Golpo romantic golpo চার বছরের চুক্তির মা

৪ বছরের চুক্তির মা পর্ব ১২


বছরেরচুক্তির_মা

পর্ব_১২

লেখিকাসারাচৌধুরী

🚫কপি করা সম্পুর্ন নিষিদ্ধ🚫

সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠেই ড্রেসিং টেবিল এর সামনে বসেছে শান্তা।।আকাশি রঙয়ের হলদে কারুকাজ করা পাড় দেওয়া একটা সুতি শাড়ী পরেছে সে..চোখে মোটা করে কাজল দিয়েছে..ঠোঁটে দিয়েছে লাল টকটকে লিপিস্টিক দিয়েছে..পরিপাটি হয়ে শিড়ি দিয়ে নামছে শান্তা..শুভ্র ভাই তাকে বলেছিলো আকাশি রঙ এ তাকে ভালো মানাই..আর এই শাড়ি টাও গিফট করেছিলো..শান্তা মনে মনে হাসে সে দিন শুভ্র ভাই ফোন এ বলেছিলো…

-আচ্ছা শান্ত তোর কথাই হলো আমি যেদিন বাড়ি আসবো সেদিন তুই আমার দেয়া শাড়ি টা পড়িস..!

সেদিন শান্তা সবার সামনে কিছু না বল্লেও রুমে এসে প্রায় এক ঘন্টা আনন্দে নেচেছিলো…সেতো সেই ক্লাস টেন থেকে শুভ্র ভাইকে পছন্দ করে..বাড়িতে থাকতে সব সময় তার আশে পাশে থাকতো..শুভ্র বিরক্ত হতো কি বুজা জেতো না..খুব কম কথা বলতো কিন্তু ঠোঁটে সব সময় হাসি লেপ্টে থাকতো..শুভ্রর বাম গালে টোল পড়া দেখে শান্তা নিজের পঞ্চাদশী মনে সেদিন প্রেম অনুভব করেছিলো..তার পর তা ধীরে গভির থেকে গভীর হতে থাকে..!দু বছর আগে শুভ্র ভাই যখন একেবারে ঢাকা চলে গেছিলো সেদিন রুমে বসে কি কান্না টাই না কেদেছিলো শান্তা..নিজের অতীত ভেবে একটু হাসলো তারপর নিচে নেমে আসলো..শুভ্র ভাইয়ের আসার সময় হয়ে গেছে….


শুভ্র গাড়ি থেকে নেমে অরু কে কোলে নিয়ে সারার হাত ধরে বের করে আনলো..বাড়ির সদর দরজায় সবাই দাঁড়িয়ে আছে তাদের জন্য.. সবাই জানে সারার সাথে শুভ্রর নাম মাত্র বিয়ে শুধুমাত্র অরুকে দেখার জন্য চুক্তির বিয়ে..কিন্তু শান্তা সেটা জানে না..যখন শুনলো শুভ্র ভাই বিয়ে করছে সাথে সাথে তার এই দুই বছর দেখা সপ্ন খসে পড়ে গেলো.. চোখ ধরে এলো তার..শুভ্র সারাকে সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দিলো..সারা আন্তরিক ভাবে সবাইকে সালাম করলো শুভ্র মা আনিতার সারাকে খুব মনে ধরে গেলো..মেয়েটাকে সুন্দরী বলা চলে বউমা হিসাবে মন্দ নয় কিন্তু বয়স টা অল্প..!

শুভ্র শান্তার সামনে এসে বলে শান্তু তোর ভাবি আর আর পরিচয় হো..শান্তা চোখে পানি নিয়ে সারার সাথে পরিচিত হলো..কিন্তু মনে মনে রেফে ফেটে পড়লো..তার শুভ্র ভাইকে কেড়ে নিলো এই মেয়ে একে তো শান্তি তে থাকতে দিবো না..!

শুভ্র আর দেরি করলো না অরুকে মিসেস আনিতার কোলে দিয়ে নিজের রুমে জাওয়ার কথা বললো..মিসেস আনিতা এসে রুমের চাবি দিলেন..শুভ্র যাওয়ার পর থেকে রুম তালাবদ্ধ করে রেখেছিলেন তিনি.. আজ সকালে সব পরিষ্কার করেছে।শুভ্র সারার হাত ধরে ল্যাগেচ গুলো নিয়ে দুতলায় উঠে এলো..তারপর রুমে গিয়ে সারাকে বললো ফ্রেশ হয়ে নিতে..!

সারা রুমের চারিদিকে চোখ বোলালো।। না এই রুম টা মোটেও ঢাকার মতো না তার থেকে দ্বিগুন বড়.. অফ হোয়াইট রঙে রঙিন ঘর..এক পাশে বিশাল বিছানা তার পাশে রাখা বেড সাইট টেবিল..
ঘরের দক্ষিন পাশে বিশাল বেলকোনি..ফুলে ভরা..ঘরের এক কোনে সোফা রাখা তার সামনে টি -টেবিল.. বিছানার অন্য পাশে দুইটা আলমারি একটা ড্রেসিং টেবিল আর এক পাশে পড়ার টেবিল…সারার এক কথায় শুভ্র রুম টা খুব পছন্দ হলো..সারা ওয়াশরুমে গিয়ে গোসল করে বের হলো..কোমর সমান চুল ছেড়ে দেয়া টুপ টুপ করে পানি পড়ছে শুভ্র সোফাই বসে ছিলো।সারার দিকে চোখ যেতেই তার চোখ আটকে গেলো..গোসলের পরেও যে একটা মেয়েকে এতো সুন্দর লাগে সে আগে কখোনো দেখেনি..শুভ্র শুকনো ঢোক গিললো তার পর বিড় বিড় করে বললো..হাইরে পিচ্চি পাখি এই শুভ্র দিন দিন তোমার মধ্যে মাতাল হয়ে যাচ্ছে কেমন নেশালো লাগে তোমাকে ইশ..!

সারা চুল মুছে নিলো তারপর শুভ্রর সামনে এসে টাওয়েল টা শুভ্রর দিকে এগিয়ে দিয়ে বললো আপনি প্লিজএকটু এটা বারান্দায় দিয়ে আসুন৷ কথাটা শুভ্রর কানে গেলো কি সারা জানে না..শুভ্র উঠে সারাকে খাটের উপর সুইয়ে দিলো..সারা ভড়কে গেলো..কাপা কাপা কন্ঠে বলে উঠলো…

-ক…ক…কি করছেন…!

শুভ্র এবার সারার মুখের কাছে এলো নাকে নাক ঘসা দিয়ে বললো কেমন জানি পাগল পাগল লাগছে নিজেকে প্লিজ একটু সহ্য করো..সারা কিছু বলতে যাবে তার আগেই দরজায় কেও কড়া নাড়লো..শুভ্র বিরক্তিতে চোখ মুখ কুচকালো…এমন এমন টাইম এ বিরক্ত করে বলার মতো না..সারা ও লজ্জায় বারান্দায় চলে গেলো আর শুভ্র চলে গেলো দরজা খুলতে…!

দরজা খুলতেই মিসেস আনিতা রুমে প্রবেশ করলো হাতে কয়েকটা সুতির শাড়ী..শুভ্র জিজ্ঞাসা করতেই মিসেস আনিতা বলে উঠে নতুন বউ দের শাড়ি পড়তে হয়..?

শুভ্র এতে বেশ বিরক্ত যে মেয়েকে এমনি দেখলেই তার দুনিয়া থমকে যায় সে নাকি শাড়ী পরে থাকবে তার সামনে..শুভ্র তাই কাঠ কাঠ গলায় বলে উঠলো..

-আম্মু ও ছোট আর তুমি জানো ওকে কেন এনেছি..ওর একটা পরিবার চাই আর একটা কারন তুমি জানো..তাই আমি চাইনা এসব রিচুয়াল পালন করা হোক আর একটাও কথা শুনবো না আম্মু মাফ করো..!

-মিসেস আনিতা বুজলো ছেলের কথা তারপর বললো কিন্তু তোর আব্বু কি মানবে..?

-আব্বুকে বলেই বিয়েটা করেছি যা আব্বুও জানে তাই ও যেমন থাকতে চাই থাকুক এসব শাড়ি ও সামলাতে পারবে না..!

-মিসেস আনিতা কিছু বললো না সে জানে তার ছেলে যা বলে তাই করে..সবার সামনে রাগ না দেখালেও নিজের রাগ নিজের উপর ঝাড়ে..তাই আর কথা না বাড়িয়ে বললো খেতে আই সবাই অপেক্ষা করছে..!

-আচ্ছা যাও আসছি..!

মিসেস আনিতা চলে যেতেই শুভ্র ফ্রেশ হয়ে এসে সারার হাত ধরে রুম থেকে বেরিয়ে গেলো..

শান্তা প্রায় পনেরো মিনিট ধরে রুমে বসে কাদছে..তার এ মনে শুভ্র ভাইয়ের জন্য আলাদা রাজ্য ছিলো কিন্তু তার শুভ্র ভাই তাকে ঠকালো..শান্তার চোখ বেয়ে পড়ছে অগনিত নোনাজল চোখের কাজল লেপ্টে গেছে আকাশী শাড়ি রুমে এসেই ছিড়ে ফেলেছে….তার হৃদয় পুড়ে যাচ্ছে..কান্না থামছে না চোখ লাল হয়ে গেছে.. তখন তার মা মনিরা খাবার জন্য ডাকতে আসলো।।

শান্তা চোখ মুছে দরজা খুলে ওয়াশরুমে চলে গেলো আর আর তার মা মনিরা কে বল্লো তুমি জাও আসছি…মনিরা বুজলো না তার মেয়ে এমন কেন করছে..তার মেয়ে তো শুভ্র ভাই বলতে অজ্ঞান..ঠিক তখনই মনিরার নজর যাই খাটের নিচে মনিরা আতকে উঠে খাটের নিচে তাকাতেই….

চলবে….

-(তোমাদের রেসপন্স পেয়ে আমি অনেক খুশি লেখার ও আগ্রহ পাচ্ছি অনেক..আজকের পর্ব কেমন হয়েছে বলে জাও আশা করি ভালো লাগবে)-

Share On:

TAGS: ,



CLICK HERE GO TO OUR HOME PAGE
Related Posts
 

0 Responses

Leave a Reply