Golpo romantic golpo সুখময় যন্ত্রণা তুমি

সুখময় যন্ত্রনা তুমি পর্ব ১১১+১১২


সুখময়যন্ত্রনাতুমি

neela_rahman

পর্ব_১১১

নুর অনেকক্ষণ ধরে রুমে শুয়ে আছে ।মনে মনে ভাবছে কখনোই এরকম পেটে ব্যথা হয়নি হঠাৎ এমন কেনো হলো?

অবশ্য একবার অনেক আগে হয়েছিল যতদূর মনে পড়ে বাবা হসপিটালে নিয়ে গিয়েছিলো।অনেকদিন ঔষধ খাইয়েছে বাবা।কিন্তু এবার হসপিটাল পর্যন্ত যেতে হলো সবাই জানলো পিরিয়ড নিয়ে হসপিটালে গেছে ।মনে মনে খুব লজ্জা পাচ্ছে নূর।

সাদাফ ভাইকে খুব মনে পড়ছে ।নুর ফোন হাতে নিল ।ফোন নিয়ে সাদাফকে ফোন দিল ।সাদাফ কিছু একটা ভাবছিলো।রিং শুনে ফোন হাতে নিয়েই মুচকি হাসলো সাদাফ।দুই রিং হওয়ার সাথে সাথেই ফোন ধরলো সাদাফ।বুঝতে পেরেছে নুর ঘুম থেকে উঠেছে ।ফোন ধরে বললো,”পেটে ব্যথা এখনো আছে নুর ?ভালো লাগছে এখন? সমস্যা হচ্ছে না তো?”

নুর বললো,”এত প্রশ্ন এখন সাথে করছেন কেন ? কোনটার উত্তর দিবো।একটা একটা করে উত্তর দেই ?আগে বলুন কোথায় আপনি ?”

সাদাফ ভ্রু জোড়া সরু করে বললো,” বাহ বিয়ের পর তো খুব বউ বউ ভাব হয়েছে তোর ?কথায় কথায় এখন অধিকার খাটাস ।আমি কোথায় কি করছি না করছি সবকিছু জানতে চাস। বিয়ে হলে বুঝি সবাই এরকম পাল্টে যায়?”

নুর লজ্জা পেল ।মুচকি হেসে সাদাফের কথার উত্তরে বললো,” জানিনা আচ্ছা এখন বলুন আপনি কোথায় কখন আসবেন?”

সাদাফ মুচকি হেসে বললো,”উফ এমন একটা ফোন কলের আসায় বুঝি বিয়ে করে ছেলেরা ! আসতে একটু দেরি হবে ম্যাডাম ।অফিসে ভীষণ ঝামেলায় পড়ে গিয়েছি সমস্যা সমাধান করে তবে আসবো ।তবে হ্যাঁ রাতে থাকতে পারবো না রাতে আমি আমার বাসায় চলে যাব।”

নুর বলল ,”কেন বাসায় যাবেন?এ বাসায় কি সমস্যা?”

সাদাফ বললো,”কেন তুই কি চাচ্ছিস আমি তোর সাথে থাকি ?এখনো সময় হয়নি ।আর তুইও সুস্থ না ।যেদিন আসবো সেদিন আমার সাথেই থাকবি।আগে সুস্থ হয়ে নে।”

নুর লজ্জা পেয়ে গেল ।ছি আগ বাড়িয়ে কেনো বললো থাকার কথা? ছিঃ কি লজজার ব্যাপার। লজ্জা পেয়ে বললো,” জি না আমি কি তাই বলেছি ?আমি কখন বলেছি আমার সাথে থাকতে?আমি আপনার সাথে থাকবো না আপনি আপনার রুমে থাকবেন ।”

সাদাফ বললো,”যদি আমি আমার রুমে থাকি তাহলে আর কষ্ট করে এখানে থেকে কি লাভ ?এর চেয়ে ভালো আমি আমার বাসায় থাকবো ।আর তোর বাবা মানে আমার শ্বশুর আমাকে বের করে দিয়েছে। বলেছে তাদের ছাড়া নাকি আমার কোন যোগ্যতা নেই ! যোগ্যতা প্রমাণ করে তোকে তুলে নিব তারপর আসবো।”

নুর বললো,” কতদিন লাগবে ?”

সাদাফ বললো,” তুই এত পা*গল হয়ে গেছিস কেন? নিশ্চয়ই একদিনও আমাকে ছাড়া থাকতে ইচ্ছা করছে না ?নাকি একদিন স্বামীর বাড়িতে থেকে এখন স্বামীকে ছাড়া থাকতে ইচ্ছা করে না?

যেদিন তুই সাদাফ ভাই থেকে সাদাফ বলে ডাকবি তুমি করে ডাকবি সেদিন সময় হবে।সেদিন এসে থাকবো।”

” জি না আমি এভাবে ডাকতে পারবো না ।কখনো ডাকিনি আমার অভ্যাস নেই ।আমি তো সবসময় সাদাফ ভাই বলে এসেছি ।”

সাদাফ জোরে হাসলো ।বললো ,”তাই বলে বিয়ের পর স্বামীকে ভাই বলে ডাকবি ?তুই তো দেখছি তোর ছেলে মেয়ের মামা বানানো ধান্দা করেছিস আমাকে।”

নুর লজ্জা পেল । বললো,” ডাকলে ডাকবে ।মায়ের ভাই তো মামাই হয়।মামা ডাকবে যা খুশি তা ডাকবে ।আর আমার তো অনেকগুলো ছেলে মেয়ে হবে ।কেউ আপনাকে মামা ডাকবে কেউ চাচ্চু বলবে।”

সাদাফ ঘোর লাগা কন্ঠে বললো,” একটা ও কি বাবা বলে ডাকবে না? বাবা ডাক শোনার ভিশন সখ আমার।”

নুর বললো,” বাবা বলবে তো যেটা সব থেকে কিউট হবে ভালো হবে সেটা আপনাকে বাবা বলে ডাকবে।”

সাদাফ বললো,” আমার সবগুলো বাবুই অনেক কিউট হবে ।কারণ বাবুর মা ও কিউট বাবুর বাবা ও কিউট ।তাই বেবি গুলো সব কিউট কিউট হবে।”

নুর লজ্জা পেলো। বললো,” আচ্ছা আপনি কি আপনার বাবুদের কে বেশি আদর করবেন নাকি আমাকে বেশি আদর করবেন ?”

সাদাফ নুর কে খেপানোর জন্য বললো,” অবশ্যই আমার বাবুদের কে বেশি আদর করবো ।বাবুরা তো ছোট ছোট গুড়া গুড়া বাচ্চা হবে ।ওদেরকে বেশি আদর করবো তুই তো পাকনি বুড়ি হয়ে যাবি তোকে আদর করে লাভ কি?”

“ইশ এই কথা ?তাহলে আমি একটা বাবু আপনাকে দিব না ।”বললো নুর অভিযোগের সুরে।
সাদাফ বললো,” অসম্ভব আমার তো মিনিমাম দশটা বাবু চাই ।কে যেন একবার বলেছিল বাড়ি ভর্তি বাবু থাকবে তাহলে ভালো লাগবে। তাই আমার দশটা বাবু চাই ।বুঝলি ?”

নুর এবার ভিষন লজ্জা পেয়ে গেল ।চুপ চাপ মাথা নত করে রইল।

সাদাফ বললো,” অফিসে আছি আমার সময় লাগবে অফিস থেকে বের হতে ।যাওয়ার সময় দেখা করে যাব ।খাওয়া-দাওয়া করিস ঠিকমত ওষুধ খেয়ে নিস ।একটু পরে আবার আমাকে ফোন দিস কেমন?”

নুর বললো,”আচ্ছা শুনুন শুনুন ?”

সাদাফ বললো,”জি বলুন বলুন ?”

“আপনি যে আমাকে তুই করে বলেন কে তার বউকে তুই করে বলে শুনি?”জানতে চাইলো নুর।

সাদাফ বললো,” যে শালা তার বউকে কোলে নিয়ে পেলেপূলে বড় করে বিয়ে করে সে বউকে তুই করে বলে ।আর বলেছি তো যেদিন তুই আপনি থেকে তুমিতে নামতে পারবি সাদাফ ভাই থেকে সাদাফে নামতে পারবি সেদিন আমিও তোকে তুই থেকে তুমি তে উঠবো।তুমি করে বলব।”

নুর বললো,” ঠিক আছে তাহলে তুই ঠিক আছে ।আমি তো আপনাকে আপনি ছাড়া তুমি করে বলতে পারব না ।কোনদিনও পারবো না।”

সাদাফ বললো,” ঠিক আছে দেখা যাবে ।যেদিন সময় হবে সেদিন তুই ঠিকই পারবি ।তুমি করেও বলবি ,সাদাফ করেও বলবি ।এখন রাখছি কেমন? শরীর খারাপ করলে সাথে সাথে আম্মুকে অথবা ছোট আম্মুকে বলবি ।খবরদার লুকিয়ে রাখবি না এটা লজ্জার কিছু নেই ।জানাতে হবে ।ওকে?”

বলেই সাদাফ ফোন রাখার সাথে সাথেই হঠাৎ করে দেখল ঘাড় ঘুরিয়ে ফারদিন দাড়িয়ে আছে ।সাদাফ ভয় পেয়ে গেল ।সাদাফ বললো,”কখন থেকে দাঁড়িয়ে আছো ফারদিন ?”

ফারদিন মুচকি হেসে বললো,” যখন আপনি বললেন বউকে কোলে নিয়ে পেলে পুষে বড় করে বিয়ে করেছেন তখন থেকে।

কংগ্রাচুলেশন স্যার। আপনি বিয়ে করেছেন তা তো জানতাম না এখন জানতে পারলাম।”

সাদাফ লজ্জা পেয়ে গেল ।মুচকি হেসে বললো,”যাও কাজে যাও ।এখানে চুপচাপ দাঁড়িয়েছিলে কেন ?বসের কথা চুপচাপ সোনা এটা গুরুতর অপরাধ। এক সপ্তাহের বেতন কাটা হবে।”

ফারদিন সাথে সাথে বললো,” নানা স্যার আপনি এটা করতে পারেন না আমার সাথে ।আপনাকে আপনার বউয়ের কসম।”

এদিকে সায়মন ঘরে বসে পড়ছিল আর মনে মনে চিন্তা করছিল নওরিন আফরোজ এর বলা কথাগুলো ।সায়মন শুনেছিল বড় আম্মুর কথাগুলো কিন্তু কাছে যায়নি।

বড় আম্মু মেনে তো নিয়েছে কিন্তু বলেছে বাড়িতে এখানে সেখানে কথা বলতে মানা ।দূরত্ব বজায় রাখতে ।কিন্তু ওর যে রিমা কে ভীষণ দেখতে ইচ্ছা করছে ।রিমার সাথে কথা বলতে ইচ্ছে করছে ।কে বুঝাবে বড় আম্মু কে নতুন নতুন প্রেম এতদিন না হয় চাচাতো বোন ছিল দেখতে ইচ্ছা হতো না কিন্তু এখন তো প্রেমিকা একটু পর পর দেখতে ইচ্ছা হয়।

যেই ভাবা সেই কাজ ।সায়মন ফোন হাতে নিল ।নিয়ে এক মিনিট চিন্তা করলো ফোন দিবে কি দিবে না ।কোন কিছু না ভেবেই ফোন দিয়ে ফেলল।

রিমা শুয়ে ছিল ঘরে, এই দুদিন হসপিটালে দৌড়াদৌড়িতে একটু টায়ার্ড হয়ে গিয়েছে । হঠাৎ সায়মনের কল দেখলো তাই উঠে গিয়ে দরজাটা লাগিয়ে দিল তারপর ফোন রিসিভ করল।

লিমা ফোন ধরার সাথে সাথে সায়মন বললো,” তুই কি আমাকে ভুলে গিয়েছিস ?তুই কি চিন্তা করেছিস যে তোকে একটু না দেখলে আমার কেমন লাগে ?বাড়িতে আসার পর একটা মুহূর্তের জন্য তুই আমার সামনে আসিস নি ।এক কাপ চা নিয়েও তো আমাকে দেখা দিয়ে যেতে পারিস।”

রিমা বললো,”আমি কি করবো আম্মুই তো না করলো। বললো কয়েকদিন একটু দূরত্ব বজায় রাখতে এই মুহূর্তে যদি আমাদের কেউ এভাবে দেখে ফেলে বা কথা শুনে ফেলে তাহলে সমস্যা হবে।”

“স্বামী হিসেবে ভুলেই যা চাচাতো ভাই হিসেবে তো এক কাপ চা নিয়েও জিজ্ঞেস করতে পারিস আমাকে চা-কফি কিছু লাগবে কিনা ?তুই তো আমার রুমে আসাই ভুলে গিয়েছিস ।দুইটা দিন ধরে আমার রুমের ভিতর কাপড়চোপড়ে কি অবস্থা হয়ে গিয়েছে এগুলো পরিষ্কার করবে কে ?তাহলে তোকে আমি বিয়ে করেছিলাম কেন? তোকে যদি দেখতেই না পাবো বউয়ের যদি কোন সেবাই না পাব তাহলে আমার বিয়ের কি দরকার ছিল?”

রিমা রাগ উঠে গেলো। বললো,” তুই কি আমাকে সেবা পাওয়ার জন্য বিয়ে করেছিস ?”

সায়মন হাসতে হাসতে বললো,” না তাহলে তোকে পূজা করার জন্য বিয়ে করেছি ।মানুষ বিয়ে কেন ?বউয়ের সেবা পাওয়ার জন্য।”

চলবে__
Neela Rahman

শরীরটা বেশি ভালো না ক্রিটিক্যাল কোন কিছু চিন্তা করতে পারছিলাম না ।তাই দুই ভাই বোনের দুই জুটির একটু হালকা-পাতলা রোমান্স দিলাম।

সুখময়যন্ত্রনাতুমি

neela_rahman

পর্ব_১১২

সাদাফ বসেছিল অফিস রুমে কিছু একটার এরেক্ষায়।ঠিক ঘন্টাখানেক পরে ফারদিন এসে জানালো ,”স্যার একটা সুখবর আছে ।একটি সিসিটিভি ফুটেজ পাওয়া গেছে।”

সাদাফ মুচকি হেসে ফারদিনের দিকে তাকালো ।তারপর বললো,” কি আছে সেই ফুটেজে অন করো দেখি।”

ল্যাপটপের ভিডিও ফুটেজটি অন করার সাথে সাথেই সাদাফের মুখে খেলে গেল মুচকি হাসি ।সাদাফ ল্যাপটপটি বন্ধ করলো ।তারপরে মোবাইলটি হাতে নিয়ে ফোন দিল সাজিদকে।

সাজিদ অবাক হলো হঠাৎ সাদাফের ফোন পেয়ে ।সাদাফের তো ফোন দেওয়ার কথা না ।দুই তিন রিং হওয়ার সাথে সাথে ফোন রিসিভ করলো সাজিদ। ফোন ধরে বললো,” বন্ধু খোঁজখবর নেওয়ার জন্য ফোন দিলাম ।তোর তো অভিযোগ ছিল আমি নাকি তোর খোঁজ খবর নেই না তাই ফোন দিলাম।”

সাজিদ অবাক হয়ে গেল । তারপরেও সিরিয়াস হয়ে বললো,” হেয়ালি না করে বল কি জন্য ফোন দিয়েছিস ?সাদাফ বললো,” বললাম তো তোর খোঁজ খবর নেওয়ার জন্য ফোন দিয়েছি ।আচ্ছা তা তোদের গার্মেন্টসের ব্যবসা কেমন চলছে রে?”

সাজিদ অবাকের পর অবাক হচ্ছে গার্মেন্টস ব্যবসার কথা কেন জানতে চাচ্ছে ভেবে।সে ব্যবসার মধ্যে ওর কি ইন্টারেস্ট থাকতে পারে ?তারপর বললো,” কেন তোর কি ইন্টারেস্ট তোর কি প্রয়োজন ?চাকরি নিবি নাকি আমাদের ফ্যাক্টরিতে?”

সাদাফ হাসতে হাসতে বললো,”না তোদের ফ্যাক্টরি তো ছোট ছোট পোলাপান দিয়ে কাজ করাস ।ভিতরে গভীরে সেখানে আমার মত বড় মানুষের কি কাজ বল?”

সাজিদ অবাক হয়ে বললো,” কি বলতে চাচ্ছিস সেটা বল ।আর এমন কোন কথা বলবি না যেটা তুই নিজে কোনদিনও চোখে দেখিস নি।”

সাদাফ বললো ,”হ্যাঁ তা অবশ্য ঠিক ।চোখে দেখিনি তবে দেখতে কতক্ষণ?”

“কি চাস সেটাই বল ?”জানতে চাইলো সাজিদ ।

সাদাফ বললো,” কি আর চাইবো ?চাই যে তুই যা করেছিস সেটা তুই স্বীকার করে নে ।তোর দোষ তুই স্বীকার করে নিলে বাইয়ার রা কনভিন্স হবে ।হয়তো শিপমেন্ট আমাদের ক্যানসেল হবে কিন্তু চুক্তি থাকবে।প্রোডাকশনে এখনো তুই জব করিস আমাদের এখানে তাদের ডাটা মতে তাই তুই এর দায় নিবি কারণ তুই এই কাজটা করেছিস।”

“আমি কেন করবো আর আমার কি দায় পড়েছে তোদের ফ্যাক্টরি তোদের প্রতিষ্ঠান বাঁচানোর জন্য কোন কিছু দায় নিজের কাঁধে নেওয়ার?” বললো সাজিদ।

সাদাফ বললো ,”তাহলে করবি না ?”

সাজিদ বললো,” না যা পারিস করে নে।” বলেই ফোন কেটে দিল সাজিদ

সাজিদ এ ব্যাপারে পুরোপুরি অজ্ঞ কোন ধরনের ভিডিও ফুটেজ পেয়েছে সাদাফ যার জন্য এই কথাগুলো বলছে কারণ সাজিদের জানামতে তাদের সবকিছু এতই গোপনে এতই লুকোচুরিতে হয় যে সাদাফের মত লোকের পক্ষে সেগুলো ভেদ করে কোন ফুটেজ বের করা সম্ভব নয়। এমন কি কোন হ্যাকারের পক্ষ হ্যাক করা সম্ভব নয় তার ফুটেজ গুলো এতটাই সিকিউরিটি দিয়ে সবকিছু করা হয়।

সাদাফ ফোন কেটে ফুটেজের দিকে ইশারা করে ফারদিন কে বললো,” ঠিক যতটুকু প্রয়োজন অতটুকু ফুটেজ এডিট করে পুলিশকে পাঠিয়ে দাও ।এই মুহূর্তে অন্য কারো নাম যেনো না আসে।আগামীকাল যেন ওর ফ্যাক্টরিতে রেট হয় ।একটা একটা করে ধরবো ফ্যাক্টরি রেট হওয়ার পরেও যদি ও স্বীকার করে সব দায় নিজে না নেয় তারপরে বাকিগুলো ধরা হবে।”

ফারদিন বলল ,”জি স্যার কাজ হয়ে যাবে।”

এদিকে সাইমন অনেকক্ষণ ধরে অপেক্ষা করছে রিমার জন্য ।ফোনে কথা তো বলেছে রিমা সাথে রিমা রাগ করে হলেও সাইমনের সাথে দেখা করতে আসবে এটা সাইমন জানে । হলো ও তাই ।দরজা হঠাৎ করে খোলা শব্দ হলো ।সায়মন আড় চোখে তাকিয়ে দেখলো রিমা এক কাপ চা নিয়ে এসেছে।
সামনের দিকে হেঁটে এসে রিমা বললো,” এই নাও চা ।”

সাইমন বললো,” শুধু চা ?আর কিছু কই?”

রিমা বললো,” আর কি ?তুমি তো চায়ের কথাই বলেছ ?”

সাইমন মুচকি হেসে গলার স্বর নরম করে বললো ,”আচ্ছা ঠিক আছে একটু সামনে আয় তো।”

রিমা অবাক হয়ে গেল ।এদিক ওদিক তাকিয়ে বললো,” কেন ?”

“আয়না একটু কাছে ।প্লিজ ।”বললো সায়মন।

“আম্মু বকা দিবে ।”বললো রিমা।

সামনের এবার মেজাজ চড়ে গেল । বললো,”আম্মুর কাছে জিজ্ঞেস করে কি তুই আমার সাথে প্রেম করেছিলি ?না আম্মুর সাথে জিজ্ঞেস করে তুই আমাকে কবুল বলেছিলি?”

রিমা বললো,” চুপ কর কি বলতেছ ?হঠাৎ করে কেউ শুনে ফেলবে ।আর কবুল কবুল মানে কি ?এই কবুল এ কি বিয়ে হয় ?এটা তো এমনি দুষ্টুমি করে বলেছি ।সাইন ছাড়া বিয়ে হয় নাকি ?কাগজ ছাড়া কিসের বিয়ে?”আর কি প্রমাণ আছে তোমার সাথে আমার বিয়ে হয়েছে ?দেখাতে পারবে কোন প্রমাণ ?”

সায়মন বললো ,”ও তার মানে আমার প্রমাণ রাখা উচিত ছিল ?তুই যে আল্লাহকে সাক্ষী রেখে কবুল বললি এটা কি কোন প্রমাণ না?”

রিমা এবার চুপ হয়ে গেল ।একটু নরম হলো ।নরম হয়ে বললো,” দেখো আম্মু যা বলেছে আমাদের ভালোর জন্য বলেছে ।আর কিছুদিন পর সাদাফ ভাইয়া আর নূরের ব্যাপারটা সমাধান হয়ে গেলে তারপর যদি কেউ জানে সমস্যা নেই। কিন্তু এখন জানলে একটা কেলেঙ্কারি হয়ে যাবে ।বাবারা কতটুকু হার্ট হবে বুঝতে পেরেছ ?মান সম্মান শেষ হয়ে যাবে তাদের ।যে তাদের চারটা ছেলেমেয়ে একই কাজ করেছে ভেবে।”

সাইমন বললো,” ঠিক আছে একই কাজ করেছি ভালই তো বেসেছি কোন অন্যায় তো করিনি?”

রিমা মুচকি হেসে সায়মনের দিকে তাকালো ।তারপর ধীরে ধীরে এক পা দু পা করে একটু কাছে আসলো । বললো এসেছি এবার বল কি বলবে ?”

সায়মন রিমাকে বললো,” আমার গালে একটা চুমা খা প্লিজ।”

কেন যেন সাইমনের আবদার আজ রিমার ফেলতে ইচ্ছে হলো না ।তাই এদিক ওদিক তাকিয়ে টুপ করে সাইমনের গালে একটি চুমা খেয়েই রুম থেকে দৌড় দিল সোজা রুমের বাইরে।সায়মন অবাক হয়ে গেল এক মুহূর্ত দাঁড়ালো না মেয়েটা ।সায়মনের ও তো একটা চুমা খেতে ইচ্ছে করেছিল।

সায়মন নিজের গালে হাত দিয়ে একটু মুচকি হাসলো ।এতটুকুই বা কম কিসে ?ও যে চা নিয়ে এসেছে কাছে এসেছে একটা চুমু খেয়েছে এটাতেই সায়মন অনেক খুশি ।তাই সুন্দর করে চায়ের দিকে তাকিয়ে রইল মুগ্ধ নয়নে ।তারপর ধীরে ধীরে চায় চুমুক দিয়ে চা পান করতে লাগলো।

এদিকে নূর ধীরে ধীরে বিছানা থেকে নেমে আয়নার সামনে গিয়ে দাঁড়ালো ।কেন যেন নিজেকে আজকে একটু পরিপাটি করতে ইচ্ছে করছে ।সাদাফ ভাইয়া বলেছে যাওয়ার সময় দেখা করে যাবে ।রাত তো অনেক হলো নিশ্চয়ই সাদাফ ভাইয়া আসবে ।আসলে জোর করে খাইয়ে তারপর এখান থেকে যেতে দিবে ।না হলে যেতে দিবে না ।ভাবলো নুর।

ধীরে ধীরে চিরুনি নিয়ে চুলগুলো আচড়াতে লাগলো ।আর মনে মনে ভাবতে লাগলো ,”আয়নার সামনে গেলে কেন যেন আজকাল নিজেকে বড্ড মিসেস সাদাফ মিসেস সাদাফ মনে হয়।”

হঠাৎ আয়নার দিকে তাকিয়ে নূরের চেহারার মধ্যে কিছু একটা মিসিং মনে হল ।অনেকক্ষণ ধরে নূর ভাবছে কি নেই কি নেই হঠাৎ করে মনে পড়ল নূরের তো নাক ফোঁড়ানো নেই ।নাকে একটা ফুল নেই ।সব বিবাহিত মানুষের তো নাকে একটা ফুল থাকে ।নুর লজ্জা পেল ।লজ্জা পেয়ে মনে মনে ভাবল আজকে সাদাফ ভাই আসলে বলবে নূরের জন্য একটা নাকের ফুল এনে দিতে।

চলবে_
Neela Rahman

Share On:

TAGS: ,



CLICK HERE GO TO OUR HOME PAGE
Related Posts
 

0 Responses

Leave a Reply