নির্লজ্জ_ভালোবাসা
লেখিকাসুমিচোধুরী
পর্ব ৪৭ ( রোমান্টিক পর্ব)
❌কপি করা নিষিদ্ধ❌
অনেক কষ্টে হাঁপাতে হাঁপাতে আয়ান শেষ পর্যন্ত পাইপ বেয়ে ব্যালকনিতে উঠে এল। শরীরের ওপর দিয়ে বেশ ধকল গিয়েছে, তবুও সে একবারের জন্যও হাল ছাড়েনি। ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে কোমরে দু’হাত দিয়ে সে কয়েকটা গভীর ও দীর্ঘ শ্বাস নিল। নিজেকে কিছুটা শান্ত করে সে যখন রুমের ভেতরে পা রাখল, ঠিক তখনই তার চোখ আটকে গেল বিছানায় শুয়ে থাকা তিথির ওপর। আয়ান অজান্তেই সেখানে থমকে দাঁড়াল এক পা নড়ার শক্তিও যেন সে হারিয়ে ফেলেছে।
জ্বরের ঘোরে তিথি এতটাই কাহিল ছিল যে সে শাড়িটাও খোলার প্রয়োজন বোধ করেনি। শুধু ফুলের গয়নাগুলো খুলে আর মুখটা ধুয়ে এসে শুয়ে পড়েছে। শীতে বা জ্বরের কাঁপুনিতে সে একদম কাঁচুমাচু হয়ে গুটিসুটি মেরে শুয়ে আছে। ঘুমের ঘোরে তার পেট থেকে শাড়ির আঁচলটা অনেকটা সরে গিয়েছে, যা রুমের হালকা ড্রিম লাইটের মায়াবী আলোয় স্পষ্ট ফুটে উঠেছে।
আয়ান পা টিপে টিপে ধীরে ধীরে তিথির বিছানার পাশে এসে দাঁড়াল। তারপর অতি সন্তর্পণে তিথির পাশেই হাঁটু গেঁড়ে বসে পড়ল। আয়ান নিজেও জানে না সে এই মুহূর্তে কেন এমনটা করছে বা তার পরবর্তী পদক্ষেপ কী। সে গভীর মমতা নিয়ে আলতো করে তিথির গালে লেপ্টে থাকা কিছু চুল সরিয়ে কানের পেছনে গুঁজে দিল। আয়ানের আঙুলের স্পর্শ পাওয়া মাত্রই তিথি ঘুমের ঘোরেই হালকা শিউরে উঠল।
আয়ান এবার স্থির দৃষ্টিতে তিথির মুখের দিকে তাকাল। কী নিশ্চুপভাবে চোখ বন্ধ করে ঘুমাচ্ছে মেয়েটা! ঘুমন্ত অবস্থায় তিথিকে যেন স্বাভাবিকের চেয়েও অনেক বেশি কিউট আর মায়াবী লাগছে। এই প্রথম আয়ান তিথির দিকে একদম অন্য এক নজরে তাকাল। সে আজ ভালো করে লক্ষ্য করল যে তিথি যথেষ্ট সুন্দরী, যা আগে তার রাগের কারণে কখনো চোখে পড়েনি। তিথির মুখে এমন এক শান্ত মায়া জড়িয়ে আছে, যা আয়ানকে এক অদ্ভুত ঘোরের মধ্যে ফেলে দিল।
আয়ানের সেই আদিম রাগ আর উন্মত্ততা এখন যেন কর্পূরের মতো উড়ে গেল। আয়ান এক দৃষ্টিতে তিথির ঘুমন্ত মুখের দিকে তাকিয়ে রইল, যেন সে কোনো এক ঘোরের রাজ্যে হারিয়ে গেছে। কিন্তু হঠাৎই তার নজর আটকে গেল তিথির পেটের এক কোণে সেখানে স্পষ্ট ফুটে আছে কাল রাতের সেই কামড়ের কালচে দাগ। আয়ানের নিজের দেওয়া সেই ক্ষতচিহ্নটি ড্রিম লাইটের আলোয় যেন তার বিবেকের ওপর হাতুড়ি পেটা করতে লাগল।
আয়ানের বুকটা এক অজানা যন্ত্রণায় হাহাকার করে উঠল। সে ধীরে ধীরে আরও নিচু হয়ে তিথির পেটের সেই ক্ষতের কাছে নিজের মুখটা নিয়ে গেল। পরম মমতায়,অতি সাবধানে সে সেই কামড়ের চিহ্নের ওপর ঠোঁট ছোঁয়াল। একে একে পাঁচবার আলতো করে চুমু এঁকে দিল সেই জায়গায়। তার এই প্রতিটি চুমু যেন ছিল এক নীরব ক্ষমা প্রার্থনা সে যেন চাইছে তার দেওয়া সেই পৈশাচিক আঘাতের যন্ত্রণা ভালোবাসার পরশ দিয়ে ধুয়ে দিতে।
আয়ানের তপ্ত ঠোঁটের ছোঁয়া যখন তিথির নরম ত্বকে বিঁধছে, তিথি ঘুমের ঘোরেই বারবার শিউরে উঠছে। এক গভীর অস্বস্তি আর অজানা শিহরণে তার শরীর কেঁপে কেঁপে উঠছে, কিন্তু জ্বরের তন্দ্রা আর গভীর ঘুমের কারণে সে কিছুতেই চোখের পাতা মেলতে পারছে না। তার অবচেতন মন হয়তো বুঝতে পারছে কেউ একজন তার খুব কাছে, কিন্তু চেতনার জগৎ তাকে টেনে তুলতে ব্যর্থ হচ্ছে।
আয়ান তিথির মাথার কাছে এসে কপালে হাত রাখতেই তার বুকটা ধক করে উঠল। তিথির শরীর এখনো আগুনের মতো পুড়ছে, জ্বর যেন এক চুলও কমেনি। আয়ানের বুকের ভেতরটা দুমড়ে-মুচড়ে যাচ্ছে, নিজেকে তার এক আকাশ সমান অপরাধী মনে হচ্ছে। নিজের ওপর নিজেরই তীব্র ঘৃণা জন্মাল একটা নিষ্পাপ মেয়ে তাকে আদর করতে বলেছে বলে,তাকে এতটা কষ্ট দেওয়ার কি খুব দরকার ছিল? মেয়েটা না হয় তোর সাথে সারাক্ষণ ঝগড়া করত,তাই বলে তুই তাকে এভাবে ক্ষতবিক্ষত করবি? রাগে আর অনুশোচনায় আয়ানের ইচ্ছে করছে নিজের হাত দুটো দেয়ালে আছড়ে থেঁতলে ফেলতে।
হঠাৎ আয়ান লক্ষ্য করল, তিথি জ্বরের ঘোরে কাঁপতে কাঁপতে অস্ফুট স্বরে কিছু একটা বলছে। তার ঠোঁট দুটো থরথর করে কাঁপছে। আয়ান কানের কাছে মুখ নিতেই শুনতে পেল তিথির সেই করুণ আকুতি।
“অসহ্য লাগছে আর পারছি না খুব কষ্ট হচ্ছে! আম্মু, আমাকে একটু জড়িয়ে ধরো না প্লিজ আমাকে একটু শক্ত করে জড়িয়ে ধরো!”
তিথির পুরো শরীরটা থরথর করে কাঁপতে লাগল,যেন এক তীব্র শীতে সে কুঁকড়ে যাচ্ছে। আয়ান আর এক মুহূর্তও নিজেকে দূরে রাখতে পারল না। সব দম্ভ, সব আভিজাত্য একপাশে ফেলে সে বিছানায় উঠে বসল এবং পরম মমতায় তিথিকে টেনে নিয়ে নিজের বুকের গহীনে পুরে নিল। তিথিও যেন আশ্রয়ের এক বিশাল পাহাড় খুঁজে পেল সে জ্বরের ঘোরেই অবচেতন মনে আয়ানকে আষ্টেপৃষ্ঠে শক্ত করে জড়িয়ে ধরল। তিথির শরীরের সেই তীব্র উত্তাপ আয়ানের বুকে বিঁধতেই তার হৃৎস্পন্দন যেন এক মুহূর্তের জন্য থমকে গিয়ে আবার বন্য গতিতে ছুটতে শুরু করল।
তিথির তপ্ত নিঃশ্বাসগুলো কামারের হাপরের মতো আয়ানের বুকের ওপর আছড়ে পড়ছে। আয়ান তিথির কপালে একটা দীর্ঘ, ভেজা চুমু খেল। তার চোখ দুটো ভিজে উঠেছে। সে খুব নিচু স্বরে মিনমিন করে বলল।
“সরি তিথি মাফ করে দিস আমাকে। আমি সত্যি তোকে অনেক বেশি কষ্ট দিয়ে ফেলেছি। আজ আমার দেওয়া আঘাতেই তুই এই তীব্র জ্বরে দাউদাউ করে পুড়ছিস, অথচ একটা বারও আমাকে কিছু বলতে আসলি না? কোনো অভিযোগ জানালি না? অন্য কোনো তুচ্ছ কারণে তো তুই চ্যাঁচামেচি করে আমার কানের পর্দা ফাটিয়ে ফেলতি, কিন্তু আজ তুই ভীষণ চুপ আছিস, কিছু বলছিস না আমি বুঝতে পারছি আমি কতটা আঘাত দিয়েছি তোকে।”
আয়ান তিথির মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে তাকে আরও নিবিড়ভাবে নিজের সাথে মিশিয়ে নিল। সে যেন চাইল নিজের শরীরের সবটুকু শীতলতা দিয়ে তিথির এই দহনটুকু শুষে নিতে।তিথিকে নিজের বুকের ভেতর খুঁজে পেয়ে আয়ানের অস্থির মনে যেন এক অদ্ভুত প্রশান্তি নেমে এল। গত কয়েক ঘণ্টার সেই তীব্র দহন, ক্রোধ আর ছটফটানি এখন শান্ত নদীর মতো স্থির হয়ে গেল। তিথির শরীরের তপ্ত ওম আর তার মায়াবী সান্নিধ্য আয়ানের শরীরের প্রতিটি কোষে এক অদ্ভুত ভালো লাগার অনুভূতি ছড়িয়ে দিল।
আয়ানের খুব ইচ্ছে করছে এই রাতটা যেন কখনো শেষ না হয়। সে তিথিকে আরও পরম মমতায় আগলে ধরল। তিথিও জ্বরের ঘোরে আয়ানের বুকটাকে তার পরম আশ্রয়ের জায়গা মনে করে সেখানে মুখ গুঁজে নিশ্চিন্তে পড়ে রইল। আয়ান তিথির চুলের সুবাস নিতে নিতে এক সময় নিজেই ক্লান্তিতে চোখ বুজল।
বাইরে রাতের নিস্তব্ধতা, আর ভেতরে ড্রিম লাইটের হালকা নীলচে আলোয় দুটি প্রাণ এক হয়ে মিশে থাকল। কোনো ঝগড়া নেই, কোনো আক্রোশ নেই আছে কেবল এক অজানা টানের মায়াবী বন্ধন। তিথিকে নিজের বুকের ওপর অনুভব করতে করতে আয়ান এক গভীর এবং শান্তির ঘুমে তলিয়ে গেল। দুজনেই একে অপরকে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরে পাড়ি দিল এক অন্যরকম ঘুমের দেশে।
গায়ে হলুদের উৎসবের কোলাহল নিচে থেমে গেলেও ছাদের ওপর নিস্তব্ধতা যেন আরও গাঢ় হয়ে উঠেছে। সেই নিস্তব্ধতার সুযোগ নিয়েই রৌদ্র তুরাকে এক প্রকার জোর করে দেয়ালের সাথে চেপে ধরে আছে। তার আলিঙ্গনের বাঁধন এতটাই তীব্র যে মনে হচ্ছে সে তুরাকে নিজের শরীরের সাথে মিশিয়ে নিতে চায়। তুরা বার বার রৌদ্রের বুকের ওপর দু’হাত দিয়ে ঠেলার চেষ্টা করে হাঁপাতে হাঁপাতে বলল।
“এবার ছাড়েন রৌদ্র! দেখেন কতো রাত হয়েছে, আমার ভীষণ ঘুম পেয়েছে। নিচে সবাই খুঁজবে আমাদের।”
রৌদ্রের কানে তুরার কোনো কথাই পৌঁছাচ্ছে না। সে যেন এক ঘোরের মধ্যে আছে। রৌদ্র তার মুখটা নামিয়ে তুরার থুতনিতে নিজের চিবুক ঘষতে লাগল। তার সেই তপ্ত আর ভারী নিশ্বাসগুলো তুরার গলায় আগুনের হলকার মতো বিঁধছে। রৌদ্র অবাধ্য স্বরে ফিসফিস করে বলল।
“উহু হুশশশ! একদম কথা বলবি না। চুপ করে থাক, নাহলে কিন্তু আমি সত্যিই অন্য কিছু করে ফেলবো যা সামলানোর ক্ষমতা তোর নেই!”
রৌদ্রের গলার সেই গম্ভীর আর অধিকারবোধের সুর শুনে তুরা ভয়ে আর অজানা উত্তেজনায় কাঁপতে কাঁপতে অস্ফুট স্বরে বলল।
“কি কি করবেন আপনি?”
মুহূর্তেই রৌদ্রের মাথাটা আরও নিচু হলো এবং সে তুরার কানের নরম লতিতে দাঁত দিয়ে হালকা এক কামড় বসাল। অতর্কিত এই স্পর্শে তুরা এক মুহূর্তের জন্য শিউরে উঠল, তার সারা শরীরে যেন বিদ্যুতের তরঙ্গ খেলে গেল। সে মৃদু যন্ত্রণায় আর আদুরে গলায় চিৎকার করে উঠল।
“আহ্ রৌদ্র! কী করছেন এসব? ছাড়েন বলছি!”
রৌদ্র এবার তুরার কানের একদম কাছে ঠোঁট ছুঁইয়ে গা কাঁপানো স্বরে ফিসফিস করে বলল।
“বিশ্বাস কর তুরা, আজ এই হলুদ রঙের শাড়িতে তোকে দেখে আমি নিজেকে সামলাতে পারছি না। আজ তোকে আমার ভীষণভাবে, একদম অন্যরকম গভীরতায় ছুঁতে ইচ্ছে করছে। আমি পাগল হয়ে যাচ্ছি তুরা আমি সত্যিই পাগল হয়ে যাচ্ছি!”
রাতের এই নির্জনতায় রৌদ্রের প্রতিটি নিশ্বাস আর কথার ধার যেন তুরাকে অবশ করে দিচ্ছে। সে বুঝতে পারছে রৌদ্র আজ কোনো যুক্তির ধার ধারবে না।
রৌদ্র তার মুখটা নামিয়ে তুরার হলুদ মাখানো নরম গালে নিজের গালটা সজোরে ঘষতে লাগল। তুরার গালের কাঁচা হলুদ রৌদ্রের গালে লেপ্টে গিয়ে একাকার হয়ে গেল। রৌদ্র এখন পুরোপুরি হিতাহিত জ্ঞানশূন্য, তার প্রতিটি নিশ্বাস আগুনের হলকার মতো তুরার গলায় আছড়ে পড়ছে।রৌদ্র তুরার কাঁধে মুখ ডুবিয়ে নিজের ঠোঁট ঘষতে ঘষতে এক গভীর নেশায় তলিয়ে যাচ্ছে।
তুরা ভয়ে আর প্রবল এক শিহরণে কেঁপে উঠছে। সে তার সর্বশক্তি দিয়ে রৌদ্রের শক্ত বুকটায় ধাক্কা দিচ্ছে, কিন্তু রৌদ্র যেন এক অটল পাহাড় এক চুলও তাকে নড়ানো যাচ্ছে না। হঠাৎ রৌদ্র তুরার একটি হাত দেয়ালের সাথে শক্ত করে চেপে ধরল, যেন সে কোনোভাবেই পালাতে না পারে। পরক্ষণেই তার অন্য হাতটি শাড়ির ভাঁজ ভেদ করে তুরার উন্মুক্ত কোমরে সাপের মতো জড়িয়ে ধরল এবং এক হেঁচকা টানে তুরাকে একদম নিজের শরীরের সাথে পিষে ফেলল।
রৌদ্রের এই বুনো আচরণে তুরার নিশ্বাস যেন গলার কাছে আটকে গেল। সে বাতাসের জন্য হাঁসফাঁস করছে, কিন্তু রৌদ্রের আলিঙ্গন ক্রমশ আরও কঠোর হচ্ছে। রৌদ্র এবার তুরার ঘাড় আর কানের লতিতে একের পর এক গভীর, তৃষ্ণার্থ গভীর চুমু এঁকে দিতে শুরু করল। তুরার সারা শরীর অবশ হয়ে আসছে, এক অদ্ভুত ঘোরের মধ্যে সে হারিয়ে যাচ্ছে। তীব্র উত্তেজনায় সে নিজের অন্য হাতটি দিয়ে শাড়িটা এত শক্ত করে খামচে ধরল যে তার হাতের আঙুলগুলো সাদা হয়ে উঠছে।
তুরার বুকটা কামারের হাপরের মতো ওঠানামা করছে যা রৌদ্রের বুকে স্পষ্ট আঘাত হানছে। রৌদ্রের এই নিয়ন্ত্রণহীন ভালোবাসা আর তৃষ্ণার কাছে তুরা যেন আজ পুরোপুরি অসহায়।তুরা এখন রৌদ্রের বাহুবন্ধনে পুরোপুরি পিষ্ট, তার ফুসফুস যেন বাতাস খুঁজে পাচ্ছে না। সে শ্বাসরুদ্ধকর কণ্ঠে কোনোমতে হাঁপাতে হাঁপাতে আর্তনাদ করে উঠল।
“র..র রৌদ্র হাহ্ প্লিজ ছাড়েন… আমার কেমন জানি লাগছে! দম আটকে আসছে.. প্লিজ!”
তুরার সেই ভেঙে আসা কাঁপা কণ্ঠস্বর রৌদ্রের ভেতরের আদিম তৃষ্ণাকে যেন কয়েক গুণ বাড়িয়ে দিল। রৌদ্র এখন পুরোপুরি হিতাহিত জ্ঞানশূন্য। সে এক ঝটকায় তুরার দুই হাত দেয়ালের সাথে সজোরে চেপে ধরল, যেন সে কোনো ছটফট করা পাখি। রৌদ্র তুরার কানের দিকে ঝুকে এলো তুরার কানের একদম ভেতরে রৌদ্রের তপ্ত আর ভারী নিঃশ্বাসগুলো আছড়ে পড়ছে। রৌদ্র লাগামহীন মাতালের মতো অস্ফুট স্বরে তুরার কানে কানে বলতে বলল।
“জাস্ট একটু তুরা, প্লিজ বেশি গভীরে যাবো না, একটু! প্লিজ বাধা দিস না, আমি পাগল হয়ে যাবো!”
রৌদ্রের শরীরের প্রতিটি পেশি এখন টানটান। মুহুর্তে সে তুরার ঘাড়ে নিজের মুখটা ডুবিয়ে দিয়ে রুদ্ধ স্বরে বলল।
“জাস্ট এ লিটল বিট, তুরা। আই ওন্ট গো টু ডিপ। প্লিজ ডোন্ট রেজিস্ট, অর আই উইল লুজ মাই মাইন্ড।”
তুরার সারা শরীর থরথর করে কাঁপছে। রৌদ্রের স্পর্শে তার রক্তে যেন কেউ বিষ মেশানো আগুন ঢেলে দিয়েছে। সে চাইলেও এখন নিজেকে সরাতে পারছে না, রৌদ্রের এই বুনো ভালোবাসার কাছে সে যেন এক অসহায় বন্দি হয়ে যাচ্ছে।
রৌদ্র তুরার ঘাড় থেকে মুখ তুলে সরাসরি তুরার আধখোলা ঠোঁটে নিজের ঠোঁট ডুবিয়ে দিল। কোনো ভূমিকা নেই, নেই কোনো ধীরস্থিরতা সে এক তৃষ্ণার্ত মরুভূমির মতো তুরার ওষ্ঠদ্বয় নিংড়ে নিতে লাগল। রৌদ্রের এই বুনো আর অপ্রতিরোধ্য পাগলামিতে তুরা নিজেও যেন এক অতল গহ্বরে তলিয়ে যাচ্ছে। এক অজানা নেশায় আচ্ছন্ন হয়ে তুরা অবচেতনভাবেই রৌদ্রের সেই উত্তাল চুম্বনে সাড়া দিয়ে ফেলল।
টানা দীর্ঘ আট মিনিট ধরে একে অপরের নিশ্বাসে নিশ্বাস মিশিয়ে থাকার পর রৌদ্র যখন তুরার ঠোঁট ছাড়ল,দুজনেই তখন চরমভাবে বিদ্ধস্ত। তারা একে অপরের চোখের দিকে তাকিয়ে বড় বড় শ্বাস নিচ্ছে, যেন সারা বিশ্বের বাতাস আজ তাদের একারই প্রয়োজন।রৌদ্রের সেই উন্মাদনা এখন এক শান্ত অথচ গভীর নেশায় পরিণত হয়েছে। সে হুট করেই তুরার হাত দুটো ছেড়ে দিয়ে নিঃশব্দে নিচে হাঁটু গেঁড়ে বসে পড়ল।
তুরা তখনো ঘোরের মধ্যে, সে কিছুই বুঝতে পারল না হঠাৎ রৌদ্র কেন এভাবে নিচু হলো। কিন্তু পরক্ষণেই তুরার সারা শরীরে যেন এক লহমায় হাজার ভোল্টের বিদ্যুৎ খেলে গেল। রৌদ্র অতি সযত্নে তুরার কোমরের কাছ থেকে শাড়ির ভাঁজটা একটু সরিয়ে দিল। চাঁদের মায়াবী আলোয় ফুটে ওঠা তুরার সেই ধবধবে ফর্সা পেটে রৌদ্র পাগলপারা হয়ে মুখ ডুবিয়ে দিল। রৌদ্র তুরার পেটে তার তপ্ত ঠোঁট দিয়ে চুমু খেতে খেতে নাকের ডগা দিয়ে তুরার নরম আর মসৃণ ত্বকে সজোরে ঘষতে লাগল।
তুরার পাগল হওয়ার মতো দশা রৌদ্রে এমন মাতাল করা স্পর্শে। এক তীব্র শিহরণে তুরার পা দুটো যেন কাঁপছে। সে আর নিজেকে সামলাতে না পেরে হাঁপাতে হাঁপাতে রৌদ্রের চুলগুলো দুহাতে শক্ত করে খামচে ধরে হালকা গৌঙানি দিতে থাকল।
“অফফ… রৌদ্র… প্লিজ থামেন আমি, আমি, পারছি না আপনার এই স্পর্শ সামলাতে।”
তুরার শরীরের প্রতিটি লোমকূপ যেন রৌদ্রের এই নিবিড় স্পর্শে জেগে উঠেছে। ছাদের সেই অন্ধকারে তুরার অস্ফুট গোঙানি আর রৌদ্রের ভারী নিশ্বাস মিলেমিশে এক আদিম আবেশ তৈরি করছে।
রৌদ্র হঠাৎ এক ঝটকায় ওঠে তুরাকে দেয়াল থেকে সরিয়ে উল্টো করে ঘুরিয়ে দিল। তুরা বুঝে ওঠারও সময় পেল না,তার আগেই রৌদ্রের হাত চলে গেল তুরার পিঠের দিকে।এক টানে তুরার ব্লাউজের ফিতাটা আলগা করে দিয়ে সে তুরার কাঁধ থেকে কাপড়টা অনেকটাই নিচে নামিয়ে আনল। এরপর কোনো অবকাশ না দিয়েই রৌদ্র তুরার সেই উন্মুক্ত ধবধবে কাঁধে নিজের তপ্ত ঠোঁট ডুবিয়ে দিল। একের পর এক গভীর চুমু আর ঠোঁটের ঘর্ষণে তুরার শরীরে যেন আগুনের ঢেউ খেলে গেল।
তুরা এখন যন্ত্রণায় নাকি সুখে,তা বোঝার মতো অবস্থায় নেই। সে দ্রুত শ্বাস নিতে নিতে নিজের শাড়িটা হাতের মুঠোয় পিষে ধরে আর্তনাদ করে উঠল।
“রৌদ্র… আর না… প্লিজ! এবার থামেন আমি আর সহ্য করতে পারছি না!”
রৌদ্রের নেশা তুঙ্গে তুরার কাঁধ আর পিঠের ভাঁজে নিজের ঠোঁট ঘষতে ঘষতে বেসামাল অস্ফুট স্বরে ফিসফিস করে বলল।
“আর একটু জান প্লিজ।”
রৌদ্রের উত্তেজনার পারদ চরম পর্যায়ে চলে যাচ্ছে । পরিস্থিতি এমন যে,তুরাকে একটা বিছানা পেলে সে হয়তো তুরাকে আজ আস্ত খেয়ে ফেলবে। ঠিক সেই মুহূর্তেই প্রকৃতির এক অদ্ভুত খেলায় আকাশ ভেঙে ঝিরঝির করে বৃষ্টি নামতে শুরু করল। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই সেই ঝিরঝিরে বৃষ্টি রূপ নিল প্রবল বর্ষণে।
বৃষ্টির সেই হিমশীতল পানির ঝাপটা রৌদ্রের তপ্ত মাথায় লাগতেই তার ঘোর কিছুটা কাটল। সে বুঝতে পারল পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে এবং এই ভিজে অবস্থায় ছাদে থাকাটা ঠিক হবে না। রৌদ্র এক গভীর নিশ্বাস নিয়ে নিজেকে সামলে নিল। তারপর এক ঝটকায় তুরাকে পাজাখোলা করে কোলে তুলে নিল। তুরা কিছু বলার সুযোগ পাওয়ার আগেই রৌদ্র তাকে নিয়ে বৃষ্টির ঝাপটা উপেক্ষা করে সিঁড়ির দিকে এগিয়ে গিয়ে সিঁড়ি দিয়ে নেমে পড়ল।
রানিং…!
আসসালামু আলাইকুম আশা করি সকলে ভালো আছেন। আমি আজ কিছু বলতে বাধ্য হচ্ছি কাল আমি কমেন্ট এ দেখলাম অনেকে বলেছে আয়ান তো নিজের চাহিদা মিটাতে যাচ্ছে নিজের দেহের চাহিদা মিটাতে যাচ্ছে। কিন্তু এই কথাটা কি বলাট ঠিক হলো না মানে লেখিকা আপনারা নাকি আমি আপনারা আগুরি বলতে পারবেন আমি কি লিখছি না না লিখছি, আর ভালোবাসা কি দুরে থাকলেই জেগে ওঠবে, আরে কাছে না গেলে কি আয়ান দুর থেকেই তিথিকে ভালোবাসতে পারবে। আর আয়াম যে তিথিী কাছে যাচ্ছে নিজের চাহিদা মিটাতে আমি কিন্তু সেইটা বলিনি বরং বলেছি আজ তিথিকে তার কাছে পেতে ইচ্ছে করছে। কিন্তু ওমন কাছে যে হবে আমি তা বলেনি। কারন দুজন দুজনের ভালোবাসা তৈরী করতে হলে অবশ্যই স্বাভাবিক কাছে যাওয়া আসা করতে হবে। আশা করি আমার কথা সবাই বুঝতে পেরেছেন।
Share On:
TAGS: নির্লজ্জ ভালোবাসা, প্রিঁয়ঁসেঁনীঁ
CLICK HERE GO TO OUR HOME PAGE
-
নির্লজ্জ ভালোবাসা পর্ব ২৪
-
নির্লজ্জ ভালোবাসা পর্ব ১৬
-
নির্লজ্জ ভালোবাসা পর্ব ৪১
-
নির্লজ্জ ভালোবাসা পর্ব ৫৭
-
নির্লজ্জ ভালোবাসা পর্ব ৪২
-
নির্লজ্জ ভালোবাসা পর্ব ১০
-
নির্লজ্জ ভালোবাসা পর্ব ৫১
-
নির্লজ্জ ভালোবাসা পর্ব ৩৪
-
নির্লজ্জ ভালোবাসা পর্ব ১৩
-
নির্লজ্জ ভালোবাসা পর্ব ২৯