Golpo romantic golpo নিষিদ্ধ রংমহল

নিষিদ্ধ রংমহল পর্ব ২


নিষিদ্ধ রংমহল পর্ব ২

২.
সকলে মূর্তির মত মাথা নত করে দাঁড়িয়ে রইল যতক্ষণ না জমিদার নবাব সিকান্দার গজনবী এবং তার পুত্র নবাব তাইমুর গজনবী কারুকাজ খচিত সুসজ্জিত পালঙ্কে আসন গ্রহণ করলেন। জমিদার হাতের ইশারায় সকলকে বসতে বললেন।

জমিদারের ব্যক্তিগত পাইক দাউদ আলী সকলকে আশ্বস্ত করে ঘোষণা দিলেন,

  • হুজুর আপনাদের আসন গ্রহণ করতে বলেছেন। সকলে আসন গ্রহণ করুন।

হলঘরে উপস্থিত সকলে হাসিমুখে আসন গ্রহণ করল।

অতিথিদের মাঝ হতে উইলিয়াম এবং আর্থার নামক দুজন ব্রিটিশ ব্যক্তি এগিয়ে এলেন সিকান্দারের পানে। সিকান্দার তাদের দেখে উচ্ছ্বাসিত কণ্ঠে বলে উঠলেন,

  • আরে ইংরেজ বাবুরা দেখছি! আপনাদের যাত্রাপথে কোনো সমস্যা হয় নি তো?

উইলিয়াম এবং আর্থার দুজনেই গালে প্রশ্বস্ত হাসি ঝুলিয়ে অতি ব্যস্ত ভঙ্গিতে, ভঙ্গুর বাংলা এবং ইংরেজি মিশিয়ে বলল,

  • No, No, your highness! We didn’t face any obstacles on our way. আমরা বেশি কিছু আনতে পারি নি। Here is a small gift for you.

গাঢ় সবুজাভ রঙের লম্বাটে কাচের বোতল শির নিচু করে এগিয়ে দিল আর্থার। দামী বিলেতি ওয়াইনের বোতল। শেরি।

সিকান্দার উপহারটির দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসলেন। একরাশ তৃপ্তি মিশে আছে সে হাসিতে।
তিনি দাউদের দিকে তাকিয়ে ইশারা করতেই সে ওয়াইনের বোতলটি হাতে নিল। সিকান্দার কৃতজ্ঞতার সুরে বললেন,

  • অসংখ্য ধন্যবাদ। আপনারা প্রথমবার সিকান্দারের মাহফিলে এলেন। কেমন বোধ করছেন?

উইলিয়াম চারিদিকে একবার চোখ বুলিয়ে নিল। তার দৃষ্টি আঁটকে গেল হেমাঙ্গিনীর পানে। সেদিকে তাকিয়েই অস্পষ্ট স্বরে বলল,

  • Absolutely stunning!

আর্থারও উইলিয়ামের সাথে সহমত প্রকাশ করল। বলল,

  • এত সুন্দর জাকজমকপূর্ণ আবহ আগে কোনো জমিদারবাড়িতে দেখি নি। Beautiful!

প্রশংসায় ভাসতে লাগলেন নবাব সিকান্দার গজনবী। যদিও উইলিয়ামের হেমাঙ্গিনীর প্রতি লোলুপ দৃষ্টি তার নজর এড়ায় নি। তিনি মাথা ঝাঁকিয়ে বললেন,

  • সৌন্দর্যের দেখলেন কি, ইংরেজ বাবু। এখনো তো সাংস্কৃতিক পর্ব শুরুই হয় নি। নতুন বাঈজী সাহেবা আজ গীত গাইবেন। নৃত্য পরিবেশন করবেন। মাহফিলের সৌন্দর্য তখন দ্বিগুণ হয়ে যাবে।

উইলিয়াম অতি ব্যস্ত স্বরে জিজ্ঞেস করল,

  • What is her name?

উইলিয়ামের ব্যস্ততা দেখে অট্টহাসিতে ফেটে পড়লেন সিকান্দার। বললেন,

  • এত তাড়া কিসের! আর মাত্র ক্ষণিককালের অপেক্ষা। এরপরেই জেনে যাবেন। যাজ্ঞে, আমার বড় পুত্রর সাথে আপনাদের পরিচয় নেই। আমার অবর্তমানে জমিদারি গ্রহণ করবেন নবাব তাইমুর গজনবী।

তাইমুর হলঘরে প্রবেশের পর থেকে মাথা নিচু করে বসে ছিল। প্রথমবার এমন কোনো মাহফিলে এসেছে সে। এত মানুষের ভীড়ে কিছুটা অপ্রস্তুত সে।

সহসা আর্থার এবং উইলিয়াম পালাক্রমে তাদের হাত তাইমুরের দিকে এগিয়ে দিল করমর্দন করার উদ্দেশ্যে। অপ্রস্তুত তাইমুর দরদী ভঙ্গিতে হাসিমুখে হাত মেলালেন।

  • মিস্টার. তাইমুর, আপনার পিতা আমাদের দেখা শ্রেষ্ঠ একজন জমিদার। তিনি ব্রিটিশ সরকারের একজন সৎ মিত্র হিসেবে আমাদের নিকট অধিক পরিচিত। তার সুশাসনে আমরা গর্বিত। We trust you will maintain that legacy.

সাধুবাদ জানিয়ে কথাগুলো একনাগাড়ে বলল আর্থার। তাইমুরও এক গাল হেসে জবাব দিল,

  • I will try my best.

তাইমুরের উত্তর শুনে তৃপ্ত আর্থার এবং উইলিয়াম দুজন দুজনের পানে চাইল। ইশারায় কথা হল তাদের মাঝে। সামান্য কেশে উইলিয়াম বলল,

  • Your highness, we are seeking permission to go back to our seat.

সিকান্দার লজ্জিত ভঙ্গিতে বললেন,

  • অবশ্যই, অবশ্যই! অনুগ্রহ করে আপনারা আসন গ্রহণ করুন।

উইলিয়াম এবং আর্থার চলে যাওয়ার পর কিছুটা রূঢ় স্বরে সিকান্দার দাউদকে উদ্দেশ্য করে বললেন,

  • কই শুরু করতে বলো!

দাউদ মাথা ঝাঁকিয়ে বলল,

  • জ্বি হুজুর। এক্ষুনি বলছি।

দাউদ বাকি পাইকদের সাথে ইশারা ইঙ্গিতে কথা বলতে লাগল।

ক্ষণিককালের মাঝেই ঝকঝকে রূপার থালায় জমিদার এবং অতিথিদের জন্য আসতে লাগল বিভিন্ন ধরনের মুখরোচক, সুস্বাদু খাবার এবং ফলমূল। পান সুপুরি আর বিলেতি মদের পাশাপাশি চলে এলো হুক্কা।

গজনবী মাহফিলের হুক্কা যেন অন্যরকম বিলাসিতার প্রতিক। রূপার নলযুক্ত পিতলের কারুকাজ খচিত হুক্কাগুলো কর্মচারীরা অতিথিদের নিকট পৌঁছে দিল। শুধুমাত্র জমিদার এবং তার পুত্রের হুক্কায় ছিল সোনার আস্তরণ।

সিকান্দার আয়েশ করে শুয়ে হুক্কায় টান দিয়ে বললেন,

  • মাহফিল কেমন লাগছে তাইমুর?

তাইমুর মাথা নিচু করে উত্তর দিল,

  • ভালো লাগছে, পিতা। আপনার মাহফিলের আয়োজন, আপনার মতই সমৃদ্ধ।

ছেলের মুখে প্রশংসা শুনে সিকান্দার মুচকি হাসলেন। বললেন,

  • আমি জানি তোমার মনে কি প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে, তাইমুর। ​এই মাহফিলকে তুমি কেবলমাত্র বাঈজি সাহেবাদের নাচ-গান কিংবা মদের আসর ভেবে ভুল করো না।

মোমবাতিপূর্ণ ঝারবাতিটির দিকে আঙুল উঁচিয়ে ধরলেন সিকান্দার। এরপর পুত্রের দিকে গভীর দৃষ্টি নিবন্ধিত করলেন। বললেন,

  • ওই যে ঝাড়বাতিটা দেখছো? এর আলো শুধুমাত্র এই মাহফিলকেই প্রদীপ্ত করে না। বরং এর মাধ্যমে প্রকাশ পায় আমার কোষাগারের ওজন। বেলজিয়ামের কাঁচ আর ভেনিসের কাজ মন ভরে দেখুক উইলিয়াম এবং আর্থারের মত ব্রিটিশরা। তারা জানুক, তাদের দেশের চেয়েও দামি জিনিস আমি আমার মাহফিলের সজ্জায় ব্যবহার করেছি।
    রূপোর গড়গড়ার যখন তারা ধোঁয়া টানবে, তখন বুঝবে আমিও কম বিত্তশালী নই। এই মাহফিল সমাজে সর্বদা তোমার স্থান নির্ধারণ করবে, তাইমুর।

বাইশ বছরের তাইমুর সব কিছু বুঝে ফেলেছে এমনভাবে মাথা নাড়ল। এরপর প্রশ্ন করল,

  • তবে এসব কিছু কি শুধুমাত্র ব্রিটিশদের উচ্চতা কিংবা সমতায় পৌঁছানোর জন্য?
  • না। তাদের মাঝে নিজেদের আধিপত্য বিস্তারের জন্য। এই মাহফিলে যাদের সাথে তোমার পরিচয় হবে, তাদের মাধ্যমে আরোও দশটি গ্রামের দায়িত্ব হাতিয়ে নেওয়া সম্ভব। আধিপত্য বিস্তারে ছাড় দেওয়া যাবে না একবিন্দুও।

তাইমুরের কপাল সামান্য কুঁচকে উঠল। মনে জাগ্রত হল অসংখ্য প্রশ্ন। ক্ষণিককাল সময় নিল প্রশ্নগুলো নিজের মনে পরাক্রমে সাজিয়ে নিতে। এরপর কপালের ভাঁজ উন্মুক্ত করে সামান্য হেসে প্রশ্ন করল,

  • পিতা, আপনি ঠিকই বলেছেন। এই মাহফিল আমাদের ক্ষমতা এবং বিলাসিতার দূর্গ। তবে সবকিছু শুনে আমার মনে কয়েকটি গুরুতর প্রশ্ন জেগেছে।

সিকান্দার কিছুটা বিস্মিত হলেন। কণ্ঠে বিস্ময়ের পরিপূর্ণতা রেখে শুধালেন,

  • প্রশ্নগুলো শুনি?

তাইমুর বলতে শুরু করল।

  • অপরাধ নিবেন না, পিতা। আপনি আমাদের এই মাহফিলের গুরুত্বের কথা বললেন। কিন্তু এ মাহফিলের নিয়মিত খরচ, শিল্পীদের বকশিস, আর ব্রিটিশ অতিথিদের জন্য অত্যাধিক ব্যয়ভার কি আমাদের রাজস্ব আদায়ের ওপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করবে না?

সিকান্দার স্বাভাবিক কণ্ঠে বললেন,

  • এই জাঁকজমক টিকিয়ে রাখার দায়িত্ব আমি অচিরেই তোমার হাতে অর্পণ করব। অবশ্য তার জন্য খাজনার পরিমাণ আরও বাড়াতে হবে বৈকি!

তাইমুর আগ্রহভরে জানতে চাইল,

​- এতে কি প্রজাদের ওপর জুলুম করা হবে না, পিতা? সকলে জানে আপনি প্রজাদের কল্যাণের কথা ভাবেন। কিন্তু আমাদের এই অতুলনীয় বিলাসিতা আবার অন্যদিকে প্রজাদের দরিদ্রতা।
আমার চোখে বৈষম্য বাদে আর কিছু ধরা পড়ছে না।

সিকান্দার সামান্য ভাঁজ ফেললেন দুই ভ্রুঁর মাঝখানে। গম্ভীর গলায় বললেন,

  • আমার পুত্র হয়ে তোমার মুখে এজাতীয় কথা অশোভনীয়, তাইমুর। প্রজাদের জন্মই হয় খেটে খাওয়ার জন্য। আমাদের এই বিলাসবহুল জীবন ওদের মনে ভয় গছিয়ে দেয়। জমিতে চাষ করে ওরা নিজেদের পেটে দুবেলা অন্ন জোটাচ্ছে। এর চেয়ে বড় কল্যাণ আর কি হতে পারে? আর ভুলে যেও না মাহফিলের এই বিলাসবহুল চিত্র ক্ষমতার বিনিয়োগকে পাকাপোক্ত করে।

তাইমুর সন্তপর্ণে দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল,

  • বুঝতে পেরেছি, পিতা। অশোভন প্রশ্ন করার জন্য দুঃখ প্রকাশ করছি। মাফ করবেন।

সিকান্দার মৃদু হেসে বড় ছেলেকে আশ্বস্ত করলেন।
বাবার কথা তাইমুরের মনে ধরে নি। তবে সে জানে, বাবার বিরুদ্ধে কথা বলার মত শক্ত মাটি এখনো সে গড়ে তুলতে পারে নি। ভঙ্গুর মন নিয়ে তাইমুর হুক্কায় গড়গড় করে টান দিয়ে অন্যমনস্ক ভঙ্গিতে ধোঁয়া ছাড়ল।

হেমাঙ্গিনী তার নরম আসনে হেলান দিয়ে বসে আছে। তার চোখের সামনে জ্বলছে মোমের ঝাড়বাতি। গোটা হলঘরে শ্রবণগোচর হচ্ছে অতিথিদের হুক্কা পানের মৃদু গড়গড় শব্দ।
রুপোর রেকাবে রাখা পান-সুপারির তীব্র সুগন্ধ ম ম করছে। তবে কোনো কিছুই স্পর্শ করতে পারছে না হেমাঙ্গিনীকে। তার সমস্ত মনোযোগ নিবদ্ধ সিলিং এর দিকে।

সহসা বিলকিস হেমাঙ্গিনীর পাশে এসে দাঁড়ালেন। বললেন,

  • হেমা, তু তো তাইয়ার হে না?

হেমাঙ্গিনী আলগোছে মাথা ঝাঁকাল। সে প্রস্তুত।

  • কোনো ভুল করবি না। সামাঝ মে আয়া? একবার ভুল করবি তো সাবকুচ বিগাড় জায়েগা। মায়ের চেয়েও বড় বাঈজি হতে হবে তোকে। হে না বেটি?
  • হুঁ।

হেমাঙ্গিনীর গোটা শরীর কাঁপছে উত্তেজনায়। শুধুমাত্র এই আসর মাতাতে সে আজ প্রতিজ্ঞাবদ্ধ নয়। ​জমিদার নবাব সিকান্দার গজনবীর পাশে আভিজাত্যের গণ্ডি এঁকে যে যুবকটি বসে আছে, তার চোখে একজন অপরূপ নারী হয়ে উঠতে হবে আজকে। যে নারীর জন্য গোটা রাজ্য জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছাড়খাড় করে দিতেও সংকোচ করবে না সে। তাকে ফাঁদে ফেলতে নিজের থেকেই ব্লাউজের আরো একটি হুঁক উন্মুক্ত করল হেমাঙ্গিনী। ধবধবে ফর্সা বক্ষযুগলের অর্ধেকটা দৃশ্যমান হল।

হেমাঙ্গিনীর এই আচরণের পেছনে লুকিয়ে আছে মায়ের মৃত্যুরহস্য উদঘাটনের তীব্র আকাঙ্খা। সেই রহস্য উন্মোচনের একমাত্র মাধ্যম এই যুবক। ভাবী জমিদার নবাব তাইমুর গজনবী। তাকে ভালোবাসার অভিনয় করতে হবে। তার জন্য প্রেমের জাল বুনতে হবে। তবেই অন্দরমহলে প্রবেশের পথ সহজ হয়ে যাবে। হেমাঙ্গিনীর বিশ্বাস, অন্দরমহলে লুকিয়ে আছে তার মায়ের মৃত্যুরহস্য।

বিলকিস হেমাঙ্গিনীকে তাড়া দিয়ে বললেন,

  • এখন ঘোষণা দিবে। যা মেরি বাচ্চা! সবার মন জিতে আসবি। কেমন?

মুহুর্তের মাঝেই ঘোষণা শোনা গেল,

  • হুকুম হয়েছে! নবাব সিকান্দার গজনবী হুজুর এবং তার অতিথিগণদের মনোরঞ্জনের জন্য বাঈজী সাহেবার নাচ এবং গানের আয়োজন শুরু করা হোক।

হেমাঙ্গিনী উঠে দাঁড়াল। গোটা হলঘরের সকলের চোখ চুম্বকের মত আটকে গেল তার ওপর। সে এগিয়ে যেতে লাগল মঞ্চের দিকে।

হেমাঙ্গিনীর প্রতিটি পদক্ষেপে নূপুরের মৃদু রুনঝুন শব্দ ঝড় তুলছিল উপস্থিত সকলের মাঝে। তার রূপের ছটা যেন সহস্র আলোর ফোয়ারার ন্যায়। তার জৌলুসের সামনে এই সুসজ্জিত মাহফিলের সৌন্দর্যও ফিকে মনে হতে লাগল। হেমাঙ্গিনীর পরনে ছিল ঝলমলে জরির কাজ করা লেহেঙ্গা। দামী ঝকমকে গহনার ভারে তার সদ্য প্রস্ফুটিত নমনীয় দেহ আরও কমনীয় দেখাচ্ছিল।

​হেমাঙ্গিনী মঞ্চে দাঁড়িয়ে প্রথমে জমিদার ও ব্রিটিশ অতিথিদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করল এবং অনুষ্ঠান শুরু করার অনুমতি চাইল।

  • সালাম, হুজুর। আমার নাম হেমাঙ্গিনী। শ্রদ্ধেও বিলকিস বানুর সামান্য শিষ্যা। যদি আপনার অনুমতি থাকে, তবে আজ এই আসরে আপনাদের মনোরঞ্জনের ভার আমি নিতে চাই।

তাইমুর এতক্ষণ অন্যমনস্ক হয়ে তামাক টানছিল। গোলাপের পাপড়ির ন্যায় কোমল কণ্ঠস্বর শুনে সে মুহুর্তেই চমকে উঠল। তার হাতের সোনার আস্তরণে মোড়ানো তামাকের নলও এখন শব্দহীন। তাইমুরের চোখদুটো প্রথমবারের মত আঁটকে গেল হেমাঙ্গিনীর পানে। এক অদম্য মুগ্ধতা তড়িৎ গতিতে ছড়িয়ে পড়ল মনের প্রতিটি কোণে। শীতল স্রোত বয়ে গেল মেরুদণ্ডের মাঝ বরাবর।

সে বাঈজী না দেখলেও অসংখ্য সুন্দরী নারী দেখেছে। রাত্রি যাপনও করেছে। কিন্তু হেমাঙ্গিনীর রূপ যে অতুলনীয়! তার মুখের গড়ন, হরিণী অক্ষিজোড়া আর রঙমাখা লাল টুকটুকে ঠোঁটের কোণে লেগে থাকা মৃদু হাসি মন্ত্রমুগ্ধ করে ফেলল।

​হেমাঙ্গিনী মঞ্চে শান্তভাবে দাঁড়িয়ে থাকলেও তাইমুরের তীক্ষ্ণ দৃষ্টি তার নজর এড়ায় নি। প্রথম ধাপে জয়ের আনন্দে ওষ্ঠজোড়ার কোণে লেগে থাকা হাসি প্রশস্ত হল তার।

​জমিদার নবাব সিকান্দার গজনবী হাসিমুখে হাত উঁচু করে আজ্ঞা করলেন।

  • শুরু হোক তবে!

হেমাঙ্গিনী ঠুমরি গান ধরল। তার গানের সাথে বেজে উঠল তবলা এবং সেতার। সুরের ছন্দে কোমড় দুলে উঠল হেমাঙ্গিনী। হাতজোড়া ভাসতে লাগল হাওয়ায়। আঙুলগুলো যেন ছুঁয়ে যাচ্ছে শূণ্যকে, বিভিন্ন আঙ্গিকে। গানের সাথে নাচতে লাগল সে।

হেমাঙ্গিনীর কম্পিত স্ফীত বুকের দিকে লোলুপ দৃষ্টির সংখ্যা বাড়তেই লাগল। যৌ/ব/নের নেশায় বুদ হয়ে অতিথিরা একের পর এক বিলেতি মদ খুলতে লাগল। আসর জমে উঠল অচিরেই।

[ টার্গেট – ১৩০০ লাইক, ২৮০ কমেন্টস ❤️ ]

গল্পঃ #নিষিদ্ধরংমহল লেখনীতে, #আতিয়াআদিবা

Share On:

TAGS: ,



CLICK HERE GO TO OUR HOME PAGE
Related Posts
 

0 Responses

Leave a Reply