Golpo romantic golpo আড়ালে তুমি সব পর্বের লিংক সাইদা মুন

আড়ালে তুমি সাইদা মুন পর্ব ৩৫


#আড়ালে_তুমি |৩৫|

#_সাইদা_মুন 

রুদ্ররা যেখানে, সেই স্পটে বোমা বিস্ফোরিত হয়েছে। সাথে সাথে যে চ্যানেলে সাক্ষাৎ দিচ্ছিল তা বন্ধ হয়ে গেছে।

মেঘ দৌড়াচ্ছে, উদ্দেশ্য রুদ্র যেখানে আছে সেখানে যাবে। বাসায় গাড়ি যে আছে সেই খেয়াল নেই। রুদ্রের মা তখনই সেন্সলেস হয়ে যান, তাকে সবাই সামলাতে সামলাতে এদিকে মেঘ দৌড়ে বেরিয়ে পড়ে। পিহু তার চাচির কাছে মাকে রেখে গাড়ি নিয়ে বের হয় মেঘের পিছে।

কিছু দূর যেতেই মেঘের দেখা পায়। তাকে গাড়িতে তুলে রওনা দেয়। মেঘ কাঁদছে খুব,

-“পিহু তাড়াতাড়ি চালা না, উনি… উনি ঠিক আছেন তো? উনার কিছু হয়নি তো…”

-“মেঘ দোয়া কর ভাইয়ার যেন কিছু না হয়। নিজেকে স্ট্রং কর…”

কিছুক্ষণের মধ্যেই ঘটনাস্থলে চলে আসে। মানুষের মাথায় মানুষ, দৌড়াদৌড়ি করছে। অনেক মানুষ আহত হয়েছে, অনেকে পুড়ে গেছে সেখানেই। ফায়ার সার্ভিস এসেছে, অ্যাম্বুলেন্সে আহতদের নিয়ে যাচ্ছে। ভেতরে আগুন এখনো জ্বলছেই। আশেপাশে মানুষের আর্তনাদ, মেঘের এসব দেখে বুক কেঁপে ওঠে। রুদ্র… রুদ্রের কিছু হয়নি তো।

আর্মির লোকেরা পুরো এলাকা বন্ধ করে দিয়েছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে নেই, অনেকেই ভেতরে আটকে আছে। মেঘ দৌড়ে সেদিকে যায়, রুদ্ররা যে স্টেজে বসে ছিল তা আগুনে পুড়ছে। মেঘের যেন দুনিয়া অন্ধকার হয়ে যায়। দ্রুত ভেতরে ঢুকতে যাবে, তবে আর্মি, পুলিশেরা তাকে আটকে দেয়। তাও সে জোর করে ঢুকতে চায়, তা দেখে মহিলা পুলিশ কয়েকজন তাকে আটকে রাখে। মেঘ তাদের কাছে বারবার মিনতি করছে, তাও তারা ছাড়ছে না,

-“দয়া করে ছাড়ুন, আমার…আমার স্বামী ভেতরে আছে। উনাকে বাঁচাতে হবে, ছাড়ুন দয়া করে।”

-“নো ম্যাম, আমরা আপনাকে যেতে দিতে পারি না। ভেতরে গেলে আপনার লাইফ রিস্কে পড়বে।”

পিহু তার পিছু পিছু আসে, তাদের থেকে মেঘকে ছাড়িয়ে নেয়। পিহুকে দেখে পুলিশের একজন এস আই এগিয়ে আসে,

-“পিহু মা, তুমি এখানে কী করছো? বাসায় যাও, এই জায়গা সেফ না…”

-“আ…আঙ্কেল ভাইয়া? ভাইয়া কোথায়, ঠি…”

পিহুর কথা শেষ হওয়ার আগেই মেঘ দ্রুত বলে,

-“আ… আপনারা উনার সেইফটির জন্য ছিলেন না? উনি কোথায়? আমার রুদ্র কোথায়? উনার কিছু হলে আপনাদের ছাড়বো না… সব হয়েছে আপনাদের সিকিউরিটি সিস্টেমের ঘাটতির জন্য…”

মেঘ ভেঙে পড়ে, একদম মাটিতে বসে পড়ে,

-“উনাকে সুস্থভাবে এনে দিন প্লিজ, বলুন উনি ঠিক আছেন…”

পিহু আর মহিলা পুলিশ কয়েকজন ধরে মেঘকে উঠায়। পুলিশ এস আই পিহুর দিকে তাকাতেই সে বলে,

-“ভাইয়ার বউ…”

উনি মুচকি হেসে মেঘকে ভরসা দিয়ে বলেন,

-“চিন্তা করো না মা, তোমার হাসব্যান্ড ঠিক আছে। একটু ইনজুরি হয়েছে, তাকে আগেই আমাদের টিম দিয়ে মেডিকেলে পাঠিয়ে দিয়েছি।”

মেঘ দ্রুত বলে,

-“কো… কোন মেডিকেলে…?”

-“ঢাকা মেডিকেলে আছে। দাঁড়াও, আমার টিমকে বলছি, তোমাদের নিয়ে যাবে…”

পিহু বলে,

-“না না আঙ্কেল, আমরা গাড়ি নিয়েই এসেছি। ধন্যবাদ আঙ্কেল…”

মেঘকে নিয়ে পিহু চলে ঢাকা মেডিকেলের উদ্দেশ্যে। কেবিনে ঢুকে রুদ্রকে দেখে মেঘের যেন প্রাণ ফিরে আসে। রুদ্রের বুকে ব্যান্ডেজ করা, চোখ বন্ধ, শুয়ে আছে বেডে। মেঘ দ্রুত এগিয়ে গিয়ে সেই অবস্থায় তাকে জড়িয়ে ধরে। তখনই ডাক্তার সতর্কতার সঙ্গে বলেন,

-“উনার বুকের ডান পাশে বেশ চোট পেয়েছে, এভাবে ধরবেন না ম্যাম।”

মেঘ চটজলদি ছেড়ে দেয়। ডাক্তারের উদ্দেশ্যে বলে,

-“উনার চোখ বন্ধ কেনো? ঠিক আছেন তো?”

-“উনি এখন সেফ। শুধু বুকে ধারাল কিছুর সাথে লেগে বেশ খানিকটা কেটে গেছে। নিয়মিত ওষুধ খেলে আর ড্রেসিং করলে, এটা ঠিক হতে বেশিদিন লাগবে না। আর আগুনের ধোঁয়া নাকে মুখে ঢুকে জ্ঞান হারিয়েছিল, ইনজেকশন দিয়ে দিয়েছি। কিছুক্ষণের মধ্যেই জ্ঞান ফিরবে।”

বলেই ডাক্তার চলে যায়। মেঘ রুদ্রের পাশের চেয়ারে বসে, নিজের দুই হাত দিয়ে রুদ্রের হাত শক্ত করে ধরে রাখে। একটু পরপর ঠোঁট ছোয়ায় সেখানে।

পিহু কল দিয়ে সবাইকে জানিয়ে দিয়েছে রুদ্র সেফ আছে। সবাই এতক্ষণে রওনা দিয়ে দিয়েছে এখানে আসার উদ্দেশ্যে। কলে কথা বলে পাশ ফিরে দেখে…

মেঘ রুদ্রের দিকে ঝুঁকে তার কপালে নিজের ঠোঁট স্পর্শ করে।

-“আমার ভাইটা অচেতন, তাই বলে তার এই অবস্থার সুযোগ নিবি। দাঁড়া তোর নামে মামলা দেবো…”

মেঘ গভীরভাবে একটা চুমু দিয়ে মাথা তুলে পিহুর দিকে ঘাড় ঘুরিয়ে বলে,

-“হুহ, তোর যে ভাই, জেগে থাকলে মনে হয় সিংহের সামনে দাঁড়িয়ে আছি। এখন কত কিউট লাগছে, সো ডোন্ট ডিস্টার্ব মি ননদিনি…”

পিহু মিটিমিটি হেসে বেড়িয়ে যায়।

-“কিন্তু আমি তো সেই কখন থেকেই সজাগ…”

রুদ্রের কণ্ঠে মেঘ ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে তাকায়। রুদ্র মেঘের দিকেই বাঁকা হেসে তাকিয়ে। চুর ধরা পড়ে যাওয়ার মতো অবস্থা। লজ্জায় মেঘ মিইয়ে যায়, মাথা নিচু করে ফেলে। টমেটোর মতো গালজোড়া লাল হয়ে গেছে। রুদ্র মেঘকে লজ্জা পেতে দেখে আরও লজ্জা দিতে বলে,

-“আমার তো সন্দেহ হচ্ছে, রাতে তোমার পাশে যে ঘুমাই, আমার ঘুমের সুযোগ নিয়ে না জানি কী কী করে ফেলেছ…”

মেঘের তো কান দিয়ে ধোঁয়া বেড়োচ্ছে। চোখমুখ কুঁচকে দ্রুত বলে,

-“এই মোটেও না…”

-“গ্যারান্টি আছে নাকি? এখনই…”

রুদ্রের মুখে হাত দিয়ে ধরে বন্ধ করাতে, রুদ্র মেঘকে টেনে নিজের উপর ফেলে। বুকে হালকা লাগতেই চোখমুখ কুঁচকে ফেলে। মেঘ দ্রুত উঠে,

-“বেশি ব্যথা পেয়েছেন? ডাক্তারকে ডাকবো? দাঁড়ান ডাকছি…”

মেঘ যেতে নেয়, রুদ্র হাত ধরে আটকে দেয়,

-“এতো হাইপার কেন হচ্ছো বউ, আমি ঠিক আছি। এখানে চুপচাপ বসো…”

মেঘের দিকে ভালোভাবে তাকাতেই দেখে বাসায় যেমন ছিল তেমনি চলে এসেছে। ভ্রু কুঁচকে রুদ্র জিজ্ঞেস করে,

-“এভাবেই চলে এসেছো…”

রুদ্রের কথায় মেঘ নিজের দিকে তাকিয়ে নিজেই চুপসে যায়। ওড়না ঠিক করতে করতে বলে,

-“আ…আসলে সেই খেয়াল ছিল না। টেনশনে এভাবেই চলে এসেছি… খারাপ লাগছে?”

রুদ্র দুষ্টু হেসে বলে,

-“আমার বউকে যেকোনো ভাবেই সুন্দর লাগে। কাপড় পড়েও, কাপড় ছাড়াও, যদিও এক অবস্থায় দেখেছি অন্যটা দেখার বাকি….”

মেঘের যেন ইচ্ছে করছে রুদ্রের মুখে সেলাই করে দিতে। লজ্জায় অন্যদিকে ফিরে বসে। মনে মনে রুদ্রকে গালি দিচ্ছে। বেশ কিছুক্ষণ নীরবতায় কাটে। হঠাৎ রুদ্রের প্রশ্নে মেঘ তার দিকে ফিরে,

-“তোমার বডি কাউন্টস কত?”

-“৬০… আপনার?”

মেঘের কথায় রুদ্রের চোখ কোটর থেকে বেরিয়ে আসার উপক্রম,

-“কিইইই…”

রুদ্রের রিয়্যাক্ট করা দেখে মেঘ ভাবে তার ওজন বেশি দেখে এমন রিয়্যাক্ট করছে, আমতা-আমতা করে কমিয়ে বলে,

-“এতো চেঁচাচ্ছেন কেন? মাত্র ৫৮ই তো, আপনার কত?”

রুদ্র বিস্মিত নয়নে বলে,

-“০…”

-“আর ইউ কিডিং উইথ মি? এমন গন্ডারের মতো শরীর নিয়ে বুঝি ০ কেজি…”

রুদ্র অবাক হয়ে বলে,

-“ওয়েট, কেজি মিনস… তুমি বডি কাউন্ট বলতে কী বুঝছো…?”

মেঘ ভাব নিয়ে বলে,

-“আমি মূর্খ নাকি? বডি কাউন্টস মিন কত কেজি….”

রুদ্র ফুঁস করে বলে,

-“ইডিয়েট, বডি কাউন্ট লিখে গুগলে সার্চ দে…”

মেঘ আশেপাশে খুঁজে দেখে তার ফোন নেই। হয়তো বাসায় রেখেই এসেছে। রুদ্র তার ফোনটা এগিয়ে দেয়। মেঘ সার্চ দিতেই, চোখ বড় বড় হয়ে যায়, সাথে সাথে মুখ দিয়ে বের হয়,

-“আস্তাগফিরুল্লাহ… একও না… একও না…”

রুদ্র ঠোঁট কামড়ে হাসে। বউটা যে তার ইনোসেন্ট বেশ বুঝতে পারছে।

-“যাক বউটা ইনোসেন্ট তাহলে। বাই দ্য ওয়ে, তুমি চাইলে ১ করে দিতে পারি….”

মেঘ কিছু বলতে যাবে তার আগেই কেবিনে হুড়মুড়িয়ে বাড়ির সবাই ঢুকে। সিদ্দিকা বেগম তো ছেলে দেখে আরও কাঁদছে,

-“আব্বু, তোমার বেশি কিছু হয়নি তো? দেখি। এখানে আর কোথায় লেগেছে? বেশি কষ্ট হচ্ছে?”

রুদ্র মাকে সান্ত্বনা দিয়ে বলে,

-“আম্মু আমি একদম ঠিক আছি। এটা হালকা একটু চোট লেগেছে, ঠিক হয়ে যাবে কয়েকদিনে।”

সিদ্দিকা বেগম স্বামীর দিকে রাগী চোখে তাকিয়ে বলেন,

-“বলেছিলাম আমার ছেলেকে এসব রাজনীতিতে না ঢুকাতে। আজকে দেখলে তো? এই ভয়েই আমি না করেছিলাম, শুনলে না আমার কথা তোমরা…”

এরশাদুল চৌধুরী স্ত্রীর কথায় চুপচাপ থাকেন। রেগে আছে বউ, এখন আবার কিছু বললে আরও রেগে যাবে। এর থেকে চুপ থাকা শ্রেয় মনে করেন। একে একে সবাই রুদ্রের সাথে কথা বলে। মেঘ এক সাইডে দাঁড়িয়ে আছে। হঠাৎ সামিয়ার দিকে নজর যেতেই দেখে চোখ-মুখ ফোলা। কেঁদেছে হয়তো, একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলে “উনাকে ভীষণ ভালোবাসে মেয়েটি, কিন্তু…”

রুদ্রকে কালকে সকালেই বাসায় নিতে পারবে। তাই সন্ধ্যার দিকে সবাই চলে আসে বাসায়। মেঘ থাকবে, রুদ্রের মা থাকতে চেয়েছিল কিন্তু জোর করে পাঠিয়ে দেয় রুদ্র। এমনি ছেলের টেনশনে প্রেসার বেড়ে গেছে। আর বাইরে পাহারা দিতে পুলিশ কনস্টেবল আছেই, তাই চিন্তা নেই।

———

রাত ৯টা,

মেঘ রুদ্রের মাথার পাশে বসে তার মাথা টিপে দিচ্ছে। তখনই হঠাৎ কেউ কেবিনে প্রবেশ করে। মেঘ তাকিয়ে দেখে, লম্বা চওড়া রুদ্রের বয়সী এক যুবক, পড়নে পাঞ্জাবি। রুদ্রও চোখ মেলে তাকায়, সাথে সাথে চোখমুখ শক্ত হয়ে যায়।

ছেলেটি ভেতরে ঢুকেই মেঘের দিকে তাকিয়ে থমকে যায়। মুখ দিয়ে অস্ফুটস্বরে বের হয়,

“মায়াবতী…”

মেঘ দ্রুত উঠে দাঁড়ায়, মাথায় ওড়নাটা ভালো করে দিয়ে সাইডে দাঁড়ায়। রুদ্র একবার মেঘের দিকে তাকিয়ে কিছু ইশারা করতেই সে রুমের সাথে যুক্ত বারান্দায় চলে যায়।

-“মি: ফারহান রাশেদ ভূঁইয়া, কী মনে করে এখানে…?”

ফারহান কুরুর হাসি দিয়ে বলে,

-“বিপক্ষ দলের নেতা যদি ইলেকশনের আগেই ভেঙে পড়ে, একটু দেখতে আসা তো আমার জন্য সুন্নত…”

রুদ্র উঠে হেলান দিয়ে বসে বলে,

-“রুদ্র চৌধুরী কখনো ভেঙে পড়ে না। ইলেকশনের আগেই দেখছি চোখের পাওয়ার কমে যাচ্ছে। সারাক্ষণ বুঝি আমার উপরই নজর রাখেন?”

ফারহান হেসে বলে,

-“মেডিকেলের বেডে শুয়েও তেজ একই দেখছি…”

রুদ্র ফারহানের কথায় কান না দিয়ে তার বডিগার্ড একজনকে ডেকে বলে দুইটা কফি দিয়ে যেতে। ফারহান উঠে বলে,

-“আরে তার দরকার নেই, আমি বসবো না, চলেই যাবো।”

বারবার বারান্দার দিকে উঁকি দিচ্ছে। তা দেখে রুদ্র হেসে বলে,

-“ওইদিকে নজর দিয়ে লাভ নেই, রুদ্র চৌধুরীর সিল মারা সম্পদ।”

ফারহানের ভাবভঙ্গি বদলে যায়। মেয়েটিকে ভেবেছে রুদ্রের বোন হবে, তবে সে যে বিয়ে করেছে জানা নেই। নিজেকে স্বাভাবিক করে সেও হালকা হেসে বেড়িয়ে যায়। যেতে যেতে শয়তানি হেসে ভাবে,

“তবে ফারহানের চোখ যেহেতু পড়েছে, ফারহান কি ছেড়ে দেবে…?”

লোকটিকে যেতে দেখেই মেঘ বারান্দা থেকে বেড়িয়ে আসে। রুদ্র মেঘকে দেখে বলে,

-“দরজা ভেতর থেকে লাগিয়ে পাশে এসে শুয়ে পড়…”

মেঘ বাধ্য মেয়ের মতো রুদ্রের কথা শোনে। রুদ্রের বা পাশে শুয়ে পড়ে, রুদ্রও তার বউকে আলতোভাবে বুকে জড়িয়ে নেয়। সারাদিনের সব ধকল যেন এখানেই এসে শেষ। কপালে ভালোবাসার পরশ এঁকে দিয়ে ঘুমে তলিয়ে যায় দুজনেই।

———

পরের দিন, এরশাদুল চৌধুরী নিজে এসে তার ছেলেকে একদম সেফলি বাসায় নিয়ে আসে। ছেলের বিপদ কেটে বাসায় এসেছে বলে রুদ্রের দাদির কথায় মসজিদের ইমাম সাহেবসহ আরও কয়েকজন হুজুর দাওয়াত দেন দোয়া পড়াতে। তাই সকাল থেকে রান্না চলছে চৌধুরীতে।

১২টার দিকে বাসায় ফিরে রুদ্ররা। রুদ্রকে ঘরে নিয়ে আসে মেঘ। সবাই দেখে যায় একের পর এক এসে। সবাই যেতেই রুদ্র উঠতে নেয়, মেঘ এসে সামনে দাঁড়িয়ে বলে,

-“ডাক্তার বলেছেন বেড রেস্ট নিতে, কোথায় যাচ্ছেন?”

-“গোসল করিনি, কেমন কেমন লাগছে। গোসল করতেই উঠেছিলাম…”

-“আচ্ছা চলুন আমি সাহায্য করছি, একা পারবেন না। এখানে পানি লাগাতে মানা করেছে। শরীর মুছে দেবো।”

রুদ্র মেঘের কথায় মাথা নাড়ে। মেঘ রুদ্রকে ধরে নিয়ে গিয়ে শরীর মুছে দিয়ে, মাথা ধুয়ে দেয় তারপর মুছে দেয় শরীর। পরার জন্য কাপড় এগিয়ে দিয়ে বলে,

-“নিন, এখন চেঞ্জ করুন…”

রুদ্র ভ্রু কুঁচকে বলে,

-“সব করতে পারলে চেঞ্জ করানো পারবে না? এটাও তুমি করিয়ে দেবে…”

মেঘ থতমত খেয়ে বলে,

-“ক… কী বলছেন! ছি ধরুন তো…”

বলেই দ্রুত বেড়িয়ে আসে। “খবিশ লোক হেব্বি চালাক, খালি খালি তাকে লজ্জায় ফেলে…”

রুদ্র বউয়ের কাণ্ড দেখে হেসে চেঞ্জ করে চলে আসে। তারপর মেঘ খাবার এনে নিজের হাতেই খাইয়ে, ওষুধ খাইয়ে দেয়। রুদ্র বেশ উপভোগ করছে বউয়ের যত্ন।

দুপুরের দিকে সব হুজুররা চলে আসে। দোয়া করে, খাবার খেয়ে যেতে যেতে তাদের ৩টা বেজে যায়। মেঘ রান্নাঘরের সব গুছিয়ে রুমে আসে মাত্র।

-“রেডি হয়ে নাও…”

মেঘ চিন্তিত হয়ে বলে,

-“কেন…?”

-“তোমার আব্বুর কবরে না যাবে বললে…?”

-“না আজকে যাবো না, অন্যদিন। এমনিতেও আপনার শরীর ভালো না…”

রুদ্র কিছু বলতে নেবে, হঠাৎ তার ফোনে মেসেজ আসে। ফোন অন করতেই চোখমুখ শক্ত হয়ে যায়,

“চল ডিল করি, তোর বউকে আমার হাতে তুলে দে। আর আমি ক্ষমতা তোর হাতে তুলে দেবো…”

চলবে…

Share On:

TAGS: ,



CLICK HERE GO TO OUR HOME PAGE
Related Posts
 

0 Responses

Leave a Reply