Golpo romantic golpo অবাধ্য হৃৎস্পন্দন

অবাধ্য হৃৎস্পন্দন পর্ব ৩


অবাধ্য_হৃৎস্পন্দন (০৩)

সোফিয়া_সাফা

উদ্যান সিঁড়ি বেয়ে নিচে নামতেই মাহবুবা সুলতানা দ্রুত পায়ে তার সামনে গিয়ে দাঁড়ায়। আর এদিকে আবেশও ফুলকে আড়াল করে তার সামনে এসে দাঁড়িয়েছে। আবেশের পেছন থেকে ফুল উঁকি দিয়ে উদ্যানের দিকে তাকাতেই দেখল উদ্যানের সেই নিগূঢ় দৃষ্টি তার দিকেই স্থির। ফুল ভয় পেয়ে পুরোপুরি ভাবে আবেশের পেছনে লুকিয়ে পড়ল। মাহবুবা সুলতানা হয়তো কিছু বলছেন কিন্তু উদ্যান দায়সারা ভাবে দাঁড়িয়ে আছে। প্রায় অনেকক্ষণ পর উদ্যান পুনরায় সিঁড়ির দিকে পা বাড়ায়। তখনই ফুল আবারও উঁকি দিয়ে উদ্যানের দিকে তাকাতেই উদ্যানের পা থেমে গেল। ঘাড় বাকিয়ে সরাসরি ফুলের দিকে তাকিয়ে বলল,
“এই মেয়ে অরেঞ্জ জুস আর আইস নিয়ে আমার রুমে আয়।”

উদ্যানের গা জ্বালানো কথার প্রেক্ষিতে আবেশ নিজেকে সামলাতে পারলোনা। প্রচন্ড বিরক্তি মিশিয়ে বলল,
“লিসেন, ও এই বাড়ির কাজের লোক নয়। বাড়িতে কাজের লোকের অভাব নেই তাদেরকে বলুন।”

উদ্যান এবার আবেশের দিকে তাকাল। অবশ্য চুলের জন্য উদ্যানের চোখ ভালো করে দেখা গেলোনা। উদ্যান প্রতিক্রিয়া না করে চোখ সরিয়ে মাহবুবা সুলতানার দিকে তাকায়। মাহবুবা সুলতানা একটা ঢোক গিলে মৃদু গলায় বললেন,
“তুমি নিজের রুমে যাও। ফুলকে পাঠিয়ে দিচ্ছি।”

উদ্যান একমূহুর্ত অপেক্ষা করলোনা। হনহনিয়ে নিজের রুমে চলে গেল।
সে চলে যেতেই আবেশ ফুলকে টেনে সামনে আনলো।
“ডিনার করেছিস?”

ফুল হ্যাঁ বোধক মাথা নাড়ে,
“গুড, নিজের রুমে যা।”

ফুল চলে যেতে উদ্যত হওয়া মাত্রই মাহবুবা সুলতানা বলে উঠলেন,
“উদ্যান যা নিয়ে যেতে বলল সেগুলো নিয়ে যা।”

ফুল ধরফরিয়ে মাহবুবা সুলতানার দিকে তাকাল। তার মামী তাকে মনস্টারের গুহায় যেতে বলছে? বিশ্বাসই হচ্ছেনা।

“ফুল তুই রুমে যা।”

আবেশের কথায় মাহবুবা সুলতানা আশেপাশে থাকা সবার দিকে তাকিয়ে বললেন,
“সবাই নিজেদের রুমে চলে যাও। আজকে আর কিছু হবেনা।”

সবাই এক এক করে চলে গেল। শুধু ফুল, আবেশ আর মেলো যেখানে ছিল সেখানেই স্থির হয়ে রইল। আবেশ ফুলের হাত ধরে নিয়ে যেতে চাইলে মাহবুবা সুলতানা ঠান্ডা গলায় বলে ওঠেন,
“ফুল, তুই সেটাই করবি যেটা আমি তোকে করতে বলেছি।”

ফুল মাথা নেড়ে আবেশের থেকে হাত ছাড়িয়ে নিল। তারপর কোনোদিকে না তাকিয়েই কিচেনের দিকে চলে গেল। আবেশ এতে ভীষণ রেগে যায়।
“মম তুমি কেনো ওই ছেলেটার উগ্রতাকে সমর্থন করছো?”

মাহবুবা সুলতানা তেতে উঠলেন,
“আমি তোকে উদ্যানের সাথে কথা বলতে নিষেধ করেছিলাম। তুই তারপরও কেনো বললি? আর ‘ওই ছেলেটা’ কাকে বলছিস? ভুলে যাসনা ও তোর বড় ভাই হয়।”

আবেশ ক্রোধের বশবর্তী হয়ে হেসে উঠল,
“আমার ভাই হলে কথা বলতে নিষেধ করছো কেন? ও আমার ভাই নয়।”

মুহুর্তেই ঠাস করে আওয়াজ হলো। সেই আওয়াজ শুনে মেলোর ভাবনায় ছেদ পড়ল। এতোক্ষণ যাবত সে নিজের হাতের দিকে তাকিয়ে ছিল। ‘তেহ’ লেখা অংশটা পুরোপুরি লেপ্টে গেছে। যা দেখে মনের কোণে অদ্ভুত অনূভুতি হানা দিচ্ছে। সে জানে এসব অনূভুতি তার জন্য নিষিদ্ধ, তবে কেন কান্না করতে মন চাইছে? সে কাঁদতে চাইল কিন্তু পূর্ব অভিজ্ঞতা না থাকার কারণে পারলো না।
আবেশ গালে হাত দিয়ে মায়ের দিকে তাকিয়ে আছে। চোখে এক আকাশ পরিমাণ বিস্ময়। তার মা এই প্রথম তার গায়ে হাত তুলেছেন। মাহবুবা সুলতানার চোখের কোণে পানি জমেছে, আড়ালে মুছে নিয়ে ভারী গলায় বললেন,
“যা ইচ্ছা কর গিয়ে, আমাকে আর মা বলে ডাকবিনা।”

কথাটা বলেই মাহবুবা সুলতানা নিজের রুমের দিকে চলে গেলেন। আবেশ দিশাবিশা না পেয়ে মায়ের পিছুপিছু চলে গেলো। যতোই হোক মাকে সে ভীষণ ভালোবাসে। মায়ের অভিমান দীর্ঘস্থায়ী হতে দেওয়া যাবেনা। সবাই চলে যেতেই মেলো বসা থেকে উঠে দাড়াল। লেহেঙ্গাটা হাটু পর্যন্ত তুলে রুমের উদ্দেশ্যে হাটা ধরল।


আলতো হাতে দরজায় ধাক্কা দিতেই দরজা খুলে যায়। দরজার ফাঁক দিয়ে উঁকি দিতেই শিস বাজানোর শব্দ ভেসে এলো। সেই আওয়াজ শুনে ফুলের হাতপা কাপতে লাগল। ট্রে আর গ্লাস টালমাটাল হয়ে ঝনঝন শব্দ তুলল। উদ্যান আড়াআড়িভাবে বিছানায় শুয়ে ছিল, কারো উপস্থিতি টের পেয়ে মাথা তুলে দরজার দিকে তাকাল,
“ভেতরে আয়।”

ফুল একটা লম্বা শ্বাস টেনে ভেতরে ঢুকল। দ্রুত পায়ে টেবিলের দিকে এগিয়ে গেল। হাতে থাকা ট্রে টা সেখানে রেখে একপ্রকার দৌড়ে রুম থেকে বেরিয়ে যেতে চাইল কিন্তু তার আগেই উদ্যান দরজার সামনে এসে দাঁড়ায়। ফলস্বরূপ ফুল দুপা পিছিয়ে গেল,
“আমি তোকে যাওয়ার পারমিশন দিয়েছি?”

ফুল মাথা নেড়ে না বলতেই উদ্যান তীব্র বেগে তার গালজোড়া চেপে ধরল।
“তোর জিহ্বা টা একদম ইউজলেস। মুখ ফুটে উত্তর দিতে যখন এতোই কষ্ট, তখন এই ইউজলেস জিনিসটা রেখে কি লাভ? কেটে ফেলি?”

ফুল ছটফট করতে লাগলো। বহু কষ্টে উচ্চারণ করল,
“স্যরি মাস্টার, আমি আর মাথা নেড়ে উত্তর দেবোনা।”

উদ্যান ফুলকে ধাক্কা মেরে দূরে সরিয়ে দিল। তাল সামলাতে ব্যার্থ হয়ে ফুল ছিটকে গিয়ে পড়ল ফ্লোরের উপর। ফ্লোরে চায়ের কাপের ধ্বংসাবশেষ ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল। একটুর জন্য ফুল সেগুলোর উপরে গিয়ে পড়েনি। তবে কোমড়ে ব্যাথা পেয়ে ফুল গুঙিয়ে উঠল,
“উহহহ,”

উদ্যানকে নিজের দিকে অগ্রসর হতে দেখে ফুল পিছিয়ে যেতে লাগল।

“মেলোর হাতে মেহেন্দি দেয়ার দায়িত্ব টা আমি তোকে দিয়েছিলাম। তুই সেটা না করে নাচানাচি করছিলি। তোর সাহসের প্রশংসা করতেই হচ্ছে।”

ফুল কান্না আটকে বলল, “আমার হাতে ব্যাথা ছিল, ভালো করে দিয়ে দিতে পারছিলাম না। সেই জন্যই মামী উঠে যেতে বলেছিল।”

উদ্যান খাটের কোনায় বসে পড়ল। তর্জনী আঙুল দ্বারা নিজের ওষ্ঠপুট ঘষতে ঘষতে বলল,
“অরেঞ্জ জুস টা রেডি করে আমার হাতে দে।”

ফুল একহাতে কোমড় চেপে ধরে উঠে দাঁড়ায়। টেবিলের দিকে পা বাড়াতেই উদ্যান বলে ওঠে,
“টেবিলের উপরে একটা বোতল রাখা আছে। অর্ধেক জুস ফেলে দিয়ে গ্লাসে আইস আর বোতলের লিকুইড মিশিয়ে ভালো করে মিক্সড কর।”

উদ্যানের কথামতো ফুল টেবিলের সামনে এসে বোতলটির দিকে তাকাল। তখন তাড়াহুড়োয় সে এটা খেয়ালই করেনি। ফুল বোতলটার আকার দেখেই বুঝতে পারলো এটা কোনো নে*শাজাতীয় তরল। বোতলের গায়ে অপরিচিত ফন্টে লেখা ‘T.K Hacienda Añejo’

“কিরে এত সময় লাগছে কেন?”

উদ্যানের রুক্ষ সুক্ষ্ম ধমকে ফুল বরাবরের ন্যায় কেপে উঠল। কাপা কাপা হাতে বোতলটা খোলার চেষ্টা করতেই বুঝতে পারলো এটা খোলা তার দ্বারা সম্ভব নয়। সে বোতলটা উদ্যানের সামনে ধরতেই উদ্যান অদ্ভুত ভাবে তার দিকে তাকায়,
“সামান্য বোতল খোলার শক্তি নেই? ১৮ বছর ধরে তোকে খাইয়ে পড়িয়ে লাভের লাভ তো কিচ্ছু হলোনা দেখছি।”

উদ্যান ফুলের হাত থেকে বোতলটা নিতেই ফুল বিড়বিড় করে বলে উঠল,
“আপনি দেখতে পান বলে তো মনে হয় না। চোখজোড়া আদৌ আছে তো?”

উদ্যান বোতল খুলতে গিয়েও থেমে গেল। গম্ভীর কন্ঠে বলল,
“তোর স্কালের ভেতর মস্তিষ্ক আছে বলেও তো আমার মনে হয় না। মাথা ফাটিয়ে দেখবো ভাবছি।”

ফুল তব্দা খেয়ে গেল। এতো আস্তে বলা কথাটাও মনস্টার টা শুনে ফেলল? আর শুনেও এমন শান্তভাবে ওয়ার্নিং দিল? উদ্যান একটা মোচড় দিয়েই বোতলটা খুলে ফেলল। তারপর ফুলের হাতে দিয়ে বলল,
“শান্ত আছি থাকতে দিস। নয়তো সত্যি সত্যিই তোর মাথা ফাটিয়ে ফেলব।”

ফুল তৎক্ষনাৎ বোতলটা নিয়ে ফিরে গেল। তারপর উদ্যানের কথামতো অর্ধেকটা জুস ফেলে দিয়ে সেই তরল আর আইস কিউব দিয়ে ভালোভাবে নাড়তে লাগল। উদ্যান হাত বাড়িয়ে ইশারা করতেই গ্লাসটা তার হাতে ধরিয়ে দিল ফুল।
“এবার আমি যাই?”

উদ্যান গ্লাসে চুমুক দিয়ে ধীরেসুস্থে বলল, “খুব তাড়া দেখছি। ইম্পর্ট্যান্ট কাজ আছে নাকি?”

ফুল মিথ্যা মিথ্যা হাই তুলে বলল, “না মাস্টার, তেমন কিছু না। আসলে এখন মাঝরাত তো তাই ঘুম আসছে।”

উদ্যান ফের নিশ্চুপ হয়ে গেল। কিছুক্ষণ পর অদ্ভুত গলায় প্রশ্ন ছুড়ল,
“Despacito গানটা শুনেছিস?”

কথাটা শুনে ফুলের মুখ হা হয়ে গেল। চোয়াল টাও খসে পড়ার উপক্রম। সে তড়িৎ গতিতে মাথা ঝাকিয়ে বলতে লাগল,
“তওবা তওবা, আমি ওসব গান শুনিনা মাস্টার।”

উদ্যান কাঠখোট্টা গলায় বলল, “তোর রিয়েকশন দেখে বুঝলাম যে গানটা শুনেছিস। অ্যাকচুয়ালি ওটা আমার ফেবারিট সং,”

ফুল এবার শুকনো ঢোক গিলল। মনস্টারের প্রিয় গান তেনার মতোই খতরনাক হবে সেটাই স্বাভাবিক। সে মুখে হাসি টেনে বলল,
“ওহ আচ্ছা। আসলে আমি তো খাঁটি বাঙালি তাই ওই টাইপের গানগুলো আমার সাথে ঠিক যায়না। আপনি তো দীর্ঘ সময় মেক্সিকোতে ছিলেন তাই হয়তো রুচিতে পরিবর্তন এসেছে।”

ফুল একনাগাড়ে কথাগুলো বলে থামল। স্বভাবতই সে মাঝে মাঝে একটু বেশি কথা বলে ফেলে। উদ্যানকে শান্ত দেখে সে যেন ভুলেই গেছে যে সে এখন মনস্টারের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে আছে।
“স্প্যানিশ সং তোর কালচারের সাথে না গেলেও হিন্দি সং যে খুব যায় সেটা বেশ বুঝতে পেরেছি।”

ফুল থতমত খেয়ে গেল। সে ভুলেই গিয়েছিল তখন সে আর আবেশ হিন্দি গানে নেচেছিল।
“আমি হিন্দি ভাষা বুঝি তাই মাঝে মাঝে হিন্দি গানেও নাচা হয়।”
“এখন থেকে স্প্যানিশ গানেও নাচবি।”

ফুল হকচকিয়ে তাকাল উদ্যানের দিকে। উদ্যান ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে মনের সুখে একের পর এক গ্লাসে চুমুক দিচ্ছে।
“আশা করি, আমার সামনে নাচতে তোর খুব একটা প্রবলেম হবে না। ড্যান্সারেরা তো সবার সামনেই নাচতে পারে।”

ফুল ঘাবড়ে গেল। এই উদ্যান কি এসব খেয়ে মাতাল-টাতাল হয়ে গেলো নাকি? আর সে যে ড্যান্সার সেটা উদ্যানকে কে বলল? যেই বলুন না কেন একদম ভালো করেনি।
“কি হলো বল,”
“মাস্টার আমি ওসব গানে নাচতে জানিনা।”

কথাটা শোনা মাত্রই উদ্যান হাতে থাকা গ্লাসটা ছুড়ে মারল ফ্লোরে। ফ্লোরের উপর আগে থেকেই ভাঙা চায়ের কাপের ধ্বংসাবশেষ ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল। এখন আবার এই গ্লাসটাও উদ্যান ভেঙে ফেলেছে। ভীতসন্ত্রস্ত ফুল দু হাত দ্বারা কান চেপে ধরল। উদ্যান রাগে এবার গর্জে উঠল,
“ইউ ব্লাডি মিস্টেক। আর একবার আমার কথার উপর পাল্টা কথা বললে আই সোয়ার তোর জিভ কেটে ফেলবো।”

ফুল কাপতে কাপতে কয়েক পা পিছিয়ে গেল। অবাধ্য চোখজোড়া ভিজে উঠল।
“এই একটা উপায়েই তুই সম্পূর্ণ সুস্থ ভাবে এই রুম থেকে বের হতে পারবি। তাই ভালো করে নাচিস। যদি আমার পছন্দ না হয় তাহলে তোর কপালে দুঃখ আছে।”

ফুল এবার বেশ অপ্রস্তুত হয়ে পড়ল। এরকম একটা মনস্টারের সামনে সে কিভাবে নাচবে? তার তো এখনই হাতপা কাপছে। এই মনস্টার টা তাকে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে নিঃশেষ করে ফেলতে চাইছে। কিন্তু কেন?
“জুতো খোল।”

ফুল অবাক চোখে উদ্যানের দিকে তাকাতেই উদ্যান নিজের জুতোটা খুলে তার মুখ বরাবর মারল, ফুল অবশ্য নিজের মুখ ঢেকে ফেলেছিল,
“জুতো খুলতে সমস্যা হলে জামা খুলে ফেল।”

এরকম একটা কথা শোনার জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিলোনা ফুল। কতোটা চরিত্রহীন আর লম্পট হলে একজন মামাতো ভাই তারই ফুপাতো বোনকে এভাবে বলতে পারে। সেটাই ভেবে পাচ্ছেনা ফুল। সে কোনোমতে নিজের জুতোজোড়া খুলে ফেলল,
“কি বলতো মাস্টারের সামনে জুতো পড়ে নাচা টা দৃষ্টিকটু লাগে। এবার আমি গান শুরু করছি। বি কেয়ারফুল মিস্টেক যেন না হয়,
Despacito
(ধীরেধীরে)

উদ্যান গেয়ে উঠতেই ফুল বড়সড় একটা ঝটকা খেল। তাকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে উদ্যান তার দিকে অগ্রসর হতে লাগল। হাত উঁচিয়ে নাচতে ইশারা করল। ফুল একটা বড় শ্বাস টেনে নাচতে লাগল,
Quiero respirar tu cuello despacito
Deja que te diga cosas al oído
Para que te acuerdes si no estás conmigo
(আমি তোমার গলার ভাজে, ধীরে ধীরে নিশ্বাস নিতে চাই
তোমার কানে কানে কিছু বলতে চাই
যাতে তুমি আমার অবর্তমানেও আমাকে ভুলতে না পারো)

ফুলের শরীর শিউরে উঠল। যদিও সে বহু আগে জনপ্রিয়তার রহস্য খুঁজতে গিয়ে শুধু মাত্র একবার অনুবাদ সহ গানটা শুনেছিল তবুও তার মনে হচ্ছে সে অর্থ বুঝতে পারছে। ফুলের স্টেপ গুলো পার্ফেক্ট হওয়াতে উদ্যানের ভালো লাগছে না। ফুল ভুল না করলে উদ্যান তাকে শাস্তি দেবে কিভাবে? কষ্ট দেবে কিভাবে? ফুলের কান্না না দেখলে তো তার মাথাই খারাপ হয়ে যাবে। উদ্যান ফুলের সামনে গিয়ে দাঁড়ায়,
Despacito
Quiero desnudarte a besos despacito
Firmar las paredes de tu laberinto
Y hacer de tu cuerpo todo un manuscrito
(ধীরেধীরে
আমি চুমু খেতে খেতে, তোমাকে উন্মুক্ত করতে চাই
তোমার গোলকধাঁধার দেয়ালে নিজের চিহ্ন রাখতে চাই
তোমার শরীরকে সম্পূর্ণ পান্ডুলিপিতে রূপ দিতে চাই)

উদ্যান হঠাৎ করেই থেমে গিয়ে ফুলের আরও কাছে যেতে লাগল। তাকে কাছে আসতে দেখে ফুল পিছিয়ে যেতে লাগল। কিছুটা পিছিয়ে যেতেই ফ্লোরে থাকা একটা কাঁচের টুকরো তার ডান পায়ে ঢুকে গেল। সাথে সাথেই উদ্যান সন্তুষ্ট হয়ে খাটের দিকে চলে গেল। সে সামনে থেকে সরে যেতেই ফুল নিজের পা চেপে ধরে নিচে বসে পড়ল।

চলবে,,,

Share On:

TAGS: ,



CLICK HERE GO TO OUR HOME PAGE
Related Posts
 

0 Responses

Leave a Reply