প্রণয়েরব্যাকুলতা সাদিয়া পর্ব২
প্রথম প্রথম ক্লাস শুরু হয়েছে, বই টই এখনও কারোরই কেনা হয়নি। এই মুহূর্তে লাইব্রেরীই ভরসা। লাইব্রেরী হলো জ্ঞানের ভান্ডার। সারি সারি বই দিয়ে তাকগুলো সাজানো। অবাক হয়ে সামনে তাকিয়ে আছে মৌমিতা। ছোট্ট শহরের মেয়ে হওয়ায় এত বড় লাইব্রেরী চোখে পড়েনি তার। মৌমিতাকে এভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে নীরা এসে ধাক্কা দিল তাকে।
- কি দেখছিস ওভাবে?
মৌমিতা গোল গোল চোখেই বলল – কত বড় লাইব্রেরী।
নীরা এক গাল হেসে বলল – শুধু লাইব্রেরী দেখলে হবে? যে কাজে এখানে এসেছিস সেটা কর।
মৌমিতা লাইব্রেরীতে হাঁটছে আর বই খুঁজছে। বইয়ের তাকের দিকে তাকিয়ে হাঁটতে হাঁটতে হঠাৎ কিছু একটার সাথে ধাক্কা খেয়ে দু পা পিছিয়ে গেল সে। সামনে তাকাতেই দেখে সেই আগুন চোখা ছেলেটা ভ্রু কুঁচকে ওর দিকেই তাকিয়ে আছে। তবে আজ চোখে আগুন নেই। মৌমিতা একটা মেকি হাসি দিয়ে পাশ কাটিয়ে চলে যেতে নিলেই এক গম্ভীর পুরুষালী কন্ঠের ডাকে থমকে গেল।
- তুমি সেই মেয়েটা না যে ঐ দিন আমায় কামড়ে দিয়েছিলে?
ভরকে গেল মৌমিতা। নিজের দিকে তাকিয়ে দেখে সব ঠিকঠাক আছে কিনা, হ্যা সব ঠিকই তো আছে। মাথায় ক্যাপ, মুখে মাস্ক তারপরও এই ছেলে ওকে চিনলো কিভাবে।
মৌমিতা আমতা আমতা করে বলল – কই কিসের কামড়? আর আশ্চর্য আমি আপনাকে কামড়াতে যাব কেন?
তাজের সন্দেহ কমলো না উল্টো এভাবে আমতা আমতা কথা শুনে বেড়ে গেল। তাজ ভ্রু কুঁচকে এক পা দুই পা করে মৌমিতার দিকে এগোচ্ছে। আর মৌমিতা ভয়ে এক পা দুই পা করে পিছিয়ে যাচ্ছে। দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেল মৌমিতার। এই রুমের মাঝে দেয়ালটা এলো আবার কোথা থেকে। হাত দিয়ে পিছনে পর্যবেক্ষণ করলো সে, না এটা দেয়াল নয় বইয়ের তাক। সামনে আগুন চোখা শয়তান পিছনে বইয়ের তাক, দুইয়ের মাঝে বেশ ভালোভাবেই ফেঁসে গেছে মৌমিতা। পালানোর কোনো উপায় নেই। মৌমিতার এখন ইচ্ছে করছে তাকের মধ্যে ঢুকে যেতে। মৌমিতা আরও গুটিসুটি মেরে তাকের একদম সাথে লেগে গেল। হঠাৎ সামনে দাঁড়ালো যুবকটি তাকে টেনে নিজের দিকে নিয়ে নিল। “ধক ধক ধক ধক ” কারও হার্টবিট শোনা যাচ্ছে। মাথা উঁচু করে তাকিয়ে দেখে সেই আগুন চোখা শয়তান কেমন শান্ত দৃষ্টিতে ওর দিকে তাকিয়ে আছে। আর ও তার বুকের সাথে মিশে আছে। পিছনে তাকিয়ে দেখে কতগুলো বই পড়ে আছে। তার মানে বইগুলো তাকের উপর থেকে পড়েছে। মৌমিতা আবার তাজের বুকে মাথা রাখলো। কান পেতে তাজের হার্টবিট শুনছে। তাজ থমকে গেল, কি করছে এই মেয়ে । তাজের হৃদ স্পন্দনের গতি অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেছে, অস্থির লাগছে তার। বুক থেকে ঠেলে সরিয়েও দিতে পারছে না মেয়েটিকে কেমন অদ্ভুত এক ভালো লাগা কাজ করছে তার বুকের ভিতরটায়, কেমন শান্তি শান্তি। মিনিট দুয়েক পর মৌমিতা নিজেই সরে গেল তাজের বুক থেকে।
- আপনার হার্টে কি কোনো প্রবলেম আছে? কেমন দ্রুত গতিতে চলছে একদম ট্রেনের বেগে।
থতমত খেয়ে গেল তাজ। কোনো উত্তর না দিয়ে দ্রুত পায়ে কেটে পড়লো মৌমিতার সামনে থেকে। মৌমিতা ভ্যাবলার মতো তাকিয়ে আছে তাজের দিকে। তার মনে এখন একটাই চিন্তা এই ছেলের নির্ঘাত হার্টে সমস্যা আছে তাও বড়সড় সমস্যা না হয় এইভাবে ট্রেনের বেগে কারো হার্ট চলে নাকি। মৌমিতার মনে তাজের জন্য দুঃখও লাগছে। ইসস কি এমন বয়স ছেলেটার, এর মধ্যে হার্টে এত বড় একটা রোগ বাঁধিয়ে বসেছে।
সারারাত ঘুম হয়নি তাজের। শুধু একটু পর পর বুকে হাত দিয়ে ভাবছে সত্যিই ওর হার্টে কি সমস্যা আছে? না হয় তখন অত দ্রুত কেন হার্টটা বিট করলো। মাথায় কাজ করছে না তার।
নতুন এক দিন, নতুন এক ভোর। রোদের আলোয় জ্বলমল করছে যেন কলেজ প্রাঙ্গন। কৃষ্ণচূড়া গাছটায় ফুল ধরেছে ব্যাপক। ইচ্ছে করছে দুটো ফুল ছিড়ে কানের গোড়ায় দিতে কিন্তু অত উঁচুতে হাত যে মৌমিতার পৌঁছবে না। অসহায়ের মতো মুখ করে কৃষ্ণচূড়া গাছটার দিকে তাকিয়ে আছে মৌমিতা, পাশেই দাঁড়ালো নীরা। দুই জনই মৌনতা পালন করছে। দুই জনই একই ভাবনায় বিভোর। কিভাবে ঐ গাছটা থেকে দুটো কৃষ্ণচূড়া ফুল হাতে নেওয়া যায়। হঠাৎ তাদের পিছন থেকে মিষ্টি একটা কন্ঠ ভেসে এলো।
- গাছের ফুল গাছেই সুন্দর হাতে নয়।
দুজনেই চকিত হয়ে পিছনে ফিরলো। এক সুদর্শন যুবক মিষ্টি হেসে ওদের দুজনের দিকেই তাকিয়ে আছে। মৌমিতা ভ্রু কুঁচকে বলল – আপনি কি করে জানলেন আমরা ফুল ছিঁড়তে চাইছি?
যুবকটি আবারও মিষ্টি হাসি দিল, বলল – মানুষের মুখ দেখে মনের ভাষা পড়ার অসাধারণ ক্ষমতা রয়েছে আমার।
- নিজের গুণগান নিজেই গাইছেন নাকি?
যুবকটি শরীর দুলিয়ে হাসলো, ঠোঁট কামড়ে বলল – তা অবশ্য বলতে পারো। যাই হোক কোন ইয়ার?
- ফার্স ইয়ার, ইংলিশ বিভাগ, আপনি?
- আবার তাহলে দেখা হচ্ছে যুবকটি পা বাড়ালো সামনের দিকে।
- কোন ইয়ার বললেন না তো….
এতক্ষনে মুখ খুললো নীরা। এতক্ষন তো সে এই সুদর্শন যুবককে মন ভরে দেখায় মগ্ন ছিল। তার ঐ হাসিতেই যে ফাঁসির কাঠগড়ায় পৌঁছে গেছে নীরা। যুবকটি পিছু ফিরে তাকালো , আবারও মিষ্টি একটা হাসি দিল। চমৎকার সেই হাসি। এত হাসে কেন মানুষটা। মুখে হাসির রেখা নিয়েই বলল – আমি রাদীফ ইমরোজ, প্রফেসর অফ ইংলিশ ডিপার্টমেন্ট।
চমকে উঠলো মৌমিতা আর নীরা। তারা এতক্ষন তাদের ডিপার্টমেন্টের প্রফেসরের সাথে কথা বলছিল, ঘাবড়ে গেল দুজনেই। এই অল্প বয়সী যুবক যে প্রফেসর হবে ভাবতে পারেনি তারা। তাদের মতে প্রফেসর হবে গম্ভীর, রাগচটা , বয়স্ক, চোখে চশমা থাকবে। কিন্তু না এই যুবক ওদের সব ভাবনায় পানি ঢেলে এমন মিষ্টি হেসে অল্প বয়সেই প্রফেসরের পদক লাভ করেছে।
মেকি হাসলো মৌমিতা, মাথা চুলকে বলল – স্যরি স্যার আমরা আপনাকে চিনতে পারিনি। এনি ওয়ে আমি মৌমিতা আর ও নীরা।
নীরা ভ্যাবলার মতো তাকিয়ে আছে রাদীফের দিকে। শকড পেয়েছ মেয়েটা, কলেজে আসতে না আসতেই প্রফেসরের উপর ক্রাশ খেয়ে ফেলেছে সে, কি সাংঘাতিক। মৌমিতা খোঁচা মারলো নীরাকে, হকচকিয়ে গেল নীরা। চোখের ইশারায় বললো – কিছু বল।
নীরা আমতা আমতা করে বলল – হ হ্যা আমি নীরা।
হেসে ফেলল রাদীফ, শান্ত কন্ঠে বলল – ইটস ওকে, এত নার্ভাস হওয়ার কিছু নেই। আমি কিছু মনে করিনি।
ঘন কালো মেঘে ঢেকে গেছে আকাশটা । এখনই যেন বৃষ্টি নামবে , অসময়ের বৃষ্টি। এমনি বৃষ্টি বেশ ভালো লাগে মৌমিতার তবে অসময়ের বৃষ্টি নয়। চারদিকে কেমন গুমোট, থমথমে একটা পরিবেশ। বসন্তের উজ্জ্বলতা যেন হারিয়ে গেছে এই অসময়ের বৃষ্টির নীরবতায়। বেশ বিরক্ত লাগছে মৌমিতার, ছাতা আনেনি সে। আনবেও বা কিভাবে? এভাবে মে বসন্তকালেও বর্ষাকালের ফিলিং নিতে হবে বুঝতে পারেনি। বাসায়ও ফিরতে হবে , একবার বৃষ্টি নেমে গেলে বৃষ্টি কখন থামবে তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। সাত পাঁচ আর না ভেবে নেমে পড়লো মৌমিতা। রিকশুলোও আজ যেন বেইমানি করলো , কোনো রিকশা যাবে না আজ। বিরক্ত হয়ে পায়ে হাঁটা ধরলো সে। কিন্তু হায় কপাল একটু দূরে যেতেই ঝুম বৃষ্টি শুরু হলো। আশে পাশে কোনো ছাওনি বা দোকানও নেই যে সেখানে গিয়ে একটু দাঁড়াবে। জায়গাটা কেমন নিস্তব্ধ, চারপাশে গাছপালায় ভর্তি। দিন দুপুরেই কেমন ভয় লাগছে মৌমিতার, বৃষ্টির কারনে রাস্তায় মানুষও নেই তেমন। কাঁধের ব্যাগটা শক্ত করে চেপে ধরে বৃষ্টির মধ্যেই জোর কদমে হাঁটা ধরলো মৌমিতা।
একটু দূরে যেতেই হঠাৎ করেই আর বৃষ্টি পড়ছে না মৌমিতার মাথায়। চারপাশে তাকিয়ে দেখে এখনও ঝুম বৃষ্টিই চলছে , শুধু ওর মাথায়ই বৃষ্টি পড়ছে না। চকিত হয়ে মাথার উপরে তাকায় মৌমিতা, একটা ছাতা ঝুলছে মৌমিতার মাথায়। পাশে তাকিয়েই ভরকে যায় সে, এ তো সেই আগুন চোখা শয়তানটা ওর দিকে তাকিয়ে আছে। এই মুহূর্তে ওর মুখে মাস্ক বা মাথায় ক্যাপ নেই। ছেলেটা তো সহজেই চিনে যাবে সেদিন তাকে কামড়দাতা আর কেউ নয় মৌমিতা। আশে পাশে তাকিয়ে দেখে এই জায়গাটা আগের থেকেও নিস্তব্ধ। এই মুহূর্তে ওকে মেরে গুম করে দিলেও কেউ টের পাবে না। জোরে হাঁটা ধরলো মৌমিতা। সাথে সাথে মৌমিতার মাথায় ছাতা ধরে হাঁটা ধরলো তাজ। মৌমিতা এবার দৌড় শুরু করলো। সাথে সাথে তাজও দৌড় শুরু করলো। দৌড়াতে দৌড়াতে বলল – কি করছেন কি ভিজে যাচ্ছেন তো।
দৌড় থামালো লা মৌমিতা, আরও জোরে দৌড় দিল। সে যেন কোনো দৌড়ের রেসে নেমেছে। হাত টেনে ধরলো তাজ।তাল সামলাতে না পেরে পড়লো তাজের উপর। ছিটকে গেল তাজের হাতের ছাতাটা। নিজের ভারসাম্য রাখতে জড়িয়ে ধরলো মৌমিতার কোমড়। কিন্তু শেষ রক্ষা আর হলো না। মৌমিতার কোমড় জড়িয়েই নিচে পড়ে গেল সে, আর তার উপর মৌমিতা। ঝুম বৃষ্টি, তার মধ্যে রাস্তায় শুয়ে আছে এক যুবক তার উপর এক যুবতী। বৃষ্টির ছোট ছোট ফোঁটাগুলো ভিজিয়ে দিচ্ছে তাদের। মৌমিতার মাথা বেয়ে ঠোঁ’টে’র উপর চুঁইয়ে চুঁইয়ে জমা হচ্ছে পানির বিন্দু, সেকেন্ড খানিক পাড় করেই সেই গোলাপি ঠোঁ’টে’র পানি পড়ছে তাজের ঠোঁটের উপর। কেঁপে উঠলো তাজ। হার্টবিট প্রচন্ড গতিতে বেড়ে গেছে। শিড়দাড়া বেয়ে নেমে এলো এক শীতল রক্তস্রোত। এ কেমন অনুভূতি। ঘোর লেগে যাচ্ছে তাজের। মৌমিতা মাথা রাখলো তাজের বুকে। আবার কান পেতে শুনলো ছেলেটার ট্রেনের গতিতে চলা হার্ট বিট। তাজের অস্থির লাগছে। ভিতরে ভয়ংকর ভয়ংকর চিন্তা ভাবনার উদয় হচ্ছে। তাকাতে পারছে না মৌমিতার দিকে। বৃষ্টিতে ভিজে তার শরীরে প্রতিটি ভাজই স্পষ্ট ।
- আমি ঠিকই ধরেছিলাম আপনার হার্টে প্রবলেম আছে।
বৃষ্টির শব্দে শুনতে পায়নি তাজ। ভ্রু কুঁচকে তাকালো মৌমিতার দিকে। মৌমিতা একটু ঝুঁকে তাজের কানের কাছে গিয়ে বলল – আমি ঠিকই ধরেছিলাম আপনার হার্টে প্রবলেম আছে।
ঢোক গিলল তাজ। বুকের মধ্যে মনে হচ্ছে কেউ হাতুড়ি পেটা করছে। ধাক্কা মেরে নিজের উপর থেকে ফেলে দিল মৌমিতাকে। দ্রুত বেগে উঠে দাঁড়ালো। পাশে পড়ে থাকা ছাতাটা তুলে মৌমিতার হাতে ধরিয়ে দিয়ে গটগট করে হাঁটা ধরলো। একটু যেতেই আবার কিছু একটা ভেবে ফিরে এলো। নিজের গায়ের শার্টটা খুলে ফেলল। মৌমিতা ভরকালো, থমকালো, চমকে গেল। এই বৃষ্টির মধ্যে নিস্তব্ধ জায়গায় উদম গায়ে ওর সামনে এক সুদর্শন যুবক দাঁড়িয়ে আছে। তার শরীর চুঁইয়ে চুঁইয়ে বৃষ্টির ফোঁটা ফোঁটা পানি পড়ছে। দ্রিম দ্রিম আওয়াজ হচ্ছে মৌমিতার বুকে। বুকে হাত দিয়ে চেপে ধরলো মৌমিতা। এবার ওর হার্টে কোনো সমস্যা হলো না তো না হয় এমন দ্রিম দ্রিম আওয়াজ করছে কেন। আর এই ছেলেটাই বা কেন ওর সামনে এমন উদম হলো। কোনো ক্ষতি করবে না তো। ঢোক গিলে গুটিসুটি মেরে দাঁড়িয়ে আছে মৌমিতা। কিন্তু মৌমিতাকে অবাক করে দিয়ে শার্টটা ওর শরীরে ভালোভাবে পেঁচিয়ে দিয়ে আবার গটগট করে চলে গেল ছেলেটা। মৌমিতা হতবাক হয়ে তাজের দিকে তাকিয়ে আছে।
চলবে….
পরের পর্বটি পেতে পেইজে ফলো দিয়ে সাথে থাকুন। ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।
ধন্যবাদ
Share On:
TAGS: প্রণয়ের ব্যাকুলতা, সাদিয়া
CLICK HERE GO TO OUR HOME PAGE
-
প্রণয়ের ব্যাকুলতা পর্ব ২৮
-
প্রণয়ের ব্যাকুলতা পর্ব ১৬
-
প্রণয়ের ব্যাকুলতা পর্ব ৮
-
প্রণয়ের ব্যাকুলতা পর্ব ৩১
-
প্রণয়ের ব্যাকুলতা পর্ব ২০
-
প্রণয়ের ব্যাকুলতা পর্ব ৩৪
-
প্রণয়ের ব্যাকুলতা পর্ব ৩
-
প্রণয়ের ব্যাকুলতা পর্ব ৩৩
-
প্রণয়ের ব্যাকুলতা পর্ব ৩৫
-
প্রণয়ের ব্যাকুলতা পর্ব ৩৭