উড়ালমেঘেরভেলায়
লেখনীতে— #ঝিলিক_মল্লিক
পর্ব_১৩
[কপি কঠোরভাবে নিষিদ্ধ।]
আভিয়ান রানিয়ার ঠোঁটে আঙুল চেপে ধরে রেখেই বললো, “চুপ। জাস্ট একটা কথাও বলবে না। কোনো এক্সকিউজ শুনতে চাচ্ছি না আমি। ফোন কেন ধরেছো আমার? সোজাসাপ্টা জবাব দেবে৷ ত্যাড়াব্যাকা কোনো জবাব বা এক্সকিউজ শুনবো না আমি।”
“আসলে আভিয়ান—”
“আমতা আমতা করছো কেন? যা বলবে, স্ট্রেইটলি বলো। এসব আমতা আমতা কথাবার্তা পছন্দ করি না।”
রানিয়া তো এমনিতেই ভয়ে আছে। তারপরও আভিয়ানের এমন কড়া কথাবার্তায় ওর ভেতরকার ভয় ক্রমশই বাড়তে লাগলো। ধরা পড়ে গেলে কি হবে জানে না ও। অলরেডি তো ধরা পড়েই গেছে। এখন শুধু ওর আভিয়ানের ফোন ধরার মুখ্য উদ্দেশ্যটা খোলাসা হওয়া বাকি। রানিয়ার মাথায় হঠাৎ একটা বুদ্ধি আসলো৷ ও স্বাভাবিক হয়ে আভিয়ানকে বললো, “এক্সুয়ালি আপনার ফোনটা হাত থেকে পড়ে গিয়েছিল গাড়িতে। যদি ঝাঁকুনি খেয়ে ভেঙে যেতো? এজন্য আমি তুলে আমার হাতে রেখেছিলাম।”
কথাটা বলে মুচকি হাসার চেষ্টা করে রানিয়া। আভিয়ান ওর দিকে যেই ভাবে তাকিয়ে আছে, তাতে মনে হচ্ছে না, ওর এসব কথাবার্তা বিশ্বাস করেছে। রানিয়ার ধারণা সঠিক প্রমাণ করে দিয়ে আভিয়ান এবার ফোনটা উঠিয়ে ওর মুখের সামনে ধরে কঠিন সুরে প্রশ্ন করলো, “তাহলে ফোনের লক খোলা কেন হু? লক কি ভূতে এসে খুলেছে?”
“উহুঁ না মানে লক তো খোলাই ছিল।”
“চুপ! মিথ্যে বলবে না৷ আমার স্পষ্ট মনে আছে, ঘুমানোর আগে ফোন লক করেই ঘুমিয়েছিলাম আমি।তাহলে কি ভূতে এসে লক খুলেছে?”
রানিয়া বুঝলো আর বাঁচার কোনো উপায় নেই। সবদিক দিয়ে আটকা পড়ে গেছে। আপাতত মুখ বন্ধ রাখাই শ্রেয় মনে করলো। আভিয়ানের কথার বিপরীতে কোনো জবাব দিলো না৷ আভিয়ান একদৃষ্টিতে ওর দিকে তাকিয়ে রইলো। ওই চাহনিতে রানিয়া আরো বেশি ঘাবড়ালো, অস্বস্তিতে পরলো। ও কিছুটা দূরে সরে মাথা নত করে বসে রইলো। বিপরীত দিক হতে কোনো জবাব না পেয়ে আভিয়ান এবার রানিয়ার ঊরু চেপে ধরে টেনে নিজের কাছে এগিয়ে নিয়ে আসলো ওকে। তারপর ওর থুতনি ধরে নতমুখ তুলে ওর চোখে চোখ রেখে বললো, “তোমাকে খুব ভালোভাবে চিনে গিয়েছি আমি৷ তুমি কি করতে পারো, না করতে পারো; প্রতিটা পদক্ষেপ আগে থেকেই বুঝে যাই। সুতরাং ভুলভাল কিছু করার চেষ্টা কোরো না, গট ইট?”
রানিয়া সামনে-পেছনে ঘনঘন মাথা নেড়ে হ্যাঁ বোঝালো। আভিয়ান ওর থুতনি আর ঊরু ছেড়ে দিয়ে সরে বসে গম্ভীর স্বরে বললো, “লিসেন রানিয়া, আমার ফোনটা কোনো আমজনতার ফোন না। আমি একটা প্রফেশনে আছি এবং আমার মতো একজন অফিসারের ফোনে নিশ্চয়ই গেইম, অ্যাপসসহ বিভিন্ন হাবিজাবি জিনিস দিয়ে ভর্তি থাকবে না, রাইট? এই ফোনের মধ্যে অনেক জরুরি ডেটাবেস, ডকুমেন্টসও থাকে। যেগুলো শুধুমাত্র আমি ব্যতীত আর কারো দেখা অনুচিত। আমার ফোন অন্য কেউ ধরার সাহসও করে না কখনো। সেখানে তুমি সেই দুঃসাহস দেখিয়েছো! ফারদার আমার ফোন ধরার চেষ্টা করবে না। এটাই ফার্স্ট এন্ড লাস্ট ওয়ার্নিং। গট ইট?”
রানিয়ার ভেতরে ভেতরে আভিয়ানের এসব হুমকি-ধমকিতে রাগ হলো খুব। এসব কথার বিপরীতে প্রতিবাদ করতে ইচ্ছা করলো। কিন্তু গাড়িতে আরো মানুষ আছে বলে আর তর্কে জড়ালো না। মুখ ভেংচি কাটলো একটা।
.
.
আভিয়ানদের গাড়িটা হাইওয়ের পার্শ্ববর্তী একটা জায়গায় এসে থেমেছে। গাড়ি থেকে রানিয়া বাদে সবাই নেমে গেছে। ওরা একটা টং-এ বসে চা-নাস্তা করছে। কমবেশি সবারই খিদে পেয়েছে অনেক। এমনিতেও খুব সকালে উঠলে খিদে পায় বেশি। ওরা সকালে নাস্তা করে বেরোনোর পরেও খিদে লেগে গেছে এজন্য।
রানিয়ার শরীর ভালো ঠেকছিল না বলেই ভয়ে বের হয়নি ও। ওর মনে হচ্ছে, বের হলেই ও মাথা ঘুরে পড়ে যাবে বোধহয়। এই ভয়েই গাড়ির সিট থেকে অবধি উঠছে না ও। চায় না, ওর ওপরে সবার দৃষ্টি পড়ুক বা ওকে নিয়ে সিনক্রিয়েট হোক। এটা হওয়া মানেই ওর আর ওর বাচ্চার জন্য বিপদ। কিন্তু সেই ঝামেলা হয়েই গেল। ওর বারণ স্বত্ত্বেও ননদেরা এসে ওকে ডাকতে লাগলো। আলিশা আর মাইশা ওকে বেশ জোরাজুরি করলো। হাইওয়ের পাশের এই এরিয়াটা নাকি অনেক বেশি সুন্দর। ওরা এখানে গাড়িটা রেখে একটু আশেপাশে ঘুরে দেখবে, ছবি-টবি তুলবে৷ রানিয়া বের হতে চাইলো না। কোনো অজুহাত দিলেও এখন কাজ হবে না বোধহয়। মনে-প্রাণে দোয়া করতে লাগলো, যেন কোনোভাবে এখান থেকে বের হওয়া আঁটকে যায়। ঠিক তখনই আভিয়ানের দেখা পাওয়া গেল। আভিয়ান গাড়ির দিকেই আসছিল। আলিশাদের গাড়ির দরজার সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে কৌতূহলে জিজ্ঞাসা করলো, “কী হয়েছে? তোরা সবকটা এখানে দাঁড়িয়ে আছিস কেন? কিসব ছবি-টবি তুলবি নাকি? দ্রুত কর। আমাদের আবার আধঘন্টার মধ্যে রওয়ানা দিতে হবে।”
মাইশা ঠোঁট উল্টে ওর ভাইয়াকে বললো, “দেখো না ভাইয়া, ভাবীকে কত করে অনুরোধ করছি, যেন আমাদের সাথে ঘুরতে যায়। কিন্তু ভাবী নড়ছেই না।”
আভিয়ান ওদের কথা শুনে গাড়ির জানালা দিয়ে উঁকি দিলো ভেতরে। দেখলো, রানিয়া জড়োসড়ো হয়ে বসে আছে। মুখটা একদম শুকিয়ে গেছে। অসহায় মুখখানা দেখে আভিয়ানের কেমন জানি বোধ হলো। ও আলিশা আর মাইশাকে সরিয়ে দিয়ে বললো, “ওর শরীরটা ভালো নেই। তোরা বরং ঘুরে আয়। ও পরে যাবে।”
বড়ভাইয়ের কোনো কথার ওপরে কথা বলতে পারে না মাইশারা। এখনোও এই কথার বিপরীতে বিরোধ করতে পারলো না। চুপচাপ আদেশ মেনে চলে গেল সেখান থেকে। ওরা দৃষ্টি-সীমানার বাইরে যেতেই আভিয়ান এসে গাড়ির ভেতরে রানিয়ার পাশে বসলো। এক নজর রানিয়াকে দেখে ব্যাকসিটে পানির বোতল রাখা ছিল, সেটা বের করে নিয়ে আসলো। বোতলের মুখ খুলে রানিয়ার সামনে বোতলটা ধরলো। রানিয়া মুখ ঘুরিয়ে ওর দিকে তাকাতেই আভিয়ান গম্ভীর স্বরে বললো, “পানি খেয়ে নাও। মুখের দিকে তাকানো যাচ্ছে না।”
রানিয়ার সত্যিই পানি পিপাসা পেয়েছিল। কিন্তু কাউকে যে পানি খাওয়ানোর কথা বলবে, এটুকুও ইচ্ছা করছিল না ওর। তাই চুপচাপ বসে ছিল। কিন্তু আভিয়ান বুঝলো কীভাবে? ভারী আশ্চর্য তো! রানিয়া চুপচাপ পানির বোতলটা নিয়ে ঢকঢক করে এক নিঃশ্বাসে সবটুকু পানি খেয়ে নিলো। অতঃপর বোতলটা ফেরত দিলো। আভিয়ান বোতলের মুখ আটকাতে আটকাতে গম্ভীর স্বরে বললো, “সিলেট পৌঁছে ফার্স্টেে তোমাকে হসপিটালে নিয়ে যাবো। তারপর সবকিছু।”
কথাটা শোনামাত্র রানিয়া চকিতে ঘাড় ঘুরালো। আভিয়ানকে নির্বাক করে দিয়ে অনবরত ঘাড়-মাথা নেড়ে বলতে লাগলো, “না না, আমি হসপিটালে যাবো না। কোনোভাবেই না!”
আভিয়ান ভ্রু কুঁচকে ফেললো। এই মেয়ে তো দেখি সহ্যের সীমা অতিক্রম করে যাচ্ছে! নেহাতই অসুস্থ বলে ওর সাথে নরম সুরে কথা বলতে হচ্ছে আভিয়ানের। কিন্তু এই মেয়ে তো ওকে ধৈর্য ধরে থাকতে দেবে না দেখা যাচ্ছে!
আভিয়ান রানিয়ার কোমর জড়িয়ে ধরে ওকে কাছে টেনে আনলো। তারপর ওর থুঁতনি আলতোভাবে চেপে ধরে দাঁতে দাঁত চেপে প্রশ্ন করলো, “সমস্যা কী তোমার?”
“আমার আবার কী সমস্যা হবে?”
রানিয়া ভ্রু কুঁচকে আভিয়ানের প্রশ্নের বিপরীতে এমনভাবে পাল্টা প্রশ্ন করলো, যেন ও বুঝতেই পারছে না, আভিয়ান কি বলতে বা বুঝাতে চাইছে। আভিয়ান তেতে উঠে বললো, “বুঝো না কী বলি? বোকা সাজো?”
“বুঝবো না কেন? তবে আপনি কোন সমস্যার কথা জিজ্ঞাসা করছেন, সেটা উল্লেখ না করলে জবাব দেবো কীভাবে?”
“এতো ভেঙে বলতে হবে কেন? স্ত্রী হয়েছো কেন? স্বামীর চোখের দিকে তাকালেই তো বুঝে যাওয়ার কথা, সে কি বলতে চায়।”
“নামকাওয়াস্তে স্বামী হন আমার।”
“এই নামকাওয়াস্তে স্বামীর সাথেই এখনো নাম জড়িয়ে আছে তোমার। এবার বলো, তোমার কী হয়েছে? এতো কাহিনী করছো কেন? অ্যাটেনশন সিক করতে চাচ্ছো?”
“আমার অ্যাটেনশন সিক করার প্রয়োজন পড়ে না। লোকে এমনিই আমাকে অ্যাটেনশন দেয়৷ এই যেমন ধরুন, জাহিন—”
কথাটা সম্পূর্ণ করতে পারলো না রানিয়া। তার আগেই আভিয়ান ওর মুখ চেপে ধরলো শক্ত হাতে। রানিয়া ব্যাথা পেল। নিজেকে ছাড়ানোর জন্য ছটফট করতে লাগলো। ক্রুদ্ধ চোখে তাকিয়ে রইলো আভিয়ানের দিকে। আভিয়ানের চোখে মারাত্মক ক্ষিপ্রতা। ও দাঁত পিষে বললো, “ওর নাম আমার সামনে নেবে না।”
রানিয়া চেপে ধরে রাখা মুখ বহুকষ্টে চালিয়ে বলে,
“কেন নেবো না?”
“সহ্য হয় না আমার।”
“কেন সহ্য হয় না?”
“তোমাকে এতো কৈফিয়ত দেওয়ার প্রয়োজন বোধ করছি না। জাস্ট বলেছি, নেবে না মানে নেবে না।”
“তাহলে তো একশোবার নেবো।”
মারাত্মক জেদ ধরে কথাটা বলেই৷ নিজের মুখে চেপে ধরে রাখা আভিয়ানের হাতে কামড় বসালো রানিয়া৷ আকস্মিক হামলায় হাত সরিয়ে নিলো আভিয়ান। ব্যাথার সাথে বিরক্তিকর স্বরে “উফ!” বলে উঠলো। রানিয়া এবার যেন কোমর বেঁধে লাগলো। কোমরে হাত দিয়ে জেদ ধরে বলতে লাগলো, “ওর নাম যেহেতু আপনার সহ্য হয় না, সেহেতু আপনাকে জ্বালাতন করার জন্য হলেও আমি একশোবার বলবো। জাহিন জাহিন জাহিন জাহিন জাহিন—”
পাঁচবারের বেশি বলতে পারলো না রানিয়া। হঠাৎ ঘটে যাওয়া কান্ডে স্তব্ধ হলো। শরীর আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে আসতে লাগলো, নির্জীব হয়ে পরতে চাইলো। রানিয়ার শ্বাস-প্রশ্বাস দ্রুত চলছে। ওর পেটের যে ছোট্ট প্রাণটি সবে জন্ম নিতে শুরু করেছো, খুবই ক্ষীণভাবে ধুকপুক করে হৃৎস্পন্দন নিচ্ছে, সেও বোধহয় তার মায়ের ঠোঁটে বাবার দেওয়া চুমু উপলব্ধি করতে পারলো বৈকি। রানিয়া সঠিক জানে না। তবে ওর ভ্রান্ত ধারণা হলো এমন। রানিয়া আভিয়ানকে ছাড়ানোর চেষ্টা করলো। এখন যদি এখানে কেউ চলে আসে! আভিয়ানের তো কিছুই হবে না৷ কারণ, তার লজ্জা-শরম বলতে বিন্দুমাত্র কোনো অনুভূতি নেই। দিব্যি চলাফেরা করতে পারবে। কিন্তু রানিয়া তো লজ্জায় কারো সামনে মুখ অবধি দেখাত পারবে না। ও আভিয়ানের বুকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেওয়ার বৃথা চেষ্টা চালালো। ওই পেশিবহুল শরীর সরানো দায়। রানিয়া বহুকষ্টে ঠোঁটের ফাঁকফোকড় দিয়ে কোনোমতে বললো— “আভিয়ান সরুন, প্লিজ। এসব কিন্তু ঠিক হচ্ছে না।”
আভিয়ান ওর ওষ্ঠদ্বয় হতে নিজের ঠোঁট সরালো না ওর কথায়। বরং আরো গাঢ়ভাবে চেপে ধরে বললো, “কেন? নিজে কিছু করলে সব ঠিক। আর আমি করলেই বেঠিক, তাই-না? বহুবার বলেছি, আমাকে জেদ দেখানোর চেষ্টা করবে না। তোমার জেদ কিভাবে কমাতে হয়, তা আমার ভালোভাবেই জানা আছে।”
আভিয়ান রানিয়ার কোমর পেঁচিয়ে নিলো। ওকে আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরে ঠোঁট আঁকড়ে ধরলো। রানিয়া ক্রমশই দুর্বল হয়ে যাচ্ছে। না, শারীরিক দিক দিয়ে নয়; বরং মনের দিক দিয়ে। আভিয়ানের এভাবে কাছে আসা, মানুষটার স্পর্শ, শরীরের ওই ঘ্রাণ— সবকিছু রীতিমতো ওকে দুর্বল করে দিচ্ছে আবারও। ঠিক এভাবেই সেদিন রাতে ও দুর্বল হয়ে গিয়েছিল আভিয়ানের প্রতি। রানিয়ার চোখের কোল বেয়ে একফোঁটা জল গড়িয়ে আভিয়ানের হাতের পেশিতে পরলো। ঠান্ডা জলের স্পর্শে আভিয়ান থমকালো৷ রানিয়ার দিকে তাকাতেই দেখলো, ওর চোখ-মুখ-ঠোঁট সব লাল। আভিয়ান বিচলিত হলো৷ রানিয়ার হাত চেপে ধরে প্রশ্ন করলো, ”কী হলো? কাঁদছো কেন?”
রানিয়া কাঁদতে কাঁদতে জবাব দিলো— “এমনি।”
“ব্যাথা দিয়েছি তোমাকে?”
“উহুঁ।”
“তাহলে কাঁদছো কেন?”
রানিয়া হঠাৎ ঝাঁপিয়ে পরলো আভিয়ানের বুকে। হাউমাউ করে কাঁদতে কাঁদতে বললো, “আপনি তো আমাকে ভালোবাসেন না আভিয়ান। তাহলে কেন বারবার কাছে আসেন?”
আভিয়ান চুপ করে রইলো। এই কথার কোনো জবাব দিলো না। রানিয়া ওর বুকে একনাগাড়ে ধাক্কা দিতে লাগলো। ওর শার্টের কলার চেপে ধরে প্রশ্ন করলো— “বলুন না আভিয়ান, ভালোবাসেন আমাকে?”
“উহুঁ।”
“ভালোবাসা কি এতোটাই ঠুনকো? যদি তাই-ই হয়ে থাকে, তবে কেন এতো বেশি পোড়ায়? কেন এতোটা যন্ত্রণাদায়ক হয়?”
“তুমি অনেক বেশি আবেগী রানিয়া। এজন্য তোমাকে পোড়ায়, তোমার জন্য যন্ত্রণাদায়ক হয়; আমার জন্য না।”
কাটখোট্টা জবাবটা আজ আর রানিয়ার গায়ে বিঁধলো না। কষ্ট হলেও কান্না পেল না ওর। ও নির্বাক চাহনিতে আভিয়ানকে দেখতে লাগলো। কতোটা নির্লিপ্ত, নিষ্ঠুর! এমন পাষাণ হৃদয়ের মানুষও হয়? রানিয়া বিরবির করে বললো, “আমি জেদ ধরে ভুল করেছি মানলাম, কিন্তু আপনি আমাকে শাস্তিটা ওইভাবে না দিলেও পারতেন আভিয়ান। অন্যভাবেও দেওয়া যেতো।”
আভিয়ান কিছু বললো না। কেমনভাবে যেন হাসলো৷ অদ্ভুত লাগলো রানিয়ার কাছে। ও কিছুটা অন্যরকম গলায় বললো, “ধরুন আভিয়ান কোনোদিন জানতে পারলেন, আপনার আমাকে দেওয়া ওই শাস্তির ফলাফল তীরের মতো আপনার দিকে ফিরে গেল, তখন আপনার মতো জেদি লোক কী করবে?”
আভিয়ান বোধহয় একটু চমকালো রানিয়ার কথাটা শুনে। ঠোঁট চেপে আশ্চর্য হয়ে তাকিয়ে রইলো ওর দিকে।
চলবে
🔹 আপনারা এতো অধৈর্য কেন বলুন তো? রানিয়ার বাচ্চা হওয়ার খবরটা রিভিল হলে তো গল্প আর বেশি দূর এগোবে না। ৩-৪ পর্বেই শেষ হয়ে যাবে। আমি যেভাবে ঠিক করে কাহিনী লিখেছি, আমাকে লিখতো দিন সেভাবে। আভিয়ানের দিকটাও দ্রুতই প্রকাশ পাবে। ধৈর্য ধরে পড়ুন। নাহলে আমি অল্পতেই শেষ করে দিই, কেমন?
Share On:
TAGS: উড়াল মেঘের ভেলায়, ঝিলিক মল্লিক
CLICK HERE GO TO OUR HOME PAGE
-
উড়াল মেঘের ভেলায় পর্ব ১৫
-
উড়াল মেঘের ভেলায় গল্পের লিংক
-
উড়াল মেঘের ভেলায় পর্ব ৭
-
উড়াল মেঘের ভেলায় পর্ব ৮
-
উড়াল মেঘের ভেলায় পর্ব ১৭
-
উড়াল মেঘের ভেলায় পর্ব ২
-
উড়াল মেঘের ভেলায় পর্ব ১০
-
উড়াল মেঘের ভেলায় পর্ব ৪
-
উড়াল মেঘের ভেলায় পর্ব ১৪
-
উড়াল মেঘের ভেলায় পর্ব ৫