নির্লজ্জ_ভালোবাসা
লেখিকাসুমিচোধুরী
পর্ব ৪৪ (❌কপি করা নিষিদ্ধ❌)
🚫কঠোরভাবে প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের জন্য এই পর্বটা,🚫
রুমের মধ্যে আরফা দ্রুত তালে পায়চারি করছে। এই তো কিছুক্ষণ আগেই তো সে শিহাব আর আরশির প্রায় শুরু হওয়া রোমান্সের উপর জল ঢেলে দিয়ে এসেছে। আরফা নিজের কপালে নিজেই দুম করে চাপড় মেরে বলল।
“আহা, তোর কি ঠিক সেই মোক্ষম মুহূর্তেই দরজায় যেতে হলো? না হয় দশ সেকেন্ড আগে যেতি, না হয় বিশ সেকেন্ড পরে! শেষমেশ ভালোবাসার শুভ সূচনা করার আগেই বারোটা বাজানোর মূল অপরাধী হয়ে গেলি! ছিহ্ ছিহ্! বিনা আমন্ত্রণেই রোমান্স-ধ্বংসকারী মেয়ে একটা তুই!”
আরফা এসব বিড়বিড় করে বলতে বলতে নিজের অসহ্য রাগ আর হতাশা সামলানোর চেষ্টা করতে লাগল। আরও কিছুক্ষণ পর আরফা মুখ গোমড়া করে দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল।
“এই জীবনে সিঙ্গেলদের কী কষ্টটাই না দেখতে হয়, ইসস! আমার জামাইটা আল্লাহ্ কোন সাত সমুদ্রের ওপারে আছে গো? দ্রুত একটা প্লেন ধরে চলে আয় না সোনা! ওরে জামাই, তুই কই আয়, আমাকে কোলে করে নিয়ে যা! তোর অভাবে আমার জীবনটা তেজপাতা হয়ে যাচ্ছে, তোরে যে কী ভীষণ মিস করছি রেএএএএএ!”
আরফা আরও একবার হাত-পা ছুঁড়ে বলল।
“আর কত জন্ম শুধু অন্যের রোমান্স দেখে যেতে হবে? প্লিজ আল্লাহ্! এবার তো আমারও রোমান্সের একটা ট্রেলার শুরু হোক, যাতে অন্যেরা হা করে দেখতে পারে! আমার জামাইটা মনে হচ্ছে আমার ধৈর্য্যের শেষ সীমানা পরীক্ষা করছে! একবার শুধু আমার হাতে নাগালে আসুক, শার্টের কলারটা ধরে ঝেঁকে বলবো’এই যে মিস্টার! আমার বিয়ের ডেট ভুলে যাওয়া বেটার পুত বেটা! এতদিন কোন গর্তে লুকিয়ে ছিলি? জানিস না তোর জন্য আমার যৌবনের শেষ ট্রেনটা ছুটে যাচ্ছে!'”
তিথির সারা শরীর গনগনে আগুনে পুড়ছে। ঘুমের ঘোরেই তিথি যন্ত্রণায় অস্ফুটে কাতরাচ্ছে। অনেকক্ষণ ধরে তিথি রুম থেকে বের না হওয়ায় তনুজা খান ভীষণ চিন্তিত হয়ে রুমে এলেন। বিছানায় তিথিকে যন্ত্রণা সইতে দেখে তিনি দ্রুত তার কপালে হাত দিতেই বিদ্যুতের মতো চমকে উঠলেন। জ্বরে তার পুরো শরীর যেন তপ্ত অঙ্গার! তিনি আর্ত কণ্ঠে তিথিকে ডেকে বললেন।
“তিথি মা! ও তিথি! তোর শরীরে আগুন জ্বর! হঠাৎ করে এত মারাত্মক জ্বর এলো কোথা থেকে?”
তিথি কষ্টে কেঁদে উঠে তনুজা খানের হাঁটুতে মাথা গুঁজে তাঁকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরল এবং আর্তনাদ করে বলল।
“আম্মু,খুব কষ্ট হচ্ছে! অসহ্য অস্থির লাগছে!”
তনুজা খান বিন্দুমাত্র সময় নষ্ট করলেন না। তিনি দ্রুত ওয়াশরুম থেকে এক বালতি ঠান্ডা পানি নিয়ে এলেন। এরপর তিথিকে বিছানার এক কিনারে সাবধানে মাথা হেলিয়ে শুইয়ে দিয়ে অত্যন্ত যত্ন সহকারে তার কপালে পানি ঢালতে লাগলেন।
তনুজা খান দীর্ঘ সময় ধরে কপালে জল ঢালার পর হাত দিয়ে দেখলেন তা ঈষৎ শীতল হয়েছে, তবে তিনি নিশ্চিত যে ক্ষনিকের মধ্যেই উত্তাপ আবার বাড়বে। তনুজা খান আর সময় নষ্ট না করে তড়িঘড়ি নিচে নেমে এসে এক প্লেট খাবার সাজিয়ে নিলেন। বসার ঘরে সোফায় তখন শিহাব, আয়ান আর আশিক খান মগ্ন হয়ে গল্প করছেন। তনুজা খান আশিক খানকে প্রায় কেঁদে ফেলার ভঙ্গিতে উদ্দেশ্য করে বললেন।
“শুনছেন? দয়া করে একটু ডাক্তারকে ফোন করুন না! মেয়েটার শরীরে যেন আগুন ধরে গেছে!”
আশিক খান কথাটার গভীরতা উপলব্ধি করতে না পেরে কিছুটা হতভম্ব হয়ে জিজ্ঞেস করলেন।
“জ্বরে পুড়ছে মানে? তুমি এসব কী বলছো?”
শিহাব আর আয়ানও ব্যাপারটা বুঝে উঠতে না পেরে সন্দেহের দৃষ্টিতে তনুজা খানের দিকে তাকাল। তনুজা খান ছটফট করতে করতে বললেন।
“তিথির! জ্বরে তার শরীর দাউ দাউ করে জ্বলছে! দ্রুত ডাক্তার দেখানো দরকার, মেয়েটার খুব বেশি কষ্ট হচ্ছে!”
আশিক খানের যেন বুকে সজোরে আঘাত লাগল। তিনি আর একটি সেকেন্ডও নষ্ট না করে সঙ্গে সঙ্গে ডাক্তারকে ফোন করে যত দ্রুত সম্ভব আসার জন্য বললেন।
ঠিক দশ মিনিটের মধ্যেই ডাক্তার দ্রুত এসে হাজির হলেন। তিথির রুমে উদ্বেগ নিয়ে সবাই ভিড় জমিয়েছে, কেবল আয়ান আর রৌদ্র ছাড়া। আয়ান তখনও ভারাক্রান্ত মনে নিচেই বসে আছে সে গভীরভাবে অনুভব করছে, তিথির এমন শোচনীয় শারীরিক অবস্থার পেছনে সে নিজেই দায়ী।
তিথির বিছানার পাশে তুরা, আরফা, আরশি সবাই বসা। একপাশে ডাক্তার গভীর মনোযোগ দিয়ে তিথিকে পরীক্ষা করছেন। বেশ কিছুক্ষণ পর ডাক্তারকে অস্বাভাবিক রকম চিন্তিত দেখে আশিক খান ভীষণ উদ্বিগ্ন হয়ে জিজ্ঞেস করলেন।
“ডাক্তার সাহেব, আমার মেয়ে বিপদমুক্ত তো? সব ঠিক আছে?”
ডাক্তার চিন্তিত মুখে আশিক খানের দিকে তাকিয়ে থমথমে গলায় বললেন।
“আপনার মেয়েটি কি বিবাহিত?”
ডাক্তারের মুখ থেকে এমন অপ্রত্যাশিত কথা শুনে সকলে হতবাক হয়ে গেলেন। আরিফুল খান দ্রুত পরিস্থিতি সামাল দিতে চাইলেন, তিনি সঙ্গে সঙ্গে বললেন।
“হ্যাঁ, ও বিবাহিত। আমার বড় ছেলের সাথেই বিয়ে হয়েছে।”
ডাক্তার এবার আরিফুল খানের দিকে সরাসরি তাকিয়ে বললেন।
“ঠিক আছে। আপনার ছেলেকে ডেকে দিন। আর হ্যাঁ, আপনার ছেলে আসার পর আপনাদের আর কারও এখানে থাকার প্রয়োজন নেই। শুধুমাত্র আপনার ছেলে থাকলেই হবে।”
ডাক্তারের এমন অদ্ভুত শর্ত শুনে ঘরের সবাই যেন বিস্ময়ের চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছে গেল। হঠাৎ কেন ডাক্তার স্বামী-স্ত্রীকে নিভৃতে চাইছে? আরিফুল খান আর কোনো কথা না বাড়িয়ে দ্রুত আয়ানকে ডেকে রুমে নিয়ে এলেন। আয়ানের উপস্থিতি দেখে সকলেই একে একে ঘর ছেড়ে চলে গেল। ডাক্তার আয়ানকে দেখেই প্রশ্ন করলেন।
“আপনিই তার স্বামী? আর নতুন বিয়ে হয়েছে?।”
আয়ান সহজভাবে মাথা নেড়ে উত্তর দিল।
“হুম।”
ডাক্তার এবার একটুও না থেমে সরাসরি জিজ্ঞেস করলেন।
“ডোন্ট মাইন্ড,শারীরিক সম্পর্ক করেছেন?”
আয়ান সহজেই স্বীকার করল।
“হুম।”
ডাক্তার আবার নির্দিষ্ট সময় জানতে চাইলেন।
“সেটা কতক্ষণ ধরে?”
আয়ান আড়ষ্ট কণ্ঠে জবাব দিল।
“সারারাত।”
আয়ানের ‘সারারাত’ উত্তরটি শুনে ডাক্তার যেন আকাশ থেকে পড়লেন, তিনি তত্ক্ষণাত্ দম আটকে প্রবলভাবে কেশে উঠলেন। তাঁর কাশির তীব্রতা এমন ছিল যে তা থামার নামই নিচ্ছিল না। ডাক্তারকে এমন বেহাল অবস্থায় দেখে আয়ান বিছানার পাশে রাখা তিথির জন্য রাখা জলের গ্লাসটা দ্রুত তুলে ডাক্তারের সামনে এগিয়ে ধরে বলল।
“শান্ত হোন, ডাক্তার! এতটা উত্তেজিত হবেন না,! আপনি এখানে রোগী দেখতে এসেছেন, রোগী দেখতে এসে আপনি নিজেই আবার না অসুস্থ হয়ে পড়েন!”
ডাক্তার তাড়াহুড়ো করে পানির গ্লাসটা টেনে নিলেন এবং এক নিশ্বাসে পুরোটা খেয়ে শেষ করলেন। একটু শান্ত হওয়ার পর তিনি চোখে চোখ রেখে সরাসরি আয়ানের দিকে তাকিয়ে বললেন।
“দেখুন মিস্টার, আপনি কি অবগত ছিলেন যে, মেয়েটার সাথে আপনার এটিই ছিল প্রথমবার শারীরিক ঘনিষ্ঠতা?”
“হ্যাঁ, আমি পুরোপুরি জানতাম।”
“তাহলে সবকিছু জানা সত্ত্বেও আপনি এই কাজটা করলেন কিভাবে? আপনি কি জানেন, এর ফলে মেয়েটার শরীরের অভ্যন্তরের অনেক অঙ্গ সাময়িকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছে? প্রথমবার এত দীর্ঘ সময় ধরে শারীরিক সম্পর্ক করাটা আপনার একদমই উচিত হয়নি। মনে রাখবেন, আপনার এই কাজ কিন্তু আইনের চোখে এক প্রকার অপরাধ হিসেবেও গণ্য হতে পারে।”
ডাক্তারের কঠিন কথাগুলো শুনে আয়ান লজ্জিত ও অনুতপ্ত হয়ে বলল।
“জ্বি, আমি স্বীকার করছি, এই কাজটা আমি ঘোরতর ভুল করেছি। আশা করছি, ভবিষ্যতে আর এমন ভুল হবে না।”
আয়ানের কথায় কিছুটা হলেও সন্তুষ্ট হয়ে ডাক্তার বললেন।
“আমিও এটাই আশা রাখি যে, আপনি ভবিষ্যতে এমন অপরিণামদর্শী ভুল আর করবেন না। যাকগে, এবার কাজের কথায় আসি। আপনার স্ত্রীর অবস্থাটা সামান্য গুরুতর। তাকে এখন থেকে পূর্ণ বিশ্রাম নিতে হবে, হাঁটাচলা একেবারেই কম করতে হবে, আর আমি কিছু জরুরি ওষুধ লিখে দিচ্ছি, সেগুলো এক্ষুণি নিয়ে আসুন।”
ডাক্তার তাড়াতাড়ি প্রেসক্রিপশন প্যাডে প্রয়োজনীয় ওষুধগুলো লিখে দিলেন। এরপর প্রেসক্রিপশনটি আয়ানের হাতে তুলে দিয়ে তিনি আরও একবার তিথির শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে ঘর থেকে বেরিয়ে গেলেন।
ডাক্তার নিচে এসে অপেক্ষারত সবার দিকে এক নজর তাকালেন এবং তাদের আশ্বস্ত করার ভঙ্গিতে বললেন।
“চিন্তার কোনো কারণ নেই, ভয় পাওয়ার ও কিছু নেই। সব ঠিক আছে। একটু বেশি করে বিশ্রাম নিলেই দ্রুত সেরে উঠবে।”
ডাক্তার প্রস্থান করলেন। তাঁর পিছন পিছনই আয়ান বেরিয়ে গেল, ওষুধপত্র কেনার জন্য। গাড়িতে উঠতে গিয়ে আয়ানের কাছে নিজেকে ভীষণভাবে অপরাধী মনে হতে লাগলো। আয়ান গাড়ি চালাতে চালাতে দু’হাতে স্টিয়ারিং চেপে ধরে দীর্ঘশ্বাস ফেলে স্বগতোক্তি করল।
“কী দরকার ছিল এতটা নিচু হয়ে এভাবে প্রতিশোধ নেওয়ার? মেয়েটা তো শুধু তোর কাছে একটুখানি উষ্ণতাই তো চেয়েছিল! একটু স্নেহ ভরে, ভালোবেসেও তো ওকে আদর করতে পারতিস! আয়ান, তুই কবে থেকে এতটা অমানুষ, এতটা কাপুরুষ হলি রে!”
সন্ধ্যা নামার আগেই পার্লার থেকে পেশাদার মহিলারা এসে তিথি আর তুরাকে নিখুঁতভাবে সাজিয়ে দিয়ে গেছেন। তিথিকে কোনোমতে সাজসজ্জা করিয়ে বসিয়ে রাখা হয়েছে যদিও ওষুধ খাওয়ার পর তার শরীরটা সামান্য আরাম পেয়েছে, কিন্তু জ্বরের তীব্রতা এখনও কমেনি।
তিথি আর তুরা দু’জনকেই একই নকশার শাড়ি, একই রকম গাঁদা ফুলের গয়না অর্থাৎ সবকিছুই একই ধাঁচে সাজানো হয়েছে। এরপর দু’জনকেই পাশাপাশি গায়ে হলুদের সুন্দর মঞ্চে বসানো হলো। রৌদ্রও এসে হাজির। রৌদ্র আর আয়ান দু’জনই একই ধরনের উজ্জ্বল হলুদ রঙের পাঞ্জাবি পরেছে।
তুরার প্রবলভাবে ওয়াশরুম পাওয়ায় সে স্টেজ থেকে উঠে এসে নিজের রুমে এলো। ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে, সে যখন নিচে নামার জন্য ঘর থেকে সবেমাত্র বের হতে যাচ্ছে, ঠিক সেই মুহূর্তে শক্তিশালী একটি হাত এসে তার কব্জি খপ করে ধরল এবং জোরালো একটি হেঁচকা টানে তাকে টেনে নিল।
সুজা তাকে নিয়ে এক ঝটকায় দেয়ালের সাথে শক্ত করে চেপে ধরল। তুরা ভয়ে আচমকা চমকে উঠে তাকাল সামনে রৌদ্র! সে তীক্ষ্ণ, নেশালো দৃষ্টিতে তার দিকে তাকিয়ে আছে। তুরাও যেন সম্মোহিত হয়ে কিছুক্ষণ পলকহীনভাবে রৌদ্রের চোখের দিকে তাকিয়ে রইল। কয়েক মুহূর্তের নীরবতার পর রৌদ্র একটি তাজা গোলাপ ফুল নিয়ে তুরার গাল ছুঁয়ে আলতো করে স্পর্শ করতে করতে বলল।
“তোকে আজ অবিশ্বাস্য সুন্দর লাগছে। মনে হচ্ছে যেন জান্নাত থেকে নেমে আসা হলুদ রঙের হুরপরী! হ্যাঁ, তুইই শুধু আমার পরী।”
তুরা তীব্র লজ্জায় মাথা নিচু করে চোখ নামিয়ে নিল। তার বুকের ভেতর যেন ধুমধুম করে দ্রুত তবলা বাজতে শুরু করল। রৌদ্র তুরার থুতনি আলতো করে ধরে তার মুখটা উঁচু করল। তুরা লজ্জায় সঙ্গে সঙ্গে কষে চোখ বন্ধ করে ফেলল। রৌদ্র তুরাকে চোখ বন্ধ করে থাকতে দেখে ফিসফিস করে বলল।
” তুরা চোখ খোল।”
তুরা ভয়ে ভয়ে ধীরে ধীরে চোখ খুলল। আর চোখ খোলার সাথে সাথেই রৌদ্রের সেই আবেশ মাখা নেশাগ্রস্ত চাহনি তার সামনে ঝলসে উঠল।
রৌদ্র আলতো করে গোলাপ ফুলটি তুরার নাকের কাছে ধরল, তারপর গলাটা সুরেলা করে টেনে গানের কলি ধরল।
~হো চাঁদেরও আলো দিয়ে মুখখানি দেখবো~
~পেও না গো লজ্জা, খুব কাছে রাখবো~
নিজের অত্যন্ত পছন্দের গানটি রৌদ্রের মুখে শুনে তুরা লজ্জায় যেন মাটির সাথে মিশে যেতে চাইল। তার মুখ রক্তিম হয়ে উঠল। কী আশ্চর্য! সে নিজেও মুগ্ধতা আর লজ্জায় আচ্ছন্ন হয়ে, অজান্তেই দুটি হাত দিয়ে মুখ ঢেকে গানের পরের চরণগুলো গেয়ে উঠল।
~না না এভাবে বলো না গো, করো না বারণ~
~লাজটুকু কেড়ে নিলে হবে যে মরণ~
তুরার মুখে গান শুনে রৌদ্রের মুখে এক চিলতে মিষ্টি হাসি ফুটে উঠল, সে আনন্দের ঝলকে বলল।
“বাহ্! আমার বউ তো দেখি শুধু রূপে নয়, কণ্ঠেও বাজিমাত করেছে! দারুণ গান পারে!”
তুরা লজ্জায় যেন কুঁকড়ে যাওয়ার দশা! সে দ্রুত মুখ থেকে হাত সরিয়ে রৌদ্রের বুকে আলতো করে একটি ধাক্কা দিয়ে লজ্জায় ঘুরে দৌড়ে পালাতে চাইল। কিন্তু মাত্র দুটি কদম এগোতেই রৌদ্র বিদ্যুতের গতিতে তুরার হাত ধরে জোরেশোরে এক টান মারল। সেই তীব্র টানের ধাক্কায় তুরা নিজের দেহের ভার সামলাতে পারল না সোজা এসে রৌদ্রের শক্ত বুকের মধ্যে ঝাঁপিয়ে পড়ল।
তুরা মুহূর্তেই বুঝে গেল যে সে এখন রৌদ্রের কবলে পুরোপুরি আটকা পড়েছে। আর কোনো উপায় নেই! তুরা হঠাৎই মুচকি হেসে রৌদ্রকে জড়িয়ে ধরল। তুরা রৌদ্র কে জড়িয়ে ধরতে দেখে রৌদ্রও আলতো করে তাকে নিবিড়ভাবে জড়িয়ে ধরল। দু’জনেই গভীর ভাবে চোখ বন্ধ করে একে অপরের উষ্ণতা অনুভব করতে লাগল।
বেশ কিছুক্ষণ পর, দুজনের প্রায় কাছ থেকে কেউ খানিকটা শব্দ করে কেশে উঠে বলল।
“উহম! উহম! হাই আল্লাহ! আমি এই কোন গ্রহে এসে পড়লাম! আমি কি পৃথিবীতে আছি, নাকি ভুল করে কারো রোমান্সের রাজ্যে ঢুকে পড়েছি? সাক্ষাৎ লাভ বার্ডস! একটু সরে জায়গা দেবেন, না কি আমি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে হাঁ করে দেখব? বা’লের সিঙ্গেল দের ও শান্তি নাই।”
রানিং…!
Share On:
TAGS: নির্লজ্জ ভালোবাসা, প্রিঁয়ঁসেঁনীঁ
CLICK HERE GO TO OUR HOME PAGE
-
নির্লজ্জ ভালোবাসা পর্ব ৪১
-
নির্লজ্জ ভালোবাসা পর্ব ২৫
-
নির্লজ্জ ভালোবাসা পর্ব ৪২
-
নির্লজ্জ ভালোবাসা পর্ব ৮
-
নির্লজ্জ ভালোবাসা পর্ব ১২
-
নির্লজ্জ ভালোবাসা পর্ব ৬
-
নির্লজ্জ ভালোবাসা পর্ব ৪৩
-
নির্লজ্জ ভালোবাসা পর্ব ৪৭
-
নির্লজ্জ ভালোবাসা পর্ব ৩
-
নির্লজ্জ ভালোবাসা পর্ব ৩০