৪বছরেরচুক্তির_মা
পর্ব_১১
লেখিকাসারাচৌধুরী
❌কপি করা সসম্পুর্ন নিষিদ্ধ❌
সারার স্যালাইন চলছে..চোখ বেয়ে পড়ছে ধারাবিহীন নোনাজল..সে এই শোক টা নিতে পারি নি..লজ্জাই কস্টে পাথর প্রায় হয়ে গেছে সে..শুভ্র তখন সারাকে কোলে করে রুমে নিয়ে আসে..তারপর ডাক্তার কে কল দেই সাথে সাথে..ডাক্তার এসে চেকাপ করে সারাকে..অনেক্ষন দেখার পরে সারাকে সেলাইন দিয়ে দেই তারপর বলে…
-রোগীর হয়তো কোনো কারনে খুব কস্ট পেয়েছে যার কারনে স্ট্রোক ও করতে পারতো কিন্তু ভাগ্য ভালো থাকায় ভালোর উপর দিয়ে গেছে বলে দম ছাড়ে ডাক্তার ইলিয়াস শুভ্রর পারিবারিক ডাক্তার সে…!
ডাক্তারের কথা শুনে শুভ্র কিছুটা অবাক হয় এত টুকু কারনে একটা মেয়ে এত কস্ট পেতে পারে তার ধারনা ছিলোনা..শুভ্র ডাক্তার কে বলে এখন কি করবো….ডাক্তার ঈলিয়াস তখন বলে….
-আমার মনে হয় মেয়েটাকে তার পরিবার এর কাছে নিয়ে জাও..অনেক সময় এমন হলে একটা হাসি খুশি পরিবার এ মিশে থাকলে ঠিক হয়ে যায় বলে ডাক্তার চলে যায়..!
এদিকে শুভ্র চিন্তায় পড়ে যায়..কি করবে সে..জানে মেয়েটাকে মাত্র চুক্তিতে বিয়ে করছে।।কিন্তু মেয়েটা অসুস্থ হলে তার মেয়ের কে খেয়াল রাখবে..শুভ্র আর ভাবতে পারছে.. সারার মাথার কাছে বসে অরুর দোলনায় ঘুমন্ত অরুর দিকে তাকালো তারপর বিড়বিড় করে বললো..
-“বাবার চেয়ে শক্তিশালী কোনো পুরুষ হয় না আর মায়ের চেয়ে যত্নবান কোনো নারী হয় না”-
আমি চাই আমার অরু কখোনো এই দুইটার অভাব না পাক..আমি জানি সারা অরুকে খুব ভালো ভাবে মায়ের মতো আগলে রাখবে..শুভ্র আর কিছু ভাবতে পারলো পকেট থেকে ফোনটা বের করে সারার দিকে একবার তাকালো কি সুন্দর মা-মেয়ে দুজন ঘুমাচ্ছে আর সে চিন্তায় পড়েছে.. মুচকি হাসলো শুভ্র সারার কপালে ঠোঁট ছুয়ে দিয়ে উঠে ফোনের ডায়াল প্যাড থেকে “বাবা” নাম টা সেভ করা ছিলো..কল লাগালো তার বাবার ফোন এ..
প্রায় পঁচিশ মিনিট কথা বলে রুমে এসে তৃপ্তির একটা হাসি হাসলো..সে যানতো তার বাবা-মা কোনো দিন ও দ্বি-মত করবে না আজকেই নিয়ে যেতে বলছে..শুভ্র মা তো সারার অসুস্থতার কথা শুনে না জানা অচেনা মেয়ের জন্যই এখানে চলে আসতে চাইছিলো…শুভ্র বলছে সারা একটু সুস্থ হলেই তারা সিলেট আসবে…!
শুভ্র ফোনটা চার্জ এ দিয়ে সোফাই বসে অফিসের কাজ গুলা করতে থাকলো…!
দেখতে দেখতে কেটে গেছে দুইটা দিন..শুভ্র আজ সিলেট যাবে..হয়তো এবার থেকে সেখানেই থাকবে..শুভ্র নিজের ঢাকার ব্যাবসা নিজের বাবার হাতে তুলে দেই তারপর সিলেট এর উদ্দেশ্য রওনা দেই..সারা আগের চেয়ে সুস্থ হয়েছে কিন্তু মন মরে গেছে তার আগের মতো হাসে না সারা কিন্তু অরুকে সব সময় ঠিক মতো কেয়ার করে শুভ্র এতেই খুশি..শুভ্রদের ট্রেন রাত এগারোটায়..যদিও শুভ্র গাড়িতে যেতে চেয়েছিলো তবে সারা ট্রেন এ যেতে চেয়েছে..সারা নাকি আগে কখোনো ট্রেন এ যায়নি।শুভ্র অবাক হলোনা কারন সে জানে সারা কে তার মামা-মামি বাড়ি থেকে বের হতে দিতো না..!
সময় মতো ট্রেন এ উঠে পড়লো শুভ্র সারা..শুভ্র এক হাত দিয়ে লাগেচ নিছে আর অন্য হাতে সারার হাত শক্ত করে ধরেছে যেনো ছেড়েদিলেই হারিয়ে যাবে..সারার কোলে ছোট্ট অরু..ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে আছে সারার মুখের দিকে.. শুভ্র নিজেদের জন্য একটা আলাদা কেবিন নিয়েছে..! ট্রেন চলতে শুরু করলো সারা জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে চারিপাশে ফেলে চলে যাওয়া অন্ধকার প্রকৃতি দেখছে..শুভ্র সারার কাছ থেকে অরুকে নিয়ে তারপর সারাকে এক হাতের বাহুডরে নিলো তারপর সারার হাতে একটা ব্যাগ ধরিয়ে দিলো..সারা শুভ্রর দিকে তাকাতেই শুভ্র হেসে বললো খুলে দেখো…!
সারা ব্যাগ খুলে দেখলো.. তার ভিতরে চকলেট চিপ্স ভাজা,বিস্কুট.. চাটনি. কোলড্রিংস সব আছে..সারা মনে মনে অনেক খুশি হলো কিন্তু সেই খুশি বাইরে প্রকাশ পেলো না..মুখে কিঞ্চিত হাসি টেনে বললো এগুলা কখন আনলেন..শুভ্র টুপ করে সারার কপালে চুমু খেলো সারা তব্দা খেয়ে গেলো..শুভ্র তারপর ফিসফিস করে বললো কাল রাতে তোমার শাশুড়ী বলেছে এগুলা কিনে রাখতে ট্রেন এ তোমার লাগবে…তাই আমি আগেই কিনে রাখছিলাম নাও খাওয়া শুরু করো..সারার ঠোঁটে এবার এক চওড়া হাসি ফুটলো এক করে খাওয়া বের করে খাওয়া শুরু করলো সে…!
দীর্ঘ দুই বছর পর ঘরের ছেলে ঘরে ফিরছে তাও একেবারে..নিজের ব্যাবসা এবার সিলেট এ থেকেই সামলাবে শুভ্র…সিলেট জেলার শিবগঞ্জে শুভ্র বাড়ি..বিশাল বড় তিনতলা বাড়ি..আব্রাহাম তালুকদার এ বাড়ি প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন..তার নাম অনুশারে বাড়ির মেইন গেট এ বড় বড় করে লেখা ❝তালুকদার নীড়❞.. শুভ্রর বাবা চাচারা তিন ভাই এক বোন.. শুভ্রর বড় বাবা ইশতিয়াক তালুকদার অনেক বছর ধরে বিদেশ থাকেন যোগাযোগ থাকলেও দেশে আসেন না কোনোদিন…শুভ্র বড় চাচি আমেরিকান নাম লেচি আর তার চাচতো বোন অরিনা লেচি..শুভ্রর বাবা মেজো..নাম ফারুক তালুকদার..শুভ্র মা মিসেস আনিতা.. শুভ্র একটা ছোট বোন আছে নাম ফাতিহা তালুকদার.. বয়স সতেরো..ইন্টার প্রথম বর্ষে পড়ছে।।শুভ্রর ছোট চাচা.. আনিস তালুকদার..স্ত্রী সুমনা খাতুন..তাদের দুই এক মেয়ে এক ছেলে..মেয়ে আনিসা তালুকদার বয়স ষোলো..এবার মাধ্যমিক দিবে..আর ছেলে অন্তু তালুকদার বয়স বারো ক্লাস সিক্স এ পড়ে..শুভ্রর একটা ফুফি..এই পরিবারেই সে থাকে স্বামি মারা গেছে অনেক বছর আগে..তখন থেকেই এখানে থাকে নাম মনিরা তালুকদার..তার এক ছেলে এক মেয়ে.. ছেলে শ্রাবন তালুকদার বয়স ছাব্বিশ.. শুভ্র আর শ্রাবন পিঠাপিঠি..শ্রাবন বর্তমানে ব্যাংক এ চাকরি করে..সে কোনো মতেই ব্যাবসা করতে রাজি ছিলো না তাই আর কেও জোর করে নাই.. আর মেয়ে শান্তা তালুকদার..বয়স উনিশ..উচ্চ মাধ্যমিক পরিক্ষা দিয়েছে!
শুভ্র বাড়ি ফিরছে শুনে রান্না করতে বিজি আনিতা ও সুমনা আর হাতে হাতে কাজ করে দিচ্ছে মনিরা..এ বাড়ির সকলেরই চোখের মনি শুভ্র..কখোনো কারোর সাথে উচু গলাই জোর করে কথা বলে নাই।।যতই রাগ হোক তাও কারোর মুখের কথা বলে নাই..!
শুভ্র দের ট্রেন এসে থামলো নির্দিষ্ট গন্তব্যে.. শুভ্র সারার হাত ধরে লাগেজ নিয়ে বের হয়ে এলো স্টেশন থেকে তারপর একটা গাড়ি ঠিক করে উঠে পড়লো গাড়িতে.. গন্তব্য শিবগঞ্জ তালুকদার বাড়ি..!গাড়িতে উঠে সারা আবারো ঘুমিয়ে গেলো শুভ্রর কাধে মাথা রেখে..তারপর রাস্তার ঝাকুনিতে হালকা চোখ মেলে শুভ্র কে বললো…..
চলবে…..
-(তোমাদের এতো রেসপন্স পেয়ে আমি খুব খুশি..গল্পে এবার ভরপুর টুইস্ট থাকবে..আজকের পর্ব কেমন লেগেছে বলে জাও আশা করি ভালো লাগবে)-
Share On:
TAGS: চার বছরের চুক্তির মা, সারা চৌধুরী
CLICK HERE GO TO OUR HOME PAGE
-
৪ বছরের চুক্তির মা পর্ব ১৫
-
৪ বছরের চুক্তির মা পর্ব ৮
-
৪ বছরের চুক্তির মা পর্ব ১৩
-
৪ বছরের চুক্তির মা পর্ব ৪
-
৪ বছরের চুক্তির মা পর্ব ৯
-
৪ বছরের চুক্তির মা পর্ব ১২
-
৪ বছরের চুক্তির মা পর্ব ৫
-
৪ বছরের চুক্তির মা পর্ব ৭
-
৪ বছরের চুক্তির মা পর্ব ১০
-
৪ বছরের চুক্তির মা পর্ব ২