Dark_Desire
পর্ব —৭
ডার্ক_ডিজায়ার
দূর্বা_এহসান
রোদ তখন আরো তুখোড় হয়েছে। হাসপাতালের বারান্দায় আলোটা যেন ছেঁকে আসছে ফিকে সোনালী আভায়। করিডোরে নার্সদের দ্রুত পা ফেলার শব্দ।দূরে স্ট্রেচার গড়ানোর হালকা ধাতব আওয়াজ। তরু ধীরে ধীরে হাঁটছে, পায়ের নিচে টাইলসে নিজের পদধ্বনিই শুধু শোনা যাচ্ছে।
তার মাথা ভার লাগছে। কানে যেন একটা টান টান শব্দ বাজছে অবিরত।ওর বুকের ভেতর কিছু একটা চেপে বসেছে, ভারি, নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে।দরজা ঠেলে বাইরে এলো তরু। মৃন্ময় দাঁড়িয়ে।চোখে চশমা, শার্টের বোতাম খোলা একটুখানি। তরুর নিজেকে দুর্বল লাগছে।
” আমার বাসায় যাবো”
ধীর গলায় বলো তরু মৃন্ময়ের উদ্দেশ্যে। হ্যাঁ সূচক মাথা নাড়ালো মৃন্ময়।এগিয়ে এসে তরুর এক হাত ধরলো।তরু বাধা দিল না।
গাড়িটা ধীরে ধীরে থামল। চাকা থেমে যেতেই ধুলো উড়ে উঠল বাতাসে। তরু জানলার বাইরে তাকিয়ে রইল নিঃশব্দে।মৃন্ময় ইঞ্জিন বন্ধ করল। গাড়ির শব্দ থেমে যেতেই চারপাশের নিস্তব্ধতা যেন আরো ভারী হয়ে উঠল। কেবল দূরে কাক ডাকছে।তরু নামল ধীরে। পা রাখতেই শুকনো পাতার উপর একটা খসখসে শব্দ হলো। গেটের সামনে কয়েকজন প্রতিবেশী দাঁড়িয়ে। তারা প্রথমে থমকে গেল তরুকে দেখে।তারপর মুখে অবাক অভিব্যক্তি ছড়িয়ে পড়ল।
“তরু?”
একজন বয়স্ক মহিলা এগিয়ে এলো, চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে।
“তুই… তুই বেঁচে আছিস?”
তরু এক মুহূর্তের জন্য স্থির হয়ে গেল। প্রশ্নটা যেন হাওয়া চিরে তার বুকে এসে বিঁধল।সে তাকিয়ে রইল মহিলার দিকে, তারপর ধীরে বলল,
“আমি বেঁচে আছি মানে?”
“সেদিন তো দুইটা লাশ পাওয়া গেছিল।একটার গায়ে তোর জামার টুকরো ছিল।আরেকজন তোর সৎ মা মার্জিয়া।”
শেষের কথাটা বলার সময় মহিলার মুখে একটুও দুঃখ দেখা গেলো না।মানুষ হিসেবে মার্জিয়া ছিলেন জঘন্য একজন মহিলা।তার মৃত্যুতে এখানে কেউ ই শোক পালন করছে না।তরুর কপাল কুঁচকে গেল।লাশ? দুইটা?
তার চোখ একবার ঘুরে গেল পোড়া বাড়িটার দিকে। দেয়ালগুলো ভস্মের মতো কালো, জানালার কাচ নেই, কেবল ফাঁকা ফ্রেম। হঠাৎ একটা শীতল বাতাস বয়ে গেল, যেন ভিতর থেকে কেউ নিঃশ্বাস ফেলল।তরু নিঃশব্দে এগিয়ে গেল গেটের ভেতরে। গেটের ধাতব হাতল ছোঁয়া মাত্রই আঙুলে ঠান্ডা একটা স্রোত বয়ে গেল। সে থেমে গেল, ধীরে বলল
“ওরা বলল দুইটা লাশ !”
তার গলা শুকিয়ে আসছে। মৃন্ময় উত্তর দিল না। শুধু তার কাঁধে হাত রাখল।
“চলো, এখানে আর দাঁড়াতে হবে না”
তরু থাকতে চাইলো কিছুক্ষন।কিন্তু মৃন্ময় মানলো না।টেনে গাড়িতে বসালো তাকে। সিট বেল্ট বেঁধে দিয়ে পাশে বসলো। গাড়ি স্টার্ট দিয়ে তরুর দিকে তাকালো।তরুর চোখে তখন পানি। মৃন্ময়ের চোখ লাল হয়ে গেলো মুহূর্তেই।এই চোখে পানি আসতে দিবে না জন্যই এতো কিছু করা,তারপরেও?
বাবা মারা যাওয়ার পর মার্জিয়া কম অত্যাচার করেনি তরুকে এবং তার বোনকে।তার জন্য কান্না কিসের?
“কেনো করেছেন?”
মৃন্ময়ের মুখের দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন ছুড়লো তরু।মৃন্ময় মুখ ফিরালো না।সামনে তাকিয়ে থেকেই হাসলো। তরুর সহ্য হলো না। চিৎকার করে বলল,
“কেনো করেছেন বলুন?কি ক্ষতি করেছিল আপনার?”
জোরে ব্রেক কষলো মৃন্ময়।হঠাৎ এভাবে গাড়ি থামায় তরু সামনের দিকে ঝুঁকে গেলো।
“আমার পাখিকে কষ্ট দিয়ে তাদের অস্তিত্ব কিভাবে পৃথিবীতে টিকিয়ে রাখতে পারে?
হেসে বললো মৃন্ময়।তরু এবার এক সাহসী কাজ করে বসলো। এই প্রথম মৃন্ময়ের চোখে সরাসরি চোখ রাখলো।পলক না ফেলে বলল,
” আমাকে সব থেকে বেশি কষ্ট আপনি দিয়েছেন”
থমকালো মৃন্ময়। স্থীর হয়ে গেলো চোখ জোড়া।মৃন্ময় হাত বাড়িয়ে সিট বেল্ট খুলে দিলো। তরু কিছুটা পিছিয়ে গেলো।কিন্তু মৃন্ময় থামল না। এক মুহূর্তেই তাকে কোলে টেনে নিলো। তরুর শরীর শক্ত হয়ে গেলো। মৃন্ময়ের বুকে মুখ গুঁজেলো। লম্বা একটা শ্বাস টেনে মুখ উঠিয়ে বললো,
“তোমার উপর শুধু আমার অধিকার পাখি।কষ্ট আমি দিবো, ভালোও আমি বাসবো।আর কেউ না।”
শক্ত করে চেপে ধরলো।তরু চোখ বন্ধ করল। বুকের ভেতর ধকধক শব্দটা বাড়ছে। মৃন্ময়ের বুকের সাথে তার বুক মিলে গেছে,দুটো হৃদস্পন্দনের তাল ও যেনো মিলে যাচ্ছে।
“ছাড়ুন আমাকে”
মৃন্ময় কিছু বলল না। কেবল আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরল, যেন পৃথিবীর সব কিছু হারিয়ে গেলেও এই একজনকে হারাতে পারবে না।তরুর ঠোঁটে ঠোঁট ডুবালো।এক হাত কোমরে রাখলো,অন্য হাত মাথার পিছনে।
কিছুক্ষন পর ঠোঁটে ছেড়ে সারা মুখে চুমু দিলো।তারপর বুকে মাথা চেপে ধরে গাড়ি স্টার্ট দিলো।[এই গল্পের রাইটারের পেজের নাম — দূর্বা এহসান : Durba Ehsan]
কিছুদূর যেতেই মৃন্ময়ের নজর গেলো আইসক্রিমের একটা দোকানে।তরুকে বসিয়ে রেখে সে বেরিয়ে গেলো।
” দুইটা আইসক্রিম। একটা চকলেট আরেকটা স্ট্রবেরি ফ্লেভার”
রাস্তার ওপাশে গাড়ির দিকে নজর তার।তরু জানালার বাইরে তাকিয়ে রইল। রোদের আলো গাড়ির কাচে নরম সোনালি ছায়া ফেলেছে। বাতাসে ধুলো উড়ছে, তবু সেই ধুলোর ভেতরেও যেন শান্তি আছে।মৃন্ময় রাস্তার ওপাশ থেকে তাকিয়ে আছে, হাতে দুইটা আইসক্রিম।এক মুহূর্তের জন্য তাদের চোখে চোখ পড়ল।
মৃন্ময় রাস্তার ওপাশে দাঁড়িয়ে, দোকানদারের হাতে টাকা দিচ্ছে। তার চোখে কোনো তাড়া নেই, বরং শান্ত একটা হাসি।মৃন্ময় এগিয়ে এলো ধীরে ধীরে। গাড়ির দরজা খুলে তরুর পাশে বসলো।তরুর হাতে দুটো চকলেট ই ধরিয়ে দিলো।
কিছুক্ষণের মধ্যে জঙ্গলের রাস্তায় ঢুকে পড়েছে গাড়ি।সময়টা বিকেল হলেও সন্ধ্যার আভা।গাছপালা সূর্যের আলো ঢেকেছে।তরুর হাতে থাকা আইসক্রিম গলতে শুরু করেছে।
“খাও”
তরু মৃন্ময়ের দিকে তাকালো।কিছু না বলে খেতে শুরু করলো।মৃন্ময় কবেই নিজের টা শেষ করেছে।
হঠাৎ লুকিং গ্লাসে তরুর দিকে নজর গেলো তার।ঠোঁটের এক কোণে একটু চকলেট লেগে আছে। সে লোভনীয় দৃষ্টিতে তাকালো।কয়েক মুহূর্ত পর তরুর সৃষ্টিও সেদিকে পড়ল। সে বুঝতে পারলো মৃন্ময়ের চাহনি।তড়িঘড়ি করে মুছতে নিলো।কিন্তু মৃন্ময় হঠাৎ গাড়ি ব্রেক করে তাকে আটকে ফেললো।দুই হাতে তরুর দুই গাল চেপে ধরে ঠোঁটে ঠোঁট চেপে ধরলো।[এই গল্পের রাইটারের পেজের নাম — দূর্বা এহসান : Durba Ehsan]
ঠোঁটের কোনা থেকে চকলেট টুকু টেনে নিলো নিজের মুখে। তার করে এহেন আকষ্মিক কাজে চমকে গেলো তরু।নিজেকে ছাড়ানোর কথা ভুলেই গেলো।সিট বেল্ট তখন বাঁধে নী আর সে।মৃন্ময় এক ঝটকায় তাকে কোলে বসালো। ঠোঁট থেকে এক মুহূর্তের জন্যেও ঠোঁট সরালো না। এক হাত তরুর জামা গলে পিঠে উঠে গেলো।
তরু যেন এবার নিজের বোধে এলো। মৃন্ময়ের দুই কাধে হাত রেখে সরিয়ে দিতে চাইলো।কিন্তু সে যেনো আরো তাকে নিজের সাথে জড়িয়ে দিলো।ধীরে ধীরে তার স্পর্শ অবাধ্য হতে শুরু করলো।ঠোঁট ছেড়ে মুখ নেমে এলো গলায়।ধীরে ধীরে ঠোঁট ছুঁয়ে কামড় দিতে শুরু করলো।
তরুর মুখে গালি চলে এলো। এ কোন খবিশের পাল্লায় পড়েছে।নিজেকে কি একটুও কন্ট্রোল করতে পারে না! সে আবার ধাক্কা দিলো।সাথে সাথেই জোরে কামড় বসালো মৃন্ময়।
“আ,ছাড়ুন।লাগছে আমার।”
“নাহ্,একদমই না।এখন ছাড়তে পারব না, বে’বী “
“ভালোয় ভালোয় বলছি ছাড়ুন কিন্তু।”
“না। আই ক্যান্ট কন্ট্রোল”
তাঁকে সরানোর চেষ্টা করতেই থাকলো তরু। সে সরাতে না পারলেও পিছন থেকে আসা গাড়ির হর্ন ঠিকই পারল। বিরক্তিতে চোখ মুখ কুচকে ফেললো মৃন্ময়।
“ফাঁ।কোন মাদার*দ শালা”
নাক মুখ কুচকালো তরু। মুখ দিয়ে একটা শব্দ ছিটকে বেরিয়ে এলো,”ছিহ্ “
পাত্তা দিল না মৃন্ময়।প্রচণ্ড রকমের ক্ষেপে গেছে সে পিছনে গাড়িতে থাকা ব্যক্তির উপর।ইতোমধ্যেই চোখ লাল হতে শুরু করেছে তার।
চলবে😒
Share On:
TAGS: ডার্ক ডিজায়ার, দূর্বা এহসান
CLICK HERE GO TO OUR HOME PAGE
-
ডার্ক ডিজায়ার পর্ব ৪
-
ডার্ক ডিজায়ার পর্ব ৮
-
ডার্ক সাইড অফ লাভ পর্ব ১
-
ডার্ক ডিজায়ার পর্ব ১২
-
ডার্ক ডিজায়ার পর্ব ২
-
ডার্ক ডিজায়ার পর্ব ৫
-
ডার্ক ডিজায়ার পর্ব ১০
-
ডার্ক ডিজায়ার পর্ব ১৪
-
ডার্ক ডিজায়ার পর্ব ৬
-
ডার্ক ডিজায়ার পর্ব ১৫