো কষ্ট দেবেন না এই মিনতিটুকু আমি আপনার কাছে গচ্ছিত রাখছি।”

কথাটি শেষ করেই তুরা আর এক মুহূর্তও সেখানে শ্বাস ফেলল না। সে প্রায় দৌড়ে সোজা সেখান থেকে বেরিয়ে মুহূর্তেই দৃষ্টির আড়াল হয়ে গেল।

তুরা যেতেই খুব সন্তর্পণে আরশি ব্যালকনিতে এল। শিহাব তখনো স্থির, নিশ্চল হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। আরশি মনে করছে তুরাকে পালাতে সে যে সাহায্য করেছিল, এই কারণে শিহাব হয়তো তার প্রতি পচন্ড রেগে আছে। এসব ভেবে আরশির বুক কাঁপছে। আরশি তাই দু’হাতের মুঠি শক্ত করে, মাথা নিচু করে ভীষণ নরম ও নিচু গলায় ডাক দিল শিহাবকে।

“শিহাব ভাইয়া, আপনি কি আমার উপর রেগে বম হয়ে আছেন?

শিহাব আরশির ভীরু প্রশ্নটা শুনে মুহূর্তেই বুঝতে পারল আরশির মনের ভয়টা কোথায়। শিহাব শান্ত শীতল কণ্ঠে বলল।

“না, রাগ করার কী আছে তাতে? যে থাকতে চায় না, তাকে কি শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা যায়? কথাটা শুনতে সোশ্যাল মিডিয়ার ক্যাপশনের মতো শোনালেও, এটাই তো জীবনের নগ্ন বাস্তব।”

আরশির মনে তবুও সন্দেহ ও অস্থিরতা দূর হলো না।

“বিশ্বাস করুন, শিহাব ভাইয়া, ভালোবাসার কাজে সাহায্য করা কর্তব্য, তাই আমিও তুরাকে পা…।”

আরশির বাক্যটি শেষ হওয়ার আগেই শিহাব আচমকা দুই হাতে নিজের কান চেপে ধরে তীব্র বিরক্তি আর ক্রোধে চিৎকার করে উঠল।

“জাস্ট স্টপ ইট, আরশি! আমি এসব সাফাই শুনতে চাই না! আমি কি এক সেকেন্ডের জন্যেও বলেছি আমি তোমার উপর রাগ করেছি? তোমরা দুজন কী পেয়েছো আমাকে? একজন এসে গভীর আঘাত দিয়ে যাবে, আর অন্যজন এসে সেই ক্ষতে মলম দিতে চাইবে? না আমার জীবন তোমাদের নাটকের ক্ষেত্র বা কারও বন্দীশালা হবে না, বুঝেছো? বিশেষ করে দুজনই আমার থেকে দূরে থাকবে! আর বিশেষভাবে আরশি তুমি আমার থেকে একদম দূরে থাকবে!”

কথাটা বলেই শিহাব যেতে নিবে হঠাৎ কি মনে করে দাঁড়িয়ে আরশির দিকে ঘুরে তাচ্ছিল্য হেসে বলল।

“আচ্ছা, আরশি, মানুষ কেন পাষাণে পরিণত হয়? যাকে আমরা প্রাণের চেয়েও বেশি ভালোবাসি, তারে কেন আমরা কোনোদিনও পাই না? আবার যারে ভুলেও চাই না, তাকেই কেন আমরা অনিবার্যভাবে পাই?”

শিহাবের কথায় আরশি মাথা আরও গভীরভাবে নিচু করল। শিহাবের আবেগময়, তীব্র হতাশাভরা কথাগুলো যেন সুচালো তীরের মতো এসে বিঁধল আরশির ক্ষতবিক্ষত হৃদয়ে।

শিহাব আরশির বিমর্ষ, করুণ নীরবতা দেখেই বুঝে গেল এই কঠিন, রুঢ় কথাগুলোর কোনো জবাব আরশির কাছে নেই। শিহাব আর এক মুহূর্তও সময় নষ্ট করল না। সে আরশিকে পেছনে ফেলে নীরবে রুমে এসে বিছানার এক প্রান্তে, দেয়াল ঘেঁষে শুয়ে পড়ল।

আরশি তখনো ব্যালকনির কাছে কাঠ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। তার অবাধ্য চোখ থেকে গোপনে কয়েক ফোঁটা উষ্ণ অশ্রু গড়িয়ে পড়ল। এই অশ্রু ঠিক কিসের জন্য ঝরছে, আরশি নিজেও বুঝতে পারল না। তবে শিহাবের তীব্র, প্রত্যাখ্যানের মতো কথাগুলো তাকে যে ভীষণ আঘাত দিয়েছে, সেটা স্পষ্ট। এই চোখের জল কি তবে সেই গভীর ক্ষতের প্রমাণ? কিন্তু আরশি তো শিহাবকে কখনো ভালোবাসেনি তাহলে কেন শিহাবের কথায় তার বুকে এতটা ধাক্কা লাগল? তার মনে হলো, কেউ যেন ভেতর থেকে তার হৃৎপিণ্ডে একটা ধারালো তীর বিঁধিয়ে দিল।


তুরা রুমে এসে অবাক, তার বিছানার ঠিক মাঝখানে, পায়ের উপর পা তুলে আয়েশ করে শুয়ে আছে রৌদ্র। তুরা আশ্চর্য হয়ে জিজ্ঞেস করল।

“আপনি এখানে! আমার রুমে? এখনো ঘুমাননি কেন? যান গিয়ে আপনার রুমে ঘুমান, অনেক রাত হয়েছে তো!”

তুরার কথায় রৌদ্র বিছানায় হেলান দিয়ে আলতো করে উত্তর দিল।

“আরে, ঘুমানোর জন্যই তো শুয়ে আছি।”

তুরা বিরক্তি মেশানো বিস্ময়ে বলল।

“তো আমার রুমে কেন? আপনার রুমে যান!”

রৌদ্র ঠোঁটে দুষ্টু হাসি ফুটিয়ে বলল।

“বিয়ে কি আমি শুধু বউয়ের মুখ দেখার জন্য করেছি? মগের মুল্লুক পেয়েছিস নাকি আমাকে যে আমি আমার ঘরে থাকব আর তুই তোর ঘরে থাকবি?”

রৌদ্রের কথা শুনে তুরা চোখ সরু করে বলল।

“মানে কী বলতে চাইছেন আপনি খুলে বলুন তো!”

রৌদ্র বিছানায় উঠে শরীরটাকে টানটান করে বসল এবং দুষ্টু হাসি হেসে তুরার দিকে তাকিয়ে বলল।

“কাছে আয়,হাতে কলমে বুঝিয়ে দিচ্ছি আমি ঠিক কী বলতে চাইছি।”

তুরা আতঙ্কে ঠোঁট কাঁপিয়ে তুতলাতে শুরু করল।

“কি কি আমি আমি বুঝতে চাই না! আ-আপনি আপনার রুমে যান তো! আমি ঘুমাবো, আমার ভীষণ ঘুম পেয়েছে।”

রৌদ্র বিদ্যুতের বেগে এক লাফে বিছানা থেকে নেমে পড়ল। রৌদ্রকে এভাবে হিংস্র, বেপরোয়া গতিতে নামতে দেখে তুরা আতঙ্কে কাঁপতে কাঁপতে পিছাতে পিছাতে লাগল। তুরার কণ্ঠস্বর প্রায় রুদ্ধ হয়ে গেল।

“আসলে আমি আমি ভীষণ ভয় পাচ্ছি! প্লিজ, আপনি আপনার রুমে যান।”

রৌদ্র তুরার দিকে ধীরে ধীরে, শিকারির মতো স্থির পায়ে এগোতে এগোতে দুষ্ট হেসে বলল।

“নৌ বেবি। দ্যাট ওন্ট হ্যাপেন বিয়ে করেছি আজ তিন দিন, কিন্তু এখন পর্যন্ত বউকে ভালোরকম ছুঁয়েও দেখিনি। আজকে আমি তোকে খুব গভীর ভাবে ছোঁব, যতটা গভীরে ছুঁলে তুই আতঙ্কে কাঁপবি, প্রতিটা নিঃশ্বাসে কাঁপবি। গট ইট মাই ওয়াইফ।”

তুরা পিছাতে পিছাতে একদম দেয়ালের সঙ্গে পিঠ ঠেকিয়ে গেল। আর রৌদ্র এক লহমায়, হিংস্র গতিতে এগিয়ে এসে তুরাকে তার দুই বাহুর মাঝে দেয়ালের সঙ্গে চেপে ধরল। তুরার ভয়ে ঠোঁট দুটো থরথর করে কাঁপছে, আর রৌদ্রের উষ্ণ, উত্তপ্ত নিশ্বাস সরাসরি তার মুখের ওপর এসে আছড়ে পড়ছে। রৌদ্রের চোখজোড়া গভীর নেশায় আচ্ছন্ন। সে তুরার দিকে স্থির, তীব্র দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল। বিশেষ করে, তুরার ঠোঁটের কোণে থাকা সেই ছোট্ট তিলটির দিকে তার চোখ যেন আটকে গেল, দৃষ্টি আরও নেশাচ্ছন্ন হয়ে উঠল। তুরা যেন পাথর হয়ে গেল, বরফের মতো দাঁড়িয়ে রইল রৌদ্রের সেই বিপদসঙ্কেত দেওয়া নেশালো চোখের দিকে তাকিয়ে।

রৌদ্র তুরার ঠোঁটের দিকে নিজের ঠোঁট ধীরে ধীরে, শিকারির মতো এগিয়ে যেতে লাগল। রৌদ্রের মতলব বুঝে তুরা আতঙ্কে নিমেষে চোখ বন্ধ করল। সে ভয়ে জামা শক্ত হাতে খামচে ধরল আর ভীষণভাবে কাঁপতে শুরু করল।

রৌদ্র ঠোঁট নিয়ে এগিয়ে যখনই তুরার ঠোঁটে স্পর্শ করবে, ঠিক তখনই দেখল তুরা ভয়ে থরথর করে কাঁপছে। রৌদ্র তুরার এই অবস্থা দেখে বিজয়ীর হাসি হাসল। তার ঠোঁটটা তুরার কাঁধের কাছে নামিয়ে আনল এবং টুপ করে একটা উষ্ণ চুম্বন তুরার কাঁধে ছোঁয়ালো। রৌদ্রের সেই ভিজে ঠোঁটের আকস্মিক স্পর্শ পেতেই তুরা বিদ্যুৎস্পৃষ্টের মতো চমকে উঠল।

রৌদ্র তুরার কানের কাছে মুখ নিয়ে মিহি, আবেদনময়ী কণ্ঠে ফিসফিসিয়ে বলল।

“বিলিভ মি বউ আই অ্যাম গেটিং কমপ্লিটলি কনট্রোললেস তোকে খুব আদোর করতে ইচ্ছা করছে। ইচ্ছা করছে এখনি তোর মাঝে ডুব দেই। অ্যান্ড মাই থিং ইজ অলরেডি ইরেক্টেড বিকজ অফ ইয়োর ট্রেম্বলিং। ওইটা আমাকে বড্ড জ্বালাচ্ছে, বিকজ ইট ওয়ান্টস টু গো ইনসাইড ইউ।”

রৌদ্রের এমন নির্লজ্জ, উত্তেজক কথায় তুরার চোখ আতঙ্কে বিস্ফারিত হয়ে গেল। লজ্জায় তার কান ও গলা যেন আগুনে পুড়ছে আর সেখান থেকে যেন ধোঁয়া বের হতে লাগল। রৌদ্র কী সব নির্লজ্জ ঠোঁটকাঁটার মতো কথা বলছে!

তুরার ভাবনার মাঝেই রৌদ্র তুরার কপালের সাথে নিজের কপাল ঠেকিয়ে গভীরভাবে নিশ্বাস ফেলে বলল।

“কিন্তু কী করব বল? আমি তোর স্বামী তাই একজন স্বামী হয়ে স্ত্রীর এই দুর্বলতার সুযোগ নিতে পারি না। তাই তুই যখন মন থেকে, নিজে থেকে আমাকে কাছে ডাকবি, তখনি আমি তোর কাছে যাব। তবে মনে রাখিস, আমার কিন্তু ধৈর্য সীমিত। বেশি ধৈর্য পরীক্ষা করিস না, কেমন? আমার লক্ষী বউ। ঘুমা গুড নাইট। কাল দেখা হবে।বাসর ঘরে রেডি থাকিস। আই উইল বি ওয়েটিং ফর ইউ, হ্যাভ আ সুইট ড্রিম।”

কথাটা বলেই রৌদ্র তুরার মুখে আলতো করে একটা উষ্ণ, লম্বা ফুঁ দিল। সেই ফুঁ যেন তুরার স্নায়ুতন্ত্রে বিদ্যুৎ তরঙ্গ বইয়ে দিল। রৌদ্র আর এক সেকেন্ডও সেখানে দাঁড়াল না, শিকারী যেন তার শিকারকে লোভ দেখিয়ে দ্রুত রুম থেকে বেরিয়ে গেল।

রৌদ্র রুম থেকে আড়াল হতেই তুরা আতঙ্কে ছুটে গিয়ে দরজার ছিটকিনি লাগাল। তারপর দেয়ালে হেলান দিয়ে হাঁপাতে হাঁপাতে অনিয়ন্ত্রিত বড় বড় শ্বাস নিতে লাগল। এই লোকটা কাছে এলেই তার কেন এমন অদ্ভুত, দুর্বোধ্য ভয়ংকর অনুভূতি হয়, সেই ভাবনাতেই তুরা হিসেবা মিলাতে পারছে না।

রানিং…!

Share On:

TAGS: ,



CLICK HERE GO TO OUR HOME PAGE
Related Posts
 

0 Responses

Leave a Reply