৪বছরেরচুক্তির_মা
পর্ব_১৫
লেখিকাসারাচৌধুরী
🚫কপি করা সম্পুর্ন নিষিদ্ধ🚫
নবদীগন্তের সুচনা হয়েছে ধরনীতে..তবে আজকের সুচনা বেশ অন্যরকম..শীতের শুরু..তারিদিকে কুয়াশা আচ্ছন্ন..কাচের জানালা বেয়ে গড়িয়ে পড়ছে শিশিরের বিন্দু বিন্দু পানি..ভেসে আসছে বাড়ির সকলের কথা বলার আওয়াজ..সারা আড়ামোড়া খেয়ে চোখ মেলে তাকালো..বালিশ এর নিচে হাতরে নিজের এন্ড্রাইয়েড মোবাইল টা নিলো..ফোনের স্ক্রীন চালু করতে ভেসে উঠলো তার আর শুভ্রর একে অপরের দিকে তাকিয়ে থাকার এক সুন্দর দৃশ্য..এটা তো সারাকে স্কুলে ভর্তি করানোর দিন ফাতিহা লুকিয়ে তুলেছিলো..সারা মুচকি হাসলো..তার ছোট্ট মনে শুভ্র নামের মানুষের ভরপুর রাজত্ব চলে..সময় বহমান..ঠিক নদীর উতলা স্রোতের মতো..নদীর স্রোত যেমন আমরা আটকে রাখতে পারি না ঠিক তেমনই সময় ও কোনো ভাবে আটকে রাখা যায় না আর সুখের সময় হলে তো আরো তাড়াতাড়ি বয়ে যায়..!
সারা তালুকদার বাড়িতে এসে তিনমাস হয়ে গেলো..এই তিনমাস সারার জিবনে এক সুন্দর অধ্যায় হয়ে সারাজীবন থাকবে..যেখানে ফারুক তালুকদার আর মিসেস আনিতার মতো বাবাই আর মা পেয়েছে আনিস তালুকদার আর সুমনার আব্বু আম্মু পেয়েছে মনিরার মতো ফুফু পেয়েছে অন্তু শ্রাবন এর মতো দুটো ভাই পেয়েছে..আর সব শেষে ফাতিহা আর আনিশার মতো দুটো বেস্ট ফ্রেন্ড এর মতো বোন পেয়েছে.. এ বাড়ির সকলে সারার সাথে ভালো ভাবে কথা বল্লেও শান্তা সারা কে দু-চোখে সহ্য করতে পারে না..আর সারা তো শুভ্রকে আর অরুকে নিজের কাছেই পাই না তবুও সারা অনেক খুশি..,!
সারা তার কোমর সমান চুল গুলো হাত খোপা করে ফ্রেশ হয়ে দরজা খুলে শিড়ি দিয়ে নামতে থাকলো..চোখে ঘূম ভরপুর ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলো সকাল নয়টা..আজ শুক্রবার হওয়াই সবাই বাড়িতে…সারাকে সিড়ি দিয়ে নামতে দেখে সোফাই বসে থাকা ফারুক তালুকদার বলে উঠলো…
-“গুড মর্নিং মামনি ঘুম ভেঙেছে..!
-“জি বাবাই..!
সারা ফারুক তালুকদার এর দিকে তাকিয়ে সিড়ি বেয়ে নামতে নামতে বলে। ঠিক তখনই শান্তা সিড়ি দিয়ে নামতে যায় আর সারার গাউন এ চেপে ধরে পা দিয়ে ফলে সারা এক পা এগোতেই উবুড় হয়ে পড়ে যায় নিচে..ঘটনার আকর্ষিকতায় সারা কিছু বুজে উঠতে পারে না..শ্রাবন এসে সারাকে ধরে তুলে দাড় করায়..সারার বেশি লাগে দুই সিড়ির পর থেকে পড়লে কারোর ই লাগে না..শান্তা এক্টা ডেভিল হাসি দেই মনে মনে তারপর বলে উঠে একি সারা দেখে হাটতে পারো আমি পড়ে যেতাম তোমার জন্য…শান্তার কথা শুনে শ্রাবন একটা ধমক দেই শান্তাকে..তারপর সারাকে নিয়ে টেবিল এ চলে যায়..!
সারা শ্রাবন কে নিজের বড় ভাই মনে করে..কখন কি লাগবে না লাগবে..কখন কি প্রয়োজন বাড়ির কেও না বুজলেও শ্রাবন বুজে যায়..সারা মনে মনে ভাবে প্রথমে শ্রাবন ভাইকে রাগী মনে হলেও মন টা অনেক ভালো..শ্রাবন ও সারাকে সব সময় প্রটেক করে.. শুভ্র সারার থেকে দূরত্ব বজায় রাখে.. কারন সেও বুঝতে পেরেছে সারার বয়স তার তুলনায় অনেক কম..আর শুভ্র কারোর কথা অমান্য করে না বলে সারার থেকে দুরুত্ব বজায় রেখে চলে..!
সকালের ব্রেকফাস্ট শেষ এ সবাই চা খেতে বসেছে যদিও সারা খাই না তবুও সোফাই সবার সাথে বসেছে শুভ্র তার সামনা সামনি সোফাই অরুকে কোলে নিয়ে বসে আছে..সারা বর্তমানে দশম শ্রেনিতে পড়ছে ফারুক তালুকদার স্কুলে কথা বলে তাকে নাইন এর পরিক্ষা দেওয়ানো হয়েছিলো আর এখন পাশ করে দশম শ্রেনিতে..মিসেস সুমনা চা দিয়ে যাওয়ার পর সবাই চা খাচ্ছিলো ঠিক তখনই..
অন্তু বলে উঠে বড় ভাইয়া শুনো..সবাই অন্তুর দিকে তাকালে অন্তু শ্রাবন এর দিকে তাকিয়ে বলে..বড়ো ভাইয়া কালকে সন্ধ্যায় পড়ার সময় ফাতিহা আপি তোমার লাঠি লুকিয়ে রাখছে যাতে তুমি ভয় দেখাতে না পারো..এদিকে সবাই ফাতিহার দিকে তাকালে ফারিয়া চোখ বন্ধ করে মাথা নিচু করে বসে আছে..শ্রাবন গম্ভীর কন্ঠে ফাতিহার দিকে তাকিয়ে বলে উঠে..
-“ফাতু এগুলা কি সত্যি..অন্তু কি ঠিক বলছে..!
ফারুক তালুকদার আর আনিস তালুকদার উঠে যে যার রুমে চলে গেলো কারন তারা যানে প্রতিদিন এই কয়টার কোনো না কোনো বিচার বসবেই তাই মাথা না ঘামিয়ে ঘরে চলে গেলো তারা।এদিকে ফাতিহা কটমট করে অন্তুর দিকে তাকিয়ে আছে..শ্রাবন ধমকে উঠে বললো..যা বই নিয়ে বস আমি এসে পড়া ধরবো না হলে ওই লাঠি আজ তোর পিঠে ভাংবো..ফাতিহা ভয়ে ভয়ে উঠে দাড়ালো দাঁড়িয়ে বললো ভাইয়া পরে বসি একটু..শ্রাবন আবার ধমক দিয়ে বলে তুরা চার টাই যা..অন্তু এবার বললো আমি তো তোমার উপকার করলাম আমি কেন পড়বো..শ্রাবন ভ্রু কুচকে রাগী চোখ নিয়ে তাকাতেই অন্তু ঢোক গিললো তারপর বললো আনিশা আপি কাল তোমার সেই লাঠি বাইরে ফেলে দিয়েছে..আনিশা এতক্ষন সুন্দর করে বসে টিভি দেখছিলো অন্তুর কথা শুনে তার ভিষম লেগে গেলো..শ্রাবন আনিশাকে একটা ধমক দিতেই সারা মিনমিনিয়ে বলে উঠে…
-“ভাইয়া তুমি আপুকে বকিও না আপু এখোনো কার্টুন দেখে ভাত খাই..!
সারার কথা শুনে সবাই হেসে ফেলে এদিকে আনিশার ফাটছে..জানে আজ শ্রাবন ভাই চার টা এক টারো ছাড়বে না..প্রতিদিন অফিস থেকে বাড়ি এসে সন্ধ্যায় সবাই বই নিয়ে বসানো শ্রাবণ এর কাজ..কারন তাকে ছাড়া কাওকে ভয় পাই না চার জনের একটাও..শ্রাবন সারার দিকে তাকিয়ে গম্ভীর কন্ঠে বলে কি কি করছিলে সব বলো নইতো একটা মাইর ও বাইরে পড়বে না তোমাদের সব কইটারে পিটাবো সকাল সকাল..সারার এখন মাটি ফেড়ে পাতাল এ চলে যেতে ইচ্ছা করছে সামনে শুভ্র বসে অরুকে কোলে নিয়ে মোবাইল দেখছে..সারার ভাবনার মাঝেই শ্রাবন আর এক ধমক দেই কি হলো বলো…সারা এবার শ্রাবন এর রাগী দৃষ্টি দেখে সব বলতে থাকে যদিও ফাতিহা আর আনিশা না বলতে ইশারা করছিলো তাও সারা ভয়ে বলে দেই….
-“আসলে ভাইয়া আমরা কাল পড়ার সময় আমাদের কারোর পড়া মুখস্ত হচ্ছিলো না তাই ফাতিহা আপু লাঠি লুকিয়ে রাখে আর আনিশা আপু তো সেইটা ফালাই দেই জানালা দিয়ে..কিন্তু আপনি তো আর কাল পড়া ধরেন নাই তাই আর লাঠি খুজেন নাই..!
সারার কথা শেষ হতেই শ্রাবন আনিশা আর ফাতিহার দিকে রেগে তাকাই..আনিশা সারার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে বিড়বিড় করে বলে উঠে…
-“বান্ধুবী তোর ব্যাবহারটা আর ভুলবো না।।
-“বান্ধুবী তোর ব্যাবহারটা আর ভুলবো না..!
-“জানতাম না তুই আমাদের ফাসাই দিয়ে হবি
দেওয়ানা..!
-“হাই বান্ধুবি তোর ব্যাবহার টা আজও ভুলি নি..!
-“বান্ধুবী তোর ব্যাবহার টা আজও ভুলি নি..!
-“জানতাম না তোর আর অন্তুর মনে এতো সয়তানি..!
চলবে…….
-(গল্প রিচেক দেওয়া হয়নি ভুল ক্রুটি ক্ষমা করবা..তোমাদের রেসপন্স এ আমার লেখার আগ্রহ পাচ্ছি…আজকের পর্ব কেমন হয়েছে বলে জাও আশা করি ভালো লাগবে)-
Share On:
TAGS: চার বছরের চুক্তির মা, সারা চৌধুরী
CLICK HERE GO TO OUR HOME PAGE
-
৪ বছরের চুক্তির মা পর্ব ১৪(ক+খ)
-
৪ বছরের চুক্তির মা পর্ব ১
-
৪ বছরের চুক্তির মা পর্ব ৮
-
৪ বছরের চুক্তির মা পর্ব ২
-
৪ বছরের চুক্তির মা পর্ব ৬
-
৪ বছরের চুক্তির মা পর্ব ১১
-
৪ বছরের চুক্তির মা পর্ব ৪
-
৪ বছরের চুক্তির মা পর্ব ৩
-
৪ বছরের চুক্তির মা পর্ব ৯
-
৪ বছরের চুক্তির মা পর্ব ১২