#সুখময়_যন্ত্রনা_তুমি
#neela_rahman
#পর্ব_৩৩
রাত বাজে দশটা এখনো সাদাফ বাসায় ফেরেনি ।নুর কাউকে জিজ্ঞেস করছে না কিন্তু মনটা খুব আনচান আনচান করছে ।
একা একা খাবার টেবিলে বসে অল্প কিছু খাবার নাড়াচাড়া করে খেয়ে উঠে গেছে এখন ড্রইংরুমে সাথে বসে আছে।
এতক্ষণ সাদাফ বাসায় থাকলে খাওয়া দাওয়া করে সাদাফ কে দেখে ঠিকই রুমে চলে যেত কিন্তু এখন বিভিন্ন বাহানায় ড্রয়িং রুমে বসে সবার সাথে গল্প করছে।
হুমায়ূন রহমান ফজলুর রহমানের দিকে তাকিয়ে বললেন ,”রাত দশটা বাজে মিটিং তো নয়টার দিকে শেষ হয়ে যাওয়ার কথা ।এত সময় হলো ছেলেটা এখনো বাসায় আসছে না । চিন্তার বিষয়।”
ফজলুর রহমান বলল ,”হ্যাঁ ভাইয়া ঠিকই বলেছ বাসা থেকে তো অফিস বেশি দূরে না ।দাঁড়াও আমি অফিসে ফোন করে জেনে নিচ্ছি মোবাইল তো ধরছে না।”
নূরের আর মন টিকছে না ।মনটা কেমন আনচান আনচান করছে ।ভীষণ খারাপ লাগছে মনে পড়ল গতকাল যখন বেড়াতে গিয়েছিল সেই সময় কথা কা*টাকাটি হয়েছিল সাদাফ এর সাথে নূরের।
গতকাল_______
গাড়িতে দুই বোন পিছনে বসেছে দুই ভাই বসলো সামনে ।গাড়ি যেতে যেতে 20 মিনিটের মাথায় রিমা বলে উঠলো ভাইয়া গাড়ি থামাও আইসক্রিম খেতে খেতে যাব।
সাদাফ গাড়ি থামালো আড় চোখে বারবার নুরকে দেখছে বোঝার চেষ্টা করছে নূরের শারীরিক অবস্থা কেমন জ্বর থেকে মাত্র উঠেছে ভালো লাগবে এজন্য একটু নিয়ে বের হয়েছিল ।জ্বর মুখে নাকি টক খেতে ভালো লাগে চিন্তা করেছে একটু ফুচকা খাওয়াবে।
তাই গাড়ি থামালেও সাদাফ কঠিন ভাবে বলে দিলো নূর আইসক্রিম খাবে না ।নুরের এখন আইসক্রিম খাওয়া যাবে না ।এমনি ঠান্ডা জ্বরে ভুগছে ।
রিমা বলল ,”তাহলে থাক আমি খাব না।ও খাবে না বিষয়টা কেমন দেখা যায় তাহলে চলো আমরা চটপটি ফুচকার দোকানেই যাই।
চটপটি খেয়ে কিন্তু আমরা কুড়িল বিশ্বরোডে ঘুরবো ভাইয়া গাড়ি দিয়ে তুমি কিন্তু প্রমিস করেছ ভুলবে না।”
সাইমন মনে মনে ,”ইস ভাইয়ের সাথে কত আবদার কত রং ঢং আর আমার সাথে কথা বলার সময় ওর যত বাগড়া বেড়ে যায়।”
হঠাৎ সাইমনের চোখ পড়লো আয়নায় ।দেখল রিমা ওর দিকে তাকিয়ে ছিল ।সাইমনের দৃষ্টির সাথে রিমা দৃষ্টি মিলতেই রিমার সাথে সাথে চোখ সরিয়ে ফেলে । নীলা রহমান
সাইমনের কাছে কেমন যেন লাগল দৃষ্টিটা ।সায়মন এক নজরে তাকিয়ে আছে আয়নার দিকে ।যদিও রিমা তাকিয়ে নেই তবুও রিমাকে স্পষ্ট ভাবে আয়নায় দেখা যাচ্ছে।
রিমাকে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে পরখ করছে সায়মন ।
চোখ জোড়া ভীষণ সুন্দর ভ্রু টা খুব সুন্দর জোড়া লাগানো যাকে বলে ।কালো কুচকুচে চুল মাঝখানে সিঁথি করেছে।
ঠোঁটের বা পাশে একটি গাড় তিল আছে নাকটা সরু সুন্দর ছোট্ট একটা নাকে ফুল পড়েছে।
কানে ছোট এক জোড়া ঝুমকা ।একটু পর পর চুলগুলো কানের পিছনে গুঁজে দিচ্ছে ।আর আয়নায় তাকাচ্ছে না রিমা।ঠোঁটগুলো হালকা পিংক কালারের লিপস্টিক লাগিয়েছে
হঠাৎ মনে পড়ে গেল এই ঠোঁটে চু*মু খেয়েছিল গতকাল ।সাইমনের এখন ভীষণ ল*জ্জা লাগছে।
বারবার চোখ চলে যাচ্ছে রিমার ঠোঁট দুটো দিকে ।চোখ বন্ধ করে ফেলল সাইমন ।সিটে মাথা এলিয়ে দিয়ে মনে করতে লাগলো গতকাল চু*মু খাওয়ার সেই দৃশ্যটি ।ভীষণ ভালো লেগেছিল ওই সময় রাগের মাথায় করে ফেলেছিল কিন্তু যখনই অনুভব করে তখনই মনে হয় কি এক ভিশন অনুভূতি জন্ম নিয়েছে রিমার প্রতি ।
কেমন এক অধিকারবোধ জানে না এটা কি ।তবে রিমা অন্য কাউকে চু*মু খেতে পারবে না। মনে মনে ঠিক করে ফেলল সাইমন এই ঠোঁটে একবার সাইমন চু*মু খেয়েছে এই ঠোঁটে অন্য কাউকে চু*মু খেতে দিবে না সায়মন হার
হঠাৎ গাড়ি ব্রেক করায় সাইমন তাকালো দেখল চটপটি ফুচকার দোকানের সামনে এসে গাড়ি থেমেছে ।সায়মন আর কোন কথা বলল না ।চুপচাপ গাড়ি থেকে নামলো ।সবাই চটপটি ফুচকার দোকানে ঢুকবে ঠিক এমন সময় দেখল সাবা কে।
নূরের চোয়াল শক্ত হয়ে গেল ।এই মুহূর্তে মনে মনে ভাবল এর জন্য চটপটি ফুচকার দোকানে নিয়ে এসেছে কারণ সাবা এখানে আসবে ।এই জ্বর শরীরে নুরকে সাথে করে টেনে নিয়ে এসেছে কেনো তাহলে।কি চায় এই লোকটা ? নূর চুপচাপ মেজাজ গরম করে মাথা নিচু করে রাখল।
কেন এমন করছে সাদাফ ভাই ?বারবার নুর নিজেকে প্রশ্ন করছে ।আজকের দিনটা কি বাদ দেওয়া যেত না ?নুর এত অসুস্থ ছিল গতকাল ওনার জন্যই ।সাবা আপুকে যখন এতই ভালোবাসে তাহলে নূরকে কেন বারবার ওনার সাথে জড়ায় ?নূরের যেন চোখ ছাপিয়ে কান্না চলে আসছে কিন্তু কিছুই বলছে না চুপচাপ মাথা নিচু করে বসে রয়েছে।
সাইমন সাবাকে দেখে অভিবাদন জানাতে চলে গেল সাথে রিমা ও ।চুপচাপ তাকিয়ে রইল সাদাফ নূরের দিকে ।সাদাফ নিজেও জানত না সাবা এখানে আছে কিন্তু সাদাফ বুঝতে পারছে বড্ড বড় ভুল হয়ে গেছে এখানে নিয়ে আসা যদি আগে চলে যেত তাহলে এই অঘটন ঘটতো না এখন যা ঘটার ঘটে গেছে।
নুরকে আর কোনোভাবেই বুঝানো যাবেনা যে সাদাফ সাবার ব্যাপারে কিছুই জানতো না ।কিন্তু ভদ্রতা খাতিরে সাদাফ নুরকে সাথে করে নিয়েই এগিয়ে গেল সাবার কাছে ।সাবা এসে সাথে সাথে হাত জড়িয়ে ধরল সাদাফের ।কারণ সাবা জানে এখনো নাটক চলছে সবাইকে না করা হয়নি।
কিন্তু সাদাফ চাচ্ছিল না আজকে এই ঘটনা ঘটুক কারন নূরের শরীর অসুস্থ ।আজকে শুধু নূরের রিফ্রেশমেন্ট এর জন্য নিয়ে এসেছিল কিন্তু হিতের বিপরীত হয়ে গেল ।আরো বেশি মন খারাপ হয়ে গেল মেয়েটার ।এসব কথা ভাবতে ভাবতেই সাদাফ একটি দীর্ঘশ্বাস ফেলল।
সাবা সাদাফের হাত ধরে নূরের দিকে তাকিয়ে বলল ,”কেমন আছো নুর তোমাকে আজ কেমন অসুস্থ অসুস্থ লাগছে কেন ?”
নূর কোনমতে একটু মুখটা তুলে আনতে আমতা করে বলল ,”কই নাতো গতকাল একটু জ্বর এসেছিল আজকে ভালো আছি আপনি ভালো আছেন?”
সাবা সাথে সাথে সাদাফের দিকে তাকিয়ে হাত আরো জোরে ধরে বলল,” এতক্ষণ ছিলাম না এই যে সাদাফকে দেখতে পেলাম এখন ভীষণ ভালো লাগছে ।সাদাফ আস্তে আস্তে সাবার হাতটা একটু সরিয়ে দিয়ে নূরের দিকে তাকালো ।দেখল নূর নিচের দিকে তাকিয়ে আছে ।সাদাফের ভালো লাগছে না কিছুই ভালো লাগছে না।
নূর অসুস্থ আরও না অসুস্থ হয়ে যায় এই টেনশনে পড়ে রইল ।তারপর তাড়াতাড়ি সাইমনের দিকে তাকিয়ে বলল ,”সাইমন চটপটি অর্ডার দিয়ে খেয়েদেয়ে তাড়াতাড়ি বের হতে হবে আমাদের ।”বলেই নূরের হাত ধরে টেবিল নিয়ে বসিয়ে বলল ,”বস আমি আসছি।নুর চুপচাপ দেখলো সাদাফের যাওয়া।”
সেদিন চটপটি খাওয়া শেষ করে তাড়াহুড়া করেই বের হয়ে গিয়েছিল সাদাফ ওরা ।সাবার সাথে বেশি একটা কথা বলার সুযোগ হয়নি ।কুড়িল রোডে যেতে চেয়েছিল কিন্তু নূরের মন খারাপ দেখে বিভিন্ন অজুহাতে সাদাফ বাড়িতে ফিরে এল ।এই মুহূর্তে আর নূরের এরকম মুড নিয়ে কোথাও যেতে চাচ্ছিল না।
রাত বারোটা সাদাফ নুরের রুমে বাইরে এসে দাঁড়ালো ।সন্ধ্যার পর থেকে নূর আর সাদাফের সাথে কোন কথা বলেনি তাই ভাবলো নূরের সাথে একটু কথা বলা দরকার ।এই মুহূর্তে সবাই ঘুমাচ্ছে তাই সমস্যা হবে না এটা ভেবেই সাদাফ নুরের রুমে ঢুকলো ।ঢুকে দেখল ড্রিম লাইট জ্বালানো শুয়ে আছে তবে বুঝা যাচ্ছে নুর ঘুমায়নি কারণ নড়াচড়া করছে।
সাদাফ একটু আস্তে করে ডাকলো নূর ?নূর সাথে সাথে চমকে তাকালো সাদাফের দিকে ।কিন্তু কোন কথা বলল না চুপচাপ শুয়ে রইলো।
সাদাফ আর একটু এগিয়ে এসে নূরের কাছে হাঁটু ভেঙ্গে বসে বলল ,”শুনছিস ঘুমাচ্ছিস ?একটু কথা ছিল উঠ ।”
নুর বলল ,”আমি এখন কোন কথা বলবো না ।আপনি আপনার রুমে যান আমার ভীষণ ঘুম পাচ্ছে।”
সাদাফ বলল ,”বাড়াবাড়ি করিস না আমার কথা একটু শোন শুনে তারপর তুই ঘুমাবি ওঠ।”
নুর বলল ,”বললাম তো আমার ঘুম পাচ্ছে আপনি এখন রুমে যান আমার কোন কথা নেই আপনার সাথে ।আর আপনি যখন তখন আমার রুমে আসবেন না।”
নূর আজকে সাদাফ ভাইয়ের সাথে খারাপ ব্যবহার করবে ।ভীষণ খারাপ ব্যবহার করবে ।এতই যখন সাদাফ ভাই সাবা আপুকে ভালোবাসে তাহলে নূরের সাথে কেন এসব এরকম করে ?নুর আর এগুলো কখনো প্রশ্রয় দিবেনা এগুলো মেনেও নিবেনা।
সাদাফ বিরক্ত হয়ে নূরের হাত ধরে যেই নুরকে টেনে তুলবে ওমনি নূর দুই হাত দিয়ে ইচ্ছামত শরীরে বুকে গলায় সাদাফের আঁ*চড় কা*টতে লাগলো হাতের নখ দিয়ে।
আ*চড় কা*টা শেষ বলল ,”বললাম তো আমার আপনার সাথে কোন কথা নেই আর আমার রুমে আসবেন না আপনি এখন বেরিয়ে যান।”
সাদাফের গলা বুক সব ভীষণ জ্ব*লছে কিন্তু ভাবল এই মুহূর্তে বেরিয়ে না গেলে মেয়েটা আরো চি*ৎকার চেঁচামেচি করবে বিষয়টা খারাপ দেখাবে। তাই বলল ,”পরে কথা হবে তোর সাথে।
আর এই দাগ গুলো চিনে রাখিস এটার হিসাব বাকি রইল পরে তোকে সুদ সহ ফেরত দিব ।”
বলেই হনহনিয়ে রুম থেকে বের হয়ে গেল সাদাফ।
গলা বুকে ভীষণ জ্ব*লছে হাত দিয়ে কা*টা ক্ষ*ত দাগ গুলো দেখছে।
বর্তমান________
এসব ভাবতে ভাবতেই নুর বারবার দরজা দিকে তাকাতে লাগলো ।এখনো সাদাফ ভাই আসছে না দশটা পার হয়ে সাড়ে দশটা বেজে গেল ।এখন তো সবার খুব টেনশন হচ্ছে ।অফিস থেকে জানানো হয়েছে সাদাফ আরো এক ঘন্টা আগে বের হয়ে গেছে।
সাইমন সিদ্ধান্ত নিল গাড়ি নিয়ে বের হবে পুরো বাড়ি থেকে অফিসের রাস্তা পর্যন্ত দেখবে সাদাফ ভাই কোথায় গেছে।
যেই উঠে দাঁড়ালো ওমনি দেখল দরজা দিয়ে ভিতরে প্রবেশ করছে সাদাফ।সবাইকে এত রাতে নিচে একসাথে দেখে সাদাফ বুঝতে পারল ও ফিরে না আসায় সবাই অপেক্ষা করছিল ।
তাই এসে বললো ,”রাস্তায় আজকে প্রচুর জ্যাম তাই দেরি হয়ে গেল ।মোবাইলে চার্জ ছিল না তাই কারো ফোন ঢুকেনি।”
নূরের দিকে একবার সাদাফ আড় চোখে তাকালো দেখল নূর ওখানে বসে আছে ।তার মানে ওর জন্যই অপেক্ষা করছিল কিন্তু নূরকে পাত্তা না দিয়ে সরাসরি চলে গেল হুমায়ুন রহমানের কাছে ।বলল ,”রুমে এসো তোমার সাথে আমার একটু কথা আছে ।”
হুমায়ুন রহমান ভাবলো না জানি ছেলে কি বো*ম ফাটাবে ছেলে টা।
ফজলুর রহমান অবাক হয়ে গেলেন এসেই বাবাকে নিয়ে গেল কথা আছে কি এমন কথা আছে আমাদের সামনে বলা যেত না ?টেনশনে পড়ে গেলেন ফজলুর রহমান।
হুমায়ূন রহমান রুমের ভিতর ঢুকতেই সাদাফ রুমে দরজা লাগিয়ে দিল ।তারপর এক মুহূর্ত সময় ব্যয় না করে বাবার সামনে এসে দাঁড়িয়ে বলল,”ছোট বাবাকে বল তার মেয়ে আমাকে বিয়ে করতে চায় ।”
হুমায়ুন রহমান : অবাক হয়ে তাকালেন সাদাফের দিকে ।বলল ,”কি নুর তোকে বিয়ে করতে চায় ? তোকে দেখলে তো খরগোশের মতন নেতিয়ে থাকে মেয়েটি।”
সাদাফ: তোমার খরগোশের মত ভীতু মেয়েটি আমাকে একা পেলে জংলি বিড়ালের মত হয়ে যায়।
দেখবে কি করেছে আমায় আচড় কেটে??”
শার্ট খোলার ভান ধরে বললো সাদাফ।
হুমায়ূন রহমান: থাম বেয়া*দদপ ছেলে বাপ হই তোর।একটু তো ল*জ্জা কর।কি এমন করেছিস যে ওই ভিতু মেয়েটা তোকে আ*চড় কাট*লো?![]()
![]()
তোকে জন্ম দিয়ে যে পা*প করেছি তা এই জনমে আর মোচন হবে না।
চলবে……….
Neela Rahman
কপি করা সম্পূর্ণ নিষেধ
#সুখময়_যন্ত্রনা_তুমি
#neela_rahman
#পর্ব_৩৪
বাবার সাথে কথা শেষ করে সাদা হাত মুখ ধুয়ে ফ্রেশ হয়ে নিচে খাওয়ার জন্য আসলো যদিও সবার খাওয়া শেষ কিন্তু সবাই আগে থেকে ড্রয়িং রুমে ছিল নুরও গেল না নুরু চুপচাপ ড্রয়িং রুমে বসে রইল।
রিমা সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে উপরে চলে গেল ওর প্রজেক্টে কিছু কাজ আছে সেটা শেষ করতে হবে।
সাইমন মনে মনে প্ল্যান করতে তুই প্রোজেক্টের কাজ শেষ কর কাজ শেষ হলে আমি তোকে ধরছি ।তুই অনেক বার বেড়েছিস আজকে এটা কমাতে হবে। ফোন দিলে কথা বলে না সামনে গেল কথা বলে না ঠিকমত কি পেয়েছে মেয়েটা সাইমনের কি কোন দাম নেই আজকে হাড়ে হাড়ে টের পাবে সাইমন কতদামি।
সাদাফ টেবিলে বসে খাচ্ছে পাশে বসে আছে নওরিন আফরোজ ।সামিহা বেগম রান্নাঘরে সবকিছু গুছিয়ে রাখছে ।নুর এদিক সেদিক তাকিয়ে দেখার চেষ্টা করছে আর চোখে সাদাফকে কিন্তু সাদাফ কোন পাত্তাই দিচ্ছেন না আজকে।
নুরের ভীষণ মন খারাপ করছে ।এমন করছে কেন সাদাফ ভাই?না হলে রাগের বসে একটু আচ*ড়ি কে*টেছে কি এমন হয়ে গিয়েছে ?এই বড় দেহটা নিয়ে ছোট্ট নূরের একটু আঁচ*ড়কে সহ্য করতে পারে না? নীলা রহমান
বুকে এক পাহাড় সমান অভিমান জড়ো হতে থাকলো নূরের।ঠিক এমন সময় ডাক এল নওরিন আফরোজ এর ডেকে বলে ,”নূর একটু এদিক আয় তো মা ।”
নুর যেন এই ডাকের অপেক্ষায ছিল সাথে সাথে ধূপদাপ পা ফেলে টেবিলের সামনে এসে পড়ল।
এসে বললো,”বড় আম্মু ডেকেছো? কিছু বলবে ?
নওরিন আফরোজ বলল ,”হ্যাঁ এই দিকে আয় একটু। রান্নাঘর থেকে গিয়ে একটু মাং*সের তরকারিটা নিয়ে আয় গরম করে রেখেছি।”
নূর সাথে সাথে দৌড়ে গেল রান্নাঘরে ।সামিহা বেগম তরকারি বেড়ে দিতেই নুর মাং*সের বাটি নিয়ে এসে টেবিলে রাখল ।
নওরিন আফরোজ বললো,”একটু বেড়ে দে তো মা।ওতো আবার একা একা বেড়ে খায় না।”
নূর মনে মনে খুশি হলো ।আজ জীবনে প্রথম সাদাফ কে নিজের হাতে বেড়ে খাওয়াবে নুর।ভিতরে কেমন যেন একটা খুশি খুশি সুখ সুখ অনুভূতি হতে লাগলো নুরের।
সাদাফ চুপচাপ খাচ্ছে মাথা তুলে তাকাচ্ছে না ।কিন্তু সাদাফ মনে মনে খুশি নূর আজকে ওকে প্রথমবার খাবার বেড়ে দেবে ওর পাশে দাঁড়িয়ে থাকবে ।সাদাফের ও খুব ভালো লাগছে কিন্তু প্রকাশ করছে না।
নওরিন আফরোজ বলল ,”সব টুকরো কিন্তু দিস না ও কিন্তু বেছে বেছে খায় ।জানিস তো কেমন মাং*স খায় ?”
নুর সাথে সাথে বললো ,”হ্যাঁ জানি হাড় সহ মাং*সগুলো খায় আমি দেখেছি।”
নূর বেছে বেছে দুই পিস হাড় সহ মাংস তুলে দিল সাদাফের প্লেটে ।তারপর সাদাফ পানির গ্লাস খালি দেখে সাথে সাথে পানির জগ থেকে পানি ঢেলে দিল।
দিয়ে সাদাফের পিছনে দাঁড়িয়ে রইলো গেল না ।নওরিন আফরোজ বলল ,”কিরে দাঁড়িয়ে আছিস কেন ?চেয়ারে বস ।”
নুর বলল ,”না না উনার যদি আরো কিছু লাগে সেজন্য দাঁড়িয়ে আছি।”
“উনার” নূরের মুখ থেকে এই কথাটি শুনেই সাথে সাথে সাদাফের খাবার মনে হয় গলায় আটকে গেল ।কাশি উঠে ।
গেল সাথে সাথে নুর পানির গ্লাসটি এগিয়ে দিল সাদাফের দিকে ।সাদাফ নুরের দিকে এক পলক তাকিয়ে ডক ডক করে পানি গুলো গিলে ফেলল।
এদিকে নওরিন আফরোজ অবাক হয়ে তাকিয়ে রইল নূরের দিকে ।এতদিন ভাইয়া বলে ডেকেছে আজ হঠাৎ কি হল উনার কেন বলল ?বিষয়টা খটকা লাগলো নওরিন আফরোজ এর।
রাত বারোটা ।বারোটা বাজার অপেক্ষায় ছিল সাইমন ।এতক্ষণে রিমার প্রজেক্ট এর কাজ শেষ ।সায়মন ধীরে ধীরে নিজের রুম থেকে বের হয়ে এগিয়ে গেল রুমের দিকে রুমে দরজা চাপানো ছিল টেবিলে বসে কিছু একটা আঁকাউকি করছিল রিমা।
সাইমন রুমে ঢুকেই দরজা লাগিয়ে দিল সাথে সাথে ।পিছনে ফিরে তাকিয়ে দেখলো সাইমনকে দরজা লাগাচ্ছে ।রিমা উঠে এসে বলে ,”দরজা লাগালি কেন?”
সীয়মন বলল চুপ এত জোরে কথা বলিস কেন আর তুই এত বে*য়াদব হচ্ছিস কেন দিন আমাকে তুই করে বলিস কেন?
শোন একটা চু*মু থুক্কু দুইটা চু*মু দিয়ে যদি তুই তুমি থেকে তুইতে নেমে আসিস তাহলে এই তুই থেকে আপনি করার জন্য প্রয়োজনে চারটা চু*মু দেবো আমি।”
রিমা রাগে ফুঁসছে।মুখটা খুলেই বাজে কথা বলছে ছেলেটা ।বলল ,”তুই কি এখন বের হবি রুম থেকে নাকি আমি হাতে যা আছে তাই তো মাথার মধ্যে ফিকে মা*রবো?”
সাইমনেরও মাথা হঠাৎ গরম হয়ে গেল ।ধুপ ধাপ পা ফেলে টেবিলের সামনে এসে রিমার সামনে দাঁড়িয়ে রিমাকে পাশ কাটিয়ে দুই হাত দিয়ে টেবিলের উপর ভর দিয়ে দাড়ালো।
হঠাৎ এত কাছে চলে আশায় সায়মন রিমা ভয় পেয়ে গেল ।একটু ঝুঁকে পিছনের দিকে টেবিলের উপরে পড়ল রিমা।
সাইমন ঘনঘন নিঃশ্বাস নিচ্ছে খুব কাছে চলে এসেছে রিমার ।সায়মনের ঘনঘন উ*ত্তপ্ত নিঃশ্বাস রিমা যেন দ*গ্ধ হয়ে যাচ্ছে ।মুখ ঘুরিয়ে নিলো রিমা।
“কেন বারবার রা*গিয়ে দিস আমাকে কি প্রমাণ করতে চাইছিস?”জানতে চাইলে সাইমন ।
রিমা অন্যদিকে মুখ ঘুরিয়ে রেখে বলল ,”আমার ঘরে যখন তখন কেন চলে আসো? জানো না একটা মেয়ের রুমে যখন তখন আসতে হয় না ?আমি যেকোনো সময় যে কোন অবস্থায় থাকতে পারি কেন আসো?”
সাইমন কিছুক্ষণ রিমার দিকে অপলক চেয়ে রইল ।তারপর রিমার মুখটা নিজের হাতের আঙ্গুল দিয়ে একটু ঘুরিয়ে নিজের রিমার চোখে চোখ রেখে বলল ,”জানিনা কেন আসি কিন্তু এটা জানি আসতেই হত না হলে যে আর চলছে না। আগেও তো আসতাম যখন তখন আসতাম তখন তো সমস্যা হয়নি এখন কি সমস্যা?”
“তখনকার কথা আর এখনকার কথা এক নয় ।এখন সিচুয়েশন চেঞ্জ হয়ে গেছে ।”আমতা আমতা করে বলল রিমা। লেখিকা নীলা রহমান।
সাইমন রিমার চোখে চোখ রেখে ঘোর লাগা কন্ঠে বলল ,”তাই সিচুয়েশন চেঞ্জ হয়ে গেছে ?শুধু তো দুটো চু*মু খেয়েছি ।চু*মুতে সিচুয়েশন চেঞ্জ তাহলে আরেকটা খাই সিচুয়েশন আরো একটু ই*ন্টেন্স করি।”
রিমা চোখ বন্ধ করে ফেললো সায়মনের কথায়।
নুর ধীরে ধীরে এক পা দু পা করে বিছানার কাছে এসে দাঁড়িয়ে ধীরে ধীরে হাত বাড়িয়ে দিল সাদাফের টি-শার্টের গলার কাছটায়। টি-শার্টের গলা একটু টেনে ধরে উঁকি দিয়ে দেখতে লাগলো কোথায় কোথায় আ*চর কে*টেছিল নুর নিজের নখ দিয়ে।
হঠাৎ সাদাফ নুরের হাত চে*পে ধরলো বুকের সাথে।
তারপর কিছুক্ষণ নূরের দিকে তাকিয়ে থেকে একটি দীর্ঘশ্বাস ফেলল ।ফেলে নূরকে হ্যাচকা টানে বিছানায় ফেলে নূরের উপরে ঝুঁকে এসে নুরে দুই হাত বিছানায় চে*পে ধরে বলল ,”এখন এটার প্রতি*শোধ নেব ।বলেছিলাম না হিসাবটা তোলা রইল সুদ সহ ফেরত দিবো।”
নুর ভয় পেয়ে বললো,”তাহলে কি আপনি নখ দিয়ে আমাকে আঁ*চড় কা*টবেন?”
সাদাফ: না।আমার নখ নেই।
নুর খুশি হলো।
সাদাফ: কিন্ত দাঁত আছে।
নুর: মানে??
সাদাফ:![]()
![]()
![]()
![]()
এত মানে বুঝতে হবে না ।বলেই সাদাফ সাথে সাথে মুখ গুঁজে দিল নুরের গলায়।
Share On:
TAGS: নীলা রহমান, সুখময় যন্ত্রণা তুমি
CLICK HERE GO TO OUR HOME PAGE
-
সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ২৭+২৮
-
সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ৫
-
সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ১
-
সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ২০+২১+২২
-
সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ১৩+১৪
-
সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ১৭+১৮+১৯
-
সুখময় যন্ত্রনা তুমি পর্ব ৪০
-
সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ২৫+২৬
-
সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ৩৭+৩৮
-
সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ৩৫+৩৬