অবাধ্য_হৃৎস্পন্দন (২৮)
সোফিয়া_সাফা
সকাল থেকে নিরবচ্ছিন্ন ঝুম বৃষ্টি। আকাশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত পর্যন্ত ছড়িয়ে আছে ধূসর মেঘের ভারি চাদর। বাতাসে ভেসে বেড়াচ্ছে ভেজা মাটির গন্ধ, বৃষ্টিপানির ছোঁয়ায় পৃথিবী যেন নবজীবন পেয়েছে। ঘন জঙ্গলের পাতা বেয়ে গড়িয়ে পড়ছে অসংখ্য বৃষ্টিধারা।
জানালার পাশে দাঁড়িয়ে আছে ফুল। তার দু’হাত জানালার ঠান্ডা লোহার গ্রিল শক্ত করে ধরে রেখেছে। বৃষ্টির ফোঁটা বাতাসে উড়ে এসে গাল ছুঁয়ে যাচ্ছে, কিন্তু সে নড়ছে না। শূন্য চোখে তাকিয়ে আছে সামনের ঘন জঙ্গলের দিকে, যেন সেই সবুজের আড়ালে কিছু খুঁজে ফিরছে, যা কেবল তার মন জানে। ভেজা বাতাসে কিছু চুল আছড়ে পড়ছে চোখেমুখে তবুও সেগুলো সরানোর ইচ্ছে নেই।
“পেটাল…” হঠাৎ কারো ডাকে ভাবনার জগৎ থেকে ফিরে আসে ফুল। ঘাড় সামান্য বাকিয়ে দরজার দিকে তাকিয়ে দেখে উদ্যান দাঁড়িয়ে আছে। উদ্যানকে দেখে অবাক না হলেও উদ্যানের মুখ নিসৃত ‘পেটাল’ শব্দটা ফুলের স্মৃতি ভান্ডারে কড়া নাড়ে, উদ্যান যে তাকে খুঁজে পাওয়ার পর থেকেই এই নামে ডাকছে সেই সম্পর্কে সম্পূর্ণ বেখেয়ালি ছিল ফুল। মুহুর্তের ব্যবধানেই ওর অবচেতন মস্তিষ্ক কোনো কিছু নিরূপণ করতে পেরে সজাগ হয়ে যায়। তবে কি উদ্যান ওকে চিনে ফেলেছে? না, না। সেটা কিভাবে সম্ভব? ব্যাপারটা এড়িয়ে গেলে চলবে না। যাচাই করে দেখতে হবে। ফুল এবার নিজ উদ্যোগে উদ্যানের সামনে গিয়ে দাঁড়ায়,
“আপনি আমাকে অদ্ভুত নামে ডাকছেন কেন? ‘পেটাল’ কি হ্যাঁ?”
উদ্যান যেন অবাক হলো ফুলের কথায়, “একদিন অনশন করেই দেখছি সব ভুলে গেছো। খাবার খেয়ে নাও; মনে পড়ে যাবে।”
রাগে ফুঁসে ওঠে ফুল, “ভণিতা না করে উত্তর দিন।”
ফুলের রাগের বিন্দুমাত্র পরোয়া না করে উদ্যান সোজাসাপ্টা বলল, “খাবার খেয়ে নাও, উত্তর পেয়ে যাবে।”
ইদানীং উদ্যানের উপর ফট করেই যেন রাগ উঠে যায় ফুলের। ইচ্ছা করে নাক বরাবর ঘুষি মেরে দিতে। যাক সেই প্রসঙ্গ আপাতত তুলে রাখা থাকুক। ফুলের অনশন করার কারণ অন্য কিছু হাসিল করা। সেটাতেই ফোকাস করা উচিৎ। ফুল এবার অন্যদিকে তাকিয়ে অভিমানী সুরে বলল, “আমি খাবো না।”
নিজ পকেটে হাত গুজে নির্লিপ্ত কণ্ঠে উদ্যান বলে, “তাহলে উত্তরও পাবে না।”
বুকে হাত গুটিয়ে আঁড়চোখে তাকায় ফুল, “চাই না উত্তর, যান আপনি।”
ভ্রু কুচকে তাকায় উদ্যান, “হোয়াট ডিড ইউ সে?”
“বলেছি যান আমার চোখের সামনে থেকে।”
দরজার সাথে ঠেস দিয়ে দাঁড়ায় উদ্যান। বিদ্রুপের সুরে বলে, “আর একবার ‘জান’ বলে ডাকো, আমি পার্মানেন্ট এখানেই থেকে যাবো।”
হকচকিয়ে গেল ফুল। দানবের মুখ থেকে এসব শোনার আগে দানবের মুখ চেপে ধরল না কেন? ওহ না, মুখ চেপে ধরাটা বেশি বেশিই হয়ে যাবে না? নিজেকে স্বাভাবিক দেখাতে মুখ বাকায় ফুল। মাথার ডানপাশের ছেটে ফেলা চুলে হাত বুলিয়ে আফসোসের সহিত বলে, “আমার চুল কাঁটার দুঃসাহস কে দেখিয়েছে?”
এতোক্ষণ যাবত ফুলের দিকে নিষ্পলক চোখে তাকিয়ে থাকলেও এবার চোখ সরিয়ে নেয় উদ্যান। ওর দিকে আঙুল তাক করে ফুল বলে, “আপনি জানেন?”
বার দুয়েক পলক ফেলে ডানে বায়ে মাথা নাড়ে উদ্যান। যার মানে সে জানেনা। কুটিল হাসি ফুটে ওঠে ফুলের ঠোঁটের কোণে। বিড়বিড় করে উচ্চারণ করে, “লায়ার।”
“কিছু বললে?”
চোখ বন্ধ করে নেয় ফুল। উদ্যানের দিকে আরও কিছুটা এগিয়ে গিয়ে বলে, “আমি জানি, আপনি শুনেছেন। ছোটো ছোটো কথাগুলোও শুনে ফেলেন আপনি। তবে আমি পরিষ্কার করে বলে দিচ্ছি, একবার মিথ্যা বলতে গিয়ে কেউ যদি আমার কাছে ধরা পড়ে যায়। পরবর্তীতে আমি তার কোনো কথাই আর বিশ্বাস করি না।”
উদ্যান হঠাৎ করেই ফুলের মুখ বরাবর ঝুঁকে যায়।
“কথাটা কি কোনোভাবে আমাকে বললে?”
“হ্যাঁ আপনাকেই বলেছি। আপনার বেশ কয়েকটা মিথ্যা ধরে ফেলেছি আমি।”
“বলো তাহলে আমি কি কি মিথ্যা বলেছি।”
“আপনি বহু আগেই আমার খোঁজ পেয়ে গিয়েছিলেন। রেজিস্ট্রার সাহেবও আপনার ভাড়া করা লোক ছিল। আর আমার চুলগুলো আপনিই কেঁটেছেন।”
উদ্যান এবার ফুলের কানের কাছে মুখ নিয়ে বলল, “আর তুমি এসব কিভাবে জানলে?”
ভড়কে গেল ফুল। বড়বড় চোখে তাকাল উদ্যানের দিকে। উদ্যানের কলার বোন চোখের সামনে উন্মুক্ত,
“তা জেনে আপনি কি করবেন? এই মিথ্যা কথাগুলো কেন বলেছেন সেটা ক্লিয়ার করুন।”
সোজা হয়ে দাঁড়ায় উদ্যান, “এগুলো ক্লিয়ার করে দিলে খাবার খেয়ে নেবে?”
নিরুত্তর রইল ফুল।
“কি হলো বলো। আমার হাতে সময় নেই পেটাল, আজ এবং কাল, খুব বিজি থাকবো আমি। তাড়াতাড়ি করো।”
“আমি খাবার তখনই খাবো যখন আবেশ ভাইকে নিজ চোখে শ্বাস নিতে দেখবো।”
আবেশের নাম উল্লেখ করায় শান্তচোখে উদ্যান তাকায় ফুলের দিকে। ফুল সেই দৃষ্টি অনুমান করার পূর্বেই চোখ সরিয়ে নেয় উদ্যান,
“তুমি আমার কথা বিশ্বাস করছো না? বললাম তো ও বেচে আছে। আর ওর মমের কাছেই আছে।”
“ওই যে বললাম, আমার স্বভাবই এটা। ফর মি, ওয়ান্স আ লায়ার, অলওয়েজ আ লায়ার।”
এইপর্যায়ে উদ্যানের কণ্ঠে কিছুটা ব্যাকুলতা ধরা পড়ল,
“তোমার জন্য ওর বেচে থাকাটা এতোটাই ইম্পর্ট্যান্ট?”
সামান্য থমকায় ফুল। পরপরই বলে ওঠে, “সেটাই কি স্বাভাবিক নয়? ভালোবাসি আমি তাকে।”
কথাটা উদ্যানের কর্ণগুহরে পৌঁছানো মাত্রই রুমের আবহ পরিবর্তন হয়ে যায়। চোখের পলকে ফুলের কোমর প্যাঁচিয়ে দরজার সাথে তাকে আবদ্ধ করে ফেলে উদ্যান। এতটা আকস্মিক কিছু ঘটবে, তা ফুল কল্পনাতেও আনেনি। বিস্ময়ে ও শঙ্কায় তার নিঃশ্বাস যেন আটকে গেল। নিজেকে মুক্ত করার মরিয়া চেষ্টায় দুই হাত বাড়িয়ে উদ্যানের বুকে জোরে ধাক্কা দিল সে।
কিন্তু সেই প্রতিরোধ যেন আগুনে ঘি ঢেলে দিল। উদ্যানের চোখে রাগের ঝলক নেমে এলো। একহাতে ফুলের দুটো হাত চেপে ধরে মাথার ওপর তুলে পেছনের দরজার সঙ্গে আটকে দিল সে। আরেকহাত ফুলের চুলের ভাঁজে গলে গিয়ে ফুলকে স্থির রাখল। পুরো রুম জুড়ে তাদের দমবন্ধ শ্বাসের আওয়াজ প্রতিধ্বনিত হতে লাগল।
“মিথ্যাবাদীকে ঘৃণা করেও; অকপটে মিথ্যা কিভাবে বলছো? নাকি সত্যি কথা স্বীকার করার মতোও হিম্মত নেই তোমার।”
ফুলের বুকের ভেতর ধ্বক করে উঠল, “কোন সত্যির কথা বলছেন?”
“আমি কোনো সত্যির কথা বলছি না। শুধু তোমার মিথ্যাচার ধরে ফেলেছি।”
“নিজের ধরে ফেলা কথার উপর ভিত্তি করেই সত্য মিথ্যা নির্ণয় করবেন?”
“হ্যাঁ করবো।”
“তাহলে পরিশেষে আপনার নির্ণয় ভুল হবে। মূলত আপনি সত্য মিথ্যা নয় নিজের সন্তুষ্টি খুঁজে পেতে চাইছেন, যেই সত্য আপনার মনকে তৃপ্ত করতে পারবে না; সেই সত্যকে আপনি মিথ্যাচার হিসেবে ধরে নেবেন। বস্তুত, আপনার মাঝেই সত্য গ্রহণের হিম্মত নেই।”
উদ্যানের মুখাবয়ব রক্তিম বর্ণ ধারণ করল। ফুলের হাত ছেড়ে দিয়ে সরে দাঁড়াল,
“নাদিয়া খাবার দিয়ে গেলে খেয়ে রেডি হয় নিও। বিকেল তিনটার দিকে আবেশকে দেখতে নিয়ে যাবো।”
একমুহূর্ত অপেক্ষা করল না উদ্যান। কথাগুলো বলে ফুলের রুম থেকে বেরিয়ে গেল। কিছুক্ষণ পর খাবার নিয়ে নাদিয়া আসে; পুরো এক দিন না খেয়ে আছে ফুল। খিদে পেয়েছে খুব, যেহেতু উদ্যান নিয়ে যাবে বলেছে সেহেতু খাবার খেয়ে নেওয়াই যায়।
বিকেল ৩ টা, ব্ল্যাক মার্সিডিজ-বেঞ্জ GLS কারটি ধীরে ধীরে কাঁচা জঙ্গলের পথ পেরিয়ে এগোচ্ছিল। আকাশের রঙ ভারী ধূসর, মেঘে ঢাকা সূর্য যেন রাগে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। বৃষ্টি থেমে গেলেও আবারও নামবে নামবে ভাব। বনভেজা স্যাঁতসেঁতে হাওয়া জানালার ফাঁক দিয়ে ঢুকে যাচ্ছে গাড়ির ভেতরে।
ড্রাইভ করছে লুহান, মোবাইল হাতে পাশের সিটে বসে আছে মেলো। পেছনের সিটে বসে আছে উদ্যান, পাশে ফুল; জানালার কাঁচে জমে থাকা ধূলোর ওপর আঙুল টেনে বৃত্ত আঁকছে। শেষের সিটে অনি আর অনিলা পাশাপাশি। অনিলাকে নিয়ে আসার প্ল্যান না থাকলেও, মেয়েটা বাইরে বেরোনোর বায়না করেছিল। আর অনিও না করতে পারেনি। গাড়ির ভেতর হালকা শব্দে জ্যাজ বাজছে, তবুও যেন অদ্ভুত এক নীরবতা ঘিরে রেখেছে চারপাশ।
ফুল লক্ষ্য করেছে তাদের পেছনে আরও দু-তিনটে গাড়ি আছে, যেগুলো তাদের গাড়ি অনুসরণ করেই অগ্রসর হচ্ছে। বেশ অনেকক্ষণ চুপচাপ থেকে চোরা চোখে উদ্যানের দিকে তাকায় ফুল। দানবটা ফোনের মধ্যে ঢুকে আছে, কি করছে কে জানে? তবে চোখমুখ দেখে বেশ সিরিয়াস মনে হচ্ছে। ফুল একটা জিনিসই ভেবে পাচ্ছেনা, পুরো একষট্টিটা বেল্টের আঘাত সহ্য করেও কিভাবে অবলীলায় সিটে পিঠ ঠেকিয়ে বসে আছে লোকটা? চল্লিশ মিনিট অবান্তর ভাবনার রাজ্যে বিচরণের পর গাড়ি থেমে যায় এক হসপিটালের সামনে। ফুলের ভাবনায় ছেদ পড়ে। দরজা খুলে এক এক করে বেরিয়ে আসে সবাই।
“তেহ, আমরা এখানেই অপেক্ষা করছি তুই আর ফুল নিজেদের কাজ শেষ করে আয় নাকি?” লুহানের কথায় সহমত হয় অনি। কিন্তু অনিলা বলে,
“আমিও যেতে চাই ফুলের সাথে। তোমাদের সাথে থেকে বোর হওয়ার কোনো ইচ্ছা নেই।”
“বেশ ভালোই বললে, তোমার মনে হচ্ছে হসপিটালে ফুলবানু ঘুরতে যাচ্ছে?” অনির কথায় চোখ উল্টায় ফুল। এরা তাকে পেয়েছে কি? আর কতো কতো নামে ডাকবে? ভাগ্যিস সোহম আসেনি নইলে আরও কয়েকটা নিক নেম জুড়ে দিতো। উদ্যান বরাবরের মতোই নির্লিপ্ত, হসপিটালের দিকে পা ফেলে বলে,
“হাতে সময় কম, এসো কুইক।” তার পিছু পিছু ফুল ও অনিলা হাটা ধরল। ফুলের পিছে আসার কারণ টা হলো ফুলের সঙ্গে ভাব জমানো। প্রথম সাক্ষাতে ওর সাথে উঁচু গলায় কথা বলে ফেলেছিল অনিলা। এই সুযোগে সরি বলে ফেলবে। আর যাই হোক মেয়েটা তাদের মাস্টারের ওয়াইফ। লিফট থেকে নেমে, কিছুদূর এসে একটা কেবিনের সামনে থেমে যায় উদ্যান। হাতঘড়িতে চোখ বুলিয়ে ফুলের উদ্দেশ্যে বলে,
“যাকে দেখার জন্য তড়পাচ্ছো তাকে মন ভরে দেখে নাও।” উদ্যানের কথায় কেমন যেন রাগের বহিঃপ্রকাশ ঘটল। সেদিকে ভ্রুক্ষেপ না করে ধীরপায়ে কেবিনের দিকে এগোয় ফুল। কাঁচের দরজায় হাত রেখে অপরপাশে তাকাতেই দেখে শুভ্র বেডে শুয়ে আছে আবেশ। চোখ বন্ধ, হয়তো ঘুমোচ্ছে।
“দেখা করবে?” উদ্যানের তাচ্ছিল্য মাখা প্রশ্নে রাগী চোখে তাকায় ফুল। উদ্যান পুনরায় একই ভঙ্গিতে বলে,
“ওভাবে তাকাচ্ছো কেন?”
ফুল কিছু বলবে তার আগেই কেবিনের সামনে মাহবুবা সুলতানা, রেহানা বেগম ও মেহেকের আগমন ঘটে। সপ্তাহ খানেক আগে খানাজাদা নিবাসে ফিরেছিল মেহেক। আজকে বাকিদের সাথে সেও এসেছে আবেশকে দেখতে। মাহবুবা সুলতানা অবশ্য ছেলের সাথে হসপিটালেই অবস্থান করছেন দুদিন যাবত। পুরো সাড়ে আটমাস পর তাদেরকে সামনাসামনি দেখে থমকে গেল ফুল। রেহানা বেগম তো অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছেন মেয়ের দিকে। ফুল যেন নিজ স্থানে জমে গেছে, কখন চোখে পানি এসে গেছে জানেনা।
“ফু…ল” ভাঙা ভাঙা কণ্ঠে ফুলের নাম ধরে ডাকে রেহানা বেগম। সেই ডাক শুনে ফুলের বুকের ভেতরটা গুমরে ওঠে। অসীম অভিমানী ফুল সেই অনূভুতি স্বীকার করেনা, যেই মা নিজের মেয়ের কথা না ভেবে পরের ছেলের কথা ভাবে, সেই মায়ের জন্য ফুলের অন্তর কেন পুড়বে? কেন সেই মাকে জাপ্টে ধরে হাউমাউ করে কাঁদতে মন চাইবে?
“আমি দেখা করবো আবেশ ভাইয়ের সাথে।” কথাটা ফুল উদ্যানের উদ্দেশ্যে বলেছে,
“আবেশকে ঘুমের ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়েছে। দেখা করার মতো অবস্থায় নেই।” মাহবুবা সুলতানা ভারী গলায় বললেন। ফুল বুঝে উঠতে পারলো না এতোটা দাম্ভিক কণ্ঠে মাহবুবা সুলতানা ফুলকে কেন বললেন? সে কি কোনোভাবে ছেলের এই অবস্থার জন্য ফুলকে দোষী সাব্যস্ত করছে? যেখানে অপরাধী ঠিক তার পাশেই দাঁড়িয়ে আছে সেখানে কেন ফুলের সাথে এমন আচরণ করছেন মাহবুবা সুলতানা? রেহানা বেগম ফুলের দিকে এগোতে নিলে ফুল কয়েকপা পিছিয়ে যায়,
“আমি তবুও দেখা করবো আবেশ ভাইয়ের সাথে। তাড়াতাড়ি করুন।”
মাথা নেড়ে সামনের দিকে ইশারা করতেই লুইস একজন নার্সকে ডেকে আনে। সেই নার্স কেবিনের দরজা খুলে দিতেই ফুল হম্বিতম্বি করে কেবিনে ঢুকে পড়ে।
“খুব ভালো করেছেন, আমার কথা মতো ছেলেকে ঘুমের ইঞ্জেকশন দিয়ে। বারবার আপনার ছেলের নাটক দেখতে দেখতে বিরক্ত হয়ে গিয়েছি আমি।” চোখ ঘুরিয়ে রেহানা বেগমের দিকে তাকায় উদ্যান, “আর আপনিও কি মেয়ে আসবে শুনে নাটক করতে চলে এসেছেন? বলবেন তো, আসার সময় চিপস, পপকর্ণ নিয়ে আসতাম। সঙ্গে আমার লোকেরাও থাকতো, হয়েছে কি ওরা আবার এন্টারটেইনমেন্ট লাইক করে।”
অনিলা তো মুখ টিপে হাসছে, যদিও সে উপস্থিত বাকিদের কাউকেই চেনে না। তবুও কথোপকথন গুলো মজাদার। উদ্যানের কথার পৃষ্ঠে তপ্ত শ্বাস ফেললেন মাহবুবা সুলতানা,
“তুমি ঠিক কি করতে চাইছে তা আদৌ জানো তো নাকি?”
উদ্যান ভ্রু কুচকে বলল, “আপনার সন্দেহ আছে? অ্যাকচুয়ালি, আমি শুধু নিজের টাই নয় আপনাদের সবার ইনটেনশন সম্পর্কে জানি।”
নিজের গম্ভীর ভাবমূর্তি ধরে রাখতে পারলেন না মাহবুবা সুলতানা। নিষ্ঠুরতার খোলস ছেড়ে কাতর গলায় আওড়ালেন, “কেন এই ধ্বংসাত্মক আচরণ তোমার? ভুলে গেছো? তুমিই বলেছিলে আবেশের থেকে কেড়ে নেবে না ফুলকে।”
ঘাড় কাত করে ফেলল উদ্যান। চোখ বুজে লম্বা শ্বাস টেনে বলল, “যখন বলেছিলাম তখন ও আমার ছিলো না। তবুও বলেছিলাম, ও এক জীবন্ত মারণাস্ত্র। ওকে চাওয়া মানে নিজের মৃ*ত্যুর প্রত্যাশা করা। আপনার ছেলেকে সামলাতে বলেছিলাম কিন্তু আপনি পারেন নি। ফলাফল তো আপনার চোখের সামনেই।”
উদ্যান থামল তারপর ধীর কণ্ঠে বলল, “সেদিন কি বলেছিলাম ভুলে যান, আজ বলছি। মেয়েটা আমার, ওকে নিজের করে রাখার জন্য আমি যেকোনো সীমা অতিক্রম করতে প্রস্তুত। কথাটা মাথায় রাখবেন।”
“আজ ১৬ই জুলাই উদ্যান।” হঠাৎ রেহানা বেগমের কথায় উদ্যানের মুখের আদল পরিবর্তন হয়ে গেল। এতোক্ষণ বেশ খোশমেজাজে কথা বললেও এইমুহূর্তে তাকে বেশ উদ্বিগ্ন দেখাচ্ছে। রেহানা বেগম দম নিয়ে প্রচন্ড সাহসের সহিত বললেন,
“আমার মেয়েটাকে কি কালকে বলি দিয়ে দেবে? সেই জন্যই কি আমাদের সাথে শেষ বারের মতো দেখা করাতে এনেছো?”
ঠোঁটের কোণে একচিলতে হাসি ফুটিয়ে তুলল উদ্যান।
“আপনি এতো ভাবছেন কেন? যেই মেয়েকে সাড়ে আট মাস পূর্বে সাজিয়ে গুছিয়ে জিন্দা কবর দিয়ে দিয়েছেন, আজ সেই মেয়ের জন্যই দরদ উতলে পড়ছে? ব্যপার টা ঠিক হজম হলো না।”
এদিক সেদিক তাকালেন রেহানা বেগম। চাপা গলায় বললেন, “তুমি তো সেই কবর থেকে ওকে তুলে জিন্দা জ্বালিয়ে দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছো। মেয়েটাকে একটু আস্তে মেরো, অনেক আদরে বড় করেছি তো কলিজা পোড়ায়।”
“আমি মারবো না ওকে। তবে সুযোগ পেলে একবার আলিঙ্গন করে নিয়েন।” কথাগুলো বলে অনিলার দিকে তাকায় উদ্যান,
“তুমি কি আমাদের সাথে যাবে? নাকি থাকবে ওর সাথে?”
“আমি থাকছি ফুলের সাথে।” অনিলার কথায় উদ্যান সোজা হাটা ধরল, যাওয়ার পথে লুইসকে বলল,
“ওদের দিকে নজর রাখিস, দুটোই ছলনাময়ী। চোখে ধুলো দিয়ে পালিয়ে যায় না যেন। যদি তেমন কিছু হয়; ওদের খুঁজে পেতে যতক্ষণ লাগবে ততক্ষণ পানিশটমেন্ট চলবে। সো বি অ্যালার্ট।”
“নিশ্চিন্তায় থাকুন মাস্টার, আমি ওনাদের পেছনে ছায়ার মতো লেগে থাকবো।” লুইসের কথায় শান্তচোখে তাকায় উদ্যান। ভয়ে ভয়ে ঢোক গেলে লুইস। সে কি ভুল কিছু বলে ফেলেছে?
“ছায়ার মতো লেগে থাকলে ওরা অন্ধকারের আশ্রয় নিয়ে পালিয়ে যাবে। ওদের মতিগতি বুঝবি না তুই, সারাজীবন অন্ধকারে কাটিয়ে দেবে তবুও ধরা দেবেনা। অবশ্য আমি মেয়েটাকে অক্সিজেনের মতো ঘিরে রেখেছি।”
লুইসকে প্রত্যুত্তর করার সময় দেয় না উদ্যান। ধুপধাপ পা ফেলে দৃষ্টি সীমার বাইরে চলে যায়।
এদিকে ঘুমন্ত আবেশের শিয়রে বসে আছে ফুল। পুরো রুম জুড়ে শুধু দেয়ালঘড়ির একঘেয়ে শব্দ। আবেশের জাগ্রত হওয়ার অপেক্ষা করে লাভ নেই বুঝতে পেরে দীর্ঘশ্বাস ফেলে ফুল, নিস্তব্ধতা অসহনীয় পর্যায়ে চলে গেলে উঠে দাঁড়ায়। ফিরে আসতে গিয়ে থেমে যায় ফুল। আবেশের মাথার কাছে দাঁড়িয়ে ক্ষীণ গলায় বলে,
“জানোয়ার টাকে ক্ষমা করে দিও আবেশ ভাই। তার হয়ে ক্ষমা চাইতে আসার জন্য আমাকেও ক্ষমা করে দিও।”
নিজের কণ্ঠ যেন নিজেই শুনতে পেল না ফুল। ভাবতেও পারছেনা শুধুমাত্র এই কথাগুলো বলার জন্যই সে এখানে এসেছে। নিজের দুহাত সামনে বাড়িয়ে ফুল কাঁপা কাঁপা কণ্ঠে উচ্চারণ করে,
“আমি তাকে শাস্তি দেওয়ার চেষ্টা করেছি আবেশ ভাই। নিজের উপর করা নির্যাতন, অবিচারের জন্য নয়; তোমার গায়ে হাত তোলার জন্য। কিন্তু পারিনি, আমি তাকে শাস্তি দিতে পারিনি। অতোগুলো আঘাত করার পরেও দানবটা নিরুত্তর ছিল। তার সেই নিস্তব্ধতা, অন্যমনস্কতা, স্থবিরতা উল্টো শাস্তি স্বরুপ আমার দিকে ধেয়ে এসেছে। সে এতোটা বিষাক্ত কেন আবেশ ভাই? আর সেই বিষ পানেই বা এতোটা মরিয়া কেন আমি? মানুষের তো নেশাদ্রব্যে আসক্তি জন্মায়, আমার কি তবে বিষ পানে আসক্তি জন্মাচ্ছে? নিজেকে কি আমি শেষ পর্যন্ত বাচাতে পারবো না?” ফুল থামল, কান্নারা যেন দলা পাকিয়ে কণ্ঠরোধ করে ফেলছে। কতোটা অসহায় আর দূর্বল দেখাচ্ছে ওকে। আবেশ যদি দেখতো, তবে কি চুপচাপ শুয়ে থাকতে পারতো? পারতো না। ভারাক্রান্ত হৃদয়ের ভারে নুইয়ে পড়ছে ফুল।
“আমি এই হাতে তাকে রক্তাক্ত করেছি। যদিও তোমাকে যেই কয়টা আঘাত করেছে সেই কয়টা আঘাত আমি করতে পারিনি। দানবটা পাথরের তৈরী, তাকে যে আঘাত করতে যাবে সেই উল্টো ক্ষতবিক্ষত হবে। যেমন টা আমি হয়েছি। তুমি তাকে অভিশাপ দিওনা আবেশ ভাই, বদদোয়া কোরো না।”
ফুল ভাবতেও পারছে না সে নিজের মুখে কথাগুলো বলছে। এই মুহুর্তে যেন তার অবাধ্য মন—মস্তিষ্ক সমেত সব রকমের অনূভুতি নিয়ন্ত্রণ করছে। হু হু করে কেঁদে ওঠে ফুল,
“আমার অনূভুতি সম্পর্কে জানলে তুমি আমাকে ঘৃণা করবে আবেশ ভাই। যেমন টা আমি নিজেকে করি। খুব শীঘ্রই আমি তোমার গল্পের সবচেয়ে খারাপ চরিত্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে চলেছি। এরূপ অবাধ্য হৃদয় নিয়ে আমি নিজের অনূভুতির বিপক্ষে লড়াই করতে পারবো না বেশিক্ষণ। আমার মস্তিষ্ক চেয়েছিল ভালো থাকতে, সুখে থাকতে, যে আমাকে ভালোবাসে তার হতে। কিন্তু আমার হৃদয় অদ্ভুত ভাবে আমার মস্তিষ্ককেও নিজের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নিচ্ছে। যেই পাথরকে ক্ষতবিক্ষত করতে চেয়েছিল সেই পাথরেই মাথা ঠুকে মরে যেতে চাইছে। আমার মৃ’ত্যু অবধারিত, সবচেয়ে করুণ মৃ’ত্যুটা বোধহয় আমার হৃদয়ের হবে। যেই মুহুর্তে আমি ম’রার জন্য প্রস্তুত হয়ে যাবো সেই মুহুর্তে আবার আসবো তোমার কাছে; বিদায় নিতে। আজ তবে আসি?”
হাতের উল্টো পিঠে চোখ মুছে উঠে দাঁড়ায় ফুল। আর একবারও পিছু না ফিরে কেবিন থেকে বেরিয়ে যায়। বাইরে তখনও দাঁড়িয়ে ছিলেন রেহানা বেগম। মাহবুবা সুলতানা ও মেহেক করিডরের চেয়ারে বসে আছে। অনিলাও দুরত্ব বজায় রেখে সেখানে বসে আছে। ফুল বাইরে এসেই আনমনে উদ্যানের খোঁজে আশেপাশে তাকায়। মাকে দেখেও যেন দেখছে না সে। হয়তো ইচ্ছা করেই এড়িয়ে যাচ্ছে,
“অনিলা ম্যাম, মাস্টার কোথায়?” ফুলের কাঠখোট্টা কণ্ঠ শুনে বসা থেকে উঠে এগিয়ে আসে অনিলা,
“তেহ নিজের কাজে গেছে।”
“কি কাজ?”
ফুলের বাচ্চাসুলভ প্রশ্নে অমলিন হাসে অনিলা,
“তাতো জানিনা।”
“কখন আসবে?” হয়তো মাকে এড়িয়ে যেতেই এতো এতো প্রশ্ন করছে ফুল।
“সে আসবে না এখানে। তোমার কাজ শেষ হয়ে গেলে এস্টেটে ফিরে যেতে বলেছে।”
“আমরা কিভাবে যাবো, একা একা?”
“একা কোথায়? ওই দিকে তাকিয়ে দেখো, গার্ডস রেখে গেছে।”
বুকভরে শ্বাস টেনে হাটা ধরল ফুল। কিন্তু রেহানা বেগম ফুলের গতিরোধ করে ফেলেন,
“ফুল, মায়ের থেকে মুখ ফিরিয়ে নেওয়ার মতো কঠিন হৃদয়ের ছিলি না তুই। তবে কি উদ্যান তোকে মে’রে ফেলেছে?”
ফুলের শরীর কেঁপে উঠল। নিজেকে সামলে নিয়ে বলল,
“যার মৃত্যুতে কাঁদার মতো কেউ নেই তার মৃ’ত্যুতে কার কি আসে যায়?”
“কে বলেছে কাঁদার মতো কেউ নেই? আমার চোখের জল কি তবে অশ্রু নয়? নাকি সেই অশ্রুজল মূল্যহীন। আমার কথা বাদই দিলাম, আবেশ তো আছে কাঁদার জন্য অন্তত ওর জন্য নিজেকে বাচিয়ে রাখা যায়না?”
“প্রথমত, আপনার চোখে পানি আসার কারণ আমার শূন্যতা নয়। দ্বিতীয়ত, খুনির মুখে বেঁচে থাকার আহবান শোভা পায়না। অদ্ভুত শোনায়, দয়া করে নিজেকে হাসির পাত্র বানাবেন না। আর পরিশেষে আবেশ ভাই আছে বলেই হয়তো বেঁচে আছি এখনও। যেদিন সেও আমার জন্য কান্না বন্ধ করে দেবে মৃ’ত্যু টা হয়তো সেদিনই গিলে ফেলবে আমায়। আর চিন্তা করবেন না, সেটা খুব শীঘ্রই হবে। আমি নিজেই আবেশ ভাইয়ের কান্না বন্ধ করে দেবো। শুধু নিজেকে একটু প্রস্তুত করে নিই।”
রেহানা বেগম পুরোপুরি স্তব্ধ হয়ে গেলেন। বুকে জড়িয়ে ধরার প্রবল ইচ্ছাটা ধামাচাপা দিয়ে ফুলের রাস্তা থেকে সরে দাঁড়ালেন। ফুলও আর সময় নষ্ট না করে হসপিটাল ত্যাগ করলো।
গাড়ির জানালায় মাথা ঠেকিয়ে বসে আছে ফুল। মিনিট খানেক হয়েছে হসপিটাল থেকে বেরিয়ে এসেছে ওরা।
“এহেম… মিস্ট্রেসা।”
হঠাৎ অদ্ভুত সম্মোধনে ভ্রু কুচকে অনিলার দিকে তাকায় ফুল।
“মিস্ট্রেসার কি মুড অফ?”
“কে এই মিস্ট্রেসা ম্যাম? আপনি কি ফোনে কথা বলছেন? নাকি নিজমনে বিড়বিড় করছেন?” ফুলের প্রশ্নবিদ্ধ চেহারা দেখে মুচকি হাসে অনিলা,
“ফার্স্ট অফ অল, আমাকে ম্যাম বলে ডাকবে না।”
“তাহলে কি বলে ডাকবো?”
“অফকোর্স অনিলা বলে ডাকবে।”
বড়বড় চোখে তাকায় ফুল। বলে কি এই বিদেশিনী?
“ম্যাম আর ইউ ওকে?”
“ইয়েস মিস্ট্রেসা, আইম ফাইন, বাট আই থিংক ইউ’আর নট।”
“ওয়েট, আমাকে আপনি মিস্ট্রেসা বলে ডাকছেন কেন?”
“তুমি তেহ মানে আমাদের মাস্টারের ওয়াইফ। মিস্ট্রেসা বলে ডাকবো না তো কি বলে ডাকবো?”
চোখ উল্টায় ফুল, “উফফ, কি উইয়ার্ড শোনালো। প্লিজ ম্যাম আমাকে এই মিস্ত্রি-ইস্ত্রি বলে ডাকবেন না।”
“তাহলে তুমিও আমাকে ম্যাম বলে ডাকবে না।”
“কিন্তু…
“কোনো কিন্তু না, আর আপনি আপনি বলেও ডাকবে না।”
ড্যাবড্যাব করে তাকায় ফুল,
“আমাদের শয়তান হাজব্যান্ড দুজন যেমন টিম বানিয়ে ঘোরে আমাদেরও তো টিম বানিয়ে দল ভারী করা উচিৎ। আর কতোকাল জুলুম সহ্য করবো আমরা?”
“কিহ! তোমার উপরেও অনি স্যার জুলুম করেন?”
“খাঁচায় বন্দি করে রাখা জুলুম নয়তো কি?”
তব্দা খেয়ে গেল ফুল। অনিলার কথাগুলো বিশ্লেষণ করতে লাগল।
“তুমি নিজের মায়ের সাথে কিভাবে এমন রূঢ় বিহেভ করতে পারলে ফুল? আমার মাকে যদি আমি একবার পেতাম…
বলতে বলতেই চোখ ভিজে যায় অনিলার।
“তুমি তোমার মাকে ভালোবাসো না ফুল?”
গোপনে উত্তপ্ত শ্বাস ফেলে ফুল, “বাসি তো, খুব ভালো বাসি তাকে।”
অবাক হলো অনিলা, “তাহলে কষ্ট দিয়ে কথা বললে কেন?”
মাথা নিচু করে নেয় ফুল, ধীরে ধীরে আওড়ায়, “তার আদেশে আগুনে ঝাপ দিয়েছি। সেই আগুনে দাঁড়িয়ে কিভাবে তাকে আলিঙ্গন করতাম বলো? অভিমানও জমেছে খুব! সেদিন সে আমার কথা কেন একবারও চিন্তা করলো না? তার চোখে কেন মাতৃত্ব খুঁজে পাইনি আমি? তার সেই নিষ্ঠুর আচরণে আমি খুব বাজে ভাবে আহত হয়েছিলাম।”
“তুমি তাদের কথায় তেহকে বিয়ে করতে রাজী হয়েছিলে তাইনা?”
উপরনিচ মাথা নাড়ে ফুল, “হ্যাঁ।”
উদ্দেশ্যেহীন ভাবে জানালা দিয়ে বাইরে তাকাতেই ফুলের চোখ যায় ‘Royal Dance Theatre’ লেখা জমকালো সাইনবোর্ডে। ঘড়ির কাটায় ৬ টা ছুই ছুই।
“এই থামান থামান।”
চলবে,,,
[আজকে আরও অনেক কিছু লিখতে চেয়েছিলাম কিন্তু বড় হয়ে যেতো আর আপলোড করতে দেরি হয়ে যেতো। কাল যেহেতু শুক্রবার সেহেতু ঠিকঠাক লাইক পেলে কাল একটি পর্ব দেবো ইনশাআল্লাহ।]
Share On:
TAGS: অবাধ্য হৃৎস্পন্দন, সোফিয়া সাফা
CLICK HERE GO TO OUR HOME PAGE
-
অবাধ্য হৃৎস্পন্দন পর্ব ১৫
-
অবাধ্য হৃৎস্পন্দন গল্পের লিংক
-
অবাধ্য হৃৎস্পন্দন পর্ব ৩৩
-
অবাধ্য হৃৎস্পন্দন পর্ব ১০
-
অবাধ্য হৃৎস্পন্দন পর্ব ১৩
-
অবাধ্য হৃৎস্পন্দন পর্ব ২৬
-
অবাধ্য হৃৎস্পন্দন পর্ব ৩০
-
অবাধ্য হৃৎস্পন্দন পর্ব ১
-
অবাধ্য হৃৎস্পন্দন পর্ব ১১
-
অবাধ্য হৃৎস্পন্দন পর্ব ১৭