Golpo romantic golpo বাবরি চুলওয়ালা

বাবরি চুল ওয়ালা পর্ব ৯


০৯
খড়ের গাদার আড়াল থেকে ধীরে ধীরে সরে এলাম। পা দুটো যেন আমার নয়। মাটিতে পড়ছে ঠিকই, কিন্তু কোনো শব্দ হচ্ছে না। মাথার ভেতর কেবল একটা কথাই ঘুরছে- আমার পক্ষে মিস মীরাকে বিয়ে করা সম্ভব নয়।

কেন সম্ভব নয়?
এই প্রশ্নটা বুকের ভেতর কাঁটার মতো বিঁধে আছে।

আমি ঘরে ঢুকেই শুয়ে পড়লাম। দরজা ভেজানো থাকল। চোখ বন্ধ করলেই বাবরিচুলের মুখটা ভেসে উঠছে। নদীর ধারে এত কোমল মুহুর্ত আমাদের। সেই মানুষটা হঠাৎ এমন অপরিচিত হয়ে গেলো কেন!

বুকের ভেতর জমে থাকা কান্নাটা আর ধরে রাখতে পারলাম না। বালিশে মুখ গুঁজে নিঃশব্দে কাঁদতে লাগলাম। কেউ যেন শুনতে না পায়, এই ভয়েই কান্নাটাও চেপে রাখার জোরালো চেষ্টা।

কিছুক্ষণ পর দরজায় টোকা, মীরা?
মায়ের গলা।

চোখ মুছে দরজা খুললাম। মা তাকিয়েই বুঝে ফেললো কিছু হয়েছে। কিন্তু কিছু জিজ্ঞেস করলো না। শুধু পাশে বসে আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিলো। এই স্পর্শটা পেয়েই বুকের ভেতর বাঁধ ভেঙে গেলো আমার।
‘মা… সবকিছু কেন এমন হয়?’
‘কি হয়েছে তা তো জানিনা।’
‘আমি নিজেও জানিনা আমার কি হয়েছে। কিন্তু খুব বেশী কষ্ট হচ্ছে মা।’
‘ছেলেটা তোকে কিছু বলেছে?’
‘আমার ওকে ভালো লাগে মা। অসম্ভব ভালো লাগে। আমি তোমাদের কারণে ওকে আপন ভাবতে শুরু করেছিলাম। ওর প্রতি আমি অনেক দূর্বল হয়ে পড়েছি।’
‘তাহলে সমস্যাটা কোথায়?’
‘ও আমাকে বিয়ে করবে না। নিষেধ করে দিয়েছে।’

মা চুপ করে রইলেন খানিকক্ষণ। তারপর শুধু একটা দীর্ঘশ্বাস শোনা গেলো। আমি মায়ের সঙ্গ পেয়ে কান্না করার খানিকটা সাহস পেলাম। সজোড়ে কেঁদে ফেললাম আমি।

মা আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বললেন, ‘তোর জন্য অনেক ভালো ভালো সম্বন্ধ আসে। কান্না করিস না। তোর জীবনে অনেক ভালো কেউ আসবে।’
‘ কিন্তু.. বাবরিচুল আমার জীবনে প্রথম পুরুষ মানুষ।’
‘হয়েছে। আর কাঁদিস না। সবাই শুনলে কি বলবে? এই বিষয় নিয়ে কাউকে কিছু জানানোর দরকার নেই। উঠে গোসল করে রেডি হ। গাড়ি চলে আসবে।’

কিভাবে যাবো আমি? এত ক্ষতবিক্ষত হৃদয়ে কোথাও যাওয়া যায় না। কিন্তু মা আমাকে টেনে উঠিয়ে দিলেন। জোরপূর্বক পাঠালেন গোসল সারতে। ওয়াশরুমে ঢুকে শাওয়ার ছেড়ে দিয়ে হাউমাউ করে কাঁদতে লাগলাম আমি। এই কান্নার শব্দ কারো কানে যাবে না। আমি জানিনা নিজেকে কেন এতটা তুচ্ছ মনে হচ্ছে! কেনই বা এতটা ছিন্নভিন্ন হয়ে যাচ্ছি আমি..

বৌভাতে যাওয়ার প্রস্তুতি চলছে পুরো বাড়িজুড়ে। চারপাশে উৎসবের ব্যস্ততা, অথচ আমার মনটা যেন বিষাদের চোরাবালিতে আটকে আছে। মা এসে কোনো কথা শোনার সুযোগ না দিয়েই জোর করে জামাটা পরিয়ে দিলেন। আমার চোখে মুখে আপত্তির ভাষা ছিল, কিন্তু মুখ খুলে কিছু বলার শক্তি পাইনি। যেতে হবে, না চাইলেও যেতে হবে। আজ আমি কোনো ঝামেলা করলে পুরো বাড়িতে সেই ঝামেলার আগুন ছড়িয়ে পড়বে।

এরপর সবাই মিলে গাড়িতে উঠলাম। গাড়ি চলতেই সমবয়সীরা হাসি-ঠাট্টা, গান, গল্পে মেতে উঠলো। তাদের আনন্দের শব্দে ভরে গেল গাড়ির ভেতরটা। ঠিক যেন পিকনিকে যাচ্ছি আমরা। কিন্তু আমার! জানালার পাশে বসে বিষাদের অথই সাগরে ডুবে আছি আমি।

হৈ হুল্লোড়ের মাঝখানেও আমি একা। ধু ধু মরুভূমিতে হারিয়ে যাওয়া এক শিশুর মতো ডুকরে মরছি। যেন এই যাত্রাটা শুধু গাড়ির নয়, আমার মনেরও। যেখানে আনন্দ থেকে অনেক দূরে, অচেনা এক শূন্যতার দিকে এগিয়ে চলেছি..

গাড়ি থেকে নামতেই আমাদেরকে বরণ করে নেয়া হলো। সবাই উৎসবমুখর পরিবেশে একে অপরের সঙ্গে কুশল বিনিময় করছে। আমাদেরকে বসতে দেয়া হলো ড্রয়িংরুমে। টেবিলের ওপর কয়েক গ্লাস শরবত। সবাই হামলে পড়লো সেগুলোর ওপর। আমার কোনো নড়াচড়া নেই।

এক পর্যায়ে মেজো চাচী এসে জিজ্ঞেস করলেন, ‘মা মীরা। কি হয়েছে তোমার মা?’
‘কিছু না চাচী।’
‘আমাকে বলবে না?’

আমি স্তব্ধ হয়ে রইলাম। আমার ক্ষতটা কাউকে দেখাতে ইচ্ছে করলো না আমার। জোরপূর্বক চেষ্টা করলাম মুখে হাসি টেনে আনার। ভান করলাম আমিও খুব উল্লাসিত।

এই অভিনয় চলতে লাগলো কতক্ষণ। ছেলেমেয়েরা একসঙ্গে বের হয়েছি। ঘুরছি আশেপাশে। হঠাৎ বাবরিওয়ালার সঙ্গে দেখা। আমি তাকে না দেখার ভান করে চলে এলাম অন্যদিকে। অথচ এইটুকু প্রচেষ্টায় আমার ভেতরটা যেন একেবারে ভেঙে খানখান হয়ে গেলো!

সারাটা সময় আমি হাসিখুশি থাকার অভিনয়টাই করে গেলাম। কারও সঙ্গে কথা বলেছি, কারও প্রশ্নের উত্তর দিয়েছি, ঠোঁটে লেগে থাকা হাসিটা একবারও ছুঁড়ে ফেলিনি।

বৌভাত শেষ হলে আমরা মাইশাকে নিয়ে বাড়ির দিকে রওনা দিলাম। পথজুড়ে জানালার বাইরে তাকিয়ে ছিলাম, যেন বাইরের অন্ধকারটাই আমার ভেতরের অবস্থা জানে শুধু!

বাড়িতে ফিরে সাজ খুলে রাখতেই শরীরটা বেশ হালকা লাগলো। বিছানায় গা এলিয়ে দিতেই আর নিজেকে ধরে রাখতে পারলাম না। বালিশে মুখ গুঁজে কান্না চেপে ধরলাম।

ঘরজুড়ে মানুষের উপস্থিতি। কেউ ইতিমধ্যেই ঘুমিয়ে পড়েছে, কেউ কেউ আলো নিভিয়ে শোবার আয়োজন করছে। হালকা কথাবার্তা, পায়ের শব্দ, নিঃশ্বাসের আওয়াজ, সবই চলছে স্বাভাবিকভাবে। আর আমি বিছানার এক কোণে শুয়ে শুধু কাঁদছি। চোখের পানি বালিশে ভিজে যাচ্ছে, বুকের ভেতরের ভার কোথাও নামছে না। এত মানুষের ভিড়ের মাঝেই আমি অসম্ভব একা হয়ে পড়লাম।

এভাবে বেশিক্ষণ থাকতে পারলাম না আমি। নিঃশব্দে উঠে বাড়ির বাইরে বেরিয়ে এলাম। উঠান থেকে খানিকটা দূরে কয়েকটা আমগাছ পাশাপাশি। সেখানে এসে গাছে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে রইলাম। জায়গাটা অন্ধকার। এখানে দাঁড়িয়ে কাঁদলে কেউ টের পাবে না।

হঠাৎ আমার ঠিক কানের কাছে একটা আওয়াজ। চমকে ঘাড় ঘোরাতেই দেখি বাবরিচুল! সে এত রাতে এখানে কেন?

আমি চোখ মুছতে ভুলে গেছি। সে অবাক চোখে তাকিয়ে বললো, ‘মিস মীরা!’

আমি চলে আসতে উদ্যত হই। সে ডাকে, ‘দাঁড়ান। কি হয়েছে আপনার? আপনি এখানে কেন?’

আমি চুপ করে রইলাম। সে বললো, ‘বলুন? কে আপনাকে কষ্ট দিলো?’

আমি অদ্ভুত চোখে তাকালাম তার দিকে। চোখাচোখি হলো। বুকের ভেতর কিছু একটা ধক করে উঠলো আমার। অস্থিরভাবে এদিক সেদিক তাকাতে লাগলাম। মানুষ ব্যথার কারণ হয়েও কেন সেটা নিজে টের পায় না!

সে আর‍ও কাছে এসে জানতে চায়, ‘প্লিজ? বলুন? কেউ কিছু বলেছে আপনাকে?’
‘আপনি যান এখান থেকে। কেউ দেখলে মাইন্ড করবে।’
‘তাতে আপনার কিছু যায় আসে মীরা?’

আমি শান্ত। বাবরিচুল ভ্রু কুঁচকে ফেললো, ‘মীরা। কিছু একটা তো হয়েছে। আমাকে বলা যাবে?’
‘বিরক্ত করছেন কেন আমাকে? আপনার জন্য কি কেউ কাঁদতেও পারবে না নাকি? আর কাঁদলে কাঁদছে। আপনাকে কেন বলতে হবে?’

বাবরিচুল এবার কয়েক পা পিছিয়ে গেলো। বললো, ‘আপনার গা ঢাকা ওড়না দিয়ে। বোঝা যাচ্ছিলো না এটা কে। এত রাতে এই অন্ধকারে এখানে কেউ থাকার কথা নয়। এজন্য আমি কাছ থেকে দেখতে এসেছিলাম। আপনি কাঁদছেন তাই মনে হলো কথা বলা দরকার।’
‘কেন মনে হলো কথা বলা দরকার?’
‘মিস মীরা, আপনাকে আমি অসম্ভব স্নেহ করি।’
‘স্নেহ করেন! কেন? কে চেয়েছে আপনার স্নেহ? আমি কি কখনো বলেছি আমাকে আপনি স্নেহ করুন? আর স্নেহ শব্দটাই বা কেন আসছে? আমি কি দুই তিন বছর বয়সী বাচ্চা?’

বাবরিওয়ালা চুপ করে রইলো। তাকালো আমার চোখের দিকে। এই দৃষ্টি আমি সহ্য করতে পারিনা। না পারি গ্রহণ করতে, না পারি উপেক্ষা করতে। জ্বলেপুড়ে ছারখার হয়ে যাই।

আর কোনো কথা না বলে আমি দ্রুতপদে সেখান থেকে চলে এলাম। অদ্ভুতভাবে খেয়াল করলাম, আমার কান্না কমে গেছে। আর কিছুক্ষণ ওর ওপর রাগ ঝাড়তে পারলে হয়তো কান্নাটা পুরোপুরি কন্ট্রোলে চলে আসতো।

পরদিন সকালে উঠে শুনি বাবরিচুল শহরে চলে গেছে। তার কারণে কষ্ট পাচ্ছি ঠিকই। তবুও তার প্রস্থান আমার বুকের ভেতর সীমাহীন শুন্যতা এনে দিলো।

মা বলেছে আমরা আর একদিন পরে বাসায় ফিরবো। ধীরেধীরে সবকিছু গুছিয়ে নিচ্ছি। দাদুবাড়ির প্রতি একটা মায়া জন্মেছে আমার। বিয়ের অনুষ্ঠান, ধুমধাম, সবার সঙ্গে কাটানো সময় আর বাবরিচুলের আশেপাশে থাকা! সবমিলিয়ে আমার জীবনের সবচেয়ে স্মরণীয় মুহুর্তগুলি এই বাড়িতে তৈরি হয়ে থাকলো। বাবরিচুল আমার জীবনে থাকবে না। কিন্তু এই বাড়িতে যতবার আসবো, তার স্মৃতি গুলো আমাকে এভাবেই পোড়াবে।

ছোটচাচাকে আবারও গিয়ে ধরলাম আমি। আমি তার সঙ্গে ইউরোপে যেতে চাই। যেকোনো কিছুর মূল্যে হোক, আমাকে যেন উনি তার কাছে নিয়ে যান। চাচা আমাকে বললেন, নিয়ে যাবো। তোর বাবার সঙ্গে কথা হচ্ছে। নিয়ে যাবো মা তোকে।

চাচার এই আশ্বস্তটুকু আমার স্বস্তির কারণ। বাবরিচুল ওয়ালার থেকে অনেক দূরে চলে যাবো আমি। আর কোনো দিন সে আমার দেখা পাবেনা, কথা শুনবে না, তার আশেপাশে আমার ছায়াও পড়বে না। বেশ ভালো হবে।

কয়েকদিন পর নিজের বাড়িতে এসে আমার প্রথমেই সেদিনের স্মৃতি মনে পড়ে গেলো। বাবরিচুল আর আমি, দুজনে ক্ষণিকের জন্য এখানে ছিলাম। আমি তাকে ভেবেছিলাম সিনেমার নায়ক, তার রুমে ফেলে আসা মোবাইল! উফফ, এসব স্মৃতি থেকে আমি মুক্তি চাই। আমি আমার আগের জীবনে ফিরে যেতে চাই।

কিন্তু যা চাই, তা কি কখনো হয়! আমি ধীরেধীরে একটা মূর্তিতে পরিণত হলাম মনে হচ্ছে। সারাদিন রুমে থাকি, ভার্সিটিতে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছি। খাওয়াদাওয়ার জন্যও বের হই না। মা ডাকতে ডাকতে হয়রান হয়ে রুমে এসে ভাত দিয়ে যান। কয়েকদিনের অনিয়মে চেহারাটা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেলো।

আমি জানিনা কেনই বা এমন হয়ে গেলাম! কারো সঙ্গে আমার কথা বলতে ইচ্ছে করে না। আমি জানিনা বাবরিচুল আমার বাসার নিচতলায় এখনো থাকে কী না! তার ব্যাপারে আমার কারো সঙ্গে কথা বলার একটুও রুচি হয়নি। মাঝেমাঝে গেট খোলার শব্দে চমকে উঠে ভাবি, এই বুঝি সে আসলো! কিন্তু কখনো শুনিনা তার গলার স্বর। কখনো যাইনা তার সম্মুখে।

স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে হবে আমার। অনেকদিন পর ভার্সিটিতে এলাম। ক্লাসে মন বসলো না। তবে চেষ্টা করলাম মনটাকে শান্ত রাখার। বান্ধবীরা অবাক হয়ে জানতে চাইলো, কি হয়েছে তোর? তুই এমন শান্ত হয়ে গেছিস কেন?
আমি শুকনো হেসে উত্তর দেই, কিছু হয়নি। কি আবার হবে?

একদিন হঠাৎ মা আমাকে বললেন, ‘তোর মিনু খালা তোর জন্য বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছে। আমি কি তোর বাবাকে বলবো?’

আমি বিরক্ত হয়ে বললাম, ‘কেন?’
‘তোর এভাবে তিলে তিলে শেষ হয়ে যাওয়া আমি দেখতে পারছি না আর। তুই স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আয়।’

আমি একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললাম, ‘স্বাভাবিক জীবনে ফেরার জন্য বিয়ে করতে হবে নাকি? আমি ক্লাসে যাওয়া শুরু করেছি। আস্তে আস্তে ঠিক হয়ে যাবো।’

মা বললেন, ‘বিয়ের আগে ওরকম দু একটা ভালোলাগা সবার থাকে। এসব কিছু না। বিয়ে হয়ে গেলে সব ঠিক হয়ে যাবে। বিয়ে না হলে তুই এই কষ্ট থেকে বের হতে পারবি না।’
‘আব্বু কি জানে বাবরিচুল যে “না” করে দিয়েছে?’
‘হুম।’
‘কিছু বলে না তোমাকে?’
‘প্রতিদিন জিজ্ঞেস করে তোর কথা। আমি বলি মেয়ে ভালো আছে। তারপর একটা নিশ্বাস ফেলে। তোর বাবা মন খারাপ করেছে অনেক।’
‘ছেলেটা কি বাসায় থাকে না এখন?’
‘না।’
‘না?’
‘অফিসে থাকে। তোর বাবাকে নাকি বলেছে বাসায় থাকার চাইতে অফিসে থাকা ভালো। সামনে নতুন প্রজেক্ট নিয়ে কাজ করতে হবে। কাজ শুরু হলে আলাদা বাসা নিবে।’
‘ও।’

মা চলে যায়। আমি স্তব্ধ হয়ে বসে থাকি। আমার হঠাৎ করেই আবার ভীষণ কান্না এসে যায়। সে বাসায় থাকে না! আমার দুনিয়াটা আরো শুন্য হয়ে যায় হঠাৎ। সে সত্যিই আমার ছিলো না কখনো!…

‘মা, শুনো..’
‘বল?’
‘উনি কি জানিয়েছে কেন বিয়ে করতে পারবে না আমাকে? আমার সমস্যা কোথায়?’
‘সমস্যা তোর না, ওর নিজের। ওর জীবনে অনেক স্বপ্ন আছে। সেগুলো পূরণ করার আগে ওর পক্ষে বিয়ে করা সম্ভব না। আর তাছাড়া, আমরা যেরকম ভেবেছিলাম, এই বাড়িতে রাখবো তোকে। কিন্তু ওর পক্ষে সেটা সম্ভব না। ও এই বাড়িতে জামাই হয়ে থাকতে পারবে না।’

মা চলে যান। আমার ভেতর খানিকটা আশার আলো যেন আবার দপ করে জ্বলে উঠলো। এই সমস্যার সমাধান তো করা সম্ভব। সে তার স্বপ্ন পূরণ করা অবধি আমি অপেক্ষা করতে পারবো। আর এই বাড়িতে নাহয় থাকা নাই হলো। মিনু খালার প্রস্তাবে রাজি হলেও তো এই বাড়ি ছেড়ে যেতে হবে। এসব তো আমাদের মাঝখানে বাঁধা হতে পারে না। শুধু এটাই যদি কারণ হয়, আমার অবশ্যই ওর পাশে থাকা উচিৎ।

সবকিছুর আগে জানতে হবে, এটাই কি একমাত্র কারণ? নাকি আরও কোনো বিশেষ কারণ আছে? তার জীবনে কি অন্যকেউ আছে! কিংবা আমাকেই তার পছন্দ নয়?

চলবে.. পরবর্তী পর্ব আগামীকাল সন্ধ্যা ৬/৭টায়

Share On:

TAGS: ,



CLICK HERE GO TO OUR HOME PAGE
Related Posts
 

0 Responses

Leave a Reply