Golpo ডার্ক ডিজায়ার ডার্ক রোমান্স

ডার্ক ডিজায়ার পর্ব ১৭


১৭. (অতিরিক্ত রোমান্স। সতর্কতা 🔞🚫)

Dark_Desire

ডার্ক_ডিজায়ার

দূর্বা_এহসান

“এভাবে না, জান। জিহ্বা দিয়ে হালকা চেটে টেস্ট করতে হয়।”

রান্নাঘরের ভেতর হালকা আলো। এক কোণে ধোঁয়া উঠছে কড়াই থেকে।মৃন্ময় চুপচাপ চেয়ারে বসে তাকিয়ে আছে তরুর দিকে। শরীর এখনও পুরোপুরি ভালো হয়নি।জ্বরটা মাত্রই কমেছে, তবুও মুখে একটু ফ্যাকাশে ভাব। তরু চুল বাঁধা অবস্থায় রান্নায় ব্যস্ত। ওর নড়াচড়া, কাজের গতি।সবকিছুতেই প্রশান্তি খুজে পাচ্ছে মৃন্ময়।বাসা ফেরার পর মৃন্ময়কে অনেক কষ্টে রাজি করিয়ে রান্না ঘরে এসেছে তরু।তাকে কিছুতেই রান্না করতে দিবে না। অসুস্থ্য শরীরেও সেই নাকি রান্না করবে।তরু মানতে নারাজ।অবশেষে মৃন্ময় রাজি হয়েছে এক শর্ত দিয়ে।সেও তরুর পাশে থাকবে।

“তুমি বসে থাকো, আমি করব”

তরু বলেছিল কয়েকবার।মৃন্ময় তাতে রাজি হয়নি।

“না, আমি থাকব পাশে। তুমি একা করলে মন শান্তি পাবে না, জানি।”

শেষ পর্যন্ত তরু হাল ছেড়েছে।
“ঠিক আছে, তবে চুপচাপ বসে থাকবে।”

মৃন্ময় হেসে বলেছিল, “চুপচাপ থাকা আমার পক্ষে কঠিন হবে।”

এখন সেই কথাটাই যেন সত্যি হচ্ছে। তরু লবণের পরিমাণ যাচাই করতে এক চামচ তরকারি তুলে মুখে দিতে যাচ্ছিল, ঠিক তখনই পেছন থেকে মৃন্ময়ের স্বর,

“এভাবে না, জান। জিহ্বা দিয়ে হালকা চেটে টেস্ট করতে হয়।”

তরু মুহূর্তে থেমে গেল। চোখ বড় করে তাকাল মৃন্ময়ের দিকে।লোকটা এমন কথা এত সহজে বলে কেমন করে!
মৃন্ময়ের ঠোঁটের কোণে হালকা দুষ্টু হাসি।

“হালকা ভাবে কেন?আপনি চাইলে তো আমি,,,,,,”

কথা শেষ না করতেই মৃন্ময় যেন কিছুতে চমকে উঠল।চোখ দুটো বড় হয়ে গেল।মনে হল যেন বিষম খেলো মৃন্ময়।এরকম জবাব সে মোটেও আশা করেনি

“কি?”
সে শুধু এটুকুই বলতে পারল।

তরু তখন একদম কাছে এসে দাঁড়িয়েছে। ওর হাতে উল্ট পিঠে এখনও তরকারির কিছুটা লেগে আছে। মৃন্ময় কিছু বলার আগেই তরু এগিয়ে এলো আরও এক ধাপ।
চেয়ারে বসা মৃন্ময়ের সামনে এসে দাঁড়াল।তারপর ধীরে ধীরে বসে পড়ল তার কোলে।

মৃন্ময়ের নিঃশ্বাস যেন বন্ধ হয়ে গেল। এই অবস্থায় তার মস্তিষ্ক কাজ করছে না।শুধু একটাই প্রশ্ন মাথায় ঘুরছে, “এটা কি সত্যিই ঘটছে?”

তরু তার এক হাত মৃন্ময়ের মাথার পেছনে রাখল, অন্য হাতে থাকা তরকারি টুকু মৃন্ময় এর ঠোঁটে রাখলো।মৃন্ময় এখনও স্থির।এরপর,কিছু বোঝার আগেই তরু তার নিজের ঠোঁট ঠেকিয়ে দিল মৃন্ময়ের ঠোঁটে।মুহূর্তটা থেমে গেল সময়ের গতি থেকে।চোখের পলক পড়ার আগেই তরু মৃন্ময়ের সেই কথাকে বাস্তবে রূপ দিলো। ঠোঁটের কোণে লেগে থাকা শেষ টুকুও ছাড়ল না।
হতবিহ্বল হয়ে গেলো মৃন্ময়।

তরু জানে না, এটা হঠাৎই হয়ে গেল নাকি ইচ্ছে করেই সে করল। হয়তো দুটোর মাঝামাঝি কিছু।একটু পর সে নিজেকে সরিয়ে নিল ধীরে ধীরে।মৃন্ময় তখনও কিছু বলতে পারছে না। চোখে অবিশ্বাস, মুখে থমথমে নীরবতা।

তরু তার ভেজা ঠোঁটে আঙুল ছোঁয়াল।
“এভাবে, তাই না?”

মৃন্ময় খানিকক্ষণ চুপ থাকল। বোঝার চেষ্টা করলো তরুর মনে কি চলছে।তার বুঝতে বেশি সময় লাগলো না।মাত্রই যা হলো তারপরে তো আর কিছুই বোঝার বাকি থাকে না।

তরুকে শক্ত করে কোলে চেপে ধরলো এক হাতে।আরেক হাত সোজা চলে গেলো তরুর কামিজের ভিতর।তরুর ভাবনার থেকেও দ্রুত চলছিল মৃন্ময়।

“বে’ব, এ কোন আগুন জ্বালিয়ে দিলে! নিজেই যে জ্বলে যাবে এখন”

“জ্বলতে চাই”

ব্যাস। আগুনে যেন ঘী ঢেলে দিলো এবার তরু।মৃন্ময়ের হাতের স্পর্শ গাঢ় হতে শুরু করলো।কামিজের ভিতরের হাতটা এবার যেন মরিয়া হয়ে উঠলো তরুর শরিরের প্রতিটি কোণ ছোয়ার জন্য।
তরু বাধা দেওয়ার চেষ্টা একবারের জন্য করলো না। উল্টো সেও সায় দিতে শুরু করলো। মৃন্ময়ের হাত যখন তরুর বুকের ভাজে,তরুর হাত তখন মৃন্ময়ের চুল শক্ত করে ধরে নিজেকে সামলাতে ব্যস্ত।
তরু হঠাৎ উঠে দারালো। এক টানে গায়ের জামা খুলে ফেললো।মৃন্ময়ের সামনে মূহুর্তেই সে শুধু ইনারে চলে এলো।কিন্তু! সেটাও থাকলো না। মৃন্ময়কে অবাক করে দিয়ে খুলে ফেললো। ছুড়ে ফেললো মৃন্ময়ের দিকে।দু হাতে চুল বেধে, মৃন্মময়ের দুই দিকে পা ছড়িয়ে কোলে বসে পরলো।বুকে চেপে ধরলো ওকে।উন্মুক্ত বুক পেয়ে সেও যেন হামলে পরলো।একটুও না থেমে এদিক থেকে ওদিক ঠোঁট ছুয়ে যাচ্ছিলো।
বেশ কিছুক্ষণ পর মৃন্ময় উঠে দাড়ালো।পাশের সোফায় সুইয়ে দিলো তাকে।বসে পড়লো তরুর পায়ের কাছে।অনবরত চুমু দিতে থাকলো পায়ের তালুতে।তরু বাধা দিতে চাইলো।কিন্তু মৃন্ময় তা হতে দিলো না।

ধীরে ধীরে সে উপরে উঠে আসছিলো। তরুর পরনে থাকা পালাজো উপরের দিকে উঠে যাচ্ছিলো।সাথে মৃন্ময়ের চুমু।এক জায়গায় এসে থেমে গেল সে।তাকালো একবার তরুর পানে।তরু তখন ঠোঁট কামড়ে শুয়ে আছে।শরির কেপে কেপে উঠছিল তার।মৃন্ময় আর নিজেকে আটকালো না।টেনে খুলে ফেললো পালাজো।মুখ ডুবিয়ে দিলো সে। তরু খামচে ধরলো তার চুল।

এক মিনিট, দুই মিনিট….. সময় চলে গেলো মিনিট দশের কাছে।তরু আর সহ্য করতে পারলো না।মৃন্ময়কে টেনে মুখের কাছে আনলো।পর পর কয়কটা চুমু দিলো।

“আরেকটু জান”

মৃন্ময়ের কন্ঠে নেশা। যেন সে সদ্য নেশা করেছে।তরু দুই হাত তার গালে রাখলো।নিশ্বাস ভারী কন্ঠে বললো,

“নাহহ”

“প্লিজ”

“নাহহহহ”

মৃন্ময় মানছিলো না।তরু বুঝলো এভাবে থামাতে পারবে না।সে ততক্ষনাৎ মৃন্ময়কে নিচে ফেলে উপরে চলে এলো।একটা একটা করে তার শার্টের বাটন খুলে দিলো। মৃন্ময়ের ঘারে চুমু দিলো তরু। মৃন্ময় শান্ত হলো। তরু বুকের কাছে এসে ডান দিকে কামড় বসালো। চমকালো মৃন্ময়।তরুর দিকে তাকালো।সে ওভাবেই মুচকি মুচকি হাসছে।

“এটা কি হলো?”

“কি হলো!”

“কি করলে এটা তুমি?”

“তুমি আমার সাথে যা করো তাই করলাম”

“তাই বলে?”

“হুসসসসস”

তরু মৃন্ময়ের ঠোঁটে আঙুল ঠেকিয়ে বললো। মৃন্ময় ও চুপ করে গেলো। তরু ধীরে ধীরে নেমে এলো মৃন্ময়ের পান্টের কাছে। মৃন্ময়ের দিকে তাকিয়ে একটা বাকা হাসি দিয়ে সে জিপার খুলে ফেলো।

“অওওও,ফেভারিট ওয়ান”

সময় কেটেছে অনেকটাই। গেছে হয়তো কুড়ি মিনিট।মৃন্ময়ের চোখ মুখে প্রশান্তি।তবুও এক সময় অসহ্য হয়ে বললো,

“জান,আই ওয়ান্ট টু পুট ইট ইনসাইড নাও”

“উহু”

কি আশ্চর্য। তরু এই সময় না বলছে। মৃন্ময় হা হয়ে গেলো ওর না শুনে।তরু একটা মুচকি হাসি দিলো।পরমুহূর্তেই যা করলো তার জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিলো না মৃন্ময়।আজ যেন সে অবাকের উপর অবাক হচ্ছে।

“ঠিক আছে না জান?আই নো ইউ উইল লাইক ইট”

মৃন্ময় কিছু বললো না।তবে তার মুখ জুরে প্রশান্তি তরুকে বুঝিয়ে দিলো।দুজনেই হারিয়ে গেলো এক আগুন খেলায়।


মাঝে কাটলো একটা দিন। সেই দিনের পর তরু আর মৃন্ময় দুজন যেন একে অপরকে ছাড়া এক মুহুর্তের জন্য থাকতে পারে না। মৃন্ময় খুজে পেলো না রজনীকে। পেলে হয়তো রজনী হারিয়ে যেতো দুনিয়া থেকে।মৃন্ময় এখনো তাকে খুজছে।তার পাখির ক্ষতি করতে হাত বাড়িয়েছে এই মেয়ে।

তরুর হাতে একটা পুরোনো ছবি ফ্রেম। কাঠটা একটু খসে গেছে। তবু যত্নে পালিশ করা। কাঁচের নিচে তিনটে মুখ- একজন কিশোর, এক নারী, আর এক পুরুষ। ছবির আলোয় তাদের হাসি যেন এখনো জ্বলজ্বল করছে। বারান্দায় বসেছে সে।মৃন্ময় তার কোলে মাথা দিয়ে বসেছেমৃন্ময় হালকা হাসল।

“ছবিটা পুরনো”
তরু জিজ্ঞেস করল।

“হ্যাঁ”
মৃন্ময় বলল, কণ্ঠটা একটু নিচু।
“তখন আমার বয়স বারো।”

তরু তাকিয়ে রইল ছবিটার দিকে। কাঁচে জানালার আলো পড়েছে।তিনটে মুখের হাসি তাতে যেন জীবন্ত হয়ে উঠেছে।

“ওনারা?”

মৃন্ময় উত্তর দিল না সঙ্গে সঙ্গে। একটু চুপ থেকে বলল,
“আমার মা-বাবা।”

তরুর চোখের দৃষ্টি শিথিল হলো। ও কিছু বলার আগেই মৃন্ময় নিজে থেকেই বলতে শুরু করল।

“ওনারা মারা যান আমার বারো বছর বয়সে।একদম হঠাৎ। একটা এক্সিডেন্টে।”

ঘরে নেমে এলো অদ্ভুত এক নীরবতা।তরু চুপ করে বসে রইল।ভয় পাচ্ছে ভুল কিছু বলে ফেলতে।মৃন্ময় তরুর দিকে তাকিয়ে একটু হেসে নিল। কিন্তু সেই হাসিটা ছিল ব্যথাতুর।

“ওইদিন সকালটাও এমনই ছিল।মা বলেছিল স্কুল থেকে ফিরেই সবাই মিলে আইসক্রিম খেতে যাবো। বাবা তখন তাড়াহুড়ো করছিলেন।কোনো ব্যবসায়িক মিটিং ছিল ওনার। বাবা ছিলেন বড় এক শিল্পপতি।আজকের খান ইন্ড্রাস্ট্রি তারই দার করানো।যা এখন আমার হাতে। সবাই চিনত তাকে। কিন্তু আমার কাছে তিনি শুধু আমার বাবা ছিলেন।যিনি আমাকে তার নিজের থেকেও বেশি ভালোবাসতেন।”

“তুমি নিশ্চয় তখন দারুণ খুশি থাকতে।”

“থাকতাম”
মৃন্ময় বলল।
“কিন্তু সেই বিকেলে সব শেষ হয়ে গেল।”

সে একটু থামল। তারপর ধীরে ধীরে বলল,
“স্কুল শেষে আমি বন্ধুদের সঙ্গে ক্রিকেট খেলছিলাম। হঠাৎ আমার চাচা এসে হাজির হলেন। মুখটা সাদা, চোখ লাল। কিছু না বলে আমাকে জড়িয়ে ধরলেন। আমি তখন কিছুই বুঝিনি। পরে জানলাম, মা-বাবার গাড়ি একটা ট্রাকে ধাক্কা খেয়েছিল। বাবা নাকি সঙ্গে সঙ্গেই… আর মা হাসপাতাল পর্যন্তও বাঁচেননি।”

তরুর গলায় দলা বেঁধে গেল।
“তখন তুমি একাই ছিলে?”

“হ্যাঁ। চাচাজানের বাড়িতে চলে যাই।আমার ঘরে একটা ছোটো টেবিল ছিল, ওটার ওপরে আমি এই ছবিটা রাখতাম। রাতে ঘুমানোর আগে একবার তাকাতাম।মনে হতো, মা হেসে উঠছে, বাবা হাত নেড়ে বলছেন, ‘চলো, গাড়ি চালাতে হবে।”

তরু শান্তভাবে বলল, “তোমার মনে আছে ওনাদের কণ্ঠস্বর?”

“হ্যাঁ, মাঝে মাঝে মনে পড়ে। কিন্তু দিন যাচ্ছে, শব্দগুলো যেন ঝাপসা হয়ে যাচ্ছে। “

“তুমি কখনও ছবিটার কপি করোনি?”

“না”
মৃন্ময় উত্তর দিল।
“এটাই একমাত্র। একবার কাঁচটা ভেঙে গিয়েছিল, ভয়ে আমি এক সপ্তাহ খেতে পারিনি। তারপর থেকে এমনভাবে রাখি যেন কিছুতেই ক্ষতি না হয়।”

তরু ছবিটার দিকে আবার তাকাল।
“তোমার মা দেখতে অনেক শান্ত ছিলেন।”

“ছিলেন।ওনার গলার আওয়াজ ছিল একদম নদীর মতো। আমি ভোরে ঘুম ভাঙলে রান্নাঘর থেকে ওর গলার আওয়াজ শুনতাম ‘মৃন্ময়, দুধ খেয়ে নে।’ আজও কখনও কখনও ঘুম থেকে উঠে মনে হয় কেউ ডাকছে। কিন্তু চোখ খোলার পর দেখি ঘর খালি।”

তরু একটু চুপ করে থেকে তার হাতটা ছুঁলো।মৃন্ময় কিছু বলল না। চোখদুটো একটু ভিজে উঠেছিল। কিন্তু সে সেটা লুকানোর চেষ্টা করল।

“আমি কখনও ওই রাস্তা দিয়ে যাই না যেখানে দুর্ঘটনাটা হয়েছিল। মনে হয় যেন কিছু একটা টেনে ধরবে।”

তরু চুপচাপ ছবিটা আবার তার হাতে দিল।বাইরে তখন সূর্য ডুবে যাচ্ছে। জানালা দিয়ে কমলা আলো এসে পড়েছে ছবির ফ্রেমে। তিনটে মুখ ঝলমল করছে।যেন মুহূর্তের জন্য সময় থেমে গেছে। মৃন্ময় ধীরে ফ্রেমটা বুকে চেপে ধরল।বাইরের হাওয়া একটু ঠান্ডা। ঘরের বাতাসে পুরোনো কাঠের গন্ধ, আর কোথাও একদম নিচু স্বরে বেজে চলেছে ঘড়ির টিকটিক।মৃন্ময় আবার ছবিটার দিকে তাকাল।তিনটে মুখ, তিনটে আলো, আর তিনটে নীরবতা।

তারপর সে ধীরে বলে উঠল, “আমি এখনো ওনাদের হাসি শুনতে পাই। শুধু,,, কণ্ঠগুলো একটু দূরে চলে গেছে।”

মৃন্ময় চোখ বন্ধ করল।আর মনে হলো, সেই বারো বছরের ছেলেটা আবার একবার তার মা- বাবার কণ্ঠ শুনতে পেল।

চলবে…….

Share On:

TAGS: ,



CLICK HERE GO TO OUR HOME PAGE
Related Posts
 

0 Responses

Leave a Reply