#সামিয়া_সারা
#কাজিন_রিলেটেড_গল্প
পর্ব -২৮
রিফাত নীলকে বাইকে বসিয়ে রওনা দেয় বাড়ির উদ্দেশ্যে।নীলকে পেছনে বসিয়ে বুক ফুলিয়ে বাইক চালাচ্ছে সে।
গর্ব বোধ করার ভাব ধরে বলল,
-আপনি আমার গুরু,বস। চরণে ঠাঁই করে দেন।
নীল সানগ্লাস খোলে।
দাঁতে দাঁত চেপে বলল,
-তোর বোনের নাটক সহ্য করে নেই,তাই বলে আর কারো টা করবো এমন ভাবিস না।
-আমার বোন নাটক করে?
-নায়িকা হলে নাটক করবে না? তাই আমি তার নাটক ছাড়া আর কারো নাটক সহ্য করব না।
-ঠিক আছে গুরু।
-কানের নিচে হাত রেখে বাড়ি ঢুকবি?
রিফাত বাম হাত কানে রাখে।বাইক থামিয়ে নীলকে বাড়ির সামনে নামিয়ে বলল,
-তুমি যাও ভাইয়া,আমি আসছি।
নীল রিফাতের কথার প্রেক্ষিতে কিছু না বলে না। তীক্ষ্ণ নজরে তাকিয়ে চলে যায়।
ভেতরে যেতেই চোখে পড়ে ইনায়া,আনায়া,সানজিদা , সম্পূর্ণা ট্রুথ ডেয়ার খেলছে। তাদেরকে না দেখার ভান করেই নীল ভেতরে ঢোকে।কানে এয়ারপডস দিয়ে শরীর এলিয়ে দিয়ে সোফায় বসল সে। পান্জাবির উপরের দুটো বোতাম খুলে মাথা উঁচু করে চোখ বন্ধ করে রইল। ইনায়া সেদিকে এক ঝলক দেখে। নীল চোখ বন্ধ করে শ্বাস নিচ্ছে জোড়ে জোড়ে, কণ্ঠমণির উঠানামা দেখে ইনায়া শুকনো ঢোক গিললো। সানজিদাও সেদিকে তাকিয়ে রয়েছে। ইনায়ার সেদিকে চোখ পড়তেই তেলে বেগুনে জ্বলে ওঠে সে।
নীলের দিকে তাকিয়ে বলে,
-নীল ভাই,এখান থেকে চলে যান তো!
নীল ইনায়ার কথা আমলে নেয় না। ফোন হাতে নিয়ে দেখতে থাকে। কানে এয়ারপডস থাকায় ইনায়ার কথা না শোনার ভান করে ।ইনায়ার হঠাৎ এমন ব্যবহারে আনায়া বেশ আতঙ্কিত হয়ে তাকায়।
ইনায়ার পায়ে হাত রেখে প্রশ্ন করল,
-কী হয়েছে ইনুপু? বড় ভাইয়া এখানে থাকলে কী সমস্যা?
ইনায়া সানজিদার দিকে তাকায়। তারপর মুখ ঘুরিয়ে বলল,
-মেয়েদের মাঝে নীল ভাই থাকবে কেন? আমার সহ্য হচ্ছে না।
সানজিদা মুখ ভেংচি কাটলো। বলল,
-বোনকে বউ এর মতো আচরণ করতে হয় না!
-বোন মানে চাচাতো বোন। শুধু বোন বলবি না।
-তবে কি বউ বলব? বলব তুই নীল ভাই এর বউ?
ইনায়া জবাব দেয় না। ইনায়ার ভাব কায়দায় সবাই অবাক আজ। আগে তো এমন করেনি সে। যে মেয়ে নীলকে দেখতেই পারতো না,সে এতো পসেসিভ আচরণ করছে কেন! আনায়া ওদের কে থামিয়ে বলে,
-খেলতে বসেছিলাম। আর ভাইয়া আমাদের কথা কিছুই শুনছে না । এসব বাদ দিয়ে খেলা টা শুরু করি?
ইনায়া উঠে সানজিদার মুখোমুখি বসল যেন সানজিদা তাকালেও নীল কে না দেখতে পায়। বোতল ঘুরিয়ে সম্পূর্ণার দিকে তাকিয়ে বলল,
-ট্রুথ অর ডেয়ার ?
-ট্রুথ….
ইনায়া ঝটপট করে প্রশ্ন করল,
-স্কুলের শেষ পরীক্ষায় অংকে কত পেয়েছিস?
-না বললে হবে না আপু?
-না না! ট্রুথ নিলে বলতেই হবে! বল।
-সাতান্ন…
আনায়া হাতে তালি দিয়ে বলে,
-বাহ্! অনেক ভালো পেয়েছো। নেক্সটে ইনুপুর হায়ার ম্যাথের নাম্বার টা জানতে চেয়ো। প্রতিশোধ নেওয়ার ভালো উপায়।
ইনায়া পড়েছে কঠিন বিপদে। শেষ পরীক্ষায় যে সে উত্তীর্ণ হয়েছিল সব বিষয়ে এই অনেক। নাম্বার শুনলে তো আর মানসম্মান থাকবে না । আনায়ার দিকে তাকিয়ে রেগে বলল,
-দাঁড়া অনু! বাড়ি গিয়ে তোকে মজা দেখাচ্ছি। তোর রেজাল্ট এর ছবি তুলে ফেসবুকে পোস্ট করব! আর আমি ট্রুথ নিলে তো আমাকে ঐ প্রশ্ন জিজ্ঞেস করবে! হুহ্!
আনায়া কোনো জবাব দেয় না । বোতল ঘুরিয়ে দিতে তা থামে সানজিদার বরাবর। সানজিদা একবারেই বলে দেয়,
-ডেয়ার।
আনায়া সানজিদা কে ডেয়ার দেয়,
-তুমি পছন্দ কর এমন কাউকে তোমার মনের কথা জানাতে হবে।
ইনায়া একবার আনায়াকে দেখে সানজিদার দিকে তাকায়। সানজিদা নীলকে দেখে মাথা নিচু করে মুচকি হাসে। লাজুক দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলে,
-সত্যি বলব?
-হ্যাঁ হ্যাঁ বলো আপু।ফোন এনে দিব?
সানজিদা নীলের দিকে তাকিয়ে বিছানা থেকে নামে। সাথে সাথে ইনায়া উঠে গিয়ে দাঁড়িয়ে পড়ে সানজিদার সামনে। দু হাত মেলে দিয়ে বলল,
-ওদিকে তাকাচ্ছিস কেন? নীল ভাই তোকে সহ্য করতে পারে না। আমাকে সাবধান করে দিতে বলেছে তোকে। এমন বেহায়ার মতো ছ্যাচড়ামি,he doesn’t like!
ইনায়া রাগে ফুঁসতে ফুঁসতে এখন নাগাড়ে কথা গুলো বলল। সানজিদার অপমানে মাটি খুঁড়ে ভেতরে ঢুকে যেতে ইচ্ছে করছে এই মুহূর্তে। সে সময়েই নীল ফোনের দিকে তাকিয়ে উচ্চ শব্দে হেঁসে দেয়। সবাই সেদিকে তাকালেও নীল ফোন থেকে চোখ সরায় না। ইনায়া পুনরায় বলে,
-নীল ভাই এখন রিলস্ দেখতে ব্যস্ত। যা জায়গায় গিয়ে বোস্।
সানজিদা মাথা নামিয়েই বলল,
-আমি খেলব না।
আনায়া সানজিদার হাত টেনে ধরে। আহ্লাদ করে বলে,
-কেন আপু? তুমি ডেয়ার পূরণ না করে চলে যাচ্ছিলে তাই ইনুপু আটকেছে। নাকি ফোন নিতে উঠেছিলে? ফোন আমি এনে দিচ্ছি! তবে তুমি কোথাও যেতে পারবে না!
সম্পূর্ণাও সায় দিয়ে বলল,
-হ্যাঁ হ্যাঁ,অনু আপু ঠিক বলেছে। ডেয়ার পূরণ করতেই হবে।
ওদের মুখে এমন কথা শুনে সানজিদা যেন হাঁফ ছেড়ে বাঁচে। পুনরায় বিছানায় বসে বলল,
-আসলে আমার পছন্দের কেউ নেই।
ইনায়া সেদিকে তোয়াক্কা করে না। পুনরায় বোতল ঘুরিয়ে দেয়। এবার ইনায়ার পালা। সবাই একত্রে বলে,
-ট্রুথ অর ডেয়ার?
-আগেই বলেছি, অবশ্যই ডেয়ার।
সানজিদা রাগে কটমট করে ইনায়ার দিকে তাকায়। কপাল কুঁচকে বলে,
-তোকে প্রোপোজ করতে হবে এখন।
-ওকে রাজি!
মনে মনে ভাবে,
-ডেয়ারই তো,রাগ করলে বলে দিব ডেয়ার এটা। আজ মনের কথা জানানোর বেস্ট সুযোগ ইনু! বলে ফেল!
এদিকে নীল ওদের সব কথা শুনে মজা নিলেও এই কথাটা শুনে একটু নড়ে চড়ে বসে। পাঞ্জাবীর কলারে হাত রেখে সোজা হয়। তখনই সানজিদা ইনায়াকে বলে,
-এমন কাউকে প্রোপোজ করবি,যাকে তুই চিনিস না।
নীলের চাহনি শক্ত হয়ে যায় কথা টা শোনা মাত্রই। হাত মুঠো করে ইনায়ার উত্তরের অপেক্ষায় থাকে।
ইনায়ার জবাব আসে,
-অসম্ভব!
-এটাই ডেয়ার। তোর ম্যাসেন্জারে কথা হওয়া লাস্ট অচেনা ব্যক্তিকে প্রোপোজ কর।
-না ,ডেয়ার নিব না।
-নেওয়া হয়ে গিয়েছে ইনায়া। করতেই হবে। পরে তাকে জানাতে পারবি যে এটা ডেয়ার ছিল।
ইনায়া ঘাড় ঘুরিয়ে নীল কে দেখে। নীলের ধ্যান জ্ঞান সব ফোনের ভেতরে। সবার দিকে তাকিয়ে আস্তে আস্তে ফোন টা বের করে। নেট অন করে সবাইকে দেখিয়ে ম্যাসেন্জারে ঢুকতেই দেখা যায় ইনবক্সে মাত্র দুজন ছেলে রয়েছে। আনান দেওয়ান আর সামিন আইয়াজ। সানজিদা ফোন কেড়ে নিয়ে বলল,
-এই! সামিন আইয়াজ কে!???
ইনায়া ইশারায় সানজিদা কে আস্তে কথা বলতে বলে। ইনায়ার আকুতি সানজিদার মনে আশার আলো দেখায়। আশ্বাস দিয়ে বলে,
-ওকে ওকে! নে প্রোপোজ কর!
ইনায়া ফোন হাতে নেয়। টাইপ করে,
আমি আপনাকে ভালবাসি…
পরক্ষনেই সব একবারে কেটে দেয়। আনায়া আর সম্পূর্ণা বেশ মজা নিচ্ছে বিষয়টাতে। তবে সানজিদা বিরক্ত হয়ে বলল,
-কাটলি কেন?
-বাংলাতে বলতে পারবো না। ঐ টা শুধু তার জন্য যাকে সত্যি ভালোবাসি।
-আচ্ছা বোন, ইংরেজি তেই বল!
ইনায়া আবার টাইপ করল,
“love you..”
-” I “লেখ শুরুতে,নাহলে হবে না!
ইনায়া ” I ” যুক্ত করে শুরুতে। সবার বলাবলি তে চোখ বন্ধ করে পাঠিয়ে দেয় ম্যাসেজটা। বড় বড় করে শ্বাস ফেলে তাকায় নীলের দিকে। নীল এখনো ফোনের দিকেই তাকিয়ে। পুনরায় বড় করে শ্বাস ফেলে আবার ফোনের দিকে তাকায়। সামিন আইয়াজ এর থেকে ম্যাসেজ এসেছে,
“কী ব্যাপার ম্যাম? ডেয়ার দিয়েছে নাকি কেউ?”
এমন ম্যাসেজ পেয়ে ইনায়া সহ বাকিরাও চমকে যায়। ইনায়া ফোন তুলে সাথে সাথে টাইপ করে,
“হ্যাঁ হ্যাঁ! ডেয়ার ছিল”
“যেহেতু হ্যাঁ বলেছেন,তার মানে ডেয়ার না। কেউ ডেয়ার দিলে আপনার না বলার কথা ছিল। যাই হোক, I love you too Mam!”
ইনায়া দাঁত কটমট করে তাকালো সানজিদার দিকে। বলল,
-এই পা*গল এমনিতেই আমার উপর ম*রে যাচ্ছে! এখন তোমরা আরো মে*রে ফেললে!
.
.
.
.
বাইরে থেকে বেশ অনেকক্ষণ যাবৎ হয়েছে রিফাত হাঁক ছেড়ে ডাকছে নীলকে। তার ডাকার ধরন টা আজ একেবারেই আলাদা । সম্পূর্ণ নীলকেই উৎসর্গ করে ডাকছে সে। সাথে জড়ো করেছে এলাকার অল্পবয়সী বাচ্চা কাচ্চা। নীল,ইনায়া একসাথে দরজার দিকে তাকিয়ে বের হয়। নীলকে উঠতে দেখে ইনায়া সন্দেহের দৃষ্টিতে সেদিকে তাকায়। কৌতুহলী হয়ে প্রশ্ন করল,
-নীল ভাই!
-কী?
-এই ডাক শুনলেন?
-হ্যাঁ..
-ভেতরে বসে আমাদের কথা শুনেননি?
-কীহ? শুনতে পাচ্ছি না…আবার বল… কিচ্ছু শোনা যাচ্ছে না….
ইনায়া বোকার মতো নীলের দিকে তাকিয়ে থাকে। এদিকে রিফাত এখন নাগাড়ে বলেই চলেছে,
-তোমার ভাই আমার ভাই! নীল ভাই,নীল ভাই!
নীলকে বেরিয়ে আসতে দেখে দৌঁড়ে যায় গাঁদা ফুলের মালা পড়াতে। ডান হাতে ফুলের মালা,বাম হাতে মিষ্টির প্যাকেট। মালা পড়িয়ে দিয়ে বলল,
-বস্! এইটুকই ম্যনেজ করতে পারলাম। don’t mind bro, হ্যাঁ?
নীলকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে আবার বলল,
-নীল ভাইয়ের আগমন, শুভেচ্ছায় স্বাগতম!
নীল অবাকের চরম সীমায়। কাছে এগিয়ে বলল,
-এই কীরে!
রিফাত সেদিকে তোয়াক্কা না করে বাচ্চাদের দিকে তাকিয়ে বলল,
-তোরাও বল!
শিরায় শিরায় রক্ত নীল ভাইয়ের ভক্ত!
নীল আর না পেরে হেসে ফেলে। রিফাতের পিঠে হাত রেখে বলে,
-কী শুরু করলি ভাই?
-জয় নীল ভাই!
-জয় বাংলা?
-নীল ভাই জিন্দাবাদ!
-বাংলাদেশ জিন্দাবাদ?
রিফাতের বানানো স্লোগান শুনে নীলের হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খাওয়ার উপক্রম। সব দলের স্লোগানেই নীলের নাম বসিয়ে দিচ্ছে!
এদিকে ওরা বলেই চলেছে,
-নীল ভাই যেখানে ভয় নাই সেখানে!
আমরা সবাই নীল ভাই এর ভক্ত,ভয় করি না বুলেট অস্ত্র!
নীল রিফাতের গলা জড়িয়ে টান দেয়। আস্তে আস্তে বলে,
-থাম ভাই! হাঁসতে পারছি না। ঘরের ভেতরে এতোক্ষণ তোর বোন নিঃশব্দে হাঁসালো।বাইরে থেকে তুই শুরু করেছিস!
বাড়ির সকলেই বেরিয়ে এসেছি। আনান এমন আয়োজন দেখে বলল,
-কী হয়েছে??
রিফাত আনানের মুখে একটা মিষ্টি পুরে দিয়ে বলল,
-আমাদের ভাই তো নেতা হয়ে গিয়েছে। আগেও ছিল যদিও, কিন্তু প্রকাশ করতে পারেনি ।
নীল আর আনান একই সাথে ইনায়ার দিকে তাকায়। ইনায়া নিঃশব্দে সব দেখছে। দৃষ্টি নীলের চোখে স্থির।আনান ইনায়ার কাছে এগিয়ে শান্ত গলায় বলে,
-রিফাত মজা করছে ইনু। তুই ভেতরে যা।
ইনায়া স্থির হয়েই দাঁড়িয়ে রয়। নীলকে টলমল চোখে তাকিয়ে দেখলো কিছুক্ষণ। চোখের পানি উপচে পড়ার আগে মাথা ঝুঁকিয়ে ভেতরে চলে যায়।
.
.
.
.
নীল রিফাতের উপরে এবার চেঁচিয়ে ওঠে। গলা থেকে মালা খুলে বলল,
-তুই ওর সামনে রাজনীতি বিষয়ক কথা কেন বললি রিফাত? সব ভুলে গেছিস তুই?
আনানও নীলের কথায় সায় দিয়ে রিফাতকে বলে,
-ইনু যদি কষ্ট পায়,তবে তোমাদের …..
আনান কথা বাড়াতে পারলো না। ভেতরে চলে যায়। নীল কপালে হাত রেখে স্থির দাঁড়িয়ে থাকে একই জায়গায়। বিড়বিড় করে বলে,
-ইনু যদি কষ্ট পায়,তাহলে পুরো দুনিয়া ধ্বংস করে দেওয়ার জন্য এই দেওয়ান নীলই যথেষ্ট।
কিছুক্ষণ থেমে আবার বলে,
আমারই ভুল ছিল,যে তোকে আগেই মানা করিনি!
রিফাত অনুতপ্ত। মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে বলল,
-ভাইয়া! ও যে এখনো ট্রমাতে আছে,আমি জানতাম না ভাইয়া! তোমার ইনুকে আমি কষ্ট দিতে চাইনি,ও তো আমারও বোন……
ইনায়া সামিরাকে দু’বার কল দেওয়ার পরে সামিরা কল ধরে। ফোনটা কানে নেওয়ার সাথে সাথে শুনতে পায় ইনায়ার ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কান্নার শব্দ। সামিরা শান্ত করে বলে,
-এই ইনু! কী হয়েছে?
-নীল ভাই…
-কী হয়েছে?
-নীল ভাই রাজনীতি তে ঢুকেছে….
ইনায়ার কান্নার শব্দ বাড়তে থাকে। সামিরা কী করবে বুঝতে না পেরে বলে,
-ধুর পা*গলি ! মজা করেছে তোর সাথে।
-না…
-তুই দেখেছিস?
-না…
-এমনি মজা করেছে। আর তুই কেন এখনো তোর নীল ভাইকে নিয়ে পড়ে আছিস? আমার ভাইয়া এর কথা ভাব এখন।
ইনায়া চোখ মোছে। কাঁপা গলায় বলে,
-তোর ভাইয়া কি তোকে কিছু বলেছে?
-কী বলবে?
-উমমম্ কিছু না…
-উমমম হুমমম! কী লুকাচ্ছো?
-এসে বলব।
-ওকে ননদিনী! তোর নীল ভাই এর দিন শেষ,আমার সামিন ভাইয়ার বাংলাদেশ!
ইনায়া এক কানে ফোন ধরে আরেক কান হাত দিয়ে চেপে ধরলো। বলল,
-এতোক্ষণ রিফাত ভাইয়া এসব স্লোগান দিয়েছে! এখন তুই বললি আবার! এগুলো শুনতে ইচ্ছা করে না আমার!
-সরি! ভুল যা সিম সিম! নীল ভাইকে ভুলে যা এখন….
ইনায়া জবাব দেয় না। মনে মনে ভাবে,
-নীল ভাইকে ভোলাতে পারবে এমন সাধ্য আছে কার?
পরক্ষনেই ভাবে,
-নীল ভাই রাজনীতি করে! আমার চোখে সবচেয়ে বড় অপরাধটা করছে উনি,সবটা জেনে বুঝেও….
(চলবে……)
#Running
#episode:28
Written by #Samia_Sara
Story name: #আড়ালে_তুমি
আমার প্রিয় পাঠক পাঠিকারা, গল্পটি নিয়ে আপনাদের মন্তব্য শুনতে চাই। একদম সব্বাই কমেন্ট করে জানিয়ে দিন,কেমন লেগেছে আপনাদের কাছে। আর আগের পর্বে এতো ভালোবাসা দেওয়ার জন্য অনেক কৃতজ্ঞতা। ভালোবাসা নিবেন
#আড়ালে_তুমি
#সামিয়া_সারা
#কাজিন_রিলেটেড_গল্প
পর্ব -২৬
সকাল সকাল এলাকাবাসীরা এসে হাজির হয়েছে রিফাতের কাছে। ঘুম থেকে উঠে রিফাত রীতিমতো হতবাক।
সবাই মিলে বলতে শুরু করেছে,
-আয়শার হউর বাড়ির একটা পোলা আইছে না কাইলগো, সুন্দার দ্যাখতে,ঐ পোলাডার অবস্থা বেশি ভালো না,ঈদগাহ -এর হোমকে রক্তে মাইক্কা পইড়া রইছে!
আরেকজন আবার তাকে থামিয়ে বললেন,
-ওই যে লম্ফা হইরা জম্মের ফর্সা মতোন..? হেরে হাসপাতালে নেওয়া লাগবে। নাইলে হে বাচপে না….
নীল,ইনায়া,আনায়া বেরিয়ে এসেছে। আনায়ার মাথায় কিছুই ঢুকছে না ওরা কী বলছে। তবে ইনায়া কিছু টা বোঝে। মানে আনানের অবস্থা খারাপ। ইনায়া হাত মোচড়াতে লাগলো। আতঙ্কে তার অবস্থা খারাপ। আনায়া ঠেলা দিয়ে ইনায়া কে বলল,
-কী বলছে ইনুপু? কীসের হাসপাতাল?
-আমিও বুঝতে পারছি না অনু্।
নীলের কানে কথা গুলো ঢুকতেই রিফাতকে ধাক্কা মেরে ঘরের মধ্যে ঢোকায়। শার্টের হাতা গোটাতে গোটাতে বলে,
-বাইক বের কর রানিং! চাবি দে আমাকে।
রিফাত টেবিল থেকে চাবি নিয়ে নীলের হাতে দেয়। নীল এক ঝটকায় চাবি ছিনিয়ে বেরিয়ে বাইকে উঠে। রিফাত ও পেছনে এসে বসে সাথে সাথে। নীল দ্রুত বাইক স্টার্ট দেয়। ইনায়ার হাত পা ঠাণ্ডা হয়ে আসছে,চোখের পানি কোনো রকমে আটকে রেখেছে। আনায়াকে নাহলে শান্ত রাখা যাবে না।
.
.
.
আনানের নিথর দেহ পড়ে রয়েছে মোড়ের পাকা রাস্তায়। নীল বাইক থেকে নেমে দৌঁড়ে সেদিকে যায়। আনানের মাথা তুলে নিজের কোলের উপর নেয়। গালে হাত রেখে দু বার ডাক দেয়,
-আনান! এই আনান!
আনান অচেতন। লম্বায় আনান আর নীল প্রায় সমান। আবার দৈহিক গঠনও কাছাকাছি। সুঠামদেহী। নীল রিফাতকে ডাকলো কাছে।আনানকে তুলতে তাকে সাহায্য করতে বলল। কোনো রকমে আনানকে নিয়ে সিএনজি তে তোলে নীল। রিফাত বাইক নিয়ে তাদের পেছন পেছন আসে। হসপিটালে এনে ইমার্জেন্সী ডক্টর কল করে। আনানের বেশ র*ক্ত ক্ষরণ হয়েছে। পাশাপাশি ঘাড়ে আঘাত লাগায় জ্ঞান নেই। ডক্টররা আনানকে অ্যাডমিট করে,দ্রুত স্যালাইন দিয়ে র*ক্ত ম্যানেজ করতে বলে। আনানের র*ক্তের গ্রুপ বি নেগেটিভ। এই র*ক্ত এখন কীভাবে জোগাড় করবে নীল। নীলের যে ও পজিটিভ। নীল মাথায় হাত দিয়ে চুলগুলো খামচে ধরলো। ঘেমে উজ্জ্বল শ্যামলা মুখটার মধ্যে তামাটে ভাব এসেছে। চোখের কোণে হাত দিয়ে রিফাতের কাছে গিয়ে বলল,
-তোর র*ক্তের গ্রুপ কী?
-বি পজিটিভ…
-বি নেগেটিভ র*ক্তের গ্রুপ ম্যানেজ করে দে রিফাত! As soon as possible!
রিফাত মাথা নাড়ালো। ভার্সিটির গ্রুপে পোস্ট করে সাথে সাথে। কয়েকজনকে কলও করে। কাছের মানুষদের সকলেই তাকে বলে এই গ্রুপ এর র*ক্ত তো নেই। আর বাকি মানুষেরা ফোন তোলে না। মূলত পার্টির সবার সাথে ঝামেলা হলো গতকাল যারা রিফাতের বন্ধু ছিল। তাই সাহায্যকারীর সংখ্যা কম এখন। রিফাত আশাহত হয়ে নীলের সামনে দাঁড়ায়। দৃষ্টি ফ্লোরে রেখে বলে,
-ভাই পেলাম না।
নীল জবাব দেয় না। কী করবে কিচ্ছু বুঝতে পারছে না। ব্লাড ব্যাংকেও খোঁজ করেছিল। তবে লাভ হয়নি।
রিফাত কিছুক্ষণ আমতা আমতা করে বলে,
-ভাইয়া…
-বল..
-ইনায়া এখন যে খুব ছোট তার নয়। আনানের জীবন টা…
-আমি ভাবছি রিফাত। আমার ইনু পাখিকে ছাড়া উপায় নেই। আমি ওকে নিয়ে আসছি রিফাত। তুই একেবারে আনানকে চোখে চোখে রাখবি। ওর যেন কোনো অসুবিধা না হয়।
কথা গুলো বলতে বলতে নীল চলে যায় বাইক নিয়ে। বাড়িতে তাড়াহুড়ো করে ঢুকে কোনো রকমে ইনায়াকে নিয়ে বেরিয়ে আসে হসপিটালের উদ্দেশ্যে। আর আনায়াকে ইনায়ার মামিদের কাছে রেখে আসে। ইনায়া একের পর এক প্রশ্ন করেই চলেছে।
-কী হয়েছে নীল ভাই? আনান ভাইয়া কোথায়? কেমন আছে?
নীলের কানে কিছুই ঢুকছে না। কোনো জবাব দেয় না সে। ছোট ভাই এর এমন অবস্থা,তার উপর আবার র*ক্ত তার ইনুর থেকে নিতে হবে। সব এলোমেলো লাগছে নীলের। হসপিটালে যেতেই ইনায়াকে দেখে রিফাত এগিয়ে আসে।
বলে,
-আনানের অবস্থা খারাপ। র*ক্ত দিতে হবে,জ্ঞান নেই।
ইনায়া কান্না করে দেয় এবার। ফুঁপিয়ে উঠলো সে। বলল,
-আমার আর ভাইয়ার রক্তের গ্রুপ এক। আ…আমি দিব..
নীল কপালে তর্জনী আর বৃদ্ধা আঙ্গুল ঠেকায়। ঢাকায় থাকলে মুহুর্তে সব ম্যানেজ করে ফেলতো সে। এখনো হেলিকপ্টার এনে আনানকে নিয়ে যেতে পারতো। নীল এখানেই থাকার মতো এমন কঠিন সিদ্ধান্ত নেওয়াতে নিজেকে অপরাধী মনে করতে থাকে। ইনায়াকে সাথে নিয়ে আনানের কেবিনে যায়। যাওয়ার আগে রিফাতের হাতে হাজার খানেক টাকা দিয়ে বলল,
-দুটো সিদ্ধ ডিম,চারটা ডালিম,চারটা বিটরুট,এক লিটার পানি,দুটো স্যালাইন এর প্যাকেট নিয়ে আয় জলদি গিয়ে। আর এক্সট্রা করে আরো এক লিটার পানি আন। সাথে একটা চাকু..
আনান চমকে তাকায়। নীল শান্ত করে বলে,
-ডালিম খাওয়ার জন্যে। ওয়ান টাইম প্লেটও আনিস।
রিফাত টাকা নেয় না। তবে নীল জোড় করে হাতে গুজে দেয়। বলে,
-যা তুই।
রিফাত টাকা টা বাধ্য হয়ে নিয়ে বেরিয়ে যায়। ইনায়া আনানের পাশাপাশি বেডে শুয়ে রয়েছে। প্রথম বার র*ক্ত দিচ্ছে। অনেক ভয় পেলেও আজ আনানের জন্য যেমন ভয় লাগছে তার কাছে ব্যাথার ভয় কিছুই না। নীল ইনায়ার পাশে বসতেই ইনায়া নীলের হাত শক্ত করে ধরল। নীল আরেক হাত নিয়ে ইনায়ার হাতের উপর রাখে। তারপর আলতো করে কপালে হাত দিয়ে বলল,
-কিচ্ছু হবে না….আমার দিকে তাকা ইনু…
ইনায়া নীলকে দেখে। কী গভীরতা চোখের মধ্যে। কী সুন্দর সরু নাক। ইনায়া তাকিয়ে থাকে একধ্যানে।ইনায়ার নাকের ডগা লাল হয়ে আসছে। চোখ বন্ধ করে ঘ্রাণ নেয় নীলের।নীল ইনায়ার হাত শক্ত করে ধরে রেখেছে। কিছুক্ষণ পর ইনায়ার দিকে তাকিয়ে মায়াভরা কণ্ঠে ডাক দেয়,
-ইনু
ইনায়ার যেন মাত্র হুস ফেরে। সাড়া দেয় নীলের ডাকে,
-হু…
-কষ্ট হচ্ছে?
ইনায়া ভ্রু ভাজ করে হাতের দিকে তাকালো। এক ঝলক হাতের দিকে তাকিয়েই নীলের দিকে তাকালো। বিড়বিড় করে বলল,
-এতোকিছু কখন হলো?
-কী হয়েছে?
-আপনি ম্যাজিক জানেন?
এতো ঝামেলা চাপের মধ্যেও নীলের মুখে এক টুকরো হাসি ফুটে উঠলো। মুচকি হেসে মাথা নাড়ালো সে। ইনায়ার হাতের উপরে নীলের হাত। ডান হাতে ক্যানুলা দেওয়া। বাম হাত নীল ধরে রেখেছে। গতকালও নীল এই হাত ধরেছিল। ইনায়া একটু পরপর হাত ধরেছিল আর মুচকি হেসেছিল সারারাত ধরে। এখন আবার একই ভাবে ধরে রাখা দেখে ইনায়া মুচকি হাসে। নীল কপালে ভাঁজ করে প্রশ্ন করল,
-হাসছিস কেন?
-কী করলে আপনি এই হাত ছাড়বেন না?
-মানে কী?
-কাল থেকে এই হাতে আমি পানি লাগাইনি।
-কেন?
-গত রাতে এই হাতই ধরেছিলেন। তাই আমি আর কাউকে ধরতে দেইনি। এমনকি বাথরুমেও যাইনি।যেন হাত ধুতে না হয়…
নীল চোখ বড় করে ইনায়ার দিকে তাকালো। আচমকা এমন কথা শুনে দাঁত চেপে বলল,
-লাগাম টান! অসুস্থ ভাইকে পাশে অচেতন অবস্থায় রেখে প্রেমালাপ করছিস?
ইনায়া আনানকে দেখে। কিছু একটা ভেবে মায়া হয় তার। মুহুর্তেই মন খারাপ করে চোখ বন্ধ করে ফেলে সে।
.
.
.
.
নীলের আদেশমতো রিফাত সব রেডি করে রেখেছে। এক্সট্রা করেও আরো অনেক কিছুই এনেছে। র*ক্ত দেওয়া শেষ হতেই নীল ওয়ান টাইম গ্লাসে পানি ঢালে। টিস্যু দিয়ে পেঁচিয়ে সিদ্ধ ডিম হাতে ধরিয়ে দেয় ইনায়ার। গম্ভীর কণ্ঠে আদেশ করে,
-দেরি করবি না, দ্রুত খাবি।
ইনায়া বেড থেকে নামতে গেলে নীল আবার বসিয়ে বলে,
-খবরদার ইনু! নড়বি না। এভাবেই থাকবি। আর যা যা দিব খাবি এখন।
ইনায়া চোখ টিপ টিপ করে নীল কে দেখলো। তারপর ঠোঁট উল্টিয়ে জিজ্ঞেস করে
-ভাইয়া সুস্থ হবে কখন?
-খুব দ্রুত ইনশাআল্লাহ। বাসায় জানানোর দরকার নেই কিছু।
-কেন?
-জানানো গেলে আমি ওকে ঢাকায় নিয়ে যেতাম ।রিস্ক নিয়ে এখানেই ভর্তি করেছি যাতে কেউ কিছু না জানে।
-এখানেও তো খারাপ না নীল ভাই…
-খারাপ বলতে তুই যা বুঝিস আমি তার বুঝাইনি। হসপিটালে কেউ ভর্তি হলে সবচেয়ে বেশি কী দরকার জানিস? জনবল,পাশে পাওয়া কাছের মানুষদের,পরিচিতি দরকার হয়। নাহলে মানুষ অসহায় হয়ে পড়ে। আর এখানে আমার কাছে এর কোনোটাই নেই।
ইনায়া মাথা নাড়িয়ে সম্মতি জানালো নীলের কথা তে। প্রশ্ন করল,
-তাহলে বাড়ি ফিরবো কবে?
-আমি সাথে থাকতে বাড়ি ফেরার তাড়া কেন? যখন ছিলাম না তখন তো এই প্রশ্ন মাথায় আসেনি।
-আপনি সাথে থাকলে তো আমি..
-কথা বন্ধ! তোর এসব আউল ফাউল কথা তে আমি বিরক্ত হচ্ছি। খেয়ে নে চুপ চাপ।
ইনায়া মুখ ভার করে ফেলে। আশে পাশে হাতরে ফোন খোঁজে। ইনায়ার এমন হাবভাব লক্ষ্য করে নীল প্রশ্ন করল,
-কিছু লাগবে?
-আমার ফোন……
-চার্জ নেই নাকি! দিয়েছিলি?
-ওহ্ শিট্! বাদ দেন,লাগবে না।
-আমার টা নে
বলে নীল তার ফোন ইনায়ার দিকে এগিয়ে দেয়। ইনায়া সাথে সাথে ফোনটা নিয়ে নেয়। তার মনে হচ্ছে সোনার হরিণ পেয়ে গেছে। স্ক্রিন অন করেই নীল কে বলে,
-পাসওয়ার্ড?
-462921
-একি অদ্ভুত পাসওয়ার্ড! মনে রাখেন কী করে?
-বুদ্ধি থাকলে বুঝতি! গাঁধীর মতো আমায় জিজ্ঞেস করতে হতো না।
ইনায়া সন্দেহের দৃষ্টিতে নীলকে দেখে। পাসওয়ার্ড টা মাথায় প্যাঁচ লাগিয়ে দিল। হাতে হাতে গুনতে শুরু করে,
-4 মানে হলো D, 6 মানে F, 2 মানে B, 9 মানে..
-এতোটুকু মাথা নিয়ে আর কিছু ভেবো না । পা*গলি হয়ে একটু পরেই আবার বলবে dfbgba আমার বউ এর নাম! তারপর তোমায় নিয়ে পাবনা রেখে আসতে হবে। দেওয়ান বাড়ির বড়..
-থামলেন কেন? দেওয়ান বাড়ির বড় বউ?
গম্ভীর মুখে তাকালো নীল। বলল,
-বড় মেয়ে। বউ বউ করিস কেন! আর যেন না শুনি। যাই হোক একটু পরে বলিস না আবার যে dfbgba আমার বউ এর নাম।
ইনায়া মাথা চুলকায়। মনে মনে ভাবে,
-তাই ই হবে হয়তো। মনে হয় নাম উল্টো পাল্টা করে লিখা,যাতে কেউ না বোঝে।
সবগুলো অক্ষর একত্রিত করে নাম সাজাতে ব্যস্ত ইনায়া।
বিড়বিড় করে বলতে থাকে,
-Dafbgb,fagbbd,gadbf…..
.
.
.
আনানের জ্ঞান ফিরেছে কিছুক্ষণ হলো। নীল আনান দুজন মুখোমুখি। তবে কারো মুখে কোনো কথা নেই । আনান নীলের দিকে তাকাতেই বুঝতে পারে ভাই এর উপর কেমন চাপ পড়েছে। আর নীলের চোখ যেন আনানকে বলছে,
-আমার জিনিসে আমার থেকে বেশি তোর টান থাকতেই পারে না আনান!
তবে কেউ কাউকে কিছুই বলে না। আনান পাশের বেডে ইনায়াকে দেখে প্রশ্ন করে,
-তোর কী হয়েছে ইনু?
-তোমায় র*ক্ত দিলাম ভাইয়া! জীবনে প্রথম বার দিলাম।
আনান কৃতজ্ঞতা ভরা দৃষ্টি নিয়ে তাকায়। চকচক করতে থাকা চোখে ইনায়াকে দেখল।
বলল,
-আমাদের কতো মিল ইনু…
নীল আনানের মুখের কথা কেড়ে নিয়ে সাথে সাথে জবাব দেয়,
-ভাই বোনের মিল থাকবেই! র*ক্তের সম্পর্ক তো,তাই র*ক্তের গ্রুপ ও এক। ঘুমা এখন।
ইনায়া শুনে অনেক খুশি হয়। ভাইয়া ভাইয়া করে ফেনা তুলে ফেলা মেয়েটার দিকে আনান হতাশ হয়ে তাকালো। সেদিকে এখন ঝলক দেখে চোখ বন্ধ করে নেয় আনান।
(পাসওয়ার্ড টার অর্থ কি আপনারা ধরতে পেরেছেন? গল্পটা অনেক স্পেশাল,আমি সাধারনত প্লান করে কাজ করি না। তবে এটা নিয়ে পরিকল্পনা অনেক বড়। আপনারা সব কিছুর জন্যই প্রস্তুত থাকবেন)
(চলবে……)
#Running
#episode:26
Written by #Samia_Sara
Story name: #আড়ালে_তুমি
আমার প্রিয় পাঠক পাঠিকারা, গল্পটি নিয়ে আপনাদের মন্তব্য শুনতে চাই। একদম সব্বাই কমেন্ট করে জানিয়ে দিন,কেমন লেগেছে আপনাদের কাছে। আর আগের পর্বে এতো ভালোবাসা দেওয়ার জন্য অনেক কৃতজ্ঞতা। ভালোবাসা নিবেন
Share On:
CLICK HERE GO TO OUR HOME PAGE