সুখময়যন্ত্রনাতুমি
neela_rahman
romance
পর্ব_১২৩
নূর গাড়ি থেকে নামতেই ঠান্ডা হাওয়া গাল ছুঁয়ে গেল।
লজ্জায় লাল হয়ে থাকা গাল দুটো আরও দু’শেড গাঁঢ় লাল হয়ে গেলো।
শপিং ব্যাগগুলো গাড়ির পিছনের সিটে সাজানো ।সাদাফ হাত বাড়িয়ে সব নামিয়ে নিল।আড় চোখে তাকিয়ে দেখলো নুর কে।কিন্তু নূর তখনো নিচের দিকেই তাকিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।দু’হাতের আঙুলগুলো জড়িয়ে ধরে আছে।
লিফ্ট থেকে নেমে ফ্ল্যাটের দরজা খুললো সাদাফ।নুরকে ভিতরে ঢুকতে বললো।নুর ছোট ছোট পা ফেলে ভিতরে প্রবেশ করলো।আজ পুরো ফ্ল্যাট নিস্তব্ধ।কোনো শব্দ নেই, কোনো মানুষ নেই, শুধু দু’জনের নিঃশ্বাসের ভারী গম্ভীর শব্দ।
সাদাফ নূরের পাশে এসে দাঁড়ালো।
নূরের মাথার কাছে সামান্য ঝুঁকে থাকায় নুরের আলতো কাঁপুনি সবই সাদাফ অনুভব করতে পারছে।
সাদাফ কন্ঠ নরম করে গভীর স্বরে বলল ,”নূর ভয় পাচ্ছিস নাকি লজজা?”
নূর মাথা আরও নিচু করে ফেললো, যেন চোখ তুললেই নিজেকে সামলাতে পারবে না।
খুব আস্তে বলল ,” ভয় পাচ্ছি না।”
কথাটা শেষই করতে পারল না নুর।
গলাটা কেঁপে উঠলো নুরের।
সাদাফ কয়েক সেকেন্ড তাকিয়ে রইলো নুরের দিকে তারপর দু’হাতে শপিং ব্যাগগুলো থেকে সেই দুটো শাড়ি বার করলো।একটা লাল…
একটা অফ-হোয়াইট।
নূরের সামনে ধরে জিজ্ঞেস করলো,”আজ কোনটা পড়বি? পড়তে পারবি?নাকি হেল্প লাগবে।”
নূর চমকে মুখ তুলে তাকাতেও পারল না।ঠোঁট কাঁপছে, হাতের তালু ঘেমে গেছে।নুর জানে খুব ভালো করেই জানে আজ এসব শাড়ি শুধু সাজবার জন্য নয় সামনে যা হতে চলেছে, সেই ভাবনাতেই বুক ধড়ফড় করছে নুরের।
নূর খুব আস্তে বলল,”পারবো।”
সাদাফ ওর খুব কাছে এসে দাঁড়াল।
সাদাফের কণ্ঠটা আরও নিচু আরও গভীর হয়ে গেল।ঘোর লাগা কন্ঠে বললো,”নূর আজ তুই যা চাইবি তাই হবে।কোনো জোর কোনো তাড়া নেই। কিন্তু আমি চাই তোকে।তুইকি তোকে আজ আমায় দিবি?”
নূর লজজায় মাথা নত করলো।কিন্তু লজ্জাটা এমনভাবে বাড়ছে এক পা বাড়িয়ে সামনে হাঁটতেও পারছে না।
ভেতরের কাঁপুনিটা পুরো শরীরে ছড়িয়ে আছে।
সাদাফ শাড়িগুলো আবার নূরের হাতে ধরিয়ে দিল।সাদাফের আঙুল গুলো নূরের আঙুল ছুঁয়ে গেল।নূরের বুকের ভেতর কেমন উথাল পাথাল ঝড় শুরু হলো।
“লালটা পড়বি? না অফহোয়াইট টা?”সাদাফ জিজ্ঞেস করল।
নূর চোখ না তুলেই মাথা সামান্য নাড়ল।বললো ,”অফহোয়াইট টা পড়বো।
সাদাফ মৃদু হাসলো ।সেই পরিচিত হাসি।যার শব্দও নূরের শরীরের ভেতর কেমন উষ্ণতা সৃষ্টি করে।
সাদাফ ঘোর লাগা কন্ঠে বললো,”তাহলে ভেতরে চল।
তোকে আজ আমি নিজ হাতে সাজিয়ে দেব।”
নূর হাঁটা শুরু করতে গিয়ে থেমে গেল।একইসাথে কাঁপছে লজ্জা পাচ্ছে আর একটা অদ্ভুত টানও অনুভব করছে সাদাফের প্রতি।
সাদাফ লক্ষ্য করল নুর লজ্জা পাচ্ছে।
সাদাফ ধীরে ধীরে হাত বাড়িয়ে নূরের হাত ধরল।বললো,”নূর।”
কণ্ঠ খুব নরম করে ডাকলো সাদাফ।এভাবে মাথা নিচু করে থাকিস না।বেশি লজ্জা পাচ্ছিস?তোকে দেখে আমার মনে হচ্ছে তুই ভিষন লজ্জা পাচ্ছিস।”
নূর মাথা আরও নিচু করে ফেলে ফিসফিস করে বললো,”লজ্জা লাগছে।”
সাদাফ ওর হাতটা নিজের মুঠোয় নিয়ে বলল ,”লজ্জা পাস পা কিন্তু ভয় পাবি না।”
তারপর খুব ধীরে খুব যত্ন করে নূরকে নিয়ে ভিতরে প্রবেশ করালো।
দরজা বন্ধ হওয়ার শব্দটা যেন পুরো রাতটাকে বদলে দিল।
ঘরের নরম আলোয় নূর দাঁড়িয়ে আছে।লজজায় আর কাঁপুনিতে ঠোঁট থরথর করে কাপছে।
হাতে ধরা অফহোয়াইট শাড়িটা যেন ওর বুকের সাথে লেগে আছে।
সাদাফ ধীরে ধীরে এগিয়ে এসে নূরের কানে ঝুঁকে ঘোর লাগা কন্ঠে ফিসফিস করে বললো,”আজ… তোকে আমার চোখের সামনে সাজতে দেখবো নূর।নিজ হাতে সাজাবো তোকে আর তুই শুধু আমার চোখের কাছে থাকবি।”
নূর চোখ বন্ধ করে ফেললো।
লজ্জায়, উত্তেজনায় আর সেই অনিবার্য অদ্ভুত টানে।
নুরের হাত থেকে শাড়িটি নিয়ে একটি ব্যাগ থেকে পেটিকোট এবং ব্লাউজ বের করে বললো,” ওয়াশরুম থেকে চেঞ্জ করে আয় ।আমি শাড়ী পড়িয়ে দিচ্ছি।নূর আর কোন কথা বলল না।”
নুর সাথেসাথে ব্যাগটি নিয়েই ওয়াশরুমের দিকে বড় বড় পা ফেলে চলে গেলো।ওয়াশরুমের দরজা লাগিয়েই নুর জোরে জোরে নিঃশ্বাস নিচ্ছে।লজজায় যেনো দম বন্ধ হয়ে যাচ্ছে নুরের।
সাদাফ বেলী ফুলের মালা দুটো হাতে নিয়ে চোখ বন্ধ করলো।মনে মনে ফুলেল সাজে সজ্জিত নুর কে কল্পনা করতে লাগলো।
ওয়াশরুম থেকে বের হতেই সাদাফ চোখ তুলে তাকালো নুরের দিকে।চোখ দুটো যেনো ঝলসে যাচ্ছে সাদাফের নুরের দিকে তাকিয়ে।
চলবে_
সুখময়যন্ত্রনাতুমি পর্ব ১২৪
neela_rahman
পর্ব_১২৪
নুর কে দেখে সাদাফের যেনো কম্পন শুরু হলো হৃদয়ে।ধুক ধুক করছে বুকের ভিতর।নুর আড়াআড়ি দুই হাত বুকে দিয়ে মাথা নিচু করে করে দাঁড়িয়ে আছে।ডিপ ডিপ করছে বুকের ভিতর। অসহনীয় যন্ত্রনা হচ্ছে।
সাদাফ এগিয়ে এলো নুরের দিকে। নুরের হাত পা কাঁপা কাপি শুরু হয়ে গেলো।সাদাফ এগিয়ে এসে বললো,” ভয় লাগছে? লজ্জা পাচ্ছিস?”
নুর চুপচাপ।কোন কথা নেই।হাত পা কাপছে নুরের।
সাদাফ হাতের শাড়ীর ভাজ খুলে নুরের কোমরে পেঁচিয়ে ধরলো।সাদাফের হাতের স্পর্শে নুর আরো কেঁপে উঠলো।সাদাফের ও হাত কাঁপছে।নুরের উন্মুক্ত উদরে বক্ষদেশে বার বার চোখ না চাইতেও চলে যাচ্ছে।শুকনো ঢোক গিললো বার বার সাদাফ।
নুরের মেদহীন পেট উন্মুক্ত কোমর সদ্য কৈশোর থেকে যৌবনে পা দেয়া নুরের নারী অবয়ব সাদাফের বুকের মধ্যে তোলপাড় শুরু করে দিয়েছে।
সাদাফ চোখ বন্ধ করে দীর্ঘ শ্বাস ছাড়লো।বললো,” চোখ বন্ধ করেছি।হাত সরা।শাড়ী পড়িয়ে দিচ্ছি।”
নুর চোখ খুললো ।সাদাফের দিকে তাকিয়ে ধীরে ধীরে বুক থেকে হাত সরালো। ব্লাউজ পেটিকোট সম্পুর্ন নুরের সাইজের।সাদাফ ধীরে ধীরে নুরের শাড়ীর কুচি গুলো দিতে লাগলো। কুচি সব গুলো হাতে নিয়ে সাদাফ বললো কুচি গুলো গুঁজে নে।নুর হাত পাতলো।তাকালো সাদাফের দিকে।
দেখলো সাদাফের চোখ বন্ধ।নুর কুচি গুলো গুঁজে নিলো।সাদাফ ধীরে ধীরে ঝুকে এসে নুরের কানে কানে বললো,” কিছুক্ষণ পর খুলতেই হবে তাহলে পড়িয়ে লাভ কি?”
নুরের হাত থমকে গেলো।সাদাফ চোখ খুললো।খুলে মুচকি হেসে সাদাফ নুরের বুকের আঁচল ঠিক করে দিলো।নুর নিচের দিকে তাকিয়ে আছে।সাদাফ নুরের হাত ধরে আয়নার সামনে দাড় করিয়ে এলোমেলো চুল গুলো আচড়িয়ে দিলো।তার পর হাত দিয়ে পেচাতে লাগলো। কিন্তু খোপা করতে পারছেনা। বারবার হাত ফসকে চুল পড়ে যাচ্ছে।নুর বললো,”আমি করছি।” সাদাফ বললো,” হুম পারছিনা।এটা তুই কর।বাকি গুলো আমি করছি।”
বলেই ফুলগুলো বের করলো সাদাফ।
নুরের খোঁপা করা হলে সাদাফ খোঁপায় কাঠগোলাপ লাগিয়ে দিলো। হাতে গলায় পড়িয়ে দিলো বেলি ফুলের মালা।নুর এখোনো নিজেকে আয়নায় দেখেনি।
সাদাফ আয়নায় নুরের দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।যেনো নুর নয় কোন ডানা কা*টা পরী।
সাদাফ ঘোর লাগা কন্ঠে ফিসফিস করে বললো,”চোখ খুলে দেখ নুর।মিসেস সাদাফ কে দেখ।দেখ আমার নুরজাহান কে কেমন লাগছে।”
নুর কাঁপা কাঁপা ঠোঁটে চোখ দুটো তুলে ধীরে ধীরে তাকালো আয়নার দিকে ।আয়নার দিকে তাকিয়ে নিজেকে যেন নিজে চিনতে পারছে না নুর ।এ কোন নূর দাঁড়িয়ে আছে আয়নার সামনে ।এই নুর কে তো চিনে না নূর।
নুর হতবিহবল হয়ে তাকিয়ে রইল আয়নায়।নিজেকে নিজের কাছে অজানা লাগছে ।পিছনে দাঁড়িয়ে আছে সাদাফ মুগ্ধ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে নূরের দিকে ।যেন আয়না ভেদ করে সাদাফের দৃষ্টি নূরের এফোর ওফোর করে দিচ্ছে হৃদয়টাকে।
সাদাফ নুরের দিকে তাকিয়ে বললো,” চিনতে পারছিস নুর ?তাকিয়ে দেখ সামনে ।ওই যে মিসেস সাদাফ। সাদাফের নূর ।আমার নূর ।আমার নুরজাহান।”
নুর তাকিয়ে আছে।
তারপর সাদাফ ঘোর লাগা কন্ঠে বললো আর দেখিসনা নূর ।নজর লেগে যাবে ।আজ তোর উপরে নজর লাগার অধিকার তোরও নেই ।আজ তোর উপরে নজর লাগবে শুধু আমার ।সাদাফের।
বলেই সাদাফ নুর কে পাঁজাকোলে করে নিজের কোলে তুলে নিল ।নূর সাথে সাথে চোখ দুটো বন্ধ করে দুহাত দিয়ে খা*মচে ধরলো সাদাফ এর শার্ট।
চলবে_
Neela Rahman
রাতে বাসর দিমু।দিনে না।যদি ঠিকমত রিয়েকশন পাই। লিখতে ২.৩০ ঘন্টা লাগলো। সম্পুর্ন হাতে টাইপ তাও মোবাইলে।
Share On:
TAGS: নীলা রহমান, সুখময় যন্ত্রণা তুমি
CLICK HERE GO TO OUR HOME PAGE
-
সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ২
-
সুখময় যন্ত্রনা তুমি পর্ব ১১৪+১১৫
-
সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ১৭+১৮+১৯
-
সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ৯০
-
সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ৮৪
-
সুখময় যন্ত্রনা তুমি পর্ব ১১৩
-
সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ৬০
-
সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ৮৬
-
সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ৭৭
-
সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ৬৯