Golpo romantic golpo সুখময় যন্ত্রণা তুমি

সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ১৩+১৪


#সুখময়_যন্ত্রনা_তুমি(রোমান্টিক)

#neela_rahman

#পর্ব_১৩

লাঞ্চ শেষ করে ওরা সবাই চলে আসলো গাজীপুর চন্দ্রা সালনা নামক একটি জায়গায় একটি সুন্দর নিরিবিলি পরিবেশে রিসোর্ট আছে সেখানে ।সারাদিন আজ এখানেই পার করবে সন্ধ্যা নাগাদ ফিরে যাবে।

হুমায়ূন রহমান ফজলুর রহমান সামিহা বেগম ও নওরিন আফরোজ চলে গেলেন রিসোর্ট এর মালিক যে কিনা হুমায়ূন রহমানের বন্ধু তার সাথে গল্প করতে । নীলা রহমান লেখিকা।বাচ্চাদের রেখে গেলেন তোমরা তোমাদের মত ঘোরাফেরা করো মজা করো ।

সন্ধ্যা নাগাদ আমরা সবাই ফিরে যাব বলেই তারা চারজন চলে গেলেন রিসোর্ট এর উপরের দিকে পার্সোনাল একটি কামরায়।

এদিকে সায়মন রিমা নূর ও সাদাফ দাঁড়িয়ে রইল ।সাইমন বলল ,”ভাইয়া চলো আমরা আশেপাশে কোথাও ঘুরতে বের হই রিসোর্টের বাইরে প্রাকৃতিক পরিবেশ খুব সুন্দর।

ছবি তুললে খুব সুন্দর ছবি আসবে আর তাছাড়া আজকে ওরা শাড়ি পড়েছে ওদের ছবি তো অনেক সুন্দর আসবে দিনটি স্মরণীয় হয়ে থাকবে নুরের জন্য।”

সাথে সাথে রিমা বলল ,”হ্যাঁ হ্যাঁ ভাইয়া চলো প্লিজ আজকে আমরা শাড়ি পড়েছি আজকে আমরা খুব সুন্দর করে ছবি তুলব ।সাথে সাথেই সাদাফ তাকালো নুরের দিকে ।নুর কোন কথা বলছে না চুপচাপ নিচের দিকে তাকিয়ে আছে ।সাদাফ বুঝতে পারল নুরেরও ইচ্ছা আছে যাওয়ার তাই বলল ,”ঠিক আছে চল।”

বলেই গাড়ির চাবিটি সাইমনের দিকে দিয়ে বলল ,”গাড়ির মধ্যে ক্যামেরা আছে নিয়ে আয়।”

বলেই সাদাফ সামনে দিকে হাঁটতে শুরু করলো ।রিমা আর নূর পিছনে পিছনে যাচ্ছে।সায়মন গেল ক্যামেরা আনতে গাড়ির কাছে।

তবে চারজন হাটতে হাটতে একটু সামনে গিয়ে পৌঁছতেই দেখতে পেল একটি ঘাট বাধানো পুকুর যেখানে একটি নৌকো বাধা আছে । নীলা রহমান লেখিকা।নুর সাথে সাথে বলে উঠলো ,”আমি নৌকায় গিয়ে ছবি তুলব ।”

রিমা ও বললো ,”হ্যাঁ হ্যাঁ চল চল দুজন নৌকা বসে ছবি তুলব।”

সাইমন ক্যামেরাটা সাদাফের দিকে দিয়ে বলল ,” ভাইয়া ছবি তোলার জন্য তুমি বেস্ট ।সুন্দর করে ওদেরকে ছবি তুলে দাও আমি একটু এদিক ওদিক দেখি আরো কি কি সুন্দর জায়গা আছে।”

এটা হচ্ছে বাহানা জায়গা দেখার নাম করে দূরে গিয়ে একটু সিগারেট খাবে ওর সিগারেট খাওয়ার অনেক নেশা উঠে গিয়েছে।

একটু দূরে গিয়েই সিগারেট ধরালো সাইমন এখান থেকে ওদেরকে দেখা গেল নূর বা রিমাদের ওইখান থেকে বা সাদাত ভাইয়ের এখান থেকে সাইমনকে দেখা যাবে না তাই নিচু হয়ে সিগারেট খেতে লাগলো।

এদিকে সাদাফ ক্যামেরার লেন্স দিয়ে বারবার নুরকে দেখছে ।নূর বিভিন্নভাবে ছবি তুলছে রিমা আর নুরের।নুর একটু একটু লজ্জা পাচ্ছে সাদাফ বুঝতে পারছে।

ক্যামেরা দিয়ে যখন নূর কে দেখছিল সাদাফ এর মুখ আপনা আপনি একটু হাসির মৃদু রেখা খেলে গেলো।কেমন যেন লাগছে নুরকে কখনো এইরূপে নূরকে

দেখেনি ।

যখন নূরের জন্য শাড়ি চুরি পায়েল গহনা কিনেছিল তখন কল্পনা করেছিল কিন্তু আজ নূরের যে রূপ দেখতে পেল তা যেন কল্পনারও অতীত।

সাদাফ বুঝতে পারিনি নূরকে কখনো শাড়ি পরায় এতটা মোহনীয় লাগবে সাদা এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল ক্যামেরার দিকে ।ওই দিক থেকে রিমা আর নুর চিৎকার করে যাচ্ছে ছবি তোলা হয়েছে ?

আমরা কি পোজ চেঞ্জ করব ?কিন্তু সাদাফের যেন সেদিকে কোন খেয়াল নেই সাদা জুম করে করে নুরকে দেখায় ব্যস্ত ।হঠাৎ সাদাফের ভ্রু জোড়া কুচকে গেল কিছু একটা দেখে।

সাদাফ আরও একটু জুম করে দেখল ।দেখেই নূরের দিকে তাকালো তারপর দ্রুত পায়ে হেঁটে গিয়ে রিমাকে বলল যা তো সাইমনকে একটু ডেকে নিয়ে আয় ।রিমা সাথে সাথে সাইমনকে ডাকার জন্য গেলে সাদাফ চলে আসলো নূরের কাছে নৌকায়।

নূর সাদাফ কে এরকম দেখে কিছু বলছে না । এমনকি লজ্জায় সাদাফের দিকে তাকাতেও পারছে না ।সাদা কিছুক্ষণ ভাবলো কিভাবে বলবে তারপর নুরের দিকে তাকিয়ে বলল ,”নূর কাছে আয়।”

নুর অবাক হয়ে গেল ।এরকম একটা জায়গায় কাছে কেন ডাকছে ?নূর শুকনো ঢোক গিলতে লাগলো ।হাতের আঙ্গুল দিয়ে আরেক হাতের আঙ্গুল খুঁটতে লাগলো ।সাদাফ বললো ,”সময় নেই নূর ।কাছে আয় জলদি।ওরা চলে আসবে তাড়াতাড়ি কাছে আয়।”

নুর আমতা আমতা করে মাত্র মুখ খুলবে জিজ্ঞেস করার জন্য কেন তার আগে সাদাফ নিজেই কাছে চলে আসলো নুরের কাছে।তারপর সাথে সাথে হাত দিয়ে দিল নুরের ব্লাউজের নিচের অংশে যেখানে ইনারের একটা অংশ দেখা যাচ্ছে।

সাথে সাথে ব্লাউজ টান দিয়ে একটু নামিয়ে দিল এবং ইনার টা একটু ভিতরে দিয়ে দিল।

সাদাফের এমন স্পর্শকাতস্থানে স্পর্শে নূর কেঁপে উঠল ।চোখ বন্ধ করে ফেলল সাথে সাথে ।সাদাফ একটু ঝুঁকে এসে বলল ,”এই কালার ব্লাউজের সাথে কেউ এই কালার ইনার পরে?

পরে কিছু একটা ভেবে বলল ও এর আগে তো তুই কখনো শাড়ি পরিস নি তাই হয়তো এর সাথে ম্যাচিং করে তোর কিছু কিনা নেই ।এখন থেকে তাহলে আমি যখনই তোকে শাড়ি গিফট করবো সাথে সাথে সব কিছু ম্যাচিং করে কিনে দেব।

আর সেফটিপিন কোথায় সেফটিপিন দে। এটা ব্লাউজের সাথে সেট করে দিতে হবে না হলে বারবার বের হয়ে থাকবে ।আমার একদম পছন্দ না নুর আমার জিনিস অন্য কেউ দেখবে।”

সাদাফের হাত এখনো ব্লাউজের নিচের অংশে থাকায় নূর চোখ বন্ধ করে রইল কোন কথা বলতে পারছে না ।থর থর করে শরীর হাত পা কাপছে ।সাদাফ খুব সুন্দরভাবেই অনুভব করতে পারছে নূরের প্রতিটি কম্পন এবং মুগ্ধ নয়নে তাকিয়ে আছে নূরের দিকে ।

কিছুক্ষণ পরে ভাবল ওরা চলে আসবে তাই নূর কে বলল ,”নূর তাড়াতাড়ি সেফটিপিন দে লাগিয়ে দিচ্ছি ওরা চলে আসবে ।”

নুর পিট পিট করে চোখ খুলল ।হঠাৎ মনে পড়ল সেফটিপিন চাচ্ছে সেফটি পিন দিতে হবে ।আমতা আমতা করে বলল ,”আমার কাছে তো এক্সট্রা কোন সেফটিপিন নেই ।”

সাদাফ কিছু একটা ভাবলো। ভেবে বলল ,”শাড়ীর কুচি তে লাগিয়েছিস কুচি থেকে খোল।”

নূর কাঁপা কাঁপা কন্ঠে বলল ,”আমি একা কি করে খুলবো আমাকে তো রিমা লাগিয়ে দিয়েছিল?”

“আচ্ছা তুই সুন্দর করে দাঁড়া আমি খুলে দিচ্ছি ।একা একা খুলতে পারবি না ।”বললো সাদাফ।নুরকে সুন্দর করে দাঁড় করিয়ে দিয়ে হাঁটু ভেঙ্গে নুরের শাড়ির কাছে বসে কাঁপাকাঁপা হাতে নুরের শাড়ির কুচি তে হাত রাখলো।নুর সাথে সাথেই চোখ বন্ধ করে ফেললো।সাদাফ কুঁচি থেকে সেফটিপিন খুলতে লাগলো।

সাদাফের এমন কান্ডে এবং স্পর্শে নূর বার বার শিহরিত হচ্ছে ।মনের মধ্যে অজানা ভয় এবং আশঙ্কা জেকে ধরেছে নুরকে । নীলা রহমান।কেনো এমন হয় এরকম বারবার অন্য কেউ আসলে তো নূরের ভিতরে এরকম তোলপাড় শুরু হয়ে যায় না।

বারবার শাদাফ ভাইয়ের স্পর্শে কেন নূরের ভিতর সবকিছু জ্বলে পু‘ড়ে নিঃশেষ হয়ে যায় ?মনে হচ্ছে কোথাও কেউ আ‘গুন জ্বা‘লিয়ে দিয়েছে নূর সেই আ‘গুনের দহনে প্রতিনিয়তই জ্ব‘লছে।

এদিকে সাদাফের অবস্থাও নাজেহাল ।এমন একটি জায়গায় হাত দিয়ে সেফটিপিন খুলতে হচ্ছে সাদাফের হাতও কাঁপছে ।কখনো এমন হয়নি সাদাফ এর।নূরকে অনেক ভালোবাসে ভীষণ ভালোবাসে কিন্তু এমন ভাবে কখনো স্পর্শ করা হয়নি নুরকে ।

চু*মু খেয়েছে কিন্তু কখনো স্পর্শ ধরতে গিয়ে হাত পা কেঁপে উঠেনি সাদাফের ।আজ কাপছে ভীষণ কাঁপছে ।সাদাফ কোনমতে উঠে দাঁড়ালো ।দাঁড়িয়ে সেফটিপেনটি হাতে নিয়ে আবার ব্লাউজের সেই নিচের অংশে ধরে ইনারের সাথে সেট করে দিল।

তারপর নূরের কাছাকাছি কানের কাছে ঝুঁকে কাঁপা কাঁপা কন্ঠে সাদাফ বলল ,”এখন থেকে নিজে এসব খেয়াল রাখবি অন্য কাউকে যেন খেয়াল করতে না হয় ।বড় হয়েছিস সবকিছু দেখে খেয়াল করে তারপর বের হবি।

যা আমার তা শুধু আমি দেখব নুর।অন্য কেউ এদিকে নজর দিবে দেখবে তা আমি একদম সহ্য করব না নূর।”

নূর চোখ বন্ধ রাখা অবস্থায় দাঁত দিয়ে ঠোঁট কামড়ে ধরল ।কি সব বলছে সাদাফ ভাই ।এসব শুনে নূরের ভিতরে সবকিছু কেঁপে কেঁপে উঠছে ।

কেন বারবার এরকম হয় সাদাফ ভাইয়ের প্রত্যেকটি কথায় নূরের কেন শিহরিত হয়? কেন মনে হয় শিরদাঁড়া বেয়ে শীতল কোন ঝর্ণার স্রোত নেমে যাচ্ছে।

এ এক ভিশন যন্ত্রণা সুখময় যন্ত্রনা নুর অনুভব করতে পারছে ।সাদাফ ভাইকে ভাবতে গিয়ে যে যন্ত্রনা অনুভব হয় সে যন্ত্রণার মধ্যেও সুখ খুঁজে পায় নুর ।ভাবতে ভালো লাগে ।ভীষণ ভালো লাগে।

সাদাফ আরও একটু ঝুঁকে এসে নূরের কানে কানে বলল ,”আর শোন এরপর থেকে শাড়ি পরলে শুধুমাত্র আমার সামনে পড়বি ।

এরপর যখন শাড়ি পরবি সেই শাড়ি আমি নিজের হাতে খুলবো।মনে যেন থাকে। তাই তার আগ পর্যন্ত শাড়ি পরা নিষিদ্ধ তোর জন্য।”

চলবে……………..

Neela Rahman

কপি করা সম্পূর্ণ নিষেধ

#সুখময়_যন্ত্রনা_তুমি

#neela_rahman

#পর্ব_১৪

কথাটি বলেই সাদাব আবার নিজে জায়গায় ফিরে এলো ক্যামেরা হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে বাকি ছবিগুলো দেখতে লাগলো ।এর মধ্যেই হেঁটে হেঁটে চলে আসছে রিমা ও সাইমন ।দুজনের মধ্যে লেগে গিয়েছে ঝগড়া।

রিমা ঐখানে যেয়ে দেখে সায়মন সি*গারেট খাচ্ছে ।সায়মন সি*গারেট খাচ্ছে এটা কেন খাচ্ছে এখানে এসে জানতে চাইলো। আগে জানতো না তাই দুজনের মধ্যে ঝগড়া লাগছিলো।রিমা বললো,” ও সাদাফ ভাইকে বলে দিবে সায়মন সি*গারেট খায়।”

এদিকে সায়মন বলছে ,”সি*গারেট খেয়েছি তো কি হয়েছে ?ছেলেরা একটু একটু খাই আর তোকে কে বলেছিল এখানে এসে দেখতে ?”

রিমা বলল আমাকে সাদাফ ভাই পাঠিয়েছে তোকে নেওয়ার জন্য তাই এসেছি আমার সাধ লাগে নাই তোকে এখানে এসে নিতে।

সায়মন বলল ,”বে*য়াদবি করবি না ।তোর থেকে গুনে গুনে সাড়ে চার বছরের বড় আমি সম্মান দিয়ে কথা বলবে বে*য়াদব।”

“ওরে আমার বড় রে! ওকে নাকি আবার সম্মান দিতে হবে ।সি*গারেট খোর দাঁড়া আমি এক্ষুনি যেয়ে সাদাফ ভাইকে বলছি তুই নাকি বড় তাই সি*গারেট খাস।”

সাইমন বলল আরে আজব তো কখন আমি বললাম আমি বড় তাই সি*গারেট খাই ?একটাকটু সি*গারেট খাই ভার্সিটিতে পরি তা তোর কাছে কেন জবাব দিতে হবে আমার ?তুই আমার কে যে আমার সবকিছু ব্যাপারে দিয়ে খোঁজ খবর রাখিস ? নীলা রহমান লেখিকা।জবাবদিহিতা চাস আমার কাছে তুই আমাকে গার্লফ্রেন্ড নাকি বউ?”

রিমার পা থেমে গেল আপনা আপনি ।চুপ হয়ে গেল থ হয়ে গেলো এক মুহূর্তের জন্য ।সাইমনের মুখ থেকে গার্লফ্রেন্ড বা বউ কথাটি শুনে কেমন যেন অদ্ভুত লাগলো রিমার কাছে ।

কখনো তেমন ভেবে দেখেনি কিন্তু সব ব্যাপারে যে খোঁজখবর রাখে জবাব চায় এ ব্যাপারটি সত্য এটা রিমা নিজেও জানে কিন্তু নিজেকে আটকাতে পারে না।

সায়মন আর কোন কথা বলল না রিমা কে পাশ কাটিয়ে চলে গেল ।রিমা তখনো দাঁড়িয়ে রইল । হঠাৎ কেমন যেনো লাগছে রিমার।তারপর ধীরে ধীরে সায়মনের পিছু পিছু হাঁটতে হাঁটতে সাদাফ দের কাছাকাছি চলে এলো ।এসে দেখলো সাদাফ ভাই ক্যামেরা নিয়ে কিছু একটা করছে ।

সায়মন বলল ,”ভাইয়া ছবি তোলা শেষ ?ওইখানে চলো একটা পুকুরপাড় আছে ওইটাও খুব সুন্দর।”

নূর সাথে সাথে বলল ,”ঠিক আছে চলো আমরা ওইখানে যাই ।”

এমনিও এখানে দাঁড়িয়ে থাকতে কেমন যেন সংকোচবোধ হচ্ছিল নূরের তাই সাদাবকে রেখেই সাইমন ও রিমার সাথে তাড়াতাড়ি হেঁটে সামনে চলে গেল ।সাদাফ ক্যামেরা নিয়ে পিছনে পিছনে হাঁটতে লাগলো।

ওইখানে গিয়েও রিমা ও নুর গুটিকতক ছবি তুলল ।কয়েকটা পছন্দ হলো কয়েকটা হলো না ।কিন্তু বিকাল হয়ে আসছে সাদাফ তাই বলল ,”চল রিসোর্টে ফিরে যাই ।ওখানে গিয়ে একটু কফি খাব মাথা খুব ধরেছে ।”

সবাই রিসোর্টে ফিরে এসেই লবিতে বসে কফি অর্ডার দিল ।নুর চুপচাপ বসে আছে ।রিমা ও আজকে চুপচাপ কোন কথা নেই ।বারবার ওর কানে বেজে উঠছে সাইমনের বলা কথাটি ।

“তুই কি আমার বউ নাকি গার্লফ্রেন্ড ?এই মুহূর্তে রিমার মনে হতে লাগলো একসময় তো সায়মন ভাইয়ের গার্লফ্রেন্ড হবে বউ হবে তখন যদি সব ব্যাপারে এরকম খবরদারি করতে যায় রিমা বউ কি এটা মেনে নিবে?

সবার জন্য কফি চলে আসলো ।দেখল তিনটা কফি আর একটা জুস ।নুর বলল ,”ওই জুস কার জন্য ?”

সাদাফ নূরের দিকে তাকিয়ে বলল ,”তোর জন্য তুই আন্ডার এইট্টিন তাইতো কফি খাওয়ার বয়স হয়নি ।যখন ১৮ হবে তখন তুই কফি খাবি এর আগে জুস খা।”

নুর বলল ,”না আজকে আমার জন্মদিন আর আমি বড় হয়েছি ।কফি খাওয়ার জন্য ১৮ বছর হতে হয় কে বলেছে ?আমার কি আজকে বিয়ে হচ্ছে যে বিয়ে হতে হলে ১৮ বছর হতে হবে?”

সাদাফ নুরের দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে ছিল ।তারপর হঠাৎ বলে উঠলো ,”বিয়ের জন্য ১৮ বছর হতে হয় না এর আগেএ অনেক মানুষের বিয়ে হয়ে যায়।”

বিয়ের কথায় সাথে সাথে নুর সাদাফের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করে বসল ,”তা আপনার যে এত বছর বয়স হয়েছে আপনি বিয়ে করছেন না কেন ?আপনি বিয়ে না করলে তো আমার ভাইকেও বিয়ে করাতে পারবো না?”

সাদাব কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইল নূরের দিকে ।তারপর নূরকে একটু খেপানোর জন্য বলল ,”হ্যাঁ বিয়ে করবো সামনে মাসে বিয়ে করবো। তোরা প্রস্তুত থাকিস অনেক আনন্দ করার জন্য ।

কে কোন গানে নাচবে সেটাও রেডি করে রাখিস আমার বিয়ে বলে কথা ।খুব আনন্দ করতে হবে আর নূর তো সব থেকে বেশি আনন্দ করবে। এ বাড়ির সবচাইতে ছোট বলে কথা আমার বিয়ে নিয়ে তো সবচাইতে বেশি এক্সাইটমেন্ট ওরই হবে। তাইনা নূর ?”

জানতে চাইলো সাদাফ নুরের দিকে তাকিয়ে।

সাদাফের দিকে তাকালো নুর।তারপর চোখ নিচে নামিয়ে চুপচাপ বসে রইল ।নূরের মন খারাপ ।কিন্তু রিমার ও আজ মন খারাপ ।একটু আগে বলা নুরের কথায় যে সাদাফের পর সাইমনের বিয়ে ।

একটু আগে সায়মন ও বলল গার্লফ্রেন্ড ও বউয়ের কথা তাহলে কি সাইমনের জীবনে কেউ আছে যা রিমা এখনো জানে না।

কাপড়চোপড় থেকে শুরু করে খাওয়া-দাওয়া সব ব্যাপারে রিমা জবাবদিহিতা চায় ।সিগারেট কয়টা খাবে সে ব্যাপারে জবাবদিহি চায় কিন্তু ওর গার্লফ্রেন্ড আছে এই ব্যাপারটা তো রিমা জানে না ।

তাহলে কি সাইমন ইচ্ছা করে ওর কাছ থেকে ব্যাপারটা লুকিয়ে গেছে ?নূর জানে অথচ ও জানে না।ব্যপার টা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছে না রিমা ।তাই রিমা চুপচাপ মন খারাপ করে বসে রইল।

দিকে নূর চুপচাপ মন খারাপ করে ভাবছে একটু আগেও ওর সাথে কেমন করে কথা বলেছিল সাদাফ ভাই আর এখন বলছে সামনের মাসে বিয়ে সামনে মাসে বিয়ে ।বিয়ে যখন করবে তাহলে নূরের সাথে এসব কেন করে ?

ভীষণ মন খারাপ হতে লাগল নূরের ।আর কখনো কথা বলবে না সাদাফ ভাইয়ের সাথে ।মনে মনে ঠিক করে ফেললো নূর।

সাদাফ কফি পান করছে আর মনে মনে বলছে ,”একটু জ্বল নুর ভিতরে ভিতরে একটু জ্বল ।তোকে আমি কিছু প্রশ্ন করেছিলাম যার উত্তর তুই আমাকে দেওয়া তো দূরের কথা নিজে থেকেই উত্তর খুঁজে পাচ্ছিস না ।

এখন আমি চাই দিনরাত তুই জ্বলবি আর নিজেকে নিজে প্রশ্ন করবি কেন আমি সবার থেকে আলাদা ?আমার প্রতি তুই কি অনুভব করিস নিজে থেকে উত্তর খুঁজে বের কর।

এদিকে সাদাফ ও সায়মন মনের সুখে কফি পান করছে ।সাদাফ মনে সুখে কারো নূরকে ক্ষেপিয়েছে জানে নূর ভিতরে ভিতরে জ্বলছে আর সাইমন কোন কিছু না বুঝেই ।রিমার ভিতরে কি চলছে না চলছে কিছুই জানে না ও এমনি এমনি মনের খুশিতে কফি পান করছে।

একে রিসোর্ট এর উপরে পার্সোনাল কামরায় বসে আড্ডা মা*রছে হুমায়ূনুর রহমান ফজলুর রহমান নওরিন আফরোজ সামিহা বেগম এবং এই রিসোর্ট এর মালিক অর্থাৎ হুমায়ূন রহমানের ছোটবেলার বন্ধু করিম মোল্লা।

মোল্লা নামটা নিয়ে ছোটবেলা থেকেই ভীষণ ক্ষ্যাপা তো হুমায়ূন রহমান ।মো*ল্লার কোন কিছুই ছিল না ওর মধ্যে বরং ভ*ন্ড ছিল অথচ সেই লোকের নামের পেছনে লাগানো ছিল করিম মো*ল্লা এটা নিয়েই সব বন্ধুরা হাসাহাসি করত সেই কথাটি এখন উঠেছে।

করিম মো*ল্লা বলল ,”দেখুন ভাবি সেই ছোট্টবেলা থেকে আমার নামটা নিয়ে এরকম দুষ্টুমি ফাজলামি করে আচ্ছা আমি কি এমন ভ‘‘ন্ডামি করেছি বলেন তো ?যাকে ভালোবেসেছি তাকেই বিয়ে করেছি সব সময় এক নারীতেই আসক্ত ছিলাম তাহলে আমি ভ‘‘ন্ড কিভাবে হলাম?”

নওরিন আফরোজ বলল ,”ঠিকই বলেছেন ভাইয়া ।”

হুমায়ূন রহমানের দিকে তাকিয়ে বললো,”আপনি ওনার নাম নিয়ে খেপাচ্ছেন কেন ?এমনি ও তো মানুষের নাম নিয়ে খাপাতে হয় না আর তাছাড়া উনি এমন কি করেছেন?”

ফজলুর রহমান বলল ,”কি যে করেছেন তা তোমাকে বলবে না ভাবি ।আমি অবশ্যই বলতাম কিন্তু করিম ভাইয়ের কথা বলতে গেলে এখন আমার বড় ভাইয়ের পোল ও খুলে যাবে তাই আর কিছু বলবো না।”

চলবে………………..

Neela Rahman

কপি করা সম্পূর্ণ নিষেধ

পর্বটি ভালো লাগলে অবশ্যই বেশি বেশি করে লাইক শেয়ার কমেন্ট করবেন ধন্যবাদ।

Share On:

TAGS: ,



CLICK HERE GO TO OUR HOME PAGE
Related Posts
 

0 Responses

Leave a Reply