Golpo

আড়ালে তুমি পর্ব -৩৮


#আড়ালে_তুমি

#সামিয়া_সারা

#কাজিন_রিলেটেড_গল্প

পর্ব -৩৮

আকবর দেওয়ান এর অফিস রুমে ঈশান মাথা নিচু করে বসে আছে। নীলকে কল করেছিলেন কিছুক্ষণ আগেই, বর্তমানে দুজনেই তার অপেক্ষায় বসে আছে। নীল-ইনায়া বাস্কেটবল কোর্ট থেকে সরাসরি অফিস রুমে আসে। দরজা খুলতেই ইনায়া ঈশানকে বসা অবস্থায় দেখে থমকে যায়। তবে নীলের চেহারার কোনো পরিবর্তন হয় না। 

নিজের ফরমাল শার্ট প্যান্ট বের করতে করতে বলল,

-কোনো সমস্যা হয়েছে।

আকবর দেওয়ান গলা খাকারি দিয়ে বললেন,

-ও আমাদের ভার্সিটির নতুন স্টুডেন্ট। 

-ওহ্ আচ্ছা।

-তোমায় নিয়ে অভিযোগ এনেছে নীল। তুমি ভার্সিটিতে আজ জয়েন হলে। ওদের তো ক্লাস নেওয়ার কথা না আজ থেকে। তাহলে তুমি কেন নিলে?

-আমার চিন্তা ভাবনা প্রাকটিকাল বাবা। ওরা একদিনের জন্য এগিয়ে থাকল, বিষয়টা ভালো না? আমার পরিচয় শুনে ওদের জীবনে তো কোনো পরিবর্তন আসবে না। কিন্তু কোনো ভালো জ্ঞান দিলে তা কাজে লাগাতে পারবে।

আকবর দেওয়ান অসহ্য হলেন নীলের কথায়। বললেন,

-ওরা স্কুল কলেজের বাচ্চা না নীল। ক্লাসের বাইরে কোনো ভার্সিটির স্টুডেন্ট কে দেখেছো দাঁড়িয়ে থাকতে? 

-ও বেয়াদবি করেছে।

আকবর দেওয়ান ঈশানের দিকে তাকান। বলেন,

-এ বিষয়ে তো কিছু বলোনি।

ঈশান মাথায় হাত রাখে। বলে,

-কোনো বেয়াদবি করিনি স্যার। তিনি আমাকে অফ টপিকের প্রশ্ন করেছিলেন,আমি শুধু বলেছি যে এটা তো আমাদের এই সেমিস্টারেও নেই।

আকবর দেওয়ান ইশারায় আশ্বাস দিয়ে ঈশানকে চলে যেতে বললেন। 

ঈশান চলে যেতে তিনি ইনায়ার মাথায় হাত দিয়ে বললেন,

-আম্মু,ঐ ছেলেটা তোমাকে বিরক্ত করেছে?

ইনায়া চমকে তাকায় আকবর দেওয়ান এর দিকে। নীল আর ঈশান এর মধ্যবর্তী বিষয়ে হঠাৎ তাকে কেন প্রশ্ন টা করলেন তা বোধগম্য হয় না ইনায়ার কাছে। 

আস্তে আস্তে বলল,

-তুমি বুঝলে কী করে বড়বাবা? 

-তার মানে বিরক্ত করেছে,তাই তো?

-হ্যাঁ,শুরু থেকেই একটু বিরক্ত করছিল।

আকবর দেওয়ান নীলের দিকে আড় চোখে তাকালেন। এদিকে নীল মুর্তির মতো দাঁড়িয়ে বাবাকে দেখছে। নিজেকে একই সাথে শান্ত ও কঠোর করে বলল,

-তোমরা থাকো,আমি দেখে আসি প্রোগ্রাম এর জন্য কাজ সব ঠিকঠাক আগাচ্ছে নাকি।

নীল কারো জবাবের জন্য আর অপেক্ষা করে না। হনহন করে বেরিয়ে যায় রুম থেকে। দরজা খুলে একই সাথে বের হয় নীল,প্রবেশ করে আনান। বড় ভাই এর এমন লাজুক ভঙ্গিতে বাইরে যাওয়া দেখে প্রশ্নবোধক দৃষ্টিতে তাকায় আনান,আকবর দেওয়ান এর দিকে। আকবর দেওয়ান হাসলেন উচ্চস্বরে। 

আনান আর ইনায়ার দিকে তাকিয়ে বললেন,

-হাহা! বাড়িতে মনে হচ্ছে বড় সড় কোনো আয়োজন হতে চলেছে।

ইনায়া অবাক হয়ে তাকায়। তারা মনের ভেতরে প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে।প্রশ্ন আসছে,

“কীসের আয়োজন?”

আনান কপাল কুঁচকে তাকিয়ে রয় আকবর দেওয়ান এর দিকে। মাথা টা হালকা উঁচু করে ভ্রু কুঁচকে আড় চোখে  তাকিয়ে বলল,

-বুঝলাম না বড়বাবা।

-আমি বেশ প্রেম প্রেম গন্ধ পাচ্ছি চারদিকে।

আকবর দেওয়ান এর মুখে এমন রসিকতার কথা এই জীবনে প্রথম শুনলো আনান। সব সময় গম্ভীর থাকা মানুষটা এমন কথা বলল কেন তা আনানের মনের প্রথম প্রশ্ন। বলল,

-কার কথা বলছেন বড়বাবা?

-তোর বড় ভাই! তার ভাব সাব বুঝতে পারছি। যদিও আগেই মনে হতো। তবে আমি আর লাই দিয়ে মাথায় তুলতে চাইনি বুঝলি তো। এখন ভার্সিটিতে জয়েন করল। তাই একটা ব্যাবস্থা করা ই যায় । কী বলিস আনান?

আনান জবাব দেয় না। সরাসরি তাকায় ইনায়ার দিকে। ইনায়ার মন খারাপ। মুখ ভার করে বলল,

-আমি তো আগেই বুঝেছিলাম। 

আকবর দেওয়ান হেঁসে বললেন,

-বাহ্! আপনিও সব জানেন আম্মা?

-অবশ্যই জানি। তবে বড়বাবা,ঐ মেয়ে ভালো না। নীল ভাই ঐ মেয়ের জন্য আমার সাথে অনেক খারাপ ব্যবহার করে। তুমি এ বিয়ে দিও না।

আকবর দেওয়ান এর হাসি মিলিয়ে যায় ইনায়ার কথা শুনে। অবাক হয়ে বলল,

-কোন মেয়ে?

-এই যে নীল ভাই যাকে ভালোবাসে। ঐ মেয়ে না কি আমার থেকে অনেক ভালো পড়াশোনাতে। ঐ পা*গলটার জন্য আমাকেও এতো পড়তে হয়। 

শেষ লাইনটা ইনায়া ঠোঁট ভেটকে বলল। আকবর দেওয়ান মলিন মুখে বললেন,

-হতাশ মা! খুবই হতাশ হলাম। আপনার বুদ্ধি পরিমাপ করতে পেরেছি। 

-বড় বাবা,একটা কথা বলি?

-বলুন আম্মা।

-ঐ মহিলা এই ভার্সিটিতে জয়েন করেছে। পারলে বের করে দাও।

-ও বাবা,তোর নীল ভাই হলো বাঘ। তাই এতো সাহস নেই আমার। তবে বাইরের কোনো খারাপ মেয়ের সাথে বিয়ে ঠিক করব না। তুই এখন বাড়ি যাওয়ার প্রস্তুতি নে। 

-আচ্ছা,আমি নীল ভাই এর কাছে যাচ্ছি। তোমরা গাড়িতে এসো।

ইনায়া রুম থেকে চলে যায়। আনান ফ্লোরের দিকে তাকিয়ে ঘনঘন নিঃশ্বাস ফেলছে। আকবর দেওয়ান একমাত্র ভরসা ছিল আনানের। তবে তার এতো সরল আচরন আনানের শ্বাস ভারী করে তুলছে। 

.

.

.

আকবর দেওয়ান এর অফিস রুম  থেকে আনান সরাসরি বাসায় চলে আসে।  দোতলায় উঠেই নিজের ঘরে গিয়ে আগে ওয়াশরুমে যায়। বেশ অনেকক্ষন সে ঠান্ডা পানির নিচে দাঁড়িয়ে। শরীর ঘেমে টিশার্ট, প্যান্ট আগে থেকেই ভিজে ছিল। সে অবস্থাতেই আবার ভিজতে থাকে আনান। ঘন্টাখানেক পরেও আনানের কোনো খোঁজ খবর না পেয়ে শিমু জাহান তার ঘরে আসলেন। দুপুরের খাবারের সময় পার হয়ে যাচ্ছে। বেশ অনেক্ষণ যাবৎ ডাকতে থাকেন আনানকে,

-আনান…. এই আনান! কতক্ষন লাগে!

শিমু জাহানের কানে একটানা পানি পড়ার আওয়াজ আসছে। তিনি এগিয়ে বাথরুমের দরজার সাথে কান লাগিয়ে আস্তে আস্তে বললেন,

-আনান… আব্বু? 

আনানের থেকে কোনো জবাব না পেয়ে পরপর দুবার দরজায় ধাক্কা দেয়। 

-এই কী হলো? ঠিক আছিস?

আনান ভেজা জামা কাপড় পরেই দরজা খোলে। চোখের রগ লাল হয়ে বেশি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। শিমু জাহান আতঙ্কে আনানের কপালে হাত দেয়। বলল,

-কী হয়েছে? শরীর খারাপ লাগছে বাবা? রুবিনাকে ডাকব?

শিমু জাহান দরজার দিকে ফিরতেই আনান হাত আঁকড়ে ধরে। কাঁপা গলায় বলল,

-মা কে ডেকো না বড়মা।

শিমু জাহানের কাছে স্বাভাবিক লাগছে না পরিস্থিতি। তোয়ালে  নিয়ে এলো দ্রুত। আনানকে চেয়ারে বসিয়ে বলল,

-জ্বর আসবে তো! 

মাথা ভালো করে মুছে দিতে দিতে বলল,

-আমায় বল তো,কী হয়েছে?

-কিছু না বড়মা।

-তাহলে শুকনো কাপড় পরো। ঠান্ডা জ্বর হবে।

-আমার বেঁচে থাকতে ইচ্ছে করছে না।

-আনান,তাকা তো আমার দিকে। পুরো সংসারের কাজ করি এই হাত দিয়ে,এমন ঠাটিয়ে এক চড় দেব না! শক্ত হাতের চড় খেলে মাথা থেকে সব ভুত নেমে যাবে। এসব কথা যেন না শুনি।

আনানের কান্না করার শব্দ আসে। রয়ে সয়ে করা এক কান্নার শব্দ। এ পুরুষ মানুষের কান্না। কী ভারী! কী গম্ভীর। এতো গভীরতা সে শব্দে,শুনলে যে কারো বুক ভারি হয়ে আসবে। ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কান্নার সাথে কয়েকটা কথা ভেসে আসে শুধু।

-আমার আর বাঁচার ইচ্ছা নাই। আত্নহত্যা করলে খুব পাপ হবে? 

শিমু জাহান আনানের মুখে হাত দিলেন। তার চোখ ছলছল করছে। ছেলের মতো করেই বড় করা আরেক ছেলের এমন আহাজারি তে বুক কাঁপছে এ মায়ের। বললেন,

-ছিহ্ বাবা। আস্তাগফিরুল্লাহ,এসব বলে না। কী হয়েছে বল আমায়? 

শিমু জাহানের চোখ দিয়ে পানি পড়ছে। আনানের মাথায় হাত বুলিয়ে বলল,

-না বললে তোর বড়মা খুব বকবে কিন্তু আনান।

-তোমায় বলে কী লাভ হবে বড়মা? তুমি কিছু করতে পারবে না।

-এই পা*গল,তাকা আমার দিকে। আমাকে দেখে সবাই ভয় পায়। কত ক্ষমতা আমার তুই তো জানিস ই না। কে কি বলেছে বল তো। দেখ কী করি আমি।

-বড় ভাইয়া আর ইনুপু কখন আসবে? 

বলতে বলতে আনায়া ঘরে ঢুকেছে এমন সময়। আনান তার গলার শব্দ শুনে দ্রুত নিজের মুখ লুকায়। শিমু জাহান বিষয়টা আড়াল করতে আনায়াকে বলল,

-অনু! খাবার সব রেডি করা হয়েছে নাকি দেখতো। আর তোর বড়বাবাকে আজ তুই খেতে দিবি। দেখি তো কেমন পারিস। যাও পাখি।

আনায়া বিরাট খুশি। এতো বড় একটা দায়িত্ব পেলো। তিরিং বিড়িং করতে করতে নিচে চলে যায়।শিমু জাহান আনানের পাশে চেয়ার টেনে বসে বলল,

-এই ভেজা কাপড় পরিবর্তন করে নাও এখন।

-পরে করছি।

-কী হয়েছে বল তাহলে।

-বললে আমায় সাহায্য করবে?

-অবশ্যই বাবা।

-কথা দাও…

শিমু জাহান হাত বাড়িয়ে আনানের হাতে রাখে। বলল,

-কথা দিলাম। বলো এখন।

-আমি ইনায়াকে ভালোবাসি বড়মা…

-ভালো তো। ভাইরা বোনকে ভালোবাসে। স্বাভাবিক।

-ভাই হিসেবে না..

শিমু জাহান থমকে যায় কিছুক্ষনের জন্য। আনানের প্রকাশ করা ভালোবাসা দেখছে সে আজ। তবে এক অপ্রকাশিত ভালোবাসাও পূর্বে তার নজর কেড়েছিল। আনানকে কী বলবে ঠিক বুঝতে পারছে না। হাই প্রেশারের রোগী শিমু জাহান। গালে কপালে হাত দিয়ে বলল,

-শরীর টা খারাপ লাগছে। প্রেশার এর ওষুধ টা নিয়ে আয় তো।

আনান তড়িঘড়ি করে ওষুধ পানি নিয়ে এসে শিমু জাহান এর হাতে দেয়। সাথে শক্ত কণ্ঠে বলে,

-আমি বাঁচতে চাই না, সত্যিই বাঁচতে চাই না । ওকে অন্য কারো সাথে দেখার চেয়ে ম*রে যাওয়া ভালো।

শিমু জাহান এক ঢোক পানির দিয়ে ওষুধ গিলে বললেন,

-কারো সাথে দেখতে হবে না….

-বড়বাবা বাড়িতে বিয়ের আয়োজন করবেন খুব তাড়াতাড়ি। আমি আজ আত্মহত্যা করব। তুমি না ডাকলে ভেতরেই কিছু করে ফেলতাম।

-চুপ কর আনান। বললাম তো আমি ,এমন কিছু হবে না। আমার উপরে কারো কথা বলার সাহস নেই। অন্তত এই বিয়ে নিয়ে। 

আনান দুই হাত তোলে মোনাজাতের ভঙ্গিতে। শিমু জাহানকে উদ্দেশ্য করে বলল,

-বড় মা তুমি কথা দিচ্ছো কিন্তু। তবে ইনায়াকে আমি না পেলে যেন মরে যা,এই দোয়াই করছি।

আনান পুনরায় বাথরুমে যায়। চোখ টকটকা লাল। আকবর দেওয়ান ছিল আনানের ভরসা। উপায় না পেয়ে শিমু জাহানকে শেষ ভরসা বানাতে হলো তার। নাক ঝেড়ে মুখে পানি নিল সে। শিমু জাহান কে সাথে নিয়েই খেতে যাবে ভেজা টিশার্ট আর প্যান্ট পরিবর্তন করে।

.

.

.

.

নীল আর ইনায়া বরাবরের মতো একসাথে ঢুকেছে বাসায়। শিমু জাহান আনানকে খাবার বেড়ে দিতে দিতে আড় চোখে তাকিয়ে তাদের দেখলেন। মুখ ভার করে নীলকে বললেন,

-এতো দেরী হলো কেন বাড়িতে আসতে?

-কাজ ছিল

-তোমার সাথের জনেরও?

ইনায়া বেশ অবাক হয় শিমু জাহানের গলার পরিবর্তিত স্বরে। কাছে এগিয়ে বলল,

-না না বড়মা,আমি তো নীল ভাই এর জন্যে অপেক্ষা করছিলাম।

-এতো অপেক্ষার কিছু নেই। নীল এখন প্রফেসর। তুই ছাত্রী । ছাত্রী আর স্যার কখনো একসাথে আসা যাওয়া করে? অসভ্যের মতো আচরণ। 

নীল সিঁড়ি দিয়ে উঠতে গেলেও থেমে যায় শিমু জাহানের কথা শুনে। তার কাছে এসে বলল,

-সমস্যা কী?

-সে কৈফিয়ত তোকে দিতে হবে?

-তোমার আচরণে পরিবর্তন হলে অবশ্যই সে পরিবর্তনের কারণ বলতে হবে। ওর সাথে এভাবে কেন কথা বলছো?

-যে তোমার নিজের মায়ের পেটের বোন না তার জন্যে নিজের মায়ের সাথে উচ্চস্বরে কথা বলবে না নীল! এই ভদ্রতা শিখিয়েছি?

-বোনের থেকেও বেশি কিছুর সম্পর্ক আছে দুনিয়াতে। ওকে ফাইন। আমি কিছু বলছি না। ওকে আমি আমার সাথে জোড় করে এনেছি। তাই তোমার যা বলার আমাকে বলবে। ইনুকে নয়।

কথা গুলো এক নাগাড়ে শীতল কণ্ঠে বলে ইনায়ার দিকে তাকায় নীল। ইনায়ার চোখ ছলছল করছে। মায়ের সমতুল্য বড়মা এভাবে কথা বলল আজ প্রথম বার। 

নীল ইনায়াকে ডাকে,

-ইনু… আয় আমার সাথে। এখানে দাঁড়িয়ে থাকলে মনে হয় বিষাক্ততা ছাড়া কিছু পাবি না।

ইনায়া নীলের পিছু পিছু দোতলায় যায়। কারো সামনে এতো আবেগী হয়ে পড়া যাবে না,কথা টা মনে মনে বলতে থাকে সে। নিজের ঘরে ঢুকে দরজা দিতে গেলেই নীল বলে উঠে,

-চোখ দিয়ে এক ফোঁটা পানি পড়লে তোর খবর আছে ইনু। 

নীলের চোখে আর চোখ রাখে না ইনায়া ।দরজা সজোরে বন্ধ করে দেয় সে। বিছানায় গিয়ে  উপর হয়ে শুয়ে ফুঁপিয়ে কেঁদে ওঠে। মিনেট দশেক পরে ফোন বেজে উঠলো তার। অচেনা নাম্বার,কেমন অদ্ভুত ও বটে। কোনো অ্যাপের মাধ্যমে করা এমন ধরনের। অনবরত কয়েকবার বাজার পরে ইনায়া  চোখ মুছে ফোন তোলে,

ভারী এক কণ্ঠস্বর ভেসে ওঠে ফোনের অপর প্রান্ত থেকে। 

-কান্না করছেন কেন ম্যাম?

ইনায়া আবারও চোখ মুছে আসে পাশে তাকিয়ে বলল,

-কে..কে?

-এতো দ্রুত ভুলে গেলেন?

-……..

-ম্যাসেজ দিলাম,কোনো রিপ্লাই নেই । সেজন্য কল করলাম। আপনার চোখের পানি আমি পছন্দ করি না। বুঝতে পেরেছেন? 

-হুঁ,আপনি সামিন আইয়াজ?

-ইয়েস! কিন্তু আপনি আমায় মনে রাখলেন কেন? সব ছেলেকেই মনে রাখেন? 

ইনায়া কল কেটে দেয়। স্বাভাবিক হয়ে বসে জামা কাপড় ঠিকঠাক করে। ভালো করে ওরনা নিতে নিতেই আরেকটা কল আসে। এই নাম্বারটাও অচেনা। তবে অদ্ভুত না।ইনায়া কল ধরতেই চিকন গলার কণ্ঠস্বর ভেসে আসে,

-ইনায়া,আমি সূচনা..

-হ্যাঁ বলো..

-কাল প্রোগ্রামে আসছো তো?

-হুম..

-শাড়ি পরতে হবে কিন্তু। মেয়েদের কোড নীল শাড়ি।ছেলেদের নীল পাঞ্জাবী।

-ওটা আমার জন্য প্রযোজ্য নয়। 

-মানে কী? 

-তোমাদের নতুন স্যার আমাকে বারণ করেছেন?

-কেন? কোনো অন্যায় এর শাস্তি? 

ইনায়া নিজেও জানে না কী কারণে নিষেধ করেছে। বলল,

-জানি না,তোমরা পড়ো। 

-ঠিক আছে….দেখা হচ্ছে..

(চলবে……)

#Running 

#episode:38

Written by #Samia_Sara

Story name: #আড়ালে_তুমি

আমার প্রিয় পাঠক পাঠিকারা, গল্পটি নিয়ে আপনাদের মন্তব্য শুনতে চাই। একদম সব্বাই কমেন্ট করে জানিয়ে দিন,কেমন লেগেছে আপনাদের কাছে। আর আগের পর্বে এতো ভালোবাসা দেওয়ার জন্য অনেক কৃতজ্ঞতা। ভালোবাসা নিবেন 🥺🫶🏻

Share On:

TAGS:



CLICK HERE GO TO OUR HOME PAGE
Related Posts
 

0 Responses

Leave a Reply