Golpo romantic golpo বি মাই লাভার

বি মাই লাভার পর্ব ১১+১২


#বি_মাই_লাভার

#পর্ব-১১

#সাদিয়া_খান(সুবাসিনী)

দিলশাদের হাত তিরতির করে কাঁপছে।এতো ধকল যেন শরীরটা আর নিতে চাইছে না।নৈঋতার ফোন সানশাইন ভিলায় নিজ বেড রুমে চার্জিং এ লাগানো। সেদিন বের হওয়ার সময় ফোনটা নিয়েই বের হয়নি।কিভাবে তার লোকেশন ট্রেস করবে? নির্জনা এই মুহুর্তে তার পাশেই আছে।সে জেনে শুনেই এমন সুন্দর একটা ফাঁদ পেতেছে। এমন সুযোগ আর কখনো আসবে না এটা সে বুঝতে পেরেছিল। মুখ ঘুরিয়ে অন্ধকারের দিকে তাকালো।গাড়ি কই ছুটে চলেছে সে জানে না।দিলশাদ ছটফট করছে ভিতর ভিতর। বুঝলেও না বুঝার মতো করেই রইল সে। কত দিন ছটফট করবে? এক রাত, এক মাস , এক বছর না কি এক যুগ? একটা সময় ঠিক ভুলে যাবে ওই বাস্টার্ডকে। কিন্তু দিলশাদের মুখ অবয়ব তা বলল না। তার কিড্ডোকে অপহরণ করা মানে তাকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ ছুড়েছে।তার অস্তিত্বে হাত দিয়েছে কেউ একজন।হস্পিটালের সিসি ক্যামেরা ঠিক সেই মুহুর্তেই দশ সেকেন্ডের জন্য চার তলায় মর্গের ঠিক সামনে বন্ধ হয়ে যাওয়া এবং এরপর চারটে লা’শের হস্তান্তর হয়েছে।সব বুঝে দিলশাদ, গোটা শহর এক মুহুর্তেই তার হাতের মুঠোয় চলে এসেছিল কিড্ডোর কারণে। শাযলীনদের শেষ বংশধর অপহরণ করেছে কেউ এটা জানলে পুরো শহরের অবস্থা মুহুর্তের মাঝে উলট পালট হয়ে যাবে। গোটা শহর তাকে মেনে চলতে বাধ্য। আদালত থেকে আন্ডারওয়ার্ল্ড—সবখানে তার নাম মানে ভয়ের সীমানা। তার প্রতিটি লোক ছড়িয়ে আছে অন্ধকার অলিগলি থেকে শুরু করে পাঁচতারা হোটেলের কনফারেন্স রুম পর্যন্ত। কিন্তু এসবের কেউ জানে না তার কিড্ডোর খবর। লোক চক্ষুর আড়ালে একটা ছোট্টো পদ্মফুলের ভিতরে বাঁচিয়ে রাখা এক ঘুমকুমারীর নাম নৈঋতা শাযলীন।যার অস্তিত্ব সম্পর্কে এতোটা চাউর হয়নি তার শত্রু এলো কই থেকে?

দিলশাদ সিগার ধরালো।কিড্ডো পাশে থাকলে সে কখনোই এই সিগার হাতে নিতো না। রাতের অন্ধকারের পেট পুড়ে গাড়িটা ছুটে চলেছে। সিগারের ধোঁয়া নি:শ্বাসের সাথে বের করে দিয়ে সে বলল,

“জ্যাক, আলীকে কল দাও। মেইক শিওর আমার ওর লাস্ট লোকেশন চাই।”

অপর পাশ থেকে আলী জানালো একটা ব্লিংকেড পিং পাওয়া গেছে। দিলশাদ জ্যাকের কাছ থেকে ফোনটা নিয়ে আলীকে জিজ্ঞেস করলো,

” ওর সাথে জিপিএস ট্র‍্যাকার আছে।”

“চিফ, আর ইউ শিওর?”

“হুম, গত দুদিন আগেই সেটাকে আমি পরিবর্তন করেছি।কিন্তু সিগন্যাল পাওয়াটা সমস্যা হচ্ছে।”

“চিফ, ইজ ইট আ জুয়েলারি?”

“হুম।”

নির্জনা নিজের ফোনটা হাতে নিয়ে কাউকে ম্যাসেজ করলো। নিশ্চিত হলো ওর গায়ে কোনো জুয়েলারি নেই।স্বস্তির শ্বাস পেল সে। কিন্তু ততক্ষণে দিলশাদের ফোনে ম্যাসেজ এসেছে। সে গাড়ি থামাতে বলল।পিছনে থাকা একজন গার্ডের বাইকটা নিয়ে সে ছুটলো দ্রুত গতিতে।

**********************************

দিলশাদের বুকে ছোট্ট বিড়ালছানার মতো লেপ্টে আছে। অনেকটা র’ক্ত ক্ষরণ হয়েছে তার। দিলশাদ স্থির হয়ে তাকিয়ে আছে ওই মলিন মুখটার দিকে। পেটের দিকে উঁকি দিচ্ছে প্লাটিনামের সেই কোমর বন্ধনীটা।এটার মধ্যেই ছিল ট্র‍্যাকার। কারোর নজরে পড়েনি এটা।পড়লে হয়তো কিড্ডোকে খুঁজেই পাওয়া যেতো না। জ্যাক তাদের সাথেই।নির্জনাকে তার বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।

“চিফ, আমরা হস্পিটালের দিকে যাবো?”

“হুম।”

প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পরেও জ্ঞান ফিরলো না নৈঋতার। এক মুহুর্তের জন্যও হাত ছাড়েনি দিলশাদ।কোনো।পরিত্যাক্ত বাড়ি নয়, দিলশাদ, নৈঋতাকে পেয়েছে এক হাসপাতালে। সি গ্রেডের এক হাসপাতাল থেকে সিগনাল পেয়েছিল।কাউকেই বলেনি আলী, কেবল দিলশাদের ম্যাসেজ দিয়ে লোকেশন দিয়েছিল।দিলশাদ পৌঁছানোর পর দেখলো তার ডিভাইস এর সিগন্যাল জোড়ালো হচ্ছে। অন্ধকারে একটা পাশে খুব অযত্নে ফেলে রাখা হয়েছে তার কিড্ডোকে। কপাল থেকে র’ক্ত ঝরছে যেন মৃত্যুর অপেক্ষা।আশেপাশে কাউকে পায়নি সে। এক মুহুর্তের অপেক্ষা না করে তাকে তুলে নিয়ে এসেছে। আই সি ইউর কম আলো, সফট হোয়াইট বীমার মধ্যে, শুধু মনিটরের হালকা পিপিং। বিলাসবহুল পরিবেশ, অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতির মাঝে ঘুমিয়ে থাকা নৈঋতার দিকে অপলক তাকিয়ে দিলশাদ। তার রক্তের গ্রুপ Rh null, অতিরিক্ত রক্ত ক্ষরণের কারণে জরুরী ভিত্তিতে এখন র’ক্ত দিতে হবে।ডোনারকে নিয়ে আসা হচ্ছে। কিন্তু দিলশাদ অস্থির।তার ইচ্ছে করছে এই ছোট্ট মেয়েটাকে নিজের বুকের মধ্যে লুকিয়ে রাখতে। গায়ের শার্টে র’ক্তের লাল রঙ লেগেছে।একটা বার ভাবলো ফ্রেশ হয়ে আসবে, কিন্তু মন সায় দিচ্ছে না।মনে হচ্ছে এক মুহুর্তের জন্য চোখের আড়াল হলে আবার কেউ নিয়ে যাবে তার প্রাণ ভ্রোমরাকে। কিন্তু হস্পিটাল ডিরেক্টর জানালো,

“চিফ, আমি নিজে আছি এখানে।আপনি ফ্রেশ হয়ে আসুন।বাইরে সিকিউরিটি আছে। কিছু হবে না।”

“তোমরা তখনো ছিলে যখন আমি অচেতন ছিলাম।আমার কিড্ডো কি করে ওই অবধি গেল,যেখানে পুরো হস্পিটাল তোমার তত্ত্বাবধানে?”

“আমি দুঃখিত চিফ। কিন্তু আপনার সুস্থতা প্রয়োজন।”

“মেইক শিওর আমার কিড্ডো আজ রাতেই জেগে উঠবে, না হলে আগামীকালের সকাল কিন্তু আমি তোমাদের কাউকে দেখতে দিবো না।”

****

পর পর দুই ব্যাগ ব্লাড এবং মেডিসিন দেওয়ার পর ধীরে ধীরে নৈঋতা রেসপন্স করছিল।কিন্তু হাইপোভোলেমিক শকের কারণে নৈঋতা ক্লান্ত। দিলশাদ পুনরায় এসে তার পাশে বসলো।কপালে কপাল ঠেকিয়ে ফিসফিস করে বলল,

“মাই প্রিন্সেস,

এতো কেন অভিমান তোমার? কেন তুমি একা একা বের হলে? আমি তোমাকে এই ঘুম থেকে টেনে বের করব। মাই কিড্ডো, প্লিজ একটা বার চোখ মিলে তাকাও।”

নৈঋতার দুই ঠোঁট যেন তিরতির করে এক বার কেঁপে উঠল। দিলশাদ তার দিকে কান পেতে শুনতে চাইলো সে কি বলছে। নৈঋতা পুনরায় কিছু বলল,আর তার হানিবিয়ার কেবল শুনলো আকুল কণ্ঠে ডাকা এক নাম,

“দিলশাদ……………….

চলবে?

#বি_মাই_লাভার

#পর্ব-১২

#সাদিয়া_খান(সুবাসিনী)

দিলশাদ আরো খানিকটা মুখ এগিয়ে নিলো নৈঋতার দিকে।অস্ফুটস্বরে ডাকা ডাকে সে ফিসফিস করে বলল,

“বেবি গার্ল! বলো তুমি।আমি শুনছি। কোথায় কষ্ট হচ্ছে কিড্ডো?”

নৈঋতা চোখ মেলে ধীরে ধীরে তাকালো।দিলশাদের দিকে এক মুহুর্ত তাকিয়ে থেকে ভ্রু নাক কুঁচকে কেঁদে ফেলবে এমন ভঙ্গি করতেই দিলশাদ তার মাথায় হাত বুলিয়ে বলল,

“না কিছু হয়নি মাই প্রিন্সেস।আমি আছি তো।”

দুই হাত বাড়িয়ে দিলো নৈঋ, উদ্দেশ্য দিলশাদের হাত ধরবে। বাম হাতের শিরায় পড়ানো ক্যানোলায় টান লাগছিল। দিলশাদ হাত দিয়ে সেই হাতটা ধরে বলল,

” বলো মাই রেইন বো, কি হয়েছে?কষ্ট হচ্ছে?”

নৈঋতা হাত বাড়িয়ে দিলশাদের গালে হাত রাখলো। তার চোখ ভারী হয়ে আসছে।সে ভেবেছিল আর বুঝি এই পৃথিবীতে টিকে থাকা হলো না।অথচ সে দিব্যি বেঁচে আছে। চোখের কার্ণিশে এক ফোটা জল এলো।দিলশাদ পড়তে দিলো কি? নাহ্, নিজের আংগুল দিয়ে তুলে নিয়ে বলল,

“মাই লি’ল স্টার! ভয় নেই আমি আছি।কেউ কিছুই করতে পারবে না।”

“তোমার জ্বর ভালো হয়নি হানিবিয়ার। চোখগুলো লাল হয়ে আছে কেন?কেঁদেছো তুমি?”

দিলশাদ আলগোছে হাত রাখলো নৈঋতার মাথায়।হাজার হাজার নামে প্রতিনিয়ত সে ডাকে এই মেয়েটাকে।সকাল শুরু হয় ওর মুখ দেখে, রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগেও ওর খোঁজ নিয়েই চোখ বন্ধ করে। তখনও তো ছিল ওর সাথেই অথচ চোখ খোলার পর ছিল না। এই মেয়েটা কি জানে সে কতোটা ভয় পেয়েছিল?

দুই হাতে নৈঋতার হাত নিয়ে বলল,

“কি চাই তোমার?বলো, আমি এক্ষুণি এনে দিচ্ছি।”

“বাইক রাইড।”

“এখন?”

“তুমি সুস্থ হলে।নিয়ে যাবে?”

“বেশ যাবো।এবার বিশ্রাম নাও।”

কয়েক মুহুর্ত পর ডাক্তার এসে দেখে গেল।বিশ্রামের প্রয়োজন দুজনের।ডিরেক্টর বার বার দিলশাদের শারিরীক অবস্থার কথা বলছে। দুই ঘন্টা পর নৈঋতাকে কেবিনে শিফট করা হয়েছে। অক্সিজেন মাস্ক রাখতেই চাইছে না মেয়েটা। জোর না করাটাই শ্রেয় মনে করলো সবাই। নৈঋতা এক পাশে সরে গিয়ে দিলশাদকে বসার জন্য জায়গা করে দিলো।দিলশাদ তার পাশে বসতেই সে আদেশ দিলো তার কোলে মাথা রাখতে। খানিকটা ইতস্তত হলো সে কিন্তু শরীর মিথ্যে বলছে।ক্লান্ত তার শরীর।জ্যাককে দিয়ে নৈঋতার ফোন আনানো হয়েছে। দিলশাদ কোলে মাথা রাখলো।ক্লান্তি নেমেছে তার গায়ে। নৈঋতা অন্য হাতে তার চুলে হাত বুলিয়ে দিচ্ছিলো। ধীরে ধীরে শ্বাস ভারী হলো দিলশাদের।

কপালে তার ভাঁজ জমেছে। হাত বুলিয়ে সেই ভাঁজ ছাড়ায় নৈঋতা।ঘুমের মাঝেই দিলশাদ খানিকটা নড়েচড়ে উঠে।হুট করেই নৈঋতার মনে এক বুদ্ধি এলো।সে ঘুমন্ত দিলশাদের ছবি তুলে পাঠালো নির্জনাকে।

*********************

দিলশাদের ঘুম ভাঙলো বাহিরে কারোর মৃদু কান্নাকাটির শব্দে। জেগে দেখলো নৈঋতা বসে বসে হেলান দিয়ে ঘুমোচ্ছে। এক হাত দিলশাদের হাতে অন্য হাত তার চুলে। আস্তেধীরে উঠে মেয়েটাকে শুইয়ে দিলো।এতোটা কাছাকাছি তারা দুজন ছিল এভাবে, এটা দেখলে যে কেউ অন্য কিছু মনে করবে। খানিকটা দূরত্ব বজায় রাখা উচিৎ ছিল কিন্তু এই মুহুর্তে সে কোনো ভাবেই কিড্ডোর সাথে উচ্চবাচ্য করবে না।

স্লিপার পায়ে বেরিয়ে আসতেই নির্জনা হামলে পড়লো তার বুকে। কাঁদতে কাঁদতে বলল,

“প্লিজ দিলশাদ, আমি তোমার কাছে কিছুই চাইনি।কেবল তোমাকে চেয়েছি।আমার থেকে তুমি তোমাকে কেড়ে নিও না।”

“কি হয়েছে?”

“তুমি নৈঋতার সাথে ওভাবে…….

” একদম বাজে কথা বলবে না।কিড্ডো ঘুমিয়ে আছে। তাছাড়া….

“শোনো আমি যদি অন্য কোনো পুরুষের কোলে মাথা রেখে ঘুমাই তুমি আমাকে মেনে নিবে?”

দিলশাদ কোনো জবাব দিলো না।সত্যি বলতে তার এটা ভেবে খারাপ লাগছে না। কিন্তু মুখেও কিছু বললো না।

নির্জনা বলল,

“ও একা একা চলে গিয়েছিল।তারপরেও তুমি আমাকে উপেক্ষা করে কেন চলে গেলে?”

“কিড্ডো একা যায়নি।কে এসবের পিছনে আছে সেটা।অবশ্যই বের হবে।আমি কেবল মাই বেবি গার্লের জ্ঞান ফেরার অপেক্ষা করছিলাম।”

নির্জনা চুপসে গেল। হাত বাড়িয়ে দিলশাদের হাত ধরে বলল,

“আমরা বিয়েটা করে ফেলি? নৈঋতা তো দূরে যাচ্ছেই তোমার থেকে।তবে কেন দেরি করবো বরঙ ও চলে যাওয়ার আগেই না হয়……

দিলশাদ হাত ছাড়িয়ে জ্যাককে ডেকে বললো নির্জনাকে বাড়ি পৌঁছে দিতে৷ বাকী রাত আর তার ঘুম হলো না। ভোরের সূর্য ফোটার পর নৈঋতার ঘুম ভাঙলো। দিলশাদ তার পাশে এসে বসে বলল,

” গত রাতে তুমি নির্জনাকে ছবি পাঠিয়েছো? তুমি কি ভেবেছো তোমার আমার এই সম্পর্কটাকে কতোটা নোংরা করে ফেলেছো তুমি?”

“তুমি ঘুমাচ্ছিলে না।তোমার বিশ্রাম প্রয়োজন ছিল।”

“বিশ্রাম আর আমন্ত্রণ বুঝতে হবে তোমাকে।”

“তুমি বুঝলে কেন এসেছিলে?”

“তুমি আমাদের সম্পর্কটাকে নোংরা করে ফেলেছো।আমার এতো বছরের স্নেহ, ভালোবাসা, দায়িত্বকে তামাশা বানিয়েছো।”

নৈঋতা নীরবে তাকিয়ে রইল।নির্জনা এতো দিন বলতো আজ দিলশাদ বলছে একই কথা ভিন্ন শব্দে।তবে সত্যিই কি সে তৃতীয় ব্যক্তি? তাকে চুপ থাকতে দেখে দিলশাদ বলল,

” তিনটা প্রশ্ন করবো, হ্যাঁ বা না তে জবাব দিবে।”

“মানে?”

“তুমি যখন সানশাইন থেকে বেরিয়েছিলে তখন আমাকে যে শর্ত দিয়েছিলে দূরে যাবে সেটা কি জেনে বুঝে দিয়েছিলে?”

“হানিবিয়ার…..

” হ্যাঁ বা না।”

“হ্যাঁ।

” এই কেবিন থেকে নিজ ইচ্ছায় একা একা বেরিয়েছিলে?”

“হ্যাঁ।”

“তোমাকে কেউ ইচ্ছে করে নিয়ে গিয়েছিল তাদের সাথে না কি তুমি নিজ ইচ্ছেতে গিয়েছিলে।”

শেষ প্রশ্নের মানে নৈঋতা বুঝলো বেশ ভালো ভাবেই। দিলশাদের কাছে হয়তো কেউ একজন বলেছে সে পালাচ্ছিলো।হয়তো প্রমাণ ও দিয়েছে কারণ প্রমাণ ছাড়া দিলশাদ কথা বলে না।এই মুহূর্তে লিফটের ভেতরের কথা, তাকে যে অমানবিকভাবে কষ্ট দিয়েছে সেগুলো বলেও কোনো লাভ হবে না। তাই ইচ্ছে করেই নৈঋতা মিথ্যে বলল।সে জবাব দিলো,

“হ্যাঁ।”

দিলশাদ এক মুহুর্ত তার দিকে তাকিয়ে রইল।শেষ একটা প্রশ্ন করলো তাকে। “কেন এমন করছো? আমার থেকে দূরে গেলে ভালো থাকবে?”

“তিনটে প্রশ্ন শেষ মি.দিলশাদ।আপনার আর অধিকার নেই আমাকে প্রশ্ন করার।”

নৈঋতা উঠে দাঁড়ালো। নির্জনা পুনরায় এসেছে, হাতে টিফিন ক্যারিয়ার। সে দিলশাদের দিকে এগিয়ে আসতেই নৈঋতা বেরিয়ে যাওয়ার জন্য উদ্যত হলো।জ্যাককে ডেকে সে বলল,

” প্রত্যয় আংকেলকে আসতে বলুন জ্যাক। এবার না হয় মৃত বন্ধুর ভাগ্নির প্রতি কিছুটা দায়িত্ব সেও পালন করুক।”

প্রত্যয় এলো আধ ঘন্টা পর।দিলশাদ নীরবে তাকিয়ে আছে, নৈঋতা বেরিয়ে যাওয়ার আগে একটা বারের জন্যও তার দিকে তাকালো না।নিজের সাথে ফোনটাও নিলো না। কিছু লিগ্যাল ডকুমেন্টস নিয়ে এসেছিল প্রত্যয়। সেগুলো দিলশাদের সামনে রেখে বলল,

“আমাকে এতোগুলো ভরণপোষণের খরচটা রইল মি.দিলশাদ।আজ থেকে আপনার সাথে আমার সব সম্পর্ক শেষ হলো।”

চলবে…………………।

Share On:

TAGS: ,



CLICK HERE GO TO OUR HOME PAGE
Related Posts
 

0 Responses

Leave a Reply