Golpo romantic golpo প্রেমতৃষ্ণা

প্রেমতৃষা পর্ব ২১+২২


#প্রেমতৃষা

#ইশরাত_জাহান_জেরিন

#পর্ব_২১

প্রেম নেওয়াজ মেয়েটির দেওয়া ঠিকানায় এসে আরো ক্ষেপে গেল। তৃষা এখানে নেই। লুকোচুরি খেলা হচ্ছে তার সঙ্গে? তেল শরীরে বেশি বেড়ে গেছে? এই তেল প্রেমের বের করতে একটা মুহূর্ত সময় লাগবে না। কি পেয়েছে কি ওই মেয়ে? চিঠি পাঠিয়ে তাকে সরাসরি ওমন ভাবে ধর্ষক বলা? একবার খুঁজে পাক ধর্ষক কি জিনিস হারে হারে বুঝাবে। প্রেম একটু রিলেক্স হওয়ার জন্য বাগানের ফাঁকা অংশের দিকে যায়৷ অনেকদিন ধরে দূরে কোথাও যাওয়াও হচ্ছে না আর ফটোগ্রাফিও করা হচ্ছে না। যাবে নাকি একবার কুয়াকাটা কিংবা সুন্দরবন? ভাবতে ভাবতে এগিয়ে যায় প্রেম। একটা সিগারেট ধরিয়ে এগোতেই হঠাৎ মেয়েদের হাসাহাসির শব্দ এলো কানে। একই সঙ্গে কে যেন কাকের মতো কর্কশ গলা নিয়ে কা…..কা…. করছে। অর্থাৎ গান গাইছে। প্রেম এগিয়ে আসতেই গোল হয়ে বসে থাকা সকল মেয়েরা প্রেমকে দেখে চুপসে যায়। যে মেয়েটি গান গাইছিলো সেও চুপ । তৃষার সেদিকে পাত্তা নেই। সে হাতের একটা চিঠি পড়ে মিটিমিটি হাসছে আর পাশের মেয়েটির গায়ে ঢলে পড়ে বলছে, ‘ দেখ ভাই জুনায়েদ আমায় প্রেম পত্র দিয়েছে। আইন বিভাগের সিনিয়র না? ইশ দেখ দেখ কত সুন্দর করে প্রোপোজ করেছে,

‘গরু খায় ঘাস

তোমার প্রেমে পড়ে আমি খাব বাঁশ

তোমায় দেখলে আমার চলে আসে কাঁশি

ওগো আমার সুন্দরী ,তোমায় বড্ড ভালোবাসি।’

সেই চিঠি পড়ে তৃষার কি লজ্জা যে লাগছে । হঠাৎ করে পেছন থেকে কেউ একজন গলা ছেড়ে খকখক করতেই তৃষা বিরক্ততে বলল, ‘আরে কোন আকিজ বিড়িখোর যক্ষ্মা রোগীর মতো কাঁশছে?’ বলেই পেছনে ফিরে বড় মুখটা ছোট্ট হয়ে আসে তার। কাঁপা গলায় বলে, ‘আরে বাবা প্রেম ভাই আপনি?’ তৃষা জলদি চিঠিটা লুকিয়ে ফেলল। প্রেম বিষয়টা দেখেও দেখল না। কেবল বলল, ‘ গোল হয়ে বসে সবাই ড্যান্ডি খাচ্ছো নাকি? আচ্ছা যা মন চায় করো। কিন্তু এই তৃষা তুমি আসো তো।’

‘আমিই কেন?’

‘সিনিয়রদের প্রশ্ন করতে হয়? কাম।’

প্রেম তৃষার হাত ধরে তাকে উঠিয়ে সাইডে নিয়ে গিয়ে জিজ্ঞেস করল, ‘তো কোন সাইজ সহ্য করতে পারবে?’

‘মানে?’

‘মানে মান্দার গাছ দিয়ে দু গা তোমার পিঠে ফেলে ডিজাইন করব তো। তো কোন সাইজের গাছ দিয়ে ডিজাইন করলে সহ্য করতে পারবে?’

‘দেখেন প্রেম ভাই থানায় কিন্তু মামলা করব।’

‘কি করবে?’

‘বলেছি পুলিশ আজকাল বেশি করে। বেশি বেশি করলে থানায় হামলা করব। কি বলেন করব নাকি?’

‘কে কোথায় কার নামে মামলা করবে সবই জানি। আমি বয়রা না। চলো আমার সঙ্গে।’ প্রেম তৃষার হাত ধরে তাকে টেনে সঙ্গে করে নিয়ে যায়৷ তৃষা চেঁচিয়ে বলে উঠল, ‘ভাই ভাই ছাড়েন। ইমারজেন্সি বাথরুমে যেতে হবে। ভাই নইলে সর্বনাশ হয়ে যাবে।’

‘প্রয়োজনে ডায়পার এনে দেব তবুও আজকে বাঁচার পথ নেই তোমার তৃষা।’

তৃষা গাল ধরে বসে আছে। যেই মেয়েটাকে দিয়ে টোটকা চিঠি গিয়ে পাঠিয়েছিল তারও একই অবস্থা। প্রেম ভাই গালে এক হাতের মার্ক বসিয়ে দিয়েছে যে মনে হচ্ছে চাপার দাঁত এদিক সেদিক নড়ে অকালে সব পড়ে যাওয়ার মোক্ষম ব্যবস্থা হয়েছে। তৃষার দীর্ঘক্ষণ শাস্তি হলো। তার মুখে তো দাগ পড়েই গেল একই সঙ্গে কানটা টেনে প্রেম ভাই লম্বা করে দিয়েছিল। রাগের মাথায় সে আবার প্রেম ভাইয়ের কান ধরে টানতে গিয়ে খেলো আরো দু-চারটে চড়-চাপড়। না না এখন মনে হচ্ছে মার সহ্য করার ক্ষমতা আজকাল তার ভালোই হয়েছে। এভাবে চললে গিনিস বুকে সিনিয়রের মার সহ্য করার বিশেষ ক্ষমতার জন্য তাকে একটা পুরষ্কার অবশ্যই দেওয়া হবে। তৃষা মনে মনে আবারও ধীর পণ করল এখন থেকে প্রেম ভাইয়ের থেকে সে মেপে মেপে মোটা অংকের দূরত্ব বজায় রাখবে। প্রেম ভাইয়ে বিশেষ পাত্তা দেবে না। এত এত কথা মনে বললেও সেদিন প্রেমের পানিশমেন্টের কারণে তার পা দু’টো ব্যথায় অবশ হয়ে গিয়েছিল। কেবল কি তাই? ৫৬ বার প্রেম তাকে দিয়ে চিঠি লেখায়। একবার বলে এই লেখা সুন্দর হয়নি। একবার বলে এই চিঠি ভালো লাগেনি। ইশ এই লোক যে নিজেকে কোন দেশের প্রধানমন্ত্রী মনে করেন তা কেবল খোদা জানে।

ভার্সিটি থেকে বের হওয়ার সময় জুনায়েদের সঙ্গে দেখা হয়। তৃষার পানিশমেন্ট শেষ হতে হতে সন্ধ্যা হয়। ওই সময় একটা মানুষও সেখানে নেই স্বাভাবিক। তবে জুনায়েদ প্রখর মেধাবী ছাত্র। অনেক দরকারে অনেক সময় তাকে এখানে পাওয়া যায়। জুনায়েদকে দেখে তৃষার হাসি পেল। মানুষ জন যে এত লজ্জা কেমন করে পায় আল্লাহ জানে? তৃষার তো এসব ভাবলেও হাসি পায়। তবুও তৃষা একটু ঢং করে হেঁটে জুনায়েদের কাছে যেতেই জুনায়েদ উল্টা দিকে হাঁটা শুরু করল। তৃষার মেজাজ তাতে গেল বিগড়ে। তাকে ইনগোর করা? এই তৃষাকে সবাই ঠিক করে এখনো চিনতে পারেনি। এই জুনায়েদকে কুত্তার দুধ যদি এই অপরাধের বিনিময়ে না খাইছেয়ে। সে দৌড়ে জুনায়েদের কাছে গিয়ে ব্যাগের থেকে কলম বের করে জুনায়েদের সামনে দাঁড়িয়ে বলল, ‘এই জুনায়েদ বদ্দা! এভাবে ইনগোর করছো কেন? লাভ লেটারের উত্তর দেওয়ার আগেই এমন ব্যবহার?’

‘দেখুন ভাবী ভুল হয়ে গেছে?’

‘এই শালার ব্রাদার তোর কোন কালের ভাবী লাগি রে?’

‘বউও তো লাগেন না। আরেকজনের সম্পদ।’

তৃষা ভালো করে চেহারার দিকে তাকালো জুনায়েদের। ওমা নাকের মুখে ব্যান্ড এইড লাগানো। এমন উদম কেলানি যে তৃষা ছাড়াও অন্যরা খায় ভেবে খানিকটা শান্তি লাগলেও পরক্ষণেই ঠোঁট কামড়ে এক ভ্রু উঁচিয়ে তৃষা জিজ্ঞেস করল, ‘তো থোমা বদলে দিলো কে? আর তুমি না আমায় অনেক ভালোবাসো? এই ভালোবাসার নমুনা? দেখো আমার পেছনে মজনুদের বিরাট লম্বা লাইন লেগে আছে। তবুও আমি তোমার চিঠি গ্রহণ করেছি। এখন বেশি ঢং করতে হবে না। তুমি চাইলে আমার পার ঘন্টা হিসেবেও বয়ফ্রেন্ড হতে পারো। চলো এখন আমি তোমার প্রেমিকা। আমায় মজার কিছু খাবার খাওয়াতে নিয়ে যাও তো। তোমার জন্য সবটা ইজি করে দিলাম আমি।’

ছেলেটি নিচের দিকে চেয়ে বলল, ‘ভাইয়া জানলে আমায় এবার মেরেই ফেলবে। শুধু শুধু বিপদ আর বাড়াবেন না।’

‘উফ ভাইয়া ভাইয়া বলে মাথা খাচ্ছে। আরে আমি সুন্দরী মানুষ। এমন হাজারটা ছেলের ইচ্ছে হবে আমায় বউ করে ঘরে তোলার। তাই বলে এখন সব ভাইয়ের সেই ইচ্ছের মর্যাদা রক্ষা করতে গিয়ে আমায় ভাবী বলে ডাকতে হবে?’

ছেলেটি কিছু বলতে গিয়ে চুপসে যায়। ভয় আর আতঙ্কে গলা শুঁকিয়ে আসে। তৃষা বুঝতে পারল তারই পেছন দিকে তাকিয়ে আছে জুনায়েদ। সে পেছন ফিরে দেখল প্রেম ভাই জিন্স প্যান্টের পকেটের ভাঁজে ডান হাত দিয়ে গুরুগম্ভীর ভাব নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। শার্টের বোতাম খুলে কুনই অবধি গুটিয়ে রেখেছে। কি ড্যাশিং লাগছে তাকে। তৃষা কিছু বলার আগেই জুনায়েদ প্রেমকে সালাম দিলো। জুনায়েদ কিছু বলতে যাবে তার আগেই প্রেম তার চোখে চোখ রাখতেই সেই বান্দা তো দে এক ছুট। তৃষা এগিয়ে এলো প্রেমের দিকে। সরু চোখে ভ্রু কুঁচকে কোমরে হাত রেখে ঢং করে বলল, ‘এই যে হাইব্রি…না মানে হ্যান্ডসাম প্রেম ভাই আপনি কি জুনায়েদকে কেলানি দিয়েছেন?’

‘কেন মনে হলো?’

‘না আপনি আমাকেও তো এভাবে ধরে কেলান। ইশ দেখুন না কে যেন মারলো বেচারাকে। আর দেখুন তার চেয়েও দুঃখের বিষয় সকালের চিঠিতে লিখল ভালোবাসি এখন ডাকে ভাবী?’

‘হয়তো সে তোমাকে ভালো না বরং বাল বাসে।’

‘সত্যি করে বলুন এসবে আপনার হাত নেই?’

‘হাত কেন? আমার পাও সেখানে নেই।’

‘আপনি কিছু করেননি তো?’

‘বিষয় বাঁদরমুখি হলে কিছু না বরং অনেক কিছু করলাম।’

‘এত বাঁকা বাঁকা কথা কেন?’

‘কারণ সজা কথায় মন ভিজে না।’

তৃষা মুখটা ভেংচি কাটল। এই পুরুষ তো তর্কে হেব্বি জোস? অনেক কিছু শিখতে হবে এর থেকে। সে প্রেমের প্যান্টের দিকে তাকিয়ে দেখল তাতে ছেঁড়াফাড়া ডিজাইন করা। তৃষার হাসি পেয়ে গেল। সে হেসে বলল, ‘এমা প্রেম ভাই আপনার প্যান্ট দেখি ফুটো। সব দেখে ফেলেছি কিন্তু।’

প্রেমের বিরক্ত ভাব বেড়ে গেল। সে তৃষার হাতটা ধরতেই তৃষা চেঁচিয়ে উঠল, ‘আরে কই নিয়ে যাচ্ছেন।’

‘ওহ ভালোই হলো গাড়ি ভাড়া বেঁচে যাবে।’

‘জলদি চলো। তোমাকে ভালো করে দেখাতে হবে না? একটু দেখে কি মন ভরে?’

তৃষা পিটপিট করে চেয়ে বলল, ‘কি দেখাবেন?’

‘ওই যে প্যান্টের নিচে যেটা লো কোয়ালিটিতে জুম করে এইচডি ফরমেটে দেখাবো।’

তৃষা চোখ গুলো বড় করতেই প্রেম ভাবল মেয়ে বুঝি এখন লজ্জায় কান্নাকাটি করা শুরু করবে। ওমা তার ভাবনাকে গুলিয়ে খেয়ে তৃষা দাঁত ৩২ টা বের করে বলল, ‘জলদি চলুন প্রেম ভাই। আমি ভিডিও বানিয়ে টিকটকে আপলোড করে ভাইরাস হয়ে যাব।’

তৃষার বাবা তখন কেবল বাইরে থেকে ফিরেছেন। আসার সময় তৃষার পছন্দের চিকেন ফ্রাই সিপি থেকে নিয়ে এসেছেন। রুমে ঢুকে যখন চেঁচিয়ে বলল, ‘কিরে তৃষা তোর চিকেন ফ্রাই এনেছি।’ তখন মেয়ের রুমে ঢুকে এক মুহূর্তের জন্য স্তব্ধ হয়ে রইলেন তরিকুল কাজী। মনে পরে গেল তার মেয়ে তো তার সেই কতদিন কেটে গেল বাড়ি ছাড়া হয়েছে। এক মুহূর্তের জন্য তনিমা আর তৈমুরটার মুখটাও চুপসে গেল। এই চিকেন ফ্রাই নিয়ে এখন আর তার বোনের সঙ্গে ঝগড়া করতে হবে না কেবল এই টুকু ভাবলেই পরাণ পুড়ে খা হয়। তৃষা চলে তো গেল সঙ্গে নিয়ে গেল এই বাড়ির সকল সুখ। কেবল রেখে গেল মায়া নামক দুই অক্ষরের একটা শব্দ। যা ঠিক মতো ঘুমাতে দেয় না। কেবল ভেতর ভেতর পোড়ায়। তরিকুল সিলিং ফ্যানের নিচে বসতেই তনিমা তাকে লেবুর শরবত এনে দিলেন। পাশে বসেই বললেন। ‘এমপি যুবরাজ পরে আর কিছু বলেছেন?’

‘না।’

‘তুমি আর কতদিন অভিমান করে থাকবে গো? এবার একটা ব্যবস্থা করো না। জানো তো আমার মেয়েটা কত অগোছালো। এই হাতে একটু একটু করে যত্ন নিয়ে মেয়েটাকে মানুষ করেছি। ওর কিছু হয়ে গেলে না তুমি নিজেকে ক্ষমা করতে পারবে আর না আমি নিজে নিজেকে। সন্তান তো ভুল করেই। তাই বলে ক্ষমা করবে না? খোদা পাপীদেরকেও ক্ষমা করেন সেখানে তৃষা আমাদের সন্তান। তৃষা আমাদের জীবনের সব তৃষার আব্বু! মেয়েটাকে আমার থেকে তুমি বেশি আদর দিয়েছো। মাথায় রাখোনি উকুনে ধরবে বলে, জমিনে রাখো নি পিঁপড়া ধরবে বলে। আজ সেই মেয়ে কই আছে জানি না। মাঝ রাতে এখন আর তৃষা ঠিক করে ঘুমিয়েছে কিনা, ঘুমের মাঝে মেয়ের চুলে হাত বুলিয়ে না দিয়ে তুমি কেমন করে ভালো আছো?’ তৃষার মা ওড়নায় মুখ লুকিয়ে কাঁদছেন। তৈমুরটার চোখে জল। সেও আর পারছে না। বাবাকে বলছে, ‘তুমি বোনকে না খুঁজলে এবার আমি কিন্তু নিজেই খুঁজতে বেরিয়ে যাব। আমিও বোনের মতো হারিয়ে যাব। আমাকেও পাবে না।’

তৃষার বাবা জবাব দিলেন না। জবাব নেই তার কাছে। তবে বুকটা বোধহয় তারও ভেতর ভেতর ফাটছে। তার ঘরের আলোটা আজ বহুদিন ধরে ঘরে নেই। অন্ধকারে থাকতে যে তারও অনেক কষ্ট হয়। সে কথা মুখ ফুটে একবার যদি বলতে পারত।

যুবরাজ সরকারের মিটিং ছিল। বাসার উদ্দেশ্যে রওনা হতে হতে রাত হয়। বাইরে তখন ভ্যাপসা গরম। যুবরাজের মুজিবকোটটা খুলে রাফসানের কাছে দিয়েছে। তবে গাড়ির এসির বাতাসেও গরম কমছে না। সাদা পাঞ্জাবিটাও খুলে ফেলবে নাকি? স্যারকে এমন বিচলিত হতে দেখে রাফসান তাকে জিজ্ঞেস করল, ‘ ঠান্ডা কিছু আনিয়ে দিবো নাকি?’

‘তাতে গলা ঠান্ডা হবে। তবে দেহ?’

‘দেহকে ঠান্ডা করতে গোসল ছাড়া আপাতত মাথায় কিছু আসছে না।’

‘আছে আছে। তবে তার আগে চলো রাজনীতিবিধ ফাহাদ শেখের বাড়ি। শুনেছি তার মেয়েটা নাকি জবরদস্ত? দেখি আমার দেহ কতখানি ঠান্ডা করতে পারে।’

‘এমা স্যার আপনি দেহ ব্যবসায় কবে থেকে নেমে গেলেন?’

‘হ্যাঁ শুরুটা তোমায় দিয়ে করি গবেট।’ বলেই ভাবলেশহীন ভাবে রাফসানের দিকে তাকাতেই সে ছিটকে দূরে সরে যেতেই ‘এই ভাই আমার বেডা মানুষের রুচি আসে নাআআআআআআআ। তৃষা ম্যাডামকে খুঁজে পেলে কিন্তু নালিশ করব।’

যুবরাজ মুখ ভর্তি বিরক্তি নিয়ে বলল, ‘তোমার বালের তৃষা ম্যাডামের গুষ্টি চ….’

আকাশ কালো মখমলের মতো বিস্তৃত হয়ে আছে। তারাগুলো ছোট ছোট প্রদীপের মতো জ্বলজ্বল করছে। চাঁদ তার আলোয় নিস্তব্ধ জিনজিরাকে অপার্থিব আবেশে ঢুবিয়ে রেখেছে। পাশেই বুড়িগঙ্গা। কালো নদীর জলে চাঁদের আলো ছড়াচ্ছে মোহনীয়তা। রাস্তাঘাট তখন প্রায় ফাঁকা। কোথাও হালকা বাতাসে শুকনো পাতার খসখস শব্দ, কোথাও আবার দেরি করে ফেরা মানুষের পায়ের শব্দ হঠাৎ ভেসে ওঠে। ঘরবাড়ি অন্ধকারে নির্মগ্ন, শুধু মাঝে মাঝে কোনো জানালার ফাঁক দিয়ে ফিকে আলো উঁকি দেয়। তৃষার দুই পাশে দু’টো কোলবালিশ। পায়ের কাছে একটা। সে বালিশ ছেড়ে উল্টো দিকে শুয়ে আছে। পা দু’টো উঠিয়ে রেখেছে হেডবোর্ডে। পা গুলো আজ এত ব্যথা করছে। স্বপ্নের মধ্যে হয়তো তৃষা ঝাড়ু আর জুতা নিয়ে প্রেমকে ধরে থেরাপি দিচ্ছে। হঠাৎ তৃষার রুমের জানালার সাদা পর্দা গুলো বাতাসের ঝটকায় নড়ে উঠল। কেউ একজন প্রবেশ করল তার অন্ধকার রুমটায়। তৃষা তখনো গভীর ঘুমে নিমজ্জিত। বোমব্লাস্ট হলেও টের পাবে বলে মনে হচ্ছে না। লোকটার গায়ে কালো রঙের একটা হুডি। সে অন্ধকারের তৃষার পাশে এসে দাঁড়ালো। সামান্য ঝুঁকে তার চুলগুলোতে হাত বুলিয়ে দিলো আলতো করে। হঠাৎ চোখ গেল তৃষার পেটের দিকে। স্কার্ট পড়েছে সে। অনেকটা উপরে উঠে গেছে। পা গুলো উন্মুক্ত। যেই টিশার্টটা গায়ে পড়েছে সেটাও অনেকটা উপরে উঠে গেছে। বারান্দায় পর্দা দেওয়া নেই। চাঁদের আলো ভেতরে প্রবেশ করছে। লোকটির হাতে একটা ইনজেকশন। সে ইনজেকশনটা হাতে নিয়ে বসল তৃষার পাশেই। একেবারে মৃদু কণ্ঠে গুনগুন করল,

~প্রেম আমার ওওও প্রেম আমার~

চোখটা তার তৃষার পেটের দিকে চোখ যেতেই হঠাৎ গানটা বন্ধ হয়ে গেল। সে কিছুক্ষন সেখানে চোখ স্থির করে এবার আলতো করে পেটের কাছ থেকে টিশার্টটা আরো খানিকটা উপরে তুলে তাকিয়ে দেখল নাভির দিকে। তারপর আলতো করে ঝুঁকে নিজের ঠোঁট ছুঁইয়ে দিলো নাভির কাছে। তৃষা নড়েচড়ে উঠল। তবে সেই উষ্ণ ঠোঁটের পরশ তার অম্বিলিক থেকে সরল না বোধহয়। বরং চুমুটা বদলে গেল মৃদু কামড়ে।

চলবে..

#প্রেমতৃষা

#ইশরাত_জাহান_জেরিন

#পর্ব_২২

তৃষার ঘুমটা পাতলা হলেই সে নড়েচড়ে উঠল। পানির তৃষ্ণা পেয়েছে। উঠে বসতেই দেখল বারান্দার পর্দা গুলো নড়ছে। বাইরে বাতাস ছেড়েছে নাকি? ইদানীং আবহাওয়া কেমন রঙ বদলাচ্ছে। অসময়ে আগমন ঘটা জিনিসগুলোর প্রতি মানুষের কেমন যেন বিরক্তি কাজ করে। তবে এই অসময়ে আসা বৃষ্টির প্রতি বিরক্তিবোধ হচ্ছে না। সে কি একটা ভেবে পেটে হাত দেয়। নাভির কাছটায় পিঁপড়া কামড় দিলো নাকি? চুলকে আবারও বিছানায় এসে শুয়ে পড়ে। ঘুমের মাঝে এত জ্বালা একেবারে সহ্য হয় না তার।

যুবরাজের সঙ্গে রাজনীতিবিধ ফাহাদ শেখের ঝামেলা অনেক আগ থেকেই। ব্যাটা খচ্চরের বংশ শেখ অথচ দল করে বিএনপির। সব কাজে বাম হাত ডুকানো তার পছন্দের কাজ। যুবরাজের পেছনে না লাগলে তার পেটের ভাত হজম হয় না। এবার যুবরাজ সরকারও বুঝাবে সে কি জিনিস। সরকার বংশের ছেলে সে। যেন-তেন মানুষ না। বংশগত ভাবে সেও রাজনীতি করে আসছে। এই রাজনীতির মঞ্চে পাক্কা খেলোয়াড় হয়েই সে নেমেছে। যুবরাজ শুনেছে ফাহাদের একটা মেয়ে আছে। কখনো মিডিয়ার সামনে তিনি সেই মেয়েকে আনেননি। কেন আনেননি জিজ্ঞেস করলেই বললেন আমার মেয়ে এসবে অস্বস্তি বোধ করে। মেয়েটা দেখতেও নাকি একটুও সুন্দর না। কোনো কাজেরও না তবে ফাহাদের অতি প্রিয়। শত্রু অনেক দেখে মেয়েকে আড়ালেই রেখেছেন। আর কোনো সন্তানও নেই। যুবরাজ শেখ বাড়ির পেছন গাড়ি থামাতে বলে রাফসানকে বলল, ‘সব ব্যবস্থা আমার করা আছে। মেয়েটাকে আমার চাই।’

‘মেরে ফেলবেন?’

‘সুন্দর হলে না হয় ভেবে দেখতাম।’

‘আপনি দেখেছেন?’

‘না শুনেছি।’

‘শোনা কথায় কান দিতে নেই।’

‘তাহলে জলদি তুলে এনে দেখার ব্যবস্থাটা করে দাও মিস্টার গবেট।’

সামনে পরীক্ষা। ক্লাস মিস করা যাবে না এখন। সকাল সকাল প্রেম নেওয়াজের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিল তৃষা। পেল না তাকে। ভালোই হয়েছে একটা দিন শান্তিতে থাকা যাবে। ক্লাস শুরু হওয়ার আগে কানে এয়ারফোন গুজে পছন্দের বয় ব্রান্ড প্রিমরোজের গান শুনছে তৃষা। প্রিমরোজ ব্রান্ডে মেইন ভোকালিস্টকে সবাই আঁধার নামেই চিনে। সকল ধরণের গান গায় এই ছেলেটা। তবে কখনো পরিচয় জানা যায় নি। আদৌও আঁধার নামক কেউ আছে নাকি তা তৃষার জানা নেই। তবে তৃষার এই কণ্ঠস্বরের ব্যক্তিকে দেখার খুব ইচ্ছে। কবে যে এই লুকায়িত কণ্ঠের জাদুকর সামনে আসবে। শিমলা এসে পাশে বসতেই জিজ্ঞেস করল, ‘আঁধারের গান শুনছিস?’

‘না তোর ভাতারের গান শুনছি শালী।’

‘মুখের কি ছিড়ি। সুন্দর করে কথা বলতে পারিস না?’

‘সুন্দরের নানির পেছন ফাঁকা তো তাই আমার দিয়ে ওসব আসে না।’

‘তোর জন্য একটা খবর নিয়ে এসেছি। সেই রকম একটা খবর।’

‘কেডা মরলো? চল্লিশায় কিন্তু মাস্ট বি খালি তেহারি করতে বলবি।’

‘আরে কি সব অলক্ষুণে কথা? কেউ মরবে কেন? তোর ওই যে আঁধার আছে না? সে এইবার ফেইস রিভিল করবে। ঢাকাতেই তার প্রথম লাইভ কনসার্ট হবে। ভাই আমি তো এখনি আধাঁর কে দেখার জন্য ছটফট করছি। আধারের প্রেমরোজ ব্রান্ডের কনসার্ট। তাও সোলো কনসার্ট। ওর কত কত ভক্ত। শুনেছি টিকেট বিক্রি শুরু হয়ে গেছে। যেই হারে মানুষ তাকে দেখার জন্য টিকিট কিনছে আমরা পাবো তোর মনে হয়?’

‘টিকিটের দাম কত?’

‘২৫০০ এক একজন।’

‘শালার কপাল। এই বোন তুই আমায় ২৫০০ টাকা ধার দে। মাইনে পেলে ফেরত দিয়ে দেব। যদি মাইনে না পাই ফুটপাতে ভিক্ষা করে হলেও চুকিয়ে দেব।’

‘আচ্ছা বাবা বুঝেছি। তাহলে অংকুরকে বলি টিকিটের ব্যবস্থা করতে?’

তৃষা সরু চোখে শিমলার দিকে তাকিয়ে ভ্রু নাচিয়ে নাচিয়ে মিটিমিটি হাসতেই শিমলা লজ্জা পেল। তৃষা ফের জিজ্ঞেস করল, ‘ওমাগো আমার আগে চশমিস তোর প্রেমও হয়ে গেল? উহুম উহুম! চুমু-টুুমুও হয়েছে নিশ্চয়ই? তলে তলে এতকিছু? এই দেখ তোর বরের জুতা কিন্তু বিয়ের সময় আমিই চুরি করব।’

শিমলা লজ্জা লজ্জা মুখ করে বলল, ‘আরে বাবা এতদূর যাওয়ার কিছু নেই। আমরা কেবল কথা বলেছি। সে আমায় একবারও বলেনি ভালোবাসে আমিও বলিনি। এমনি আমাদের কথা হয় আরকি।’

‘শুন কেউ কেউ আছে মুখে ভালোবাসি বলতে পারে না। তবুও যেন বিশ্ব উজার করে ভালোবাসতে জানে। পুরুষ মানুষ বুঝলি তো এমনই। সব কিছু প্রকাশ করতে পারে না। তবে দেখবি কাজে কর্মে বুঝিয়ে দেবে সে কতখানি ভালোবাসতে জানে।’

‘হয়েছে হয়েছে আর প্রেমের বাণী শুনতে চাই না। তোর ওই বাড়িতে কেমন দিন কাটছে।’

‘কাটছে মোটামুটি।’

‘এই শুন তুই কিন্তু প্রেম ভাইয়ের সঙ্গেই প্রেমটা করতে পারিস। এই তোর তুই প্রেম ভাইয়ের বউ হলি আর আমি অংকুরের। তারা দুই বেস্ট ফ্রেন্ড আর আমি তুই। সবাই মিলে একসঙ্গে বিয়ে করব। ঘুরতে যাব ভালো হবে না?’

তৃষার শরীর শিরশির করে উঠল। ওই হারে বজ্জাতের সঙ্গে আবার প্রেম? ভাবলেই তো ভয় ভয় করে। তৃষা শিমলার আরেকটু কাছে এসে বলল, ‘প্রেম ভাইয়ের ওইখানে সমস্যা আছে।’

‘কোথায়? ওমা সেকি রে তুই কেমন করে জানলি?’

‘না থাকলে এতদিনে বিয়ে করে এতগুলো বাচ্চার বাবা হয়ে যেত। প্রেমও তো করতে পারে না। করবে কেমন করে? সমস্যা ওইখানে।’ বলেই তৃষা মিটিমিটি করে হাসল। হেসে বলল, ‘এই খবর তুই ভার্সিটির সবাইকে বলে দিস। সেই মজা হবে।’ শিমলা হাসবে কি হাসবে না ভাবতে ভাবতে তার চোখ গেল তৃষার পেছনে। সে মুহূর্তেই চুপসে গেল। তৃষা ফের বলল, ‘আমি এআই দিয়ে তার মুখ লাগিয়ে একটা ভিডিও বানাবো। ভিডিওতে সে বলবে কোন বিশেষ কারনে তার নাম প্রেম হয়েও এখনো হচ্ছে না।’ শিমলা চোখের ইশারা দিয়েও তৃষাকে সামাল দিতে পারছে না। তৃষা বলেই যাচ্ছে। হো হো করে হাসছে আর শিমলার গায়ের ওপর লুটিয়ে পড়ে কষিয়ে চড়-চাপড় দিচ্ছে। হেসে আবার বলে উঠল, ‘অংকুর ভাই যদি তোকে বিয়ে না করে, প্রেম না করে তাহলে তারও এআই দিয়ে ভিডিও বানিয়ে তাকেও বদনাম করে দেব।’

শিমলা এবার চিমটি মারতেই তৃষা বলল, ‘শালী আমি তোমার অংকুর নাকি? যাও গিয়ে অংকুরকে জায়গা মতো চিমটি মেরে আসো।’

‘পেছনে দেখ।’

তৃষা ভাবলেশহীন ভাবে পেছনে ফিরতেই বরফের মতো জমে গেল। ওমা স্বয়ং যমদূত দেখি! প্রেম ভাই যে দাঁড়িয়ে আছে। পাশেই আবার অংকুর। দু’জনেই তৃষার দিকে তাকিয়ে আছে। প্রেমকে যে কি হট লাগছে। লাগবে না কেন? হালকা আকাশি রঙের একটা শার্ট পড়েছে। তবে আজকে আর সাদা নয় বরং কালো প্যান্ট পড়া। হাতের ব্রেসলাইটটাও তো দারুন। বাদামী রঙের সরু ফক্সআই গুলো তারই পানে তাকিয়ে আছে। প্রেম ভাইয়ের বাম হাতটা প্যান্টের পকেটে গুঁজে রাখা। পাশের অংকুরটা কম কিসে যায়? বুক খোলা নেভীব্লু রঙের শার্টের সঙ্গে জিন্সের প্যান্টে চমৎকার লাগছে তাকে। প্রেমকে দেখে তৃষা ভাজা মাছটা খেতে জানে না এমন ভাব করে বলল, ‘আরে আসসালামু ওয়ালাইকুম প্রেম ভাই? দিনকাল ঝরঝরে ফকফকা যাচ্ছে তো? আচ্ছা যাই বুঝলেন তো। সামনে পরীক্ষা কিছুই পারি না গো।’

‘এত তাড়া কিসের। ডিপার্টমেন্ট তো আমাদের একই। আমি তো আছি তোমাকে বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য। কি যেন সমস্যার কথা বলছিলে? ‘

তৃষা কি বলবে না বলবে ভাবতে ভাবতে শিমলার দিকে তাকিয়ে বলল, ‘আমার বান্ধবীর একটা চ্যাপ্টারে সমস্যা। বুঝিয়ে দিবেন? তো দেন।’ তৃষা শিমলার দিকে তাকালো। বলল, ‘ যাহ প্রেম ভাই মার্কামারা বুঝানি দেয়। এবার প্রথমও হয়ে যেতে পারবি।’ শিমলা পড়েছে বিপদে। মাঝ থেকে তাকে এমন করে ফাঁসানো? কাজটা ঠিক হলো না একেবারে। তবে ঘটনা আগানোর আগেই অংকুর মাঝে ঢুকে বলল, ‘শিমলার সমস্যা আমি দেখে নেব। সব সাহায্য তুই একাই করবি নাকি? আমাকেও কিছু করতে দে?’ প্রেম পাত্তা দিলো না। তার নজর এখনো তৃষার ওপরে। তৃষা নিচের দিকে তাকিয়ে আছে। হঠাৎ তার হোয়াটসঅ্যাপে একটা নাম্বার থেকে ভয়েজ ম্যাসেজ আসতেই সে ক্লিক করল। তাতেই শরীর জমে ক্ষীর। বুঝতে বাকি রইল না প্রেম ভাইয়ের যে এসব কাজ। শেষে কিনা ওই রাতের চুমুর শব্দ আর ঝগড়াঝাটি এই খারাপ লোকটা রেকর্ড করে রেখেছে? প্রেম এবার তৃষার দিকে তাকিয়ে বলল, ‘তৃষা তোমার সমস্যাটা আমি রাতে সমাধান করব। কোন চ্যাপ্টারে সমস্যা তখন না হয় বলবে।’

‘দেখুন রাতে ভার্সিটি আসতে পারব না। ঝিনঝিরা থেকে এখানে আসতে হেব্বি খরচা হয়।’

‘এখানে নয় বেডরুমে এসো আমার। কিছু সমস্যা বেডরুম ছাড়া সমাধান করা যায় না।’

‘আরে যায় যায় সব খানেই যায়।’

‘চলো তাহলে ট্রাই করে দেখি।’

ভার্সিটির ফাঁকা জায়গায় তৃষা এই গরমের মধ্যে একটা মেয়ের সঙ্গে ব্যাডমিন্টন খেলায় মাতোয়ারা। কে নাকি তাকে বলেছে এই গরমে এসব খেললে নাকি ডায়েট হয়। শরীর হলিউডের নায়িকদের মতো জিরো ফিগার থাকে। তাই সে আপাতত সেই চেষ্টাই করছে। এক কোণে কিছু ছেলে বাইকে বসে আড্ডা দিচ্ছে। তার কিছুটা দূরে প্রেম ফোন টিপছে। মাঝে মাঝে আবার তৃষাকে দেখছে। এই মেয়ের কপালে দুঃখ আছে বিরাট। এমন বানরের মতো নাচন-কুদন না করলেই কি নয়? মন তো চাইছে জামার মধ্যে ছাড়পোকা ছেড়ে দিতে। যখন কামড় খাবে তখন বুঝবে নাচার মজা কেমন! কোণে আড্ডা দেওয়া ছেলে দুটোর মধ্যে চিকন করে ছেলেটি বলল, ‘দেখ দেখ হেব্বি মাল! কোন ডিপার্টমেন্টরে?’

“আমি কি জানি।’

‘যা গিয়ে নাম্বার জোগাড় কর।’

‘মনে হয় না পাত্তা দিবে। চালু মেয়ে লাগছে।’

‘কি বলিস? আমি রনি এর থেকেও সুন্দরী মেয়ে আমার টাকায় কিনেছি। আমার মুতের স্পিডের থেকেও জলদি আমি মেয়ে মানুষকে বিছানায় আনতে পারি।’ বলেই দু’জনে আবার হাসল। প্রেম উঠে দাঁড়াতেই অংকুর বলল, ‘কই যাস ভাই?’

‘মুততে। মুতের প্রতিযোগিতায় নামব বুঝলি! দেখতে হবে না আমার স্পিড আলালের ঘরের দুলালকে টেক্কা দিতে পারি কিনা।’

অংকুর জবাব দিলো না। কেবল হেসে উঠে দাঁড়িয়ে ছেলে দুটোকে ডেকে বলল, ‘এই ভাই চলো মুতে আসি।’

রনি জিজ্ঞেস করল, ‘কই যাব?’

‘আরে চিপায় আসো না। পিরিতের আলাপ করি।’

রনির আর তার বন্ধুকে না চাইতেও উঠে আসতে হলো কারণ সিনিয়র বলে কথা। অবাধ্য হলে জীবন তেজপাতা।’

রনি আর তার সাথের ছেলেটা মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে। প্রেম হঠাৎ করে পিস্তলটা বের করে রনির কপালে ঠেকাতেই সে কেঁদে উঠল, ‘ভাই কি করেছি ভাই? এমন করছেন কেন?’

‘তোর মুতের স্পিডটা দেখালি না যে। তাই কষ্ট পেলাম। সোজা বুকে এসে লাগল রে জানেজিগার।’

রনির আর বুঝতে বাকি রইল না। প্রেম ভাই যে সবটা শুনেছে। সে প্রেমের পা ধরে বসে ক্ষমা চাইতেই প্রেম পা ছাড়িয়ে নিয়ে বলল, ‘তুই যদি এখান থেকে একচুল নড়িস তাহলে মূত্রবিসর্জন তো দূরের বিষয় ওই মূল্যবান সম্পদও আর জায়গায় থাকবে না।’

বলেই সে প্যান্টের জিপার খুলতেই অংকুর হেসে দিলো। তাকে রঙ রাঙিয়ে প্রেম রনিকে বলল, ‘এই রনি একটা গান ধর। গানের সুরে আমি আবার ভালো কাজ সারতে পারি। আই মিন স্পিডটা আমারও বারে।’ বলেই সে রনির গায়ের ওপর কাজটা সারল। রনি ভয়ে সবটা সহ্য করে নিলো। জীবন বাঁচলেই হয়। কাজ শেষ করে প্যান্টের জিপার লাগাতে লাগাতে প্রেম হুমকির স্বরে রনিকে বলল, ‘ওই তৃষা তোর মা লাগে। কি লাগে তোর?’

‘ম…মা।’

‘হ্যাঁ ঠিক তাই। আর বাজে কথা বলবি ওকে নিয়ে?’

‘না ভাই জীবনেও না।’

‘বললে কি হবে?’

‘আপনি আমাকে আরেকবার খৎনা করাইয়া দিবেন।’

‘দ্যাটস মাই বয়। এই অংকুর আমি দুই মিনিটে হাতটা ধুয়ে আসছি। তুই তৃষাকে গিয়ে বল আমার বাইকের সামনে গিয়ে দাঁড়াতে। ওর খবর বাসায় গিয়ে নিচ্ছি।’

চলবে?

( কেউ আবার প্রেম ভাইয়ের ব্যক্তিগত সম্পদ দেখার জিদ ধরবেন না প্লিজ🐸🤲)

Share On:

TAGS: ,



CLICK HERE GO TO OUR HOME PAGE
Related Posts
 

0 Responses

Leave a Reply