Golpo romantic golpo আড়ালে তুমি সব পর্বের লিংক সাইদা মুন

আড়ালে তুমি সাইদা মুন পর্ব ৫৮


#আড়ালে_তুমি |৫৮|

#_সাইদা_মুন 

-“হ্যালো এভ্রিওয়ান, মিট মাই ফিয়ন্সে মিস সাফা..”

বলেই রুদ্র সাফাকে পাশে দাঁড় করালো। সাথে সাথে সবার মাঝে হইচই পড়ে গেলো। মিডিয়ার লোকেরা তো লাইভ করা শুরু করে দিলো। সবাই প্রশ্নে গুঞ্জরিত, এই মেয়ে কে? রুদ্রের তো অন্য কারো সাথে বিয়ে হয়েছিলো, তাহলে ইনি কে। এক হুলুস্থুল পরিবেশ।

এসবের মাঝেই এরশাদুল চৌধুরী গর্জে উঠলেন,

-“এসব কি ধরনের ফাজলামি করছো রুদ্র?”

রুদ্র ভাবলেশহীন ভঙ্গিতে বলে,

-“আব্বু, এটা কোনো ফাজলামি না।”

বলেই সাফার হাত নিজের মুঠোয় নিয়ে নিলো। আশেপাশের সবাই শকড। শান্তরা, পিহুরা সবাই যেনো বড়সড় ধাক্কা খেলো। অবাক দৃষ্টিতে রুদ্র আর পাশে দাঁড়ানো সাফার দিকে তাকিয়ে আছে। রুদ্র এমনটা করতে পারে না। সে এমন ছেলেই না।  তাদের কাছে যেনো এ এক দুঃস্বপ্ন।

এদিকে মেঘ আর দাঁড়িয়ে থাকতে পারলো না। দৌড়ে স্টেজে উঠে রুদ্রের সামনে গিয়ে অসহায় দৃষ্টিতে ভয়ে ভয়ে বলে,

-“আ…আপনি প্র্যাংক করছেন তাই তো?”

রুদ্র শান্ত চোখে তাকিয়ে উত্তর দিলো,

-“একদমই না।”

মেঘ চমকিত নয়নে বলে,

-“তাহলে এগুলো কি?”

রুদ্র হাত ছাড়িয়ে পকেটে রেখে বলে,

-“যা দেখছো তাই। সাফা আমার হবু ওয়াইফ।”

বলেই রিং বের করে সাফাকে পরাতে গেলে, সাথে সাথেই মেঘ যেনো বাঘিনীর রূপ নিলো। কাউকে তোয়াক্কা না করেই, হাত থেকে ধাক্কা দিয়ে রিং বক্স ফেলে দিলো। তারপর রুদ্রের কলার ধরে চিৎকার করে উঠলো,

-“এসব কি ধরনের মজা করছেন! একদম এসব ফাজলামি করবেন না আমার সাথে।”

রুদ্র শান্ত ভঙ্গিতেই মেঘের হাত ছাড়িয়ে কলার ঠিক করতে করতে বলে উঠে,

-“সাবধানে ভেবেচিন্তে যেকোনো কাজ করবে…”

মেঘ অবাক হয়ে যায় ,

-“আপনি কি বলছেন এগুলো। সবাই দেখছে তো, এমন করছেন কেনো?”

রুদ্র বাকা হেসে চুল ঝেড়ে বলে,

-“দেখানোর জন্যেই তো এই আয়োজন।”

মেঘ বিস্মিত চোখে,

-“মানে..?”

রুদ্র ঠান্ডা গলায় বলে উঠে,

-“ভুলে গেছো? ভার্সিটির ভরা ক্যাম্পাসে কোনো দোষ ছাড়াই সবার সামনে আমাকে থাপ্পড় মেরেছিলে। ভেবেছিলে কি এত সহজেই আমি ভুলে যাবো?”

মেঘ যেনো বড় ধাক্কা খেলো। সেই কথা তুলছে কেনো রুদ্র। অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। আশেপাশের সবাইও স্তব্ধ। শান্ত উঠে দাঁড়িয়ে বললো,

-“রুদ্র, কি সব বলছিস? ঘরে গিয়ে কথা হবে, এখানে মিডিয়ার লোক আ…”

রুদ্র হাত তুলে শান্তকে থামিয়ে দিলো। তারপর সবার দিকে তাকিয়ে বললো,

-“যা কথা হবে, এখানেই হবে।”

মেঘ কাঁপা গলায় জিজ্ঞেস করে,

-“কি বলতে চাইছেন?”

রুদ্র হালকা হেসে উত্তর দিলো,

-“সোজা কথা তুমি আমাকে থাপ্পড় মেরেছো, আমিও রিভেঞ্জ নিয়েছি।”

মেঘ বাকরুদ্ধ, শরীরের শক্তি যেনো ফুরিয়ে আসছে। প্রায় পড়তে যাচ্ছিলো, পিহু তাড়াতাড়ি এসে ধরে নিলো। কাঁপা ঠোঁটে মেঘ বলে,

-“তাহলে, আমার হাত ধরে এতদূর এনে মাঝ রাস্তায় ফেলে দিয়ে রিভেঞ্জ নিচ্ছেন?”

রুদ্র হেসে উঠলো,

-“ওয়াও, হাউ ব্রিলিয়ান্ট ইউ আর। এতদিন ভেবেছিলাম তুমি শুধু বোকা, এখন দেখি একদমই না।”

মেঘ নির্লিপ্ত চোখে তাকিয়ে আছে। এ কোন রুদ্র? তাকে চিনতে পারছে না। রুদ্র তো এমন ছিলো না। কিছু কি হয়েছে? তড়িঘড়ি এগিয়ে গিয়ে রুদ্রের হাত ধরে,

-“আপনার কি হয়েছে? রাগ করেছেন আমার ওপর? আমি মাফ চাইবো, আর কখনো এমন কিছু করবো না। প্লিজ, এমন সিদ্ধান্ত নিবেন না…”

মেঘ কথা শেষ করার আগেই সাফা তার হাত সরিয়ে দিলো। কাঠগলায় বলে উঠে,

-“রুদ্র এখন আমার ফিয়ন্সে। ওর গা ঘেঁষার চেষ্টা করো না। আমি এসব একদম টলারেট করবো না।”

মেঘ রেগে গিয়ে এক পা এগিয়ে গর্জে উঠলো,

-“সে আমার স্বামী। তাকে স্পর্শ করার পূর্ণ অধিকার আমার আছে।”

সাফা ঠান্ডা স্বরে,

-“সেই অধিকারও থাকবে না। খুব শিগগিরই ডিভোর্স পেপার পেয়ে যাবে।”

মেঘ আরও একবার ধাক্কা খেলো, মেঘের বুক যেনো ছিঁড়ে যাচ্ছে। ফট করে রুদ্রের দিকে তাকালো। আশায় আছে সে কিছু বলবে। কিন্তু কয়েক মুহূর্ত পার হলেও রুদ্র নিশ্চুপ। মেঘ হতাশ কণ্ঠে বললে,

-“আপনি কিছু বলছেন না কেনো? এই মেয়ে আমাদের ডিভোর্স নিয়ে কথা বলছে, আপনি চুপ আছেন কেনো?”

রুদ্র চোখ সরিয়ে ঠান্ডা স্বরে বললো,

-“যা বলেছে, সত্যই বলেছে। খুব তাড়াতাড়ি পেয়ে যাবে।”

এই কথায় শুধু মেঘর নয়, পুরো চৌধুরী পরিবারের মাথায় যেনো আকাশ ভেঙে পড়লো। দাদীর বুকে ব্যথা উঠে গেছে, তাকে সবাই ধরাধরি করে দ্রুত বসায়। মেঘ ধপ করে নিচে বসে পড়ে, একদৃষ্টে রুদ্রের দিকে তাকিয়ে, চোখ দিয়ে  অঝোরে পানি পড়ছে।

সিদ্দিকা বেগম আর সহ্য করতে পারলেন না। ছুটে গিয়ে রুদ্রের গালে সজোরে চড় মারলেন,

-“এই শিক্ষা দিয়েছিলাম তোকে? তোর সাহস হলো কি করে মেঘকে ডিভোর্স দেওয়ার কথা মুখে আনার?”

রুদ্র মুখ শক্ত করে দাঁড়িয়ে আছে। পরিস্থিতি খারাপ দেখে সাদ, সায়ান, শান্ত অর্নবসহ বাকিরা মিডিয়ার লোকজনকে কোনোমতে বের করে দিলো। কিন্তু লাভ কি নিউজ তো ছড়িয়ে গেছেই। অতিথিদেরও একে একে  সসম্মানে বিদায় করতে হলো।

সিদ্দিকা বেগম এবার সাফার দিকে তেড়ে গেলেন,

-“এই তুমি কে? আমার ছেলের সংসারে কথা বলার অধিকার কে দিয়েছে তোমাকে? কেনো ঢুকেছো, সংসারটা ভাঙতে? কান খুলে শোনে রাখো, মেঘ আমার একমাত্র বউমা। মেঘ ছাড়া দ্বিতীয় কাউকে আমি আমার ছেলের বউ হিসেবে মেনে নেবো না। এখনই বেরিয়ে যাও আমার বাড়ি থেকে।”

বলতে বলতেই সিদ্দিকা বেগম মেঘকে বুকে টেনে নিলেন। মেঘ কাঁদছে, কাঁদছে আরও জোরে। কাঁদতে কাঁদতে হাত তুলে রুদ্রকে দেখিয়ে বলে,

-“মা..মা, দেখুন উনি কি করছেন। বলুন না, থামান না উনাকে। আমার খুব খারাপ লাগছে।”

সিদ্দিকা বেগম মাথায় হাত বুলিয়ে স্বান্তনা দিচ্ছেন,

-“কিছু হবে না মা, আমি আছি তো। তোর এই শাশুড়ি সবসময় তোর পাশে আছে। কিছু হতে দেবো না।”

এরশাদুল চৌধুরীও এগিয়ে আসেন মেঘের মাথায় হাত রেখে বললেন,

-“আম্মু, এভাবে কেঁদো না। আব্বুও আছি, দেখবো কে কি করে।”

হঠাৎ রুদ্র বলে উঠলো,

-“তোমরা কি তোমাদের একমাত্র ছেলেকে হারাতে চাও?”

সেকেন্ডের মধ্যেই পুরো পরিবেশ নিস্তব্ধ। সবাই অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। সিদ্দিকা বেগম ভয়ে আঁতকে উঠে দাঁড়ালেন,

-“কি বলছিস বাবা এসব? মুখেও আনবি না এ কথা।”

রুদ্র ঠান্ডা গলায় বললো,

-“তাহলে আমি যা করছি চুপচাপ মেনে নাও। নয়তো এর থেকেও ভয়ঙ্কর কথা মুখে আসবে, কাজও হবে।”

সবাই চুপ হয়ে গেলো। কারও সাহস নেই কিছু বলার, ছেলে হারাবে সেই ভয়ে বুঝি? পিহুও ভাইয়ের দিকে তাকিয়ে নির্বাক। মা-বাবা ছেলেকে হারানোর ভয়ে স্তব্ধ।

মেঘ চারদিকে একবার তাকিয়ে বুঝলো তার কেউ নেই। নিজের জন্য নিজের লড়াই করতে হবে। ধীরে ধীরে উঠে রুদ্রের সামনে দাঁড়িয়ে কাঁপা গলায় বলে,

-“আপনি তো বলেছিলেন আমাকে ভালোবাসেন। তাহলে ভালোবাসার মানুষকে এত কষ্ট দেন কি করে? আমার না বুক ফেটে যাচ্ছে। এই দুনিয়াতে আপনি ছাড়া আমার আর কেউ নেই। আপনিই তো আমার একমাত্র আপনজন। এত সুন্দর করে আগলে নিয়েছিলেন। এখন এভাবে ফেলে দিচ্ছেন কেনো?”

রুদ্রের মুখে কোনো শব্দ নেই। মেঘের প্রতিটি হৃদয়বিদারক কথা শুনে সবার চোখ ভিজে যাচ্ছে। শুধু রুদ্রই পাষাণ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। মেঘ কেঁদে বললো,

-“একটা পোষা প্রাণীকেও কষ্ট পেতে দেখলে মানুষ সহ্য করতে পারে না। আমি তো মানুষ, এমন করছেন কেনো?”

রুদ্র কর্কশ কণ্ঠে বললো,

-“আমি তোমাকে ভালোবাসি না। আর কতবার বলবো? এগুলো শুধু রিভেঞ্জ ছিলো। আমাকে থাপ্পড় মেরেছো, আমিও পালটা জবাব দিয়েছি। দ্যাটস ইট। এর বেশি কৈফিয়ত দিতে পারবো না।”

মেঘ যেনো বারবার ধাক্কা খাচ্ছে। রুদ্র কি তার ভাঙা বুকের কষ্ট দেখছে না? সে কি এতটাই বিরক্ত? রুদ্র চলে যেতে চাইলে মেঘ আবারও হাত ধরে আটকে দিলো। এবার রুদ্র ঝাঁকিয়ে হাত ছাড়িয়ে দিলো। মেঘ হোঁচট খেয়ে কয়েক কদম পিছিয়ে গেলো, তবে চেয়ার ধরে নিজেকে সামলে নিলো। রুদ্র ভারী গলায় বলে,

-“আমার হাত ছুঁবে না। তোমার কোনো যোগ্যতাই নেই আমাকে ছোয়ার। নিজের লিমিটে থাকো।”

অর্ণব বিস্ময়ে বললো,

-“ভাই, তুই এমন কেনো করছিস? তুই তো বলেছিলি তুই মেঘকে সেই প্রথম থেকেই ভালোবাসিস। তাহলে এখন অন্য কাউকে বিয়ে.. আবার তার সাথে এমন আচরণ।”

রুদ্র গম্ভীর গলায় কেটে দিলো,

-“দিস ইজ এ পার্ট অফ মাই গেম।”

অর্ণব চমকে,

-“গেম? মানে মেঘকে ভালোবাসিস না?”

-“ইয়েস। কারণ সে আমার ভালোবাসা ডিজার্ভ করে না।”

মেঘ এবার পুরোপুরি ভেঙে গেছে। কান দুটো কেটে ফেলতে মন চাচ্ছে, আর শুনতে পারছে না। শুকনো ঢোক গিলে শক্ত গলায় বলে,

-“ওকে আপনার ভালোবাসা আমার লাগবে না। আপনি ভালো না বাসলেও,  আমি আপনাকে ভালোবাসি। আমার যতটুকু জায়গা জূড়ে আপনি আছেন নাহ, ওইটুকু জায়গা আমি কাউকে দিতে পারবো না..”

একটু থেমে আবার বললো,

-“এমনকি আপনাকেও আর দিবো না…”

রুদ্র চমকে তাকালো। কাঁদতে থাকা মুখ, অসহায় চোখে তাকিয়ে আছে সে। এই প্রথম মেঘের মুখে “ভালোবাসি” শুনলো। বুকের ভেতর কেমন যেনো একটা অজানা অনুভূতি হল।

মেঘ আর এক মুহূর্তও দাঁড়ালো না। দৌড়ে চলে গেলো ঘরের ভেতর। পেছন পেছন পিহু-সামিয়ারাও ছুটলো, ভয় লাগছে উল্টোপাল্টা কিছু না করে বসে।

———

রুমে ঢুকেই দরজা বন্ধ করে দিলো মেঘ। বারান্দায় গিয়ে হাটু মুড়ে বসে অঝোরে কাঁদছে। বুক ফেটে যাচ্ছে, একাকিত্বে ধম বন্ধ লাগছে।

আকাশের দিকে তাকিয়ে ফিসফিস করে উঠে,

-“আব্বু…আমি তোমাকে মিথ্যা বলেছি। বলেছিলাম উনি ভালো মানুষ, আগলে রাখেন, ভালোবাসেন। কিন্তু সবই মিথ্যা ছিলো, সবই নাটক। আব্বু, উনি অন্য একটা মেয়েকে বিয়ে করবেন বলছে। তাহলে আমার কি হবে গো? তোমার প্রিন্সেসটার কি হবে? মা-বাবার দোয়া বুঝি কবুল হয়। তুমি কি আমার জন্য একটুও দোয়া করোনি? মা তো তার ছোট মেয়ের জন্য দোয়া করে কূল পায় না। তুমি কেনো করোনি? মেয়েটা একটু সুখি হোক, দোয়া করোনি? আমি কি এমন পাপ করেছিলাম যার এত বড়বড় শাস্তি পাচ্ছি”

অসহায় অভিমান নিয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে। কাঁদতে কাদঁতে হঠাৎ হেসে উঠলো,

-“তুমিও স্বার্থপর আব্বু। খারাপ সময়ে তোমাকেও পাই না। তুমিই তো প্রথম ছেড়ে গিয়েছিলে, বাকিদেরও শিখিয়ে দিয়ে গেছো যেনো সবাই মাঝপথে আমায় ফেলে চলে যায়। সুখে আছো তাই না? মেয়ের জীবনের রঙিন তামাশা দেখে মজা লাগছে তাই না?”

মনে দুঃখ গুলো সে তার বাবাকে ভেবে আকাশ বাতাস প্রকৃতির সাথে ভাগাভাগি করছে। ঠিক তখনই প্রকৃতি যেনো সাড়া দিলো। ঝুম বৃষ্টি নেমে এলো। মেঘ উঠে দাঁড়িয়ে দুই হাত মেলে বৃষ্টিকে আপন করে নিলো। চোখের পানি মিশে গেলো বৃষ্টির জলে।

-“তারপর যখন আমি আপনার প্রেমে পড়লাম, ভেবেছিলাম এবার সব বসন্তের মতো সুন্দর হবে। করেছিলেন ও সুন্দর। জীবনটা রূপকথার মতো হয়ে উঠেছিলো আপনার ভালোবাসায়। ভেবেছিলাম দুজনে মিলে বাকি জীবন সাজাবো। কিন্তু আপনি ভালোবাসলেন না আমায়। বসন্তের পরপরই এলো বর্ষা।”

চোখ বন্ধ করে বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে আবার বললো,

-“তারপরও আমি আপনাকে ভালোবেসে যাবো বারবার। যদি আপনার ভালোবাসা নাও পাই, তবু এই বর্ষার বৃষ্টি দিয়ে কেটে দেবো শত শত দিন… শুধু আপনাকে মনে রেখে। আমার এই মনে শুধু একজনই পুরুষের অস্তিত্ব থাকবে সে হলো শুধুমাত্র আপনি। তবে জীবনে আর জায়গা হবেনা আপনার।”

মেঘ জানে না, তার হৃদয়বিদারক প্রতিটি শব্দ কেউ একজন আড়াল থেকে মনোযোগ দিয়ে শুনছে। সেই কারও চোখেও টলমল করছে অশ্রু।

———

 পিহু বসে আছে মোবাইল হাতে নিয়ে। অনেক বড় একটা মেসেজ টাইপ করেছিল, আবার কেটে দিয়েছে। তারপর ছোট্ট একটা মেসেজ সেন্ড করে,

-“আপনাদের ছেলের জাতই এমন, শুধু কষ্ট দিতে জানে। ভালোবাসার কোনো মূল্য নেই আপনাদের কাছে। আপনারা পাষাণ, গন্ডারের চামড়া দিয়ে মন ঢেকে রেখেছেন। তাই হয়তো আমাদের কষ্ট চোখে পড়ে না।”

মেসেজ সেন্ড করেই সে ব্লক মেরে দেয়। এদিকে যাকে মেসেজ পাঠিয়েছে, সে মেসেজ আসার সাথে সাথেই ওপেন করে। লেখাটা পড়ে দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে।

অন্যদিকে,

-“বোকা**** তোকে না বলেছি ভালো করে খোঁজ নিয়ে কাজ করতে। হুদাই আমার এতোটা সময় নষ্ট করলি!”

-“স..সরি ভাই, আর এমন হবে না। এই ছেলে এমন নাটক করবে কে জানতো! আমি তো ভেবেছিলাম মেঘকেই ভালোবাসে।”

-“খা***** মেঘকে ভালোবাসলে এভাবে সবার সামনে ছাড়তো নাকি? তাও আবার মিডিয়ার সামনে! তোকে দিয়ে কোনো কাজ হয় না। তোকে বাঁচাই রাখা ভুল হয়েছে। তোকে একটা ব্যবস্থা করতেই হবে।”

কলের অপর প্রান্তের কথা শুনে লোকটির আত্মা কেঁপে ওঠে। ভয়ে ভয়ে বলে,

-“না না ভাই, এমন করবেন না। আরেকটা শেষ সুযোগ দিন।”

-“এতো করে যখন বলছিস, যা দিলাম। তবে মনে রাখিস, এটাই শেষ সুযোগ…”

চলবে…..

[বউমারা তোমাদের নতুন সতীন হাজির 🌚। অবশ্যই বলবে কেমন হয়েছে।]

Share On:

TAGS: , ,



CLICK HERE GO TO OUR HOME PAGE
Related Posts
 

0 Responses

Leave a Reply