সুখময়_যন্ত্রনা_তুমি
neela_rahman
পর্ব_৬০
সাদাফের মনের ভিতর কেমন যেন আনচান আনচান করছে ।কেন হুমায়ূন রহমান বলল নুর নেই। নূরের চিন্তা করতে হবে না ।
কেমন যেন অদ্ভুত এক অনুভূতি হচ্ছে সাদাফের হৃদয় জুড়ে।শূন্য শূন্য লাগছে হৃদয়ের ভিতরটা ।গতকাল থেকে নূরের সাথে কথা হয়নি নূর তো এক মুহূর্ত ফোন না দিয়ে থাকতে পারে না তাহলে এখনো পর্যন্ত ফোন দেয়নি কেনো? ওর অসুস্থতার কথা শুনেও হসপিটালে আসেনি।
নূরের কি শরীর অসুস্থ ? না বাবার সাথে কথা বলতে
হবে । নীলা রহমান লেখিকা
মনে মনে ভাবল সাদাফ।ঠিক এমন সময় রুমে প্রবেশ করলো ফজলুর রহমান হুমায়ূন রহমান সাইমন রিমা নওরিন আফরোজ এবং সামিহা বেগম ।আশেপাশের চোখ বুলিয়ে সাদাফ দেখল কোথাও নূর নেই ।সাদাফ অবাক এর উপর অবাক হয়ে যাচ্ছে নুর কেন নেই ?সবাই আছে পরিবারের অথচ নূর নেই।
রুমে ঢুকার সাথে সাথে সাদাফ সবার প্রথমে জিজ্ঞেস করল নুর কোথায় ?হুমায়ূন রহমান চুপ মেরে গেলেন ।উত্তর দিলেন ফজলুর রহমান ।বললেন ,”নূর তো নেই মামার বাড়িতে গিয়েছে ।ওর নানীর শরীরটা ভালো না কিছুদিন ওখানেই থাকবে।”
পিছনে চুপচাপ রইলেন নওরিন আফরোজ এবং সামিহা বেগম ।আগে থেকেই বলে দেওয়া হয়েছে নূরের বিষয়ে যেন এই দুজন কোন কথা না বলে তাই দুজন বাধ্য হয়ে চুপ থাকতে হচ্ছে।
সাদাফ অধৈর্য হয়ে গেল ।যেন ওর আর কোন কিছুতেই তর সইছে না ।বাবার দিকে এলোমেলো চোখে বারবার তাকালো ।হুমায়ুন রহমান কি উত্তর দিবে তাই চুপচাপ মাথা নিচু করে রইল ।ভাইকে যে কথা দিয়েছে সাদাফের ব্যাপারে আর কোন কিছু বলবে না যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার ফজলুর রহমান নিজেই নিবে। নীলা রহমান লেখিকা
তখনো উনি জানতো না আসলে ফজলুর রহমান কি ধরনের সিদ্ধান্ত নিবে ।এখন এই পা*গল ছেলেটাকে কি করে সামলাবে হুমায়ুন রহমান তাই ভাবছে। কখন যে লা*গাম খুলে ফেলে মুখের।
সাদাফ ফজলুর রহমানের দিকে তাকিয়ে বলল ,”কেন ছোট আব্বু কেন গিয়েছে ও ?ও গিয়ে কি করবে ?ও নিজেই তো ছোট ও কিভাবে কারো সাহায্য করতে পারবে?”
ফজলুর রহমান বলল ,”সাহায্যের জন্য না ও শুধু ও ছোট মামাতো বোনকে নিয়ে একটু বসে থাকবে খেলাধুলা করবে যা করার ওর মামী করবে ।আর তাছাড়া নানিয অসুস্থ কখন কি হয়ে যায় সামনে ওর পরীক্ষা যেতে পারবেনা তাই ভাবলাম একটু দেখা করে আসুক।”
সাদাফ যেন আর নিজেকে ধরে রাখতে পারছে না ।ধৈর্য হারা হয়ে যাচ্ছে ।মুখ ফসকে বলে ফেলল ,”কার অনুমতি নিয়ে গেছে ?”হুমায়ূন রহমান চোখ বন্ধ করে ফেললেন ।নওরিন আফরোজ এবং সামিহা বেগম একে অপরের চোখ চাওয়াচাওয়ি করছে । নীলা রহমান
এদিকে রিমা আর সাইমন ও চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে সাদাফ ভাইয়ের এরকম রূপ আগে কখনো দেখেনি।
ফজলুর রহমান অবাক হলেন সাদাফের দিকে তাকিয়ে বলল,” আমি বাবা আমি গার্ডিয়ান হিসেবে অনুমতি দিয়েছি আর কারো অনুমতি লাগবে?”
সাদাফ বিছানায় শুয়ে আছে ।হাতে ক্যানুলা করা খুব একটা নড়াচড়া করতে পারছে না ।শরীর অনেক দুর্বল ।তারপরেও শুয়ে শুয়ে বলল ,”আমি এখন অনুমতি দেইনি। ও কার কাছে জিজ্ঞেস করে গিয়েছে।”
ফজলুর রহমান বলল ,”কার কাছে জিজ্ঞেস করে যাবে ?বলছি তো আমি অনুমতি দিয়েছি ।”
সাদাফ এবার আরো অধৈর্য হলো ।বাম হাতে ভর দিয়ে একটু উঠে বসে বলল ,”তুমি ছোটবেলা ওর সব দায় দায়িত্ব আমার কাছে বুঝিয়ে দিয়েছিলে ।প্রমিস করেছিলে মনে নেই তোমার ?তাই ওর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়ার অধিকার শুধু আমার।”
এমনি জ্বরের ঘোরে সাদাফের মাথা ঠিক নেই তার উপরে যখন শুনছে নুর কিছুদিন সেখানে থাকবে সাদাফের ভিতরে সবকিছু এলোমেলো লাগছে ।মনে হচ্ছে ভিতরে ঘূর্ণিঝড় হয়ে যাচ্ছে তাণ্ডব হয়ে যাচ্ছে কোথাও ।নুরকে দেখতে না পেলে যেন এই মুহূর্তে সব ভেঙেচুরে ফেলবে।
নূর সামিহা বেগমের দিকে তাকিয়ে বললো,”ছোট আম্মু নুরকে ফোন দাও ।সাইমনকে পাঠাও বল এক্ষুনি বাসায় চলে আসতে।অন্য কারো বাসায় গিয়ে আর থাকতে হবে না ।আমার অনুমতি ছাড়া কেন গেল ?ওকি আমার কাছে জিজ্ঞেস করেছিল?”
সামিহা বেগম কিছু বলবে তার আগেই নওরিন আফরোজ বলল ,”কি পাগলামি করছিস বাবা ?থেকে আসুক না দুই তিনটা দিন ।নানুর বাড়িতেই তো গিয়েছে চলে আসবে ।এর মধ্যে তুই ও সুস্থ হয়ে যাবি ।বাসায় আসলে দেখবি নুর চলে এসেছে।”
সাদাফের ভেতরটা কেমন খারাপ খারাপ লাগছে অসুস্থ তা যেন আরো জেকে ধরেছে মাথা ঘুরাচ্ছে তারপরও কষ্ট করে চোখ ঘুরিয়ে মায়ের দিকে তাকিয়ে বলল তুমি বুঝতে পারছ না মা বাসায় যাওয়ার পর না নূরকে এক্ষুনি হসপিটালে আসতে বল আমার সামনে আসতে বল।
হুমায়ূন রহমান সবকিছু জানেন এখন ফজলুর রহমান ও জানে ।কিন্তু বাকি সবাই অবাক হচ্ছে সাদাফের কথা শুনে।সাদাফ নুরের জন্য এই পা*গলামি করবে ভাবতে পারেনি কেও।
সায়মন তাকালো রিমার দিকে ।রিমা কিছুটা জানতো কিন্তু ভাইয়ের অবস্থা এরকম এতো টা সিরিয়াস নুরের প্রতি এক কথায় অবসেশন তা বুঝতে পারেনি রিমা।
ধীরে ধীরে সাদাফের দুনিয়াটা যেন ঘুরছে ।শরীর দুর্বল চোখ দুটো ধীরে ধীরে বন্ধ হয়ে আসছে ।তারপরও কোনমতে ঠোঁটে একবার আওড়ালো ,”নূরকে আমার সামনে আনো না হলে খুব খারাপ হয়ে যাবে ছোট আব্বু।”
জ্ঞান হারালো সাদাফ আবার ।সাথে সাথে হুমায়ূন রহমান সাইমন কে বলল ,”ডক্টর ডাকার জন্য ।সাইমন সাথে সাথে বাহিরে গিয়ে ৫ মিনিটের মধ্যে ডক্টরে ডেকে নিয়ে আসলেন ।ডঃ এসে সাদাফকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বললেন ,”আসলে ওনার ব্রেনে চাপ পড়ে যাচ্ছে বেশি। উনি কোন চাপ নিতে পারছেন না ।এমনি শারীরিকভাবে দুর্বল জর উনাকে একেবারে ঘায়েল করে ফেলেছে তার উপরে হাতে আঘাত ব্যথা সহ্য করতে পারছিলেন না।
তাই ওনার নার্ভ সিস্টেম একটু দুর্বল হয়ে গেছে ।আশা করি আপনারা উনাকে একটু চাপ থেকে দূরে রাখবেন আপাতত আমরা ঘুমের ইনজেকশন দিয়ে দিচ্ছি বেশ কয়েক ঘন্টা ঘুমালে ব্রেন ঠিকঠাক কাজ করবে।
হুমায়ূন রহমান অসহায় দৃষ্টিতে তাকালেন ফজলুর রহমানের দিকে ।ফজলুর রহমান ও চায়না সাদাফের এই অবস্থা হোক বা এতটা চাপ পড়ুক কিন্তু ওকে অনেক কিছুই সহ্য করতে হবে অনেক পরীক্ষা দিতে হবে ।মনে মনে ভাবলেন ফজলুর রহমান।
এদিকে সামিহা বেগম ও নওরিন আফরোজ কান্না শুরু করে দিলেন ।শত হলেও নারী মন মায়ের মমতা ছোটবেলা থেকে দুজনে ছেলের মত মানুষ করেছে সাদাফ কে।তবে ফজলুর রহমানের ভয়ে সামনে এগিয়ে আসতে পারছেন না ।পিছনে দাঁড়িয়ে কাঁদছে দুজন।
ভাইয়ের এ অবস্থা দেখে সহ্য করতে পারছে না রিমা।ঝরঝরে কান্না করে দিল ।সায়মন রিমার হাত ধরে পিছনে দাঁড়িয়ে শান্তনা দেওয়ার ভঙ্গিতে বলল ,”ঠিক হয়ে যাবে চিন্তা করিস না।”
আপনারা ভাবতে পারেন এত কিছু হয়ে যাচ্ছে নুর ম্যাডাম কোথায়? নুর ম্যাডাম আছে আগামী পরে বলব।
চলবে………
Neela Rahman
রিয়েকশন অনেক কমে যাচ্ছে সুখময় যন্ত্রণা তুমিতে আপনাদের কি আর গল্পটা ভালো লাগছে না ?কমেন্ট করে অবশ্যই জানাবেন। ভালো না লাগলে এটা প্রতিদিন দুইটা করে পর্ব দিবো না নতুন গল্প শুরু করে দিব এখন থেকেই।
Share On:
TAGS: নীলা রহমান, সুখময় যন্ত্রণা তুমি
CLICK HERE GO TO OUR HOME PAGE
-
সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ৩
-
সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ৫৬
-
সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ২৯+৩০
-
সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ৫০
-
সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ৬৩
-
সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ২৭+২৮
-
সুখময় যন্ত্রণা তুমি গল্পের লিংক
-
সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ৭১
-
সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ৬৫
-
সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ৫৯