Born_to_be_villains
Methuburi_মিথুবুড়ি
পর্ব_১২
❌কপি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ❌কপি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ❌
‘রোদের তীব্র তেজ মাথায় নিয়ে গাড়ির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে ইমামা। কানে ক্ষুদ্রাকৃতির সাদা ইয়ারপডস লাগানো। সকাল থেকে একই গান অবশ্রমে শুনে যাচ্ছে সে। এতোক্ষণ ফুল ভলিউমে শুনেছে। এক গান শুনতে শুনতে শাওয়ার নিয়েছে, ব্রেকফাস্ট করেছে, ইউনিভার্সিটির জন্য রেডি হয়েছে। এতোদিন সুরাকারের (ম্যাডবিস্ট) আর্ত সুরে গাওয়া গান গুনতে শুনতে হাঁপিয়ে উঠেছিল সে। তারপর কাল রাতে হঠাৎই সারপ্রাইজিংলি আর.কে, ওরফে ব্ল্যাডিবিস্ট এর তরফ হতে একটি ভয়েস ক্লিপ আসে।
‘ইমামার মস্তিষ্ক তখন ছিল বিক্ষিপ্ত। মেজাজে ছিল তিরিক্ষি ভাব। অজান্তেই সে এতো এতো রহস্যে জড়িয়ে পড়েছে, যে কোনোকিছুরই সুরাহা মিলছে না। সে একপ্রকার তিক্ত মনোভাব নিয়ে সেই ভয়েস ক্লিপ ওপেন করেছিল। তৎক্ষনাৎ অন্ধকারাচ্ছন্ন কক্ষের নিস্তব্ধতা চিড়ে ভেসে ওঠে ভারী কণ্ঠে মিহি সুরের মিশেল। গম্ভীর কণ্ঠে একটি মসৃণ সুরের গান শোনা গেল,
❝তোমাকে দিয়েছিলাম চেনা চেনা কথাগুলো
এসো না জুড়ে নিতে ছেঁড়া ছেঁড়া ব্যথাগুলো….
এ অগোছালো হাওয়া ব্যস্ত আসা যাওয়া
আমাদের চেনালো কী?
আবছা হয়ে এসো আমাকে ভালবাসো
এর বেশি চেয়েছি কী?❞
‘ভারি কণ্ঠে ওমন মিহি সুরে এতোটাই মুগ্ধ হয়ে পড়েছিল সে, যে কখন তার বিক্ষিপ্ত মস্তিষ্ক শান্ত হয়ে ঘুমিয়ে পড়ল, তা টেরও পায়নি ইমামা। তারপর….সকালে ঘুম ভাঙার পরও সেই কণ্ঠের মোহ থেকে বেরুতে পারেনি সে। অনুভব করে,সে হারিয়ে যাচ্ছে সেই মিহি কণ্ঠে; সমুদ্রের অতলে তলিয়ে যাচ্ছে।
‘হঠাৎ যান্ত্রিক ফোনটি কেঁপে উঠল। ইমামা হেড-রেস্টে মাথা এলিয়ে রেখেছিল। ফোনের কম্পনে মাথা তুলল ইমামা। সাইট বাটনে চাপ প্রয়োগ করতেই স্ক্রিনে জ্বলজ্বল করে উঠল,
“হেই রেড।”
‘ইমামা ভুরু জোড়া কুঁচকালো। এই নামটা তার একদমই পছন্দ না। সে যে কাল থেকে তার সুরে মুগ্ধ হয়ে এক ঘোরের মধ্যে বাস করছে, তা বুঝতে না দিয়ে রূঢ় ভাবে লিখল,
“ডোন্ট কল মি রেড।”
‘সে দুই আনার দামও দিল না তার রূঢ়তার। উলটে যেন আরও দ্বিগুণ এনার্জি নিয়ে লিখল,
“রেড, রেড, রেড, রেড, রেড…মাই ফাকিং ডার্ক রেড।”
“ডিজগাস্টিং।”
‘তৎক্ষনাৎ রিপ্লাই এল,”আই জাস্ট লাভ টু ফাকিং ডিসগাস্ট ইউ।”
‘ইমামা বেশ আশ্চর্য হলো রহস্যময় লোকটার কার্যকলাপে। এই লোকটা আগে কখনোই মেসেজ দিতো না। প্রয়োজন হলে ডিরেক্ট কল দিত। ভারি গলায় শাসাতো, ধমক দিত। আর গান শোনাতো তো ছিল দূরের ব্যাপার। অথচ ইদানীং সে একে একে সবই করছে, ঠিক সুরাকার (ম্যাডবিস্ট)-এর মতো। তবে কী সে সত্যিই তাকে টেক্কা দিতে চাইছে?নাকি ওই তিক্ত অনুভূতি থেকে তাকে আড়াল করার এটাই তার অদ্ভুত, অভিনব চেষ্টা?
‘ইমামা ফোঁস করে নিঃশ্বাস ছাড়ল। অথযা রাগ দেখাল না। খুব নম্রভাবে লিখল,
“দেখুন, আপনি মোটেও আমার টাইপ না। সো, প্লিজ স্টপ বোদারিং মি।”
‘ওপাশ থেকে তারই সুরে পাল্টা প্রশ্নবান তেড়ে আসলো,
“হোয়াট ইজ ইয়্যুর টাইপ?”
‘ইমামা থামল। চুপ হয়ে গেল। কিছুক্ষণ ভাবল। নিজেকেই নিজে প্রশ্ন করে বসল—সে আসলে কেমন পার্টনার চায়। ছোট থেকেই সে অনুভব করেছে, কোনো অনুভূতিই তাকে গভীরভাবে ছুঁতে পারে না। এগুলো নিয়ে কখনোই ভাবা হয়নি। তবে সে চমৎকার একজন লাইফ পার্টনার চেয়েছিল।
‘ইমামা কিছুক্ষণ ভেবে লিখতে শুরু করল,
“I want a gentleman who never yells when we’re alone.Who doesn’t leave me crying over a phone I regret answering.Someone who feels like home.
A man who sings in the car, who leaves the bar because he misses his wife. A man who doesn’t treat my feelings like a joke, or say “sorry” while I stare at the bottle he broke.
Someone who calms my nervous system,
who holds my hand and kisses the top of my palm. Someone who loves me—not later,
not conditionally, but now.
A man who holds my face and makes me forget heaven was ever just a place.
Gentle. Calm. Patient. Kind.
Strong enough to carry the weight I’m tired of holding, and safe enough to let me put it down
until I can lift myself again.”
‘এবার রিপ্লাই আসতে একটু সময় লাগল। ইমামা ভেবেছিল ওপর পাশের মানুষটা হয়ত তার কথা শুনে পালাবে। কিন্তু তাকে ভড়কে দিয়ে মিনিটবাদেই উত্তর এল সাহসিকতায় সাথে।
“So I’ll be exactly like that. Will that be okay, Princess?”
‘আচমকা কেঁপে উঠে শিউরে উঠল ইমামা। এমনটা মোটেও আশা করেনি সে। পরপর কয়েকবার শুষ্ক ঢোক গিলল ইমামা৷ তারপর দম নিয়ে লিখল,
“আমাকে আর পাঁচটা মেয়ের মতো ভাববেন না। আমি মোটেও আপনার কথা ট্র্যাপে পা রাখছি না৷ আমি আর সবার মতো না, ওকে?”
‘ক্ষিপ্র গতিতে জবাব এল,”দ্যাটস হোয়াই ইয়্যু আর মাইন।”
‘ইমামার চোয়াল আবারও শক্ত হচ্ছে। প্রচন্ডে বিরক্তে চোয়াল আঁটসাঁট করে লিখল সে,
“আই’ম নট ইয়্যুর৷”
“আমি বলেছি মানে আমারই।”
“খুনিদের ঘৃনা করি আমি। আপনি একটা খুনি। আমি জানি আপনিই সিডকে খুন করেছেন। আই জাস্ট হেইট ইয়্যু, আর.কে।”
“যেদিন আপনি জানতে পারবেন, আমি আপনাকে ঠিক কতটা ভালোবাসি, আমার বিশ্বাস সেদিন আপনিও আমাকে ভালোবাসবেন। আমার থেকেও বেশি ভালোবাসবেন, এলিজান।”
‘তার দৃঢ় বাক্যে বুকের ভিতর অদ্ভুত টান আর সঙ্কোচ অনুভূত হলো। শব্দগুলো যেন অন্তরের গভীরে চাপ হয়ে লেগে রইল। রমণীর দোদুল্যমান হৃদয়ের দোনোমোনোর মাঝেই আরেকটি মেসেজ আসলো,
“You are my Theodore, red”
‘ইমামা দ্রুত হাতে গুগল করল। সঙ্গে সঙ্গে একধরনের শীতল স্রোত ওর শিরদাঁড়া বেয়ে গড়িয়ে পড়ল। অস্বাভাবিক এক কম্পন লক্ষ করা যায় আড়ষ্ট নারীকায়ায়৷ শিরশিরে অনুভূতি কামড়ে ধরে তনুমন।
“নো নো, ইউ আর প্লেয়িং গেম ইউথ মি।” কাঁপা কাঁপা হাতে লিখল ইমামা।” তার হাত কাঁপছে।
‘গাড়ির ফ্রন্ট মিররের উপর সেট করা হিডেন ক্যামেরা দিয়ে ইমামার ঘ্রামপূর্ণ মুখের দিকে তাকিয়ে তুষ্ট হাসল রিচার্ড। ধারালো দাঁত দিয়ে নিম্ন অধর কামড়ে ধরে সে শক্তকায় আঙুলে লিখল,
“ইট’স ট্রু, মাই লাভ।” তার অধর কোণে তখনও চাপা হাসির সয়লাব।
‘ইমামা এবার সরাসরি জানতে চাইল,”আপনি সিডকে খু-ন করেছেন, রাইট?”
‘তার অকপট স্বীকারোক্তি,”ইয়েস।”
‘ইমামা উত্তেজিত হয়ে পড়ল। ঘন নিশ্বাস ফেলতে লাগল। তড়িঘড়ি করে লিখল,
“কেন?”
“ইয়্যু ক্রাইড ফর হিম।”
‘ইমামার চোখে ফেটে পড়ে বিস্ময়। হতবাকির ঢেউ তৎক্ষনাৎ ছড়িয়ে পড়ল চোখে।
“মানে…এজন্য আপনি তাকে মেরে ফেললেন?”
‘এই নিরেট সত্য আর চেপে রাখল না রিচার্ড। গ্লানি ছাপিয়ে অহং নিয়ে মুখ খুলল,
“ইয়েস… দিস ইজ ভিলেনাস লাভ, বেবি। আই নেভার প্রমিসড টু বি ইয়োর হিরো। আই অ্যাম দ্য ভিলেন অ্যান্ড আই উড বার্ন দ্য ওয়ার্ল্ড ফর ইউ।”
‘একটু থেমে, তার রহস্যে ঘেরা বাক্যের ব্যাখ্যা সে নিজেই দিল,
“হোয়াইল দ্য হিরো ওয়াজ বিজি ওয়াইপিং হার টিয়ার্স, দ্য ভিলেন ওয়াজ বিজি ওয়াইপিং অ্যাওয়ে দ্য রিজন বিহাইন্ড হার টিয়ার্স। সে রাতেও ঠিক এমনটাই ঘটেছিল। আমি আপনার কাছে পৌঁছানোর আগে, ওই জানোয়ারটাকে পৃথিবীতে সরিয়েছি।”
‘একটু বিরতি নিয়ে আবারও,
“লেট মি মেক ওয়ান থিং ক্লিয়ার টু মাই ফাকিং ফুল:
আ হিরো উইল স্যাক্রিফাইস ইউ ফর দ্য গ্রেটার গুড,
বাট আ ভিলেন উইল বার্ন দ্য ওয়ার্ল্ড ফর হিজ গার্ল—
অ্যান্ড আই উইল বার্ন দিস ওয়ার্ল্ড ফর ইউ, মাই প্রিন্সেস।”
‘ভয় আর বিস্ময় ভোরের দুধসাদা কুয়াশার মতো নিঃশব্দে ওকে ঘিরে ফেলে। শুকনো চৌচিরে কণ্ঠনালি ফাঁকা ঢোক গিয়ে ভিজিয়ে, নড়বড়ে হাতে লিখল ইমামা,
“আমার কাছে পৌঁছানোর আগে মানে?”
“শেষ রাতে আপনাকে দেখার পরই ফ্লাইট উঠেছিলাম। ডোন্ট ওয়ারি গোসল করে তারপরই গিয়েছিলাম। ইয়্যু লুক্ড ড্যাম প্রিটি হোয়েন ইউ ওয়ার অ্যাস-স্লিপ।”
‘এবার ভয় ধোঁয়ার মতো চারপাশে পাক খেতে থাকে। এতোদিন সে ভেবে এসেছিল, শুধু একজন তাকে ফলো করছে, কিন্তু না..এখন তার চিন্তাভাবনা সম্পূর্ণ ভুল প্রমাণিত হয়। শুরু থেকে একজন না, দু’জন তাকে নজরে নজরে রাখছে। ইমামার হাতের কাঁপা আঙুল কিছু লিখতে যাচ্ছিল, কিন্তু তার আগেই বিপরীত পৃষ্ঠা থেকে গা শিউরে ওঠা আরেকটি মেসেজ তেড়ে আসলো,
“আমি আপনাকে এখনও দেখছি। আপনার ওই কাঁপা চোখের ভয়ার্ত চাহনিতে আমার মরণ হোক, এলিজান।”
‘ভূতুরে এক কম্পন দেখা গেল ইমামার শরীরে। ও শিউরে উঠলে সামনে থেকে ড্রাইবার কপাল কুঁচকে পিছন ফিরে তাকায়।
“বড় বেগম, কিছু হয়েছে?”
“না..না..কিছু হয়নি।”
‘জোরে জোরে নিঃশ্বাস ফেলছিল ইমামা। সে ধীরে ঘাড় ফিরিয়ে জানালার বাইরে তাকাল৷ না, সবকিছুই প্রথমে স্বাভাবিক মনে হলো। কিন্তু রেয়ার মিররে চোখ পড়তেই দেখল, তাদের গাড়ির পিছনে এক সারি কালো গাড়ি ভেসে উঠেছে। এই গাড়িগুলো সে খুব ভালো করেই চেনে। কালো রঙ দেখলেই তার মাথায় এখন একটাই নাম ভেসে ওঠে। আর.কে!
‘তবে দূরত্ব অনেক। এতদূর থেকে তার ভয় চোখে পড়ার কথা নয়। তবে কি ঘরের মতো গাড়িতেও….অবাক হয় না সে। তেমনটা হতেই পারে। সেই মানুষটির ক্ষেত্রে অসম্ভব বলে কিছু নেই। চিন্তাটা মাথায় আসতেই ইমামা দ্রুত নিজেকে সামলে নিল। গাড়ির ভেতর যতটা সম্ভব স্থির থাকার চেষ্টা করল। সে চায় না ইমান ওয়াসিমের কানে নতুন কোনো শঙ্কা পৌঁছে যাক।
“এখনও বিশ্বাস হচ্ছে না আমাকে? ওকে বেবিগার্ল, এটা মানো তো তোমার জন্য আমি মারতে পারি। তবে এটাও মানো—আই অলসো ডাই ফর ইউ। যে অস্ত্র দিয়ে আপনার জন্য অন্যকে মারি, সেই অস্ত্রই আমি আপনার হাতে তুলে দেবো। তাহলে খুব সহজেই আপনি আমাকে মারতে পারবে। এটাই হবে আমার প্রমাণ। ইয়েস বেবিগার্ল, আই ক্যান ডাই ফর ইউ। বিকজ, মাই লাভ ইজ ট্রু ফর ইউ।”
‘ভাবনার মধ্যেই আরেকটি মেসেজ আসলো। তার প্রতিটি শব্দ যেন verbal persuasion-এর মায়াজাল। যাকে মনোবিজ্ঞানের ভাষায় কথার মাধ্যমে মানুষের মনে প্রভাব সৃষ্টি করে তাকে নিজের দিকে আকৃষ্ট করার প্ররোচনা বলে। ইমামা বুঝতে পারছিল রিচার্ড ধীরে ধীরে কথার জালে তাকে জড়িয়ে নিচ্ছে। এই লোকের কথায় জাদু আছে। খুব সহজেই যে কাউকে কথার জালে ফাঁসিয়ে দিতে পারে৷ ইমামার মনে পড়ে দাদুর বলা কথাটা,
“দুষ্টু লোকের মিষ্টি কথা। শয়তানের কথা মজা।”
‘ইমামা শক্ত হয়। নিজের মনের ওপর শক্ত হাতে লাগাম টানে। এতো সহজে সে পা রাখবে না লোকটার কথার ফাঁদে। যে লোক সামান্য কল না ধরায় এসিডে পুড়িয়ে মারার পরিকল্পনা করে; আর যাইহোক, তার সাথে জীবন কাটানো সম্ভব নয়।
‘ইমামা লিখল,”ইউ আর সাচ আ রেড ফ্ল্যাগ।”
“নো, বেবি… আই’ম ব্ল্যাক ফ্ল্যাগ।”
‘ব্ল্যাক ফ্ল্যাগ! ইমামা আঁতকে ওঠে শুকনো ঢোক গিলল। ভীতির ঢেউ আবারও চোখে চেপে বসল।
“নো… নো… নো। সরি, আই ক্যান্ট। ইউ’র ওয়ে মোর ডেঞ্জারাস দ্যান আই থট। আই ক্যান্ট হ্যান্ডেল ইউ।”
“হোওয়াই, বেবি? নাও আই’ম ইয়োরস। টেক কেয়ার অব মি।” কি নরম বিনীত আবেদন!
‘ইমামা কিছুক্ষণ ভেবে তার থেকে পিছু ছাড়াতে মাপলা কৌশল অবলম্বন করল। কাঠিন্য সদাতেজি মুখে লিখে গেল,
“লিসেন, আমি কখনো আপনার হতে পারবো না। কারণটা আমার ন্যাচার। আমাকে হ্যান্ডেল করা এতোটা সহজ নয়৷ আই হ্যাভ অ্যাঙ্গার ইস্যু, ট্রাস্ট ইস্যু, জেলাসি….নিড ২৪/২৭ অ্যাটেনশন, ওভারথিঙ্কার, অলওয়েজ ফিল লিফ্ট আউট, টক্সিক, মুড সুয়িংস, এন্ড টু মাচ অ্যানোয়িং।”
‘রিপ্লাইটা ছিল অপ্রত্যাশিত আর নির্ভীক। নড়বড়ে জবাবের পরিবর্তে স্থিরচিত্তে পাল্টা প্রশ্ন করা হয় তাকে,
“ইজ দিস অ্যানি ইস্যুস?”
‘ইমামা দ্রুত হাতে ফোনটি ব্যাগে রেখে দিল। আর কিছুক্ষণ সাংঘাতিক লোকটার সাথে কথা বললে, ফর শিওর ও হিপনোটাইজ হয়ে যাবে। পাশের সিডে ব্যাগ রেখে জানালার বাইরে দৃষ্টিপাত করে বড় বড় দম ফেলল ইমামা। এতোক্ষণ যেন নিঃশ্বাস নিঃশব্দে বুকের ভেতর গুমোট হয়েছিল৷
‘ক্লাসে পৌঁছে দেখতে পেল ইবরাত এককোণে ভাসি ফুলের মতো মলিন মুখে বসে আছে। হিয়া আজও আসেনি। আসেনি গৌরব, অর্ক। দীর্ঘায়িত নিঃশ্বাস ছেড়ে নৈঃশব্দ্য ইবরাতের পাশে বসল ইমামা।
“কি হয়েছে তোর? এতো উদাস লাগছে কেন?”
‘কাঁধে মৃদু ধাক্কা পড়ায় গভীর শ্বাস ফেলে ইমামার দিকে ঘুরল ইবরাত। তবে তখনও আদলে লেপ্টে ছিল মর্মাহত ছাপ। মর্মস্পর্শী দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে ইবরাত ধীরে ধীরে বলতে লাগল
“যে ছেলের থোবড়া ভালো, সে ছেলের চরিত্র ভালো না। যে ছেলের চরিত্র ভালো, সে ছেলের থোবড়া ভালো না।”
‘ইমামা নির্বিবাদী মানুষ। পৃথিবীসংক্রান্ত চিন্তাভাবনা তাকে খুব কম ভাবায়। প্রকৃতপক্ষে, সে কল্পনাবিলাসী। পার্থিব জীবনের কষ্ট পেরিয়ে সে একসময় কল্পনার জগতে ডুবে যায়। সেখানে পুরুষতান্ত্রিক বিষয়গুলো ভাবার কোনো ফুরসত তার হয়নি। তাই ইমামা সহজ গলায় জিজ্ঞেস করল,
“তো? তোর কি হয়েছে?”
‘ইবরার উত্তর দেয় না। অনুভূতিশূণ্য মানুষের কাছে অনুভূতি প্রকাশ করে সে তার অনুভূতিকে অসম্মান করতে চায় না। তাই সে চুপ থাকল। ওকে চুপ থাকতে দেখে হঠাৎ ইমামা চাতুর্যময় হাসি দিল। বাঁ-হাতে ইবরাতের কাঁধ জড়িয়ে, ওকে কাছে টেনে ফিসফিস করে বলল,
“হানি, এভরি বয় ইজ রেড ফ্ল্যাগ,
ইউ জাস্ট নিড টু চুজ ইয়োর ফেভরিট শেড অফ রেড।”
‘ইবরাত বিস্ময়োদ্বেলিত চোখে ইমামার দিকে তাকাল। বিস্ময়ে তার চোয়াল ফাঁক হয়ে গিয়েছে।
“তারমানে তুই আমাকে প্রেম করার জন্য ইনফ্লুয়েঞ্জ করছিস?”
‘ইবরাতকে হড়কিয়ে দিয়ে ইমামা মাথা নাড়ায়৷ হঠাৎই ইবরাতের চিবুকের পেশি শক্ত হয়। ও ঝাড়া দিয়ে ইমামার হাত সরিয়ে দিয়ে খেঁকিয়ে উঠল,
“ননসেন্স মার্কা কথাবার্তা আমার একদম পছন্দ না৷”
‘যারপরনাই অবাক হলো ইমামা,”অদ্ভুত তো!”
‘ইবরাত এবার ঝাঁঝিয়ে উঠল,
“এসব ফালতু, থার্ডক্লাস প্রেমট্রেমে আমি নাই। দুনিয়ার একভাগের অর্ধেক প্রেম, আর বাকি আড়াই ভাগ লাগানোর ধান্ধা। আমি করলে ডিরেক্টর বিয়ে করবো। মনের মতো একজনকে পেয়ে নিই শুধু। গলায় রামদা ধরে হলেও বিয়ে করে ছাড়বো।”
‘ইবরাতের কথা শুনে বিষম উঠে যায় ইমামার। ইবরাত তড়িঘড়ি করে ইমামার মাথার তালুতে চাপড় মারতে মারতে মন্ত্র আওড়ায়,
“ডিল ডিল…..
পুট*কি মাইরা গিল।”
‘ইবরাতের এই অদ্ভুত মন্ত্র কতটা কার্যকরী তা জানা গেল না, তবে ওর এই মন্ত্র শুনে আপনা-আপনিই স্বাভাবিক হয়ে উঠল ইমামা। ওরই ভুল হয়েছে এই মেয়ের সাথে মুখ লাগাতে আসা। লম্পট মেয়ে কোথাকার! এই মেয়ের হাতের শিরা কাটলে রক্ত নয়, গড়িয়ে পড়বে ভণ্ডামি।
‘একটু আগেই যে মেয়েকে ধূসর রঙা বিষন্নতার চাদর চারদিক থেকে ঘিরে ধরেছিল, তারপর হঠাৎ করেই যে ঝাঁঝিয়ে উঠেছিল, সে এখন গুনগুন করে গান গাইছে,
❝Honey রেখো Bank balance য়ে
Money তবে থাকবো আমি
জানি “তুমি হও যতই Handsome
আর হও না daring❞
‘একটু আগের কথার সাথে গানের লিরিক্সের কোনো মিল পেল না ইমামা। গিরগিটির চেয়েও দ্রুত রঙ বদলায় এই মেয়ের মন। এর মতিগতি বুঝতে হলে, আল্লাহ প্রদত্ত বিশেষ গুণের প্রয়োজন। যা ইমামার নেই।
❌
‘আসসালামু ওয়ালাইকুম! সকলে কেমন আছেন? আশা করি ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমিও ভালো আছি। কথা ছিল এক তারিখ গল্প আসবে। কিন্তু সত্যি বলতে আমার নিজেরই আর তড় সইছিল না। তাই একদিন আগেই হাজির হলাম। আশা করি সকলে রেসপন্স করবেন। অনেকদিন পর লিখছি তো, তাল পাচ্ছি না৷ আপনাদের মূল্যবান মন্তব্য জানিয়ে আমাকে উৎসাহ প্রধান করবেন, আশা রাখছি। ইনশাআল্লাহ, পরবর্তী পর্ব কাল আসবে৷ আর এখন থেকে ছোট পর্ব আসবে। তাতে করে দ্রুত লেখা এবং আপনাদের মাঝে হাজির করা যায়।আজকের পর্ব কেমন হয়েছে, জানাতে ভুলবেন না 😊।
Share On:
TAGS: born to be villains, মিথুবুড়ি
CLICK HERE GO TO OUR HOME PAGE
-
Born to be villains পর্ব ৯
-
Born to be villains পর্ব ১৩
-
Born to be villains পর্ব ৫(প্রথমাংশ+শেষাংশ)
-
Born to be villains পর্ব ৩
-
Born to be villains পর্ব ৬
-
Born to be villains পর্ব ৮
-
Born to be villains পর্ব ১
-
Born to be villains গল্পের লিংক
-
Born to be villains পর্ব ৪
-
Born to be villains পর্ব ১১