Golpo romantic golpo নিষিদ্ধ চাহনা

নিষিদ্ধ চাহনা পর্ব ৪


নিষিদ্ধ_চাহনা

পর্ব_০৪

লেখিকাসারাচৌধুরী

🚫অনুমতি বাদে কপি করা সম্পুর্ন নিষিদ্ধ🚫

শরৎের সকাল চারিদিকে শান্তিপুর্ন হাওয়া।।কতই বা বেজেছে সকাল দশটা কি এগারোটা শীত এখোনো পুরোপুরি যায়নি..কলেজ এর জলপাই গাছের নিচে দাঁড়িয়ে আছে জেরিন আর পিহু।।কিছুক্ষন পর এক প্রকার ছুটে জলপাই গাছের নিচে এসে দাড়ালো নাবিল..নাবিল কে দেখেই পিহুর চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়লো।।কাল রাতে কলে সব কথা হয়েছে আজ সন্ধ্যা সাতটাই পিহুদের ফ্লাইট।।তাই নাবিল এর সাথে দেখা করতে এসেছে।।নাবিল এ পিহু অসম্ভব ভালোবাসে।।তবে সেও চাই পিহুর বাবা ঠিক হোক সেহেতু পিহুকে শক্ত রাখতে নাবিল পিহুর মাথায় হাত দিয়ে বলে উঠে।। পিহু চিন্তা করিও না কয়েক মাস মাত্র ওখানে গেলেও তোমার সাথে প্রতিদিন ভিডিও কল এ কথা হবে।। মন খারাপ করো না।।ফ্লাইট কইটাই।।পিহু চুপচাপ দাঁড়িয়ে রইলো কোনো কথা বললো না রীতিমতো ফুফিয়ে উঠছে মেয়েটা।।নাবিল জেরিন এর দিকে তাকাতেই জেরিন বলে উঠে আজ সন্ধাই।।নাবিলা দীর্ঘশ্বাস ফেলে তারও যে খুব কষ্ট হচ্ছে তবে পিহুর সামনে প্রকাশ করলে এক্ষুনি কেদে কুটে ভাসাবে মেয়েটা।।বয়সের তুলনায় একটু বেশিই আবেগী আর এটাতে আসক্ত হয়ে পড়ে নাবিল।।নাবিল স্মিত হেসে দুই হাতের তালু দিয়ে পিহুর মুখ আজলায় তুলে চোখের পানি মুছে দেই।।তারপর বলে পিহু তুমি কিন্তু স্ট্রং গার্ল।।তোমার বাবাই এর জন্য এই কয়েকমাস একটু কষ্ট করো।।পিহু নাবিল এর দিকে মুখ তুলে তাকাই হামলে পড়ে নাবিল এর বুকে নাবিল টাল সামলে এক পা পিছিয়ে যায়।।বেশ কিছুক্ষন কাদার পর পিহু মুখ তুলে।।নাবিল মুচকি হাসি দিয়ে একটা গিফট পিহুর দিকে বাড়িয়ে দেয়।।পিহু হাতে নেয়..খুলে দেখে একটা মোবাইল।।পিহু নাবিল এর দিকে তাকালেই বলে।।এই মোবাইল টা আমি তোমার বার্থডে তে দিবো মনে করছিলাম কিন্তু তুমি তো তখন কানাডা তে থাকবা তাই আগেই দিয়ে দিয়েছি।।এতে তোমার আর আমার অনেক সৃতি আছে মন খারাপ লাগলে দেখবা। মন ভালো হয়ে যাবে।।নাবিল তারপর জেরিন এর দিকে তাকিয়ে বলে…বনু তুমি সন্ধ্যা অব্দি ওর সাথে থাকিও আমি আঙ্কেল কে বলে দিবো।।নাবিল জেরিন এর মামাতো ভাই তাই বনু বলেই ডাকে জেরিন কে।।জেরিন মাথা নাড়ায় হ্যা সুচক।।।নাবিল একটা রিকশা ডেকে ভাড়া দিয়ে দুজন কে পাঠিয়ে দেয় বাড়িতে।।তারপর নিজেও চলে আসে ক্যাম্পাসে।।

নাবিল আর জেরিন কে ছেড়ে এতো দূরে থাকতে হবে ভেবে পিহুর মাথা যন্ত্রনা শুরু হয়।।শারিরীক আর মানুষিক অসুখ নিয়ে জেরিন এর হাত ধরে বাড়িতে ঢুকে অরু।।সদর দরজা ঠেলতেই খটখট আওয়াজে খুলে যায়।। ভেত্রে ঢুকতেই মনটা আরো খারাপ হয়ে যায়।।আতিয়া বেগম রান্না ঘরে।।ল্যাগেজ গুলো সব ডাইনিং এ রাখা।।জেরিন একটা একটা করে গুনে দেখে ৪ টা ল্যাগেজ।।ঠিক তখনই আতিয়া বেগম এসে বলে দুপুর তিন্টায় এয়ারপোর্টে যেতে হবে।।এতে পিহুর মন আরো খারাপ হয়ে যায় আয়িয়া বেগমের কথার পিঠে কিছু বলে না নাবিল আর জেরিনের কথা মনে পড়ে জেরিন পাশে থাক্লেও নাবিল নেই।।পিহুর মনে পড়ে নাবিলের সাথে তার প্রথম সাক্ষাতের কথা….

এইতো কয়েকমাস আগের কথা..জেরিনের হাত ধরে হাটছে পিহু প্রতিদিনের মতোই।।ইলিয়াস চৌধুরীর অসুস্থতার জন্য ভালো কলেজ কোনো দুরের কলেজে চান্স নেই নি পিহু।।এই কলেজ টা বাড়ি থেকে বিশ মিনিট দূরে হওয়াই সুবিধা হয়েছে তার।।কলেজে পিহুকে তেমন কেও চিনে না কারন পিহু বোরকা হিজাব পরে আসে।।কিন্তু সেদিন পিহুদের ক্লাস ছিলো না তাই মাস্ক খুলে পানি খাচ্ছিলো আর হাটছিলো।।কলেজের দুতলার করিডর পার হতে রুম থেকে বেরহচ্ছিলো নাবিল ভাই আর ঠিক তখনই পিহুর না দেখার কারনে ধাক্কা লেগে হুবড়ি খেয়ে পড়তে যাই তখন নাবিল তাকে আকড়ে ধরে।।জেরিন আতকে উঠে এটা তার মামাতো ভাই আর কলেজের সিনিয়র।।নাবিল পিহুকে ছেড়ে দাড় করিয়ে দিয়ে জেরিনের দিকে তাকায় তারপর পিহুর দিকে আর একবার তালাতেই থমকে যাই তার চোখ।। মায়াবী ফর্সা মুখ।।টানা টানা চোখ।।গোলাপি ঠোঁট জোড়া।।নাবিল এই প্রথম কোনো মেয়েকে দেখে নার্ভাস হয়ে গেলো।।পিহু এখোনো তাকায়নি কিন্তু নাবিল তখন বলে উঠে এবার থেকে চোখ খুলে হাটবা।। বলে চলে যায়।।চলে যাওয়ার সময় একবার পিছে ফিরে চোখাচোখি হয়ে যায় পিহু আর নাবিলের।।পিহুর হৃদয়েও ফুটে উঠে নাবিল নামক ফুল।।কবির ভাষাই লাভ এট ফাস্ট সাইড।।এর পর থেকে পিহুর চোখে ভাসতে থাকে নাবিলের টোল পড়া স্নিগ্ধ হাসি সে হাসিতেই মাতাল পিহু।।

ব্যাস ভালোলাগা শুরু পিহু জেরিন এর কাছে শুনেছিলো পুরো কলেজের ক্রাশ বয় সে..এদিকে নাবিল বাড়ি গিয়ে জেরিন কে পাগল করতে থাকে পিহুর নাম্বারের জন্য।। জেরিন অবাক হয়।।যে ছেলে মেয়েদের থেকে দশ হাত দূরে থাকে সে পিহুর মাঝে কি খুজে পেলো।। যে প্রথম দেখাতেই নিজের সভাব বদলে ফেলে নাম্বার চাইলো।।জেরিন নাম্বার দিলেও নাবিলের বিবেক বাধা দিয়েছিলো পিহুকে কল দিতে।।

দুইদিক থেকে দুটো মানুষ দুজনকে লুকিয়ে দেখা শুরু করে।।উদাসিন দুপুরে কিংবা রোদ্রজ্জল সকালে পিহুর চোখ খুজতো নাবিল কে আর নাবিল খুজতো পিহুকে।।এক পলক দেখলেই দুজনের হৃদয় শান্ত হতো।।এভাবে চলতে থাকে।।পিহু বুজে না নাবিল এর মধ্যে কি দেখেছে নাবিল তার বিষয়ে এতো কিছু জানে কি করে।।এক সময় এই এক পক্ষিক ভালোবাসা জেরিন দুই পক্ষিক বানিয়ে দেই।।নিজের ভাই আর বেস্ট ফ্রেন্ড কে একে অপরের হাতে হাত মিলিয়ে দেয়।।পিহু বুজে না একটা মানুষকে এমন ভাবে ভালোবাসা অনুভব করা যায়।।পিহুর চোখ দিয়ে এক ফোটা পানি পড়লো টপ করে সিড়ি বেয়ে উপরে উঠে গেলো জেরিন কে নিয়ে।।

পিহু নিজের ঘরের দরজার সামনে দাড়াতেই আবারো বুকের মধ্যে কেমন করে উঠে নাবিল আর জেরিন জন্য জেরিন ঘরে ঢুকে গিয়ে বিছানাই পা ঝুলিয়ে বসে।। পিহু সেদিকে তাকিয়ে বিড়বিড় করে

-“অপেক্ষা শেষ হয়ে উপেক্ষা হয়।।মায়া হয়ে যায় মোহ।। প্রতিশ্রুতি যেনো কখোনো মিথ্যা না হয়।।আমি সত্যিই তোমাকে ভালোবাসি হয়তো তুমি বুজো”-

পিহু ঘরে ঢুকে নিজের ব্যাগ এর সব জিনিস চেক করতে থাকে..বোকা পিহু জানে না তার জন্য এক অন্য রকম ভালোবাসা অপেক্ষা করছে।।নিজের অন্যায় এর দহনে নিজেই পুড়ছে।।পিহুর জন্য তার থেকে কয়েক হাজার কিলোমিটার দূরে থাকা কারোর হৃদয় ছটফটায় অনুশোচনায়।।পিহু বুজলোও না কেও তার জন্য প্রতিটি সেকেন্ড এ তার জন্য অপেক্ষার প্রহর গুনছে..!

চলবে………

-(গল্পটা কেমন লাগছে কমেন্ট করো।। আশা করি ভালো লাগবে।।নতুন এক ডাক্তার+রোমান্টিক+রিভেঞ্জ রিলেটেড গল্প নিয়ে আসলাম।।ভালো রেসপন্স করলে পরের পর্ব দিবো)-

Share On:

TAGS: ,



CLICK HERE GO TO OUR HOME PAGE
Related Posts
 

0 Responses

Leave a Reply