Golpo

আড়ালে তুমি পর্ব -৪৩


#আড়ালে_তুমি

#সামিয়া_সারা

#কাজিন_রিলেটেড_গল্প

পর্ব -৪৩

নীলের সামনের ইনায়ার ঘরের বন্ধ দরজা। আচমকা দরজা বন্ধ করে দেওয়াতে নীল একটু ইতস্তত বোধ করে বলল,

-আমার ঘরের দরজা খোলা থাকল..

থেমে আরেকটু উচ্চস্বরে বলল,

-ইনু! আমার ঘরের দরজা খোলা আছে,কোনো দরকার হলে বলিস।

আনায়া বেরিয়ে এসেছে তার ঘর থেকে। নীলের দিকে তাকিয়ে বলল,

-কী হয়েছে বড় ভাইয়া? ইনুপু কে কিছু বলব? 

নীল ভ্রু কুঁচকে বলল,

-পড়তে যা অনু…নাহলে ঘুমা।

নীল উল্টো ফিরে নিজের ঘরে চলে যায়। দরজা আধা খোলা রেখে ঘরে পায়চারি করে। বেশ কিছুক্ষণ এদিক ওদিক করার পরে রিসানকে কল করল নীল। কল ধরেই রিসান উচ্চস্বরে বলে উঠলো,

-আল্লাহ! কে! কে কল করেছে? অবশ্য দরকার ছাড়া কল করিসনি জানি। কী দরকার?

-বড্ড বেশি কথা বলিস তুই রিসান!

-উমম্। কথাবার্তা শুনে মনে হচ্ছে ভাই বিপদে পড়েছে।বড্ড শব্দ টা হলো একটা আবেগীয় শব্দ। এটা তুই যখন বলেছিস,এর মানে হলো আমার থেকে কিছু জানতে চাস।কী জানতে চাস বল।

-তোর এসব ওকালতি  আসামীর সাথে করবি,আমার সাথে না।

-আরেহ্ মামা,ওকালতি না..

-রিসান!

-বলেন ভাই

-তোর কথা শুনে জীবনে শুধু মা*রা ই খেতে হচ্ছে। বিষয়টা কী হয়েছে জানিস?

-কী?

-তুই রাস্তায় ফেলে রেখেছিলি বাঁশ,ওটা আমি তুলে নিজে নিজেই নিয়ে নিয়েছি।

-মামাহ! আস্তাগফিরুল্লাহ! ছি ছিঃ। ভাবি শুনলে মাইন্ড করবে মামা। তোর নাউজুবিল্লাহ মার্কা মুখের ভাষা আর আস্তাগফিরুল্লাহ টাইপ উদাহরণ গুলো সংযত করে রাখ…

-আর সংযম! ইনু তো  কথা ই বলে না ,তুই বললি জেলাস ফিল করালে নাকি ও কথা বলবে। আমি ভার্সিটিতে ওর পাশের মেয়ে,কী যেন নাম শেষ না শুরু,তারে নাম্বার টাও দিয়ে আসলাম। কিন্তু ইনু আগের থেকে দ্বিগুণ রেগে বসে আছে। যদি আমার প্লান নষ্ট হয় রে রিসান! তোরে কিন্তু শেষ করে ফেলবো!

-আরেহ্! নাম্বার দিলি কেন? যদি কল করে?

-কোনো মেয়ের কণ্ঠস্বর শুনলে তা মুহূর্তেই কেটে তাকে ব্লক করে দেয় দেওয়ান নীল। ডোন্ট ইউ নো দ্যাট? 

-যাই হোক,সাবধান।

-কোনো মেয়ের সাথে গল্প করার তো প্রশ্নই আসে না। কিন্তু তোর খবর আছে রে রিসান!

রিসান দ্রুত কল কেটে দেয়। তার বুদ্ধি মতোই ইনায়াকে জেলাস করানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলো নীল। উল্টা পাল্টা কিছু হলে তার আর নিস্তার থাকবে না।

.

.

.

ইনায়া চোখের পানি নাকের পানি এক করে বালিশ ভিজিয়ে ফেলেছে। বাম হাতে ধরে রাখা ফোনে নীলের ছবি বের করে রাখা,ডান হাতে টিস্যু। একা একাই নীলের বিরুদ্ধে শখানেক অভিযোগ করে ফেলছে। কিছুক্ষণ পর পর ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কেঁদে ওঠে আর ভাবে সূচনাকে কল করে খুব করে বকাঝকা করবে। তীব্র অভিমান নিয়ে একটা স্টেটাস লিখলো,

“যারা সহজেই নিজেদের নাম্বার দিয়ে দেয় কাউকে,তাদের চরিত্র কেমন?”

ডান হাতের টিস্যু ফেলে হাত দিয়েই চোখের পানি মোছে। একচাপে লেখাগুলো ডিলেট করে দিয়ে পুনরায় লিখলো,

“ব্যক্তিগত বিষয় শেয়ার করা মানুষগুলো ব্যক্তিত্বহীন!”

টিস্যু দিয়ে নাক ঝেড়ে লেখাটা পড়ল ইনায়া। বাসার কেউ দেখলে নিশ্চয়ই বকা দিবে। আবারো একচাপে মুছে বলল,

-না না,এসব লেখা যাবে না! কোনো গানের লাইন লিখলে কেউ আর বুঝবে না….

পুনরায় লিখলো,

“তোমার ঘরে বসত করে কয়জনা?” 

.

.

বড় দেয়াল ঘড়িটার দিকে তাকিয়ে আছে নীল। ঘন্টার কাঁটা ১২ টার কাছে। নীল দুবার হায় তুলে আধা খোলা দরজাটা পুরোটা খুলে দিল। ইনায়ার ঘরে এখনো আলো জ্বলছে। ইনায়ার দেওয়া স্টেটাস মিনিট পাঁচেকের মধ্যেই নীলের নজরে আসে। একটু একটু হাসি পেলেও,মন খারাপ হয় দ্বিগুণ পরিমাণে। দাঁতে দাঁত চেপে বলল,

-এই মেয়ে তো ভাঙবে,তাও মচকাবে না!

এরই মাঝে নীলের ফোনে অচেনা নাম্বার থেকে কল আসে। নীল কল রিসিভ করে ভারী গলায় বলল,

-“হ্যালো!”

অপাশ থেকে জবাব আসে না। বিরক্ত হয়ে নীল কল কেটে দেয়। পুনরায় ইনায়ার উদ্দেশ্য বিড়বিড় করে বলল,

-বললাম যে দরজা টা খোলা আছে,ঘরে বসে বসে কান্নাকাটি করতে করতে স্টেটাস না দিয়ে কি একটু দেখা করতে আসতে পারতি না? বলতি পারতি না ভালোবাসিস আমায়? 

নীলের ফোনে পুনরায় কল আসে। নীল কল ধরে এবার কথা বলে না কোনো। ওপাশ থেকে আগে আওয়াজ এলো,

-হ্যালো…হ্যালো…

মেয়েলী কণ্ঠস্বর। নীল হ্যালোর জবাবেও চুপ করেই থাকে। মেয়েটা পুনরায় বলল,

-হ্যালো…স্যার আমি সূ…সূচনা…

-Damn it!

এ কি মেয়ে! নীল দ্রুত কল কেটে নাম্বার ব্লক করে দেয়। 

.

.

.

আনানের সাথে ইনায়া  এখন কোনো ধরনের কথাই বলে না। সব সময় এড়িয়ে চলে। সব কিছুতেই ইনায়ার এমন উপেক্ষা করা,আনানের একদমই ভালো লাগছে না। কিছুদিন পরেই ইনায়ার জন্মদিন। আর আনান এই গভীর রাতে সিদ্ধান্ত নেয়, পহেলা সেপ্টেম্বরেই ইনায়াকে তার মনের কথা বলবে। সাথে দিবে একশো টা চিঠি। একশো টা চিঠি লেখা প্রায় শেষ হয়েই এলো। আজ লিখবে নব্বই নাম্বার চিঠিটা। হলদে রঙের কাগজে লিখলো,

প্রিয় ইনু,

আমি তোকে অসম্ভব রকমের ভালোবাসি। আমার জীবনের থেকেও বেশি। তোকে বলেছিলাম আমি,চাইলে তুই,আমি আমার জীবন দিয়েও তার প্রমাণ করে দিতে পারবো। আনান কথা রাখে। তুই যদি আমায় ভালোবাসতি একটু,তাহলে আমার কোনো কষ্টই থাকতো না। আচ্ছা ইনু,একটা কথা বলি? আমায় ভালোবাসিস না কেন? আমি কি খারাপ? খুব খারাপ?

আনান আরেকটা ফাঁকা কাগজ নেয়। পেজ ভরে বড় বড় করে লিখে,

“আমায় কেন ভালোবাসিস না তুই?”

আনানের চোখের কোনায় পানি জমে আছে। হতাশ হয়ে ছলছল চোখে তাকায় পূর্ব দিকের দেয়ালে। দেয়ালের ওপারেই ইনায়া। অথচ মাঝের একটা দেয়াল বুঝতেই দিচ্ছে না,দুটো মানুষ এই মুহূর্তে কী করছে। ইনায়া এখনো কান্না করেই চলেছে। চোখের পানি এখন চাদরে জমা হচ্ছে। ইনায়া কান্না করতে করতে থেমে থেমে বলল,

-আমায় ভালোবাসেন না কেন নীল ভাই? কেন বাসেন না? 

.

.

.

দেওয়ান বাড়ির সকলেই ঘুম থেকে উঠে পড়েছে ইনায়া ব্যতীত। ভার্সিটির সময় হয়ে যাওয়াতে নীল নাস্তা করে এসে ইনায়াকে ডাক দেয়। বেশ কয়েকবার ডাকার পরে ফোলা চোখ নিয়ে দরজা খোলে ইনায়া। কোনো রকমে চোখ মেলে নীল কে আবছা আবছা দেখে দাঁড়িয়ে থাকে। নীল ডান হাতে পাটেক ফিলিপের নীল রঙের ঘড়ির দিকে তাকিয়ে বলল,

-ক্লাসের সময় হয়ে যাচ্ছে। বের হবো আমি। তাই দ্রুত রেডি হয়ে নিচে আসবি।

ইনায়ার জবাব না শুনে নীল নিজের রুমে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দেয়। ইনায়া চোখ মুছে তার ঘরের ঘড়ির দিকে তাকায়। আটটা বাজে। সাড়ে আটটার মধ্যে রওনা দিতে হবে। দ্রুত দৌঁড়ে ওয়াশরুমে ঢুকে এখন হাতে পেস্ট আরেক হাতে ব্রাশ নেয়। পেস্ট নামিয়ে ব্রাশ করতে করতে মুখ ধুয়ে নেয়। দ্রত বেরিয়ে মুখ মুছে ব্যাগ গুছিয়ে সালোয়ার কামিজ পরে,ওরনা গায়ে দিয়ে ব্যাগ নিয়ে নিচে নেমে আসে। নীল সিঁড়িতে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে ছোটমা আয়েশা আক্তার আর মেজোমা রুবিনা ইয়াসমিনের সাথে গল্প করছে। সিঁড়িতে কারো পায়ের আওয়াজ শুনে ঘাড় ঘুরিয়ে একবার দেখে নেয়।

 ইনায়া খুব তাড়াহুড়ো করে নেমে নীলকে বলল,

-চলুন চলুন নীল ভাই!

ইনায়াকে এক ঝলক দেখে নীল কিছু একটা ইশারা দেয় ছোটমা,মেজোমাকে। ওমনি আয়েশা আক্তার চেঁচিয়ে উঠলো ইনায়ার উপর,

-শরীরের এ কি অবস্থা করেছিস? রাতে খাসনি কেন? মারবো এখন? অনেক দিন পিটাচ্ছি না বলে খুব সাহস হয়েছে।

রুবিনা ইয়াসমিন প্লেট হাতে এগিয়ে এসে ইনায়ার মুখের মধ্যে খাবার পুরে দিলো। 

বলল,

-কী অবস্থা করেছে শরীরের! চোখ ফুলিয়ে ফেলেছিস কেন ? কান্না করেছিস তাই না?

ইনায়া থ মেরে তাকিয়ে থাকে নীলের দিকে। পানির গ্লাস হাতে নিয়ে কোনো রকমে খাবারটা গিলে বলল,

-না তো,কান্না করিনি।

আয়েশা আক্তার পুনরায় ঝাড়ি দিয়ে ওঠে। 

-খুন্তি চামচ দিয়ে মারা হচ্ছে না অনেকদিন। ডোজ বাড়িয়ে এখন স্যান্ডেল ধরতে হবে। খুব বড় হয়ে গেছে তাই না? আর এক দিন যদি দেখি না খেয়ে আছিস। 

মন ভরে কয়েকটা গালাগাল ও দিলো সাথে। দুনিয়ার সব কিছুর সাথে বাচ্চা যুক্ত করে বকা দিতে দিতে খাওয়া দাওয়ার পর্ব শেষ করে তারা দুজনেই চলে যায়। এদিকে ইনায়া বোকার মতো দাঁড়িয়ে সব কর্ম কান্ড দেখছে। কোনো রকমে পানি খেয়ে গ্লাস টা টেবিলে রেখে নীলের দিকে তাকালো। 

নীল ভাবলেশহীন ভাবে শীষ বাজাতে বাজাতে বলল,

-যাওয়া যাক? 

.

.

.

সূচনার পাশে আজ একদমই বসতে ইচ্ছে করছে না ইনায়ার। তবে সূচনা বেশ জোড়পূর্বক ইনায়াকে টেনে নিয়ে তার পাশে বসায়। ইনায়া একটু অপ্রস্তুত বোধ করলেও পাশে গিয়ে চুপচাপ বসল। বই সামনে নিয়ে বসে সূচনার বকবকানি শুনছে। 

-চোখ এমন ফুলে আছে কেন? মনে হচ্ছে কান্না করেছো।

ইনায়া ঠান্ডা গলায় বলল,

-কান্না করব কেন?

-কষ্ট পেলেই তো কান্না করে মানুষ..

-কষ্ট তো পাই না।

ইনায়া থেমে যায়। অনেকক্ষন ধরে সূচনাকে একটা প্রশ্ন করতে চায়। মনে মনে সাজাতে থাকে কীভাবে কী বলবে। অবশেষে বলল,

-আমাদের নতুন প্রফেসরের সাথে কথা হয়েছে?

ইনায়ার প্রশ্ন শুনে লজ্জা পায় সূচনা। মাথা নিচু করে জোড় করে একটু হাঁসে। অতঃপর বলল,

-হ্যাঁ তো! অনেক কথা হয়েছে। তুমি তো জানোই ওনার ভয়েস মাশাআল্লাহ। কলে আরো সুন্দর। নাম্বারটা তোমায় দিতে পারতাম। কিন্তু উনি তো কথা বলবে না,দিয়ে কী লাভ। 

ইনায়া হাত আপনাআপনি মুঠো হয়ে যায়। সূচনা বলেই চলেছে,

-স্যার কিন্তু মানুষটা অসাধারণ। আর কথা বলার ধরনের কথা না বললেই না।কাল তো সারা রাত কথা হয়েছে।

ইনায়ার চোখ ছলছল করে ওঠে কথা টা শুনে। মনে মনে বলে,

-আমার চোখের পানি ফেলে আপনারা গল্প করেছেন! বাহ্।

এরই মাঝে আচমকা ধাক্কা লাগে শরীরে। সূচনা চিন্তিত হয়ে বলছে,

-একি! চোখে পানি কেন? কিছু পড়েছে?

ইনায়া ইশারায় মাথা ঝাঁকায়। গলাটা ধরে আসছে। পানির বোতল হাতে নিয়ে দ্রুত বেরিয়ে আসে ক্লাস রুম থেকে।

নীল আর ইনায়া ক্লাসরুমের দরজার সামনে থেকে একে অপরের মুখোমুখি হয়। তবে ইনায়া মাথা উঁচু করে আর তাকায় না। বরং দ্রুত মুখ লুকিয়ে পাশ কেটে চলে যায়। নীল সেদিকে কিছুক্ষণ লক্ষ্য করে বলল,

-কী হয়েছে ওনার?

সূচনা সাথে সাথে জবাব দেয়,

-চোখে কিছু হয়েছে। আসার পর থেকেই দেখলাম চোখ ফুলে আছে,এখন আবার হঠাৎ করে লাল হয়েছে।

নীল কথাগুলো যেন শুনেও শুনলো না। লেকচারে সবাইকে মনোযোগী হতে বলে লেকচার দেওয়া শুরু করলো।ইনায়া পুনরায় মাথা নিচু করে নিজের জায়গা মতো বসে পড়ে। তবে নীলের দিকে তাকায় না। বই এর পাতায় এখন ধ্যানে তাকিয়ে থাকে। নীলের প্রতি একই সাথে তার হিংসা আর না পাওয়ার আক্ষেপ কাজ করছে। আজকের ক্লাসের আলোচনা শেষ করে নীল আড় চোখে ইনায়াকে দেখে। 

তারপর চোখ ফিরিয়ে হালকা একটু কাশি দিয়ে বলল,

-উমম্! অফ টপিকের কিছু কথা বলি… খুব মন দিয়ে শুনবেন আপনারা। স্যাফরানিন সম্পর্কে জানেন আপনারা?

শিক্ষার্থীদের থেকে একই পরিমানে হ্যাঁ এবং না জবাব আসে। নীল পুনরায় বলে,

-জানলে,ভেরী গুড। না জানলে বলছি,গ্রাম স্টেইনিং পদ্ধতি তে যে রঞ্জক ব্যবহার করা হয় এটি হলো সে পদার্থ। পরবর্তী তে বিস্তারিত জানাবো। তবে রং টা কিন্তু খুবই চমৎকার। আমার বেশ পছন্দের। পছন্দের জিনিস কিন্তু আকর্ষনীয় করতে লাল রংই সেরা।

সূচনা ইনায়ার কাছে ফিসফিস করে বলল,

-এখন থেকে আমি লাল ই পড়ে আসবো তাহলে।

তবে ইনায়া নিজেকে আর ধরে রাখতে পারে না। অসম্ভব রাগ নিয়ে উঠে দাঁড়িয়ে বলল,

-কোনো প্রফেসর কোন রং পড়লে আকর্ষণীয় দেখায় এসব বলতে ক্লাসে আসে? 

-উহ্ মিস..কী যেন? Whatever! কী পড়লে আকর্ষণীয় লাগে তা আমি বলেছি কি?  স্যাফরানিন লাল রং এর, গ্রাম নেগেটিভ ব্যাকটেরিয়া চিহ্নিত করে এটি। আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে না তখন? স্টুডেন্টস্ ,ভুল বলেছি কিছু?

সকলে একসাথে না বলে ওঠে। ইনায়া বেশ লজ্জা পেয়ে বসে পড়ে নিজের জায়গায়। নীল ইনায়ার একটু কাছে গিয়ে  আস্তে আস্তে বলল,

-তবে লাল পড়লে আকর্ষণীয় লাগবে কিন্তু,যেহেতু আপনি এটি ভেবেছেন,সেজন্য অবশ্যই চেষ্টা করে দেখতে পারেন মিস.।

নীল কথা টা বলেই বেরিয়ে যায়। এদিকে সূচনা পরিকল্পনা করছে লাল রঙের আরো কয়েকটা জামা কিনবে আজ। সাথে প্রেজেন্টেশনে কীভাবে লাল শাড়ি পড়বে সব পরিকল্পনা তৈরী করে রাখছে। ইনায়া বিরক্ত হয়ে কোনো কথা ছাড়াই ক্লাস থেকে বেরিয়ে যায়। ভার্সিটি থেকে বেরিয়ে রিকশা নিয়ে রওনা দেয় বাড়ির উদ্দেশ্যে। 

.

.

ভাড়া দিয়ে মন মরা হয়ে বাড়িতে ঢুকলো সে। সদর দরজা খোলাই ছিল। বাড়ির গিন্নি রা বসে আছেন সবাই একসাথে। হেলেদুলে হেঁটে সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠে ইনায়া।কারো কোনো প্রশ্নের জবাব না দিয়ে নিজের ঘরের দরজা বন্ধ করে উপর হয়ে শুয়ে থাকে। রাতে ঘুম হয়নি। 

শরীরটা বিছানায় ছেড়ে দিয়ে বিড়বিড় করে বলল,

-বাকি জীবন বোধ হয় কান্না করতে করতেই কাঁটাতে হবে। কিছু কিছু মানুষের জন্ম হয় চোখের পানি ফেলতে।তাদের কষ্টের শেষ থাকে না,সুখের শুরু থাকে না।

চোখ আপনাআপনি  বন্ধ হয়ে আসে। গভীর ঘুমে তলিয়ে গেলেও তা বেশিক্ষণ স্থায়ী হয় না। মা*রপিটের স্বপ্ন দেখে আচমকা ঘুম থেকে উঠে পড়ে।নিচে বাস্তবেও চিল্লাচিল্লির আওয়াজ শোনা যাচ্ছে। গায়ে কোনো রকমে ওরনা পেঁচিয়ে নিচে নেমে আসে। নীলের গলায় টাই এলোমেলো হয়ে আছে। শার্টের তিনটে বোতাম খোলা। উস্ক খুস্কো চুল।চোখ লাল হয়ে আছে। পায়ের কাছে কয়েকটা  জিনিস ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। বাড়ির সবার আতঙ্কিত চাহনি দেখে আর নীলের এমন অবস্থা দেখে আঁতকে ওঠে ইনায়া। 

দ্রুত নীলের কাছে এসে বলল,

-কী হয়েছে নীল ভাই?

নীল তীক্ষ্ণ দৃষ্টি তে তাকায় ইনায়ার দিকে। তবে জবাব না দিয়ে উপরে চলে যায়। 

ইনায়া মা বড়মার কাছে এসে বলল,

-কী হয়েছে?

আয়েশা আক্তার সজোরে থা*প্পড় দেয় মেয়েকে। তাল সামলাতে না পেরে ফ্লোরে পড়ে গেলেও আতংকিত চাহনি তেই তাকিয়ে থাকে। কাঁপা গলায় বলল,

-কী হয়েছে? নীল ভাই এর…

(চলবে……)

#Running 

#episode:43

Written by #Samia_Sara

Story name: #আড়ালে_তুমি

আমার প্রিয় পাঠক পাঠিকারা, গল্পটি নিয়ে আপনাদের মন্তব্য শুনতে চাই। একদম সব্বাই কমেন্ট করে জানিয়ে দিন,কেমন লেগেছে আপনাদের কাছে। আর আগের পর্বে এতো ভালোবাসা দেওয়ার জন্য অনেক কৃতজ্ঞতা। ভালোবাসা নিবেন 🥺🫶🏻

Share On:

TAGS:



CLICK HERE GO TO OUR HOME PAGE
Related Posts
 

0 Responses

Leave a Reply