গভীর ঘুমে ঘুমিয়ে আছি আমি ।তখনই আমি অনুভব করতে পারি আমার ঠোঁট জোরে স্পর্শ করছে কেও।
আমি চোখ খুলে ফেলে কিন্তু পুরো ঘর অন্ধকার কাউকে দেখতে পাচ্ছি না। আমি উঠে আমার ঘরের লাইটটা জ্বালিয়ে দেই। কিন্তু কেউ কোথাও নেই এটা কি আমার মনের ভুল নাকি আসলেই কেউ ছিল আমার সাথে।
এমন সময় আজান শুনতে পেয়ে আমি ঘুম থেকে উঠে ওযু করে এসে নামাজ পড়ে নেই । আমার বিশ্বাস পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়লে সব সময় মন ভালো থাকে শরীর ভালো থাকে ।
সকাল হতেই বাবা-মার থেকে বিদায় নিয়ে কলেজ থেকে রওনা দিলাম ।
কলেজে যেতে যেতে আমার পরিচয়টা দেয়া যাক
আমার নাম মিথিলা ইন্টারে পড়াশোনা করছি।
পরিবার বলতে বাবা-মা আর একটা আদরের ছোট বোন আমার বোনের নাম তিথি।
আমার বাবার আদরের দুই রাজকন্যা আমার
মা আমাদেরকে বকাঝকা করলে ও বাবা কিন্তু কখনো আমাদের ওপরে রাগ দেখায় না বকাঝকা করে না।
কলেজে চলে আসি প্রিয় বান্ধবী সাদিয়া
আমার কাছে এসে বলল জানিস আজকে আমাকে আর একটি ছেলে প্রপোজ করেছে
উফ ছেলেটি দেখতে কি হ্যান্ডসাম।
সাদিয়া তুই এই নিয়ে দশটা প্রেম করলি বন্ধু
হ্যাঁ আর তুই একটাও না মিথিলা আর কতদিন এভাবে একা থাকি বলনা ।
আমি একা আছি ভালো আছি বন্ধু
আমি কাউকে ভালবাসতে চাই না তুই ভালোবাস।
কলেজ শেষ করে বাড়িতে চলে আসি
বাড়িতে এসে আমি আমার ঘরে প্রবেশ করতে দেখতে পাই আমার ঘরটা খুবই সুন্দরভাবে গোছানো কিন্তু আমার স্পষ্ট মনে আছে আমি কলেজে যাবার সময় অনেক কিছু এলোমেলো করে এসেছিলাম ।
আমার মা কখনোই আমার ঘরটা গুছিয়ে দেয় না
মা বলে মেয়ে হয়ে জন্ম হয়েছে এসব কাজ নিজেরটা নিজে করতে শেখো। প্রতিদিন আমি কলেজ থেকে বাড়িতে ফিরে নিজের ঘর নিজেই গোছাতাম তাহলে আজকে আমার ঘর টা কে গুছিয়ে দিল?
মার কাছে গিয়ে আমি বললাম ওমা তুমি কি আজকে আমার ঘর গুছিয়ে দিয়েছো।
মা আমাকে বলল কই না তো আমি তোর ঘরে যাইনি তো, দেখ তুই হয়তো কলেজে যাওয়ার আগে নিজের ঘর নিজে গুছিয়ে তারপরে গিয়েছিলে এখন হয়তো তোর মনে নেই ভুলে গেছিস ।
আমি বলি হয়তোবা এখন অনেক কিছুই মনে থাকেনা মা কি যে হয়েছে আমার।
আমি আমার ঘরে চলে আসি।
সেদিন রাতে যখন আমি ঘুমিয়ে পড়ি।
মধ্যরাতে আমার ঘুম ভেঙে যায় কেউ একজন আমার ঘরে নামাজ পড়ছেন?
ঘুম থেকে জেগে দেখতে পাই ঘরের আলো নিভানো আমার ঘরের মেঝেতে একটা লোক দাঁড়িয়ে যায় নামাজে নামাজ পড়ছেন
লোকটা খুব সুন্দর একটা সাদা অদ্ভুত ধরনের পোশাক পড়ে আছে তার মাথায় একটা সাদা রংয়ের টুপি।
আমি তো অনেক ভয় পেয়ে যাই এত রাতে আমার ঘরে কে নামাজ পড়ছেন ?
তবে নিজেকে নিজে অনেক সান্ত্বনা দিচ্ছিলাম কারণ যেহেতু সে নামাজ পড়ছেন আর যাই হোক সে খারাপ কিছু হতে পারে না।
আমি অপেক্ষা করছিলাম কখন তার নামাজ শেষ হবে আমি তার কাছে জানতে চাইবো সে কে কোথা থেকে আমার ঘরের ভেতরে প্রবেশ করল।
তার নামাজ পড়া শেষ হলো সে জায়নামাজেই বসে ছিল।
আমি তার পেছন থেকে তাকে বলি এই যে কে আপনি আপনি আমার ঘরে এলেন কি করে। আর আমার ঘরের মেঝেতে নামাজ কেন পরছেন?
তখন সে পুরুষটা আমাকে বলে
আসলে আমি গত কিছুদিন ধরে আপনার পিছু নিয়েছি আপনাকে আমার অনেক ভালো লাগে
আমাকে ভয় পাবেন না আমি আপনার কোন ক্ষতি করার জন্য আসিনি। আপনাকে দেখতে ইচ্ছে করছিল তাই এলাম আপনাকে দেখলে আমার খারাপ মনটা ভালো হয়ে যায় ।
আর হ্যাঁ আমার নাম হচ্ছে সুফিয়ান
আমি আপনার কোন ক্ষতি করব না। আমি একটা জ্বীন, দেখুন আমি জানি আপনি অনেক সাহসী একটা মেয়ে আমি লুকিয়ে লুকিয়ে আপনাকে দেখি আমি আপনার সাথে বন্ধুত্ব করতে চাই আপনি কি আমার সাথে বন্ধুত্ব করবেন?
আমি কিছুটা অবাক হয়ে তাকে বলি
দেখুন আমি কোরআন হাদিস বিশ্বাস করি এ পৃথিবীতে জ্বিন আছে সেটাও বিশ্বাস করি ।
আপনি একটা জ্বিন তাতে কোন সন্দেহ নাই কারণ আমার ঘরটার লাগানো তার ভেতরে আপনি প্রবেশ করতে পেরেছেন। আমি আপনাকে ভয় পেতাম যদি আপনি খারাপ কেউ হতেন কিন্তু আপনি আল্লাহ পাকের এবাদত করছেন তাই আমি ওরকম ভাবে ভয় পাইনি।
আর রইল আপনি আমার বন্ধু হতে চান তাই তো। আপনার সম্পর্কে তো আমি কিছু জানি না এখনো আমি আপনার মুখটাও দেখিনি আমার দিকে ঘুরে তাকান। যদি মনে হয় আপনি একজন ভালো জ্বিন তাহলেই আমি আপনার সাথে বন্ধুত্ব করব ।
তখন সুফিয়ান নামক সেই জ্বীনটা আমার দিকে ঘুরে তাকায়।
এতদিন শুনে এসেছি জ্বিনরা দেখতে অনেক ভয়ানক হয় । তবে একটা জ্বীন যে এত সুন্দর হতে পারে না দেখলে বুঝতে পারতাম না ।
লম্বা চোড়া একটা মুখ চোখের রং নীল রংয়ের গায়ের রং মাশাল্লাহ অনেক সুন্দর আমি আপাতদৃষ্টিতে তার দিকে তাকিয়ে ছিলাম এত সুন্দর পুরুষ আসলেই আমি কখনো দেখিনি।
সুফিয়ান আমাকে বলে বিশ্বাস করেন আমি কখনো কোন মানুষের ক্ষতি করিনি। আপনার সাথে আমি এই কারণে বন্ধুত্ব করতে চাই কারণ আপনি আল্লাহ পাকের একজন নেক বান্ধা। আপনি যখন নামাজ শেষ করে কোরআন তেলাওয়াত করেন আমার না অনেক ভালো লাগে জানেন । তাই আমি আপনার বন্ধু হতে চাই আপনার বিপদে আপদে সুখে দুঃখে সবসময় পাশে থাকতে চাই ।
দোয়া করে আপনি আমাকে ফিরিয়ে দেবেন না 😔
আমি তার দিকে অপরূপ দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিলাম সে এত সুন্দর কি করে এত সুন্দর ভাবে কথা বলে কি করে ।
তখন সুফিয়ান জ্বিন আমাকে বলেন এভাবে তাকিয়ে আছেন কেন আমি আপনাকে প্রশ্ন করছি প্রশ্নের উত্তর দেন 😄
কি উত্তর দেবো বুঝতে পারছিলাম না। আপনাকে দেখছি একটা জ্বিন এত সুন্দর কি করে হতে পারে। আপনি কি কোন জ্বিন, না ছোট থেকে তো শুনে আসছি জ্বিনেরা দেখতে ভয়ানক হয়ে থাকে কিন্তু আপনি এত সুন্দর আপনার উপর থেকে চোখ সরাতে পারছি না আমি 🤭
সুফিয়ান জ্বিন তখন আমাকে বলল দেখুন সকল জ্বীন খারাপ হয়না দেখতে। যারা খারাপ জ্বিন তারা দেখতে ভয়ানক হয় কিন্তু যারা ভালো জ্বিন তারা দেখতে অনেক ভালো হয়।
এখন বলেন আপনি আমার বন্ধু হবেন মিথিলা?
এই গল্পটির একসাথে সকল পর্ব পেতে চাইলে আমার ইউটিউবে চলে যেতে পারেন সেখানে এই গল্পের সকল পর্ব দেয়া আছে ইউটিউব চ্যানেলের
নাম হচ্ছে ADHAR48 ধন্যবাদ!
তারপর ______
#চলবে
#লেখক আরিয়ান অভি
Share On:
TAGS: আরিয়ান অভি, জ্বীন বর
CLICK HERE GO TO OUR HOME PAGE