Golpo romantic golpo সুখময় যন্ত্রণা তুমি

সুখময় যন্ত্রনা তুমি পর্ব ৪৭


সুখময়যন্ত্রনাতুমি
neela_rahman
পর্ব_৪৭

বিকাল পাঁচটায় অফিস থেকে এসে পড়েছে সাদাফ ।মিটিং নেই তাই তাড়াহুড়া করে চলে এসেছে নূরের শরীর ভালো ছিল না ।গতকাল থা*প্পরটা বেশ জোড়ে লাগায় এখনো পর্যন্ত জ্বর ছাড়েনি ।রাতের বেলা যদিও নূরকে বুকে নিয়ে একটু শুয়ে ছিল কিন্তু ভোরবেলা আবার নিজের রুমে চলে আসতে হয়েছে ।জ্বর খুব একটা কমেনি নূরের।

ফজলুর রহমান সাদাফ কে তরিঘরি করে ভিতরে ঢুকেই পানি খেতে দেখে সামনে এগিয়ে এলেন ।তারপর বললেন,”কিরে কতদিন পার হয়ে গেলো ?তোর বিয়ের প্রস্তাব তো এলো না ।মেয়ে না হয় নাই আসতে পারে লজ্জা পেতে পারে আমাদেরকে বল আমরা বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে যাই।”

সাদাফ বললো,”বিয়ে হবে সামনের মাসে ।এখনো বাইশ দিন সময় আছে ।এ ২১ দিনের মধ্যে যে দিনই মেয়ে প্রস্তাব নিয়ে আসবে তারপরে তিনি বিয়ে হয়ে যাবে সমস্যা নেই।”

“মানে কি প্রিপারেশনের একটা ব্যাপার আছে না ?বিয়ে কি হুটহাট হয় ?”

সাদাফ বললো আমার বিয়ে হুটহাট হবে সমস্যা নেই ।যেদিন মেয়ে এসে বলবে আপনার ছেলেকে বিয়ে করতে চাই ঠিক তারপরে দিনই বিয়ে হয়ে যাবে ।প্রয়োজন পড়লে যত অনুষ্ঠান করার বিয়ের পরে করো কোন সমস্যা নেই ।মেয়ে তার পালিয়ে যাচ্ছে না এখানেই আছে।

ফজলুর রহমান অবাক হয়ে বললেন,”মানে ?এখানে আছে মানে ?”নীলা রহমান

সাদাফ পানি খেয়ে বললো,”মানে বিয়ের পর তো এখানেই থাকবে পালিয়ে তো আর যাবে না ।যত ইচ্ছা অনুষ্ঠান করতে পারবে ।”
বলেই পানি খেয়ে সাথে সাথে উপরে উঠে গেল।

উপরে উঠেই নূরের রুমের দরজা চাপানো দেখে দরজা খুলে ভিতরে ঢুকে পড়ল সাদাফ।ঢুকেই দরজা বন্ধ করে দিলো।নূর ঘুমিয়ে ছিল না আধো জাগনাই ছিল।

হঠাৎ হুর মুড়িয়ে সাদাফকে রুমের ভিতর ঢুকতে দেখেই নূর শোয়া থেকে উঠে বসল ।বসে গাঁয়ের কাপড়চোপড় ঠিক করতে লাগলো ।নূরের দিকে তাকিয়ে দেখলো মুখটা কেমন মলিন হয়ে আছে ।আর থা*প্পরের দাগ এখনও স্পষ্ট।

সাদাফ ধীরে ধীরে এগিয়ে এলো নূরের কাছে ।চোখে পানি টই টুম্বুর ।বুঝতে পারছে সাদাব কে দেখে নূর অন্যদিকে মুখ ঘুরিয়ে রাখল ।ফিরেও তাকালো না সাদাফের দিকে ।এদিকে নূরের ঠোঁট দুটি ছোট বাচ্চাদের মত উল্টিয়ে আছে ।বুঝতেই পারছে আরেকটু হলে ফুপিয়ে ফুপিয়ে কেঁদে দিবে নূর। নীলা রহমান

সাদাফ নূরের কাছে এসে বসলো ।বসে বলল ,”আমার দিকে তাকা নুর।”

নুর তাকালো না ।চুপচাপ অন্যদিকে মাথা ঘুরিয়ে রাখলো।

সাদাফ আরও বেশ কয়েকবার ডাকলো ।নূরের একই অবস্থা ।সাদাফের দিকে ফিরেও তাকাচ্ছে না এদিকে চোখের পানি যে কোন মুহূর্তে নিচে পড়ে যাবে ।সাদাফ বললো আর একবার ডাকবো যদি ফিরে না তাকাস আমি ভয়াবহ কিছু করে ফেলব নূর ।

গত রাত থেকে চেষ্টা করছি একটি কথা ও শুনছিস না তুই আমার। বলেছি ভুল হয়ে গেছে অন্যায় হয়ে গেছে সত্য মিথ্যা যাচাই না করে তোর উপর আমি অন্যায় করেছি ।আমিই তো করেছি ।অন্য কেউ তো করেনি ।আমার এতোটুকু ভুল তুই সহ্য করতে পারছিস না?

শাস্তি দিতে চাস ?চুপচাপ থেকে আমাকে শাস্তি দিবি ?তা হবেনা ।আমার সাথে কথা বলতে হবে কথা না বললে আমি এখন ভয়াবহ কিছু করে ফেলব নূর ।শেষবারের মতো বলছি আমার দিকে তাকা।

নূরেরও অভিমান হয়েছে এভাবে সবার সামনে হঠাৎ করে এত জোরে থাপ্পড় মারায় ।যাকে নূর এত ভালবাসে সে শুধু শুধু এসে নূরের গায়ে এভাবে আ*ঘাত করবে নুর কোনদিনও এটা কল্পনা ও করেনি। আঘাতটা নূরের হৃদয়ে গিয়ে লেগেছে ।তাই নূর চুপচাপ রইল ।ফিরে তাকালো না সাদাফের দিকে ।

হঠাৎ দেয়ালে ঘুষি মারা শব্দের নূর ফিরে তাকালো দেয়ালের দিকে ।দেখল দেয়ালে হাতের রক্ত লেগে আছে ।সাদাফের হাত চুইয়ে চুইয়ে রক্ত পড়ছে ।হাত যেন কাপছে ।মাত্রই দেয়ালে ঘুষি মে*রেছে সাদাফ।নূর সাথে সাথে দৌড়ে এসে সাদাফের হাত ধরে চোখের পানি যেন ধরে রাখতে পারল না ।নূর ঝরঝরিয়ে সব চোখের পানি ছেড়ে দিল।

সাদাফের হাতের দিকে তাকিয়ে নূরের যেন কলিজাটা শুকিয়ে গেল ।কিভাবে রক্ত পড়ছে ফ্লোর ভেসে যাচ্ছে রক্তে ।নুর হাত টি বুকের কাছে নিয়ে ফু দিতে লাগলো আর সাদাফের দিকে তাকিয়ে রইল ।তারপর বলল ,”কেন এরকম করলেন ?আমি তো আপনাকে বলিনি এরকম করতে ?কত রক্ত বেরোচ্ছে দেখুন না ।নিশ্চয়ই কষ্ট হচ্ছে আপনার অনেক । খুব ব্যথা করছে নিশ্চয়ই।”

বলেই আবার সাদাফের হাতে ফু দিতে লাগলো বোকা নুর ।যেন ফু দিলে সমস্ত ব্যথা গায়েব হয়ে যাবে সাদাফের।সাদাফ এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল নূরের দিকে ।এইভাবে কিছু রক্ত ঝরিয়ে যদি নূরের রাগ কমানো যায় তাহলে এরকম শত শত ফোঁটা র*ক্ত ঝরানো মঞ্জুর সাদাফের।

এদিকে দরজা নক করছে হুমায়ুর রহমান ও ফজলুর রহমান ।এমন হুরমুর করে সাদাফ অফিস থেকে এসে নূরের রুমে ঢুকেছে ফজলুর রহমানের সন্দেহ হয়েছে নূরের কিছু হয়েছে কিনা।

উপরে এসে রুমে দরজা বন্ধ পাবার সাথে সাথে নক করবে এমন সময় দেয়ালে কিছু একটা জোরে ঘু*ষি বা কিছু শব্দ পেয়েছে যার কারণে এখন দরজা জোরে জোরে নক করছে হুমায়ুর রহমান।

ফজলুর রহমান মনে মনে চিন্তা করছেন কি এমন হয়েছে দরজা লাগিয়ে রেখেছে আর ভিতরে কিসের শব্দ হলো ?মনে হলো কেউ দেয়ালে সজোরে ঘুষি মারল। নুরের ও মনে হয় কান্নার আওয়াজ পাওয়া যাচ্ছে বাবার মন উ*তলা হয়ে উঠল ।জোরে জোরে দরজা নক করতে লাগলো ।বলতে লাগলো ,”বাবা সাদাফ তাড়াতাড়ি দরজা খোল ।কি হয়েছে সাদাফ তাড়াতাড়ি দরজা খোল।”

সাদাফ চুপচাপ দাঁড়িয়ে রইলো ।নূর এগিয়ে গেল দরজার কাছে ।দরজা খুলে দরোজা সাইডে দাঁড়ালো ।রুমের ভিতর প্রবেশ করলে হুমায়ুন রহমান ও ফজলুর রহমান ।হঠাৎ করে এত রক্ত দেখে দেয়ালে রক্ত দেখে সাথে সাথে সাদাফের দিকে তাকালো ।দেখল হাত দিয়ে ঝরঝরিয়ে র*ক্ত পড়ছে। নীলা রহমান

হুমায়ূন রহমান ও ফজলুর রহমান দুজনই সাদাফ এর দিকে দৌড়ে গেল ।হুমায়ূনুর রহমানের যেন কলিজাটা কেঁপে উঠল ।নিজের আদরের প্রিয় সন্তানের হাত থেকে এভাবে র*ক্ত ঝরছে দেখে যেন উনি সহ্য করতে পারছে না।

সাথে সাথে সাদাফের হাত নিজের হাতে নিয়ে বলল ,”কি হয়েছে আমার বাবার হাত থেকে তো র*ক্ত পড়ছে কেন ?”

ফজলুর রহমান ও যেন পাগল প্রায় হয়ে গেলেন নিজের আদরের ভাতিজা চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে এরকম রক্ত পড়ছে ।উনিও দিশেহারা হয়ে গেলেন সাদাফের হাত দেখে।

চলবে………
Neela Rahman
কপি করা সম্পূর্ণ নিষেধ

Share On:

TAGS: ,



CLICK HERE GO TO OUR HOME PAGE
Related Posts
 

0 Responses

Leave a Reply