অবাধ্য_হৃৎস্পন্দন (১২)
সোফিয়া_সাফা
{পার্টি স্পেশাল—শেষ অংশ}
উদ্যানের রাশভারী কন্ঠে টেবিল জুড়ে কয়েক মুহুর্তের জন্য নীরবতা নেমে এলো, নীরবতা ঠেলে রিদম হাত তুলে বলল,
“আমি ওকে নাচতে বলেছি। আজকের জন্য ওকে প্রিমিয়াম ফেস হিসেবে সিলেক্ট করেছি।”
উদ্যান কিছুক্ষণ রিদমের দিকে স্থির দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল। তারপর গম্ভীর গলায় বলল,
“ও আমার পার্সোনাল মেইড সেটা বলেনি কেউ?”
কথাটা শুনে রিদম চোখ উল্টে হাতে থাকা টেকিলার গ্লাসে চুমুক দিল। খানিকটা মজা করেই বলল,
“পার্সোনাল মেইড হলে কী হয়েছে? অ্যাট লাস্ট শি’জ আ মেইড, ইজন্ট শি? রিএক্ট করার কি আছে?”
উদ্যান তীক্ষ্ণ চোখে তাকাতেই রিদম হেসে উঠল,
“যাই হোক তোর থেকে পারমিশন নেওয়া টা উচিৎ ছিল; স্যরি ফর দ্যাট। আসলে এতো ছোটোখাটো বিষয়ের জন্য তোকে বিরক্ত করতে চাইনি।”
রিদমের থেকে চোখ সরিয়ে উদ্যান এবার ফুলের দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করল। ফুলসহ বাকিরা বিটের সাথে তাল মিলিয়ে হেলেদুলে নৃত্য করছে। স্টেজের উপরে থাকা শুভ্র আলো ফুলের স্টেপ অনুসরণ করছে। যেন আজকের পারফরম্যান্সের মধ্যমনি সে। কয়েক মুহুর্ত পেরিয়ে যেতেই চারপাশ করতালির শব্দে ফেটে পড়ে। নাচ শেষ হয়েছে, ফুল স্টেজ থেকে নেমে যাবে তার আগেই সে পিছুটান অনুভব করল। কিছু বুঝে ওঠার পূর্বেই কেউ একজন তাকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে তার মুখ থেকে মাস্কটা সরিয়ে ফেলল। ঘটনার আকস্মিকতায় চারপাশের পরিবেশ থমকে যায়। ফুল তো হতবাক চোখে তাকিয়ে আছে সামনে দাঁড়িয়ে থাকা ইংরেজদের মতো দেখতে পুরুষটির দিকে। যার চোখেমুখে লালসার ঝলকানি,
“আই’ম ইন্টারেস্টেড ইন ইউ, গার্ল। ডোন্ট মেক মি আস্ক টুয়াইস, কাম উইথ মি।”
লোকটা স্পষ্ট ইংরেজিতে বলেছে। ফুলের শরীর হিম হয়ে এলো। অসহায় চোখ আশেপাশে তাকিয়ে নিজের হাত ছাড়ানোর চেষ্টা করতে লাগল।
উদ্যানের চাহনি স্টেজের উপরেই নিবদ্ধ। তার অভিব্যক্তি বোঝা যাচ্ছেনা। তবে কিছুক্ষণ যেতেই সে নিজের গদি ছেড়ে উঠে দাঁড়ায়। ব্যস্ত পায়ে এগিয়ে যেতে থাকে স্টেজের দিকে কিন্তু তার আগেই রিদম গিয়ে ফুলের সামনে দাঁড়ায়।
“মিস্টার চার্লস, হ্যাভ সাম প্যাশান্স। ফর নাউ, লিভ হার।”
রিদম নিজেই মিস্টার চার্লসের থেকে ফুলের হাত ছাড়িয়ে দিল। ছাড়া পেতেই ফুল একপ্রকার দৌড়ে স্টেজ থেকে নেমে যায়। তারপর একদম উদ্যানের গা ঘেঁষে অন্যদিকে চলে গেল। যাওয়ার পূর্বে উদ্যানের দিকে এক নজর তাকিয়েছিল ফুল। যার দরুন তাদের চোখাচোখি হয়ে গিয়েছিল। ফুল চলে যেতেই উদ্যান পুনরায় স্টেজের দিকে তাকায়। রিদম সিরিয়াস ভঙ্গিমায় মিস্টার চার্লেসের সাথে কথা বলছে। উদ্যান নিজের জায়গাতেই দাঁড়িয়ে আছে। রাতের আঁধারে উদ্যানের উপস্থিতি পাওয়ারফুল। ডার্ক ব্লেজার এবং ফিটেড শার্টে তাকে মাত্রাতিরিক্ত আকর্ষণীয় লাগছে। পলিশ করা লেদার শু আর কালো রঙের ওয়াচ তার প্রতিটি হেলাফেলা কে প্রভাবশালী করে তুলছে। চোখের দৃষ্টি চিরচেনা ঠান্ডা, নির্দয়।
আশেপাশে উপস্থিত অতিথিরা তার দিকে আঁড়চোখে তাকাচ্ছে, কেউ কেউ ককটেল হাতে দাঁড়িয়ে, কেউবা সোফায় বসা। কিন্তু সবার চোখ উদ্যানের দিকে স্থির। তার স্টাইল আর উপস্থিতিই যেন ভয়ঙ্কর ভাবে সবকিছুকে নিয়ন্ত্রণ করছে। কথার মাঝেই রিদমের চোখ পড়ল উদ্যানের উপর। সে নিজের কথা সংক্ষিপ্তভাবে শেষ করে উদ্যানের সামনে এসে দাঁড়াল।
“মিস্টার চার্লস আমাদের সাপোর্টে মিস্টার মরগ্যানের সাথে বিট্রে করতে রাজি হয়ে গেছে।”
“কিসের বিনিময়ে?”
উদ্যানের প্রশ্নে রিদম পাশে থাকা চেয়ারে হাতপা ছড়িয়ে বসে পড়ল,
“তোর পার্সোনাল মেইডকে তার মনে ধরেছে…
উদ্যান কাঠকাঠ গলায় বলল,
“তুই জানতিই যে অ্যাসহোলটা বাঙালি মেয়েদের প্রতি উইক। জেনেশুনেই মেয়েটাকে এভাবে প্রেজেন্ট করেছিস, এইসব কিছুই তোর প্রি-প্ল্যান ছিল তাইনা?”
“ইয়েস, এটা আমার প্ল্যান ছিল। সেই জন্যই মিস্টার চার্লসকে একদম স্টেজের দিকের ফ্রন্ট সিটে বসিয়েছিলাম। তবে এতোটা আশাবাদী ছিলাম না।”
“বাঙালি মেয়ে আরও আছে রিদম। সবাইকে ছেড়ে ওই মেয়েটাকেই কেন?”
রিদম সরু চোখে উদ্যানের দিকে তাকায়, তার চাহনি দেখে উদ্যান চোখ সরিয়ে নিল,
“ওয়েট আ মিনিট; তুই এইসব বিষয়ে ইন্টারফেয়ার করছিস কেন? কাম অন ইয়ার এসব আমার কাজ। তোকে এসব নিয়ে খামখা টেনশন করতে হবেনা। জাস্ট চিল।”
“আমার প্রশ্নের উত্তর দে রুড।”
আচমকা উদ্যানের গলার স্বরের পরিবর্তনে রিদম হা হয়ে গেল। কয়েক সেকেন্ড আহাম্মকের মতো তাকিয়ে থেকে বলল,
“এতো লেইম প্রশ্নের উত্তর পেতে নিজের পাওয়ার ইউজ করছিস? আর ইউ সিক অর হোয়াট?”
“লোবো…
উদ্যানের চিল্লানিতে পুরো টেরেস কেঁপে উঠল, লুহান তো একদৌড়ে উদ্যানের সামনে হাজির হয়েছে।
“গেট দ্য রড।”
লুহান তো মাথা নেড়ে চলে গেছে কিন্তু রিদম পুরোপুরি ভাবে শকট। বিস্ময়ে নিজের জায়গা থেকেও নড়তে পারছেনা।
“সল।”
লুহানের ডাক পড়ার সাথে সাথে সোহম আর অনিও চলে এসেছিল। তাই এবার সোহমকে ছুটে আসতে হয়নি, সে স্বাভাবিক গতিতেই দুপা সামনে এসে মাথা নিচু করে দাঁড়াল,
“ব্রিং রুড উইথ মি।”
কথাটা বলেই উদ্যান গটগট পায়ে টেরেস থেকে নেমে যেতে উদ্যত হলো। তার পিছুপিছু সোহম রিদমকে টেনেটুনে নিয়ে যাচ্ছে। যদিও রিদমকে নিয়ে যেতে বেশি শক্তির ব্যয় করতে হচ্ছেনা। সে নিজে থেকেই সোহমের সাথে চলে যাচ্ছে।
তারা চলে যেতেই টেরেসের পরিবেশ অশান্ত হয়ে যেতে লাগল। অতিথিদের মাঝে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হতে লাগল। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে অনি উচ্চস্বরে বলে ওঠে,
“কাম ডাউন। আদারওয়াইজ, অ্যাকশন উইল বি টেকেন।”
মুহুর্তেই পরিস্থিতি শিথিল হয়ে যায়। সবাই যার যার জায়গাতে বসে নিজেদের মতো এনজয় করতে শুরু করে। রুমা এতোক্ষণ যাবত একজন গেস্টের ঘাড় ম্যাসেজ করে দিচ্ছিল। সে নাচতে জানেনা বিধায় তাকে এভাবেই গেস্টদের আপ্যায়ন করতে হয়। নাদিয়া অবশ্য নাচতে জানে; ফুলের সাথে নাদিয়াও স্টেজে নাচ পরিবেশন করেছে। পুরো ঘটনা টাই রুমা নিগূঢ় চোখে পর্যবেক্ষণ করেছে। যদিও সে উদ্যানের কর্মকাণ্ডে অবাক হয়নি। এসব উদ্যানের ন্যাচারাল বিহেভ। প্রায়ই বাকিদের উপর চিল্লাচিল্লি করে নিজের রাগ ঝাড়ে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই উদ্যান অসন্তুষ্ট থাকলে এমন বিহেভ করে। আর উদ্যানের অসন্তুষ্ট হতে সময় লাগেনা।
“ইউ স্লা*ট, ডু দা ম্যাসেজ প্রপারলি। ডোন্ট ইউ হ্যাভ এনি স্ট্রেংথ ইন ইওর হ্যান্ডস?”
হঠাৎ ধমকে রুমা কেঁপে উঠল, সঙ্গে সঙ্গেই চেয়ারে বসে থাকা মধ্যবয়সী গেস্ট রুমার হাত ধরে ফেলল।
“রিমুভ দ্য মাস্ক।”
কথাটা শুনে রুমা কাঁপা কাঁপা হাতে মাস্ক সরিয়ে ফেলল। তার চেহারা টা দেখামাত্রই গেস্টের মুখ কুচকে গেল। বিকৃত গলায় বলল,
“ইউ আর সো আ্যাগলি। পুট দ্য মাস্ক ব্যাক অন।”
রুমা নিস্তেজ চোখে ঘাস আবৃত মেঝের দিকে তাকিয়ে রইল। ঠোঁট চেপে মনে মনে বলল,
“হ্যাঁ আমি কুৎসিত! আপনাদের মতো নিকৃষ্ট প্রানীদের চোখে কুৎসিত হওয়া টাও সৌভাগ্যের। এতোটা কুৎসিত হওয়ার পরেও কেন জীবনটা কণ্টকাকীর্ণ হলো? যেখানে মেয়ে হয়ে জন্ম নেওয়াটাই দূর্ভাগ্য। সেখানে স্রেফ কুৎসিত হওয়াটাও পর্যাপ্ত নয়।”
একটা তপ্ত শ্বাস ফেলে রুমা পুনরায় মাস্ক পড়ে নিল।
দোতলার গোপন সুরঙ্গের পথ ধরে আন্ডারগ্রাউন্ড বাংকারে এসে থামল উদ্যান। সেখানে থাকা একটা সিংহাসন আকৃতির গদিতে আয়েসি ভঙ্গিতে বসে পড়ল। চারদিকে গলা চেপে ধরা নিস্তব্ধতা বিরাজ করছে। রিদমকে সামনের কাঠের তৈরি চেয়ারে বসানো হয়েছে। একপাশে লুহান সেই চিরচেনা লাঠি হাতে দাঁড়িয়ে আছে। আরেকপাশে সোহম; তার মুখাবয়ব নিদারুণ কঠোর। লুহানের দিকে হাত বাড়াতেই লুহান উদ্যানের হাতে লাঠিটা তুলে দেয়। লাঠিটা হাতে নিয়ে উদ্যান খানিকটা ঝু্ঁকে বসল,
“হাত এগিয়ে দে।”
রিদম বিচলিত হলো না। চোখ বন্ধ করে একটা শ্বাস ফেলল। তারপর ধীরেসুস্থে উদ্যানের দিকে হাত এগিয়ে দিল। উদ্যান প্রবল বেগে লাঠিটা দ্বারা আঘাত করতেই যাবে তখনই রিদম বলে ওঠে,
“যত ইচ্ছা মার। স্যাটিসফাই হতে পারবি না। কারণ তোর অসন্তুষ্ট হওয়ার পেছনের কারণ টা ভিন্ন।”
উদ্যানের হাত থেমে গেল। রাগে ফুসতে ফুসতে রক্তিম চোখে তাকাল রিদমের দিকে।
“তুই আমাকে মারছিস কারণ আমি মেয়েটাকে অন্য কারো সামনে প্রেজেন্ট করেছি; অ্যাম আই রাইট?”
উদ্যান গর্জে উঠল, “নো, ইউ আর রঙ। ফার্স্ট অফ অল, আমার থেকে পারমিশন না নেওয়া টা তোর ভুল ছিল। লাস্ট, তুই আমার প্রশ্নের উত্তর না দেওয়ার সাহস দেখিয়েছিস।”
রিদমের ঠোঁটের কোণে স্ফীত হাসি ফুটে উঠল। যা দেখে সোহম মনে মনে রিদমকে বকা দিল,
“শালার শরীরে জ্বালা উঠছে, মাইর না খাওয়া পর্যন্ত এই জ্বালা কমবে না।”
“তুই মিথ্যা কথা বলছিস। তুই মেয়েটার প্রতি উইক হয়ে পড়ছিস। সেই জন্যই এতো রিএক্ট করছিস।”
রিদমের কথার প্রতিক্রিয়া মারাত্মকভাবে ফুটে উঠল উদ্যানের মুখশ্রীতে। ক্রোধের বশবর্তী হয়ে উদ্যান হিংস্র সিংহের ন্যায় গর্জে উঠল। ঘাড়ের রগ আর চোয়াল শক্ত হয়ে দৃশ্যমান হলো। স্বভাবতই জিভের অগ্রভাগ দিয়ে গালের অভ্যন্তরীণ অংশ ঠেলে ধরল, এই পর্যায়ে এসে যেন ভেতরে থাকা মনস্টার টা উদ্যানের শরীরকে কব্জা করে নিয়ন্ত্রণ করতে লাগল। চারদিকের নীরবতাকে মুহুর্তেই তছনছ করে দিয়ে লাঠির নিষ্ঠুর শব্দ আর আর্তনাদ ছড়িয়ে পড়ল। পরবর্তী কয়েক মিনিটে আজাব নেমে আসে। রিদম চুপচাপ আঘাত গুলো সহ্য করে নিল। ঠিক ৬ মিনিটের মাথায় উদ্যানের হাত থেমে যায়। সে লাঠিটা দূরে ফেলে দিয়ে নিজের গদিতে বসে পড়ে। যদিও তার মধ্যে থাকা মনস্টার টা এখনও শান্ত হয়নি। রিদমের হাতের অবস্থা শোচনীয়, কয়েক জায়গা ফেটে গিয়ে রক্ত ঝড়ছে। আঘাতের তীব্রতায় রিদম চেয়ারের উপর ঢলে পড়েছে। উদ্যানকে থেমে যেতে দেখে রিদম চাপাস্বরে বলে ওঠে,
“স্যাটিসফাই হয়েছিস?”
প্রতিউত্তরে উদ্যান সমস্ত আক্রোশ ঢেলে চিল্লিয়ে ওঠে,
“চাইছিস টা কি?”
রিদমের ঠোঁটের কোণে আবারও হাসির ঝিলিক দেখা দিল। স্বভাবতই রিদম হাসতে ভালোবাসে। কিছুক্ষণ অকারণেই চিল্লানোর পর উদ্যান মাথা চেপে ধরে বসে পড়ে। তার ঠিক কি হয়েছে সে নিজেও বুঝে উঠতে পারছেনা। কেন সে শান্ত হতে পারছে না। রিদম এবার হাতঘড়িতে চোখ বুলিয়ে নিল,
“দুইটা বাজে, মিস্টার চার্লস অপেক্ষা করছেন। আমি তাকে তিনটার কথা বলেছি।”
উদ্যান একভাবে বসে রইল। না প্রতিউত্তরে কিছু বলল; আর না চোখ মেলে তাকাল।
“তুই বলেছিস, তোর থেকে পারমিশন না নেওয়াতে আর প্রশ্ন এড়িয়ে যাওয়াতে আমাকে পানিশ্ট করেছিস। আমি সেটা মেনে নিলাম। আমার আসলেই ভুল হয়েছিল। বাট এখন আর কোনো ভুল করবো না, তোর পার্সোনাল মেইডকে মিস্টার চার্লসের কাছে পাঠাবো, অনুমতি চাইছি।”
উদ্যান তড়াক করে রিদমের দিকে তাকাল। রিদমের ক্লান্ত মুখের হাসিটা তাকে উত্যক্ত করার জন্য যথেষ্ট।
“আমি নিজের পার্সোনাল মেইডকে অন্য কারো কাছে কেন পাঠাবো? মেয়ের কি অকাল পড়েছে?”
উদ্যানের কথা শুনে সোহম আঁড়চোখে উদ্যানের দিকে তাকায়। এই উদ্যান যে কি চায় মাঝে মাঝে কল্পনা করাও দুষ্কর। সেদিন তো সোহমকে রাত কাটানোর পারমিশন দিয়ে দিয়েছিল। আজ কেন নাখরা করছে?
“তোর পার্সোনাল মেইডকে তো আমি কাজেই খাটাচ্ছি তেহ। তুই এমন ভাবে রিএক্ট করছিস যেন মেয়েটা তোর পার্সোনাল মেইড নয়; তোর বেড পার্টনার।”
এহেন কথা শোনার জন্য উপস্থিত কেউ প্রস্তুত ছিল না। উদ্যান আবারও কটমট চোখে রিদমের দিকে তাকায়,
“মেয়েটা তোর বেড পার্টনার তো নয়? রাইট?”
লুহান এবার রিদমের উদ্দেশ্যে বলল, “তুই কি পুরোপুরি ভাবে ড্রাঙ্ক হয়ে গেছিস রিদম? এভাবে কেন তেহকে উত্যক্ত করছিস? মেয়েটা ওর বেড পার্টনার হলেও তোর কি?”
রিদম সশব্দে হেসে উঠল, “আরে আমার কিছু নয় মানে? এমন টা হলে আমি সবচেয়ে বেশি খুশি হবো। তেহ শুধু একবার স্বীকার করে নিক আমি আর ওকে উত্যক্ত করবো না।”
সোহম বিরসমুখে বলল, “এসব কিছুই নয়। নাতো হার্মফুল ওর বেড পার্টনার আর নাতো ওর ভালো লাগার কেউ। মেয়েটাকে তো ও সহ্যই করতে পারেনা।”
রিদম এবার উঠে দাঁড়াল। তারপর সবাইকে অবাক করে দিয়ে হাটু গেড়ে উদ্যানের সামনে বসে পড়ল,
“যখন আমি প্রথম বার শুনেছি মেয়েটাকে তুই মেইড হিসেবে এনেছিস তখন আমি একটু বেশিই আশাবাদী হয়ে গিয়েছিলাম তেহ। যেই তুই মেয়েদের ছায়াও মাড়াস না সেই তুই কিভাবে মেইড নিয়ে এলি। এটা তো অসম্ভব তাইনা? আমি শুধু একটু পরখ করে দেখতে চাইছি। তুই প্লিজ বিষয়টা ক্লিয়ার কর।”
উদ্যান এবার একটু শান্ত হলো। নির্লিপ্ত চোখে তাকাল রিদমের দিকে। সে অকারণেই রিএক্ট করছে। রিদম সহ বাকি সবাই তার ব্যপারে একটু বেশিই সংরক্ষণশীল।
“হয় অনুমতি দে নয় মেয়েটার প্রতি নিজের ফিলিংস স্বীকার করে নে।”
উদ্যান এবার উঠে দাড়াল। “আমি নিজের অবস্থান ক্লিয়ার করছি। মেয়েটার প্রতি আমার কোনো ফিলিংস নেই।”
রিদমের মুখটা ফ্যাকাসে হয়ে গেল। সে একটু বেশিই আশা করে ফেলেছিল। নিজের ভাবনার প্রতি থুহ, তবুও লাস্ট চেষ্টা করে দেখবে সে।
“তার মানে মেয়েটাকে মিস্টার চার্লসের কাছে পাঠানোর অনুমতি দিচ্ছিস?”
উদ্যান শান্তকন্ঠে বলল, “যা ইচ্ছা কর শুধু মেক সিওর মেয়েটার নিঃশ্বাস যেন বন্ধ না হয়ে যায়।”
রিদমের ঠোঁটের কোণের হাসি বিস্তৃত হওয়ার পূর্বেই উদ্যান বলল,
“ওর নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে গেলে ও আমার হাত থেকে বেচে যাবে। আমার সন্তুষ্ট হওয়ার পথ চিরতরে বন্ধ হয়ে যাবে। আমি নিজেকে সামলাতে পারবো না। ওর চোখের পানির অভাবে আমি তৃষ্ণায় মা*রা যাবো। আমার বুকের ভেতরে জ্বলতে থাকা আগুন ওকে পোড়াতে না পেরে আমাকে ভেতর থেকে শেষ করে ফেলবে।”
উদ্যানের বিষাক্ত কথাগুলো উপস্থিত তিনজনের মাথা ঘুরিয়ে দিল। এতোটা শত্রুতা? তাও আবার ওইটুকু মেয়ের সাথে, মেয়েটাকে তড়পাতে না দেখলে উদ্যান অসন্তুষ্টিতে জর্জরিত হয়ে শেষ হয়ে যাবে? তারা এতোটাই ভাবনায় পড়ে গেল যে কখন উদ্যান বাংকার ত্যাগ করল সেটা টেরই পেল না।
“দেখ রিদম তুই ফেইথফুলের সাথে এমন কিছু করিস না।”
সোহমের কথায় রিদম গা ঝেড়ে উঠে দাঁড়াল। হাতের উল্টো পাশে কপালের ঘাম মুছে ক্লান্তি মিশ্রিত কন্ঠে বলল,
“তোর আবার কি হলো? সামথিং সামথিং?”
“এভরিথিং ইয়ার। গ্রেটফুলকে আমি বিয়ে করার প্ল্যান করে ফেলেছিলাম কিন্তু তেহ রাজি হয়নি।”
“তো? বিয়ে করার কি দরকার? অনির মতো ভুল করিস না। বিয়ে করা একটা বোকামি। আমাদের মতো মানুষদের বিয়ে করার প্রয়োজনীয়তা কি? যেখানে একটা ইশারাতেই মেয়েদের লাইন লেগে যাবে।”
“নো ডুড, তুই আমাকে কথার জালে ফাসাতে পারবি না। আমি একদম শুদ্ধ পুরুষ। বউয়ের জন্য নিজেকে যত্ন করে তুলে রেখেছি।”
“ভালো তো চালিয়ে যা। দিনশেষে বউয়ের অভাবে ছটফট করেই রাত কাটাতে হবে। বউ আর জুটবে না।”
“অভিশাপ দিচ্ছিস?”
রিদম ঠোঁট কামড়ে হেসে উঠল, “চিন্তা করিস না আমার মতো অশুদ্ধ পুরুষের অভিশাপ তোর মতো শুদ্ধ পুরুষের ক্ষতিসাধন করতে পারবে না।”
একদিকে তারা কথার কাটাকাটি করছে অন্যদিকে লুহান উদাস চোখে তাকিয়ে আছে অজানায়। সবাই একভাবে না একভাবে নিজেদের সুখ খুঁজে নিচ্ছে। শুধুমাত্র সে-ই অসুখে তলিয়ে আছে। সে কি চেষ্টা করেনি সুখী হতে? যতবারই সুখের দরজায় কড়া নেড়েছে ততবারই হতাশ হয়েছে। সে বুঝতেই পারছেনা কেন তার প্রতি সুখের এই বিমুখতা।
“ও কেন বুঝতে চাইছে না…
“কে কি বুঝতে চাইছে না লুহান?”
সোহমের প্রশ্নে লুহানের ধ্যান ভাঙল। শ্বাস ফেলে বলল,
“কিছু না, চল।”
ফুল নিজের রুমে শোয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। রুমা আর নাদিয়া এখনও আসেনি। খাটের একপ্রান্তে গুটিসুটি মেরে শুয়ে আছে ফুল। কিছুটা শীত করছে। যদিও বাইরের হাড়কাঁপানো শীতের তুলনায় বাড়ির ভেতরে শীতের প্রকোপ একদমই নগন্য। হঠাৎ করেই রুমের দরজা খুলে গেল। নাদিয়া আর রুমার জন্য দরজা খোলাই রেখেছিল ফুল। দরজা খোলার ‘খট’ শব্দে ফুল বিশেষ গুরুত্ব দিলো না। শুধু একটু নড়েচড়ে বালিশে মুখ গুজলো। ঘুমায়নি সে, আর নাতো ঘুম আসছে। কেমন যেন অস্থির অস্থির লাগছে। তন্মধ্যেই সে নিজের উপর ভারী কিছু অনুভব করল। অপ্রত্যাশিত ঘটনায় বিমূঢ় হয়ে গেল ফুল। রুমজুড়ে ড্রিম লাইটের স্নিগ্ধ আলো। ফুল চোখ মেলে তাকাতেই নিজের উপরে একজন মানুষের অবয়ব দেখতে পায়।
“আহহহহহ, কে আপনি?”
ফুল তড়িঘড়ি করে উঠে বসতে নেবে তার আগেই লোকটা ফুলকে বিছানার সাথে চেপে ধরে। ফুল এবার শরীরের সর্বশক্তি খাটিয়ে চিৎকার দিল,
“ছাড়ুন আমাকে। কে আপনি? বাচাও কেউ।”
আকস্মিক ধাক্কায় লোকটা কিছুটা দূরে সরে গেল। এই সুযোগে ফুল খাট থেকে নেমে যায়। কিন্তু দরজা পর্যন্ত আসতেই লোকটা ফুলের চুল টেনে ধরে। ফুলের শরীরে ওড়না ছিল না। অভ্যাস বশত ওড়না খুলে রেখেই শুয়েছিল। লোকটা ফুলের চুল ধরে তাকে উল্টো দিকে করে দেয়ালের সাথে চেপে ধরে। হাতের কাছে সুইচবোর্ড পেয়ে ফুল লাইট অন করে দেয়। মুহুর্তেই ঘরময় আলোকিত হয়ে যায়। লোকটার সেদিকে খেয়াল নেই সে তো চান্স পাওয়া মাত্রই ফুলের ঘাড়ে মুখ গুজে দিয়েছে আর বিশ্রি ভাবে বাইট করছে। ফুল নিজেকে বাচানোর প্রয়াসে পা উঁচিয়ে সজোরে লাত্থি দিয়ে বসল। সে জানেনা লাথিটা কোথায় পড়েছে কিন্তু লোকটা ব্যাথায় ‘আহ’ শব্দ উচ্চারণ করে দুপা পিছিয়ে যায়। ছাড়া পেয়ে ফুল আবারও দরজার দিকে এগিয়ে গেল কিন্তু লোকটা পুনরায় তাকে টেনে ধরে সজোরে তার গালে চড় বসিয়ে দেয়। চড়ের তোড়ে ফুল রুমের অন্যদিকে ছিটকে যায়।
“ইউ রেকলেস গার্ল। ইউ চোজ টু স্ট্রাইক মি। ডোন’ট এক্সপেক্ট মার্সি। ইউ’ল রিগ্রেট ইট।”
কথাটা বলেই সামনে থাকা লোকটা তেড়ে যায় ফুলের দিকে। ফুল দিকবিদিকশুন্য হয়ে চারদিকে তাকাল। তাকে সাহায্য করার মতো কেউ নেই। চিল্লিয়ে গলা ফাটিয়ে ফেললেও লাভ হবেনা। ভাবনা টা মাথায় আসতেই চোখ আটকে গেল টেবিলের উপরে থাকা কাঁচের শোপিস টার উপর। ফ্লাওয়ার শোপিস, লবিতে রাখা ছিল কয়েকদিন আগেই শোপিস টা ফুলের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। তাই সে শোপিস টা এখানে এনে রেখেছিল। চার্লস নামের যুবকটি ফুলের কোমড় চেপে ধরা মাত্রই ফুল ডান দিকে হাতড়ে শোপিস টা তুলে নিল। একমূহুর্ত না ভেবে পেছনে থাকা দেয়ালের সাথে বাড়ি মেরে শোপিস টা ভেঙে ফেলল। আচমকা শব্দে চার্লস ফুলের ঘাড় থেকে মুখ তুলে ফুলের হাতের দিকে তাকালো। ফুলের হাতে কাচের টুকরো দেখে সে কিছুটা চমকে গেল। চার্লস অন্যমনস্ক হয়ে পড়া মাত্রই ফুল তার হাতের নিচ দিয়ে অন্যদিকে সরে যায়। ফুলের ভীতসন্ত্রস্ত মুখটা দেখে চার্লস নিজের জায়গাতেই দাঁড়িয়ে পড়ে।
ফুল ফ্লোরে বসে খাটের সাথে সিটিয়ে যায়। কাচের টুকরো টা চার্লসের দিকে তাক করে; রক্তাক্ত হাতটি অস্বাভাবিক রকমে কাপছে। তার অবস্থা দেখে চার্লস উচ্চস্বরে হেসে উঠল,
“দ্যাটস একজাক্টলি হোয়াই আই লাইক দেশি গার্লস। ডেয়ারিং, রেকলেস। আই লাইক দ্যাট ফায়ার ইন ইউ।
বাট টেল মি, ডু ইউ রিয়ালি থিংক ইউ ক্যান প্রোটেক্ট ইয়োরসেল্ফ, উইদ দ্যাট টাইনি লিটল ওয়েপন?
ডোন’ট মেক মি লাফ।”
ফুল ঠোঁট চেপে কেঁদে ওঠে। চোখ বন্ধ করে একটা শ্বাস নেয়। পরমুহূর্তেই তেজি কন্ঠে বলে উঠল,
“প্রোটেক্ট করার ক্ষমতা না থাকলে নিজের হাতে ডেস্ট্রয় করে দিতে হয়। আমিও সেটাই করবো; এই অস্ত্র দিয়ে আমি নিজেকে প্রোটেক্ট করতে না পারি ডেস্ট্রয় করতে তো পারবো।”
ফুলের মুখ নিঃসৃত কথাগুলো চার্লসের বোধগম্য হলোনা। সে ধীরে ধীরে এগিয়ে আসতে লাগল ফুলের দিকে। ফুল একবার তার দিকে তাকাল, ফুলের ঠোঁটের কোণে হাসি দেখে চার্লস কনফিউজড হয়ে যায়। মেয়েটার চোখে পানির ধারা আর ঠোঁটের কোণে হাসি। চোখমুখ লালবর্ণ ধারণ করেছে বহু আগেই। কান্নার তোড়ে ক্ষনে ক্ষনে শরীরটা কেঁপে উঠছে। চার্লস ফুলের হাতটা চেপে ধরতে যাবে এমন সময়েই ফুল এক অঘটন ঘটিয়ে ফেলে। হাতে থাকা শক্তপোক্ত কাঁচের টুকরো টা নির্দ্বিধায় নিজের পেট বরাবর ঢুকিয়ে দেয়। কয়েক সেকেন্ডের ব্যবধানে ফুলের মুখ দিয়ে রক্ত বেরিয়ে আসে। সেই রক্ত গিয়ে ছিটকে পড়ে চার্লসের মুখের উপর। বিস্ময়ে চার্লস পেছনের দিকে সরে গেল। অবিশ্বাস্য সুরে বলল,
“ইউ ফুলিশ গার্ল… হোয়াট হ্যাভ ইউ ডান টু ইয়োরসেলফ?!”
ফুলের র*ক্তমাখা ঠোঁটের কোণে হাসিটা লেপ্টে আছে। তবে নিস্তেজ চোখজোড়া আস্তে আস্তে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। চার্লস বসা থেকে উঠে দাড়ালো। কোনো দিকে না তাকিয়ে একছুটে রুম থেকে বেরিয়ে গেল। টেরেসে বসে ছিল সোহম, লুহান আর রিদম। সোহম মুখ ভার করে বলল,
“নিজের ভালোর জন্য তোকে বাধা দিইনি। মর্নফুল ইউজড হয়ে গেলে, আমি আর আকৃষ্ট হবো না। সেটাই আমার জন্য ভালো হবে। এমনিতেও তেহ বলেছে মেয়েটা ক্যারেক্টরলেস।”
সোহমের কথায় রিদম নিশ্চুপ থেকে গ্লাসে চুমুক দিল। গেস্টদের কেউ কেউ চলে গেছে। বাকিরা নিজেদের মতো এনজয় করছে। উদ্যান কোথায় আছে সেই সম্পর্কে ধারণা নেই কারো। সে অবশ্য ডিল সাইন করা পর্যন্তই উপস্থিত থাকে। হয়তো নিজের রাজত্বে টাইম স্পেন্ড করছে। নিজের রাজত্ব বলতে তার রুমকে বোঝানো হয়েছে, যেটায় রয়েছে সকল সুবিধা।
ভোর চারটা, উদ্যান শোয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। স্বভাবতই ভোরের দিকে ঘুমাতে যায় সে। আজও তার ব্যতিক্রম নয়। তবে ঘুমাতে যাওয়ার আগে চা প্রয়োজন। নইলে মাইন্ড ফ্রেশ হবেনা, আর মাইন্ড ফ্রেশ না হলে ঘুম আসবে না। উদ্যান উঠে গিয়ে টেবিলের উপর থেকে কি-প্যাড টা হাতে তুলে নিল। তারপর পুনরায় বিছানার উপর বসে তানের গায়ে হাত বুলাতে লাগল। তৎক্ষনাৎ মনে পড়ে গেল আজকে পার্টি, আর পার্টির রাতে সব মেইড দের ছুটি থাকে। কি-প্যাডে আলো জ্বলছে না। তবে একটা নির্দিষ্ট বাটন জ্বলজ্বল করছে। উদ্যান কিছুক্ষণ বাটন টার দিকে তাকিয়ে রইল, বাটন নম্বর ওয়ান, হ্যাঁ এটা ফুলের পেজার নম্বর। উদ্যানের চোয়াল শক্ত হয়ে গেল। বিনা দ্বিধায় সে বাটন চেপে ধরল। একবার দুবার নয় বারবার। অকারণে; কারণ ছাড়াই। কয়েক মিনিট পেরিয়ে যাওয়ার পরেও অপর পাশ থেকে কোনোরূপ রেসপন্স এলো না আর নাতো ফুল উদ্যানের সামনে হাজির হলো।
“ব্লাডি মিস্টেক, অ্যা*সহোলটা তোকে নিয়ে হ্যাভেনে ঘুরতে গেছে? স্যাটিসফাই হচ্ছিস খুব?”
বিড়বিড় করে উদ্যান উঠে দাঁড়াল, “আবেশের পরিবর্তে অ্যা*সহোলটা তোকে জাহান্নাম থেকে রেসকিউ করবে? আমার বানানো এই জাহান্নামে বসে তুই স্বর্গ থেকে ঘুরে আসবি? নোহ ওয়ে!”
গায়ে শার্ট জড়িয়ে উদ্যান নিজের রুম থেকে বেরিয়ে গেল। সিঁড়ি বেয়ে ধুপধাপ পা ফেলে সোজা এসে দাঁড়াল সার্ভেন্ট রুমের দরজার সামনে। দরজা হাল্কা ভিড়ানো ছিল। প্রচন্ড বিতৃষ্ণায় পা দিয়ে দরজা ঠেলে ভেতরে ঢুকল উদ্যান। ভেতরে ঢুকতেই সর্বপ্রথম চোখ পড়ল ফ্লোরে থাকা রক্তের ধারার উপর। সেই ধারা অনুসরণ করে উদ্যান সরাসরি তাকাল ফুলের দিকে। মেয়েটার নিস্তেজ শরীর টা খাটের বা দিকে হেলে আছে। এহেন দৃশ্য দেখে উদ্যান বড়সড় ধাক্কা খেল। পরপর দুবার পলক ফেলে বিষয়টা বোঝার চেষ্টা করল। ব্যপারটা বুঝতে পারা মাত্রই একপ্রকার ছুটে গেল উদ্যান। ফুলের পরণের গোলাপি রঙা কামিজটা রক্তে লাল হয়ে গেছে। উদ্যান বেখেয়ালি হাতে ফুলের গালে মৃদু চাপড় দিল। অবচেতন মনে তার ঠোঁটের ফাঁক গলে বেরিয়ে এলো,
“প্রিম…রোজ এই প্রিমরোজ।”
ফুলের থেকে সাড়া না পেয়ে উদ্যান চিল্লিয়ে উঠল,
“কে করেছে? কার এতো বড় সাহস? লোবো…
উদ্যানের চিৎকারে পুরো সোলার এস্টেট কেঁপে উঠল। লুহান তখন বাকিদের সাথে বসে ড্রিংকস করছিল। উদ্যানের ডাকে মুখে থাকা পানীয় টুকু উগড়ে দিল লুহান। কোনো দিকে না তাকিয়ে ছুট লাগাল। শুধু সে নয় বাকিরাও জান হাতে নিয়ে দৌড় দিল,
চলবে,,,
(পরবর্তী পর্ব পেতে রেসপন্স করুন)
Share On:
TAGS: অবাধ্য হৃৎস্পন্দন, সোফিয়া সাফা
CLICK HERE GO TO OUR HOME PAGE
-
অবাধ্য হৃৎস্পন্দন পর্ব ৩৪
-
অবাধ্য হৃৎস্পন্দন পর্ব ২০
-
অবাধ্য হৃৎস্পন্দন পর্ব ১০
-
অবাধ্য হৃৎস্পন্দন পর্ব ১৩
-
অবাধ্য হৃৎস্পন্দন পর্ব ১৭
-
অবাধ্য হৃৎস্পন্দন পর্ব ১৯
-
অবাধ্য হৃৎস্পন্দন পর্ব ৯
-
অবাধ্য হৃৎস্পন্দন পর্ব ২৩
-
অবাধ্য হৃৎস্পন্দন গল্পের লিংক
-
অবাধ্য হৃৎস্পন্দন পর্ব ২৭