জেন্টাল_মন্সটার
লামিয়ারহমানমেঘলা
পর্ব_১৪
আদ্রিসের পরনে কালো হাই কোর্ট। চোখে বিরক্তি। মুখশ্রী গম্ভীর।
সে সোজা হেঁটে ভেতরে চলে এসেছে।
ঐশী তখন থেকে এক ধ্যানে তাকিয়ে আছে আদ্রিসের দিকে। জেন আশেপাশে কোন শব্দ তার শোনা বন্ধ হয়ে গিয়েছে।
আদ্রিসের সাথে রেভেনও এসেছে।
সে ঐশীকে ওমন তাকিয়ে থাকতে দেখে অবাক হয়। সে জীবনে এমন অনেক রুশিয়ান মেয়েকে দেখেছে আদ্রিসের জন্য দাঁড়িয়ে থাকতে ক্রেজি হতে কিন্তু এমন এক ধ্যানে তাকিয়ে থাকতে দেখেনি কখনো।
রেভেনের বিরক্ত লাগে। ছ্যাচড়া মেয়ে মানুষ।
“আরে না না আদ্রিস এখানে তেমন কোন কথাই হচ্ছিল না।’
“মম আমি ব্যাকইয়ার্ডে আমার কিছু কাজ আছে। রেভেন গিয়ে দেখো ওরা ঠিকঠাক কাজ করছে কিনা।
কেউ ওদের বাঁধা দেবে না।
রেভেন কাজ শেষ হবার পর আমার সাথে দেখা করবি।”
“ওকে বস।”
রেভেন চলে যায় বাহিরের দিকে।
আদ্রিস তাকিয়ে রয় মায়ের দিকে।
“আমি নিচে এসে এই কথা গুলোর একটা সুন্দর এক্সপ্লেনেশন চাই মম।”
কথাটা বলে আদ্রিস উপরে চলে যায়। ঐশী তখনো তাকিয়ে আছে সে দিকে।
“হ্যান্ডসাম মামনি। “
মাধবী বেগম বিরক্তি নিয়ে তাকায়।
“ঐশী।”
ঐশীর ধ্যান ফিরে।
“জ জি মামনি।”
” আদ্রিসের সামনে আদ্রিতাকে দিয়ে কাজ করাতে যেও না। ও এসেই বলেছে আদ্রিতা শুধু ওর কাজ করবে আর কারোর নয়।”
মাধবী বেগম কথা গুলো বলে সেখান থেকে চলে যায়। ঐশী তখন দ্রুত মিশুর রুমে চলে যায়।
রুমের ভেতর প্রবেশ করতে বিছনার মাঝে আদ্রিতাকে ঘুমোতে দেখে নিজের কাছে খুব শান্তি লাগছিল আদ্রিসের।
এমন একটা দৃশ্য দেখাটা সত্যি তার জন্য চোখের শান্তি।
আদ্রিস ধিরে এগিয়ে আসে। আদ্রিতার কাপলে হাত রাখে। চুল গুলো সরিয়ে দেয় আলতো করে।
আদ্রিতার পরনে তার সার্ট এটা দেখে আদ্রিস নিজের ভেতরেই হেঁসে ফেলে।
এরপর সে ওয়াসরুমে চলে যায়।
একে একে সার্ট খুলে সাওয়ারের নিচে দাঁড়ায়।
সাওয়ারের পানিতে আদ্রিসের শরীরের সমস্ত রক্ত ধুয়ে সাদা ফ্লোরে পড়ছে।
আদ্রিসের চোখ দু’টো স্থির। সে নীরবে তাকিয়ে আছে ফ্লোরের দিকে।
পানির ফোঁটা তার ট্যাটুতে লাগতে সেটা আরও উজ্জ্বল হয়ে ওঠে।
সাওয়ার শেষ করে আদ্রিস শুধু তোয়ালে পেঁচিয়ে বেরিয়ে আসে।
আদ্রিতা দাঁড়িয়ে ছিল। বাহিরে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। হটাৎ করেই ওয়ারুমের দরজা খোলার শব্দ পেয়ে সে ফিরে তাকায়। চোখের সামনে আদ্রিসের এমন অবস্থা দেখে এক চিৎকার দেয়।
“আআআআ…”
সঙ্গে সঙ্গে ফিরে তাকায় আদ্রিতা।
“জামা কই আপনার?”
“যেখানেই থাক তোর কি তাতে?”
“পরেন নি কেন?”
“কারণ আমার সার্ট তুই পরেছিস।”
আদ্রিতা নিজের দিকে তাকায়।
“ইয়ারকি নাকি আপনারত কত জামা। এটাত একটা জামা।”
আদ্রিস বাঁকা হাসে।।এগিয়ে যায় আদ্রিতার দিকে।
আদ্রিতা ওপাশ ফিরে থাকায় বুঝতে পারেনা।
আদ্রিস, আদ্রিতার কানের কাছে মুখ নিয়ে বলে,
“কিন্তু আমিত এটাই পরতে চাই।’
আদ্রিতা পিছিয়ে যেতে নিলে আদ্রিতার পেট জড়িয়ো ধরে আদ্রিস।
“,কোথায় যাচ্ছিস?’
আদ্রিতার কান লাল হয়ে গেছে। আদ্রিস তা দেখে বাঁকা হাসে।
কানের লাল অংশে চুমু খায়।
আদ্রিতার শরীরে যেন বিদ্যুৎ বয়ে গেল। সে কেঁপে ওঠে।
আদ্রিস, আদ্রিতার ঘাড়ে থুঁতনি রাখে।
” তুই এত কাঁপিস কেন? এখনোত ফাইনাল রাউন্ডেই যায় নি আমি।”
“ছ ছাড়ুন।’
আদ্রিতার চোখ দু’টো হটাৎ করেই ডার্ক হয়ে যায়। হাতের মুঠো শক্ত হয় তার।
” ল লাগছে।”
” ছাড়ুন ছাড়ুন করবি না। বিরক্ত হই আমি। একটা কথা শুনে রাখিস আদ্রিতা আমি না চাইলে আমার থেকে তোর নিস্তার নেই। তুই এবং তুই নিজেও চাইলে আমার থেকে পালাতে পারবি না। অন্য কিছুর কথা ভুলেই যা।”
আদ্রিস স্থির হয়ে যায়। ঘুমোনোর আগের ঘটনা তার বেশ মনে আছে।
আদ্রিস সরে আসে আদ্রিতার থেকে।
“এই গুলো ক্লিন কর।”
আদ্রিতার পোড়া জামাটার দিকে ইসারা করে আদ্রিস।
“আমাকে জামা পরতে দিন।”
“কাবার্ডের বাম পাশে জামা আছে ওখান থেকে কিছু পর।”
“এই কাবার্ডের?’
” হ্যা।”
আদ্রিতা এগিয়ে যায়। এদিকে সে খুলেনি। তবে এখন খুলে দেখে খুব সুন্দর সুন্দর ড্রেস। আদ্রিতা সেখান থেকে একটা নিয়ে পরে নেয়।
আদ্রিসও ড্রেস পরে নিয়েছে।
আদ্রিতা ঝাড়ু দিয়ে ছাই গুলো পরিষ্কার করে এরপর মুছে দিতে লাগে।
এমন সময় দরজা খোলা পেয়ে ভেতরে চলে আসে ঐশী।
এসেই আদ্রিতাকে মুছতে দেখে বাঁকা হাসে,
“বাহ তুই দেখি এখানে মোছা মুছির কাজ করছিস আদ্রিতা। সারা বাড়িতে তোকে না পেয়ে আমি অবশ্য ভাবছিলাম তুই কোথায় আছিস। “
আদ্রিতা কিছু বলেনা। নিজের কাজ করে যায় চুপচাপ। আদ্রিসের চোয়াল শক্ত হয়ে আসে।
আদ্রিতার রেসপন্স না পেয়ে ঐশী আদ্রিসের দিকে ফিরে। ন্যাকামি করে চুল গুলো কানের পেছনে গুঁজে বলে,
“আদ্রিস ভাইয়া। চলুন না কেথাও ঘুরতে যাই।”
আদ্রিস গম্ভীর স্বরে উত্তর দেয়,
“সময় নেই”
“সেটা বললেত হবেনা। এত দিন পর এসেছেন একটু বের হলে কি হয়। প্লিজ প্লিজ চলুন। আপনি না গেলে আমি খুউব রাগ করব।”
খুবই ন্যাকামি করে কথা গুলো বলছে ঐশী।
“তোমার রাগে এখানে কারোর কিছু আসে যায় না। বের হও আমার রুম থেকে। পারমিশন ছাড়া রুমে এসেছো কিভাবে তুমি? এইসব ন্যাকামি আমার সামনে করবা না। পরের বার থাপ্পড় মেরে দাঁত ফেলে দেব।”
আদ্রিসের ঝরঝরে কন্ঠে বকুনি শুনে ঐশীর চোখে পানি চলে আসে। আদ্রিতা নিজের অজান্তেই হেসে দেয়। সেটা ঐশী দেখে ফেলে। নিজের আর অপমান না হয় সেই জন্য বেরিয়ে যায় ঐশী। যেতে যেতে বলে,
“তোকেত আমি দেখে নেব আদ্রিতা। খুব শখ না হাসবি আমার উপর। এবার দেখ আমি কি করি।”
ঐশী বেরিয়ে যায়।
রেভেন ব্যাকইয়ার্ডে আসতে দেখে একটি মেয়ে পুল সাইডে দাঁড়িয়ে কারোর সাথে কথা বলছে।
মেয়েটার মুখ দেখা যাচ্ছে না। আদ্রিস বলেছে কাজটা সিক্রেটলি করতে। তাই সে মেয়েটাকে আওয়াজ দেয়।
“এক্সকিউজ মি ম্যাম।”
প্রিয়া ফিরে তাকায়। রেভেন কিছুক্ষণ প্রিয়ার মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে।
প্রিয়া এগিয়ে এসে রেভেনের মুখের সামনে তুড়ি মারে,
“ও হ্যালো। হু আর ইউ?”
“হা স সরি। আই এম রেভেন। আদ্রিস খান। ওনার এসিস্ট্যান্ট।”
“ভাইয়ার এসিস্ট্যান্ট।”
“ভাইয়া মানে আপনি বসের বোন?”
“হ্যাঁ।”
“ও আচ্ছা। আসলে এখানে একটু কাজ করানোর ছিল বস বলেছে কেউ যেন এখানে না থাকে। সব থেকে বড় কথা আপনি হার্ট হতে পারেন। “
“ওহ। ওকে।”
প্রিয়া সেখান থেকে চলেই যাবে এমন সময় সে ফিরে তাকায়।
“বাই দ্যা ওয়ে মিস্টার।”
“জি।”
“আপনি বাংলাদেশি ত নন।’
“জি না।’
” তাহলে?”
“‘আমি রুশিয়ান৷”
“তাহলে বাংলা জানেন কিভাবে?”
“আপনার ভাই আমার গলায় চাকু ধরে বাংলা শিখিয়েছে। এখন আমি বাঙালী দের থেকে বেশি ভালো বাংলা বলতে পারি।”
“ওয়াউ। আপনার একসেন্ট সুন্দর।”
“ধন্যবাদ।”
“অলসো ইউ আর হ্যান্ডসাম।”
কথাটা বলে প্রিয়া চলে যায় ভেতরে। রেভেন তাকিয়ে থাকে। এর আগে সে অনেকবার হ্যান্ডসাম কথাটা শুনেছে আজ কেমন অদ্ভুত ই লাগল।
রেভেন এরপর কাজে মনোযোগ দেয়।
আদ্রিতা রুম পরিষ্কার করে সোজা হয়।
“শেষ এবার যাই?”
“গিয়ে কি করবি?”
“কি করব?”
“বাহিরে গিয়ে আমার জন্য লাঞ্চ বানাবি। দ্বিতীয় কোন কাজ করলে খবর আছে।”
“ও ওকে।”
“গো।”
আদ্রিতা বেরিয়ে যায়।
আদ্রিস এলটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে।
আদ্রিতা বাহিরে এসে সোজা কিচেনে চলে যায়।
আদ্রিসের জন্য রান্না তাকেই করতে হবে। তাহলে দেরি করে লাভ নেই। রান্নাটা শেষ করে একটু বিশ্রাম নেওয়া যাবে।
চলবে?
[ জানি ছোট। কিন্তু আমার কাজ আছে আজ। ভাবছিলাম কোন গল্পই দেব না পরে ভাবলাম।অল্প করে লিখি। সবাই রেসপন্স করিও নাহলে লিখতে মন চায় না]
Share On:
TAGS: জেন্টাল মন্সটার, লামিয়া রহমান মেঘলা
CLICK HERE GO TO OUR HOME PAGE
-
জেন্টাল মন্সটার পর্ব ১৬
-
জেন্টাল মন্সটার পর্ব ৬
-
জেন্টাল মন্সটার পর্ব ৯
-
জেন্টাল মন্সটার পর্ব ১১
-
জেন্টাল মন্সটার পর্ব ৫
-
জেন্টাল মন্সটার পর্ব ১৭
-
জেন্টাল মন্সটার পর্ব ৭
-
জেন্টাল মন্সটার পর্ব ৩
-
জেন্টাল মন্সটার পর্ব ২
-
জেন্টাল মন্সটার পর্ব ১