Golpo romantic golpo নির্লজ্জ ভালোবাসা

নির্লজ্জ ভালোবাসা পর্ব ৫১


নির্লজ্জ_ভালোবাসা

লেখিকাসুমিচোধুরী

পর্ব ৫১ (১৮+ এলার্ট)

🚫যারা রোমান্টিক পছন্দ করেন না প্লিজ দয়া করে তারা এরিয়ে চলবেন। অযথা বাজে মন্তব্য করবেন না। আর কপি করা নিষিদ্ধ।🚫

দম বন্ধ হয়ে আসছে আরশির। শিহাব উন্মাদের মতো তার ঠোঁট দুটো চুষে খাচ্ছে, যেন কোনো এক তৃষ্ণার্ত মরুযাত্রী বহু বছর পর জলের খোঁজ পেয়েছে। আরশির সারা শরীর থরথর করে কাঁপতে শুরু করেছে। তীব্র এক ভালো লাগা আর ভয়ের মিশ্রণে সে নিজের অবাধ্য দুই হাতে শিহাবের মাথার চুলগুলো শক্ত করে খামচে ধরল। শিহাব যেন কোনো মরণ নেশায় তলিয়ে গেছে, সে কী করছে না করছে তার হিতাহিত জ্ঞানটুকুও যেন লোপ পেয়েছে। শুরুতে জেদের বশে আরশির ঠোঁট দুটো দখলে নিলেও, এখন আরশির গায়ের সেই মিষ্টি ঘ্রাণে শিহাবের মস্তিস্কে এক আদিম যৌন উত্তেজনা চেপে বসেছে।

অনেকক্ষণ পর যখন শিহাব ঠোঁট ছাড়ল, তখন দুজনেই আধমরা মানুষের মতো হাঁপাতে হাঁপাতে বড় বড় শ্বাস নিতে লাগল। আরশির ঠোঁট দুটো ফুলে টকটকে লাল হয়ে গেছে। কিন্তু শিহাবের ঘোর কাটল না বরং আরশির শরীরের উষ্ণতা তাকে আরও বেশি পাগল করে তুলল। মুহূর্তের ব্যবধানে শিহাব আরশির গলার গভীর ভাঁজে মুখ ডুবিয়ে দিল। সেই স্পর্শে আরশি যেন জীবন্ত পাথর হয়ে গেল। শিহাব উন্মাদের মতো আরশির ঘাড়ে আর গলায় একের পর এক গভীর চুমু এঁকে দিচ্ছে, যেন আজ সে আরশিকে নিজের ভেতর শুষে নেবে।

আরশি হাঁপাতে হাঁপাতে হাতের মুঠোয় বিছানার চাদরটা পিষে ফেলছে। শিহাবের এমন বেপরোয়া আর বুনো স্পর্শে আরশিও কেমন যেন নিজেকে হারিয়ে ফেলছে। তার নিজের শরীরই যেন তার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করছে, সে শিহাবকে দূরে ঠেলে দেওয়ার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছে। শিহাবের তপ্ত নিঃশ্বাস আরশির নরম চামড়ায় আগুনের মতো বিঁধছে। শিহাব এবার আরও গভীরে মুখ ডুবিয়ে অস্ফুট স্বরে গোঙাতে গোঙাতে বলল।

“বলছিলে না আমি বুড়ো হয়ে যাব? কেউ বাবা ডাকবে না? আজ দেখো এই বুড়ো হওয়ার আগেই তোমারে কেমন করে আমার নেশার জালে আটকাই!”

আরশির গলার স্বর বুজে আসছে, সে শুধু অস্ফুট স্বরে বলতে পারল,

“উফফ… শিহাব… ভাইয়া… আর না…!”

কিন্তু তার সেই ক্ষীণ আকুতি শিহাবের উম্মাদনার আগুনে যেন আরও ঘি ঢেলে দিল।শিহাবের স্পর্শের গভীরতা বাড়তে লাগল। সেই ছোঁয়ার তীব্রতা এতটাই প্রখর যে যেকোনো নারী তার হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেলতে বাধ্য। শিহাব চুমু খেতে খেতে নিচে নেমে এলো, আরশির পেটের ওপর থেকে জামাটা সরিয়ে সেখানে মুখ ডুবিয়ে দিল। পেটের নরম চামড়ায় শিহাবের উম্মাদনাভরা চুমুগুলো আরশিকে যেন সুখের এক উত্তাল জোয়ারে ভাসিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। স্বামীর স্পর্শ যে এতটা মাতাল করা হতে পারে, এতটা মধুমাখা হতে পারে, তা আরশি আজ প্রতি পদে পদে হাড়ভাড়ে টের পাচ্ছে।

হঠাৎ শিহাব এমন এক জায়গায় স্পর্শ করল এবং এমন এক কাণ্ড করে বসল যে আরশির চোখ দুটো বড় বড় গেল। তীব্র এক আবেশে তার ঠোঁট কামড়ে এল এবং চরম উত্তেজনার আতিশয্যে আরশি নিজের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে শিহাবের কাঁধে সজোরে কামড় বসিয়ে দিল।

সেই যন্ত্রণার চিলিক যেন শিহাবের মস্তিস্কে বিদ্যুতের মতো কাজ করল। এক মুহূর্তেই সে থমকে গেল এবং তন্দ্রাচ্ছন্ন ঘোর থেকে বাস্তবে ফিরে এল। সে এতক্ষণ কী করছিল, কতটা বেপরোয়া হয়ে উঠেছিল ভাবতেই শিহাবের মাথায় যেন রক্ত চড়ে বসল। সে থরথর করে কাঁপতে থাকা আরশির দিকে তাকিয়ে দেখল আরশি এখনো চোখ বন্ধ করে জ্বরে আক্রান্ত রোগীর মতো হাঁপাচ্ছে।

নিজেকে আর সামলাতে পারল না শিহাব। সে মুহূর্তের মধ্যে আরশির ওপর থেকে উঠে পড়ল এবং প্রায় দৌড়ে ব্যালকনিতে চলে এল। বাইরের ঠান্ডা বাতাসে দাঁড়িয়ে সে বড় বড় শ্বাস নিতে লাগল, যেন ভেতরের ওই আগ্নেয়গিরিটাকে শান্ত করার আপ্রাণ চেষ্টা করছে। নিজের হাতের ওপর নিজেরই রাগ হচ্ছে কী করতে যাচ্ছিল সে? এই মেয়েটাকে তো সে ঘৃণা করার কথা ছিল, তবে কেন ওর শরীরের নেশায় সে এভাবে অন্ধ হয়ে গেল

আরশি বড় বড় শ্বাস নিতে নিতে ধীরে ধীরে চোখ খুলল। দেখল পাশে শিহাব নেই, জায়গাটা শূন্য। মুহূর্তের মধ্যে আরশি লজ্জায় আর আবেশে গুটিসুটি মেরে উল্টো দিক হয়ে শুয়ে পড়ল। শিহাবের সেই উম্মাদ করা স্পর্শগুলো এখনো তার শরীরের প্রতিটি কোষে শিরশিরানি জাগাচ্ছে। ঘাড়ের যেখানটায় শিহাব মুখ ডুবিয়েছিল, সেখানটা যেন এখনো তপ্ত নিঃশ্বাসের তাপে পুড়ছে।

আরশির অজান্তেই ঠোঁটের কোণে এক চিলতে মিষ্টি হাসি ফুটে উঠল। বুকের ভেতরটা কেন জানি এক অদ্ভুত সুখে ভরে গেছে। সে নিজের দুই হাত দিয়ে মুখ ঢেকে বিছানায় গড়াগড়ি খেল। লোকটা এতক্ষণ রাগের মাথায় যা-ই করুক না কেন, ওই স্পর্শে যে নিখাদ একটা টান ছিল, সেটা আরশি টের পেয়েছে। আরশি হাসতে হাসতে আর খুশিতে ডগমগ হয়ে সে চোখ বন্ধ করল। শিহাবের সেই বেপরোয়া রূপটা বারবার তার চোখের সামনে ভেসে উঠতে লাগল।আরশি বালিশে মুখ গুঁজে নিজের গায়ের ওড়নাটা শক্ত করে জড়িয়ে ধরল। নিজের মনেই লাজুক হেসে বিড়বিড় করে উঠল।

“ইশ! লোকটার স্পর্শ এমন কেন? উফফ আমি তো প্রায় পাগল হওয়ার উপক্রম হয়েছিলাম! হাত-পা সব কেমন অবশ হয়ে আসছিল। তবে কি স্বামীর স্পর্শ সত্যিই এমন মাতাল করা হয়? এতটা নেশা থাকে ওতে?”

আরশি নিজের গলার সেই জায়গাটা আঙুল দিয়ে ছুঁল, যেখানে শিহাব একটু আগে উন্মাদের মতো তার অস্তিত্ব জানান দিচ্ছিল। ভাবতেই আরশির সারা শরীর আবার নতুন করে শিরশির করে উঠল, মেরুদণ্ড দিয়ে যেন এক পশলা হিমেল হাওয়া বয়ে গেল। লজ্জায় আর আবেশে সে বিছানায় পা দাপিয়ে বালিশে মুখটা আরও জোরে চেপে ধরল।

আরশির মনে হতে লাগল, শিহাবের ওই রুক্ষ আর জেদি ব্যবহারের আড়ালে কোথাও একটা গভীর তৃষ্ণা লুকিয়ে আছে। আরশি হাসতে হাসতে মনে মনে ভাবল।

“আমাকে জব্দ করতে এসে নিজেই তো দেখি কুপোকাত! প্রেগন্যান্ট বানানোর হুমকি দিয়ে এখন নিজেই লজ্জায় ব্যালকনিতে গিয়ে বাতাসের কাছে মাফ চাচ্ছে বুঝি? বাঘের তেজ দেখি এখন জল হয়ে গেছে!”

আরশির ঠোঁটের কোণের সেই চিলতে হাসিটা যেন আর কিছুতেই থামছে না। সে বারবার নিজের ঠোঁট কামড়ে ধরছে আর শিহাবের সেই বেপরোয়া মুহূর্তগুলোর কথা ভেবে এক অজানা সুখের অতলে তলিয়ে যাচ্ছে।


রুমের বাতাসটা ধীরে ধীরে ভারী আর মধুর হয়ে আসছে। রাত যত গভীর হচ্ছে, চারপাশের নিস্তব্ধতা যেন আরও বেশি মায়াবী হয়ে উঠছে। ব্যালকনির এক কোণে রৌদ্র তুরাকে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরে আছে। সে তার মুখটা তুরার ঘাড়ের খাঁজে নিপুণভাবে গুঁজে দিয়ে চোখ বন্ধ করে এক গভীর প্রশান্তি অনুভব করছে। তুরাও যেন আবেশে পাথর হয়ে গেছে, রৌদ্রর গায়ের পুরুষালি ঘ্রাণ আর বুকের ধুকপুকানি তাকে এক অজানা নেশায় আচ্ছন্ন করে ফেলছে। দুজনেই নিঝুম রাতের এই আদিম নিস্তব্ধতাটুকু নিজেদের হৃদস্পন্দন দিয়ে অনুভব করছে।

হঠাৎ রৌদ্র তার নেশাতুর চোখ দুটো খুলল। সে তুরার কানের খুব কাছে নিজের ঠোঁট ছুঁইয়ে গাঢ় আর ফিসফিসে স্বরে বলল।

“পুরো রাতটা কি এইভাবেই দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে পার করে দিবি? একটু আদর করতে দিবি না তুরা? দিয়ে দে না আজকের এই বিশেষ রাতটা শুধু আমাকে। তোকে আমার বুকের পাঁজরে পিষে নিয়ে আজ সুখের কোনো অতল রাজ্যে ভেসে চলি। তোর এই ছোট আর কোমল শরীরটাকে আজ আমার সাথে পুরোপুরি মিলিয়ে নিতে দে না!”

তুরা লজ্জায় আড়ষ্ট হয়ে চোখ বন্ধ করে ফেলল। ঠিক সেই মুহূর্তে রৌদ্র আবারও একদম তুরার কানের লতি স্পর্শ করে তপ্ত নিশ্বাস ছেড়ে ফিসফিস করে বলল।

“চল না তুরা, হারিয়ে যাই দুজনে মিলে এক অগাধ সুখের নদীতে যেখানে শুধু তুই আর আমি ভাসব। একে অপরের তপ্ত নিশ্বাসগুলো খুব কাছ থেকে অনুভব করব। আজ রাতটা শুধু আমাদের হোক।”

রৌদ্রের এমন তৃষ্ণার্ত কথাগুলো শুনে তুরার মনে হলো লজ্জায় তার কান দিয়ে এখনই গরম ধোঁয়া বের হতে শুরু করবে। শরীরের ভেতর এক বিচিত্র শিহরণ ধমনীতে রক্ত চলাচলের গতি বাড়িয়ে দিল। তুরা সহ্য করতে না পেরে এক ঝটকায় রৌদ্রকে ধাক্কা দিয়ে রুমে চলে এল। খাটের কিনারা শক্ত করে ধরে বড় বড় শ্বাস নিতে লাগল , হৃৎপিণ্ডটা যেন বুকের পাঁজর ভেঙে বেরিয়ে আসতে চাইছে।

রৌদ্র হার মানার পাত্র নয়। সে বাঘের মতো ধীর পায়ে রুমে এল এবং পেছন থেকে তুরাকে আবারও নিজের বুকের মাঝে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরল। তুরার ঘাড়ের খাঁজে মুখ ডুবিয়ে গভীর আর দীর্ঘশ্বাস নিতে লাগল। তুরা হাঁপাতে হাঁপাতে আর্তনাদ করার মতো স্বরে বলল।

“আমার আমার কেমন জানি লাগছে রৌদ্র! প্লিজ আপনি দূরে যান।”

রৌদ্র তুরার আকুতি শুনে থামল না, বরং তুরার কানের লতিতে আলতো করে একটা কামড় বসিয়ে নেশামাখা গলায় বলল।

“কেমন লাগছে বউ? খুব বেশি ভালো, নাকি খুব বেশি ভয়?”

তুরা দিশেহারা হয়ে নিজের শাড়িটা হাতের মুঠোয় খামচে ধরল। কাঁপতে কাঁপতে বলল।

“জা জানি না! প্লিজ আপনি দূরে যান।”

রৌদ্র এবার তুরাকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে নিল। আঙুলের ডগা দিয়ে তুরার থুতনিটা উঁচু করে ধরে সরাসরি চোখের দিকে তাকাল যে চোখে এখন এক আদিম তৃষ্ণা। রৌদ্র গম্ভীর স্বরে বলল।

“এখনো তো কিছুই করলাম না, তাতেই তুই এমন হাপাচ্ছিস কেন?।”

তুরা কোনো উত্তর দিতে পারল না, শুধু আবেশে চোখ দুটো বুজে ফেলল। রৌদ্র ধীরে ধীরে তুরার গলায় থাকা ভারী গয়নাটার হুক খুলতে লাগল। গয়নার শীতল স্পর্শ আর রৌদ্রের আঙুলের ছোঁয়ায় তুরা অস্ফুট স্বরে বলল।

“হাহ্! আপনি আপনি আমার গয়না খুলছেন কেন?”

রৌদ্র তুরার কানের ঝুমকোটা আলতো করে খুলতে খুলতে নেশাতুর কণ্ঠে বলল।

“তোকে নিয়ে সুখের নদীতে ভাসব বলেছিলাম না? ভারি গয়না পরে কি আর অতল গভীরে যাওয়া যায়?”

তুরা আর কোনো প্রতিবাদ করল না। রৌদ্র একে একে তুরার শরীর থেকে সব গয়না সরিয়ে ফেলল। রৌদ্রের প্রতিটি স্পর্শে তুরা যেন কোনো এক মায়াবী ঘোরে তলিয়ে যাচ্ছে। তুরার শরীর যেন নিজের অজান্তেই রৌদ্রের আরও কাছে যেতে চাইছে। এক সময় তুরা নিজেকে আর সামলাতে পারল না। সে দুই হাতে রৌদ্রকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে রৌদ্রের বুকে মুখ গুঁজে বলল।

“উফফ! আপনার স্পর্শে আমি সত্যি পাগল হয়ে যাচ্ছি!”

রৌদ্রের ঠোঁটের কোণে এক জয়ীর হাসি ফুটে উঠল। সে এক টানে তুরার পিঠের ব্লাউজের ফিতাটা আলগা করে দিল। সেই উন্মুক্ত পিঠের নরম চামড়ায় নিজের তপ্ত ঠোঁট ডুবিয়ে নাকের ডগা ঘষতে ঘষতে রৌদ্র ফিসফিস করল।

“তাই? কতটুকু পাগল হয়েছিস শুনি?”

রৌদ্রের সেই শীতল ঠোঁটের ছোঁয়ায় তুরা শিউরে উঠল। সে রৌদ্রকে আরও মরণপণে আঁকড়ে ধরে হাঁপাতে হাঁপাতে বলল।

“অ… অনেক! অনেক বেশি! প্লিজ রৌদ্র… আমাকে আজ আপনার করে নিন… আমি আর সহ্য করতে পারছি না!”

রৌদ্র যেন হাতে আকাশের চাঁদ পেল। মুহূর্তের মধ্যে সে তুরাকে এক ঝটকায় পাঁজাকোলা করে তুলে নিল। তুরার চোখের দিকে নেশাতুর দৃষ্টিতে তাকিয়ে বুক চিরে আসা স্বরে বলল।

“আমি কিন্তু এখন অনেক বেশি বেপরোয়া তুরা! নিজের ওপর নিয়ন্ত্রণ নেই আমার। আজ হয়তো তোকে অনেক ব্যথা দিয়ে ফেলব সামলাতে পারবি তো?”

তুরা রৌদ্রের বুকের লোমশ অংশে নিজের মুখটা আরও বেশি করে গুঁজে দিয়ে শার্টের কলার খামচে ধরল। কাঁপাকাঁপা গলায় শেষবারের মতো আত্মসমর্পণ করে বলল।

“পা পা পারবো।”

রৌদ্র আর এক সেকেন্ড দেরি করল না। তুরাকে বুকের সাথে লেপ্টে ধরে সে ধীর কদমে গোলাপের পাপড়ি ছিটানো সেই সাজানো বিছানার দিকে এগিয়ে এলো।রৌদ্র তুরাকে বিছানায় আলতো করে শুইয়ে দিয়ে নিজের শরীরের ভার তুরার ওপর ছেড়ে দিল। তার কপালে আলতো করে চুমু খেয়ে রৌদ্র আবেগঘন কণ্ঠে বলল।

“আই লাভ ইউ।”

তুরা সেই স্পর্শে চোখ বন্ধ করে শিহরিত কণ্ঠে উত্তর দিল।

“আই লাভ ইউ টু।”

রৌদ্র আর দেরি করল না। মুহূর্তের মধ্যে সে তুরার ঘাড়ে ও গলায় উন্মাদের মতো চুমু খেতে লাগল। তুরা হাঁপাতে হাঁপাতে রৌদ্রের পিঠে হাত রেখে সেই নিবিড় স্পর্শ অনুভব করতে লাগল। ধীরে ধীরে দুজনের শরীরের আবরণ সরে গেল। তারা একে অপরের সাথে মিলিত হয়ে এক গভীর সুখের জোয়ারে ভাসতে লাগল।রৌদ্র আজ এতটাই বেপরোয়া হয়ে উঠেছে যে, তার আদরের প্রাবল্যে তুরার চোখ থেকে অশ্রু গড়িয়ে কানের পাশ দিয়ে বালিশে পড়ছে। রৌদ্র বুঝতে পারছে যে তুরার কষ্ট হচ্ছে, কিন্তু সে এতটাই নিয়ন্ত্রণহীন যে থামতে পারছে না। সে তুরাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে ফিসফিস করে বলল।

“জান সোনা, যাস্ট আ মিনিট আমি একদম নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলছি। প্লিজ আমার পরানের বউটা, একটু সহ্য কর উম্মাহ্ আমার পাখিটা!”

রৌদ্র সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে এক আদিম উম্মত্ততায় তুরাকে নিজের আদরে বিদ্ধ করতে লাগল। তার প্রতিটি স্পর্শে ছিল এক তৃষ্ণার্ত শিকারির তীব্র অধিকারবোধ। তুরা যন্ত্রণায় আর চরম উত্তেজনার আতিশয্যে দিশেহারা হয়ে রৌদ্রের চওড়া পিঠে নিজের তীক্ষ্ণ নখ বসিয়ে দিল। নখের সেই গভীর আঁচড়ে রৌদ্রের পিঠ চিরে চুইয়ে রক্ত বেরিয়ে আসলেও, নেশায় বুঁদ হয়ে থাকা রৌদ্র সেই যন্ত্রণার লেশমাত্র অনুভব করতে পারছিল না। বরং পিঠের সেই জ্বলন তাকে আরও বেশি বেপরোয়া আর বুনো করে তুলছিল।

রৌদ্রের তপ্ত নিশ্বাস আর তুরার অস্ফুট গোঙানি মিলেমিশে ঘরের গুমোট বাতাসকে যেন আগুনের মতো উত্তপ্ত করে তুলল। রৌদ্র যেন আজ প্রতিজ্ঞা করেছে, তুরার অস্তিত্বের প্রতিটি কণা নিজের মাঝে বিলীন করে নেবে। এভাবেই সময়ের হিসাব ছাপিয়ে রৌদ্র হারিয়ে গেল তুরার গহীন অরণ্যে। দীর্ঘ প্রতীক্ষা আর মান অভিমানের দেয়াল ভেঙে দুটি বিরহী হৃদয় আর দুটি তৃষ্ণার্ত দেহ আজ পূর্ণতায় একে অপরের সাথে একাত্ম হয়ে মিশে গেল।


তিথি নিজেকে ছাড়ানোর জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করছে, কিন্তু আয়ানের বাহুবন্ধন যেন লোহার শিকল। আয়ান তিথিকে বুকের সাথে এমনভাবে পিষে ধরেছে যে, মনে হচ্ছে হাড়গোড় সব গুঁড়ো করে এখনই নিজের শরীরের ভেতরে ঢুকিয়ে নেবে। আয়ানের হাতের মুঠোয় তিথিকে এভাবে গলাকাটা পাখির মতো ছটফট করতে দেখে সে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠল। মুহূর্তের মধ্যে তিথিকে দেয়ালের সাথে সজোরে চেপে ধরে দাঁতে দাঁত চেপে বলল।

“সমস্যা কী তোর? এমন করছিস কেন? আমি তোর বিবাহিত স্বামী, কোনো পরপুরুষ নই যে আমার ছোঁয়ায় তোকে এভাবে ছটফট করতে হবে!”

তিথি বড় বড় শ্বাস নিতে নিতে কাঁদো কাঁদো গলায় আর্তনাদ করে উঠল।

“প্লিজ আয়ান ভাইয়া, আমাকে ছেড়ে দাও! আমি আমার রুমে যাব, আমার একটুও ভালো লাগছে না। তোমার নিশ্বাস আমার দম বন্ধ করে দিচ্ছে!”

আয়ান তিথির কোমরে দুই হাত দিয়ে এক হ্যাঁচকা টানে নিজের শরীরের সাথে লেপ্টে ধরল। আগুনের মতো জ্বলন্ত চোখে তাকিয়ে সে গর্জনের সুরে বলল।

“কেন? আমি কি তোকে মেরেছি যে তুই জান হাতে নিয়ে পালাতে চাইছিস?”

বলেই আয়ান আবারও তিথির ঘাড়ের নরম চামড়ায় আর গলায় উন্মাদের মতো মুখ ডুবিয়ে দিল। তার তপ্ত নিশ্বাস তিথির শরীরে জ্বালা ধরিয়ে দিচ্ছে। আয়ান অস্ফুট স্বরে নেশাতুর কণ্ঠে ফিসফিস করে বলল।

“তিথি প্লিজ, আজ আমাকে তোর মাঝে মিশে যেতে দে’বাধা দিস না। সেদিন তোকে যে আঘাতগুলো দিয়েছিলাম, আজ আদরের ছোঁয়ায় সেই ক্ষতগুলো ভুলিয়ে দিতে দে!”

আয়ানের এই বুনো আর আক্রমণাত্মক ভালোবাসায় তিথি ভেতরে ভেতরে কুঁকড়ে যাচ্ছে। তার সারা শরীর তখন ভয়ে আর ঘৃণায় রি রি করছে। হঠাৎ তিথি প্রচণ্ড শক্তিতে নেশায় চুর হয়ে থাকা আয়ানকে সজোরে এক ধাক্কা মারল। অপ্রস্তুত আয়ান টাল সামলাতে না পেরে কয়েক কদম দূরে ছিটকে গেল। তিথি দেখল এটাই সুযোগ। সে দ্রুত মেইন দরজার দিকে তাকাল, কিন্তু বুঝল দরজা খুলতে গেলে আয়ান তাকে নিমিষেই ধরে ফেলবে। ঠিক তখনই তার চোখ পড়ল ব্যালকনির দিকে। আর এক মুহূর্ত কালক্ষেপণ না করে তিথি উর্ধ্বশ্বাসে দৌড়ে ব্যালকনিতে ঢুকে পড়ল এবং দ্রুত কাঁচের পাল্লা টেনে ভেতর থেকে খিল আটকে দিল।

তিথির এমন দুঃসাহস দেখে আয়ান এক মুহূর্তের জন্য স্তব্ধ হয়ে গেল, কিন্তু পরক্ষণেই তার অবাক হওয়াটা চরম আক্রোশে রূপ নিল। সে ধীর পায়ে ব্যালকনির কাঁচের দরজার কাছে গিয়ে দাঁড়াল। তার রক্তবর্ণ চোখ দুটো কাঁচের ওপার থেকে তিথিকে যেন গিলে খেতে চাইছে। আয়ান দরজার এপাশ থেকে ভারী আর সপাটে গলায় বলল।

“তিথি, ভালোয় ভালোয় বলছি দরজাটা খুলে রুমে আয়। তোকে আজ আমার চাই-ই চাই! খামোখা জেদ করে আমাকে আর রাগিয়ে দিস না। আমি খেপে গেলে কিন্তু তোকে বাঁচানোর কেউ থাকবে না!”

তিথি ব্যালকনির রেলিংটা শক্ত করে ধরে বড় বড় শ্বাস নিচ্ছে। রাতের ঠান্ডা বাতাসেও তার শরীর ঘামছে। সে বুক চিতিয়ে চিৎকার করে বলল।

“মরে যাব, তবুও আমি এই দরজা খুলব না! তোমার মতো একটা অসভ্য মানুষের সাথে আমি কিছুতেই থাকব না।”

আয়ানের ঠোঁটের কোণে এক পৈশাচিক আর বাঁকা হাসি ফুটে উঠল। সে কাঁচের ওপর তর্জনী দিয়ে টোকা মেরে নিচু কিন্তু তীক্ষ্ণ স্বরে বলল।

“তাই বুঝি? তুই কি ভাবছিস এই ঠুনকো কাঁচের দরজা আমাকে আটকে রাখতে পারবে? আমি যদি একবার এটা ভেঙে ভেতরে আসি, তবে তোর শরীরের হাড়গুলোও আমি আস্ত রাখব না। তবে হাড়গুলো ভাঙব একদম অন্যভাবে একদম গভীরে গিয়ে। বুঝেছিস তো কোন উপায়ের কথা বলছি?”

আয়ানের এমন নোংরা আর নির্লজ্জ ইঙ্গিতপূর্ণ কথা শুনে তিথি লজ্জায় আর অপমানে কুঁকড়ে গেল। সে দুই হাতে নিজের কান চেপে ধরে গলার সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে চেঁচিয়ে বলল।

“আয়ান ভাইয়া! তুমি কিন্তু এখন সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছ! তোমার মতো মানুষের মুখে সবসময় টেপ লাগিয়ে রাখা উচিত। সারাক্ষণ অসভ্য জানোয়ারের মতো কথা বলতে তোমার একটুও বাধে না?”

ভেতর থেকে আয়ান এবার দাঁতে দাঁত চেপে চরম উন্মাদনায় ফেটে পড়ল। সে কাঁচের দরজায় নিজের হাত চেপে ধরে চাপা গর্জন দিয়ে বলল।

“আমি যথেষ্ট সভ্যই ছিলাম তিথি! আমাকে এই অসভ্য আর জানোয়ার হওয়ার পথে তুই ঠেলে দিয়েছিস। এখন যখন জানোয়ার বানিয়েই ফেলেছিস, তখন সারাজীবন আমার এই অসভ্যতামি তোকেই সহ্য করতে হবে। এক ইঞ্চি জায়গাও আজ তোকে ছাড়ব না আমি। দাঁড়া, আমি আসছি!”

বলেই আয়ান ঝড়ের গতিতে তার স্টাডি রুমের দিকে পা বাড়াল। তিথি ওপাশে দাঁড়িয়ে ভয়ে থরথর করে কাঁপতে লাগল। সে আয়ানকে চেনে সে জানে এই লোকটা যেকোনো উপায়ে ব্যালকনিতে পৌঁছে যাবেই। তিথি মরিয়া হয়ে চারদিকে তাকাল। হঠাৎ তার চোখ পড়ল ব্যালকনির এক কোণে কাপড় শুকানোর জন্য টানানো মোটা প্লাস্টিকের রশিটার দিকে।

মরো নয়তো বাঁচো এই মন্ত্র জপ করে তিথি দ্রুত রশিটা খুলে ফেলল। তারপর রেলিংয়ের সাথে একটা শক্ত গিট দিয়ে রশিটা নিচে ঝুলিয়ে দিল। নিজের শাড়ির আঁচলটা কোমরে শক্ত করে গুঁজে নিয়ে সে এক বুক সাহস নিয়ে রেলিং টপকে নিচে নামতে শুরু করল। হাত ছিলে যাচ্ছে, কিন্তু প্রাণের ভয়ে সে তখন পাথর।

এদিকে আয়ান তার স্টাডি রুম থেকে ডুপ্লিকেট চাবি খুঁজে নিয়ে মুহূর্তেই ব্যালকনির দরজা খুলে ফেলল। কিন্তু ভেতরে ঢুকেই তার পায়ের তলার মাটি সরে গেল ব্যালকনি একদম ফাঁকা! আয়ান পাগলের মতো চারপাশে তাকাল, তারপর তার চোখ পড়ল রেলিংয়ে বাঁধা সেই রশির দিকে। সে দ্রুত রেলিংয়ের কাছে গিয়ে ঝুঁকে দেখল, তিথি মাঝপথে ঝুলে ঝুলে নামছে।

তিথিকে এভাবে পালাতে দেখে আয়ানের মাথায় যেন শয়তান সওয়ার হলো। সে রাগে না ফেটে বরং এক অদ্ভুত বাঁকা হাসি হাসল। আয়ান নিচু হয়ে রশির গিটটা ঝটপট খুলে ফেলল। তিথি তখন নিচ দিয়ে নামার চেষ্টা করছিল, ঠিক তখনই রশিটা আলগা হয়ে যাওয়ায় সে বিকট এক চিৎকার দিয়ে নিচে পড়ে যেতে লাগল। কিন্তু আয়ান পুরোপুরি ছাড়ল না সে রশিটা টেনে তিথিকে শূন্যে ঝুলিয়ে দিল এবং রেলিংয়ের সাথে আবারও এমনভাবে বাঁধল যে তিথি এখন মাটির কয়েক ফুট ওপরে দোল খাচ্ছে।

তিথি এখন দিশেহারা। সে না পারছে নিচে নামতে,না পারছে ওপরে উঠতে। বাতাসের তোড়ে সে কোনো পেন্ডুলামের মতো এদিক-ওদিক দোল খাচ্ছে। সে বুঝতে পারছে, আয়ান যদি এখন রশিটা ছেড়ে দেয় অথবা রশিটা ছিঁড়ে যায়, তবে তার কোমরের হাড় আর আস্ত থাকবে না। সে কান্নায় ভেঙে পড়ে ওপরের দিকে তাকিয়ে চিৎকার করে বলল।

“আয়ান ভাইয়া! প্লিজ এমন করো না! আমি পড়ে যাব! দয়া করো!”

আয়ান রেলিংয়ে হাত রেখে ওপর থেকে তিথির এই অসহায়ত্ব উপভোগ করতে করতে ঠান্ডা গলায় বলল।

“কী বললি? পালাবি? আমার হাত থেকে রেহাই পাবি? এখন থাক ওভাবেই ঝুলে। দেখি তোর ওই রূপের গর্ব তোকে ওপরে টেনে তোলে কি না!”

তিথি এখন শূন্যে ঝুলে থাকা অবস্থায় ডুকরে কেঁদে উঠল। তার দুহাতে রশি ধরার শক্তি ফুরিয়ে আসছে। সে ভিজে গলায় আর্তনাদ করে বলল।

“আয়ান ভাইয়া,কেন এমন করছো তুমি? তুমি তো আমাকে কোনোদিন সহ্যই করতে পারো না, দুচোখে দেখতে পারো না তবে কেন আজ আমার শরীরটা এভাবে চাইছো?”

আয়ান রেলিংয়ে হেলান দিয়ে একদম স্বাভাবিক কিন্তু গম্ভীর কণ্ঠে জবাব দিল।

“কারণ তুই আমার বিবাহিত স্ত্রী তিথি। তোর ওপর আমার সবটুকু অধিকার আছে, তোর শরীরের প্রতিটি বিন্দুতে মিশে যাওয়ার অধিকারও আমার আছে।”

তিথি কান্নার তোড়ে হিক্কা তুলে বলল।

“কিন্তু তুমিই তো বলেছিলে আমাকে কোনোদিন বউ হিসেবে মানবে না! তাহলে আজ কেন এই কথা বলছো?”

আয়ানের চোখে এক অন্ধকার আকাঙ্ক্ষা খেলা করে গেল। সে নিচু হয়ে তিথির দিকে তাকিয়ে বাঁকা হেসে বলল।

“মানি না বলেছিলাম, কিন্তু কোনোদিন মানবো না এমন কথা তো বলিনি। এখন তোকে আমি মনে প্রাণে আমার অর্ধাঙ্গিনী হিসেবে মেনে নিয়েছি। তাই জেদ ছাড়, এখন ভালোয় ভালোয় উপরে উঠে আয়’দুজনে মিলে আজ রাতটা এমনভাবে কাটাব যেন ওই বাসর ঘরের খাটটাও আমাদের উন্মাদনা সইতে না পেরে ভেঙে যায়!”

তিথি এবার হাউমাউ করে কেঁদে দিল। আয়ানের এই নির্লজ্জ আর বেপরোয়া কথাগুলো তার কানে সীসার মতো বিঁধছে। আয়ান তিথির এই চরম অসহায়ত্ব আর কান্না দেখে মনে মনে এক পৈশাচিক আনন্দ পেল। সে রেলিংয়ের ওপর তালের সাথে হাত চাপড়ে চাপড়ে বলল।

“দিও না গো বাসর ঘরে তিথিকে আর জ্বালা,
অন্ধকারে বন্ধ ঘরে সইবে না এ পালা।
আমার আদর সইতে না পেরে পাখি যাবে মরিয়া,
বাসর খাট ভাঙব আজ তোকে বুকে ধরিয়া!”

এই লাইন গুলো বলেই আয়ান হঠাৎ রেলিংয়ের ওপর দিয়ে নিচের দিকে ঝুঁকে ঝুলে থাকা তিথিকে খুব আদুরে গলায় ডাক দিল।

“তিথি?।”

তিথি কাঁদতে কাঁদতে আর অপমানে জ্বলে উঠে রাগী চোখে ওপরের দিকে তাকিয়ে চিৎকার করে বলল।

“কী?

আয়ান এক মুহূর্ত সময় নিল, তারপর তিথির দিকে তাকিয়ে একটা বাঁকা চোখ টিপে বাতাসে একটা ‘ফ্লাইং কিস’ ছুড়ে দিয়ে নেশাতুর কণ্ঠে বলল।

“আই আদর ইউ।”

আয়ানের এমন নির্লজ্জ রসিকতা দেখে তিথির পিত্তি জ্বলে গেল। সে রাগে আর যন্ত্রণায় রশিটা আরও শক্ত করে খামচে ধরল। আয়ানের মুখে ঝামা ঘষে দেওয়ার জন্য সে গলার সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে ঘৃণাভরে পাল্টা জবাব দিল।

“আই পু*ক্কি ইউ!”

আয়ান এই কথা শুনে বিন্দুমাত্র রাগল না, বরং তার শয়তানি হাসিটা আরও চওড়া হলো। সে নেশার ঘোরে থাকা দৃষ্টিতে তিথির দিকে তাকিয়ে দাঁতে ঠোঁট চেপে বলল।

“আয় দেখাই?।”

তিথি অবাক আর আতঙ্কিত হয়ে আবারও জিজ্ঞেস করল।

“কী দেখাবে?”

আয়ান এবার একদম নিচু হয়ে রেলিং থেকে তিথির দিকে ঝুঁকে ফিসফিস করে বলল।

“আমার পু*ক্কি।”

আয়ানের কথা শুনে তিথির গা ঘিনঘিন করে উঠল। সে ওপরের দিকে না তাকিয়ে বরং নিচের দিকে মুখ করে রাগে থুথু ফেলল। তারপর দাঁতে দাঁত চেপে প্রচণ্ড ঘৃণাভরে কেঁচকেঁচ করে বলল।

“ওয়াক থু! তোমার কি একটুও লজ্জা করে না এসব বলতে?

আয়ান এবার রেলিংটা দুই হাতে লোহার মতো শক্ত করে চেপে ধরল। তিথির মুখে এমন কথা শুনে তার মাথার রগগুলো রাগে দপদপ করতে লাগল। সে ওপর থেকে নিচের দিকে ঝুঁকে তীক্ষ্ণ আর আক্রমণাত্মক গলায় গর্জে উঠল।

“ওরে শালীর বাচ্চা শালী রে! আগুনে কেরাসিন ঢেলে দিয়ে আবার কস তোমার লজ্জা করে না? তোরে খালি একবার বিছানায় পাইলা লই’দেখ তোর কি অবস্থা করি আমি।”

তিথি আর কোনো কথা বলল না, রাগে-ঘৃণায় ফুঁসতে ফুঁসতে রশি আঁকড়ে ঝুলে রইল। আয়ান ওপর থেকে ওর এই জেদ দেখে বুঝে নিল যে সহজে কাজ হবে না। তিথি যে রীতিমতো ঘাড় ত্যাড়ামি করছে, সেটা আয়ানের মাথায় চড়ে বসল। মুহূর্তের মধ্যে আয়ান নিজের গায়ের শার্টের বোতামগুলো এক এক করে ছিঁড়ে ফেলার মতো করে খুলে ফেলল এবং শার্টটা দূরে ছুড়ে মারল।

তিথি আড়চোখে ওপরের দিকে তাকিয়ে আয়ানের পেশিবহুল অনাবৃত বুক আর কাঁধ দেখে কুঁকড়ে গেল। ভয়ে আর অস্বস্তিতে তোতলাতে তোতলাতে সে জিজ্ঞেস করল।

“তু তু তুমি শার্ট খুললে কেন?।”

আয়ান তখন রেলিংয়ে বাঁধা রশির গিটটা খোলার উপক্রম করছে। সে বাঁকা হেসে অত্যন্ত ঠান্ডা আর নেশাতুর গলায় বলল।

“কী করব বল? নিজে যখন ওপরে আসবি না, তখন তো আমারই তোর কাছে যেতে হয়। তাই আমিই আসছি নিচে। আর শার্ট কেন খুললাম জানিস? কারণ আজ আমি তোকে ওই ঝুলে থাকা অবস্থাতেই আদর করব। রশি বেয়ে নিচে যাওয়ার পর তো আর শার্ট খোলার মতো হাত খালি থাকবে না, তাই আগেই নিজেকে তৈরি করে নিলাম।”

তিথি আতঙ্কে স্তব্ধ হয়ে গেল। আয়ান রশিটা নিজের এক হাতে পেঁচিয়ে ধরে আরও নিচু হয়ে ফিসফিস করে বলল।

“আজ পাঠিকারা জানবে আমি আয়ান খান তোকে মাঝ আকাশে ঝুলে ঝুলে আদর করেছি। আজ তোর কোনো বাহানা, কোনো দেয়াল আমাকে আটকাতে পারবে না। তৈরি হ তিথি, তোর যমদূত আসছে!”

কথাটা বলেই আয়ান কোনো পরিণতির কথা না ভেবে রেলিং টপকে এক লাফে রশিটা হাতে পেঁচিয়ে নিচে নামতে শুরু করল। তিথি ভয়ে আর চরম আতঙ্কে চোখ দুটো শক্ত করে বন্ধ করে দিল। আয়ান যে এতটা বেপরোয়া আর নির্লজ্জ হতে পারে, তা তিথি আজ হাড়েমজ্জায় টের পাচ্ছে। শূন্যে ঝুলে থাকা অবস্থায় আজ যে আয়ানের হাত থেকে নিস্তার পাওয়ার কোনো পথ নেই, সেটা বুঝতে পেরে তার শরীর অবশ হয়ে এল।

তিথির ভাবনার মাঝেই হুট করে নিজের কোমরে কারো বলিষ্ঠ আর শীতল হাতের স্পর্শ অনুভব করল। তিথি চমকে উঠে চোখ মেলে দেখল আয়ান এক হাতে রশি ধরে অন্য হাত

Share On:

TAGS: ,



CLICK HERE GO TO OUR HOME PAGE
Related Posts
 

0 Responses

Leave a Reply