অবাধ্য_হৃৎস্পন্দন (১৮)
সোফিয়া_সাফা
উদ্যানের বিলাপ শুনে রিদম পেছন থেকে এসে তাকে আকঁড়ে ধরে,
“কেন এমন করছিস? আর প্রিমরোজ… কে এই প্রিমরোজ? কাকে ডাকছিস?”
রিদমের কথায় উদ্যানের হুশ ফেরে। সে এতোক্ষণ কি বলেছে না বলেছে নিজেও জানেনা। উদ্যান স্বাভাবিক ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে একটা বড় শ্বাস নিল।
“কনসোল টা ঠিক হতে কতোক্ষণ লাগবে?”
“দাঁড়া কল করে দেখছি।” পকেট থেকে ফোনটা বের করে রিদম কল লাগালো অনির ফোনে। উদ্যানের কনসোল টা অক্ষত থাকলে এতোক্ষণে ফুলের গলায় থাকা পেজারের সাহায্যে লোকেশন ট্র্যাক করে ফুলকে খুঁজে পেয়ে যেতো তারা। যদিও কনসোল টা ঠিক করা হচ্ছে।
“হ্যালো অনি, কনসোলে কোনো সিগন্যাল এসেছে?” রিদমের প্রশ্নে ফোনের অন্যপাশ থেকে অনি বলল, “হ্যাঁ আমি এখনই তোকে কল দিতাম। সিগন্যাল পাওয়া গেছে। সেন্ড করে দিচ্ছি তোকে।” কল কেটে দিয়ে সঙ্গে সঙ্গেই রিদমের ফোনে কনসোল থেকে পাওয়া লোকেশন সেন্ড করে দিল অনি। লোকেশন টা দেখামাত্রই রিদমের চোখ ছানাবড়া হয়ে যায়।
“কিরে লোকেশন কোথায় দেখাচ্ছে?” উদ্যান গম্ভীর গলায় জিজ্ঞেস করে। এখন তার কণ্ঠ স্বাভাবিক শোনাচ্ছে।
“পুলিশ স্টেশনের লোকেশন দেখাচ্ছে।” রিদমের কথা শুনে লুহান আর সোহমও এগিয়ে এলো।
“ল’ফুল কি আমাদের নামে মামলা টামলা করতে চলে গেল নাকি?” সোহমের প্রশ্নে বাকিরা চোখ কটমট করে তাকায় তার দিকে। সবার তাকানো দেখে সোহম মেকি হেসে বলে, “এভাবে তাকাচ্ছিস কেন? লোকেশন দেখে যা মনে হল আমি তাই বলেছি।”
পুলিশ স্টেশনের শক্তপোক্ত কাঠের তৈরি বেঞ্চির উপর পড়ে আছে ফুল। সামনেই বসে আছে ইনস্পেকটর উর্বী। রাত দেড়টা নাগাদ জঙ্গলের পথ দিয়ে শহরে ফেরার সময় সে ফুলকে খুঁজে পেয়েছিল,
ফ্ল্যাশব্যাক [রাত দেড়টা]
একহাতে গাড়ি চালাচ্ছে উর্বী। আরেকহাত উইন্ডোর উপর রেখে ভাবুক চোখে সামনের নির্জন রাস্তার দিকে তাকিয়ে আছে। গাড়ির হেডলাইটের আলো ক্ষণে ক্ষণে সামনের পথ আলোকিত করে দিচ্ছে। হঠাৎ করেই তার নজর পড়ল রাস্তায় ছিটিয়ে রাখা ডালপালার উপর। পাশেই এসপি আরাফাত সানি বসে আছেন। পেছনে বসে আছে ড্রাইভার সহ আরেক পুরুষ ইনস্পেকটর। আসার সময় বারবার টায়ার পাংচার হওয়ায় অতিষ্ঠ হয়ে নিজেই গাড়ি চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল উর্বী। যাওয়ার সময়েও সেই চালাচ্ছে। তার গাড়ি ছিল সবার সামনে। সে থেমে যেতেই পেছনের গাড়িও থেমে গেল।
“কি হয়েছে উর্বী?” আরাফাত সানি প্রশ্ন করলেন,
“স্যার আই থিংক সামনে ফাঁদ আছে। টায়ার পাংচার হয়ে যেতে পারে। আপনারা বসুন আমি নেমে দেখছি।”
আরাফাত সানি সম্মতি জানালে উর্বী গাড়ি থেকে নেমে পড়ে। পকেট হাতড়ে ফোন বের করে ফ্ল্যাশলাইট জালায়।
“এগুলো দেখে তো মনে হচ্ছে কেউ ইচ্ছাকৃত ছড়িয়ে ছিটিয়ে রেখেছে। কিন্তু কে করেছে? স্ট্রেইজ! ডালপালা গুলো এখনও সতেজ। যার মানে…
ভাবনার মাঝেই তার ফোনে কল আসে। ফোনের স্ক্রিনে জ্বলজ্বল করছে ‘মিস্টার সেন’ দিয়ে সেভ কৃত নম্বরটি। শুকনো ঢোক গিলে উর্বী একবার পেছনে ঘুরে তাকাল। তারপর গাড়ির দিকে এগিয়ে গিয়ে বলল,
“স্যার, আপনি যদি কিছু মনে না করেন পেছনের গাড়িতে করে চলে যান। আসলে আমার একটা ইম্পর্ট্যান্ট কল এসেছে। এখনই রিসিভ করতে হবে।”
এসপি সানি আর অপর ইনস্পেকটর বিষয়টি বুঝতে পেরে গাড়ি থেকে নেমে গেল। উর্বীর ড্রাইভার গাড়ি সাইডে সরিয়ে রাখতেই পেছনের গাড়িগুলো চলে যায়। দ্বিতীয়বারের মতো ফোনের রিংটোন বেজে উঠতেই উর্বী কলটা রিসিভ করে। উদ্দেশ্যে হীন ভাবে জঙ্গলের দিকে হাটা ধরল। মূলত সে নিজের ড্রাইভারকেও ব্যক্তিগত বিষয়গুলো জানাতে চায়না।
“হ্যালো!” উর্বীর গলার স্বর ক্ষীণ শোনাল। অপর পাশ থেকে মিস্টার দীপক সেন নামের লোকটি ভারী গলায় বলল, “আমি আপনার ঠিকানায় ডিভোর্স লেটার পাঠিয়ে দিয়েছি উর্বী। আশা করি, আপনি আমাকে নিরাশ করবেন না। আপনাকে তো সবই বলেছি, বিয়েটা আমি নিজের ইচ্ছেতে করিনি। আপনি একজন বুদ্ধিমতী নারী। আমি জানি, আপনাকে ব্যাখ্যা দিতে হবেনা। তবুও বলছি, আমি একজনকে ভালোবাসতাম এখনও বাসি। পরিবারের চাপে আপনাকে বিয়ে করতে বাধ্য হয়েছিলাম। কারণ আমার ভালোবাসার মানুষটির ধর্ম, জাত ভিন্ন। মিথ্যা বলবো না, আমিও ভেবেছিলাম বিয়ে করে নিলে ওকে ভুলে যেতে পারবো। যেটা ছিল আমার ভুল ধারণা। আমি ওকে ভুলতে পারিনি উর্বী; আর নাতো পারবো। আমি আজকেই ওকে নিয়ে দেশ ত্যাগ করবো। যাওয়ার আগে আপনার মুক্তির সনদপত্র আপনার ঠিকানায় পাঠিয়ে দিয়ে গেলাম। কারো সাথেই আর যোগাযোগ রাখবো না। ভালো থাকবেন।”
নিজের মতো কথাগুলো বলে কল কেটে দিল দীপক। উর্বীকে কিছু বলার সুযোগ টুকুও দিলনা। অবশ্য এটা নতুন কিছুনা বিয়ের পর থেকে এমন টাই হয়ে এসেছে। দীপকের যখন ইচ্ছে হয় তখন কল দেয়। নিজের মতো কথা বলে আবারও কল রেখে দেয়। একবুক আশা নিয়ে প্রতিবার কল রিসিভ করলেও মুখ ফুটে কিছু বলার সুযোগটুকুও পায়না উর্বী। তবে আজকের বিষয়টা কল্পনাতীত ছিল। এভাবে কিভাবে ডিভোর্স লেটার পাঠিয়ে দিল লোকটা? ভাবতেই উর্বীর চোখের কোণে জল জমলো। বস্তুত উর্বী কঠোর মনের হলেও গায়ে ডিভোর্সির ট্যাগ লেগে যাওয়ার যন্ত্রণাটা তার সমস্ত কঠোরতাকে ছাপিয়ে গেছে। দুহাতে চোখ মুছে নিল উর্বী, এতে যেন চোখের জলগুলো আরও আশকারা পেয়ে গেল।
“কেন? আমার সাথেই হলো এমন?” আর কিছু বলতে পারলো না উর্বী। বুকের ভেতর অসহ্য পীড়া হচ্ছে। স্বামী নামক লোকটাকে বিয়ের দিন একবার চোখের দেখা দেখেছিল উর্বী। এরপর আর দেখা হয়ই নি বলতে গেলে। মাথা চেপে ধরে ছুট লাগাল উর্বী, আরও কিছুটা এগিয়ে গিয়ে ফোন লাগাল দীপকের নম্বরে। অপর পাশ থেকে কল রিসিভ হতেই চিল্লিয়ে উঠল উর্বী,
“আপনার ধারণা ছিল বিয়েটা একটা ছেলেখেলা। একবার খেলে দেখতে মন চেয়েছিল; আপনি খেলেছেন। এখন মন চাইছে না খেলবেন না। বাহঃ কি দারুণ ভাবে বলে দিলেন ডিভোর্স লেটার পাঠিয়ে দিয়েছি। আশা করি, নিরাশ করবেন না। নিরাশ? আপনি কোন অধিকারে আশা করেছেন? আমি তো আপনাকে চিনি পর্যন্ত না। ধ্বংস করে দিলেন আমার জীবনটা, একটা অপরিচিত মেয়ের জীবন ধ্বংস করে দিলেন। একবারও মনে হলো না মেয়েটাকে স্যরি বলা উচিৎ, ক্ষমা চাওয়া উচিৎ। আরেহ তা মনে হবে কেন আপনি যেখানে নিজের ভুল সম্পর্কেই উদাসীন সেখানে অনুশোচনা হবে আশা করাটাও বোকামো। ভাববেন না কথাগুলো আপনাকে নিজের কাছে আটকে রাখার জন্য বলছি। আমি আপনাকে অবশ্যই ডিভোর্স দিয়ে দেবো। তবে আপনার জন্য নয় নিজের জন্য। নিজেকে মুক্ত করার জন্য।”
“আপনি এসব কি বলছেন আপু? কে আপনি?” ফোনের অন্যপাশ থেকে মেয়েলি কণ্ঠ শুনে থেমে গেল উর্বী। বুঝতে পারলো সে ভুল কাউকে সঠিক কথা বলে ফেলেছে। কিছুক্ষণ থেমে, চাপা স্বরে উর্বী বলল,
“আমি আজ কেউ নই। তবে আপনার প্রেমিকের কাছে আমি ছিলাম একটা প্রজেক্ট যেটার উপর সে এক্সপেরিমেন্ট করেছিল। এক্সপেরিমেন্ট শুরু করার সাথে সাথেই সে অনুধাবন করতে পারে; ভবিষ্যতে সে কাঙ্ক্ষিত ফলাফল টি পাবেনা। তাই আমি নামক প্রজেক্টিকে মাঝপথেই ডিসমিস করে দিয়েছে।”
কথাগুলো বলেই কল কেটে দেয় উর্বী,
“ভালোর সাথে খারাপ হওয়াটা কতটুকু যৌক্তিক প্রভু? এটা কি অন্যায় নয়? নাকি তোমার বেলায় অন্যায়ের সংজ্ঞা উল্টো?” চোখ বন্ধ করে নিজেকে সামলে নিল উর্বী। শেষ বারের মতো চোখ মুছে হাটা ধরল। একটা গাছ পাশ কাটিয়ে যাওয়ার সময় কিছু একটার সাথে সে হোচট খায়। উত্তেজনায় শরীর শিউরে ওঠে উর্বীর। সাহসী হলেও ব্যপারটা যথেষ্ট ভয়ঙ্কর। কিছুটা সময় নিয়ে গাছের দিকে তাকিয়ে একটা অবয়ব দেখল উর্বী। মুহুর্তেই চোখ বড়বড় হয়ে গেল তার।
বর্তমান [ভোর ৫ টা]
অচেতন মেয়েটির চোখের পাপড়ি নড়ে উঠতেই উর্বী মৃদু গলায় ডাক দিল, “এই যে শুনছো?”
চোখমুখ কুচকে গেল ফুলের। আধো আধো চোখে আশেপাশে তাকিয়ে আবারও চোখ বন্ধ করে নিল। ঠোঁট আর গলা শুকিয়ে কাঠ।
“আমি কোথায়?” এটুকুই বলতে সক্ষম হয়েছে ফুল,
“তুমি পুলিশ স্টেশনে আছো। কিন্তু তুমি অতো রাতে ওইরকম একটা নির্জন জায়গায় কি করছিলে? আর তোমাকে ওভাবে বেধেই বা রেখেছিল কে?” উর্বীর প্রশ্নে ফুল ফট করে চোখ মেলে তাকায়। বুঝতে পারে সে কোনোভাবে দানবটার হাত ফসকে বেরিয়ে এসেছে। ব্যাপারটা বোধগম্য হতেই ফুল সর্বশক্তি খাটিয়ে উঠে বসে। কাধের জায়গাটা চিনচিন করে উঠতেই সেখানে হাত রাখে ফুল। জায়গাটা ব্যান্ডেজ করা। যার মানে তার চিকিৎসা করা হয়েছে। মূলত সেই কারণেই চেতনা ফিরে পেয়েছে ফুল। যদিও জ্বরে পুড়ে যাচ্ছে শরীর। জিভ দিয়ে ঠোঁট ভিজিয়ে ফুল ভাঙা গলায় বলে,
“আমি আপনাকে সব বলব। তার আগে আমার বাড়ির কাউকে একটু ফোন করুন।”
উর্বী মাথা নেড়ে ফোন বের করল।
কপালের উপর হাত রেখে শুয়ে ছিল আবেশ। আচমকা ফোনের রিংটোনে তন্দ্রাভাব কেটে যায়। বালিশের পাশ থেকে ফোনটা হাতে নিয়ে দেখে ফুলের ফোন টা বাজছে। লাফ দিয়ে উঠে বসে আবেশ,
“এই ভোরবেলায় ফুলের ফোনে কে কল দিতে পারে? ফুল নয়তো?”
সাথে সাথেই কল রিসিভ করল আবেশ, “হ্যালো।”
বহুদিন পর আবেশের কণ্ঠ শুনে আবেগ আপ্লূত হয়ে পড়ে ফুল, “আবেশ ভাই।”
ফুলের রিনরিনে গলায় নিজের নাম শুনে আবেশের বুকের ভেতর গুমরে উঠল।
“জান বল না; কোথায় আছিস?”
কথা দীর্ঘ না করে ফুল লোকেশন জানিয়ে দিল।
কয়েক মিনিটের ব্যবধানে হন্তদন্ত হয়ে পুলিশ স্টেশনে প্রবেশ করল আবেশ। চাতক পাখির ন্যায়ে আশেপাশে তাকিয়ে ফুলকে খুঁজতে লাগল। বেঞ্চির উপর বসে থাকা বিধ্বস্ত ফুলকে দেখে আবেশ নিজেকে সামলে রাখতে পারেনা। একছুটে গিয়ে ফুলকে টেনে নেয় বুকের মাঝে। আবেশের অনুভূতি বুঝতে পেরে ফুলও তাকে আটকায় না। অনেকক্ষণ হয়ে যাওয়ার পরেও আবেশ ফুলকে ছাড়েনা,
“আবেশ ভাই, ছাড়ো আমাকে। আমাদের বের হতে হবে।” ফুলের চুলের মাঝে কয়েকটা চুমু দিয়ে আবেশ সরে দাড়াল। তাদের আবেগঘন মুহুর্ত দেখে উর্বী চলে যায় অন্যদিকে। অন্যদের ভালোবাসা দেখতেও ভালো লাগে। এটাও একধরনের ইতিবাচক অনুভূতি।
“তুই এতো শুকিয়ে গেছিস কেন ফুল? ডেভিল টা তোকে খেতেও দেয়নি তাইনা?” ফুলের মুখটা হাতের আঁজলায় নিয়ে আবেশ সর্তক চোখে দেখছে। এরূপ ঘটনায় কিছুটা অপ্রস্তুত হয়ে পড়ে ফুল। আলতো হাতে আবেশের হাত সরিয়ে দিয়ে বলে,
“তুমি তো বরাবরই চেয়েছো আমি যেন শুকিয়ে যাই। এখন তো তোমার খুশি হওয়া উচিৎ।”
“আমি মজা করে বলতাম, সিরিয়াসলি না।”
“হয়েছে, এখন আমাকে নিয়ে যাও। দানবটা এখানেও চলে আসতে পারে।”
আবেশ মাথা নেড়ে ফুলের হাত ধরে চলে যেতে লাগল।
“তুমি ওইরকম অবস্থায় ওখানে কি করছিলে সেটা আমাকে বললে না তো।” উর্বীর প্রশ্নে ফুল পেছনে ঘুরে তাকায়। ফুল কিছু বলতে চাইলে আবেশ বাধা দিয়ে বলে,
“এটা একটা পারিবারিক সমস্যা ম্যাম। বিষয়টা আমরা নিজেরাই সমাধান করতে পারবো। ফুল যেহেতু নিজ ইচ্ছাতেই আমার সাথে যাচ্ছে সেহেতু আপনার কোনো সমস্যা হবেনা আশাকরি।”
কথাটা বলে আর একমুহূর্ত অপেক্ষা করল না আবেশ, ফুলকে নিয়ে বাইরে বেরিয়ে গেল। এদিকে আবেশের কথাগুলো শুনে উর্বীর ঠোঁটের কোণে তাচ্ছিল্যের হাসি ফুটে উঠল।
“হায়রে পুরুষ জাতি। তোরা কেন এতো হারামি? তোদের কি কখনও কৃতজ্ঞতা বা অনুতাপ হয়না? নাকি স্যরি বা ধন্যবাদ বলতে ভয় পাস; কোনটা? বউকে জঙ্গল থেকে তুলে এনে আদরযত্ন করে হাতে তুলে দিতাম, কই ধন্যবাদ জানাবি তা না করে মেজাজ দেখালি?” বিরবির করে কথাগুলো বলে নিজের ডেস্কে ফিরে গেল উর্বী। হাতের কাজ শেষ করে বাড়িতে ফিরে যাবে।
স্টেশন থেকে বের হতেই ফুল বলে ওঠে, “আমিও ওনাকে কিছু জানাতাম না। তবে একটা ধন্যবাদ বলা উচিৎ ছিল। উনি না থাকলে…
“তুই খুব ভালো করেই জানিস, আমাদের হাতে সময় নেই।”
“তারপরও… ফুলের নজর গেল গলায় থাকা পেজারের দিকে। সবুজ বাতি জ্বলছে আর নিভছে। দম আটকে এলো ফুলের,
“এটার মাধ্যমে কি কোনোভাবে আমাকে খুঁজে পেয়ে যাবে?” ভাবনা টা মাথায় আসতেই একহাতে লকেটটা ছিড়ে ফেলল ফুল। তারপর সেটা হাতে নিয়ে একবার তাকাল,
“আমাকে আপনি খুঁজে পাবেন না উন্মাদ। আমি চলে যাচ্ছি আপনার তৈরিকৃত গোলকধাঁধার প্রাচীর টপকে। যেই প্রাচীর টপকাতে আপনি নিজে আমাকে সাহায্য করেছেন। ধন্যবাদ; আলবিদা।” চরম বিতৃষ্ণার সাথে পেজার টা রাস্তার মাঝেই ছুড়ে মারল ফুল।
“উঠে বস।” আবেশের কথায় ফুল তার দিকে তাকাতেই দেখল আবেশ বাইকের পেছনে বসতে ইশারা করছে। ফুল একটা শুকনো ঢোক গিলল,
“কি হলো? তাড়াতাড়ি বস।”
মাথা নেড়ে উঠে বসল ফুল। সে বসামাত্রই আবেশ তার হাত ধরে শক্ত করে নিজের কোমড়ের উপর রাখল,
“ভালো করে ধরে বস। তোর গায়ে প্রচুর জ্বর। পড়েটড়ে যাসনা। খারাপ লাগলে আমাকে বলিস কেমন?”
ফুলের মাঝে কিছুটা জড়তা কাজ করছে। এর আগেও আবেশের সাথে এভাবে বসেছিল ফুল। তবে আজকেই কেন এতটা আন-কম্ফোর্টেবল লাগছে? এতো অস্থির অস্থির লাগছে? ভাবনার মাঝেই আবেশ বাইক স্টার্ট দিল।
সকাল ৬ টা, আঙুলের ডগা দ্বারা কপাল চেপে ধরে কয়েকটা ফাইল দেখছে উর্বী। আজকের কাজ শেষ করে একেবারেই বাড়িতে চলে যাবে বলে ঠিক করেছে সে। টেবিলের উপরে ধোঁয়া ওঠা চায়ের কাপ। কাজের ফাঁকে ফাঁকে চায়ের কাপে চুমুক দেওয়াও হচ্ছে। মূলত দীপকের ব্যপারটা ভুলের থাকার প্রয়াসেই কাজের মধ্যে ডুবে আছে উর্বী। তন্মধ্যেই কয়েকজন যুবক হনহনিয়ে পুলিশ স্টেশনের মধ্যে ঢুকে পড়ল। তাদের মধ্যে থাকা একজন এসেই উর্বীর টেবিলের উপর বাড়ি মেরে দিল,
“হোয়্যার’স দ্যাট সিলি গার্ল? ড্র্যাগ হার আউট!” আকষ্মিক গমগমে পুরুষালী কণ্ঠে উর্বী অবাক চোখে তাকাল। টেবিলের সামনে দাঁড়িয়ে রাগে ফুসছে উদ্যান। পাশেই লুহান আর সোহম দাঁড়িয়ে আছে। রিদম সাথে এলেও উর্বীকে দেখে সে বাইরেই থেমে গেছে। মেজাজ বিগড়ে গেল উর্বীর এমনি মন মেজাজ ভালো ছিল না তার উপর,
“দাড়োয়ান, এই দাড়োয়ান এই পাগলা হাতিকে ঢুকতে দিয়েছে কে? এসেই কেমন দক্ষযজ্ঞ শুরু করেছে।” উর্বীর হটকারিতায় চটে গেল উদ্যান। ইতোমধ্যেই তার মাথায় আগুন জ্বলছে। একটা মেয়ে তাকে নাকানিচুবানি খাওয়াচ্ছে ভাবতেই বিরক্ত লাগছে। এই প্রথম সে কোনো জিনিসের জন্য সশরীরে ছোটাছুটি করছে। স্বভাবতই উদ্যানের হাত উঠে গেল, উর্বীর গালে চড় লাগাতে যাবে তার আগে সোহম বলে ওঠে,
“তেহ কন্ট্রোল ইওরসেল্ফ। পরিস্থিতি বেগতিক হয়ে যাবে।”
নিজেকে সামলে নিল উদ্যান, ঠিক করল আগে মেয়েটাকে পেয়ে নিক তারপর এই ইনস্পেকটরের ভবলীলা সাঙ্গ করবে। উর্বী তো অবাক চোখে তাকিয়ে আছে উদ্যানের হাতের দিকে,
“এনি হাউ আপনি কি আমার গায়ে হাত তুলতে যাচ্ছিলেন?”
চোখ বন্ধ করে নিল উদ্যান। তাকে সাইডে টেনে নিয়ে গেল লুহান। এবার সোহম এগিয়ে এলো,
“অ্যাকচুয়ালি, ও একটু শর্ট টেম্পারড; কিছু মনে করবেন না। তার উপর পারসোনাল মে… আই মিন গার্ল হারিয়ে যাওয়াতে ওর মাথা খারাপ হয়ে গেছে।”
“পার্সোনাল গার্ল?” বিরবির করে উঠল উর্বী। সকাল সকাল এই যুবকগুলো কেনো এসে জুটেছে?
“আপনাদের প্রবলেম টা কি? খুলে বলুন।”
সোহম কথা না বাড়িয়ে ফোন থেকে ফুলের একটা পিক বের করে উর্বীর সামনে ধরল। এদিকে তার ফোনে ফুলের ছবি দেখে উদ্যান তেড়ে এসে সোহমের শার্টের কলার চেপে ধরল,
“তোর ফোনে ওর ছবি কি করে এলো?”
উদ্যানের রক্তিম চোখজোড়া দেখে গলা শুকিয়ে এলো সোহমের।
“এটা সেই পার্টির দিন তুলেছিলাম। সেদিনই লাস্ট আমি ওর দিকে তাকিয়েছে, আর তাকাই নি বিশ্বাস কর। আচ্ছা ঠিক আছে আমি ছবিটা ডিলেট করে দিচ্ছি তুই বরং নিজের ফোন থেকে বের করে দেখা।”
হাত আলগা হয়ে এলো উদ্যানের। কি করছে কেনো করছে বুঝে উঠতে পারছেনা। অন্যদিকে ঘুরে হাত মুঠ করে নিল উদ্যান, “আমার ফোন হারিয়ে গেছে।”
উদ্যানের নিস্তেজ কথায় সোহম চমকে গেল, “তার মানে তোর ফোনে ওর ছবি ছিল? ফোন হারিয়ে না গেলে তুই দেখাতে পারতি?”
পুনরায় টেবিলের উপর ঘুষি মারল উদ্যান। এবারের আঘাতে টেবিলের উপরে থাকা চায়ের কাপটা ছিটকে নিচে পড়ে গুড়ো গুড়ো হয়ে গেল।
“এসব আপনারা কি করছেন? পুলিশ স্টেশনে বসে আপনারা যা ইচ্ছা তাই করতে পারেন না। বেরিয়ে যান।” উর্বীর কথায় উদ্যান চোখ কটমট করে তাকাল। উর্বী না চাইতেও ঘাবড়ে গেল,
“লয়ার গুলো কোথায়?” উদ্যান ঘাড় বাকিয়ে পেছনে তাকাতেই বেশ কয়েকজন লয়ার প্রবেশ করল। তাদেরকে দেখে চোখ বড়বড় হয়ে গেল উর্বীর।
উদ্যান এবার একহাত কোমড়ে রেখে ঘাড় কাত করে বলল, “মেয়েটাকে কিডন্যাপ করে আটকে রাখার অভিযোগে আমি আপনার চাকরি খেয়ে দিতে পারি মিসেস উর্বী সেন। তাছাড়াও আপনার সাথে আমার একটু সিক্রেট মনমালিন্যও আছে। আফটার অল আজকের এই অপ্রত্যাশিত ঘটনার মূলে আপনিই ছিলেন।”
উদ্যানের কথাগুলো বুঝতে পারল না।
“কি বলছেন এসব? কাকে কিডন্যাপ করেছি আমি। আর আপনারা কারা?”
উদ্যান সোহমের দিকে তাকাতেই সোহম ফোনের স্ক্রিন উর্বীর সামনে ধরল। ছবিটা দেখে থমকে গেল উর্বী। উদ্যান এবার নিজের পকেট থেকে লকেট টা বের করল। ভেতরে ঢোকার সময় পুলিশ স্টেশনের বাইরে লকেকটা নিচে পড়া পেয়েছিল উদ্যান,
“মেয়েটা এখানেই ছিল। কি করেছেন মেয়েটাকে? বিক্রি করে দিয়েছেন?”
“কিসব বলছেন? বিক্রি করে দিয়েছি মানে? ওনাকে আমি জঙ্গলের মাঝে খুঁজে পেয়েছিলাম গাছের সাথে বাধা অবস্থায়।”
খপ করে লকেটটা মুঠোয় পুরে নিল উদ্যান। চোখ বন্ধ করে নিজেকে ধাতস্থ করে বলল,
“আপনি মিথ্যা বলছেন, মেয়েটাকে নিয়ে আমি বাড়িতে ফিরছিলাম সেখান থেকে আপনিই কিডন্যাপ করে এনেছেন মিসেস উর্বী। এখনই মেয়েটাকে আমার হাতে তুলে না দিলে আপনার বিরুদ্ধে কিডন্যাপিং এর কেস করবো।”
উর্বী এবার বুকের উপর হাত ভাজ করে বলল, “এখানে সিসিটিভি ক্যামেরা আছে। সেখানেই প্রমাণ আছে যে আমি মেয়েটার সাথে কিছু করিনি।”
“গুড, সিসিটিভি ফুটেজ দেখান।” উদ্যানের ব্যবহারে উর্বী রেগে গেলো। তবুও নিজের চাকরি হারাতে চায়না সে। তাই স্বাভাবিক কণ্ঠেই বলল,
“আমি সিওর মেয়েটাকে আপনিই গাছের সাথে বেধে রেখে গিয়েছিলেন। হয়তো আপনার ভয়ে মেয়েটা আপনার বিরুদ্ধে কোনো স্টেপ নিতে পারেনি।”
“কি প্রমাণ আছে আপনার কাছে? অযৌক্তিক কথা বলে আমার সময় নষ্ট করবেন না।”
“আগে মেয়েটার সাথে আপনার রিলেশন ক্লিয়ার করুন। নয়তো কারো পার্সোনাল ডিটেইলস দেওয়ার অনুমতি নেই।” উর্বীর কথাটা শুনে উদ্যান পেছনে তাকিয়ে একজন লয়ারকে ইশারা করতেই সে এগিয়ে এসে কিছু কাগজ উর্বীর দিকে এগিয়ে দিল। কাগজ গুলো হাতে নিয়ে চোখ বুলাতেই উর্বী হা হয়ে যায়,
“আপনি মেয়েটার হাজব্যান্ড?” উর্বীর প্রশ্নে লুহান, সোহম ভূত দেখার ন্যায় চমকে উঠল। বেকুবের মতো দুজনেই তাকিয়ে রইল উদ্যানের মুখপানে।
“আপনি কিন্তু আমার সময় নষ্ট করছেন।” উদ্যান চাপাস্বরে কথাটা বলল। উর্বী বুঝে উঠতে পারছেনা ব্যপারটা,
“আপনি মেয়েটার স্বামী হলে, আবেশ নামের ছেলেটা কে? মেয়েটা তো আবেশ নামের ছেলেটাকে কল দিয়েছিল। আমি তো ভেবেছিলাম সেই ছেলেটাই ওর হাজব্যান্ড। যেভাবে এসে জড়িয়ে ধরল… ” বাকি কথাটুকু শেষ করতে পারল না উর্বী। তার আগেই উদ্যান গর্জে উঠল।
“জাস্ট শাট আপ।” বলেই উল্টো ঘুরে চলে যেতে লাগল উদ্যান।
“আরে সিসিটিভি ফুটেজ না দেখেই যাচ্ছিস কোথায়? ফুল কার সাথে আছে না জেনে ওকে খুঁজে বের করবো কিভাবে?” লুহান পেছন থেকে উদ্যানের বাহু টেনে ধরতেই উদ্যান দাঁতে দাঁত পিষে বলে ওঠে,
“ছাড় আমাকে, সিসিটিভি ফুটেজ দেখা লাগবে না আমার। আমি বুঝে গেছি মেয়েটা কার সাথে গেছে। তোরা নিজেদের কাজ কর গিয়ে। আমি একাই ওকে খুঁজতে পারব।” বলেই হাত ঝাড়া মেরে উদ্যান গটগট পায়ে বেরিয়ে গেল।
টেবিলের উপর রাখা হোয়াইট রোজ ভ্যানিলা কেকের দিকে তাকিয়ে ম্লান হাসল ফুল। এই প্রথম নিজের জন্মদিন ভুলে যাওয়ার দরুন নিজের কাছেই নিজেকে পরিপক্ব ঠেকছে। সে হয়তো বড় হয়ে গেছে। এর আগে কখনই এমনটা হয়নি যে নিজের জন্মদিন ভুলে গেছে সে।
“এসবের কি দরজার ছিল আবেশ ভাই?”
কেকের উপর ক্যান্ডেল লাগাতে লাগাতে আবেশ বলল,
“আমাদের জার্নি দীর্ঘ হতে চলেছে। সেখানে পৌঁছে ক্লান্ত হয়ে যাবো তাই এখনই জন্মদিন পালন করে ফেলি।”
“সময় নষ্ট না করে আমাদের উচিৎ যতদূরে সম্ভব চলে যাওয়া আবেশ ভাই।”
“হুম তাড়াতাড়ি কর।” আবেশ নাছোড়বান্দা। সে জন্মদিন পালন করবে তো করবেই। ফুলকে নিশ্চুপ হয়ে যেতে দেখে আবেশ আঁড়চোখে তাকাল,
“চুপ করে গেলি কেন? এতোদিন পর দেখা হলো। আমি তো ভেবেছি আজকে কথা বলে বলে আমার মাথাই খেয়ে ফেলবি।”
পুনরায় ম্লান হাসল ফুল। সত্যি বলতে ফুলের এরূপ হাসার ধরণ পছন্দ হলো না আবেশের।
“বোকার মতো হাসতে কে শিখিয়েছে তোকে? এভাবে হাসবি না।”
“তোমার কাছেও আমার হাসি বিরক্ত লাগছে আবেশ ভাই? তার মানে আমার হাসি আসলেই অসুন্দর! সেই জন্যই কি পাথর মানব টাও আমার হাসি পছন্দ করতো না?”
আবেশের হাত থেমে গেল, “তোর হাসি অনেক সুন্দর তবে তুই হাসছিস না, শুধু হাসার অভিনয় করছিস। সেই জন্যই বললাম জোর করে হাসতে হবেনা।”
কথাটা শুনে মুখ ঘুরিয়ে নিল ফুল। আবেশ তাকে বেশ ভালোই বুঝতে পারে। অদ্ভুত! এর আগে সে ব্যাপারটা লক্ষ্যই করেনি। আবেশ কি বরাবরই তাকে এতো ভালো বুঝতে পেরেছে?
“তোর জন্য ইয়া বড় একটা গিফট কিনেছিলাম।”
কথাটা শুনে ফুল ঠোঁট কামড়ে সরু চোখে আবেশের দিকে তাকাল। তার চাহনি দেখে আবেশ ফিক করে হেসে উঠল,
“হয়েছে কি গিফট টা এতোই বড় ছিল যে আমি একা তুলতেই পারছিলাম না। তাই সাথে করেও আনতে পারিনি।” আবেশের কথা শুনে ফুল নিজেও এবার হেসে উঠল, “মিথ্যা কথা বলছো। তুমি এবারও আমার জন্য গিফট আনতে ভুলে গেছো।”
আবেশের হাসি মিলিয়ে গেল। এবার সে ভোলেনি তবে আসার সময় গিফট টা খুঁজেই পায়নি। তাড়াহুড়োয় বেশি খোঁজাও সম্ভব হয়নি। হঠাৎ আবেশকে চুপ হয়ে যেতে দেখে ফুল বলল,
“মা আর মামী কেমন আছে?”
ফুলের প্রশ্নে আবেশ শক্ত গলায় বলল, “অন্য কারো ভালো থাকা কেড়ে নিয়ে যেটুকু ভালো থাকা যায় সেটুকুই আছে।”
মাথা নিচু করে নিল ফুল, “আমার জন্য তুমি নিজের ঘর ছাড়বে সেটা আমি চাইনা আবেশ ভাই। তুমি আমার জন্য কোথাও একটা ব্যবস্থা করে দিয়ে, চলে যেও।”
“আমাকে কোথায় যেতে বলছিস ফুল? তোর যেমন কেউ নেই তেমনি আমারও কেউ নেই। কোথায় যাবো আমি?”
“আমাদের সবাই আছে; বাবা ব্যাতিত। হয়তো বাবা না থাকলে জীবন টা এমনই হয়।”
“কেউ নেই ফুল, যারা আছে তারা মানুষ নয়। শুধু মানুষের মুখোশ পড়ে আছে। মনুষ্যত্বহীন যেকোনো প্রাণী পশুতুল্য। মানুষ হলে এরকম মনুষ্যত্বহীন, দয়ামায়া হীন হতে পারতো না। এতো কিছুর পরেও আমি তাদের মাঝে কোনো প্রকার আফসোস দেখিনি ফুল। তুই ভাবতে পারছিস?”
“তবুও তুমি আমার জন্য মামীকে ছেড়ে আসতে পারো না আবেশ ভাই।”
“আমি তোর জন্য না নিজের জন্য; নিজেকে বাচানোর জন্য সবাইকে ছেড়ে আসতে পারি ফুল।”
ফুল এবার তাকালো আবেশের দিকে। পানিতে টলমল করছে ফুলের আঁখিদ্বয়। মৃদু ফোপাঁনোর শব্দ ভেসে আসছে ঠোঁটের ফাঁক গলে। আবেশ বসা থেকে উঠে ফুলের সামনে গিয়ে দাড়াল। হাল্কা ঝুকে ফুলের চোখের পানি মুছে দিল। ভরাট কণ্ঠে বলল,
“আমি ফুলের হাসি দেখতে ভালোবাসি। কান্না দেখতে নয়। আমি চাই ফুলের অশ্রু বিরল হোক; মহামূল্যবান হোক। শত সাধনা করেও কেউ অশ্রু ঝরাতে না পারুক। হাজার সাধনার পর কেউ যদি তার চোখে অশ্রু আনতে সক্ষম হয় সেই অশ্রু—আনন্দঅশ্রু হোক।”
চলবে,,,
শব্দসংখ্যা: ৩০৫০+
[পরবর্তী পর্ব পেতে রেসপন্স করুন]
Share On:
TAGS: অবাধ্য হৃৎস্পন্দন, সোফিয়া সাফা
CLICK HERE GO TO OUR HOME PAGE
-
অবাধ্য হৃৎস্পন্দন পর্ব ১০
-
অবাধ্য হৃৎস্পন্দন পর্ব ২২
-
অবাধ্য হৃৎস্পন্দন পর্ব ১৬
-
অবাধ্য হৃৎস্পন্দন পর্ব ১৫
-
অবাধ্য হৃৎস্পন্দন পর্ব ৪
-
অবাধ্য হৃৎস্পন্দন গল্পের লিংক
-
অবাধ্য হৃৎস্পন্দন পর্ব ৩৪
-
অবাধ্য হৃৎস্পন্দন পর্ব ৭
-
অবাধ্য হৃৎস্পন্দন পর্ব ৮
-
অবাধ্য হৃৎস্পন্দন পর্ব ১২