Golpo romantic golpo সুখময় যন্ত্রণা তুমি

সুখময় যন্ত্রনা তুমি পর্ব ৪৬


সুখময়যন্ত্রনাতুমি
neela_rahman
পর্ব_৪৬

নওরিন আফরোজ উঠে এসে সাদাফের সামনে দাঁড়ালো ।দাঁড়িয়ে জানতে চাইলো কি হয়েছে নূরের ?নূর এভাবে অচেতন অবস্থা পড়ে আছে কেন কি করেছিস?

সাদাফ হাতের আঙ্গুল গুলি মুষ্টিবদ্ধ করে অন্যদিকে ঘুরে তাকিয়ে রইলো। নওরিন আফরোজ সাদাফের হাত ধরে টেনে নিজের সামনে এনে বললো ,”কি হয়েছে কথার উত্তর দিচ্ছিস না কেন কি করেছিস নূরকে?”নীলা রহমান

“ভুল করেছে অপরাধ করেছে শা*স্তি দিয়েছি। নাকি এখন আমি ওকে শাস্তিও দিতে পারবো না ?সে অধিকার আমার নেই?”বললো সাদাফ।

নওরিন আফরোজ বলল ,”অবশ্যই আছে অধিকার আছে তাই বলে ওকে তুই মেরে অজ্ঞান করে ফেলবি?”

“অজ্ঞান করার মত কিছুই করিনি ।একটা থাপ্পড় দিয়েছি ও থাপ্পড় খেয়ে অজ্ঞান হয়ে গেলে তাতে আমার কিছু করার নেই কারণ ওর ভুলটা অনেক বড় ওকে আরো মা*রা উচিত ছিল।”বললো সাদাফ।

“ভুল যদি এত বড়ই হয়ে থাকে তাহলে বড়দের কাছে বিচার দিলি না কেন ?ভুলে যাস না ওর বাবা-মা এখনো জীবিত আছে ।আর তাছাড়া তোর বাবা তো আছেই ।তোর বাবা যদি শুনতে পারে তুই নূরের গায়ে হাত তুলেছিস তাহলে কি হবে ভেবে দেখ!”বললো নওরিন আফরোজ।

নরিন আফরোজ কিছুক্ষণ থেমে ছেলের দিকে তাকিয়ে আবার বলল ,”সত্যি করে বল নূর কি এমন করেছে ?তুই তো কখনো নূরের দিকে চোখ তুলে তাকিয়ে কথা পর্যন্ত বলিস না ।তাহলে আজকে কি এমন করল একবারে থাপ্পর লাগিয়ে দিলি?”

নওরিন আফরোজ আরো কিছু বলবে তার আগেই হনহনিয়ে সাদাফ রুম থেকে বের হয়ে গেল কারো কোন কথার প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার মুডে নেই এই মুহূর্তে ।তাই ওর নিজের রুমে যেতে হবে যেয়ে মাথা ঠান্ডা করতে হবে।

সাদাফ রুমে ঢুকেই সাথে সাথে ওয়াশরুমে চলে গিয়ে ওয়াশরুমে শাওয়ার অন করে পানির নিচে দাঁড়িয়ে রইল ।মাথা ঠান্ডা করার জন্য ।কিছুক্ষণ মাথা ঠান্ডা করে হাতের দিকে তাকালো এই হাত দিয়ে নূরের গায়ে আ*ঘাত করেছে ।ওর ছোট্ট নূর যার দিকে কখনো একটু জোরে শব্দ করে কথা বলে দেখেনি পর্যন্ত।

পরক্ষণে মনে পড়ে গেল নূরের কাছ থেকে পাওয়া চিঠিটির কথা যে চিঠিতে স্পষ্ট লেখা আছে যদি নুর সেই ছেলেকে ভালোবাসে তাহলে ও তাড়াতাড়ি স্কুলে যাবে ।নুর তো আজকে তাড়াতাড়ি স্কুলে গিয়েছে তাহলে কি সেই ছেলেকে ভালবাসে?

যদি ওই ছেলেকে ভালোবেসে থাকবে তাহলে সাদাফের বিয়ে নিয়ে এত টেনশন কেন নূরের ?আর এতদিন এগুলো কি ছিল ?সাদাফ কি তাহলে ভুল বুঝল নূরের সম্পর্কে?”মনে মনে ভাবলো সাদাফ।

এদিকে নূরের জ্ঞান ফেরার পর থেকেই নূরের শরীরে হালকা জ্বর শুরু হয়ে গেল ।বাড়িতে কেউ হুমায়ূন রহমান ও ফজলুর রহমানকে জানায়নি সাদাফ নুরকে মেরেছিল ।

সামিয়া বেগম পরে শুনেছে নুরকে চড় মেরেছে সাদাফ।উনি অবশ্য ভেবেছেন যেহেতু বলেছে নুর অন্যায় করেছে তাহলে হয়তো বড় ধরনের কোন অন্যায় করে থাকবে না হলে সাদাফ তো মা*রার ছেলে নয়।নূর অসুস্থ হয়ে গিয়েছে সবাই ভেবেছে এমনি হালকা-পাতলা জ্বর ।

হুমায়ূন রহমান ও ফজলুর রহমান কে ওই ভাবে নুরের জরের কথা বলা হয়নি ।বলেছেন ও ঘুমিয়ে গেছে তাই বাবা বা চাচা কেউ আর ডিস্টার্ব করতে আসিনি ।আসলে হয়তো গালের দা*গ দেখেই বুঝে যেত কি হয়েছে।নুর ঘুমিয়ে আছে নিজের রুমে কান্না করতে করতে কখন ঘুমিয়ে গেছে নিজেও বলতে পারবেনা নূর।

রাত বাজে একটা ।সাদাফের কোনভাবেই ঘুম আসছে না ।সাদাফ জানতে পেরেছে নুরের জ্বর এসেছে কিন্তু ওই রুমে যেতে পারছে না ।হঠাৎ কি মনে করে যেন পকেট থেকে আবার নূরের কাছ থেকে পাওয়া চিঠিটি বের করে হাতে নিল।

বের করে আবার চিঠিটি মনোযোগ দিয়ে পড়তে লাগলো ।কত শতবার পড়ছে চিঠিটি তার হিসেব নেই ।হঠাৎ করে কি মনে করে চিঠিটি উল্টোপিঠ ঘুরিয়ে দেখল একটি লাভ শেপ আঁকা যেখানে দুটি নাম স্পষ্ট ভাবে জ্বলজ্বল করছে ।দেখেই সাদাফের যেনহুঁশ উড়ে গেল বুঝতে পারলো কত বড় ভুল করে ফেলেছে ।

চিঠিতে স্পষ্ট করে লেখা আছে নূরের এক বান্ধবীর রাহা নাম এবং ওই ছেলের নাম তার মানে চিঠিটি নূরের ছিল না ।অথচ শাস্তি নুরকে দেওয়া হয়ে গেছে।

সাদাফ জানে না এই মুহূর্তে কি করবে ।রাত বাজে দুইটা কোনভাবে আর ঘরে মন টিকাতে পারছে না ।পাশের রুমে নূর হয়তো ছটফট করছে কি করবে কোন মুখে যেয়ে নূরের সামনে দাঁড়াবে ।সেটাও বুঝতে পারছে না । নীলা রহমান

অতঃপর সিদ্ধান্ত নিল যাই হোক নুরের রুম এখন যেতেই হবে না হলে যে এখন দম বন্ধ হয়ে ম*রে যাবে।
সাদাফ নূরের রুমে ঢুকতেই নূর যেন জেগে গেল ।খুব বেশি একটা গভীর ঘুমে ছিল না থেকে থেকে কান্না করছিল ।জ্বরের ঘোরে ছিল ।চোখ পিটপিট করে খুলে দেখল সাদাফ রুমে ঢুকছে।

সাদাফ এগিয়ে গিয়ে নূরের সামনে দাঁড়ালো ।দেখল নূরের চোখ হালকা খোলা, সাদাফ নুরের সামনে হাঁটু ভে*ঙ্গে বসে নুরের গালে হাত রেখে জিজ্ঞেস করল ,”ব্যাথা করছে খুব?”
নুর: আপনার জানতে হবে না।

সাদাফ: কার জানতে হবে তাহলে?

নুর: যে খুশি সে জানুক।আপনি আমার রুম থেকে যান।

সাদাফ বিছানায় উঠেই জড়িয়ে ধরলো নুর কে।নুর ছোটার জন্য এলোপাতাড়ি হাত পা নাড়তে লাগলো। দুর্বল শরীর তাই পেরে উঠলো না নুর।

“ছাড়ুন অসভ্য নির্দয় লোক।কিসের অধিকার ফলাতে আসেন বারবার??”বললো নুর।
সাদাফ বললো,”প্রতিবেশীর হক।তোর রুমে এসে জড়িয়ে ধরার হক সবার আগে আমার।বেশি নড়লে আরেক টা চড় খাবি চুপচাপ বুকে থাক।সরি ভুল হয়ে গেছে আমার মাফ করে দে।” বলেই নুরের গালে চু*মু খেলো সাদাফ।

ব্যাথায় নুর কোকিয়ে উঠলো।সাদাফব ধীরে ধীরে ছোট ছোট চুমু খেতে লাগল নুরের গালে।

চলবে……..
Neela Rahman
কপি করা সম্পূর্ণ নিষেধ

Share On:

TAGS: ,



CLICK HERE GO TO OUR HOME PAGE
Related Posts
 

0 Responses

Leave a Reply