#আড়ালে_তুমি
#সামিয়া_সারা
#কাজিন_রিলেটেড_গল্প
পর্ব -৩৫
ইনায়া পরীক্ষা শেষ করে সবেমাত্র বেরিয়েছে। ভিড় ঠেলে ফাইলটা মাথার উপর রেখে এগিয়ে চলল। নীলের দেখানো সে জায়াগার সামনে আসতে ফাইল সরিয়ে সেদিকে তাকায় চোখ পিটপিট করে। দেখল নীল বাইকের সাথে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে। চোখে সানগ্লাস। সাদা শার্ট ঘামে ভিজে শরীরের সাথে লেগে আছে। উজ্জ্বল শ্যামলা শক্ত পোক্ত বাহু চোখের দৃষ্টি কাড়তে ব্যস্ত। ইনায়া ফাইল নামিয়ে হাঁটার গতি বাড়িয়ে নীলের কাছে যায়।
বড় করে শ্বাস টেনে বলল,
-এখানেই দাঁড়িয়ে ছিলেন?
নীল চশমা খুলে হাতের মুঠোয় রাখে। হেলমেট ইনায়ার হাতে দিতে দিতে বলল,
-হুঁ
ইনায়া আশেপাশে একটু দেখে নীলের দিকে তাকায়। নীল লুকিং গ্লাসে তাকিয়ে চুল ঠিক করে শার্ট টা হালকা টেনে ধরে আলগা করল। বুকে ফু দিয়ে বলল,
-উফফ্ এতো গরম!
ইনায়া গম্ভীর মুখে নীলের দিকে তাকিয়ে রয়েছে। নীল ইনায়ার দিকে তাকিয়ে ভ্রু উঁচু করে ইশারায় বলল,
-কী হলো?
ইনায়া শুকনো ঢোক গিলে নীলের দিকে তাকিয়ে থাকে। এই যে এই মুহূর্তে শরীরে হাওয়া বাতাস লাগাচ্ছে পথের ধারে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে,তাতেও তার নীল ভাই কে পৃথিবীর সবচেয়ে সুদর্শন পুরুষ লাগছে। ইনায়া খুব সাবধানতার সাথে আস্তে আস্তে বলল,
-মেয়েরা তাকিয়ে ছিল ,তাই না?
নীল ভ্রু কুঁচকে ইনায়ার দিকে তাকায়। নিজের হেলমেট টা পড়ে নিল সে। বাইকে উঠে বলল,
-কী বলছিস? জোড়ে বল। একে তো এখানে এতো ভিড়, দাঁড়িয়ে থাকা যাচ্ছে না আর।
ইনায়া আর দেরি করে না। নীলের কাঁধ চেপে বাইকে উঠে। নীলের খুব কাছাকাছি বসায় নাকে আসছে নীলের গায়ের তীব্র ঘ্রাণ। ইনায়া তার নাকটা নীলের কাঁধ আর পিঠের কাছাকাছি নেয়। বেশ গভীর শ্বাস টেনে ঘ্রাণ নিল সে। টেনে টেনে বলল,
-আহ্ নীল ভাই! কী সুগন্ধি ব্যবহার করেন?
নীল হালকা মাথা কাঁত করে লুকিং গ্লাসে তাকায়। ইনায়া চোখ বন্ধ করে রেখেছে। নীলের নীরবতা দেখে ইনায়া পুনরায় জিজ্ঞেস করল,
-কী হলো নীল ভাই?
-কেন লাগবে?
-পারফিউম?
-হুঁ
ইনায়া ঠোঁট উল্টিয়ে বিড়বিড় করে বলল,
-পারফিউম দিয়ে কী করব নীল ভাই? আমার তো আপনাকে চাই।
তারপর একটু থেমে বলল,
-না থাক,লাগবে না।
-ভালো লাগে বললি যে?
-হ্যাঁ,আপনার এই শার্ট টা দিবেন আমায়?
নীল বাইকে জোড়ে ব্রেক করে থমকে দাঁড়ায়। ইনায়ার বলা কথাটা নীলের মস্তিষ্কে পৌঁছে এখনো সাড়া জাগাতে পারে নি। তাই বোকার মতো ইনায়ার দিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে থাকল।
নীলের হতভম্ব অবস্থা দেখে ইনায়া আমতা আমতা করে বলতে থাকে,
-আসলে আমার এপ্রোনটা খুঁজে পাচ্ছি না নীল ভাই। আপনি তো ইয়া লম্বা! তাই আপনার এই লম্বা সাদা শার্ট টা এপ্রোন হিসেবে চালিয়ে নিব। ভালো বুদ্ধি না?
নীল হালকা করে মাথা নাড়ায়। তবে হ্যাঁ নাকি না তা আর বোঝা যায় না।
.
.
.
.
দেখতে দেখতে আজ ইনায়ার শেষ পরীক্ষা। গত দিনগুলোতে দিন রাত জেগে পড়তে পড়তে ইনায়ার চোখ মুখ শুকিয়ে গিয়েছে। রাত জেগে কালি পড়ে গিয়েছে চোখের নিচে। মাঝের পরীক্ষাগুলো দেওয়ার সময় শরীরে জ্বর নিয়ে দিয়েছে। পরীক্ষার সময় অসুস্থতা কিছু পরীক্ষার্থীর নিয়মিত রুটিনের মধ্যে পরে।তাদের মধ্যে ইনায়াও একজন। আজ উচ্চতর গণিত পরীক্ষা। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে চুল বেণী করতে করতে নিজের রুক্ষ সুক্ষ প্রতিচ্ছবির দিকে তাকায়। এতোদিন পরে আজ খেয়াল করল নিজের চেহারা। কলেজে কত সুন্দর সুন্দর মেয়ে পরীক্ষা দিতে আসবে। ইনায়া মূর্তির মতো দাঁড়িয়ে থাকে কিছুক্ষণ। মনে মনে ভাবে,
-আচ্ছা,নীল ভাই যদি কাউকে দেখে পছন্দ করে ফেলেন? আমার দিকে তো কেউ তাকাবে না, কিন্তু মেয়েরা চোখ দিয়ে ওনাকে গিলে খায়। নাহ! ওনার সাথে যাওয়া যাবে না।
ইনায়া ফাইল হাতে রুম থেকে বেরিয়ে আসে। নীলের মুখোমুখি হতেই চোখ নামিয়ে বলল,
-নীল ভাই,আজ আপনাকে যেতে হবে না।
নীলের কপালে ভাঁজ পড়ে। তীক্ষ্ণ চোখে তাকিয়ে বলল,
-কী হয়েছে?
-কিছু না।
-আমার দিকে তাকিয়ে কথা বল।
ইনায়া মাথা উঁচু করে না। নিজের এমন রুগ্ন চেহারা নিয়ে নীলের মতো সুদর্শন পুরুষের দিকে তার তাকাতে ইচ্ছে করছে না। নীল ইনায়ার নীরবতা লক্ষ্য করে একটু উচ্চস্বরে বলল,
-কী হলো? আমার সাথে যেতে চাচ্ছিস না কেন?
-কাজ আছে একটা..
নীল ইনায়া বাহু শক্ত করে চেপে ধরে ডান হাত দিয়ে। বলে,
-কী কাজ? পরীক্ষা শেষ হতেই কাজ শুরু? আর কী এমন কাজ যা আমি জানি না??
ইনায়ার ছোট্ট শরীর চমকে ওঠে নীলের উচ্চস্বরে বলা কথা শুনে। চোখ খিঁচে বন্ধ করে নেয় সে। আস্তে আস্তে বলল,
-কিছু না..
নীল ইনায়ার হাত ছেড়ে দেয়। মেয়েটার আজ শেষ পরীক্ষা। এতোদিন এতো অসুস্থতার মাঝে ছিল।এভাবে রাগারাগি না করে শান্ত ভাবে বলা যেত।নীল অনুতপ্ত হয়ে তাকায় ইনায়ার দিকে। শান্ত হয়ে বলে,
-রেডি তুই?
-হু..
-চল,দেরি হয়ে যাচ্ছে।
ইনায়া কথা বাড়ায় না আর। নীলের পেছন পেছন ছোট ছোট করে পা ফেলে আগায়। হেলমেট পরে অন্যমনস্ক হয়ে। বুকের ভেতর ধুক ধুক করছে শুধু এটা ভেবে যে তার নীল ভাই যদি কাউকে দেখে পছন্দ করে। নীল বাইকে বসে ইনায়ার এতো ধীরগতিতে করা সব কর্মকাণ্ড দেখছে। অবশেষে নিজেকে সংযত করে বলল,
-তাহলে যাওয়া যাক ম্যাডাম? নাকি আরেকটু সময় নিবেন?
নীলের মুখে ম্যাডাম শুনলেই ইনায়ার বুকের মধ্যে ঝড় ওঠে। বাইকে বসেই ভাবতে থাকে যে এই কথাটা আর কে যেন বলতো? মিনিট দুয়েক চিন্তা করে বলে উঠলো,
-সামিন..সামিন আইয়াজ..
নীল হালকা স্বরে বলল,
-কে?
ইনায়া একটু ইতস্তত বোধ করে। নীল আবার উল্টো পাল্টা না ভাবে । চটজলদি বলে,
-উহু কেউ না…
পুনরায় ভাবতে থাকে,
-সামিন আইয়াজ নাম এর ঐ লোকটা এতো ম্যাম ম্যাম করতো। কিন্তু এমন তোলপাড় তো হয়নি কখনো। কিন্তু নীল ভাই বললেই ভয়ানক এক অনুভূতি হয়। ভয়ানক সুন্দর!
নীল ইনায়ার গম্ভীরতা লক্ষ্য করছে সেই শুরু থেকেই। শেষ পরীক্ষার দিন মানুষ খুশি থাকে। ইনায়াকে দেখে নীলের মনে সূক্ষ্ম ভয়ের ছাপ ফুটে ওঠে। আস্তে আস্তে জিজ্ঞেস করে,
-হায়ার ম্যাথ নিয়ে ভয় কীসের? আমি নিজে পড়িয়েছি তো ইনু। সব পারবি।
-হুঁ..
-তাহলে কী নিয়ে এতো ভাবছিস? উদাস কেন এতো?
ইনায়া কিছুক্ষনের জন্য চুপ থাকে।মিনিট কয়েক পরে নীরবতা ভেঙে বলল,
-আমি কি দেখতে খুব বাজে নীল ভাই?
-কে বলেছে?
-আয়নাতে দেখলাম…
নীল বুঝতে পারে ইনায়ার মনে কী চলছে। বলে,
-তোর কাছে সুন্দর মানে কী?
-আপনি..
-হ্যাঁ?
-মানে আমি ছাড়া সবাই। যেমন আপনি।
নীল দীর্ঘশ্বাস ফেলল। হতাশার সুরে বলল,
-পরীক্ষা দিতে যাওয়ার সময় সৌন্দর্য নিয়ে ভাবে এমন ছাত্রী প্রথম দেখছি আমি। সুন্দর দিয়ে কী করবি তুই? বিয়ে করার ইচ্ছা জেগেছে? সংসার করবি? বাচ্চা কাচ্চা সামলাবি?
ইনায়া লজ্জায় মাথা নামায়। এসকল অপমানজনক কথা শুনতে খারাপ লাগে তার। তবে নীল থামে না। এক নাগাড়ে বলতে থাকে,
-বল আমায় ইনু্। মডেল হবি? নাকি হলে গিয়ে ছেলেদের ইমপ্রেস করবি? সিডিউস করতে চাস কাউকে নিজের রূপ দেখিয়ে?
ইনায়ার ভীষণ লজ্জা লাগছে। তবুও মুখ ভার করে বলল,
-সুন্দর হলে ছেলেদের ইমপ্রেস,সিডিউস করা যায়?
-অবশ্যই! করতে চাস?
-না,তবে আপনাকে সব সুন্দরী মেয়েরা করতেই পারে। বাইরে দাঁড়িয়ে থাকবেন। সবাই তো রূপবতী। আপনাকে দেখে আপনাকে ইমপ্রেস করবে নীল ভাই। ভালোই…
নীল জবাব দেয় না। কলেজ গেইটে ইনায়াকে নামিয়ে দিয়ে কাছে ডাকে। হেলমেট না খুলে শান্ত গলায় বলল,
-মন দিয়ে পরীক্ষা দিবি। আর আমি এভাবেই হেলমেট পরে থাকব। পরীক্ষা শেষ করে এখানে এমন ভাবেই পাবি। আর হ্যাঁ, আর কোনো উল্টো পাল্টা চিন্তা মাথায় নিয়ে হলে ঢুকলে কিন্তু মাথা ফাটিয়ে ফেলতে আমি দ্বিতীয় বার ভাববো না। যা এখন!
নীলের দেওয়া ধমক শুনেও ইনায়ার বেশ খুশি খুশি লাগছে। হেলমেট পরে থাকলে কোনো মেয়েই তাকে দেখতে পাবে না। এখন আর চিন্তা নেই!
.
.
.
.
ইনায়া পরীক্ষা দিয়ে বেরিয়েই নীলকে দেখতে পায়। একই ভাবে হেলমেট মাথায় নিয়ে বসে আছে সে। গরমে শার্ট ভিজে গেছে। কালো ফুল হাতার শার্ট,হাতাটা গুটিয়ে রাখা যদিও। তবুও হেলমেট এভাবেই মাথা রাখা দেখে ইনায়ারই অস্থির লাগছে। নীলের কাছে গিয়ে ডাক দেয় ,
-নীল ভাই! চলুন চলুন।
নীল বাইক স্টার্ট দেয়। ইনায়া পেছনে বসতে নীল তাকে বলল,
-ঘুরতে যাবি?
ইনায়া নীলের দিকে তাকায়। ভেজা শরীর। এতো কষ্ট করে এভাবে ছিল। বাসায় গিয়ে একটু রেস্ট নেওয়া দরকার। মাথা নাড়িয়ে না বলল ইনায়া। নীল বাড়ির উদ্দেশ্যেই রওনা দেয়। পথে ফুলের দোকানের সামনে ইনায়া বাইক থামাতে বলে নীল কে।
আহ্লাদী কন্ঠে বলল,
-নীল ভাই,ফুল কিনে দেন না প্লিজ।
নীল বাইক থামায়। বিরক্ত হয়ে ইনায়া কে বলে,
-এতো সামান্য জিনিস নিয়ে প্লিজ কথা টা বলবি না ইনু।
-উমমম,ফুল আমার কাছে অসামান্য।
-অসামান্য জিনিস দেওয়ান নীল দিতে পারে না।
-কেন!
-জানি না।
-পরীক্ষা শেষ বলে একটু উপহার নেওয়া যায় না নীল ভাই?
-কোনটা নিবি?
ইনায়া একটা বেলী ফুলের মালা আর আরেকটা দোলনচাঁপা ফুল দেখিয়ে বলল,
-এই দুটো।
নীল টাকা বের করতে করতে দোকানদার ফুল এনে ইনায়ার হাতে দিতে গেলে নীল জোড়ে চেঁচিয়ে ওঠে। বলে,
-ওয়েট!
দোকানদার থেমে যায়। নীল তার হাতে টাকা ধরিয়ে ফুলটা নিজের হাতে নেয়। ইনায়া হতভম্বের মতো তাকিয়ে থেকে বলল,
-কী হলো নীল ভাই? নিতে দিলেন না কেন?
নীল ভাবলেশহীন ভাবে জবাব দিল,
-পোকা থাকতে পারে,চেক করে দেই। অ্যালার্জির সমস্যা থাকলে এসব একটু খেয়াল রাখতে হয় । নাহলে মা,মেজো মা,ছোটমা আমায় কথা শোনাবে।
-অ্যালার্জি?
-নেই তোর? যাই হোক ধর এটা।
ইনায়া ফুল হাতে নিয়েই নাকের কাছে নেয়। গভীরভাবে শ্বাস টানে। নীল পুনরায় বাইক স্টার্ট দিয়ে বলল,
-বেশি স্পর্শ করিস না ইনু্। শরীর খারাপ করবে।
-আমার?
-না ,আমার।
-কেন?
-তোর অ্যালার্জি আছে ফুলে। তাই মুখ ঠোঁট থেকে দূরে রাখবি। বুঝেছিস?
ইনায়ার মাথায় নীলের কোনো কথাই ঢুকে না। তবুও মাথা ঝাঁকিয়ে হুঁ বলে সে। এতো সুন্দর বেলী ফুল, ঠোঁট না ছুঁয়ে থাকা যায়?
বাড়িতে ঢুকেই জামা কাপড় ছেড়ে ফ্রেশ হয়ে ফুলের মালা নিয়ে নীলের সামনে উপস্থিত হয়।
আবদার করে বলল,
-পড়িয়ে দেন নীল ভাই….
আনান ও সামনে উপস্থিত থাকায় ইনায়ার হাত থেকে ফুল টা নিয়ে বলল,
-আমি পড়িয়ে দিচ্ছি।
ইনায়া চোখের পলকে ফুলের মালা ছিনিয়ে নেয় আনানের হাত থেকে। দুষ্টু হাসি দিয়ে বলে,
-যে পড়তে চায় ,তাকে পড়াও গিয়ে। এটা আমাকে যে কিনে দিয়েছে সেই পড়িয়ে দিবে।
বলে ইনায়া গভীর ভাবে ঘ্রাণ নিয়ে ঠোঁট স্পর্শ করায় ফুলে।পরপর তিনটে চুমু খায় ফুলে। চোখ বুজে শ্বাস নিয়ে ইনায়া প্রশান্তিময় শব্দ করে নীলের হাতে দেয়। এদিকে আনানের স্পর্শ করা,আবার এতো গভীর ভাবে ইনায়ার ফুলে ঠোঁট স্পর্শ করানো নীলের সহ্যসীমা লঙ্ঘন করে যায়। ফুল হাতে নিয়ে মুচড়িয়ে ফেলে দিয়ে হন হনিয়ে রুম থেকে চলে যায় সে। পেছন না ফিরেই বলে,
-নিষেধ করেছিলাম আগেই,মুখ ঠোঁট থেকে দূরে রাখতে বলেছিলাম আমি।
ইনায়া হতবাক হয়ে তাকিয়ে থেকে দৌঁড়ে নীলের পেছন পেছন চলে যায়।
.
.
আনানের পায়ের কাছে মুচরানো বেলী ফুল পরে আছে। সযত্নে তা তুলে নেয় আনান।
হাতের মুঠোয় নিয়ে বিড়বিড় করে বলল,
-তোর ছোঁয়া লেগে আছে ইনু,এই ফুল নষ্ট হলেও যত্নে থাকবে আমার কাছে।
দোতলা থেকে নিচতলায় প্রতি সিঁড়ি তে বড় বড় পা ফেলে দৌঁড়ে নীলের ইনায়া হাঁপাচ্ছে আর ডাকছে,
-নীল ভাই!.. দাঁড়ান।
এদিকে নীল সদর দরজা পেরিয়ে বেরিয়ে যায়। নীল বের হয়ে গেলেও ইনায়া শেষমেশ দরজা ধরে দাঁড়িয়ে পড়ল।তার বুক পিঠ জোড়ে জোড়ে উঠানামা করছে এখনো। আনায়া পেছন থেকে আচমকা ডাক দিতে চমকে সেদিকে তাকায় ইনায়া,
বড় শ্বাস নিয়ে বলল,
-কী?
-দেবদাসের পারোর মতো দৌঁড়ালে। ভাবলাম আমার দেবদাস দুলাভাই এসেছে।
ইনায়া নিজের দিকে তাকালো। নীল ওরনা বাম পাশের কাঁধের উপর পড়ে আছে। ডান পাশে ঘন কালো চুল এলোমেলো ভাবে ছড়ানো।ওরনার পেছনের অংশ ফ্লোরের উপর । সাদা কামিজে নিজেকে এক ঝলক দেখে ভাবে আসলেই পারো পারো লাগছে?
এদিকে নীল হেলমেট না পড়েই বাইকে বসে। হিতাহিত জ্ঞান লোপ পেয়েছে তার। রাগে দাঁতে দাঁত চেপে বলল,
-তোর ছোঁয়া যাতে লাগবে তার অবস্থা এমনই হবে ইনু! মানা তো আগেই করেছিলাম আমি!
হ্যান্ডেলবারে শক্ত করে চেপে ধরে দূর থেকে ইনায়াকে দেখে একবার। এরপর দোতালায় তাকায়,যে ঘরে এতক্ষণ তারা ছিল। আনান বেলকনিতে রেলিং এ হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে। হাতে মোচড়ানো ফুল। নীলের দিকে চোখ ছোট করে তাকিয়ে পরপর দুবার ফুলে ঠোঁট ছোঁয়ালো আনান।ঠিক নীলের ভঙ্গি ধরেই বলল,
-তোর ছোঁয়া যেখানেই লাগবে,তার আমি পরম যত্নে রেখে দিব ইনু। কথা দিলাম।
(চলবে……)
#Running
#episode:35
Written by #Samia_Sara
Story name: #আড়ালে_তুমি
আমার প্রিয় পাঠক পাঠিকারা, গল্পটি নিয়ে আপনাদের মন্তব্য শুনতে চাই। একদম সব্বাই কমেন্ট করে জানিয়ে দিন,কেমন লেগেছে আপনাদের কাছে। আর আগের পর্বে এতো ভালোবাসা দেওয়ার জন্য অনেক কৃতজ্ঞতা। ভালোবাসা নিবেন শরীর খারাপ নিয়েই লেখা। কী যে লিখলাম, আল্লাহ জানে।বহুদিনধরে একটু একটু করে এই একটা পর্ব লিখেছি। জানি না কেমন হবে…
Share On:
TAGS: আড়ালে তুমি
CLICK HERE GO TO OUR HOME PAGE
-
আড়ালে তুমি পর্ব -৫১
-
আড়ালে তুমি পর্ব -২৮
-
আড়ালে তুমি পর্ব -২৯
-
আড়ালে তুমি পর্ব -৪৭
-
আড়ালে তুমি পর্ব -৪০