Golpo romantic golpo বি মাই লাভার

বি মাই লাভার পর্ব ৩


#বি_মাই_লাভার

#পর্ব-৩

#সাদিয়া_খান(সুবাসিনী)

“আর ইউ ড্রিমিং এবাউট মি?মাই কিড্ডো?”

চকিতে ঘুম ভেঙ্গে গেল নৈঋতার।এই মুহুর্তে এখানে দিলশাদের আসার কোনো সম্ভাবনা নেই।পরিত্যক্ত সরকার কর্তৃক সিলগালা করা এই বাংলোতে কেউ প্রবেশ করে না। তাই নৈঋতা পুনরায় নিশ্চিত হলো কেবল স্বপ্ন ছিল।আড়মোড়া ভেঙ্গে জানালাটা খুলে।দিয়ে আবারো বিছানায় গা এলিয়ে দিলো।বাইরে হালকা হালকা বাতাস বইছে। ঘুমটা যেন অনেকটা জড়িয়ে নিলো তাকে।কিন্তু নাকে এলো এক পরিচিত সুঘ্রাণ। পাঁচ মেশালি ডাল দিয়ে খিচুড়ি এবং বেগুনভাজার। দিলশাদের স্পেশাল রেসিপি।একমাত্র সে রান্না করলেই এমন সুঘ্রাণ পায়। দুদিন ঠিক মতো খাওয়া হয়নি বলে হয়তো এমন কিছু ভাবছে সে এমনটা ধারণা হতেই পুনরায় চোখ বুজলো।কিন্তু খাবারের গন্ধে যে টিকে থাকা মুশকিল।ঠিক সেই মুহুর্তে নিচে কোথাও একটা শব্দ হলো।খাটের পাশ থেকে একটা হকি স্টিক তুলে সেদিকে ধীর পায়ে হাঁটলো নৈঋতা। একা বাড়িতে যে কোনো সময় যে কোনো বিপদ তার হতে পারে, এটা মেনেই এখানে এসেছে। মানুষ কিংবা প্রাণী কারোর বিপদ থেকে বাঁচতেই সে ইলহামের ঘর থেকে এনেছিল হকি স্টিক।সিড়ি দিয়ে নিচে নেমে দেখলো কিচেনের এক পাশে এক যুবক দাঁড়ানো।উদাম শরীরে তার পিঠের দিকটার হাড় একত্র হলে প্রজাপতির মতো দেখা যায়।এই মানুষকে চিনে নৈঋতা।এ আর কেউ নয় দিলশাদ। কিন্তু সে এখানে কি করে?

দিলশাদ পিছন ফিরে কিছু করছিল।পিছনে না ফিরে,মেয়েটাকে না দেখেই বলল,

“গুড মর্ণিং কিড্ডো।”

“আপনি এখানে কি করে?”

“সেটা তোমার না জানলেও হবে।ফ্রেশ হয়ে এসো।খাবার খাবে।”

“আপনি এখান থেকে চলে যান।আমি এখানে ঠিক আছি।”

এবার তার দিকে তাকালো দিলশাদ।সাথে সাথে হাতে থাকা কিচেন টাওয়াল তার দিকে ছুড়ে দিয়ে বলল,

“গো এন্ড গেট ড্রেসড আপ।”

নৈঋতা নিজের দিকে তাকালো।গতরাতে অত্যাধিক গরমের কারণে ট্যাংকটপ আর স্কার্ট পরে ঘুমিয়েছিল।ঘুম থেকে উঠার পর এখানেই তো চলে এসেছে।

দ্রুত পায়ে যাওয়ার সময় সে ব্যথা পেল নিজের পায়ে।বুড়ো আংগুল রক্তাক্ত। পায়ের আংগুল ধরে বসে পড়লো ফ্লোরে।দিলশাদ ধীরে ধীরে এগিয়ে এলো।চেয়ারে রাখা নিজের শার্টটা পরিয়ে দিলো নৈঋতাকে।এরপর তাকে কোলে তুলে নিয়ে চেয়ারে বসালো। নখ উঠে গেছে তার৷ ফোনে কাউকে কিছু বলতেই মিনিট দুই পর ফার্স্ট এইড বক্স এলো।পায়ে ব্যান্ডেজ করে দিচ্ছিলো। ব্যথা সইতে না পেরে নৈঋতা তার চুল টেনে ধরলো।দিলশাদ কিছুই বলল না।সে ভেবে রেখেছিল ওকে সামনে পেলেই দুটো চড় দিয়ে বসবে অথচ গতরাতে পুরো বাড়িতে তাকে খুঁজে যখন ঘুমন্ত অবস্থায় পেয়েছিল মনে হলো শুকিয়ে যাওয়া প্রাণে এক ফোঁটা পানি পেয়েছিল সে। এই মুহুর্তেও তাকে বকতে ইচ্ছে করছে না। কাজ শেষ করে উঠে দাঁড়াতেই নৈঋতা তার দিকে তাকালো।তার তো নতুন বউ নিয়ে আনন্দে থাকার কথা ছিল তবে এখানে কেন?

“আপনি চলে যান এখান থেকে।”

“হুম যাবো।”

নৈঋতা উঠে যাচ্ছিলো কিন্তু তার কাধ ধরে বসিয়ে দিয়ে দিলশাদ বলল,

“বাড়ি ছেড়ে এসেছো কেন?”

“ওটা আমার বাড়ি নয়।”

“আমার তো?”

” যা আপনার তা আমার নয়।”

“যা আমার সবই তোমার কিড্ডো।”

“নিজেকে এভাবে কষ্ট দিতে কার অনুমতিতে এসেছো এখানে?”

“আপনার নতুন বউয়ের কাছে চলে যান।আমায় একা থাকতে দিন।”

“তাকে রেখেই আমি তোমার কাছে আছি। এবার বলো আমার প্রজাপতি কি হয়েছে তোমার?”

“কিছু না।”

“প্রতিটি সম্পর্কের একটা সীমা থাকে।আমি তুমি চাইলেও এটা পার করতে পারি না।এই সম্পর্কটাই তো ভয়ংকর, কিড্ডো।”

“আপনার presence অসহ্য লাগে এখন। দয়া করে চলে যান।”

“তোমার অসহ্য লাগাটাই আমার নেশা হয়ে গেছে, কিড্ডো।ভালোবাসা আর ঘৃণার মাঝখানে যা থাকে, সেটাই আমি। এখন বলো—সেই মাঝখানে থাকতে দিবে আমাকে?”

নৈঋতা কিছু না বলে উঠে যাচ্ছিলো।দিলশাদ তাকে কোলে তুলে নিলো। কপালে ঠোঁট ছুইয়ে দিয়ে বলল,

“আরেকবার এইরকম উধাও হওয়ার চেষ্টা করলে, কিড্ডো… এই পৃথিবীর সব তালা ভেঙে, সব গেট পেরিয়ে, তোমার নিঃশ্বাসের পাশেই এসে বসবো—এবং তারপর শুধু দেখবো না, দেখিয়ে দেবো, কীভাবে এক ভয়ংকর মানুষ তার কিড্ডোকে আদরে বন্দি রাখে।”

চলবে?

Share On:

TAGS: ,



CLICK HERE GO TO OUR HOME PAGE
Related Posts
 

0 Responses

Leave a Reply