#আড়ালে_তুমি |৪৫|
#_সাইদা_মুন
-“যাও, রিকের কাছেই যাও…”
সাদ অসহায় সুরে বলে,
-“আরে ভাই, রিক তো ছেলে।”
-“কিন্তু নাচের সময় তো সে মেয়ে সেজেছিলো, তাহলে মেয়েই হলো না?”
-“তোমার সন্দেহ হলে রিককে এনে চেক দাও ছেলে না মেয়ে।”
-“ছিইইই…”
সেই কতক্ষণ ধরে সুমনা ত্যাড়া কথা বলেই যাচ্ছে। শুনতে শুনতে বেচারা সাদ ত্যক্ত হয়ে অন্যদিকে তাকিয়ে নিজের এই দশা নিয়ে ভাবছে।
-“ওইদিকে তো কোনো মেয়ে নাই, সেখানে তাকিয়ে আছো কেন?”
সাদ বাগানের দিকেই তাকিয়ে ছিলো। সুমনার কথায় মাথা ফিরিয়ে বলে,
-“এমনি..”
সুমনা কপট রাগ দেখিয়ে বলে,
-“ওহ, এখন তো আমি পুরোনো হয়ে গেছি, তাই অন্যদিকে তাকাচ্ছ? রিলেশনের শুরুর দিকে তো আমার থেকে চোখই সরাতে না, এখন কি আমি দেখতে অসুন্দর হয়ে গেছি?”
সাদের মন চাইছে নিজেকে তুলে নিজের আছাড় মারতে। কিসের জন্য যে তাকাল, এখন এটা নিয়েও ঝগড়া করবে এই মেয়ে। তাও নিজেকে শান্ত করে বলে,
-“আরে জান, তেমন কিছু না। এমনি একটু তাকিয়েছিলাম। তুমি তো আমার চোখে এখনও মিস ওয়ার্ল্ড।”
-“হইছে, আমি বুঝি সব চুপ থাকো, কথা বলবা না।”
সাদ ফুস করে শ্বাস ছেড়ে উঠে দাঁড়ায়,
-“তুমি আমার সাথে হুদাই ঝগড়া করে কি পাও, হ্যা?”
সুমনা মুখ ঝামটা মেরে বলে,
-“শান্তি পাই, শান্তি…”
সাদ আর কিছু না বলে সুমনার ডান হাত নিজের মুঠোয় নিয়ে বাড়ির ভেতরের দিকে এগোয়। তবে সুমনা হাত ধরেনা আঙুল সোজা করে রেখেছে, মুখ ফুলিয়ে রেখেছে”যার মানে সে রেগে আছে”। সাদ বেচারা এগোতে এগোতে বলে,
-“প্লিজ জান, আর রাগ করোনা। তোমার সাথে ঝগড়া করতে ভালো লাগে না। শান্তিতে ঘুমাতেও পারি না রাতে।”
সুমনা ভ্রু কুঁচকে বলে,
-“তোমার এক্সরাও রাগ করলে তোমার ঘুম হতো না?”
সাদের ইচ্ছে করছে চিৎকার দিয়ে কান্না করতে, নিজের মাথা নিজে ফাটাতে। এই মেয়ে কই থেকে কই নিয়ে যায়। আর কোনো উত্তরই দিলো না।
———
পিহুর সামনে হঠাৎ এক ১৪–১৫ বছরের ছেলে এসে বলে,
-“আপু, আপনাকে রুদ্র ভাইয়া ছাদে ডাকছেন।”
পিহু ভ্রু কুঁচকে “কেন?” বলতে যাচ্ছিল, কিন্তু তার আগেই ছেলেটি সরে যায়। পিহু উঠে ছাদের দিকে যেতে থাকে। মনে মনে ভাবছে,
-“ভাইয়া তো কল দিয়েই ডাকতে পারতো… হয়তো মোবাইল সাথে নেই।”
ছাদে পা দিতেই হালকা ভয় লাগে, সব অন্ধকার। দরজার বাইরে দাঁড়িয়ে উঁকি দিয়ে ডাকে,
-“ভাইয়্যাাা, ডেকেছো কেন? এদিকে আসো, আমার ভেতরে যেতে ভয় করছে…”
কোনো সাড়া নেই। বিরক্ত হয়ে ভেতরে ঢোকে। কয়েক কদম যেতেই হঠাৎ দরজায় শব্দ হয়। ফট করে পিছনে তাকায়, চাঁদের আলোয় এক অপরিচিত মুখ ভেসে ওঠে। ছেলেটি দরজা বন্ধ করে তাতে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। পিহু দ্রুত এগিয়ে গিয়ে বলে,
-“এই, কি করছেন? দরজা চেপেছেন কেনো? সরুন।”
ছেলেটি শান্ত স্বরে বলে,
-“কারণ তোমার সাথে কথা আছে।”
পিহুর বুক ধকধক করছে, এখানে সে একা, বিপদ হতে পারে,
-“তো দরজা খুলুন, তারপর কথা বলুন।”
-“না, আগে কথা হবে।”
কয়েকবার বলেও কাজ হয় না। বিরক্ত হয়ে পিহু বলে,
-“তাড়াতাড়ি বলুন, কি বলবেন?”
হঠাৎ ছেলেটি এগিয়ে আসে। পিহু এক কদম পিছিয়ে যায়।
-“আমার তোমাকে ভালো লেগেছে। আই লাভ ইউ।”
পিহু তৎক্ষণাৎ বলে,
-“দেখুন ভাইয়া, আমি আপনাকে চিনি না, জানিও না, সো…”
-“চিনে নিবে আস্তে আস্তে। আমার বাপের টাকার অভাব নাই। দুইদিন পর পর গিফট দিবো, ঘুরতে নিয়ে যাবো, শপিং করাবো… আর কি লাগবে? সব দিবো”
টাকার গরম দেখে বিরক্ত হয়ে পিহু রেগে যায়,
-“ও হ্যালো, টাকা আমার বাপেরও আছে, ভাইয়েরও আছে। আমি এত নিচু না যে গিফট নেওয়ার আশায় প্রেম করবো। আর শোনেন, আমি আপনাকে পছন্দ করি না। আমার থেকে দূরে থাকবেন।”
বলেই পাশ কাটিয়ে দরজার দিকে যেতে নেয়। কিন্তু পিহুর কথায় ছেলেটি রেগে গিয়ে হাত ধরে টেনে থামায়,
-“মেজাজ দেখাচ্ছিস? বুঝেছি, তুই ভালো কথার মেয়ে না।”
বলেই পিহুকে জোরে টেনে কাছে আনে। পিহু ছটফট করলেও ছাড়াতে পারে না, মেয়ে হয়ে একটা ছেলের সাথে শক্তি কি কুলায়। চিৎকার করেও লাভ নেই ভেবে বুদ্ধি খাটায়। হঠাৎ শান্ত হয়ে যায়।
ছেলেটি হাসে,
-“হুদাই এতক্ষণ শক্তি অপচয় করলে। আমার হাত থে… আহহহ”
কথা শেষ হওয়ার আগেই পিহু সোজা তার নিচে জায়গামত লাথি মারে। ছেলেটি চিৎকার করে জায়গাটা চেপে ধরে। সুযোগ বুঝে পিহু ঘুরে দৌড় দেয়। কিন্তু মাঝপথে পেছন থেকে ধাক্কা খেয়ে পিহু উলটে গিয়ে দরজায় ধাক্কা খেয়ে মাটিতে পড়ে যায়।
দুই হাঁটুতে তীব্র ব্যথা,হাতেও লেগেছে, কপালের এক পাশে কেটে গেছে। তাও কোনোমতে উঠে বাঁচার চেষ্টা করে। কিন্তু ছেলেটি এসে চুলের মুঠি ধরে দরজার সাথে চেপে ধরে। ব্যথায় আর নড়াচড়া করতে পারে না। কেঁদে চিৎকার করে উঠে তবে কেউ শোনে না সাউন্ড বক্সের শব্দে।
এদিকে ছেলেটি তার আচলে হাত দিয়ে বলে,
-“তোকে ভালো অফার দিয়েছিলাম, রাজি হলি না। রাগ তুলে দিলি..”
বলেই আচল এক টানে খুলে ফেলে। সাথে পিনও উঠে গিয়ে ঘাড়ে লাগে কেটে যায় সে জায়গা। পিহু দরজায় হাত দিয়ে কয়েকবার আঘাত করে, কিন্তু ছেলেটি তাকে টেনে অন্যপাশে নিয়ে যায়। ছাদের রেলিংয়ে চেপে ধরে দাঁড় করায়। পিহু মনে মনে ভাবে এখানেই হয়তো সব শেষ। হাত-পায়ের ব্যথায় নিজেকে নিজে প্রটেক্ট করাও অসম্ভব হয়ে পড়ে। তাও বুকে কিল ঘুষি দিচ্ছে।
———
ফারহানের ইম্পর্ট্যান্ট কল আসায় সে একটু সাইডে গিয়েছিল। কথা বলতে বলতে হঠাৎ চোখ পড়ে বাড়ির ছাদের দিকে। অন্ধকারে দুজনের ছায়া, মনে হচ্ছে দস্তাদস্তি চলছে। সাউন্ডবক্সের শব্দে কিছু শোনা যাচ্ছে না। ফারহান দ্রুত ছাদের দিকে হাঁটা ধরে, প্রায় দৌড়াতে দৌড়াতে পৌঁছায়।
ছাদের দরজার সামনে এসে মেয়েলি কান্না আর আকুতি-মিনতির শব্দ স্পষ্ট শুনতে পায়। সঙ্গে সঙ্গে ফ্ল্যাশ অন করে এগিয়ে যায়। আলো ফেলতেই পা থমকে যায়, রাগে হাত মুঠো হয়ে যায়, কপালের রগ ফুলে ওঠে।
হঠাৎ লাইট পড়তেই ছেলেটি ভড়কে যায়। পেছন ঘুরে তাকাতেই মুহূর্তে এতো জোরে এক ঘুষি লাগে মুখে, যে কে এসেছে দেখার আগেই, সে উলটে পড়ে যায়। সঙ্গে সঙ্গেই রক্ত বেরিয়ে আসে মুখ দিয়ে। পিহু ফারহানকে দেখে কান্না যেনো আরও বেড়ে যায়। ভয়ের চোটে দৌড়ে গিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে তার বুকে, জড়িয়ে ধরে হাউমাউ করে কাঁদতে থাকে। ফারহানের নিশ্বাস যেন আটকে আসে পিহুর কান্নার শব্দে। সে আচলটা টেনে ভালোভাবে পেঁচিয়ে দেয় পিহুর শরীরে। ভাবতেই শরীর কেঁপে ওঠে, আরেকটু দেরি হলে, বা সে যদি না দেখতো, তবে পিহুর সাথে কী হতে পারতো। চোখ লাল হয়ে ওঠে রাগে।
পাশ ফিরতেই দেখে ছেলেটি দরজা পেরিয়ে পালাচ্ছে। ফারহান পিহুকে ছেড়ে তার পেছনে ছুটে যায়। করিডরে গিয়ে তাকে ধরে ফেলে এবং এলোপাতাড়ি পেটাতে শুরু করে। পিহু কোনোমতে ছাদ থেকে নেমে আসে। কান্না যেন থামছেই না। ভয় আর শক মিলেমিশে সে হেঁচকি তুলে কাঁদছে।
———
রুদ্র বোনের কান্নার শব্দে বের হয়ে এসে পিহুকে এমন অপদস্ত অবস্থায় আর ফারহান এক ছেলেকে নির্মমভাবে পেটাচ্ছে দেখে, মুহূর্তেই কিছু একটা আন্দাজ করে। রাগে চোখ মুখ লাল হয়ে উঠে, রক্ত যেন টগবগ করছে। আশপাশে কিছু খুঁজতে গিয়ে একটি ফুলদানি হাতে পায়। মুহূর্তে তা নিয়ে এগিয়ে যায় ছেলেটির মাথা বরাবর মারার জন্য।
এদিকে, উপরে মারামারি দেখে ড্রয়িং রুমে বসা সায়ানের বাপ চাচারা উঠে আসেন। রুদ্রকে এভাবে এগোতে দেখে সবাই ভড়কে যায়। এটা মাথায় লাগলে সোজা মরে যাবে। ঠিক যেই মুহূর্তে মাথায় মারতে যাচ্ছিল, সায়ানের বাবা তার হাত ধরে ফেলেন। কিন্তু রুদ্র যেন নিজের মধ্যে নেই। মেঘও পিছু পিছু এসে পিহুকে ওই অবস্থায় দেখে দৌড়ে যায় তার কাছে, বুকে জড়িয়ে আগলে ধরে।
রুদ্র ঝারা মেরে হাত ছাড়িয়ে নেয়। রুদ্রকে আটকাতে না পেরে সায়ানের চাচা তাড়াতাড়ি তার হাত থেকে ফুলদানিটা নিয়ে নেয়, যেনো বড় কোনো বিপদ না হয়। কিন্তু রুদ্র তখন আর থেমে নেই, তাদের ধাক্কিয়ে এগিয়ে গিয়ে ফারহানের হাত থেকে ছেলেটিকে কেড়ে নিয়ে পাগলের মতো মারতে থাকে। সে জানেনা কি করেছে তবে তার বোনের সাথে কিছু একটা করেছে। মারার ফাঁকে গর্জে উঠে ফারহানকে জিজ্ঞেস করে,
-“এই বাইন** কি করেছে আমার বোনের সাথে?”
ফারহান রাগে ফেটে পড়া গলায় বলে,
-“ছাদে একা পেয়ে…”
আর কিছু বলে না। রুদ্র বাকিটা বুঝে যায়। তার রাগ যেন মুহূর্তে আরও দশগুণ বেড়ে যায়, নিজের কন্ট্রোল পুরো হারিয়ে ফেলেছে । সবাই ভয় পেয়ে যায় রুদ্রের এই রূপ দেখে। ছেলেটি তো আগে থেকেই ফারহানের হাতে এক রাউন্ড মার খেয়েছে, এবার রুদ্রের হাতে একেবারে মরা মরা অবস্থা। খবরটা ইতোমধ্যেই পুরো বিয়ে বাড়িতে ছড়িয়ে পড়েছে। সায়ান, সাদ, রাহুলরা মিলে কোনোরকমে রুদ্রকে আটকায়।
ফারহান নিজের পরিবারের দিকে তাকিয়ে চিৎকার করে বলে,
-“এই কু*ত্তার বাচ্চা কে? কার ইনভাইটে এসেছে এ বাড়িতে?”
সায়ান বলে,
-“আমার এক ফ্রেন্ডের ভাই… কেনো, কি হয়েছে?”
রুদ্র এবার সায়ানের কলার ধরে টেনে বলে,
-“তুই যাকে তাকে ইনভাইট করেছিস কেনো?”
এদিকে পিহু এসব দেখে ভয়ে আরও জোরে কেঁদে উঠে। সবারই এতক্ষনে কিছুটা আন্দাজ হয়ে যায় ঘটনা কি ঘটেছে। সায়ানের সেই ফ্রেন্ড, সে তাড়াতাড়ি ছেলেটিকে নিয়ে চলে যায়। রুদ্র দ্রুত বোনের দিকে এগিয়ে যায়। পিহু ভাইকে দেখে তার বুকে ঝাঁপিয়ে পড়ে, বাচ্চাদের মতো কান্নাভেজা গলায় নালিশ শুরু করে,
-“ভা.. ভাইয়া তুমি কোথায় ছিলে? এই ছেলে আমাকে ছুঁতে চেয়েছে… অ.. অনেক বাজে টাচ করেছে…”
বাকিটা আর বলতে পারে না, ফুপিয়ে কাঁদতে থাকে। রুদ্রের চোখেও পানি। বুকটা দুমড়ে মুচড়ে যাচ্ছে, যেন কেউ তার কলিজায় হাত দিয়েছে। ছোট থেকে সে বোনকে আগলে রেখেছে, কারো ছায়াও পড়তে দেয়নি, আর আজ। কাঁপা গলায় রুদ্র বলে,
-“পিহু ভাইয়া চলে এসেছি তো, আর কেউ কিচ্ছু করতে পারবে না। ভয় পাস না… তুই না আমাদের স্ট্রং গার্ল, এই পিহু একদম কাঁদে না বনু।”
পিহুর কান্না দেখে মেঘ, সামিয়ারাও কেঁদে উঠে। উপস্থিত সবার চোখই ছলছলে। ফারহান অসহায় চোখে তাকিয়ে আছে, হাসিখুশি, দুষ্টু প্রকৃতির মেয়েটি এখন ভীত, জড়োসড়ো হয়ে আছে।
রুদ্র পিহুকে রুমে নিয়ে যায়। মেঘ, সুমনা, সামিয়ারাও পিছু নেয়। নিজের হাতে বোনের কপালের রক্ত পরিষ্কার করে ওষধ লাগায়। তারপর মেঘদের উদ্দেশ্যে বলে,
-“পিহুকে চেঞ্জ করিয়ে দেখো, আর কোথাও লেগেছে কিনা।”
সে বেড়িয়ে যেতেই মেঘ দরজা লাগিয়ে দেয়। ফারহানের মা এসে এর মধ্যে পিহুকে খাইয়ে দেয়। যদিও খেতে চাচ্ছিলো না তবে উনি বুঝিয়ে শুনিয়ে খাওয়ায়।
———
রুদ্র ছাদের এক কোণায় দাঁড়িয়ে আছে পকেটে দুই হাত । আকাশের দিকে তাকিয়ে, বুকটা এখনও ধড়ফড় করছে। নিজের ওপরই রাগ লাগছে, সে তার বোনকে আগলে রাখতে পারেনি, বারবার সেই কথাটাই মাথায় ঘুরছে। হঠাৎ পাশে কারো উপস্থিতি টের পেয়ে তাকিয়ে দেখে ফারহান দাঁড়িয়ে। সে রেলিংয়ে হেলান দিয়ে দাঁড়ায়। রুদ্র অন্যদিকে ফিরে।
ফারহান শান্ত স্বরে বলে,
-“প্রথমে না জেনেই মারা শুরু করেছিলি কেনো?”
রুদ্র ভাবলেশহীন গলায় উত্তর দেয়,
-” তুই কারণ ছাড়া মারবি না। আর আমার বোন কাদছিলো…”
ফারহান কিছুক্ষণ চুপচাপ রুদ্রের দিকে তাকিয়ে থাকে, এখনো আগের মতোই ভরসা আছে তবে। তারপর একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে। কয়েক সেকেন্ড নীরবতার পর রুদ্র নরম স্বরে বলে,
-“ধন্যবাদ…”
ফারহান হালকা হেসে রুদ্রের ঘাড়ে একটা চাপড় মেরে যেতে যেতে বলে,
-“তোর মুখ থেকে ভালো কথা শোনলে মনে হয় সাপ বিষ ছেড়েছে।”
রুদ্রও ঠান্ডা গলায় বলে,
-“ভুলেই গেছিলাম, কু*ত্তার পেটে ঘি হজম হয় না।”
———
সেই রাতেই রুদ্র চলে যেতে চেয়েছিল। কিন্তু সায়ানের পরিবারের লোকেরা আটকায়। সায়ানের বাবা রুদ্রকে বুঝিয়ে বলে,
-“দেখো বাবা, আমাদের বাড়িতেই এতোবড় ঘটনা ঘটে গেলো। এরজন্য অতন্ত্য দুঃখিত। যদি সেই ছেলে আমাদের বাড়ির ছেলে হতো, তখন আমরা অপরাধবোধে আটকাতাম না। কিন্তু সে বাইরের ছেলে। এভাবে যেও না, বিয়েটা শেষ করেই যেও।”
সায়ানও অনেক রিকোয়েস্ট করে। শেষমেশ রুদ্র রাজি হয় চিন্তা করে, তাদের তো দোষ নেই।
সে রাতে মেঘ, সামিয়া আর সুমনা তিনজনই পিহুর সঙ্গে ছিল। তাকে স্বাভাবিক করতে, ভয় কমাতে তারা আপ্রাণ চেষ্টা করেছে। তবু পিহুর ভঙ্গি বদলাচ্ছে না দেখে, সুমনা একটা বুদ্ধি আটে । সেই অনুযায়ী মুরগীর সাউন্ড বাজায় মোবাইলে। মেঘ, সুমনা আর সামিয়া তিনজন মুরগীর ডান্স শুরু করে।
এক হাত মাথায়, এক হাত কোমড়ে, একবার ডানে নিচু হয়ে হাঁটে, তো একবার বামে। পিহু তাদের নাচ দেখে হেসে উঠে। তার হাসি দেখে মেঘরাও খুশি হলো। সে রাত তাদের হাসি ঠাট্টায় পার হয়ে গেল। পিহুও কিছুটা নরমাল হয় । এর মধ্যে সামিয়ার সঙ্গে মেঘের বন্ডিংও কিছুটা ভালো হলো।
পরেরদিন সকাল ৮ টায় সবাই নাস্তার জন্য নিচে নামে। নাস্তা করেই সবাই ধীরে ধীরে রেডি হতে শুরু করবে। ১১ টায় রওয়ানা হবে। সেন্টার বেশ দূরে। রুদ্ররা সবাই নাস্তার টেবিলে বসতেই হঠাৎ, পাশে কেউ ধুম করে পড়ার শব্দ শুনে চমকে তাকায় দেখল…
চলবে……
[আপনাদের রেস্পন্স কমে যাচ্ছে। লেখার উৎসাহ ও চলে যাচ্ছে। পড়েন এতো মানুষ অথচ রিয়েক্ট দিতেই সব কিপ্টামি। ]
Share On:
TAGS: আড়ালে তুমি সাইদা মুন, সাইদা মুন
CLICK HERE GO TO OUR HOME PAGE
-
আড়ালে তুমি সাইদা মুন পর্ব ৩৬
-
আড়ালে তুমি সাইদা মুন পর্ব ১২
-
আড়ালে তুমি সাইদা মুন পর্ব ২০
-
আড়ালে তুমি সাইদা মুন পর্ব ৩০
-
আড়ালে তুমি সাইদা মুন পর্ব ১৩
-
আড়ালে তুমি সাইদা মুন পর্ব ২
-
আড়ালে তুমি সাইদা মুন পর্ব ২৯
-
আড়ালে তুমি সাইদা মুন পর্ব ২৭
-
আড়ালে তুমি সাইদা মুন পর্ব ৬৪
-
আড়ালে তুমি সাইদা মুন পর্ব ৪০