তাজমহল #দ্বিতীয়_খন্ড
পর্ব_২২
প্রিমাফারনাজচৌধুরী
শাইনার বোনেরা বেড়াতে এসেছে। শাইনাকে বলছে কিছুদিন তাদের সাথে বেড়াতে যেতে। শাইনা তা শুনে হ্যাঁ না কিছু বললো না। শাহিদা বেগম বললেন,”ওকে এখন কিছু বলিস না। ওর যা ইচ্ছে তাই তাই করুক। কেউ কিচ্ছু বলিস না।”
বেলা গড়াতেই বাবুকে গোসল করিয়ে দিলেন শাহিদা বেগম। বেশি পানি দিয়ে ফেলছিল মাথার উপর। শাইনা এসে বাবুকে কোলে নিয়ে গা মুছিয়ে দিতে দিতে বলল,
“এত পানি দিলে ও বাঁচবে আম্মা? না পারলে কেন করতে যাও? আমি তো বলেছি কিছুক্ষণ পর আমি ওকে গোসল করিয়ে দেব। ঠান্ডা লেগে গেলে তখন আবার বলো দোষ আমার।”
বলেই মেয়েকে তোয়ালেতে জড়িয়ে সে ভেতরে চলে গেল। শাহিদা বেগম তার যাওয়ার পথে চেয়ে বললেন,
“বেলা পড়ে যাচ্ছে আর সে নাকি কখন বাচ্চাটাকে গোসল করাবে। আজকের পর থেকে তোর মেয়ের কোনো কাজ আমি করবো না। তুই করবি সব। বেশি করছি বলে মাথায় উঠে যাচ্ছে। যা না শ্বশুরবাড়িতে চলে যা। বিয়ে দিয়েও আপদ নামেনি। কাজও করবো, হম্বিতম্বিও সইবো। পোড়া কপাল আমার।”
সাবরিনা বলল,”আম্মা এইসব কি বলছেন?”
শারমিলা বলে উঠলো,”পাশের বাড়িতে মেয়ে বিয়ে দিয়েছ মেয়েকে দেখভাল করতে পারবে বলে। এখন এত বেজার হচ্ছো কেন?”
“হবো না? জামাইটা ফোন করলে ফোন ধরে না। বলে কিনা দেশে এলে কথা বলবে। এসব শুনে ওর শ্বশুর শ্বাশুড়ি রেগে গেছে। বলছে, ছেলেটা দেশে গেছে ছয় সাত মাস হয়নি আবার নাকি দেশে আসার কথা বলছে। টাকাপয়সা একটাও থাকবে না এই মেয়ের জন্য। মাসে মাসে টাকা পাঠাচ্ছে। সেগুলো বাপের বাড়িতে বসে বসে খাচ্ছে। তোর বোন বুকে হাত দিয়ে বলতে পারবে এই সংসারে ওর কাছ থেকে একটা টাকাও আমি খরচ করেছি? আমার ছেলেরা যা খাওয়াচ্ছে তাই খাচ্ছি। তাদের বোনকেও তাই খাওয়াচ্ছে। ওর কাছ থেকে সেদিন পাঁচশো টাকা ধার নিলাম পরদিনই খুঁজে নিয়ে নিল। এত কথা সইবো কেন ওই শ্বাশুড়ির মুখে?”
“তুমি বড়োআম্মাকে বলতো পারোনাই ওর টাকা তোমরা নাও না?”
“ওরা বিশ্বাস করবে কেন? তোর বোন তো কিপ্টার কিপ্টা। জামাইয়ের টাকা একটাও বাড়তি কোথাও খরচ করে না। বলে আমাকে হিসেব দিতে হবে।”
“কেন করে না সেটা তো বুঝতেই পারছো। বড়আম্মা এরপরেও এমন কিছু বললে মুখের উপর বলে দেবে ও তোমার সংসারে এক টাকাও বাজার খরচ দেয় না। তাজদার সিদ্দিকীর টাকা তার বউ-বাচ্চার ঔষধের পেছনেই খরচ হচ্ছে।”
শাহিদা বেগম বলল,”আমি ওই ছেলেকে আর কিছু বলতে পারবো না। লজ্জায় আমার মাথা কাটা যাচ্ছে। কত করে বলছে আপনাদের মেয়েকে বোঝান। আমি ওকে কোনোমতেই বোঝাতে পারিনা। ছেলেটা ওখানে চাকরি করবে নাকি ওকে নিয়ে টেনশনে থাকবে? ছেলেটাকে আরও কি কি বলেছে আল্লাহ মালুম। ওই মেয়ে কখন এত বজ্জাত হলো আমি তো বুঝলাম না।”
শাবরিন এতক্ষণ চুপচাপ কাপড় মেলে দিচ্ছিল পুকুরপাড়ের রশিতে। সে এবার মুখ খুললো। বলল,
“তোমাদের ছোটো জামাইয়ের কিন্তু পয়সার অভাব নেই আম্মা। দুইমাস অন্তর দেশে আসার তাওফিক দিয়েছে আল্লাহ। তোমার মেয়েও সেটা জানে। তাই বলতেছে দেশে আসার জন্য। ওকে ধমকে কিছু হবে না। অনেক তো ধমকেছ। কাজ হলো? তুমি বড়আম্মার কথা কানে নিওনা। বড়োআম্মা আর বড়োআব্বা চাইছে ছেলের দুটো পয়সা জমুক। ব্যাংক ব্যালেন্স ভরুক। ওরা চাইবেই ছেলে যাতে বউয়ের কথায় দেশে না আসে।”
শারমিলা বলল,”কথাটা ঠিক। বিয়ের পর তো পাঁচ মাস গেল হাসপাতালে। ওদের সংসার হলো কই? রায়হান ভাই বিয়ের দুই বছর বউ নিয়ে ঢাকায় ওদের ফ্ল্যাটে ছিল। বড়ো আম্মা ছোটোটাকে একদম নিজের কাছে বেঁধে রাখছে।”
“তোর বোনকে বিদেশ নিয়ে যেতে চায়নি? ও তখন যায়নি কেন?”
“কেন যায়নি সেটা তুমি জানো না? সমাধানের কথা না বলে উল্টাপাল্টা কথা বললে কোনোকিছু সমাধান হবে আম্মা?”
শাহিদা বেগম আর কিছু বললেন না।
দুপুরে খেয়েদেয়ে শাহিদা বেগম একটু ভাতঘুম দিচ্ছিলেন। তখনই সুদূর লন্ডন থেকে ফোন এল। তিনি ধড়ফড়িয়ে শোয়া থেকে উঠে বসলেন। শাওন নাম্বার চিনিয়ে দিয়েছিল। নাম্বারটা দেখে বুক ধড়ফড় করে উঠলো।
"হ্যালো! ওয়ালাইকুমুস সালাম। জি বাবা শুনছি বলো।"
তাজদার জানতে চাইলো শাইনা কোথায়, বাবু কোথায়, উনাকে সন্তোষজনক কিছু বলেছে কিনা। শাহিদা বেগম বললেন,
"মা মেয়ে এখন ঘুম। ও আমাকে এখনো কিছু বলেনি বাবা। আমি তোমাকে কি বলবো বুঝতে পারছিনা। ওর রোগ আমি ধরতে পারছিনা। ও এমন মেয়ে তো ছিল না। কোনোদিন আমার হ্যাঁ'র উপরে না বলেনি। পাতে যা দিতাম তাই খেয়ে উঠে যেত। ওর বাপ ভাই যেটা পছন্দ করে আনতো ওটাই পরতো। এত নখরামি ছকরামি কখনো করেনি।"
তাজদার গম্ভীর হয়ে সব শুনে বলল,"আচ্ছা, ও যখন যেতে চাইছেনা তখন যাওয়ার দরকার নেই। আমি আম্মুকে বুঝিয়ে বলবো। বাবুকে একটু দেখে রাখবেন। ওর মেন্টাল কন্ডিশন ঠিক নেই এখন। আমি দেখছি কিছু ব্যবস্থা করতে পারি কিনা।"
শাহিদা বেগম সংকোচের সাথে থেমে থেমে জানতে চাইলেন,"তো বাবা তোমার ফোন আর একবারও ধরেনি?"
"ধরেছে। রিসিভ করে বাবুর সাথে কথা বলতে দিয়েছে।"
"তুমি একটু চেষ্টা করো বাবা। তোমার আম্মা আব্বার মাথা গরম। তারা তো পরের মেয়ের সবটা বুঝবে না। আমি আর কি বলবো? নিজের মেয়েকে নিজেই তো বুঝতে পারছিনা। এখন আমি মারধর করলেই তো...
"আপনাকে কিছু করতে হবে না। এখন যা ইচ্ছে তাই করুক। বাইরে যেতে চাইলে বাধা দিয়েন না।
আমি দেখছি বাকিটা। কিছু একটা তো করতেই হবে। কিছুদিন ওখানে থাকুক। আচ্ছা ওখানে আপনাদের সমস্যা হচ্ছে না তো?"
"না না বাবা কি বলছো। সমস্যা হবে কেন? মেয়ে নাতনি দুটোই তো আমাদের।"
"একটা কথা জানার ছিল।"
"কী কথা বাবা?"
"বাবুর খরচাপাতি ও দিচ্ছে?"
"হ্যাঁ হ্যাঁ দিচ্ছে। আমাদের কিছু করতে হচ্ছে না।"
একটু থেমেই সে শাহিদা বেগমকে আবারও জিজ্ঞেস করলো,
"বাজার খরচ দেয় না?"
যদিও বাজার খরচ দেয়ার কথাটা সে শাইনাকে নিজ থেকে বলেনি সে কিছু মনে করবে ভেবে। ভাববে তার বাপ ভাইয়ের এত অভাব তার খাওয়ার খরচ দিতে হবে? তাজদার সিদ্দিকী কি ভাবছে তাদের?
কিন্তু এতমাস সে থাকছে। ভালোমন্দ খাবার, ফলমূল খেতে হচ্ছে। বাজার খরচ কিছু তো তার দেয়া উচিত। ও যদি না দেয় তাহলে সে এদিক থেকে পাঠিয়ে দেবে তাই জানতে চাওয়া।
শাহিদা বেগম মিথ্যে বললেন,"দেয় দেয়, বাজার খরচও দেয়।
তাজদার উনার বলার ধরণ দেখে সত্যিটা বুঝে গিয়েছে যদিও। তবুও বলল,"আচ্ছা।"
আর কিছুক্ষণ কথাবার্তা বলে সে ফোনটা রেখে দিল।
গত সপ্তাহে শাইনা তাকে ব্যাংকের মিনি স্ট্যাটমেন্ট সেন্ড করেছিল। কোথায় কত টাকা গিয়েছে তা হিসেব করে নোট করে দিয়েছিল। এটাও বলেছিল সে তিতলিকে নিয়ে পার্লারে গিয়েছিল মেঝ আপু তাকে দেখে বারবার করে বিরক্তি প্রকাশ করায়।
সেখানে কত টাকা, বাবুর পেছনে কতটাকা গিয়েছে সবকিছুর হিসেব দিয়েছে। অন্যান্য মাসের চাইতে সেই মাসে খরচ কেন বেশি হয়েছে তার হিসেবটাও দিয়েছে।
তাজদার খানিকটা অবাক হয়েছিল শুরুতেই।
সে এটা জানতো যে শাইনা তার পাঠানো টাকা দিয়ে বিলাসিতা করবে না। কারণ এতগুলো মাস ধরে সে টাকা পাঠাচ্ছে। শাইনা এই টাকা থেকে নিজের জন্য একটা ড্রেস অব্দি পছন্দ করে কেনেনি। না একটা চুলের ক্লিপ।
তাই তো সে তাসনুভাকে বলেছে নিউ মমের জন্য যত স্কিন কেয়ার প্রডাক্ট লাগে সব কিনে দিতে।
কিন্তু এভাবে পার্লারে যাওয়ার খরচটা হিসেব দিয়ে বসবে এটাও সে ভাবেনি। রাগও হয়েছিল ভীষণ।
পরক্ষণেই তার মনে হলো সে বোধহয় ওইটুকু অধিকারবোধ, এবং টাকাগুলো তার ভাবার অবকাশটুকু শাইনাকে দেয়নি যার কারণে শাইনার মনে হতো টাকাগুলো তার। তার ইনকামের একটা অংশ সে স্ত্রী হিসেবে ডিজার্ভ করে। এটা তার হক।
শুধু একটা নিছক দায়িত্ববোধ নয়।
তার শাইনাকে ফিল করানো উচিত ছিল এই টাকাগুলো একান্তই তার। সে ইচ্ছে মতো খরচ করলেও তাজদার সিদ্দিকী তাকে কিছু বলবে না। কৈফিয়ত চাইবে না। তার এই কুণ্ঠাবোধ দূর করতে পারেনি দেখে তার নিজের কাছেই লজ্জাবোধ করছিলো তখন।
~~~~
শাইনা প্রায় দেড়মাস পর জায়নামাজ বিছিয়েছে আজ। দাদীমা বললেন,”দেখ বোন, তোর মনের শান্তি একমাত্র আল্লাহ দেবেন। নামাজ কালাম পড়। দেখবি মনে শান্তি লাগবে।”
দেড়মাস আগে সে ঠিকঠাক ভাবে নামাজ পড়তে পারছিল না। সূরা মুখ দিয়ে আসছিলই না। নামাজের মধ্যে বারবার অমনোযোগী হয়ে পড়ছিল। যাবতীয় সব ভুলভাল চিন্তাভাবনা মাথায় কিলবিল করছিল নামাজে দাঁড়ালে। জোর করেও মুখে সূরা আসছিল না। এলেও মনে হচ্ছিল ভুলভাল পড়ছে।
আজ দেড়মাস পরও তার অবস্থার উন্নতি হয়নি দেখে সে নিজেই জায়নামাজে বসে কান্নাকাটি জুড়ে দিল। তার অন্তর এতটা কলুষিত কখনো ছিল না। বরং তার অন্তর কতটা প্রশান্তির, কতটা ঐশ্বর্যতা ছিল সেখানে তা উপরওয়ালা ছাড়া কেউ জানে না। ধন-দৌলত প্রাচুর্যের চাইতেও বেশি প্রশান্তি ছিল সেখানে। কারো নুন খেলে গুণ গাইতে হয় এটা সে ছোটো থেকেই জানে, বিশ্বাস করে, পালনও করতো।
এতটা অকৃতজ্ঞ তো সে কোনোদিন ছিল না। কারো কাছ থেকে যত্ন-আত্তি, ভালোবাসা, মমতা, আস্থা, নিঃস্বার্থ সঙ্গ পাওয়ার পর তাকে খালি হাতে ফিরিয়ে দেওয়ার যে অপরাধবোধ তাকে ভেতর থেকে গিলে খাচ্ছে সেই দুঃখেই সে আজ সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত।
সে নিজেকে ফিরে পেতে চায় যার অন্তরে দয়া, মায়া, ভালোবাসার কোনো শূন্যতা কোনোদিনই ছিল না। নিজের কাছে সে নিজেই মরিয়া হয়ে ফিরতে চায়।
যদিও সে জানে হারিয়ে যাওয়া মানুষকে খুঁজে পাওয়া যত কঠিন, নিজের হারিয়ে যাওয়া সত্ত্বাকে ফিরিয়ে আনা তার থেকেও কঠিন। তবুও সে ফিরতে চায়।
বিয়ের আগে যে সুন্দর সংসারের স্বপ্নে সে বিভোর থাকত, সেই স্বপ্নের সংসার সাজানোর জন্য সে অন্তর থেকে সমস্ত প্রতিশোধপরায়ণতা, ক্ষোভ, বিদ্বেষ ও রাগ দূর করতে চায়।
যে অন্তর কলুষিত,
ভালোবাসা সেখানে দ্বিধাগ্রস্ত।
যে অন্তর কলুষিত মুক্ত,
মায়া-মহব্বত সেখানে স্বাধীন।
~~~
বিছানায় বসে মেয়ের গায়ে বেবি পাউডার মেখে শাইনার তার গায়ে নাক ডুবিয়ে দিয়ে শ্বাস টানলো। এই ঘ্রাণটা তার এত প্রিয়। ইচ্ছে করে সারাদিন ডুবে থাকতে। সে তুলতুলে গায়ে অসংখ্য চুমু খেয়ে তারপর কপালে গালে আদর করে একটা ফতুয়া পরিয়ে দিল। তারপর শাওনকে ডাক দিল।
“ভাইয়া আমার ময়নাকে একটু বাইরে নিয়ে যাও। তিতলিকে পেলে ওর কোলে দিয়ে দিও। ময়না একটু ঘুরবে। তাই না মা?”
হাত পা নেড়ে সে মায়ের কথাকে সমর্থন জানালো।
হঠাৎই শাইনার খেয়াল হলে তিতলি তেমন আসছে না কয়েকদিন ধরে। হ্যাঁ অনেক কম এসেছে।
পরশু এসেছিল। বাবুকে নিয়ে সোজা চলে গিয়েছিল। কাল এসেছিল। রান্নাঘর থেকে বাবুকে নিয়ে চলে গিয়েছিল। তার সাথে কোনোরকম কথা বলেনি। দেখাও করেনি। আগের মতো বসে গল্পসল্প করে না। হুট করে ওর কি হলো?
হাত পা একসাথে নেড়ে তাজনা তখন খেলছে। শাওন এসে বলল,”তোর ময়না আমার শার্ট ভিজিয়ে দিলে মুশকিলে পড়বো। মেঝোর কাছ থেকে নিয়েছি শার্টটা। কিছু হলেই আমাকে পিটিয়ে ডালিম গাছের সাথে ঝুলিয়ে দেবে।”
শাইনা বলল,”আমার মেয়েকে অপমান করবে না। ও যখন তখন কোল ভিজায় না। না মা?”
মেয়ে হাসছে দেখে শাইনা বলল,”দেখো দেখো কেমন করে হাসছে।”
শাওনের কোলে দিয়ে দিল সে। শাওন তাকে নিয়ে যেতে যেতে বলল,
“মামা বড়ো হয়ে যা দ্রুত। মামুর জন্য বউ খোঁজা লাগবে। বুঝলি? আরেহ ভাই এই মেয়ে কি বুঝে এত হাসে?”
তাজনাহাকে পাড়াপড়শিরা সবাই আদর করে। সে এই কোল, ওই কোলে ঘুরে বেড়ায় সারাদিন। খিদে পেলে তখন কাঁদে। সবাই বলাবলি করে তাজের মেয়েটা মিশুক হবে। সবার কোলেই থাকে।
শাওন তাকে নিয়ে ঘুরে বেড়ালো অনেকক্ষণ। আছরের পরপর এনে দিল। শাইনা তখন আছরের নামাজটা সবেমাত্র পড়ে উঠেছে। শাওনের ডাকে দরজার কাছাকাছি গেল। বাবুকে কোলে নিয়ে বুকের সাথে জড়িয়ে মাথায় টুপটাপ কয়েকটা চুমু খেয়ে বলল,”অনেক বেড়ানো হয়েছে। এবার আমার আম্মা খাবে। খুব খিদে পেয়েছে? প্যাম্পাস কি ভিজেছে? দেখি দেখি। না ভিজেনি।”
মেয়ের সাথে কথা বলতে বলতে নিজের ঘরের দিকে চলে গেল সে। দরজা বন্ধ করে তাজনাকে খাওয়াচ্ছিল ঠিক তখুনি ঘরের বাইরে শাহিদা বেগম, আফসার সাহেব, আশরাফ দুলাভাই সবার গলার আওয়াজ শোনা গেল। কি বলাবলি করছে তা যদিও শোনা যাচ্ছে না।
মেয়ে ঘুমিয়ে পড়ায় শাইনার মাগরিবের নামাজ আদায় করতে সুবিধা হয়েছে। সে মাগরিবের নামাজ আদায় করে মেয়ের মাথায় একটা ফুঁ দিল দোয়া পড়ে। তারপর মনে হলো তার কিছু খাওয়া উচিত।
তখন ঘর থেকে বের হলো। রান্নাঘরে শাহিদা বেগম নেই। শুধু আপা আর ভাবি, দাদী। যেহেতু বাড়িতে আজ সবাই আছে সেহেতু শারমিলা কিছু পাকোড়া, আর দুই ধরনের নাশতা বানিয়েছিল। সে কয়েকটা পাকোড়া আর কিছু নাশতা নিয়ে, একমগ চা নিয়ে ঘরে চলে যাচ্ছিল ঠিক তখুনি সাবরিনা ডাকল,
“শাইনা?”
“হুম।”
“তাজনার আব্বু এসেছে।”
তৌসিফের কণ্ঠস্বর শোনা যাচ্ছে তার ঘরে। দাদীমা মৃদুস্বরে বললেন,”ওর চাচা এসেছে ওকে নিয়ে যাওয়ার জন্য। একটা সুন্দর দেখে ফ্রক পরিয়ে দে। বাপের সাথে প্রথম মোলাকাত।”
শাইনার কানে তখনো বাজছে সাবরিনার বলা কথাটা।
“তাজনার আব্বু এসেছে।”
চলমান……
ফাটাফাটি হবে আগামী পর্বে🫣
Share On:
TAGS: তাজমহল সিজন ২, প্রিমা ফারনাজ চৌধুরী
CLICK HERE GO TO OUR HOME PAGE
-
তাজমহল সিজন ২ পর্ব ৫
-
তাজমহল সিজন ২ পর্ব ১৪
-
তাজমহল সিজন ২ পর্ব ২০
-
তাজমহল সিজন ২ পর্ব ১০
-
তাজমহল সিজন ২ পর্ব ৯
-
তাজমহল সিজন ২ পর্ব ৭+৮
-
তাজমহল সিজন ২ পর্ব ১১
-
তাজমহল সিজন ২ পর্ব ৩
-
তাজমহল সিজন ২ পর্ব ১৫+১৬
-
তাজমহল সিজন ২ পর্ব ৬