Golpo romantic golpo আড়ালে তুমি সব পর্বের লিংক সাইদা মুন

আড়ালে তুমি সাইদা মুন পর্ব ৩৪


#আড়ালে_তুমি |৩৪|

#সাইদা_মুন 

-“না না আমার ভয় করছে…”

-“কিছু হবে না বউ, প্রথমে একটু ব্যথা লাগবে তারপর আর না…”

মেঘ ভয়ে ঢুক গিলে, সেদিকে তাকায় সাথে সাথে চোখ বড় বড় হয়ে যায়,

-“এতো বড়… না না আমি দিবোনা…”

রুদ্র মেঘকে ধাতস্থ করে বলে,

-“বললাম তো কিছু হবে না, তুমি শুধু চোখ বন্ধ রাখো, সেকেন্ডই কাজ হয়ে যাবে। একদম চোখ খুলবে না।”

মেঘ ভীতু মন নিয়ে চোখ কিঞ্চিৎ বন্ধ করে রাখে। হঠাৎ ব্যথায় নড়ে চড়ে উঠে,

-“আহহ..”

রুদ্র বিচলিত হয়ে পড়ে, চিন্তিত কণ্ঠে বলে,

-“বেশি ব্যথা লেগেছে বউ? আমি তো সাবধানে দিতে বললাম। “

বলতে বলতে মেঘের হাতের যেই জায়গায় ইঞ্জেকশন পুশ করেছে সেখানে ঘষতে থাকে। দেখে আশেপাশেও লাল হয়ে গেছে। রুদ্র রেগে নার্সকে ধমকে ওঠে,

-“বলেছিলাম না সাবধানে দিতে, এমনভাবে দিতে যেন ব্যথা না লাগে।”

নার্সটি ভয়ে কাচুমাচু হয়ে বলে,

-“আমি তো সাবধানেই দিয়েছি স্যার.. “

-“তো হাতের এই অবস্থা কেন হলো?”

-“আ..আপনার ওয়াইফ অনেক ফর্সা তাই লাল হয়ে আছে। একটু পর লাল ভাব চলে যাবে…”

নার্সটির ভয়ে গলা শুকিয়ে যাচ্ছে, এই সামান্য জিনিস নিয়ে এতো রাগ, মনে মনে গালি দেয় ‘শা*লা বউ পাগল’। দ্রুত সেই জায়গা প্রস্থান করে।

রুদ্র ও মেঘকে নিয়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে বেড়িয়ে পড়ে। সকালের দিকে বাগানে ছিল মেঘ, হঠাৎ কোথা থেকে এক বিড়াল মেঘের পায়ে আঁচড় কেটে যায়। বেশ অনেকটাই ক্ষত হয়েছে। তাই রুদ্র দ্রুত তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসে ইঞ্জেকশন দিতে, যদিও মেঘ আসতে চাচ্ছিলো না। তবে রুদ্র তার বউকে নিয়ে কোনো রিস্ক নিতে চায়না।

বাড়ি ফিরতে ফিরতে ১২ টা বেজে গেছে। আজ শুক্রবার হওয়ায় সবাই বাড়িতেই উপস্থিত। রুদ্র গাড়ি পার্ক করে মেঘকে ধরে মেইন ডোর দিয়ে ঢুকতেই ব্রু কুচকে যায়। বাড়ির সকলেই ড্রয়িং রুমে উপস্থিত। রুদ্রকে আসতে দেখে সবাই তাদের দিকেই ফোকাস। সব কিছু স্তব্ধ। রুদ্র ভেতরে যেতে যেতে বলে,

-“কি হয়েছে সবাই নিচে যে..”

বলতে বলতে সিঁড়ির দিকে যেতে নিবে, তবে রুদ্রের মামার কথায় পা থেমে যায়। মেঘ বিষ্ময় নিয়ে তাকায়, রুদ্র সেও অবাক।

-“তোর বউয়ের বদমাশি দেখতেই এখানে সবাই…”

রুদ্র মেঘের হাত ছেড়ে একটু সামনে এগিয়ে গিয়ে বলে,

-“এক্সকিউজ মি, কি বললেন..?”

পাশ থেকে রুদ্রের নানি উঠে বলেন,

-“এই মেয়ের সব কুকর্ম দেখে ফেলেছি আমরা। ছি কি নষ্টা মেয়ে। তোকেও এই মেয়ে ফাঁসিয়েই বিয়ে করেছে, জানি তো সব… “

রুদ্রের কপালে ভাজ পড়ে যায়,

-“নানু মাথা ঠিক আছে কিসব বলছো..”

রুদ্রের দাদি হতাশা নিয়ে বলেন,

-“তো ভুল কি বলেছে। তোর বউকে কত ভালো মনে করেছিলাম। আমি তো প্রথমেই মেনে নিয়েছিলাম, তোর মাকেও আমি জোর করে রাজি করিয়েছি। আর এই মেয়ে কিনা সব নাটক করলো ভালো মানুষ সাজার অভিনয় করে আমাদের ধোকা দিলো। এই মেয়ে যে একটা খারাপ মেয়ে তা আজকে প্রমাণ না পেলে কখনো হয়তো বুঝতামই না।

মেঘের চোখ দিয়ে টপটপ করে পানি পড়ছে। যারা তাকে এতোদিন এতো ভালোবাসা দিয়েছে তাদের মুখে এমন কথা তার বুক ছিড়ে ফেলছে। কি এমন করেছে সে নিজেও বুঝছে না।

-“কি প্রমাণ পেলে, কি এমন করলো মেঘ যে তোমরা এভাবে অপবাদ দিচ্ছো..”

রুদ্রের কথায় সিদ্দিকা বেগম চিল্লিয়ে ওঠেন,

-“বলেছিলাম আমার একটা মাত্র ছেলে দেখে শুনে ভালো বউ আনবো। এমন চরিত্রহীনাকে নিয়ে এসেছিস। এই মেয়ে অন্য ছেলেদের সাথে ঘুরে বেড়াতো, আরও কত কি…”

-“আম্মু….. তোমার কোথাও ভুল হচ্ছে মেঘ এমন মেয়ে না।”

রুদ্রের কথায় তার মামা ল্যাপটপ অন করে সেদিকে আঙুল দেখিয়ে বলে,

-“তো এসব কি? অন্য একটা ছেলের সাথে বিয়ের আগেই শরীর বিলিয়ে ছিইইই…”

রুদ্র মেঘ দুজনেই সেদিকে তাকায়। মেঘের আত্মা কেঁপে উঠে, সেই ভয়ংকর দিনটি। আর সেই ঘটনাটা, যার জন্য তাকে এতো অপমান সহ্য করতে হলো। এই ভিডিও এখানে কি করে আসলো, কিন্তু রুদ্রের মুখ ব্লার করা, শুধু মেঘকেই দেখা যাচ্ছে। ছেলেটি কে স্পষ্ট না…

রুদ্রের মামি বলে,

-“এসব কি রুদ্র বাবা তোমার বউ বিয়ের আগেই ভাতারের সঙ্গে শোয়ে…”

মামির কথা শেষ করতে না দিয়েই রুদ্র বন্ধ করিয়ে দেয়। রাগে ঘাড়ের রগ ফুলে আছে চোখ লাল হয়ে উঠে,

-“এই ভিডিও কে দেখিয়েছে?”

মিনহা ভয়ে কিছুটা মিঁয়িয়ে যায়। রুদ্র কোনো উত্তর না পেয়ে আবার জিজ্ঞেস করতেই পিহু বলে,

-“মিনহা আপু, কিছুক্ষণ আগে সবাইকে জড়ো করে এই ভিডিও দেখিয়েছে।”

রুদ্র কড়া চোখে মিনহার দিকে তাকায়,

-“এইটা কোথায় পেয়েছিস?”

মিনহার কাপাকাপি শুরু হয়ে যায়। রুদ্র যে অনেক রেগে আছে গলার স্বরেই বুঝা যাচ্ছে। আমতা-আমতা করে বলে,

-“এ… এটা অনলাইনে পেয়েছিলাম…”

-“এক থাপ্পড়ে সব দাঁত ফেলে দিবো, এইটা অনলাইনের কোথাও নেই, সত্যি করে বল..”

-“ও… ওই ভার্সিটির একটা মেয়ের কাছ থেকে…”

-“তো এইটা এডিট করেছিস কেন?”

রুদ্র আরও কিছু বলতে যাবে তার আগে রুদ্রের মা কঠিন গলায় বলেন,

-“তুমি ওকে শাসাচ্ছো কেন? মিনহা যদি না দেখাতো এসব কুকর্ম সম্পর্কে ধারনাই থাকতো না…”

-“আম্মু ওই ছেলেটা আমি অন্য কেউ না আর তখনের পরিস্থিতি ভিডিওতে যেমন দেখাচ্ছে তেমন না, অন্য সিচুয়েশনে ছিলা..”

-“দেখেছেন আপা আপনার ছেলের ব্রেইন ওয়াশ করে ফেলেছে এই মেয়ে। তার দোষ ঢাকতে নিজের নাম জড়াচ্ছে। কি খারাপ মেয়ে, রুদ্র বাবা এই চরিত্রহীনাকে ছেড়ে দাও। আমরা আরও ভালো মেয়ে দেখে বিয়ে দিবো তোমার…”

মেঘ মাথা নিচু করে অঝোরে কাঁদছে, পিহু পাশে দাঁড়িয়ে ধরে রেখেছে। রুদ্র চিল্লিয়ে বলে,

-“আমার বউয়ের চরিত্র যেমনই হোক সেটা আমার বিষয়, মানুষের কথায় বউ ছেড়ে দেওয়ার লোক এই রুদ্র চৌধুরী না।”

রুদ্রের মামা তুচ্ছ করে বলে,

-“এই মেয়ে বিয়ের আগেই ফষ্টিনষ্টি করে এসেছে…”

-“একদম চুপ… মুখ সামলে কথা বলবেন মিস্টার খান। এইটা আমার বাড়ি, এখানেই দাঁড়িয়ে, আমার বউয়ের নামে আজেবাজে কথা বললে আমি অন্তত চুপ করে থাকবো না। মামা না হয়ে অন্য কেউ হলে এতক্ষণে ঘাড় ধাক্কা দিতেও দুবার ভাবতাম না…

রুদ্রের ব্যবহারে সিদ্দিকা বেগম রেগে বলেন,

-“রুদ্র, তুই তোর মামার সাথে এভাবে কথা বলতে পারিস না।”

রুদ্র দ্বিগুণ তেজ দেখিয়ে বলে,

-“তোমার ভাইকেও বলে দিও। উনারও আমার বউয়ের নামে আজেবাজে কথা বলার কোনো অধিকার নেই..”

-“তোর বউয়ের নামে কথা বলবে না? এই ভিডিও, এসব কী? বিয়ের আগেই একটা মেয়…”

রুদ্র রেগে চিৎকার করে বলে,

-“যা করেছে, আমার সাথেই করেছে, আমার ইচ্ছে হয়েছে বলেই করেছে। তখন যদি আমার ইচ্ছে হতো, আমি ওকে বিয়ের আগেই প্রেগন্যান্টও করে দিতাম। এতে কারো কোনো সমস্যা…?”

-“তোর ছেলে আমাকে যেভাবে অপমান করলো আর যদি তোর বাড়িতে আসি..”

ঘরভর্তি লোক, সবার মুখ বন্ধ হয়ে যায়। রেগে-মেগে রুদ্রের মামা চলে যান, তার পিছু পিছু বড়রা সবাই। রয়ে যায় পিহু, সাদ, মিনহা, সামিয়া, আর মেঘ। মেঘ দাঁড়িয়ে কেঁদেই যাচ্ছে, ভয়ে ঠোঁট থরথর করে কাঁপছে। রুদ্র একবার মিনহার দিকে রাগী চোখে তাকায়, তারপর মেঘের দিকে তাকিয়ে হঠাৎ বলে ওঠে,

-“আই ওয়ান্ট টু টেস্ট ইউর লিপস… লেটস গো…”

মেঘকে একটাকে কুলে তুলে ঘরের দিকে চলে। এদিকে পিহু সাদ বেশ লজ্জা পেয়ে দ্রুত সেখান থেকে কেটে পড়ে। রয়ে যায় মিনহা সামিয়া দুজনেই হতবাক সাথে রাগে ভেতর ফেটে যাচ্ছে যেনো…

———————

মেঘ সেই কখন থেকেই কেঁদেই যাচ্ছে। রুদ্র ধমকে ওঠে,

-“এই তুমি থামাবে কান্না নাকি আমি অন্য স্টেপ নিবো..?”

রুদ্রের কথায় যেনো আরও বেড়ে গেলো। মেঘের মুখটা ধরে বলে,

-“লাস্ট বার বলছি, কান্না থামাও..”

মেঘ কাঁদতে কাঁদতেই বলে,

-“আমার কান্না না থামলে আমি কি করবো.. “

হঠাৎ রুদ্র মেঘের গাল চেপে ধরে তার ঠোঁটে শব্দ করে একটা চুমু একে দেয়। সাথে সাথে মেঘের কান্না থেমে যায়। চোখ বড় বড় করে তাকায় রুদ্রের দিকে। রুদ্র বাকা হেসে বলে,

-“ওহ হো, তার মানে আমার চুমু খাওয়ার জন্যই কান্না থামাচ্ছিলে না। আগেই বলতে তাহলে আরও আগেই দিতাম..”

মেঘ রুদ্রকে হালকা ধাক্কা মেরে বলে,

-“ছি মুটেও এমন না, কিসব বলছেন আপনি ছিইই..”

রুদ্র হালকা হাসে। হঠাৎ মেঘ রুদ্রের হাত ধরে অসহায় চোখে তাকায় তার দিকে,

-“আপনি কি আমাকে ছেড়ে দিবেন…”

মেঘের কথায় রুদ্র এক আঙুল রুদ্রের ঠোঁটের উপর দিয়ে বলে,

-“হুশশশ, এমন কথা মুখেও আনবে না। রুদ্র চৌধুরীর কপালে একটাই বিয়ে, একটাই বউ।”

মেঘের মুখে হালকা হাসি ফুটে। রুদ্রের কাধে নিজের মাথাটা রেখে চোখ ভুজে। হঠাৎ রুদ্রের কথায় মেঘ মাথা তুলে তাকায়। কণ্ঠে যেনো বাচ্চাদের মতো আবদার,

-“মেঘ একটু? জাস্ট ২ মিনিট? “

মেঘের শরীরে হঠাৎ ঠান্ডা লাগা শুরু হয়। কেমন লজ্জা লাগছে। রুদ্রের কথা কি সে ফেলতে পারে। মাথা নিচু করে নেয়। রুদ্রও বুঝে নেয় তার প্রেয়সি কি চায়। সে মেঘকে নিজের সাথে মিশিয়ে, অধর জোড়া টেনে নেয়।

——————

বিকাল ৪ টা সবাই বসে আছে ড্রয়িং রুমে। মাঝে বসে আছে মিনহা মাথা নিচু করে। এরশাদুল চৌধুরী ভাড়ী গলায় জিজ্ঞেস করেন,

-“তুমি এমনটা কেন করলে? মেঘের নামে মিথ্যা বলে তোমার লাভটা কি হলো বলো আমায়?”

-“আ..আমি কিছু করিনি..”

রুদ্রের মা রেগে বলেন,

-“তো তুই তো এসে আমাদের ওই ভিডিও দেখালি সেটা যে রুদ্র ছিলো সেটা তো বলিসনি,আর তাদের বিয়ের পরের ভিডিও। বলেছিস অন্য ছেলেদের সাথে….”

মিনহা চোরের মতো ধরা পড়ে কি করবে না করবে ভেবে ভয়ে বলে,

-“ফ..ফুপিমনি আমি সত্যি জানতাম না আমাকে ওই মেয়ে এই ভিডিওই দিয়েছে। তাই আমিও ভেবেছি…”

নিজেকে ভালো বানাতে সবার সামনেই মেঘের কাছে গিয়ে তার হাত ধরে বলে,

-“মেঘ আই এম রিয়েলি সরি, আমি সত্যি বুঝতে পারিনি। আমাকে মাফ করে দাও…”

সাথে মিনহার মা বাবাও এসে বলে,

-“মেঘ মা কিছু মনে করোনা আমরা আসলে বুঝতে পারিনি। বুঝই তো রুদ্র আমাদের ছেলের মতোই তাই রেগে গিয়ে তোমাকে অনেক কিছু বলে দিয়েছি। মাফ করে দিও..”

-“ছি ছি মামা এভাবে বলবেন না আপনি আমার গুরুজন, আমি কিছু মনে করিনি..”

কিছুক্ষণ আগেই রুদ্র রিয়েল ভিডিও থেকে স্ক্রিনশট নিয়ে মেঘের সাথে যে সে ছিলো সেটা প্রুফ করে। আর বলে এইটা বিয়ের পরের ভিডিও কেউ দুষ্টুমি করে করেছিল। তা দেখে সবাই বেশ অনুতপ্ত, রুদ্রের মা দাদি তো মিনহার উপর বেশ চটে আছে।

তা দেখে মিনহা ও তার বাবা মা ভালো সাজতে এই নাটক করছে। সেদিনই রুদ্রের মামারা চলে যায় তাদের বাড়ি। সিদ্দিকা বেগম ও আর থাকতে বলেনি। তাদের সুখি পরিবারে এমন ঝামেলা লাগিয়েছে, তাই একটু ক্ষিপ্ত মিনহার উপর।

মেঘেরও যেনো বুক থেকে ভারি কিছু নেমেছে। রুদ্রের দাদির ঘরে বসে আছে মেঘ। উনার পায়ে তেল মালিশ করে দিচ্ছে।

-“নাতবউ আমার সাথে রাগ করে আছিস বুঝি?”

-“কি যে বলেন আপনার সাথে রাগ করলে আমি গল্প করবো কার সাথে, শুনি?”

উনি প্রখর হেসে বলে,

-“মেঘরে তুই অনেক সরল সোজা। অনেক ভালো মনের। এতো নরম থাকিস না, নিজেকে শক্ত করিস নিজের জন্য লড়তে শিখবি। তাহলে কেউ তোর উপর আঙুল তোলার আগে কয়েকবার চিন্তা করবে…”

মেঘ মাথা নেড়ে হু জানায়।

কেটে যায় আরও ২ দিন,

রুদ্র এই কয়েকদিন খুব ব্যস্ততার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, সামনে ফাইনাল এক্সাম, আবার দুইদিন পর ইলেকশন, এরপর সায়ান এর বিয়েও এটেন্ড করতে হবে। সব মিলিয়ে সামাল দিতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছে, অনেক রাত করে ফিরছে বাসায় আবার সকাল সকাল উঠতে হচ্ছে। মেঘ যতটুকু পারে হেল্প করছে।

রুদ্র রেডি হচ্ছে সভায় যাবে বলে। এই দুইদিনে একের পর এক সভা সমাবেশ এসব করতে করতে রুদ্রের আর দেখা মিলেনা রাত ছাড়া। এতে মেঘের কিছুটা মন খারাপ হয় তবে আবার নিজেকে সামলে নেয়।

মেঘ কফি রুদ্রের হাতে দিয়ে রুদ্রের পাঞ্জাবির বোতাম লাগিয়ে দিতে থাকে।

-“আজকে তো আপনাদের শেষ সমাবেশ বা মিটিং তাই না? কালকে তো আর ফ্রি?”

-“হু।”

-“আমাকে একটু আব্বুর কবরের কাছে নিয়ে যেতে পারবেন?”

-“ইলেকশনের আগের দিন তোমাকে নিয়ে যাওয়া সেইফ হবে না যে,”

মেঘ কলার ঠিক করে দিয়ে বলে,

-“আচ্ছা তাহলে থাক পরে অন্যদিন নিয়ে যেয়েন।”

রুদ্র মেঘের মুখটা নিজের দুই হাতের মাঝে নিয়ে নেয়,

-“মন খারাপ বুঝি আমার বউটার?”

মেঘ মাথা নাড়িয়ে না বুঝায়। রুদ্র কপালে ভালোবাসার পরশ একে দিয়ে বলে,

-“নিয়ে যাবোনে। খাওয়া দাওয়া করে নিও আমি দুপুরে নাও আসতে পারি..”

মেঘ মুচকি হেসে বলে,

-“আচ্ছা আর আপনি সাবধানে থাকবেন।”

দোয়া পড়ে ফু দিয়ে দেয় রুদ্রের গায়ে। রুদ্র বউয়ের চিন্তা দেখে হেসে টাইট একটা হাগ দিয়ে বেরিয়ে পড়ে।

দুপুরের খাবার খেয়ে টিভির সামনে বসে আছে চৌধুরী বাড়ির সব মেয়েরা, লাইভ দেখছে । রুদ্রদের ওখানে প্রেস মিডিয়া ও আছে। বিভিন্ন নিউজ চ্যানেলে তাদের সাক্ষাৎ নিচ্ছে দেখাচ্ছে। সেখানে অনেক মানুষের ভিড়। মেঘ আনমনে রুদ্রকেই দেখে যাচ্ছে, রুদ্রকে কেমন নেতা সাহেব নেতা সাহেব লাগছে। অবশ্য সে তো নেতাই…

মুহুর্তেই সবার হাসিখুশি মুখে আতঙ্ক ভর করে। রুদ্রের মা চিল্লিয়ে উঠে,

-“আমার ছেলে…….

চলবে…….

Share On:



CLICK HERE GO TO OUR HOME PAGE
Related Posts
 


0 Responses

Leave a Reply