#আড়ালে_তুমি |২৮|
#সাইদা_মুন
রাত ১০টার দিকে রুদ্র ক্লান্ত দেহ নিয়ে বাড়ি ফিরেছে। সেদিক থেকে দাদির কাছেই ছুটে গিয়েছিল, এতক্ষণে আসলো। সাথে করে এনামুল চৌধুরীর ছোট ছেলে তাহমিদকে নিয়ে এসেছে। কলেজ দূরে হওয়ায় ক্যাম্পাসের হোস্টেলেই থাকতো সে। তবে দাদির অসুস্থতার কথা শোনে চলে এসেছে।
-“আসসালামু আলাইকুম ভাবি, কেমন আছো?”
মেঘ নরম স্বরে জবাব দেয়,
-“ওয়ালাইকুম আসসালাম, এইতো আলহামদুলিল্লাহ ভালো, তোমার কি খবর?”
-“এইতো ভালোই..”
মেঘ রুদ্রের দিকে ফিরে, সোফায় গা এলিয়ে দিয়ে মাথাটা পেছন দিকে হেলান দিয়ে বসে আছে। দেখেই বোঝা যাচ্ছে ভীষণ ক্লান্ত, পাঞ্জাবিটা ঘেমে লেপ্টে আছে। দ্রুত গিয়ে শরবত বানিয়ে আনে। তাদের হাতে দিতে দিতে বলে,
-“দাদির কি অবস্থা? এখন কেমন আছেন?”
রুদ্র মাথা তুলে মেঘের দিকে ফিরে,
-“আগের থেকে বেটার..”
-“বাড়িতে আনবেন না?”
-“আজকে রাতটা থাকবে,..”
-“ওহ, আপনারা ফ্রেশ হয়ে আসুন আমি খাবার দিচ্ছি..”
বলেই মেঘ রান্নাঘরের দিকে ছুটে। খাবার গরম করে টেবিলে রাখতে রাখতে তাহমিদ, রুদ্র, সামিয়া, সাদ সবাই নেমে আসে। একে একে সবার প্লেটেই বেড়ে দেয়। সবাই খাওয়া শুরু করে।
মেঘকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে রুদ্র খাওয়া থামিয়ে ভ্রু কুঁচকে বলে,
-“তুমি খেয়েছো?”
মেঘ মাথা নেড়ে না বোঝায়।
-“তো দাঁড়িয়ে আছো কেনো বসে পড়ো।”
-“না না আমি পরে খেয়ে নেবো, কিছু দরকার লাগতে পারে আপনাদের।”
রুদ্র রুক্ষ কণ্ঠে বলে উঠে,
-“আমাদের কি হাত নেই? চুপচাপ যা বলেছি তা করো..”
মেঘ আর কথা বাড়ায় না, বসে পড়ে। খাওয়া শেষে রুদ্র আবার মেডিকেলের উদ্দেশ্যে যাচ্ছে। তা দেখে মেঘ আসফাস করতে থাকে।
-“কিছু বলবে? লাগবে কিছু?”
-“আমিও আপনার সাথে যেতে চাই, দাদিকে একটু দেখে আসবো..”
-“সকালে তো চলেই আসবে..”
মেঘ মাথা নিচু করে করুনার স্বরে বলে,
-“আমার খারাপ লাগছে, একটু দেখতে ইচ্ছে করছিলো..”
রুদ্র কিছুক্ষণ মেঘের দিকে তাকিয়ে বলে,
-“নিচে আছি, রেডি হয়ে আসো..”
মেঘ মাথা নেড়ে, শাড়ি বদলে কালো রঙের চুড়িদার পরে নেয়, চুল বেনি করে মাথায় ভালো করে ওড়না পেঁচিয়ে নেমে আসে। মেঘকে নামতে দেখে রুদ্র উঠে বেরিয়ে যায়।
মেইন গেটের সামনে আসতেই দেখে রুদ্র বাইক নিয়ে দাঁড়িয়ে। মেঘ এগিয়ে যেতেই তাকে উঠতে বলে। তবে মেঘ ঠায় দাঁড়িয়ে থাকে। তা দেখে রুদ্র বলে,
-“কি, উঠছো না কেনো? এখানেই কি সারা রাত পার করবে?”
মেঘের কণ্ঠে অসহায়ত্ব,
-“আমি কোনোদিন বাইকে উঠিনি, ভয় লাগছে..”
রুদ্র ফুস করে শ্বাস ছেড়ে বলে,
-“উঠো, কিছু হবে না..”
মেঘ ধীরে ধীরে উঠে বসে, তাদের মাঝে অনেকটা ফাঁকা রেখেই। তবে মনে ভয়, যদি পড়ে যায় তাহলে তো কি লজ্জা..
-“রাতে শুতে পারো, আমার বুকে আর বাইকে লেগে বসতে পারোনা?”
রুদ্রের কথায় মেঘ থতমত খেয়ে তাকায় লুকিং গ্লাসে, রুদ্রও সেদিকেই তাকিয়ে। লজ্জায় চোখ সরিয়ে ফেলে। মনে মনে বিরবির করে,
-“দিনদিন অসভ্য হয়ে যাচ্ছে, মুখে কিছু আটকায় না। আগের রুদ্রই তো ভালো ছিলো..”
রুদ্র ফের বলে উঠে,
-“ঠিক হয়ে ধরে বসো….”
মেঘ এবার রুদ্রের সাথে ঘেঁষে বসে তার কাঁধে হাত রাখে। রুদ্র বাইক স্টার্ট দিতেই চলতে শুরু করে। রাত হলেও ঢাকা শহরের রোডগুলোতে লাইটের আলোয় একদম আলোকিত। মেঘের প্রথমে ভয় লাগলেও পরমুহূর্তে সে উপভোগ করতে থাকে। স্বামীর সাথে রাতের শহরে বাইক করে ঘোরা সখ তো সবারই থাকে। হোক তাদের অন্য গন্তব্য, তবে ইচ্ছে তো পূরণ হলো৷
হসপিটালে পৌঁছে রুদ্র গাড়ি পার্ক করে এসে মেঘের হাত ধরে হাঁটা দেয়। ৪ তলার ২০৩ নম্বর কেবিনে আসতেই সবাইকে দেখতে পায়। কেবিনটা বড় বিধায় সবাই অনায়াসেই আছে। মেঘ দাদির কাছে গিয়ে দেখে ঘুমিয়ে আছেন তিনি।
রুদ্র বাকিদের উদ্দেশ্যে বলে উঠে,
-“সবাই বাড়ি চলে যাও, আমি আর মেঘ আছি এখানে। আর আম্মু, তুমিও যাও ফ্রেশ হয়ে খেয়ে তারপর এসো।”
রুদ্রের কথায় সবাই সম্মতি জানিয়ে চলে যায়। মেঘ দাদির পাশের চেয়ারেই বসে আছে। রুদ্র গিয়ে সোফায় বসে পড়ে।
কিছুক্ষণ পর একটা নার্স আসে চেকআপ করতে। মেয়েটি অনেকক্ষণ ধরেই দাদির পাশেই দাঁড়িয়ে একবার পালস চেক করে তো একবার স্যালাইন দেখে, একবার ওষুধ এদিক সেদিক করে দেখছে। মেঘ ব্যাপারটা লক্ষ্য করে। কিছুক্ষণ মেয়েটিকে পর্যবেক্ষণ করেই চোয়াল শক্ত হয়ে যায়। কারণ নার্সটি হুদাই এখানে কোনো কাজ নেই, আড়চোখে রুদ্রকেই ঘুরে ফিরে দেখছে। মেঘের ভীষণ অসহ্য লাগে। মেয়েটি যাচ্ছেই না দেখে সে উঠে রুদ্রের পাশে গিয়ে ধপ করে বসে পড়ে।
রুদ্র ফোনের মধ্যে ডুবে ছিলো, মেঘের দিকে একটু তাকিয়ে দেখে গাল ফুলিয়ে আছে। মোবাইল পকেটে রেখে জিজ্ঞেস করে,
-“কি হয়েছে..?”
মেঘ কঠিন চোখে রুদ্রের দিকে ফিরে মাথা নাড়িয়ে কিছু না বোঝিয়ে, আবার সামনের দিকে নজর দেয়৷ মেঘের নজর অনুসরণ করে সামনে তাকায়। দেখে একজন নার্স দাদির বেডের পাশেই ঘুরঘুর করছে আর তার দিকে তাকাচ্ছে, রুদ্রকে তাকাতে দেখে লাজুক হেসে আবার চোখ ফিরিয়ে নেয়।
এবার যেন তেলে বেগুনে জ্বলে উঠে,
-“আমি আইসক্রিম খাবো..”
রুদ্র অবাক হয়ে বলে,
-“এখন?”
-“জি, এখনই এনে দিন..”
রুদ্র কিছু একটা আঁচ করে হালকা হেসে বলে,
-“আচ্ছা, সাদকে বলে দিচ্ছি আম্মুকে নিয়ে আসার সময় আনতে..”
মেঘ তড়িৎগতিতে বলে উঠে,
-“না, আমার এখনই চাই, আপনি গিয়ে নিয়ে আসবেন।”
রুদ্র উঠে দাঁড়ায়, হালকা হেসে বেরিয়ে যায়। এদিকে নার্সটি রুদ্রকে চলে যেতে দেখে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে না পেয়ে, নিজেও যেতে নেয়, মেঘ তাকে প্রশ্ন করে আটকে দেয়,
-“দাদির শরীরের অবস্থা এখন কেমন?”
-“জি, আগে থেকে ভালোই..”
মেয়েটি ফের যেতে নেয়, মেঘ আবার বলে উঠে,
-“ওহ, ইনি আমার দাদি শাশুড়ি, আর আমার সাথে যে ছিলো, সে আমার হাসবেন্ড….”
মেয়েটি দ্রুত মেঘের দিকে তাকায়। মেঘ উঠে দাঁড়িয়ে দাদির বেডের পাশের ফলের ঝুড়ি থেকে চাকু নিয়ে হাতে স্লাইড করতে করতে বলে,
-“আর আমার হাসবেন্ডের উপর কেউ নজর দিলে তার চোখ তুলতে মন চায় আমার…।”
মেয়েটি ভয়ে ঢোক গিলে বেশ বুঝতে পারছে ভুল জায়গায় চোখ দিয়েছে। সে তো ভেবেছিল সিঙ্গেল।
মেঘ মেয়েটির কাছে এসে মুচকি হেসে বলে,
-“একবার জানো, একটি মেয়েকে টাকলা বানাই দিছিলাম, আমার জামাইকে নাকি তার ভালো লেগেছিলো তাই..”
মেয়েটি দ্রুত তার হাত চুলে দেয়। আমতা-আমতা করে বলে,
-“আপু, আমার আরেকটা রোগী আছে, আসি..”
বলেই দ্রুত বেরিয়ে যেতে নেয়, তবে দরজার বাইরে রুদ্রকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে, দাঁড়িয়ে যায়। রুদ্র হেসে হেসে বলে,
-“সাবধান খালাম্মা, আমার বউ কিন্তু হেব্বি গুন্ডি..”
মেয়েটি চোখ নামিয়ে চলে যায়। রুদ্র সেই অনেক আগেই এসেছে তবে ঢোকেনি, মেঘের কথা শোনে। হাসতে হাসতে মাথা চুলকায়, মেঘ তাকে নিয়ে জেলাশ,
-“উম, ইন্টারেস্টিং…”
রুদ্র আসতেই মেঘ চুপচাপ গিয়ে বসে পড়ে সোফায়। রুদ্র দুটো আইসক্রিম এনেছে মেঘের জন্যই। তবে মাথায় দুষ্টু বুদ্ধি আসতেই বলে,
-“আরে নার্সটি কোথায় গেলো?”
মেঘ চেহারা গম্ভীর করে বলে,
-“ওরে দিয়ে আপনার কি?”
-“আরে, দুইটা আইসক্রিম এনেছিলাম, একটা তাকে দিবো ভেবেছিলাম..”
মেঘের মুখটা পরক্ষণেই চুপসে যায়। রেগে হাতের আইসক্রিমটা রুদ্রের হাতে দিয়ে বলে,
-“যান, গিয়ে খুঁজে দুইটাই দিয়ে আসুন..”
রুদ্র অবাক হওয়ার ভান করে বলে,
-“ওমা, তুমি খাবেনা?”
-“না..”
-“আচ্ছা, তাহলে যাই খুঁজে দি…”
রুদ্রের কথা শেষ করার আগেই মেঘ দ্রুত রুদ্রের হাত থেকে নেয়। দুইটার প্যাকেটই খুলে কামড় বসায়। তা দেখে রুদ্র শব্দ করে হেসে উঠে,
-“জেলাশ বুঝি?”
মেঘ রাগী চোখে একবার তাকিয়ে আবার মাথা নিচু করে নিজের খাওয়ায় মন দেয়। এই লোকের সাথে কথাই বলবে না আপাতত।
কিছুক্ষণের মধ্যে রুদ্রের মা চলে আসে, আজ রাত তিনিই থাকবেন। তারপর রুদ্র ও মেঘকে নিয়ে বাসায় চলে আসে।
————————
দুদিন পর…
মেঘরা ভার্সিটির মাঠে বসে আছে ক্লাস শেষ , তাদের ডান পাশেই রুদ্র তার গ্যাং নিয়ে আড্ডা দিচ্ছে। মেঘ ঘুরে ফিরে তাকেই আড়চোখে লক্ষ করছে। হঠাৎ কোথা থেকে একটি মেয়ে এসে রুদ্রের সামনে দাঁড়ায়।
হাতে থাকা ফুল রুদ্রের হাতে দেয়। হুট করে দেয়ায় রুদ্র তা হাতে নেয়, মেয়েটি লাজুক কণ্ঠে বলে,
-“আই লাভ ইউ রুদ্র…”
রুদ্রের কপালে হালকা বিরক্তির ছাপ পড়ে, সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে যায়, কিছু বলতে যাবে, নজর যায় মেঘের দিকে। তাদের দিকেই একধ্যানে কড়া চোখে তাকিয়ে। রুদ্রের হাতে মেয়েটির দেওয়া ফুল দেখে মনটা খারাপ হয়ে যায়, মেঘ উঠে দাঁড়ায়। দ্রুত পায়ে হাঁটা দেয়, অন্যদিকে ফিরে, বাকিরা জিজ্ঞেস করলে কিছুই বলে না।
রুদ্র দ্রুত ফুলগুলো নিচে ফেলে রাগী চোখে তাকায়,
-“কোন ডিপার্টমেন্টের?”
মেয়েটি ভড়কে যায় হঠাৎ এমন প্রশ্নে, তবে নিজেকে ঠিক রেখে বলে,
-“দেখুন, আমি দেখতেও সুন্দর,এখানের ক্রাশ গার্ল আমি, আমাদের একসাথে মানাবে..”
আর কিছু বলার আগেই রুদ্র একটা রাম ধমক দিয়ে উঠে,
-“শাট আপ, আর একটা কথা বললে গাল লাল করে দিবো মেয়ে।”
বলেই মেঘ যেখানে বসেছিলো সেদিকে তাকিয়ে দেখে বাকিরা সেখানেই, তার মানে ক্যাম্পাসের পিছে মেঘ একা গেছে। চিন্তিত হয়ে সে সেদিকে ছুটে। যেতে যেতে মেয়েটিকে এটাও বলে যায়,
-“আমার বউ তোমার থেকে হাজার গুণ সুন্দর, চরিত্র আরও বেশি সুন্দর, এমন ক্যারেক্টারলেস না..”
রাহুল শান্তরা ব্যতীত বাকি সবাই অবাক হয়ে যায় রুদ্রের কথায়। “তার বউ মানে?” এই প্রশ্ন সবার মনে জাগে..
মেঘ হাঁটছে, সেখানে তার দমবন্ধ লাগছিলো। কেন জানি এই কয়দিন রুদ্রের পাশে অন্য কাউকে সহ্যই হয় না। মুহূর্তেই ভাবে,
-“আমি কি বেশি রিঅ্যাক্ট করে ফেলছি ইদানিং রুদ্রকে নিয়ে? উফ, অসহ্য লাগছে সব। আমি কি উনাকে নিয়ে বেশি সিরিয়াস হয়ে যাচ্ছি দিন দিন? এগুলো কি ঠিক?”
আবার নিজেকেই ধমকে বলে,
-“কেন ঠিক হবে না, উনি তোর হাসবেন্ড মেঘ, তার সবকিছু শুধু মাত্র তোর জন্যই বরাদ্দ…”
ভাবনার মধ্যেই অনেকটা ভেতরে চলে এসেছে মেঘ, খেয়াল করেনি। আশেপাশে গাছপালা, এদিকটায় মানুষ নেই। হঠাৎ সামনে থেকে কোনো মেয়ের আর্তনাদ ভেসে আসে।
মেঘ দ্রুত সেদিকে এগোয়, কেউ কি বিপদে পড়লো? একটু সামনে যেতেই দেখতে পায় আসিফকে, মেঘের আত্মা কেঁপে উঠে। সেদিনকার দৃশ্য চোখের সামনে ভেসে উঠে। জলদি পায়ে পেছন ফিরে আসতে নেয়। তবে আবারও মেয়েটির কান্নার শব্দ শোনে, পা থেমে যায়। মেয়েটিকে আসিফসহ কয়েকজন মিলে আটকে রেখেছে, আসিফ বাজেভাবে টাচ করছে।
বিপদে দেখে যেতেও পারছে না, আবার মেঘ একা কি করবে ভেবেও পায় না। মোবাইলও নেই যে রুদ্রকে বা পিহুদেরকে জানাবে। মেয়েটির কাপড়ে হাত দিতে দেখে, উপায়ন্তর না পেয়ে পাশ থেকে বড় একটি ইটের টুকরো নিয়ে আসিফের পিঠ বরাবর ছুড়ে মারে। সাথে সাথে ব্যথায় আসিফ মেয়েটিকে ছেড়ে দেয়। পরক্ষণেই আরও অনেকগুলো পাথর একে একে ছুড়ে মারতে থাকে। উপস্থিত সবাই হঠাৎ হামলায় মুটামুটি ব্যথা পেয়ে মেয়েটিকে ছেড়ে দেয়। এই সুযোগে মেঘ চিৎকার করে উঠে,
-“পালাও আপু, তাড়াতাড়ি… “
মেয়েটি ইজ্জত বাঁচাতে দৌড় লাগায়, তা দেখে মেঘও পেছন ফিরে দৌড় দেয়। তবে বেশিদূর যেতে পারেনি, পেছন থেকে কেউ বড় একটা পাথর মেঘের পিঠ বরাবর ছুঁড়ে মারে। মেঘ তাল সামলাতে না পেরে হুমড়ি খেয়ে পড়ে।
আসিফরা সবাই মেঘকে ঘিরে ফেলে। আসিফ হাসতে হাসতে বলে,
-“আরে মেঘ না চাইতে জল..”
মেঘ ভয়ে জড়সড় হয়ে যায়। মনে মনে ভীষণ করে দোয়া করছে, আল্লাহ যেনো রুদ্রকে পাঠিয়ে দেয়। নয়তো এরা তাকে ছিঁড়ে খাবে।
আসিফ হাঁটু গেড়ে বসে মেঘের মুখে হাত দিতে যাবে, সে ঝাড়া মেরে হাত সরিয়ে দেয়, আরও পিছিয়ে যায়। আসিফ শব্দ করে হেসে উঠে,
-“এতো তেজ, হাহা, সেদিন তো রুদ্রের জন্য ছাড়া পেলি, আজ এখানে তোর কোন বাতার আসবে তোকে বাঁচাতে?”
বলতে বলতেই মেঘের চুলের মুঠি ধরে টেনে দাঁড় করিয়ে দেয়। ব্যথায় মেঘ চিৎকার করে উঠে। এতে যেন আসিফ আরও পৈশাচিক হাসিতে মেতে উঠে,
-“চিৎকারে লাভ নেই, আজ তোর এমন অবস্থা করবো, কেউ থু দিয়েও দেখবে না তোকে… “
বলেই মেঘের গা থেকে টান মেরে ওড়না নিয়ে নেয়। মেঘ দ্রুত হাত দিয়ে আড়াআড়ি ভাবে বুকে ধরে, আকুতির স্বরে বলে,
-“প..প্লিজ আমাকে ছেড়ে দিন। এমনটা করবেন না, প্লিজ, আপনার পায়ে পরি।”
আসিফ বজ্রকণ্ঠে বলে উঠে,
-“সেদিন আমিও বলেছিলাম রুদ্রকে আমাকে ছেড়ে দিতে, তবে সে আমাকে ছাড়েনি, আমার বাম হাতের আঙুল কেটে দিয়েছে শুধু মাত্র তোর কারণে। আর তুই বলছিস তোকে ছেড়ে দিতে? এতো সহজে?”
মেঘ অবাক হয়, রুদ্র তার জন্য আসিফের আঙুল কেটে দিয়েছে। তবে মুহূর্তেই আরও ভয় গ্রাস করে, তাকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে। সে কাঁদতে কাঁদতে চিৎকার করতে থাকে,
-“কেউ বাঁচাও, রুদ্র আপনি কোথায়? বাঁচান আমাকে… রুদ্র…..”
রুদ্র পেছনটায় আসতেই দেখতে পায় একটি মেয়ে জামা কাঁদতে কাঁদতে দৌড়ে আসছে। রুদ্রকে দেখে তার সামনে এসে দাঁড়ায়,
-“ভা..ভাইয়া, ওই মেয়েকে বাঁচাও, ওরা ওকে শেষ করে ফেলবে…”
রুদ্র চমকে যায়,
-“কোন মেয়েকে, কারা?”
-“আসিফ, আসিফ, উনি আমাকে রেপ করতে চেয়েছিল, কিন্তু ওই মেয়েটি আমাকে বাঁচিয়েছে, তবে তাকে ওরা ধরে ফেলেছে..”
বলতে বলতেই মেয়েটি কান্নায় ভেঙে পড়ে। রুদ্রের বুকে ছ্যাত করে উঠে, এদিকে তো মেঘ মাত্র আসলো। তবে কি আসিফের হাতে মেঘ পড়েছে? টেনশনে কিছু না ভেবেই দৌড় লাগায়।
কিছুদূর যেতেই মেঘের ও……….
চলবে…..
[গল্প পড়েন এতো মানুষ লাইক করেন দুই তিনজন, এতো কিপটা কেনো গায়েজ…। ভালো রেস্পন্স পেলে রাতে আরেকটা পর্ব দিবো.. ]
Share On:
TAGS: আড়ালে তুমি, আড়ালে তুমি সাইদা মুন, সাইদা মুন
CLICK HERE GO TO OUR HOME PAGE
-
আড়ালে তুমি সাইদা মুন পর্ব ৪৪
-
আড়ালে তুমি সাইদা মুন পর্ব ১৪
-
আড়ালে তুমি সাইদা মুন পর্ব ৩২
-
আড়ালে তুমি পর্ব -৪৯
-
আড়ালে তুমি সাইদা মুন পর্ব ১১.১
-
আড়ালে তুমি সাইদা মুন পর্ব ২৫
-
আড়ালে তুমি সাইদা মুন পর্ব ৫৪
-
আড়ালে তুমি পর্ব -৪৪
-
আড়ালে তুমি সাইদা মুন পর্ব ৭
-
আড়ালে তুমি সাইদা মুন পর্ব ১৩