নির্লজ্জ_ভালোবসা
লেখিকাসুমিচৌধুরী
পর্ব ৩৬ (❌কপি করা নিষিদ্ধ❌)
আয়ানকে নতুন, ঝলমলে খয়েরী রঙের পাঞ্জাবি পরিয়ে, আর তিথিকে ভারী কাজ করা লাল-খয়েরী বেনারসি শাড়িতে জাঁকজমকপূর্ণভাবে সাজানো হয়েছে। এক কথায়, দুজনকেই পুরোপুরি বর-কনের বেশে সজ্জিত করে দিয়েছে সবাই।
আয়ানের সব কিছু বিষের মতো তেতো লাগছে। আয়ান আর তিথিকে পাশাপাশি বসিয়ে রাখা হয়েছে। চারপাশে লোকজন আন্তরিকভাবে তাদের জন্য দোয়া করছে কিন্তু আয়ানের ইচ্ছে করছে সব কিছু লাথি মেরে ছুড়ে ফেলে এই স্থান থেকে উড়ে চলে যেতে। কিন্তু পারছে না। ওই যে, উড়ে যাবে কিভাবে? তার তো ডানাই নেই। আর ঠিক এই মুহূর্তে সে জীবনের সবচেয়ে অসহায় মানুষ।
আয়ান যখন ঘর্মাক্ত শরীরে মুক্তির পথ খুঁজছিল, ঠিক তখনই বিদ্যুৎ চমকের মতো একটা বুদ্ধি এলো মাথায়। আয়ান সাথে সাথে চেয়ার থেকে উঠে, গম্ভীর মুখে চেয়ারম্যানের সামনে এসে সম্মান দেখিয়ে সালাম দিয়ে বলল।
“আসসালামু আলাইকুম আঙ্কেল, কিছু জরুরী কথা বলার ছিলো।”
চেয়ারম্যান বললেন।
“হ্যাঁ, বলো কী বলবে?”
আয়ান গলা শুকিয়ে যাওয়া সত্ত্বেও আমতা আমতা করে বলল।
“না মানে আপনারা তো দীর্ঘক্ষণ আনন্দ করলেন। এখন যদি আমাদের বিদায় নিতে দিতেন, ভালো হতো। আসলে আমার অফিসে ব্যাপক চাপ। একটা ইম্পর্ট্যান্ট মিটিং আছে, ক্যানসেল হলে কোটি টাকার লস হয়ে যাবে।”
আয়ান পুরো ঘটনাটাই সতর্কতার সাথে বানিয়ে বলল, কারণ এ ছাড়া আর কোনো পথ খোলা ছিল না।চেয়ারম্যান আয়ানের কথা শুনে চিন্তিত মুখে বললেন।
“ঠিক আছে, তুমি বলছো তুমি ব্যবসায়ী, আর আমি জানি ব্যবসায়ীরা কেমন চাপে থাকে। যদিও আজকের দিনটা আমরা ছাড়তাম না, তোমার অফিসের ক্ষতির কথা শুনে যেতে দিতে হচ্ছে।”
আয়ানের মুখে অবর্ণনীয় স্বস্তি নিয়ে তৎক্ষণাৎ বিশ্বজয়ী হাসি ফুটল। সে কৃতজ্ঞতায় ঝুকে বলল।
“অনেক ধন্যবাদ আপনাকে!”
এদিকে তিথির তখন চারপাশের কোনো হুঁশ নেই। সে চেয়ারম্যানের নাতনিকে কোলে নিয়ে খিলখিল করে হাসছে, খুব আনন্দে তাদের সাথে দুষ্টুমি করছে।আয়ান তিথির কাছে এগিয়ে এসে, দাঁতে দাঁত চেপে ফিসফিস করে বলল।
“তিথি, উঠ!”
তিথি আয়ানের কথা শুনে অবাক হয়ে সেই আনন্দ থেকে বেরিয়ে এলো এবং ভ্রু কুঁচকে বলল।
“কেন? উঠব কেন?”
আয়ান তিথির কথা শুনে আবারো দাঁতে দাঁত পিষে, কিন্তু নিচু কণ্ঠে বলল।
“বাড়ি যাব।”
তিথি চোখ বড় বড় করে বলল।
“কী বলছো তুমি? সত্যিই যেতে দিবে?”
“হ্যাঁ।”
তিথি সাথে সাথে চেয়ারম্যানের নাতিকে আদরে জড়িয়ে, তার গালে উষ্ণ দুটি চুমু এঁকে বলল।
“বাবু, ভালো থেকো। আসি আমরা।”
বাবুটা চোখ পিটপিট করে অল্পবয়সী প্রেমিকের মতো আয়ানকে বলল।
“এই শুনো, আমার এই মেয়েটাকে খুব ভালো লেগেছে। এখন ও তোমার বউ, কিন্তু বড় হয়ে আমিই ওকে বিয়ে করব। ততদিন ওর দায়িত্ব সব তোমার।”
বাবুটার কথায় সেখানে থাকা সকলে হাসির রোল তুললেন। আয়ান বিরক্ত হলেও না চাইতেও সামান্য হেসে বাবুটার চুল এলোমেলো করে দিয়ে বলল।
“তুমি চাইলে এখনি বিয়ে করতে পারো। আমার কোনো আপত্তি নেই। তবে তুমি ছোট, তাই তোমার ওপর একটু দয়া করলাম। তোমার বোঝাটা আমি নিলাম। চিন্তা করো না, সময় হলেই তোমার ঘাড়ের বোঝাটা তোমার ওপরই ছুড়ে দিয়ে যাব।”
শেষের কথাটুকু আয়ান হিংস্র বিড়বিড় করে আড়চোখে তিথির দিকে তাকিয়ে বলল। তিথি আয়ানের সেই বিষাক্ত বিড়বিড় ভালো করেই বুঝতে পারল। আর তাকে ‘বোঝা’ বলেছে, ভাবতেই তিথির শরীরে আগুন লেগে গেল। যেই কিছু বলতে যাবে, তার আগেই আয়ান সবাইকে চুপ করিয়ে দিয়ে, শান্ত কিন্তু ধারালো কণ্ঠে সবার উদ্দেশ্যে বলল।
“জানি, আমি আপনাদের চোখে এখন খারাপ। আপনারা হয়তো ভাবছেন আমি একটা অপরাধী, একটা নোংরা ছেলে।কিন্তু আমি আপনাদের সন্তানের মতো। তাই সন্তান হয়ে বলছি আমি কোনো খারাপ কাজ করিনি। এমনকি আপনারা যার সাথে আমাকে বিয়ে দিয়েছেন, সে শুধুমাত্র আমার চাচাতো বোন, এর বাইরে কিছু নয়। আমি জানি, আপনারা বিরাট ভুল বুঝে আমাদের এই পথে ঠেলে দিলেন। মানুষ ভুল করে, তবে সেই ভুল যেন আর না হয়। আজকে আমার সাথে যেটা করলেন, এই কাজটা আর কারও সাথে করার আগে অন্তত একটু খোঁজ খবর নিয়ে করিয়েন। কারণ আপনাদের এই ভুলের খেসারত!”
আয়ান এবার তিক্ত দৃষ্টিতে তিথির দিকে তাকিয়ে বলল।
“দুটি মানুষের জীবন নষ্ট হয়ে যেতে পারে।”
আয়ান পুনরায় সকলের দিকে তাকিয়ে ঠান্ডা গলায় বলল।
“আপনাদের প্রতি আমার কোনো রাগ নেই। আপনারা আমার মা-বাবার মতো সম্মানিত, তাই আমিও আপনাদের সম্মান করি। আজ আসি, এবং সবাই ভালো থাকবেন। মনে কোনো কষ্ট দিয়ে থাকলে মাফ করে দিবেন আসি আসসালামু আলাইকুম ।”
কথাটা বলেই আয়ান ভিড়ের মাঝখানে পিছন ফিরে না তাকিয়ে পথ ধরল। তিথিও ক্রোধে ফুলতে ফুলতে সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে আয়ানের পিছু নিল।
আয়ান আর তিথি গাড়ির কাছে চলে এলো। তিথি সাথে সাথে যেন মুক্তি পেয়েছে এইভাবে গাড়িতে উঠে বসল। যখন আয়ান উঠতে যাবে, ঠিক তখনই পিছন থেকে চেয়ারম্যানের ভারী কণ্ঠস্বরে ডাকল। আয়ান বিরক্তি চেপে গাড়িতে না উঠে চেয়ারম্যানের দিকে একটু এগিয়ে গেল।
চেয়ারম্যান আয়ানের সামনে এসে আয়ানের ফোনটা হাতে দিয়ে বললেন।
“তোমার ফোন রেখে এসেছিলে? আর বাবা, আমরা জানি না কোনো অপরাধ করেছি কি না। তবে তোমার কথা আর আর্তনাদ শুনে মনে হচ্ছে তুমি সত্যি কোনো অন্যায় করোনি।”
চেয়ারম্যান গভীরভাবে শ্বাস নিয়ে বললেন।
“তবে আমিও যে বাধ্য, বাবা। আসলে আমরা সবাই বাধ্য। কারণ আমাদের গ্রামের নিয়ম এইটাই রাতের বেলা কোনো মেয়ে বা ছেলেকে এক সাথে পেলে কথা না বাড়িয়ে সোজা বিয়ে দিয়ে দেওয়া। সেটা এলাকার মানুষই হোক বা অন্য এলাকার মানুষ হোক। আমরা আমাদের শত বছরের কাজ করেছি, বাবা। তুমি একটুও মনে কষ্ট নিও না।”
চেয়ারম্যান স্নেহের ভঙ্গিতে আয়ানের কাঁধে জোর দিয়ে হাত রেখে বললেন।
“শুনো, বিয়ে জীবনে একবারই হয় তোমাদের ও হয়ে গেছে,এখন চাইলেও আর এই সত্যিটা লুকাতে পারবে না। আমি জানি না তোমাদের জীবন কেমন হবে। কিন্তু আমি একজন অভিভাবক হিসেবে তোমাকে বলছি, মেয়েটাকে কখনো ছেড়ো না। অনেক ভদ্র আর নিস্পাপ, মিষ্টি দেখতে মেয়েটা। যা আজকাল এমন মেয়ে খুঁজে পাওয়াই দায়। হয়তো তোমাদের কিছুদিন মানতে সমস্যা হবে, তবে চিন্তা করো না, সময়ই সব ভুলিয়ে দেবে, ধীরে ধীরে ঠিক হয়ে যাবে, কেমন? আমি তোমাদের জন্য মন থেকে দোয়া করি, তোমরা সুখী হও। যদি কখনো তোমাদের মিল হয় সেইদিন তোমরা দুজন এই গ্রামে একবার এসো। আমি সেইদিন মন খোলে তোমাদের দুজনকে দেখতে চায়।”
আয়ান চেয়ারম্যানের কথায় শান্তভাবে মাথা দুলালো। চেয়ারম্যান আয়ানের কাঁধে হালকা চাপড় দিয়ে একরাশ আশা নিয়ে ধীরে ধীরে সেখান থেকে চলে গেলেন।আয়ানও আর এক মুহূর্তও না দাঁড়িয়ে তাড়াতাড়ি গাড়িতে উঠল। সে সাথে সাথেই গাড়ির ইঞ্জিন চালু করে দ্রুত সেই স্থান ত্যাগ করল এবং গাড়ি শহরের দিকে চলতে লাগল।
তিথির সেই নিথর দেহটিকে মাটি দেওয়া হয়ে গেছে।
হল ঘরে সবাই গভীর হতাশায় চুপচাপ বসে আছে। শিহাব আর রৌদ্র পাশাপাশি দাঁড়িয়ে আছে, কিন্তু তাদের মধ্যে যেন অদৃশ্য দেয়াল।কেউ এখন পর্যন্ত কোনো কথা বলেনি।
তুরা আশিক খানের কাঁধে মাথা দিয়ে জড়িয়ে ধরে আর্তনাদ করতে করতে বলছে।
“আমার বোন! আল্লাহ কেন আমার বোনটাকে নিয়ে গেল? ওইটুকু মেয়েটার ওপর এত বড় নিষ্ঠুর মৃত্যু কিভাবে দিতে পারলো? আমার বোন তো কখনো কারও ক্ষতি করেনি, তাহলে আমার বোনের সাথে কেন এমন হলো? কেন? কেন?”
আশিক খানও গুমরে কান্না করছেন। তাদের বাবা-মেয়ের তীব্র কষ্টের মাঝে আর কেউ ঢুকতে চাইছে না। সবাই ভাবছে, এই কান্না হয়তো সামান্য হলেও কষ্ট কমাবে তাই কেউ আর শান্ত্বনা দিচ্ছেন না। কিন্তু সবাই চুপচাপ চোখের পানি ফেলছে।
রৌদ্র লম্বা দীর্ঘশ্বাস ফেলল। হঠাৎ রৌদ্রের চোখ গেল শিহাবের দিকে। দেখল, শিহাবও ফ্যালফ্যাল করে তার দিকেই তাকিয়ে আছে। রৌদ্র এবার আর কোনো দ্বিধা না রেখে শিহাবের দিকে এগিয়ে এসে শান্ত কণ্ঠে বলল।
“কেমন আছিস?”
শিহাব সাথে সাথে শুষ্ক উত্তর দিল।
“যেমনটা থাকার কথা। তো, তুই কেমন আছিস?”
রৌদ্র সংক্ষেপে, চোখে চোখ রেখে বলল।
“ভালো।”
শিহাব কোনো সংকোচ, কোনো দ্বিধা না রেখে, তীব্র সন্দেহের দৃষ্টিতে রৌদ্রের চোখের দিকে তাকিয়ে ফিসফিস করে জিজ্ঞেস করল।
“তুরা এতদিন তোর কাছে ছিল?”
রৌদ্রের চোখ সামান্যও নড়ল না। সে সোজা-সাপ্টা উত্তর দিল।
“হুম।”
রৌদ্রের এই এক অক্ষর উত্তর শিহাবের বুকে যেন একটা গরম ছোরা আমূল গেঁথে দিল। তার মানে, তার সব সন্দেহ সত্যি! তুরা পালিয়ে রৌদ্রের কাছেই গিয়েছিল! এই বিস্ফোরক সত্য মাথায় আসতেই শিহাবের পুরোনো ভয়াল স্মৃতিগুলো ফিরে এলো। হঠাৎ তার আরশির সেই গভীর, সান্ত্বনার কথাগুলো মনে পড়ল ‘ভালোবাসার মানুষ খুশি থাকলে আমি এতেই খুশি এর থেকে বেশি কিছু চাই না আমি।
তার মানে আরশি তাকে প্রস্তুত করছিল! তুরা যে রৌদ্রের সাথে ছিল, এই বিধ্বংসী সত্যটা আরশি জানে। শিহাবের মাথা যেন পাগলের মতো ঘুরছে পুরো পৃথিবীটা এক অসহনীয় বিশ্বাসঘাতকতার রহস্য মনে হলো।রৌদ্র শিহাবের বিবর্ণ মুখ ও থমকে যাওয়া শরীর দেখে পরিস্থিতি বুঝে নিল। সে শিহাবের কাঁধে হাত রেখে শান্ত কিন্তু কঠোর স্বরে বলল।
“আমার কিছু জরুরী কথা আছে তোর সাথে। আমি বাইরে যাচ্ছি। চল, তুইও আয়।”
কথাটা বলেই রৌদ্র দ্রুত হল ঘর থেকে বের হয়ে গেল। শিহাব মাথায় অসহ্য চাপ নিয়ে, নিজের ভারসাম্য হারিয়ে যেন ধীরে ধীরে রৌদ্রের পিছন পিছন বের হলো।
রৌদ্র আর শিহাব এসে দাঁড়াল নদীর একেবারে পারে, এক ফাঁকা, নিরিবিলি পরিবেশে। দুজনেই ঠান্ডা হাওয়ায় দুই হাত বুকে জোড় করে, নদীর বিশাল জলরাশির দিকে তাকিয়ে আছে।
দীর্ঘক্ষণ অসহনীয় নীরবতা বিরাজ করল। অবশেষে সেই নীরবতা ভেঙে শিহাব ঠান্ডা, কম্পিত কণ্ঠে আবারো রৌদ্রকে প্রশ্ন করল।
“বিয়ে করেছিস তুরাকে?”
রৌদ্র শিহাবের কাছে এই তীব্র সত্যটা লুকাতে চাইল না। সে জানে, পরিবারের কাছে এই মুহূর্তে সে তা গোপন রাখতে চায় কারণ তিথির শোকে তাদের মনমেজাজ এমনিতেই ভালো নেই এই ঘটনা শুনে কে কেমন প্রতিক্রিয়া হবে, তা রৌদ্রের জানা নেই। কিন্তু শিহাবের কাছে আর লুকানো অর্থহীন। রৌদ্র একটি গভীর দীর্ঘশ্বাস নিয়ে কেবল বলল।
“হুম।”
শিহাবের মাথায় যেন আস্ত একটা পাহাড় ভেঙে পড়ল। আজ তার ভালোবাসার মানুষ তুরা চিরদিনের জন্য অন্যজনের হয়ে গেছে। সে এখন শুধু একজন মেয়ে নয় সে কারো স্ত্রী। কথাটা ভাবতেই শিহাবের ভেতরটা তীব্র যন্ত্রণায় মুচড়ে উঠলো।
রৌদ্র এবার চোখ নদীর দিক থেকে সরিয়ে শিহাবের পাথরের মতো স্থির মুখের দিকে ঘুরে দাঁড়ালো। শিহাব তখনো নিচের দিকে তাকিয়ে আছে। রৌদ্র এবার নরম সুরে নয়, বরং বেদনার চাপ নিয়ে শিহাবকে বলল।
“আচ্ছা, শিহাব, আমার বোনটা কি খারাপ? আমার বোনটাকে কি মেনে নেওয়া যায় না।”
রৌদ্রের এমন কথায় শিহাব ধীরে ধীরে চোখ তুলে তাকাল। রৌদ্র আবারো বলল।
“দেখ, আমি জানি তোর আর আরশির বিয়েটা নিয়তির চরম পরিহাস। কিন্তু শিহাব, আমার মুখের দিকে তাকা আমার বোনটা একেবারে নিষ্পাপ। আমি তার ভাই বলে বলছি না, তুইও তার সাথে আছিস, এতদিনে নিশ্চয়ই বুঝেছিস আরশি কেমন।আমি জানি শিহাব, তুই এখনো তুরাকে তিল তিল করে ভালোবাসিস। ভালোবাসার মানুষকে এভাবে অন্যের হতে দেখার জ্বলন্ত কষ্ট আমি বুঝি। কিন্তু শিহাব, যেটা ভাগ্যে নেই, সেটা হাজার চেষ্টা করলেও পাওয়া যায় না।আমি কিন্তু তোর আর তুরার মাঝের দূরত্ব থেকে স্বেচ্ছায় সরে গিয়েছিলাম আমি বিপদের কারণ হতে চাইনি। কিন্তু বিধাতা সেদিন হাসছিল! সেই তুরাই আমাকে ভালোবেসে পাওয়ার জন্য পাগলের মতো পাসপোর্ট-ভিসা ছাড়া সুইজারল্যান্ডে আমার দরজায় গিয়ে হাজির হলো! বিশ্বাস কর, প্রথমে আমি ভয়ে জমে গিয়েছিলাম, কিন্তু সেইটাই অকাট্য সত্য ছিল। আমি আর কী করতাম বল? আমিও যে তুরাকে আমার সর্বস্ব দিয়ে ভালোবাসি। তাই এক মুহূর্তও দেরি না করে, পরিবারের কাউকে কিছু না জানিয়ে, আমি ওকে আমার জীবনের অংশ করে নিলাম।”
রৌদ্র একটু দম নিয়ে, শিহাবের কাঁধ দুটো শক্ত করে ধরে বলল।
“কিন্তু শিহাব, আমার হাতজোড় করা অনুরোধ শোন। আরশি খুবই সরল মনের মেয়ে। সে জীবনে কখনো অন্য সম্পর্কে জড়ায়নি তুই তার জীবনে পবিত্রতম প্রথম পুরুষ। তাই আমি তোর বন্ধুর থেকেও বেশি, একজন ভাই হয়ে বলছি আরশিকে কষ্ট দিস না, কখনও ছেড়ে যাস না। জানি, তোর ভেতরের আগুন নেভাতে সময় লাগবে, কিন্তু আমার বোনের ওপর একবার ভরসা রাখ। আরশি তোর এই ভেঙে পড়া জীবনটাকে আবারো ভালোবাসার রঙে ভরে দিয়ে সুন্দর করে সাজিয়ে দেবে, তুই দেখিস। আমি তোর কাছে আর কিছুই চাই না, শুধু আমার বোনটার জন্য এই ভিক্ষাটা চাইছি আরশিকে তোর জীবন থেকে সরিয়ে দিস না।”
চলবে….!
Share On:
TAGS: নির্লজ্জ ভালোবাসা, প্রিঁয়ঁসেঁনীঁ
CLICK HERE GO TO OUR HOME PAGE
-
নির্লজ্জ ভালোবাসা পর্ব ২৯
-
নির্লজ্জ ভালোবাসা পর্ব ৫৪
-
নির্লজ্জ ভালোবাসা পর্ব ৪
-
নির্লজ্জ ভালোবাসা পর্ব ৩০
-
নির্লজ্জ ভালোবাসা পর্ব ৯
-
নির্লজ্জ ভালোবাসা পর্ব ১৩
-
নির্লজ্জ ভালোবাসা পর্ব ২২
-
নির্লজ্জ ভালোবাসা পর্ব ২৩
-
নির্লজ্জ ভালোবাসা পর্ব ৩৫
-
নির্লজ্জ ভালোবাসা পর্ব ২৬