Golpo ডার্ক রোমান্স ডিজায়ার আনলিশড

ডিজায়ার আনলিশড পর্ব ৭


ডিজায়ার_আনলিশড

✍️ সাবিলা সাবি

পর্ব-৭

চৌধুরী নিকেতনের ডাইনিং হলটায় জানালার ফাঁক দিয়ে সকালের আলো নরমভাবে ঢুকে পড়ছে। সাদা পর্দার ওপর আলো পড়ে হালকা সোনালি আভা ছড়িয়ে দিচ্ছে। টেবিল সাজানো—গরম গরম টোস্ট, ডিম, মাখন, এক পাশে তাজা ফল, আর কাঁচের জগে বিভিন্ন রকমের জুস। হালকা পারফিউম আর সদ্য বানানো কফির গন্ধ মিলেমিশে এক ধরনের শান্ত আর আরামদায়ক পরিবেশ তৈরি করেছে।

টেবিলে তখন শুধু দুজন বসা—জাভিয়ান, আর জাভিয়ানের দাদি সুফিয়া চৌধুরী। জাভিয়ান আধা গম্ভীর মুখে কফির কাপ হাতে নিয়ে খবরের কাগজে চোখ বুলাচ্ছিলো। সুফিয়া দাদি ব্যস্ত ছিলেন নাতির জন্য পছন্দ করে প্লেটে খাবার তুলে দিতে।

হঠাৎ দরজার দিক থেকে পায়ের শব্দ হলো। ঘুরে তাকাতেই সুফিয়া দাদি থেমে গেলেন। আর জাভিয়ান সরাসরি তাকিয়ে রইল।

তান্বী একেবারে ফ্রেশ হয়ে শাওয়ার নিয়ে এসেছে। গায়ে জর্জেটের হালকা পাথরের শাড়ি, ইউটিউব দেখে কোনোমতে পড়েছে। লম্বা চুল ভিজে ভিজে হাঁটুর কাছে ঝুলছে। নাকে ছোট ডায়মন্ডের নথ, আর গলায় হালকা ডায়মন্ডের নেকলেস—সব মিলিয়ে যেন একেবারে নতুন বউয়ের মতো সেজেছে।

জাভিয়ান মুহূর্তের জন্য থমকে গেল। তার ঠোঁটের কোণে কফির কাপ, চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে। কিছুটা বিরক্তি, কিছুটা বিস্ময় মিশে গিয়ে সে বলে উঠলো— “তুমি কি কোথাও বেড়াতে যাচ্ছ নাকি। এরকম শাড়ি আর গহনা পড়েছো যে?”

সুফিয়া চৌধুরী, হেসে বললেন,—“আহা, দাদুভাই, আমি বলেছি একে এসব পড়তে। তুই বিয়ে করেছিস, আজকে আত্মীয়-স্বজনরা আসছে রাতেই। তারা নতুন বউকে দেখবে।”

জাভিয়ান একটু বিরক্তির সুরে বলল,— “কিন্তু গ্ৰান্ডমা, আমাকে জিজ্ঞেস না করে সবাইকে ইনভাইট কেনো করেছো? আমাকে জানানো দরকার ছিল না কি? তুমি জানো না আমি আমার পরিবারের কাউকে দু’চোখে সহ্য করতে পারি না—একেকটা যেন কালসাপ!”

সুফিয়া শান্ত স্বরে উত্তর দিলেন,— “আহা, দাদুভাই, এভাবে কেনো বলছ? আত্মীয়-স্বজন তো এক ধরনের আনন্দ। তাছাড়া, কয়েক দিনের মধ্যে তোমরা মেক্সিকো চলে যাবে, তখন আবার কবে না কবে ফিরবে। চারজনকে তো দেখাতে হবে নতুন বউ কে, তাই তাড়াহুড়ো করে আজকে সবাইকে দেখাবো।”

জাভিয়ান চুপচাপ একবার তান্বীর দিকে তাকালো। টেবিলে ছড়ানো খাবারের মধ্যে, সকালটা যেন নতুন আবিষ্কারের মতো উদ্দীপনায় ভরে উঠেছিল।

ব্রেকফাস্ট টেবিলে একেবারে চুপচাপ খাচ্ছিল সবাই। হঠাৎই সুফিয়া চৌধুরী চোখ সরু করে জাভিয়ানের দিকে তাকালেন।

— “দাদুভাই, কাল তো খুব তাড়া দিচ্ছিলে! বাবার সামনেই বললে—‘বাসর করতে দেরি হয়ে যাচ্ছে।’ কিন্তু তারপর কী হলো? বাসর তো করলে না! রাতে ঝগড়া বেধেছিল নাকি তোমাদের?”

চামচ নামিয়ে জাভিয়ান হালকা হাসল, তারপর বলল,
— “গ্র্যান্ডমা, তোমাকে কে বলল আমরা বাসর করিনি? নাকি তুমি আমাদের রুমে সিসি ক্যামেরা লাগিয়েছো?”

দাদি ঠোঁট টিপে হেসে বললেন, — “আরে দাদুভাই, তোমার দাদির চুল এমনি এমনি পেকে যায়নি। তোমার দাদা কত রোমান্টিক ছিল, তুমি জানো না। আর তার নাতি হয়ে তুমি আনরোমান্টিক হবে নাকি? আমার চোখটাই তো আসল সিসি ক্যামেরা। নাতবউয়ের শরীরে বাসরের কোনো ছাপই দেখছিনা।”

এই কথা শুনে টেবিল হালকা কেঁপে উঠল জাভিয়ানের কাশের কারনে। জাভিয়ান একটু গম্ভীর ভাব ধরে নিয়ে বলল, “গ্র্যান্ডমা! আসলে ও কাল খুব ভয় পাচ্ছিলো, প্রথমবার তো… তাই।”

তান্বীর গাল টকটকে লাল হয়ে গেল। মনে হচ্ছিলো খাওয়া ফেলে উঠে এখনই মাটি ফাঁক করে মাটির নিচে গিয়ে লুকিয়ে পড়তে। ভেতরে ভেতরে বিড়বিড় করে ভাবল—“হায় আল্লাহ! এই লোকটা কি সব আজাইরা কথা পরিবারের সামনে বলে! একেবারে নির্লজ্জ,!”

তবে মুখে কিছু না বলে সে কেবল চামচ নাড়তে লাগল।
কিন্তু ভেতরে ভেতরে দাঁত কামড়ে আরো ভাবল—
“জীবনে কোনোভাবে যদি জানতাম এই রকম নির্লজ্জ একটা লোকের সাথে আমার বিয়ে হবে, আমি সোজা হিমালয়ে পালিয়ে যেতাম। এটাকে বিয়ে করার চেয়ে বরফে বসে তিব্বতি সন্ন্যাসিনী হয়ে থাকলেও বেশি ভালো ছিলো।”

হঠাৎ জাভিয়ানের মা, কার্গো চৌধুরী, তান্বীর দিকে একবার তাকিয়ে নিয়ে ছেলের উদ্দেশ্যে বললে —“জাভি, বলছিলাম আজ রাতে তো অনেক মেহমান আসবে। তাছাড়া তোমার মামা-মামি আসছে ইন্ডিয়া থেকে। তুমি কি যাবে তাদের রিসিভ করতে এয়ারপোর্টে?”

জাভিয়ান চামচ নামিয়ে গ্লাসটা হাতে তুলে নিয়ে ধীরে ধীরে এক চুমুক জুস খেলো। তারপর গম্ভীর গলায় বলল—“আমার সময় নেই।”

এই বলে হঠাৎ করেই চেয়ার ঠেলে উঠে দাঁড়াল, আর একটুও পেছনে না তাকিয়ে সোজা সিঁড়ির দিকে এগিয়ে গেল।

টেবিলে হঠাৎ এক অস্বস্তিকর নীরবতা নেমে এল। সবাই একে অপরের দিকে তাকাচ্ছে।

তখনই তার মা কার্গো চৌধুরী, বিরক্তির সঙ্গে বলে উঠলেন— “এই ছেলে কারো কথা শুনে না! একটা কথা যদি অন্তত শুনত!”

দাদি সুফিয়া তখন ধীরে ধীরে চা খেয়ে রেখে মুচকি হেসে বললেন— “শুনবে কী করে? তোমরাই তো ওকে এমন বানিয়ে ফেলেছো।”

তার কথায় টেবিলে চাপা গুঞ্জন বয়ে গেল। সবাই চুপসে গেলেও দাদির চোখে-মুখে এক ধরনের ঠাণ্ডা নিশ্চয়তা—যেন উনি জানেন, এই ছেলেকে অন্য কারো নিয়মে বাঁধা যায় না।

তান্বী টেবিলে বসেই মুখ নিচু করে খেতে লাগল। তবে ভেতরে ভেতরে ওর মনে হচ্ছিলো—“এই বদমাইশটাকে সবাই ভয় পায়! আসলে ওর লাগামছাড়া কথাবার্তা, চোখের সেই ঠাণ্ডা দৃষ্টি, আর গম্ভীর ভঙ্গিমার জন্যই হয়তো কেউ কিছু বলতে সাহস পায় না। সবাই একরকম চুপ মেনে নেয়। যেন জাভিয়ান চৌধুরীর কথাই এই বাড়ির শেষ কথা।”

তান্বী চুপচাপ টেবিলে বসে খেতে খেতে মনে মনে আবার আজকের সকালের কথা ভাবতে লাগল। হঠাৎ মাথায় চলে এলো—সে যখন জাভিয়ানের ল্যাপটপটা পেয়েছিল,আসলে পরীক্ষার জন্য নয়, অন্য এক কাজে ব্যবহার করেছিল। সকালে তাড়াহুড়ো করে নিজের আইডি দিয়ে একটা কেস ফাইল করেছিল। সেখানে লিখেছিল—“রিকার্দো নামে এক মাফিয়া ডিলার আমার বাবা-মা,বোন আর ভাইকে আটকে রেখেছে।

তাদের আস্তানার ঠিকানা এবং তারা কী কী করে, সব তথ্য দিয়েছে তান্বী।

তান্বীর ভেতরে তখনই আশা জেগে উঠল—“হয়তো পুলিশ এখনই সেখানে পৌঁছে যাবে। আর যদি আমার পরিবারকে উদ্ধার করতে পারে, তাহলে আমিও এই জাভিয়ান এমিলিও চৌধুরীর কবল থেকে মুক্তি পাবো।”

ওর চোখ দুটো কেমন যেন ঝিলমিল করে উঠল, কিন্তু সে মুহূর্তেই দাদি সুফিয়া চৌধুরীর কণ্ঠে চমকে উঠল।
— “কি হলো নাতবউ? কি ভাবছো এতো?”

তান্বী আঁতকে উঠে তড়িঘড়ি বলে উঠল,
—“না না দাদি, কিছু না!আসলে ভাবছিলাম ওই বদমা…।”

মুখে হঠাৎ থেমে গেল। নিজের অজান্তেই “বদমাইশ” বলতে যাচ্ছিল জাভিয়ানকে।

তাড়াতাড়ি কথা ঘুরিয়ে নিলো— “মানে আমার বরটা দেখি কারো কথাই শোনে না।”

সুফিয়া দাদি মুচকি হেসে বললেন, — “চিন্তা করিস না, কারো কথা না শুনলেও তোর কথা শুনবে। তুই দেখিস। তোর দাদাও একদম কারো কথা শুনত না, কিন্তু আমার জন্য ছিল পাগল!”

দাদির সেই অদ্ভুত আত্মবিশ্বাস দেখে তান্বীর মনে হলো
“আমার কথা শুনবে? ওই বদমাইশ তো নিজের মায়ের কথাই শোনে না,আমারটা কি শুনবে।”
.
.
.
.
জাভিয়ান নিজের রুমে ঢুকে ল্যাপটপ হাতে নিল।
স্ক্রিন অন করতেই পাসওয়ার্ড চাইলো।
প্রথমবার… ভুল।
দ্বিতীয়বার… ভুল।
তৃতীয়বারেও… ভুল!

চোখ সরু করে তাকালো স্ক্রিনের দিকে। “অদ্ভুত!আমার তো পাসওয়ার্ড ভুলে যাওয়ার কথা না… তাহলে?”

মুহূর্তেই মাথায় ঢুকে গেলো—তান্বী!

ঠিক তখনই দরজা ঠেলে তান্বী ঢুকলো।
জাভিয়ান চেয়ার ঘুরিয়ে বসে বলল,— “এই মেয়ে!”

তান্বী কোনো উত্তর দিল না। শান্তভাবে আলমারির দিকে এগিয়ে গেল।জাভিয়ান আবার ডাকলো, এবার একটু জোরে,— “এই মেয়ে!”

তান্বী এবারো চুপ।য়জাভিয়ান কপাল কুঁচকে দাঁত চেপে উঠলো,— “এই তান্বী! ল্যাপটপের পাসওয়ার্ড কি দিয়েছো?”

তান্বী ঠাণ্ডা গলায় হেসে উত্তর দিল,—“ফাক ইউরসেল্ফ।”

জাভিয়ান থমকে গেলো। —“কি??”

তান্বী এবার সোজা তাকিয়ে বললো,— “পাসওয়ার্ড হচ্ছে F,/uck yourself।”

জাভিয়ান রাগে মুহূর্তেই লাল হয়ে গেলো, দাঁত চেপে মনে মনে বললো—“হারামী মেয়ে কোথাকার!”

পাসওয়ার্ড দিয়ে ভেতরে ঢুকে জাভিয়ান স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললো। কিন্তু রাগে ফুঁসতে ফুঁসতে ঘুরে তাকিয়ে তান্বীকে বললো—“লিসেন! ভবিষ্যতে এমন কিছু করার চেষ্টা করবে না। আমার কোনো জিনিসে হাত দেবে না, আমার কোনো জিনিস পরিবর্তন করবে না আমার অনুমতি ছাড়া। বুঝেছো?”

তান্বী চুপচাপ একমুহূর্ত দাঁড়িয়ে থেকে, ভ্রু কুঁচকে মিষ্টি গলায় বললো—“না, বুঝতে পারিনি। আমি তো ক্লাসে স্যারের পড়াই বুঝি না, তাহলে আপনার কথা কিভাবে বুঝবো?”

জাভিয়ান থতমত খেয়ে এক সেকেন্ড তান্বীর দিকে তাকিয়ে থাকলো। তারপর মনে মনে বললো—“এই মেয়েটা একদিন আমাকে পাগল বানিয়ে ছাড়বে!”
.
.
.
.
তান্বী ড্রেসিং টেবিলের সামনে বসে শাড়িটা হালকা ঠিক করছিলো। আঙুলে লিপস্টিক নিয়ে ঠোঁটে আলতো করে বুলিয়ে দিচ্ছিলো। আয়নায় তার প্রতিচ্ছবি যেন নিজেকেই মুগ্ধ করছিলো।

জাভিয়ান সোফায় বসে ল্যাপটপে কাজ করছিলো, কিন্তু হঠাৎ চোখ চলে গেলো ড্রেসিং টেবিলের আয়নায়। সেখানে তান্বী লিপস্টিক ঠিক করছে। মুহূর্তের জন্য নিজের অজান্তেই সে তাকিয়ে রইলো, চোখ যেনো আটকে গেলো।

কিছুক্ষণের জন্য যেন অন্য জগতে হারিয়ে গেলো। তান্বীর নাকে চিকচিক করছে ছোট্ট ডায়মন্ডের নথ। গলায় হালকা নেকলেস, লালচে ঠোঁটে নিঃশব্দে লিপস্টিক বুলিয়ে দিচ্ছে। আয়নায় তার প্রতিফলনটা যেন আরও মায়াবী হয়ে উঠেছিলো—একটু গম্ভীর, একটু লাজুক, আর কোথাও যেন গভীর এক রহস্য লুকানো।

জাভিয়ান ল্যাপটপে চোখ রাখলেও মন যেন আটকে গেলো সেই আয়নার প্রতিফলনে। তার মনে হচ্ছিল, পুরো ঘরটা থেমে গেছে—শুধু আয়নার সামনে বসা এক মেয়ের ধীর গতির সাজসজ্জা চলছে।

চোখ সরাতে পারছিলো না। এক অদ্ভুত টান যেন তাকে বেঁধে রেখেছে। হঠাৎই বিরক্ত হয়ে নিজের ভেতরেই বললো— “ধুর, কি হচ্ছে আমার? কেন এভাবে তাকিয়ে আছি আমি? এই মেয়েটা আমার কে? শুধু বাবার জেদের জন্য ওকে আমার ঘাড়ে চাপিয়েছি… আর আমি এখানে বসে এভাবে মুগ্ধ হয়ে তাকাচ্ছি! হাস্যকর…”

সে সিগারেটের প্যাকেট থেকে একটা সিগারেট বের করলো, আঙুলে ঘোরাতে ঘোরাতে বারান্দার দিকে হাঁটতে লাগলো। মনে মনে আবার বললো— “এই মেয়েটাকে নিয়ে আমাকে কতদিন থাকতে হবে? বাবা যতদিন বেঁচে আছে, ততদিন তো ওকে আমার কাছেই রাখতে হবে… নাহলে আবার আমাকে তার পছন্দের কোনো মেয়ের সাথে বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করবে। তাহলে কি এই মেয়েকে নিয়ে মেক্সিকোতে চলে যাবো? কিন্তু ও কি রাজি হবে? ও কি মানিয়ে নিতে পারবে আমার সেই অন্ধকার জগতের সাথে?”

ধোঁয়ার কুণ্ডলী ছাড়তে ছাড়তে জাভিয়ান যেন নিজের ভেতরেই হারিয়ে গেলো।

সিগারেটের ছাই ঝেড়ে দিয়ে ঠোঁট কামড়ে আবার ভাবল—তারপরেই জাভিয়ান ঠান্ডা হেসে মাথা নাড়ল।— “রাজি হোক বা না হোক, শেষ পর্যন্ত তো আমার নিয়মেই চলতে হবে।”

ধোঁয়ায় ঢেকে গেলো চারপাশ। ভেতরে যেন একটা অনিশ্চিত ভবিষ্যতের ছায়া তৈরি হলো।
.
.
.
.
মেক্সিকোর এক অভিজাত পেন্টহাউজ। চারপাশে দামি ঝাড়বাতির আলো, কাচের জানালা ভেদ করে শহরের আলোগুলো যেন রুপালি ধোঁয়ার মতো ভেসে আসছে। সেই ঘরের মধ্যেই সোফায় হেলান দিয়ে বসে আছেন ইসাবেলা মোরেলাস—মেইলস্ট্রোমের মা। ঠান্ডা অথচ তীক্ষ্ণ চোখে তিনি সামনে রাখা ওয়াইনের গ্লাসের দিকে তাকিয়ে ছিলেন।

এদিকে মেইলস্ট্রোম ঘরে এদিক-ওদিক পায়চারি করছে। হাতঘড়িতে টাইমার সেট করে রেখেছে—২৪ ঘণ্টার মধ্যে তান্বীর খবর আসবে। এখনো বাকি ১০ ঘণ্টা। তার প্রতিটি পদক্ষেপ যেন অস্থিরতার ভার বহন করছিলো।

ঠিক তখনই দরজা ঠেলে এক লোক দ্রুত ঢুকে পড়লো। হালকা নত হয়ে বলল,—“বেলা ম্যাডাম… একটা জরুরি খবর আছে।”

ইসাবেলা মাথা না ঘুরিয়েই বললো,—“বল।”

লোকটা এক নিশ্বাসে বলল,—“খবর পেয়েছি—সায়েম চৌধুরীর ছেলে, জাভিয়ান এমিলিও চৌধুরী… নাকি বিয়ে করেছে। আজ রাতে চৌধুরী নিকেতনে একটা রিসেপশনও আছে।”

এটা শুনেই ইসাবেলা হঠাৎ বসা থেকে উঠে দাঁড়ালো। ঠোঁট কামড়ে চোখ বড় করে বললো,—“কি বললে? এমিলিও… বিয়ে করেছে? কাকে? আর কখন?”

মেইলস্ট্রোম থেমে গেলো। এক চিলতে ব্যঙ্গ মিশ্রিত কণ্ঠে বলল,—“মম, তোমার এত কৌতূহল কেনো? জাভিয়ান এমিলিও চৌধুরী বিয়ে করেছে—তাতে আমাদের কি?”

ইসাবেলা তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তার দিকে তাকিয়ে লোকটাকে ইশারা করলো। লোকটা মাথা নিচু করে দ্রুত সরে গেলো ঘর থেকে। মেইলস্ট্রোম আবার পায়চারি শুরু করতেই ইসাবেলাও সরে গেলো আর পাশের রুমেই লোকটার সামনে ঠান্ডা গলায় বললো, —“তোমাকে কতবার বলেছি, এমিলিওর সম্পর্কে কোনো খবর মেইলস্ট্রোমের সামনে বলবে না।”

লোকটা একটু থেমে কাঁপা কন্ঠে বলল,—“সরি ম্যাডাম, ভুল হয়েছে। আর হবে না।”

ইসাবেলা সেই রুমের সোফায় বসলো। তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে লোকটির দিকে তাকিয়ে বললো,—“এবার বলো, কবে বিয়ে করেছে আর কাকে?”

লোকটা গলা খাঁকারি দিয়ে উত্তর দিলো,—“বিয়ে করেছে কালকে। তবে শুনেছি মেয়েটি বাংলাদেশি।”

ইসাবেলা গভীর নিঃশ্বাস ফেলে চুপ করে রইলো কিছুক্ষণ। তারপর ঠোঁট বাঁকিয়ে বললো, —“এই ছেলেগুলো বাংলাদেশি মেয়েদের মধ্যে কি দেখলো, আমি বুঝি না! সারাজীবন মেক্সিকোতে বড় হয়েছে, এখানে হাজারো মেয়ে আছে সুন্দরী —তাও কেন বাংলাদেশি মেয়েদের জন্য এরা পাগল হয়ে যায়?” কক্ষে তখন নিঃশব্দে টান টান উত্তেজনা জমাট বেঁধে রইলো।
.
.
.
.
রাত তখন গভীর। শহরের এক অচেনা কোণে, মোটা দেয়াল আর সশস্ত্র গার্ডে ঘেরা ভবনের ভেতর আলো জ্বলছে কেবল একটাই কক্ষে।

সেই কক্ষের মাঝখানে বসে আছে রিকার্দো। তার ব্যক্তিগত অফিস—দেয়ালে ঝোলানো দামি অস্ত্র, আলমারিতে বোতলভর্তি হুইস্কি, আর টেবিলে ছড়ানো নানা কাগজপত্র। রিকার্দো এক হাতে সিগার ধরিয়ে ধোঁয়া উড়িয়ে দিচ্ছে, অন্য হাতে কাগজের হিসাব মিলাচ্ছে।

চোখ নামিয়ে ঘড়ির কাঁটার দিকে তাকাল সে। আর মাত্র কয়েক ঘণ্টা। তারপরেই বড়সড় চালান রওনা দেবে সমুদ্রপথে—শিপ ভরা তরুণী মেয়েরা, যাদের নাম নেই, পরিচয় নেই, কেবল পণ্যের মতো বিক্রি হবে।

টেবিলের পাশে রাখা তালিকায় একটি নাম লাল কালি দিয়ে টানা ছিল—এলিনা রেহমান। তান্বীর বোন।

রিকার্দো এক অদ্ভুত হাসি দিলো, গলায় ভারি কণ্ঠে ফিসফিস করে বলল,—“এই মালটা এবার ভালো দামে উঠবে। নতুন, সুন্দর, একদম তরতাজা।”

ঘরের কোণে বন্দি এলিনা নড়ল।তাকে আস্তানা থেকে এখানে আনা হয়েছে। তার হাত-পা বাঁধা, মুখে কাপড় চেপে রাখা। আতঙ্কে চোখ বড় বড় হয়ে তাকিয়ে আছে সে। ভয় আর অসহায়তায় বুক কাঁপছে, কিন্তু চারপাশের ভারি দরজা আর পাহারাদারদের দেখে বোঝাই যাচ্ছে—এই নরকের বাইরে বের হওয়ার কোনো পথ নেই।

রিকার্দো হুইস্কির গ্লাস তুলে চুমুক দিয়ে হাসলো।—“কেবল কয়েক ঘণ্টার অপেক্ষা। তারপর সবকিছু সাগরের ঢেউয়ের সঙ্গে মিলিয়ে যাবে।”

বাইরে ভেসে আসছিল দূরের বন্দরের শব্দ—লোহার কন্টেইনার টেনে নেওয়ার খচমচ আওয়াজ। অন্ধকার রাতটা যেন আরেকটা র//ক্তচুক্তির সাক্ষী হতে চলেছে।
.
.
.
.
রাতের আলোয় ঝলমল করছে চৌধুরী নিকেতন। গেট থেকে শুরু করে উঠোন পর্যন্ত লাইটে ঢাকা, চারদিকে ফুলের সাজ, আর ভেতরে বাজছে মৃদু সংগীত। ডাইনিং হলে সাজানো টেবিল, লম্বা কাঁচের ঝাড়বাতি থেকে ঝরে পড়া আলোর ঝলকানিতে পুরো বাড়িটা যেন নতুন রঙে মোড়ানো।

আজকের রিসেপশনটা খুব বড় নয়—শুধু ঘনিষ্ঠ আত্মীয় আর কয়েকজন ব্যবসায়িক পার্টনার। প্রথমেই এসে পৌঁছালো জাভিয়ানের মামা-মামী। এরপর একে একে জাভিয়ানের বাবার দিকের পরিবার, আর জাভিয়ানের বাবার বড় বড় বিজনেস পার্টনাররাও হাজির।

সবাইয়ের চোখ ছিল একটাই দিকে—নতুন বউ।

তান্বী হালকা রঙের কাজ করা শাড়ি পরে নেমেছে। চুল খোলা, আর কপালে ছোট পাথরের টিপ, গলায় হালকা নেকলেস। মুখে একেবারে কৃত্রিম কোনো সাজ নয়,স্বাভাবিক সৌন্দর্যেই যেন আলো ছড়াচ্ছে।

একজন আত্মীয় হেসে বললেন,— “মাশাআল্লাহ, এমন বউ তো চৌধুরী পরিবারে এর আগে আসেনি।”

বিজনেস পার্টনাররাও তাকিয়ে রইলেন মুগ্ধ হয়ে। কেউ কেউ ফিসফিস করে বলছিলো,— “ছেলেটা সত্যিই সুন্দরী মেয়ে বেছে নিয়েছে।”

জাভিয়ানের বাবা সায়েম চৌধুরী একটু অস্বস্তি টের পেলেন, যখন হঠাৎ একজন পার্টনার জিজ্ঞেস করে বসল,— “বউ তো সত্যিই অনেক সুন্দর। তবে ব্যাকগ্রাউন্ডটা কেমন? কোন পরিবারের মেয়ে?”

ঘরের ভেতর কয়েক সেকেন্ডের জন্য নীরবতা নেমে এলো। সায়েম চৌধুরী হালকা হেসে গলা খাঁকারি দিয়ে বললেন, — “আসলে… আমার ছেলে নিজেই পছন্দ করেছে। দুজন দুজনকে ভালোবেসেই বিয়ে করেছে। তাই ব্যাকগ্রাউন্ড নিয়ে বাড়তি কিছু ভাবিনি।”

লোকজন মাথা নাড়ল, কেউ আর প্রশ্ন বাড়াল না। কিন্তু তান্বীর বুকের ভেতর তখন অন্য এক ঝড় বইছিলো।

সবার সামনে হাসি ধরে রাখলেও ভেতরে ভেতরে শুধু একটাই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছিলো— “পুলিশ কি পৌঁছেছে রিকার্দোর আস্তানায়? বাবা-মা, এলিনা আপু আর ফারহান ভাই… তারা কি নিরাপদ আছে?”

রঙিন আলো আর মানুষের কোলাহলের মাঝখানে দাঁড়িয়েও তান্বী অনুভব করছিল—তার আসল যুদ্ধটা এখনো শেষ হয়নি।
.
.
.
.

হলে তখন গুঞ্জন চলছে। এক আত্মীয় হেসে বলে উঠলেন, — “এবার তো জাভিয়ান নিশ্চয়ই সায়েম ভাইয়ের ব্যবসা সামলাবে, তাই না?”

আরেকজন খোঁচা দিয়ে বলল,— “বাবার এত বড় এম্পায়ার, ছেলের উপর দায়িত্ব তো আসতেই হবে।”

সায়েম চৌধুরী হালকা হাসলেন, গ্লাস নামিয়ে বললেন,
— “হ্যাঁ, ঠিকই বলেছেন। এবার মেক্সিকোতে ফিরেই আমি আমার সব কোম্পানির দায়িত্ব আমার ছেলে জাভিয়ানকে বুঝিয়ে দেবো।”

চারদিকে হাততালি উঠলো।তারপর মাইকে ঘোষণা হলো—— “এবার চৌধুরী পরিবারের উত্তরসূরি জাভিয়ান এমিলিও চৌধুরী কিছু কথা বলবেন।”

জাভিয়ান ধীর পদক্ষেপে স্টেজে উঠলো। হাতে মাইক্রোফোন নিয়ে এক মুহূর্ত সবার দিকে তাকিয়ে থাকল, ঠোঁটে অদ্ভুত এক হাসি। — “হ্যালো লেডিস অ্যান্ড জেন্টেলম্যান…” কিছুক্ষণ থেমে আবার বলল, — “আজ আপনারা এখানে এসে আমার বাবাকে সবাই একেকটা প্রশ্ন করেছেন। আমি শুধু একটা কথা পরিষ্কার করে দিতে চাই—লাইফ আমার, ডিসিশনও আমার। তাই আমার বাবাকে অহেতুক প্রশ্ন করার দরকার নেই।”

হল নিস্তব্ধ। জাভিয়ান চোখ সরাসরি অতিথিদের দিকে রাখল। — “আমি স্পষ্ট করে বলছি, আমি আমার বাবার কোনো কোম্পানির দায়িত্ব নেবো না। তবে হ্যাঁ, মেক্সিকো ফিরে আমি নিজের টাকায় নিজের কোম্পানি গড়ে তুলবো। নিজের পথে চলবো।”

হলজুড়ে চাপা গুঞ্জন ছড়িয়ে গেলো। আত্মীয়স্বজনের চোখে বিস্ময়। ঠিক তখনই জাভিয়ানের মামাতো ভাই চিৎকার করে উঠলো, — “জাভি ভাইয়া, তুমি তো অনেক ভালো গান গাও। একটা গান গাও না, প্লিজ!”

জাভিয়ান চোখ কুঁচকে তাকাল, তারপর হেসে বলল,
— “হ্যাঁ, ঠিকই বলেছিস। আমার প্রিয় রিলেটিভদের উদ্দেশ্যে একটা গান তো গাইতেই হয়।”

জাভিয়ান তখন সবার সামনে গিটার নিয়ে এসে দাঁড়াল। মাইক ঠিক করে প্রথম কর্ড বাজাতেই হলটা আরও নিস্তব্ধ হয়ে গেলো। সে গাইতে শুরু করল—

“ম্যা ভি চাঙ্গা, মেরে পিউ ভি চাঙ্গা, মেরি মা ভি চাঙ্গি.. রিশতেদার বেহেনচো/দ!”

“এক্স ভি চাঙ্গি, মেরি নেক্সট ভি চাঙ্গি, মেরি ক্রাশ ভি চাঙ্গি…রিশতেদার বেহেনচো/দ!”

তারপর জাভিয়ান Rap স্টাইলে বলা শুরু করলো।

“খেইর ছোড় রিশতেদার বেহেনচো/দ, কল কারকে ঘারপে পুছে লাড়কা কেয়া কার রাহা?, কেহেতা ম্যা লিখকে Rap হু রেকোর্ড কার রাহা… হাসতে কেহেতে হ্যা এইসা কাম কার, পিতাজীকা নাম কার……..”

পুরো গান শেষ হতেই পুরো হল কয়েক মুহূর্ত নিস্তব্ধ হয়ে থাকলো। কেউ হাসলো, কেউ ভ্রু কুঁচকে তাকালো, আবার কেউ ফিসফিস করে বলতে লাগলো “এ ছেলে সবসময় এমন ছিলো, এখন ষও পাল্টায়নি। একে দিয়ে বিজেনেস হবে?”

জাভিয়ান গিটারটা কাঁধে ঝুলিয়ে রেখে কোনো দিকে তাকাল না। একবারও কাউকে পাত্তা দিল না, শুধু হালকা হাসি দিয়ে মাইক্রোফোন টেবিলে রেখে স্টেজ থেকে নেমে গেলো। তার পদক্ষেপে যেন বিদ্রোহের ঠকঠক শব্দ বাজছিলো।

সামনের সারিতে বসা সায়েম চৌধুরী হালকা কাশলেন। চারদিকে আত্মীয়স্বজনদের চাপা হাসি, কেউ আবার মাথা নেড়ে ইঙ্গিত করল—“দেখো ছেলের অবস্থা কতোটা চরম বেয়াদব!”

সায়েম চৌধুরীর চোখে এক মুহূর্তের জন্য অস্বস্তি, কপালে ঘাম জমে গেলো। তিনি ভদ্রতার মুখোশ ধরে রাখার চেষ্টা করলেন, কিন্তু ভেতরে ভেতরে লজ্জায় গলতে লাগলেন।

মুহূর্তটা যেন তাকে নগ্ন করে দিল আত্মীয়দের সামনে—
একজন প্রভাবশালী ব্যবসায়ী, অথচ ছেলের এমন বিদ্রোহী ঘোষণা আর প্রকাশ্য অবাধ্যতা আর এমন এটা গান!

পুরো হল ঘরে চাপা চাপা গুঞ্জন, কোথাও হাসি, কোথাও তাচ্ছিল্য, আবার কারো চোখে অবাক বিস্ময়।

সবার দৃষ্টি তখন গিয়ে পড়লো তান্বীর দিকে। শাড়ির আঁচল টেনে ঠিক করে নিল সে। ভেতরে ভেতরে বুক কেঁপে উঠছিলো, কিন্তু বাইরের চেহারায় যতটা সম্ভব স্থিরতা রাখার চেষ্টা করলো।

মনে মনে বললো, “এমন নির্লজ্জভাবে কেউ পরিবারের সামনে এমন গান গায়? আর এই লোকটা… এ আমার স্বামী? আল্লাহ জানে সামনে কত বড় ঝড় আসছে…”

তান্বীর ঠোঁট শুকিয়ে গিয়েছিলো, তবু সামান্য হাসি ফোটালো মুখে। যেন আত্মীয়দের অস্বস্তি আর প্রশ্নগুলো ঢেকে দিতে চাইছে। কিন্তু তার চোখে একধরনের চাপা অশান্তি স্পষ্ট—যেন প্রতিটি মুহূর্তে নিজেকে প্রশ্ন করছে, “আমি কি এই লোকের হাত থেকে ছাড় পাবো?আমার পরিবারের কাছে ফিরতে পারবো?”

তার সেই নিস্তব্ধ, দ্বিধাগ্রস্ত অথচ ভদ্রতা মাখানো প্রতিক্রিয়া সবাই টের পেলেও কেউ কিছু বললো না। শুধু সুফিয়া দাদি চুপচাপ নাতবউয়ের দিকে তাকিয়ে থেকে ধীরে মাথা নাড়লেন—যেন বলতে চাইছেন, “ধর্য ধর, এই পরিবারে টিকে থাকতে হলে মন শক্ত করতে হবে।”
.
.
.
.
রিকার্দো তার ব্যক্তিগত অফিসে বসে ছিল। ঘরের মধ্যে হালকা আলো, কাগজপত্রের ভিড়, আর একটি বড় মনিটরের সামনে সব কিছু পর্যবেক্ষণ। হঠাৎ এক এজেন্ট ঢুকে বলল— “স্যার, একটা জরুরি খবর এসেছে। তান্বী রেহমান নামের একজন কেস ফাইল করেছে। পুরো তথ্য সেখানে আছে—আপনার পরিকল্পনা, ওর পরিবারের অবস্থান, এবং মাফিয়ার আস্তানা সবই লিখে দিয়েছে।”

রিকার্দো অচেতনভাবে চেয়ারে পিছনে হেলাল, চোখে আগুন ঝলসে উঠল। — “কি? সে… সে আমার সব পরিকল্পনা ফাঁস করেছে?”

এজেন্ট মাথা নাড়ল, “হ্যাঁ স্যার। আর পুলিশও জানার চেষ্টা করছে। যদি আমরা সময় নষ্ট করি, তবে তারা নিজেরাই এসে আমাদের ছদ্মবেশে উদ্ধার করতে পারে।”

রিকার্দো ঠোঁট কাঁপতে লাগল। নিজের নিখুঁত পরিকল্পনা ধ্বংসের শঙ্কা তাকে জ্বালিয়ে তুলছিল। মনে মনে সে ভাবল—“এভাবে অনুমতি দিব না। এখনই ব্যবস্থা নিতে হবে। পুলিশ যেন কোনোভাবেই আমাদের পথে বাধা না দেয়।”

সে অতি সতর্ক ভঙ্গিতে তার ফোন নিলো। কয়েক মিনিটের মধ্যে তিনি নিশ্চিত হয়ে ফেললো—শিপটি এখনও ছাড়েনি, আর সময় সীমিত।

রিকার্দো নিজের মনেই সিদ্ধান্ত নিল—“শিপ এখনি ছেড়ে দেয়া হবে আর বাকি থাকলো পুলিশ সেটা আমি দেখে নিবো আর তিন নাম্বার পিচ্চি মেয়ে তান্বী এটাকে একটা শিক্ষা দিতে হবে।”

(চলবে……..)

Share On:

TAGS: ,



CLICK HERE GO TO OUR HOME PAGE
Related Posts
 

0 Responses

Leave a Reply